কবি ও কলম – ঝর্না বিশ্বাসकोई समझाए मिरे मद्दाह को
तालियों से भी बिखर सकता हूँ मैंআপনার লেখা পড়লাম। সব সময়ই পড়ি। হয়তো জানানো হয় না, কিন্তু পড়ি। যখন এ শহরে মস্ত কোলাহল, কোথাও ইঁট পাথরে গাঁথা হচ্ছে সুউচ্চ অট্টালিকা, বুড়ো গাছে নানা পাখিদের আনাগোনা, ও বাড়ির সামনের রাস্তা ধরে হুশ হুশ করে চলে যাওয়া চার চাকাদের গাড়ি - ঠিক সেই সময় আপনার লেখা বারো লাইনে আমি আটকে গেছি। এমনটা আজ নয়, রোজ রোজ হয়। আপনার লেখা দু কলমে রাত থেকে সকাল হয়, আর সকাল গড়িয়ে বাকি সময়টা। এক আশ্চর্য যোগসূত্র যেন এই কয়েক হাজার মাইল দূরে বসেও।
এই তো গেল ‘টেকনোলজি ডে’। আর এই টেকনোলজিই পরিচয় করিয়ে দেয় আপনার কবিতার সাথে। তার আগে আরো অনেক কবি পড়েছি তবে শুন্যতাতে জায়গা দখল ব্যাপারটা এবারই হলো। আশ্চর্য জানেন।
হ্যাঁ, আপনাকেই বলছি, ইংরেজিতে admirer বা চলতি কথায় ফ্যান। আমাকে তাই ধরে নিন। আপনি আমাকে চেনেন না। আপনার লেখার অজস্র লাইকের ভিড়ে আমার দেওয়া লাইকের নোটিফিকেশনটি তেমন গুরুত্ব না দিলেও জানবেন আপনার লেখালেখিতে গড়িয়ে যাচ্ছে আমার অনেক সময়…ইংরেজির তারিখগুলো কি তাড়াতাড়ি বদলে যায়, বুঝতেও পারিনা। এই তো বছর শুরু হলো…এরপর বর্ষা আসছে আর আমিও অপেক্ষায় আপনার নতুন সংকলনের।
জানি, admirer কে সোজা বাংলায় পাগল বলে। তবে যদি তাই হয় তাহলে তাঁর পাগলামি ঘিরে থাকে সেই মানুষটির সৃজনশীলতাকে ঘিরেই। তাঁর লেখাই তাঁর জান-প্রান করতে করতে মানুষটি রাতদিন চিন্তাতেও আসতে শুরু করে। একটু বাড়াবাড়ি রকমের admirer- রা তো ছবি নিয়েও থাকেন। তাহলে এটা কি কোন রোগ বা ইশকিয়া গোছের কিছু?
না। পুরোটা নয়। এক লেখক বন্ধু অবশ্য তাই মনে করেন। তাঁর মতে লেখাতে দুটো মানুষ যে সহজে মিশে যায় তাঁর প্রমান ভুরিভুরি। এই যেমন পাবলো সিজার নির্মিত ছায়াছবি ‘Thinking of him’ রবীন্দ্রনাথ ও ভিক্টোরিয়া ওকাম্পোকে নিয়ে। উনি তো অনুরাগীই ছিলেন কবিগুরুর আর তারপর সেই ভালোলাগা কখন যে অন্যদিকে ঘুরে গেল বোঝাই গেল না। একমাত্র কবিতাতেই তার প্রমান যেখানে দু তরফ থেকে লেখালিখি হয় - আর আমরা পাই এক নিশ্চুপ ভালোবাসার দুটি চরিত্রকে…যারা বিশ্বাস করতে শেখায় যে ভালোবাসা বয়স, ধর্ম সব কিছুরই উর্ধে। তাকে শুধু গ্রহন করতে হয়। আপন করতে হয়।
মনোবিজ্ঞানে অবশ্য ফ্যানেদের secret admirer বলা হয়। যদিও crush, admirer, stalker এদের অর্থ অনেকটা এক। যারা খুঁজে চলে সেই মানুষটাকে, তাঁর সৃষ্টিকে। আসলে এই টেকনোলজির যুগে ভালোলাগা জানানোর অপশন প্রচুর। আর তাই আপনি লেখাটি পোস্ট করার সাথে সাথে শত শত লাইক, কেউ হার্ট দিয়ে জানায় তাঁর ভালোবাসা আবার কেউ কেয়ারিপনার হলুদ আলিঙ্গন এমন যে এই লেখাটিরই অপেক্ষাতে ছিলাম।
আপনি তখন লেখার টেবিলে চুপচাপ। মৃদু হাসছেন ও অদৃশ্য হাতে হাত মেলাচ্ছেন সমস্ত অনুরাগীকে। এভাবেই বছর, মাস এক এক সম্পর্ক তৈরি হচ্ছে আপনার সঙ্গে। হ্যাঁ, তাঁরা যারা আপনার লেখা পড়ে। ফিরে ফিরে পেতে চায়। ও আপনার বেশ কদিনের অনুপস্থিতিতে তাদের ভেতরে ঝড় ওঠে – তাই বার্তাও আসে, লেখাতে ফিরুন কবিবাবু, অপেক্ষা করছি।
তবে সম্পর্কে আসা-যাওয়া ব্যাপারটা বড় স্বাভাবিক। তাই নতুনদের ভিড়ে পুরনো অনুরাগীরা চাপা পড়ে যায়। ও অভিমান আসে তেমনই ।
যেমন গুলজার সাব লেখেন,“খতা উনকা ভি নহী ইয়ারো ওহ ভী ক্যেয়া করতে / বহুত চাহনে ওয়ালে থে কিস কিস কো বফা করে…”
তাই এক একটি কবিতাকে ঘিরে, কবিকে ঘিরে আরো অনেক লেখা হয়। কলম হাতে ওঠে এ পারেও। এবং এক বিশ্বাসে আবারও সময় যায়, কবি বোধহয় ব্যস্ত আছেন নতুন কোন সৃষ্টিতে…
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।