এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ধারাবাহিক  গপ্পো

  • ছোটদের গল্প - তোয়ার রোববার 

    Kishore Ghosal লেখকের গ্রাহক হোন
    ধারাবাহিক | গপ্পো | ০১ জুলাই ২০২৩ | ৪৫৪ বার পঠিত

  •  
    তোয়ার রোববার
    কিশোর ঘোষাল
     
    রোববার দিন স্কুলের তাড়া নেই। তোয়ার সেদিন খুব মজা। মজা মানে বুঝি অনেক বেলা অবধি ঘুমোনো? মোটেও তা নয়। বরং তোয়া সেদিন খুব ভোর ভোর উঠে পড়ে; তারপর ছাদে যায়। ওই দিন তার যত বন্ধুরা আসে ছাদে তার সঙ্গে গল্প করতে।
    ভোরে উঠতে তাকে ঘড়িতে অ্যালার্ম দিতে হয় না। ভোরের আলো ফুটলেই তাদের ঘরের জানালার পাশে আমগাছের ডালে বসে বুলবুলি ডাক দেয়। যতক্ষণ না তোয়া ঘরের দরজা খুলে বারান্দায় বেরোচ্ছে, ততক্ষণ ডেকেই চলবে। এমন দুষ্টু। আচ্ছা, ঘুম ভেঙেই কি আর হুড়মুড়িয়ে বিছানা ছেড়ে নামা যায়, বলো তো? ঘরে মা আছেন, তাঁর ঘুম তো আর ভেঙে দেওয়া যায় না! কাজেই বিছানা থেকে আস্তে আস্তে নামতে হয়। পা টিপে টিপে দরজা অবধি যেতে হয়। তারপর খুট করে দরজার ছিটকিনি খুলতে হয়। সে তো আর বুলবুলি বোঝে না। সে শুধু ডেকেই চলে, ডেকেই চলে। অবিশ্যি বিছানা থেকে নামবার সময় মা ঠিক বুঝতে পারেন। তিনি চোখ বন্ধ রেখেই আলসে গলায় বলেন, ‘ছাদে গিয়ে আলসে থেকে ঝুঁকবে না কিন্তু।’ তোয়া কিছু বলে না, মায়ের ঘুমমাখা গালে চুমো দিয়ে দরজা খুলে বেরিয়ে আসে ঘর থেকে।
    আজও তার ঘুম ভাঙল বুলবুলির ডাকে। বারান্দায় এসে সে আমগাছের দিকে তাকিয়ে মুখে আঙুল রেখে বলল, “চুপ কর পাগলি, ডাকিসনে কো আর। সাতসকালেই ঘুম ভাঙাবি, পাড়ার সবার?”
    বুলবুলি হুশ করে উড়ে গিয়ে বসল আমগাছের আরও উঁচু ডালে। তারপর ছাদে যাবার সিঁড়িতে উঠতে উঠতে তোয়া শুনল, বুলবুলি সকলকে ডাকছে, “আয়রে আয় যত পাখি, আছিস যেথায় যত, তোয়াদিদি আসছে ছাদে কথা হবে কত!”
     
    ছাদে উঠে ভোরের অনেকটা আকাশ দেখা যায়। পুবের আকাশটা নানা আলোয় উজ্জ্বল সেজে উঠছে; একটু পরেই সুজ্জিমামা উঠে আসবেন দিগন্তের আড়াল থেকে। চারদিকেই যেন তাঁর আসার আশায় সাজ সাজ। চারপাশের যত গাছপালা। ছোটোবড়ো, ঝাঁকড়ামাথা আমগাছ। জামরুল আর সবেদা গাছ। ডিগডিগে লম্বা মাথায় ঝুঁটিওয়ালা নারকেল আর সুপুরি গাছ। তাদের গলায় ঝোলে ডাবের গয়না আর সুপুরির মাদুলি! ভোরের হালকা হাওয়ায় তারা ঘাড় নাড়ে, মাথার পাতা নাড়ে, কথা বলে—ঝরঝর, সরসর। সব্বাই খুব ব্যস্ত। মাটির থেকে জল তুলছে শেকড় দিয়ে, পৌঁছে দিচ্ছে প্রত্যেকটি পাতায়। পাতারা ভোরের শীতল হাওয়া থেকে টেনে নিচ্ছে কার্বন ডাই-অক্সাইড। এবার আরে একটু আলো স্পষ্ট হলেই তাদের পাতায় পাতায় শুরু হবে রান্নাবান্না, তৈরি হবে সক্কলের খাবার। বাতাসে তারা ছাড়বে রান্নার গ্যাস—অক্সিজেন। সেই বাতাসে বুক ভরে শ্বাস নিলে আমাদের শরীর-মন তাজা হয়ে ওঠে। সারা সপ্তাহের নানান ধোঁয়া আর ধুলোতে আমাদের বুকের মধ্যে যে ঝুলকালি জমে ওঠে, তার অনেকটাই সাফ হয়ে যায় এই বাতাসে শ্বাস নিলে।
    এসব কথা তোয়ার বাবা বলেছেন তোয়াকে। বাবা আরও বলেছেন, গাছেদের এই যে রান্নাবান্নার কাজ সেটাকে বলে সালোকসংশ্লেষ। ভোরে ছাদে এলেই তোয়ার মনটা ভালো হয়ে যায়। সে প্রথমেই খুব জোরে জোরে শ্বাস নেয়। বাবা যেমন দেখিয়েছেন, সেভাবে।
    তোয়াকে ছাদে দেখে এবং বুলবুলির ডাকাডাকিতে আকাশ থেকে নেমে আসতে লাগল পাখির দল। তাদের মধ্যে কাক আছে, পায়রা, চড়াই, শালিক আছে। বুলবুলি তো আছেই। সকলে এসে বসল ছাদের আলসেয়—কেউ কেউ কাপড় শুকোতে দেওয়ার দড়িতে, কেউ আবার দড়ি বাঁধা বাঁশের খুঁটিতে। দু-একজন টিভির ডিশ অ্যান্টেনায়। অন্যদিন সকলে এসেই গুড মর্নিং জাতীয় কিছু একটা বলে; আজ সেসব কিছু বলার আগেই কাকগুলো খুব খরখর করতে লাগল। যে-কোনো কারণেই হোক তারা খুব রেগে আছে, খুব উত্তেজিত।
    ছাদের আলসেতে বসেই কাকের দল কা কা করে তোয়ার কান ঝালাপালা করে তুলল।—“তোয়াদিদি, তোমার কাছে বিচার চাই বিচার, আমরা সবাই অসহায়, এক্কেবারে নাচার।”
    তাদের চেঁচামেচিতে কান পাতা দায় হয়ে উঠল। নিরীহ পাখিরা—চড়াই, পায়রা এবং শালিকের দল ভয়ও পেল খুব। কাকেরা কাকে কখন ঠুকরে দেয় কে জানে—তখন কাকের থেকে কে কাকে বাঁচাবে?
    তোয়াদিদি তার ক্লাস টিচার ম্যামের মতো দু-হাতে কান চাপা দিয়ে বলল, “এক মিনিট! থাম থাম, একটু খানি দাঁড়া, সবাই মিলে এমন করে চেঁচাস কেন তোরা? একজন কেউ নেতা হয়ে বল না কথা খুলে, চেঁচামেচি করলে আবার কানটি দেব মুলে।”
    তোয়ার কথায় কাকেরা একটু শান্ত হল। তারপর কাকেদের মধ্যে একটা হেঁড়ে কাক খুব দুঃখী দুঃখী মুখ করে বলল, “কান নেই তো মুলবে কী গো, শুনছ তোয়াদিদি, বুদ্ধিশুদ্ধিও ঘটে মোদের একটু দেননি বিধি। কান টানলে মাথা আসে শুনছি কতদিন, কানও নেই মাথাও নেই, তাই তো মোরা হীন।”
    কাকেদের কথায় তোয়াও একটু কষ্ট পেল। সত্যিই তো, কাকেদের কান নেই! আর সেই জন্যেই ‘কাকে কান নিয়ে গেল’ শুনে কিছু মানুষ ভুল বুঝে কাকের পেছনে দৌড়োয়। কিন্তু কাকেদের বুদ্ধি নেই, এ-কথাটা তোয়ার একটু নতুন লাগল। বলল, “কাকের মাথায় বুদ্ধি নেই, এ-কথাটা নয় ঠিক। ছোটো থেকেই আমরা জানি কাকের বুদ্ধি টেরিফিক। জালার একটু জলে নুড়ি ফেলে ফেলে তোরা খেয়েছিলি জল। এর পরেও বুদ্ধি নেই, সেটা মানব কেন বল? ওসব ছেড়ে কী হয়েছে বল তো পরিষ্কার! যে বকেছে যে মেরেছে, তাকে করব তিরষ্কার।”
    সুবিচারের আশায় হেঁড়ে কাক ঠোঁট চুলকে বলল, “তোয়াদিদি, আমাদের বকেনি কেউ, কেউ মারেওনিকো, আমাদের হাড় জ্বালিয়ে দিল, তোমাদের ওই পিক। পিক মানে কোকিল, তোমার বড্ডো প্রিয় পাখি। কু কু ডেকেই দিনটি কাটায়, কাজের বেলায় ফাঁকি।”
    তোয়া হেসে ফেলল ফিক করে, বলল, “ও মা, কোকিল তোদের হাড় জ্বালায় এ তো নতুন কথা শুনি! ওদের কী সুন্দর কুচকুচে রঙ, আর চক্ষু দুটি চুনি। কুহু ডাকে কোকিল সবার মাতিয়ে তোলে মন। তোদের আবার কখন ওরা করল জ্বালাতন?”
    হেঁড়ে কাক তোয়াদিদির কথায় আরও যেন দুঃখ পেল। বলল, “ওই তো, ডাকটি শুনেই তোমরা ভাবো কোকিল পাখি খাসা। কোনোদিন কী দেখেছ ওরা কোথায় বাঁধে বাসা? কুঁড়ের হদ্দ কোকিলগুলো বেজায় ফাঁকিবাজ, সারাদিনেও একটা যদি করে কাজের কাজ! নেচে-গেয়ে সারাটা দিন কাটায় ঘুরেফিরে। আর ডিমটি পাড়ে চুপিসারে আমাদেরই নীড়ে! কষ্ট করে বাসা বানাই জুটিয়ে খড় ও কুটো, ওরা সেই বাসাতেই ডিম পাড়ে তিনটে কিংবা দুটো। এমন করেই বহুদিন ওরা করছে ফাঁকিবাজি। ঢের হয়েছে, আর না, আমরা আর হব না রাজি। তোয়াদিদি কড়া কথায় বুঝিয়ে ওদের দাও, নিজের বাসা নিজেই বেঁধে তবেই গানটি গাও!”
    হেঁড়ে কাক আর কিছু বলল না, দুই ডানা ঝাপটে গম্ভীর হয়ে চুপ করে রইল। তার সঙ্গে অন্য কাকেরাও। তারা ঘাড় ঘুরিয়ে বেঁকিয়ে শুধু দেখতে লাগল এবার তোয়াদিদি কী করে।
    তোয়াদিদিও এখন খুব গম্ভীর মুখে ডাকল, “কোকিল, অ্যাই কোকিল, শুনতে পেলি কাকেদের অভিযোগ? বল তো তোরা, কেন ওদের বাড়াস রে দুর্ভোগ?”
    কোকিলরা আমগাছের ঘন পাতার আড়ালে লুকিয়ে বসে থাকে। তারা বড়ো একটা কারও সামনে আসে না, পাতার আড়াল থেকেই সবার সব কথা শোনে, আর মাঝে-মাঝেই গান গেয়ে ওঠে—কুউ, কুউ। তোয়াদিদির ডাকে এখন পাতার আড়াল থেকেই সাড়া দিল। বলল, “আছি আছি তোয়াদিদি, পাতার ফাঁকেই বসে, কাক ভাইয়েরা রেগে গেল মোদের কপালদোষে। বাসা বাঁধার বুদ্ধি যদি থাকত মোদের ঘটে, গান না বেঁধে বাসাই তখন বাঁধতাম মোরা বটে। আমরা লাজুক এবং ভিতু, পারোনি কি চিনতে? কাকের বাসার ভরসা করে থাকি যে নিশ্চিন্তে। কাকরা যেমন ডাকাবুকো তেমনি এককাট্টা, ওদের বাসায় হানা দিলেই শত্রুরা পায় গাঁট্টা।”
    তোয়াদিদি খুব অবাক হল কোকিলের কথায়। কাকদের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করল, “ও মা, কোন শত্রু আসে তোদের বাসায় দিতে হানা? কীসের লোভে যায় রে তারা—টাকা নাকি সোনাদানা?”
    হেঁড়ে কাক ঘাড় চুলকে বলল, “ভাম আছে, বেড়াল আছে, আছে সাপ ও চিল, দুষ্টু ছেলেও মাঝে-সাঝে বাসায় ছোড়ে ঢিল। তারা ডিমগুলি সব নষ্ট করে, বাসাও ভেঙে ফেলে; তখন দুঃখে-শোকে তোয়াদিদি, মোদের নয়ন ভরে জলে।”
    হেঁড়ে কাকের কথায় তোয়াদিদিও খুব কষ্ট পেল। চমকে উঠে বলল, “ইস, ওরা এত শয়তান, এত নির্দয়? এর কিছু উপায় তোরা করিস নিশ্চয়।”
    হেঁড়ে কাক এবং অন্য কাকেরাও মাথা নীচু করে কিছুক্ষণ চুপ করে বসে রইল। তারপর দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “সারা দিনরাত আমরা ভীষণ সজাগ হয়ে রই, বিপদ বুঝলে সবাই করে উঠি হইহই। ঠোঁটে শান দিয়ে আমরা সব্বাই উড়ে যাই। ঘিরে ধরে তাকে ঠুকরে দিই, যে যেমন ফাঁক পাই। ঠোক্কর খেয়ে বজ্জাতগুলো পিঠটান দিয়ে বাঁচে...”
    তোয়াদিদি খুশিতে হাততালি দিয়ে বলল, “বাহ্‌ বাহ্‌, যেমন তোদের বুদ্ধি দেখি, তেমনি সাহসও তো আছে!”
    তোয়াদিদির কথা শেষ হতে না হতে কোকিল দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল, “তোয়াদিদি, এই কারণেই আমরা ওদের বাসাতে ডিম পাড়ি, আমরা কি আর কাকের মতো লড়াই করতে পারি? আমরা নিরীহ শিল্পী পাখি, গানের চর্চা নিয়ে থাকি। বুদ্ধি তেমন নেই তো ঘটে, তাছাড়া আমরা কুঁড়েও তো বটে!”
    একটু চুপ করে থেকে কোকিল কান্না ধরা গলায় আবার বলল, “কোকিল বংশ ধ্বংস হলে বলো, কার কী এসে যায়? কথা দিচ্ছি দিদি, কক্ষনো আর যাব না কাকের বাসায়।”
    কোকিল কেন কাকের বাসায় লুকিয়ে ডিম পাড়ে তোয়াদিদি এবার বুঝল। এও বুঝল, নিরীহ কোকিলরা যদি কাকদের আশ্রয় না পায়, তাহলে হয়তো কিছুদিনের মধ্যেই তারা লোপ পেয়ে যাবে। তাদের ডাক আর শোনাই যাবে না।
    সব্বাই খুব মনখারাপ করে মুখ ভার করে বসে রইল চুপ করে। কোকিলের দুঃখের কথা শুনে আর সকল পাখির মুখের দিকে তাকিয়ে হেঁড়ে কাক কী যেন ভাবল। সে অন্য কাকদের সঙ্গে খুব নীচু গলায় কিছু পরামর্শ করল। তারপর গলাটা ঝেড়ে নিয়ে বলল, “বলছিলাম কী তোয়াদিদি, আমাদের একটা ইয়ে, মানে, আছে নিবেদন। অভয় যদি দাও তাহলে বলেই ফেলি এখন।”
    কোকিলদের একটা কিছু সুরাহার আশায় তোয়াদিদি বলল, “কী বলবি, বলেই ফেল না কাকসোনা! কোকিলের ডাক চিরদিন যাবে কি আর শোনা?”
    দিঘির কাকচক্ষু জলের মতো কালো চোখ মটকে হেঁড়ে কাক মুচকি হেসে বলল, “কোকিল ছানা বড়ো হোক আমাদেরই বাসায়, নেই কোনও আপত্তি। তবে ওদেরও মানতে হবে একটা শর্ত, ছোট্ট একরত্তি।”
    কাকের কথায় তোয়াদিদি তো বটেই, অন্য পাখিরাও খুব স্বস্তি পেল। কিন্তু শর্ত আবার কীসের—সকলেই নিজেদের মধ্যে মুখ চাওয়াচাওয়ি করল।
    তোয়াদিদি জিজ্ঞেস করল, “শর্তটা কী বল না কাক, অসাধ্যি কিছু নয় তো? কোকিলরা কি পারবে, সেটাই মোদের ভয় তো!”
    হেঁড়ে কাক ঠোঁটের ফাঁকে রহস্যের হাসি খেলিয়ে বলল, “কোকিলরা একটা কাজই পারে, গাইতে কুহু কুহু গানা। ওদের থেকেই গান শিখে নিক যত্ত কাকের ছানা! এইটুকুনি অনুরোধ কোকিল ভাইয়ের কাছে...”
    কাকের কথা শেষ হবার আগেই পাখিরা আনন্দে হইচই করে ডেকে উঠল; শালিক শিস দিল খুশিতে। তোয়াদিদিও হাততালি দিয়ে বলে উঠল, “কী রে কোকিল, এবার তোদের আপত্তি কিছু আছে?”
    কোকিলও আনন্দে কুউ কুউ ডেকে উঠল। বলল, “তোয়াদিদি, বলছ কী গো, স্বস্তি পেলাম খুব। কাকের ছানা যত আছে, দিক গানের রাজ্যে ডুব। খুশি হয়েই গান শেখাব নিজের ছানার সঙ্গে, গানের সুরে মাতবে সবাই এ-পার ও-পার বঙ্গে!”
    এতক্ষণ গুরুগম্ভীর আলোচনায় সকলেই ব্যস্ত ছিল; এখন কাক ও কোকিলের বিবাদ মিটে যেতে সবাই স্বস্তি পেল। আর সেই সঙ্গে টের পেল তাদের খিদে পেয়েছে খুব। পাখিদের বার বার খিদে পায়, কারণ তারা খুব অল্প অল্প খায় কিনা। যেমন তোয়ার অল্পস্বল্প খাওয়া দেখে তোয়ার ঠাকুমা বলেন তার নাকি পাখির আহার।
    হেঁড়ে কাক বলে উঠল, “তোয়াদিদি, খিদে পেয়েছে খুব, আমরা এবার উড়ব; হাট-বাজারে এদিক সেদিক খাবার খেতে ঘুরব। কাক-কোকিলের বিবাদ যখন গেলই এবার চুকে, বিকেলবেলা আসব আবার গল্প করতে সুখে।”
    অন্যান্য পাখিরাও সবাই একসঙ্গে বলল, “তোয়াদিদি, আমরাও তবে উড়ি, খুঁজতে মোদের খাবার; বিকেলবেলা আসছি ফিরে, দেখা হবে আবার।” বলতে বলতে ঝটপট ডানা মেলে সক্কলে উড়ে গেল।
    আকাশে উড়ে যাওয়া পাখিদের দিকে হাত নাড়তে নাড়তে তোয়াদিদি মনে মনে বলল, ‘তোদের সঙ্গে যখন থাকি, মন হয়ে যায় আকাশ, ওরে ছোট্ট ছোট্ট পাখি; আমরা সবাই থাকব ভালো, যদি তোদের ভালো রাখি।’
     
    -০০-
    "একপর্ণিকা" ওয়েব পত্রিকার বর্ষা সংখ্যা পয়লা জুলাই ২০২৩ এ প্রকাশিত। 
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ধারাবাহিক | ০১ জুলাই ২০২৩ | ৪৫৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Aranya | 2601:84:4600:5410:cc62:ce5e:d43d:53e9 | ০৪ জুলাই ২০২৩ ১১:৩৭520983
  • সুন্দর 
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন