এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  ভোটবাক্স  বিধানসভা-২০২১  ইলেকশন

  • এনআরসি, সিএএ কেন আসাম ও বাংলার ভোটের ইস্যু হল না

    পার্থপ্রতিম মৈত্র
    ভোটবাক্স | বিধানসভা-২০২১ | ২৬ মার্চ ২০২১ | ৩৫০১ বার পঠিত | রেটিং ৪.৫ (২ জন)
  • আসাম ও বাংলার বাসিন্দাদের অনেকেরই ভবিষ্যৎ অনিশ্চিত। আসামের অনিশ্চয়তা ও বর্বরতা একবার প্রত্যক্ষও করা গিয়েছে। বাংলাতে তেমন ঘটবে বলে নির্বাচনী প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে ভারতীয় জনতা পার্টি। তারা ইশতেহারে জানিয়েছে, নির্বাচিত হলে মন্ত্রিসভার প্রথম বৈঠকেই সিএএ লাগু করা হবে। এ সত্ত্বেও বাংলায় বা আসামে কেন এনআরসি-সিএএ নির্বাচনী ইস্যু হয়ে উঠল না, তা বিশ্লেষণ করা হয়েছে এই নিবন্ধে।

    একুশের নির্বাচনে আসামে এবং বাংলায় অন্তত এনআরসি সিএএ প্রধান ইস্যু হয়ে উঠবে বলে ভাবা গিয়েছিল। আর এই অ্যাজেন্ডায় বিজেপিকে প্রতিহত করা গেলে, পরাস্ত করা গেলে, আসামে এবং বাংলায় যাদের উপর সবচাইতে বড় আঘাত নেমে আসার কথা, তারা একটু স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলত। কেননা এই দুই রাজ্যেই উদ্বাস্তু সমস্যা প্রবল। কিন্তু দু-একবার প্রাসঙ্গিকতার স্বার্থে দায়সারা ভাবে এনআরসি এবং সিএএ-র নামোচ্চারণ করলেও কোথাও নির্বাচনে নাগরিকত্বের প্রশ্ন প্রধান ইস্যু নয়। অথচ গত দু বছরে ভারতের ভিত কাঁপানো সমস্যা নাগরিকত্ব আন্দোলন এবং করোনা লকডাউন। একটু হলেও প্রসঙ্গ উঠছে কৃষিবিল, পেট্রোলিয়াম পণ্যের মূল্যবৃদ্ধি, কাশ্মীর, তিন তালাক ইত্যাদির। কিন্তু নির্বাচনের আকাশ ছেয়ে আছে অর্থনৈতিক দুর্নীতি, অনৈতিকতা, বহিরাগত, শিল্পে খরা, বেকারি, সিন্ডিকেট, কাটমানি, তোলাবাজি, এই ধরনের সাধারণ এবং অনাদি কালের ইস্যুগুলি। কার ভাই, কার ভাইপো, দলবদল, গোপন আঁতাত ইত্যাদি প্রভৃতি। আসাম, বাংলা মিলিয়ে এতগুলি জোট, যাদের কাছে “নাগরিকত্ব” এই নির্বাচনে অন্যতম প্রধান ইস্যু হবার কথা। হলো না কেন? আসুন খতিয়ে দেখা যাক।

    দলগুলির মধ্যে ধারাবাহিকতা সামান্য রয়েছে বিজেপি-র। তারা তাদের নাগরিকত্ব বিশ্লেষণে দশকের পর দশক একজায়গায় থেকেছে, তা যতই অমানবিক হোক না কেন। বিজেপির কাছে সহজ এবং স্বাভাবিক ছিল এটিকে নির্বাচনী ইস্যু করা। কিন্তু বিজেপি তা করলো না। কেন? কারণ সিএএ দিয়েই বিজেপির মনোবাঞ্ছা পূরণ হয়। কিন্তু আসামে অসমীয়া জাতীয়তাবাদের প্রবল উত্থান এবং কংগ্রেসকে আসামে প্রান্তিক করে দিতে বিজেপিকে এনআরসি সমর্থন করতে হয়েছে। কিন্তু প্রথম থেকেই এনআরসি প্রক্রিয়ার অন্তর্লীন বিপদ সম্পর্কে বিজেপি সচেতন ছিল। এনআরসি প্রক্রিয়ায় বিপুল সংখ্যক হিন্দু বাঙালির সঙ্গে প্রচুর অমুসলমান ভারতীয়ও সঠিক প্রমাণপত্র না থাকায় বিদেশি হিসাবে চিহ্নিত হয়ে যান। তখনই প্ল্যান-বি হিসেবে বিজেপি তার দীর্ঘদিনের সযত্ন লালিত সিএএ হাজির করে, ড্যামেজ কনট্রোল হিসাবে। কিন্তু তাতে অসমীয়া জাতীয়তাবাদী শক্তি ক্ষেপে ওঠে। কেননা এনআরসি-র মূল উপপাদ্যটিকেই নস্যাৎ করে দেয় সিএএ। একদিকে অসমীয়া ও বাংলা ভাষার সংঘর্ষ, অন্যদিকে হিন্দু ও মুসলিম ধর্মের সংঘর্ষ, আর মাঝখানে পর্বত ও ভৈয়ামের বিরোধ। আসামে বিজেপি টাইটরোপ ব্যালেন্স করে চলেছে। একটু এদিক থেকে ওদিক হলেই আসামের নির্বাচন হাত ফস্কে যাবে। অতএব যা হবার নির্বাচনের পরে হবে।

    আসামে এমন কোনও রাজনৈতিক দল নেই যারা এনআরসি বিরোধী। এবং বিজেপি বাদে বাকি সবাই সিএএ বিরোধী। ব্রহ্মপুত্র উপত্যকার (বিজেপির সহযোগী বা প্রতিযোগী) সব রাজনৈতিক দলই সিএএ বিরোধী, কারণ সিএএ এনআরসি-র মূল অবস্থানটিকেই চ্যালেঞ্জ করে। বাঙালি হিন্দুরা সিএএ-র পক্ষে, কিন্তু বাঙালি মুসলিমরা বিপক্ষে। বরাক উপত্যকার প্রায় সব রাজনৈতিক দল সিএএ-র পক্ষে কিন্তু এনআরসির বিরুদ্ধে। এই এলোমেলো রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে কেউই আসামে “নাগরিকত্বকে” নির্বাচনী মূল ইস্যু করতে রাজি নয়, যদি ব্যাকল্যাশ হয় সেই ভয়ে। সবচাইতে সঙ্গীন অবস্থা কংগ্রেস বাম জোটের। কংগ্রেস আসামচুক্তি স্বাক্ষরকারী, কংগ্রেসের তরুণ গগৈয়ের আমলে মাত্রাছাড়া দুর্নীতির প্রেক্ষাপটেই শুরু হয়েছিল এনআরসি প্রক্রিয়া। আর সিপিএম আসামে ভাল এনআরসি-র পক্ষে, এবং সিএএ বিরোধী কারণ সিএএ, সবাই জানে, এনআরসি বিরোধী।

    বাংলায় বিজেপির মুখ্য প্রতিদ্বন্দ্বী তৃণমূল কংগ্রেস সিএএ পাশ হবার আগে এবং পরে তেড়েফুঁড়ে এনআরসি এবং সিএএ-র বিরুদ্ধে রাস্তায় নেমেছিলেন। কিন্তু তারা নমোনমো করে দু একবার মুসলিম ভোটের খাতিরে উল্লেখ করলেও, এনআরসি এবং সিএএকে মুখ্য নির্বাচনী ইস্যু করলেন না। অথচ সুযোগ ছিল এ বিষয়ে সোচ্চার হওয়ার। এনআরসি-র হয়রানি আর সিএএ-র ভাঁওতা নিয়ে মানুষকে সন্ত্রস্ত করে রাখার কৌশল ছাড়া এ দলটিও কিছু করলো না। কেন? একটা কারণ হতে পারে ২০০৫ সালে সংসদের বর্ষা অধিবেশনটির শেষ সপ্তাহে তৃণমূল কংগ্রেসের প্রধান মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় লোকসভায় সংসদের ওয়েলে নেমে ভুয়া ভোটার সম্বলিত তালিকা (তাঁর মতে) স্পিকারের চেয়ারের দিকে ছুড়ে মেরেছিলেন। দিনটি ৪ঠা আগস্ট ২০০৫। পশ্চিমবঙ্গে অবৈধ বাংলাদেশি অভিবাসী প্রসঙ্গে শ্রীমতী মমতা ব্যনার্জী লোকসভায় ৪ আগস্ট, ২০০৫-এ বলেছিলেন যে “বাংলায় অনুপ্রবেশ এখন বিপর্যয়ে পরিণত হয়েছে। তালিকায় বাংলাদেশিদের পাশাপাশি ভারতীয় নামগুলিও দেখতে পাবেন। আমার কাছে বাংলাদেশি এবং ভারতীয় ভোটারদের তালিকা রয়েছে। এটি একটি গুরুতর ব্যাপার।” কিন্তু ভুললে চলবে না এনআরসি চলাকালীন মমতার সব জেলাশাসকদের নির্দেশ দিয়েছিলেন যে বর্ডার সিল করে দিতে হবে, যাতে উৎপাটিত, তালিকাচ্যুত, তথাকথিত অনাগরিকেরা পশ্চিমবঙ্গে ঢুকে পড়ে জনজীবন বিপর্যস্ত না করতে পারে। উপরন্তু এনআরসি-র বকলমে এনপিআরকে সরকারি স্তরে স্বীকৃতি দিয়ে তিনি তাঁর ভূমিকাকে সন্দেহদীর্ণ করেছেন, যা ইলেকশান ইস্যু হিসাবে তুলতে গেলে বুমেরাং হয়ে যেতে পারতো।

    তবে এনআরসি এবং সিএএকে নির্বাচনী ইস্যু করার ব্যাপারে সবচাইতে প্রতারক ভূমিকা হচ্ছে সংযুক্ত মোর্চার, অর্থাৎ কংগ্রেস, বাম ও মুসলিম মৌলবাদী দলগুলির।

    নাগরিকত্ব আইন সংশোধন ২০১৯ সালেই প্রথম হলো এমন নয়। এর আগেও সিএএ হয়েছে। শুধু আমরা সেগুলি জানতাম না, এই যা। এবং সংসদে আমাদের জনপ্রতিনিধিরা আমাদের জানাননিও বটে। হিন্দু-রাষ্ট্র হ’ল নাগপুর-ব্র্যান্ডের হিন্দু-ধর্মের বহুযুগলালিত স্বপ্ন। তারা বুঝেছিল নাগরিকত্বের পদ্ধতির ভিত্তিমূলে আঘাত করতে পারলেই তাদের প্যাথো-জেনেটিকাল মুসলিম-বিদ্বেষ এর স্বপ্ন সফল হবে। মনে রাখতে হবে, এরা প্রথম থেকে সংবিধানবিরোধী (মনুস্মৃতিকে সংবিধান করতে বলেছিল সঙ্ঘপরিবার), জাতীয় পতাকা বিরোধী (ভাগোয়া ধ্বজকে জাতীয় করতে চেয়েছিল সঙ্ঘ), অখণ্ড ভারতবিরোধী (ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগের অন্যতম প্রবক্তা), যারা মুসলিমবিরোধিতার অঙ্কে এমনকি ইংরেজদের সঙ্গে হাত মেলাতেও পিছপা হয় নি।।

    বাজপেয়ী যেবার প্রথম পুরো মেয়াদে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ছিলেন, তিনিই প্রথম নাগরিকত্ব আইন সংশোধনীর সুবিধা চিহ্নিত করেছিলেন। তিনিই, ২০০৩ সালে এই আইনটি এমনভাবে সংশোধন করেছিলেন, যেখানে তিনি বহু পুরোনো দেশের ভূখণ্ডে জন্মের অধিকারের জন্য নাগরিকত্ব থেকে রক্তের অধিকারে নাগরিকত্বে পরিবর্তন করেছিলেন।

    বিভাগ ৩. প্রত্যেক ব্যক্তি যিনি ভারতে জন্মগ্রহণ করেছেন -

    (ক) ১৯৫০ সালের জানুয়ারির ২৬তম দিন বা তার পরে, তবে ১৯৮৭ সালের জুলাইয়ের প্রথম দিনে;
    (খ) ১৯৮৭ সালের জুলাইয়ের প্রথম দিন বা তার পরে, তবে নাগরিকত্ব (সংশোধন) আইন, ২০০৩ শুরুর আগে এবং যার বাবা-মা কেউ তাঁর জন্মের সময় ভারতের নাগরিক ছিলেন;
    (গ) সিএএ, ২০০৩ শুরু হওয়ার সময় বা তার পরে, যেখানে -
    (১) তাঁর বাবা-মা উভয়ই ভারতের নাগরিক; অথবা
    ২) যার পিতা-মাতার একজন ভারতের নাগরিক এবং অন্যজন তাঁর জন্মের সময় অবৈধ অভিবাসী নন, তিনিই জন্মগতভাবে ভারতের নাগরিক হতে পারবেন।

    এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে এনআরসি প্রসঙ্গ। ২০০৩ এর "১৪-এ” সংশোধনীতে রয়েছে :
    ২০০৩ এর সংশোধনীতে কেন্দ্রীয় সরকারকে বাধ্যতামূলকভাবে একটি এনআরসি (ন্যাশনাল রেজিস্টার অব সিটিজেনশিপ) তৈরি এবং রক্ষণাবেক্ষণ এবং নাগরিকদের জাতীয় নিবন্ধক এবং সমস্ত নিবন্ধিত নাগরিকদের জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদানের আদেশ দেওয়া হয়েছে। আইনের ১৪ অনুচ্ছেদের পরে নিম্নলিখিত ধারাটি সন্নিবেশ করানো হবে:
    (১) কেন্দ্রীয় সরকার বাধ্যতামূলকভাবে ভারতের প্রতিটি নাগরিককে রেজিস্ট্রেশন করাতে পারে এবং তাকে জাতীয় পরিচয়পত্র প্রদান করতে পারে।
    (২) কেন্দ্রীয় সরকার ভারতীয় নাগরিকদের একটি ন্যাশন্যাল রেজিস্টার অব ইন্ডিয়ান সিটিজেন ও তার রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারে এবং সে লক্ষ্যে একটি ন্যশনাল রেজিস্ট্রশন অথরিটি প্রতিষ্ঠা করতে পারে
    এই সংশোধনীটির শেষে এও লেখা হয়েছে যে ভারতীয় নাগরিকদের বাধ্যতামূলক রেজিস্ট্রেশনে অনুসরণ করা পদ্ধতি যেমন নির্ধারিত হবে, তেমন ভাবেই অনুসৃত হবে।

    ২০০৩ সালের এই সংশোধিত নাগরিকত্ব আইনে এনআরসি এবং সিএএ ভিত্তিভুমি তৈরি হয়ে গেল সবার অলক্ষ্যে। ২০০৪ সালে চালু হওয়া এই সংশোধনীর একবছরের মধ্যে সর্বানন্দ সানোয়াল আইএমডিটি অ্যাক্ট বাতিল করার দাবীতে সুপ্রিম কোর্টে আবেদন জানায়, সুপ্রিম কোর্ট মূলতঃ এই আইনের বলে আইএমডিটি অ্যাক্ট বাতিলও করে দেয়। তারপর আসাম পাবলিক ওয়ার্কস নামে একটি এনজিওর আবেদনের ভিত্তিতে আসামে এনআরসি চালু হয়ে যায়। এরপরের ইতিহাস সবার জানা।

    আগের উত্থাপিত প্রশ্নগুলি আবারও তুলতে চাই উত্তরের আশায়। নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী, ২০০৩ এর এই ভয়ংকর ধারাগুলি সংসদে আমাদের নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা আমাদের জানাননি কেন? তাঁরা বোকা না সেয়ানা? সাধারণ মানুষের পক্ষে সংসদের দৈনন্দিন খুঁটিনাটি জানা সম্ভব নয়। নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিরা তো এজন্যই মাইনে, পেনশন, অন্যান্য সুবিধা সবই পান, তবু তাঁরা জানাননি। আমাদের অন্ধকারে রেখেছেন। বিজেপি যখন ভারতবর্ষব্যাপী তৃণমূল স্তরে এনআরসি আনার ষড়যন্ত্র করছে, সিএএ-র জন্য ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে, তখন এই দলগুলি ব্যস্ত থেকেছে নিজেদের মধ্যে খেয়োখেয়ি, আর ভোট বৃদ্ধির ছক্কাপাঞ্জা কষতে। অবশ্য এটাতো বাহ্যিক। কংগ্রেস আমলে চালু হওয়া এনআরসি-র বিরুদ্ধে আসামে স্বাভাবিকভাবেই কংগ্রেসের বিরোধিতা নেই। মাঝেমাঝে ভিত্তিবর্ষ নিয়ে কুঁই কুঁই করা ছাড়া আসামে তারা এনআরসি র পক্ষে। এজিপি বা বিজেপির বিরোধিতার প্রশ্ন নেই, কারণ এটা তাদেরই অ্যাজেন্ডা। এআইইউডিএফ মুসলিমদের সংগঠন। কিন্তু তারাও প্রথম থেকে এনআরসি করে বিদেশিদের বাংলাদেশে ফেরৎ পাঠানোর দাবিদার। সবচেয়ে ভাল অবস্থান বামদলগুলির। তারা আসামে এনআরসির সমর্থক কিন্তু পশ্চিমবঙ্গ ও দেশের অন্যত্র বিরোধী।

    অথচ এরাই সর্বক্ষণ সর্বত্র, সর্বজনে চক্রান্ত খুঁজে পায়। চক্রান্তের কথা অহরহ বলে, কিন্তু ব্যক্তিবিশেষ সে কথা বললেই আপত্তি তোলে। কারণ রাজনৈতিক দল ও তাদের নেতৃত্ব সর্বক্ষণ আতঙ্কে ভুগছে। যদি ব্যক্তির কথাকে জনসমষ্টি গুরুত্ব দিয়ে বসে, আর তার ফলে যদি ভোট কমে যায়, আর এই ভোট কমায় যদি আসন কমে যায় ...। ফলে জনপদ থেকে জনপদে, রাজ্য থেকে রাজ্যান্তরে, তত্ব থেকে তত্বভেদে তাদের অবস্থান বদলে বদলে যায়। যেমন আসামে অসমীয়া জাতীয়তাবাদের সমর্থন আদায়ে বিজেপি নতুন করে এনআরসি প্রক্রিয়া চালু করবে বলছে, কিন্তু সিএএ প্রসঙ্গ বেমালুম চেপে যাচ্ছে, কারণ অসমীয়া জাতিসত্তা প্রবলভাবে সিএএ বিরোধী। পশ্চিমবঙ্গে কিন্তু হিন্দু উদ্বাস্তু ভাবাবেগ ধরার জন্য জানানো হচ্ছে রাজ্যে ক্ষমতা দখলের প্রথমদিন থেকে সিএএ প্রক্রিয়া শুরু হবে, সঙ্গে এনআরসি চালু হবে সারা ভারতবর্ষে। বলতে পারছে, তার কারণ দীর্ঘদিন ধরে তারা এমন একটি ক্ষেত্র প্রস্তুত করেছে পশ্চিমবঙ্গে, যেখানে মূল ধারণা হচ্ছে এনআরসি এবং সিএএ শুধু মাত্র মুসলিমদের বিরোধী। ফলে হিন্দুরা উল্লসিত। কেউ তাদের বলছে না যে আসামের উদাহরণ থেকে দেখা যায় এনআরসি এবং সিএএ-র বলি হয় হিন্দু মুসলিম নির্বিশেষে দরিদ্র মানুষ, যাদের কাছে নাগরিকত্ব বা উদ্বাস্তু অতীত প্রমাণের কোনও নথি নেই।

    পাশাপাশি আসামে মূল বিরোধী শক্তি কংগ্রেস, বাম ও আরও অনেক দল নিয়ে গঠিত সংযুক্ত ফ্রন্ট। তারা এনআরসি-র সমর্থক এবং সিএএ-র বিরোধী। কেননা অসমীয়া জাতিয়তাবাদী শক্তি প্রবলভাবে এনআরসি-র সমর্থক এবং সিএএ বিরোধী। তারা জাতিয়তাবাদী হিংস্র ও অমানবিক শক্তির বিরোধিতা এড়িয়ে যায়। অথচ বাংলায় কিন্তু এই বামপন্থী দলগুলি এনআরসি এবং সিএএ উভয়ের তীব্র বিরোধী। কেননা বাংলা তথা ভারতের জনগণ সার্বিকভাবে এনআরসি এবং সিএএ উভয়ের তীব্র বিরোধী। অতএব বাংলায় তাদের অবস্থান আসাম থেকে ভিন্ন। এখানে সিপিএম একটা অদ্ভূত যুক্তি উত্থাপন করে। যেহেতু আসাম চুক্তিতে রয়েছে ১৯৭১ সালের পরে আগত বিদেশিদের ডিটেকশান ডিলিশান এবং ডিপোর্টেশনের কথা, ফলে আসামে এনআরসি ন্যায্য। কী আছে সেই চুক্তিতে?

    রাজীব গান্ধী ও আসামের উগ্র জাতিয়তাবাদী শক্তিগুলির মধ্যে স্বাক্ষরিত হওয়া অসম চুক্তির ৫ নং ধারায় বলা আছে
    ১৯৭১ সালের ২৫ শে মার্চ বা তার পরে আসামে আসা বিদেশিদের আইন অনুসারে সনাক্ত করা, নাম মুছে ফেলা এবং বহিষ্কার করা অব্যাহত থাকবে। এ জাতীয় বিদেশিদের বহিষ্কারের জন্য তাৎক্ষণিক ও ব্যবহারিক পদক্ষেপ গ্রহণ করা হবে।

    প্রশ্ন হলো, আসাম চুক্তিকে কেন এতটা মান্যতা দেওয়া হবে, যার জাঁতাকলে পিষ্ট হয়ে মরে সাধারণ মানুষ? আর আসাম চুক্তিকে যদি এতটা মান্যতা দিতেই হয় তবে তাঁরা সারা ভারতে নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী ২০০৩ দ্বারা বৈধ হয়ে থাকা এনআরসি কে সারা ভারতে বিরোধিতা করছেন কোন যুক্তিতে? তার চাইতেও বড় কথা, সত্যিই কি কংগ্রেস বা বাম বা তাদের সহযোগী কোনও একটি মুসলিম দল (আসামে আজমল আর বাংলায় আব্বাস) সিএএর বিরোধিতায় আন্তরিক? সেই পুরোনো প্রশ্ন, পনেরো বছর ধরে কেউ নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী, ২০০৩ এর বিরোধিতা করার সময় পেলেন না? বিরোধিতা না করুন, জনমত তৈরির উদ্যোগটুকুও নিলেন না? একথা সর্বজনবিদিত যে সিএএর পিছনের মূল যুক্তি হচ্ছে, বাংলাদেশ পাকিস্তান ও আফগানিস্তানে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত সংখ্যালঘু মানুষ পালিয়ে যারা এদেশে ঢুকে পড়েছে তাদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। এবং এই দেশগুলিতে সংখ্যাগুরু বলতে মুসলিম ধর্মাবলম্বী। অর্থাৎ মুসলিম ব্যতীত বাকী ধর্মাবলম্বীরা এদেশে নাগরিকত্ব পাওয়ার অধিকারী। কিন্তু এখানে এসে থমকে দাঁড়াতে হয়।

    ২০০৩ সালের ১৮ ডিসেম্বর উপ প্রধানমন্ত্রী আদবানি নাগরিকত্ব আইন সংশোধনী বিল, ২০০৩ রাজ্যসভায় পেশ করেন এবং এর উপর সংক্ষিপ্ত বিতর্ক হয়। রাজ্যসভার অফিশিয়াল ট্রানস্ক্রিপ্ট অনুসারে মনমোহন সিং বলেছিলেন

    "ম্যাডাম এই বিষয়ে বলতে গিয়ে আমি শরণার্থীদের সঙ্গে ট্রিটমেন্ট সম্পর্কে কিছু বলতে চাই। দেশ বিভাগের পরে, বাংলাদেশের মতো দেশগুলিতে, সংখ্যালঘুরা নির্যাতনের মুখোমুখি হচ্ছে এবং আমাদের নৈতিক বাধ্যবাধকতা হল যে পরিস্থিতি যদি মানুষকে, এই দুর্ভাগা মানুষগুলিকে আমাদের দেশে আশ্রয় নিতে বাধ্য করে, তবে এই হতভাগ্য ব্যক্তিদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে আমাদের দৃষ্টিভঙ্গিকে আরও উদার করতে হবে। আমি আন্তরিকভাবে আশা করি যে মাননীয় উপ-প্রধানমন্ত্রী ভবিষ্যতে নাগরিকত্ব আইন সম্পর্কিত কর্মপদ্ধতি নির্ধারণের ক্ষেত্রে এ বিষয়টি মনে রাখবেন।”
     
     বিজেপির ফাঁস করা ২০১২ সালে লেখা একটি চিঠিতে সিপিআই-এম এর তৎকালীন প্রধান প্রকাশ করাত, বাংলাদেশ থেকে নিপীড়নে পালিয়ে আসা সংখ্যালঘু মানুষদের জন্য নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের দাবি জানিয়েছিল এবং এই বিষয়ে তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে তাঁর আগের বক্তব্য স্মরণ করিয়ে দিয়ে করিয়ে দিয়ে চিঠি দিয়েছিলেন।

    কারাত লিখেছিলেন, “এই চিঠি পূর্ববাংলা থেকে আগত বিপুল সংখ্যক শরণার্থীর নাগরিকত্ব সমস্যার দিকে আপনার দৃষ্টি আকর্ষণ করার জন্য লেখা, যাদের বাংলাদেশ থেকে, তাদের নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতার বাইরের পরিস্থিতিতে, দেশ ছেড়ে পালাতে হয়েছিল। এদের সঙ্গে যাঁরা অর্থনৈতিক কারণে ভারতে এসেছেন তাঁদের পরিস্থিতি আলাদা। আমরা নাগরিকত্বের নির্দিষ্ট ইস্যুতে সকল সেকশনের জন্য একটি মানবিক দৃষ্টিভঙ্গির পক্ষে। আমরা ২০০৩ সালে সংসদে বিরোধী দলীয় নেতা হিসাবে আপনার বক্তব্যে দৃঢ় মতামত শেয়ার করেছিলাম।” মনমোহন সিং কিন্তু তাঁর বক্তব্যে বাংলাদেশে ধর্মীয় কারণে অত্যাচারিত সংখ্যালঘু উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবার কথাই বলেছিলেন স্পষ্টভাবে এবং সরাসরি। কারাটের মতো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে সব বললাম, আবার পরবর্তী কালে অস্বীকার করার রাস্তাও খোলা রাখলাম, এমন ভেক ধরেননি।

    বিজেপি এই দুটি বক্তব্য ফাঁস করে দেওয়া মাত্র তার অভিঘাত এতো তীব্র হয় যে সিপিএম এর সর্বোচ্চ নেতৃত্ব ব্যাখ্যা দিতে বাধ্য হয়। তারা প্রকাশ কারাতের চিঠির বয়ান পরিবর্তিত না করে, ব্যাখ্যা হিসাবে বলে, কারাত (অর্থনৈতিক সমস্যা ছাড়া কোন অনিয়ন্ত্রিত পরিস্থিতিতে বাংলাদেশি মুসলিমরা এদেশে বিপুল সংখ্যায় শরণার্থী হবেন, তা অবশ্য কারাত ব্যাখ্যা করেন নি) বাংলার উদ্বাস্তুদের মধ্যে ধর্মীয় ভেদাভেদ না করেই উদ্বাস্তুদের নাগরিকত্ব দেবার দাবি জানিয়েছিলেন। ডঃ সিং এর ঘাড়ে বন্দুক রেখে কারাত উদ্বাস্তু সমর্থন ফিরিয়ে আনতে চেয়েছিলেন, কিন্তু বেগতিক দেখে ১৮০ ডিগ্রি পাল্টি খেয়েছেন। সিপিএম-এর পক্ষ থেকে স্বাভাবিকভাবেই বিজেপির বিরুদ্ধে সত্য বিকৃত করার অভিযোগ আনা হয়। বিবৃতিতে বলা হয়, সিপিআই (এম) সর্বদা চেয়েছিল পূর্ব পাকিস্তান (পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশ) থেকে আগত বাঙালি সংখ্যালঘু শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হোক। “তবে সিএএ ধর্মীয় পরিচয়ের ভিত্তিতে এবং মুসলিম অভিবাসীদের বাদ দিয়ে তা করে। সিপিআই (এম) কোনওভাবেই মুসলিম অভিবাসীদের নাগরিকত্বের জন্য বিবেচনা করা থেকে বঞ্চিত করার দাবি জানায়নি। বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে যে, সিপিআই (এম) ২০১২ সালের এপ্রিলে পার্টির ২০ তম কংগ্রেসে 'বাঙালি শরণার্থীদের অধিকারের জন্য' একটি প্রস্তাব গৃহীত হয়েছিল, যাতে এই বিষয়ে পার্টি তার অবস্থান তুলে ধরেছিল। 

    এই প্রস্তাবে স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছিল যে বাংলাদেশ থেকে শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার কথা বিবেচনা করার সময় আসাম চুক্তি রক্ষা করা উচিত। এর অর্থ আসাম চুক্তি অনুসারে একাত্তরের মার্চের ভিত্তিবর্ষের তারিখটিকে ডিসটার্ব করা উচিত নয়। সিএএ অসমের এই ভিত্তিবর্ষের সীমা লঙ্ঘন করে। সিএএ-র ভিত্তিবর্ষ ধরা হয়েছে ২০১৪ সাল। এই কারণেই অসমীয়া জাতিসত্তার স্বঘোষিত প্রতিনিধিরা সিএএ-র বিরোধিতা করছে। স্বাভাবিক কারণেই সিপিএম কংগ্রেস অন্যবামদলগুলি এবং এআইডিইউএফ সিএএ বিরোধী। বাংলায় পরিস্থিতি উল্টো, তাই অবস্থানও উল্টো। আসামে কংগ্রেস এবং বাম-রা এনআরসির পক্ষে সিএএ বিরোধি। বিজেপি আসামে সংশোধিত এনআরসি-র প্রতিশ্রুতিদাতা কিন্তু সিএএ নিয়ে নিশ্চুপ। বাংলায় সিপিএম কংগ্রেস এনআরসি এবং সিএএ উভয়েরই বিরোধী, যেমন বিজেপি বাংলায় দুটোরই সমর্থক। তৃণমূল এ বিষয়ে নির্বাচনকালে প্রায় কিছুই বলছে না। প্রত্যেকের একই কৌশল। যস্মিন দেশে যদাচার।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • ভোটবাক্স | ২৬ মার্চ ২০২১ | ৩৫০১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • বেকার | 2409:4060:84:9b2b:f9b8:3134:c840:b03c | ২৭ মার্চ ২০২১ ০০:৪৯104120
  • সিপিআই ml সম্ভবত এক মাত্র দল যে আসামে বঙ্গাল খেদাও এর সময় থেকে বাঙ্গালী খেদাও আন্দোলন এর বিরোধিতা করেছে এবং সঠিকভাবেই বিষয় টাকে দারিদ্র্য এবং শোষণ থেকে মানুষের নজর ঘুরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা বলেছে। কিন্তু একটা বামপন্থী দল (সিপিআইএম) কিভাবে অসংখ্য মানুষের stateless হয়ে যাওয়াকে সমর্থন করতে পারে (nrc) ?  যেখানে তাদের ভবিষ্যতে অমানবিক শোষণ, মানবাধিকার থেকে সম্পূর্ণ বঞ্চিত হবার সম্ভাবনা, চরম দারিদ্র্য এবং subhuman existence এর সম্ভাবনা ও রয়েছে  (ভোটাধিকার থাকা নাগরিকের কাছে পানীয় জল পৌঁছায় না, নাগরিকত্ব হীনের কি হাল হতে পারে আন্দাজ করা যায়)। এবং এই লোকগুলোর দেশ ছেড়ে যাওয়ার জায়গা নেই, এদের নাগরিকত্ব গেলে stateless হয়ে যাবে। ফ্যাসিবাদী চিন্তা ভাবনার একটা দল এরকম ভাবে একটা আইডেন্টিটি এর লোকদের টার্গেট করতে পারে যেরকম আমরা জানি germany তে হয়েছিল। সংকট গ্রস্ত পুঁজিবাদ চেষ্টা করে scapegoat খুঁজে পেতে। তার উপর দেশের সব সমস্যা ও পুঁজিবাদের ব্যর্থতার দায় চাপিয়ে দিতে। কিন্তু মার্কসবাদী রা কিভাবে এরকম একটা process কে সাপোর্ট করতে পারেন? ভোটে জেতার জন্য কি বামপন্থী আদর্শ জলাঞ্জলি দেওয়া যায়? Karl Marx stateless হয়ে গেছিলেন কিন্তু নিদারুণ দারিদ্র্য সত্বেও আপস করেননি। সিপিআইএম সমর্থক হিসেবে ক্রমশই হতাশ লাগে। সমাজতন্ত্র,  শোষণমুক্ত সমাজ এসব ideology হয়তো আজকের দিনে শুধু হদ্দ বোকারাই বিশ্বাস করে

  • নাম দেয়া হবে না | 2001:67c:2628:647:d::217 | ২৭ মার্চ ২০২১ ০১:০২104121
  • পাঁচগ্রাম কাগজকলকে বেঁচে দেওয়া গৌতম রায় আজ বিজেপির ক্যান্ডিডেট। আপনারা রাজনৈতিক চর্চাটা জারী রেখেছেন দেখে আশাবাদী হই। এনারসি ক্যা কোনোটাই কিন্তু ফিজেবল নয়। যৌথখামার জাতীয় ফঙ্গবেনে বালছাল। 

  • নাম দেয়া হবে না | 2001:67c:2628:647:d::217 | ২৭ মার্চ ২০২১ ০১:০২104122
  • পাঁচগ্রাম কাগজকলকে বেঁচে দেওয়া গৌতম রায় আজ বিজেপির ক্যান্ডিডেট। আপনারা রাজনৈতিক চর্চাটা জারী রেখেছেন দেখে আশাবাদী হই। এনারসি ক্যা কোনোটাই কিন্তু ফিজেবল নয়। যৌথখামার জাতীয় ফঙ্গবেনে বালছাল। 

  • বিপ্লব রহমান | ২৭ মার্চ ২০২১ ০৯:৫১104130
  • এদের ঘাড় থেকে বাংলাদেশের ভুত কিছুতেই নামছে না। আসামে বাংগালিদের উচিৎ হবে বিজেপি-তৃণমূলকে "না ভোট" দেওয়া। 


    লেখার তথ্য-বিশ্লেষণ ভাল লাগলো! 

  • বেকার | 2409:4060:316:fe2c:2339:7959:5d0c:a99a | ২৭ মার্চ ২০২১ ২৩:৫২104153
  • নাম দেয়া হবে না , NRC CAA feasible না এটা ঠিক নয়। এই লোকগুলোকে রাষ্ট্র বসিয়ে বসিয়ে খাওয়াবে ভাবছেন কি? ভুল ভাবছেন। যতদূর  সম্ভব এদের পেটে ভাতে সিস্টেম এ কাজ করতে হবে। অত্যন্ত সস্তায় শ্রমিক জোগাড় করার সহজতম উপায় এটা। আমেরিকাতে পেটে ভাতে পদ্ধতিতে জেল গুলো চলে। সেগুলো খুব প্রফিটেবল, রীতিমত ব্যবসা। বড়ো ব্যবসায়ীরা জেল কিনে চালায় আর ফুলে লাল হয়।


    https://www.google.com/amp/s/www.voanews.com/usa/americas-business-prisons-thrives-even-amid-pandemic%3famp

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:

CAA, NRC, Assam Vote, BJP, AGP, Congress, CPM, Prakash Karat, CPM on NRC CAA, TMC on CAA NRC
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যুদ্ধ চেয়ে মতামত দিন