পছন্দ | জমিয়ে রাখুন | পুনঃপ্রচার |
ইন্দ্র রায় রোডের বাড়ির সিঁড়িগুলো মস্ত উঁচু উঁচু তেমনি পেল্লায় উঁচুতে সিলিঙ, কড়ি বরগা দেওয়া। রাস্তা থেকে দুটো সিঁড়ি উঠে একটা গম্ভীরমত দরজা, তার প্রায় মাথার দিকে বাঁদিকের কোণায় ফ্রেমের গায়ে লাগানো কলিঙ বেলের বোতাম, পাশের দেয়ালে কালো রঙ দিয়ে লেখা 3/D। পায়ের বুড়ো আঙুলে ভর দিয়ে লম্বাআ হয়ে হাত বাড়ালেও আমার হাত যায় না কলিঙ বেলে, মা বাজায়, জিজি বাজায়, কুটুবাবুও বাজায়। ইস্কুলে ভর্তির পরীক্ষা আমি শুধু গোখেলেই দিয়েছিলাম। পরীক্ষা আবার কি! মিস ব্যানার্জি এ বি সি ডি জিগ্যেস করল আআর একটা ছড়া। বা বা ব্ল্যাকশিপ বলেছিলাম। অ্যাল! করল নয় করলেন বলতে হয় মা বলেছে। আমার তখনো ছয় বছর পূর্ণ হয় নি তাই ক্লাস ওয়ানে নেওয়া হয় নি। নতুন ক্লাসের ভর্তি নাকি অনেকদিন আগেই হয়ে গেছে, বাবা মা কটক থেকে এসে আমাকে কোন্নগর থেকে আনতে আনতে জানুয়ারী প্রায় শেষের দিকে। কতসব ইস্কুলের নাম শুনতাম। ইউনাইটেড মিশনারি – নীল রঙের ড্রেস। শাখাওয়াত মেমোরিয়াল গার্লস স্কুল – সবুজ রঙের ড্রেস। কমলা গার্লস – এ তো নাম শুনেই বোঝ যাচ্ছে কমলা রঙের ড্রেস হবে। বাবার ইচ্ছে ইংলিশ মিডিয়াম, মেয়ে স্মার্ট হবে। মা বলে ইংলিশ মিডিয়ামের মেয়েরা স্নব হয়। মনে মনে আওড়াই স্মার্ট – স্নব – স্নব - স্মার্ট। এদের মানেগুলো কাউকে জিগ্যেস করতে হবে। ছোটমামা কিংবা দাদা। হারুকাকার চেনা আছে গোখলে মেমোরিয়ালে, সেই বলে দিয়েছে তাই অফ সিজনেও ভর্তি নেবে। কিন্তু ক্লাস ওয়ানে হল না। মা বলে অক্টোবরেই ছয় বছর পূর্ণ হয়ে যাবে তো, মিস ব্যানার্জি মাথা নাড়ান, ‘হ্যাঁ ডিসেম্বরেই ক্লাস শেষ সামনের জানুয়ারীতেই ওয়ানে উঠে যাবে। এই কটা মাস কেজি-ট্যু’তেই পড়ুক।‘
ইস্কুল থেকে বুকলিস্ট দেয়, বইখাতা, ড্রেস আর ব্যাগ কেনার দোকান বলে দেয়। ফেরার সময় বাবা এলগিন রোডের মোড়ের বাটা থেকে চকচকে কালো পা ঢাকা বেল্ট বাঁধা জুতো আর ধবধবে সাদা নাইলনের মোজা কিনে দেয়। পরের সপ্তাহ থেকে ইস্কুল। দেশপ্রিয় পার্কের কাছে দাস ব্রাদার্স থেকে স্কুল্ড্রেস কেনা হয়, সাদা ফ্রক লাল বেল্ট লাল টাই কালো জুতো সাদা মোজা, চুল বাঁধলে লাল ফিতে সোম থেকে বিষ্যুদবার অবধি। শুক্কুরবারের ড্রেসটা কি সুন্দর। লাল টুকটুকে টিউনিক সাদা ব্লাউজ লাল টাই আর সাদা কেডস। সাদা মোজা। বাবা একটা খাকিরঙের পিঠে আটকানো চৌকো ব্যাগ কিনে আনে , দুদিকে বকলস লাগানো। লালমাথাওলা হলদে রঙের গোপালদার বাসে চেপে ইস্কুলে যাওয়া। ইস্কুলের উল্টোদিকে পিজি হাসপাতাল, সেও লাল রঙের বাড়ী। আমাদের ইস্কুল কিন্তু লাল নয়, হলদে রঙের বাড়ি। একটা কেমন ছাদঢাকা দুদিক খোলা জায়গায় সব গাড়ি আর বাস গিয়ে দাঁড়ায়, ওটাকে নাকি ‘গাড়িবারান্দা বলে। নেমেই দুই তিনটে সিঁড়ি উঠে মস্ত লম্বা বারান্দা আর তাতে সারি দিয়ে ক্লাসঘর। চকচকে সিমেন্টের মেঝে। বারান্দার ঠিক মাঝখান থেকে দুইপাশ দিয়ে সিঁড়ি উঠে গেছে দোতলায় আর সিঁড়ির নীচে দিয়ে চওড়া প্যাসেজ ওপাশের বারান্দায় যাবার। সেই বারান্দা থে মাঝের চৌকো মাঠে নামার সিঁড়ি। মাঠের ধারে ধারে দোলনা আছে স্লিপ আছে, ঢেঁকি আছে। মাঝখানে দৌড়োদৌড়ি করে খেলার জায়গা। সকালে প্রেয়ার হয় পাশের সরলাবালা মেমোরিয়াল হলে। এই হলে একটা দারুণ স্টেজ আছে। ইস্কুলের দিনে ভারী ভারী পর্দা ঝুলিয়ে ঢাকা থাকে। আমার খুব ইচ্ছে করে ওই স্টেজে দাঁড়িয়ে কিছু একটা করতে। কিন্তু আমি তো কিচ্ছু পারি না।
ইস্কুলে কত কি করতে হয়। কবিতা পড়া, গল্প বলা, অঙ্ক শেখা। শুক্রবারে খেলা আর পিটি করার ক্লাস থাকে, কোন কোনদিন একতাল করে নরম রবারের ডেলা দিয়ে আমাদের পুতুল বানাতে বলেন মিস গাঙ্গুলি। আমি পারি না, বসে বসে রাস্তা বানাই তাতে তিনকোণা ছাদওলা বাড়ি। বাড়িতে কোনও বইখাতা নেই। সব ইস্কুলে রাখা, ইস্কুল থেকে বাড়ির কাজ কিছু দেয় না। বাড়ি ফিরে আমার আর সময় কাটে না। বাড়ির সেই অনেক উঁচুতে কড়িকাঠ দেওয়া ছাদ, খড়খড়ি দেওয়া লম্বা লম্বা জানলা আর ইয়াম্মোটা রেলিংওলা ছাদ। ছাদের রেলিং মনে হয় কুড়ি ইঞ্চি ইঁটের ছিল, আমি নীচের ধাপিতে উঠে রেলিঙের উপরে বুক চেপে ঝুঁকলেও রেলিঙের কিনারা অবধি পৌঁছাতে পারি না। কখনো ছাদে দাঁড়াই, কখনো নীচের রান্নাঘরের সামনের বারান্দায় দাঁড়িয়ে নীচে ঝুঁকে শোভাদিদিদের বাড়ি দেখি। কলতলার টিনের ছাদে মোটামত একটা কাক ডানা ঝাপটে লাফিয়ে লাফিয়ে কিসব খায়। ঠিক উল্টোদিকের বাড়িটা বিশ্বাসবাবুদের, ছাদে উঠলে ‘বিশ্বাসের মা' বলে আমার কাকটা আজ খেতে আসে নি, কোথায় যে গেল! ডানদিকে সরু গলির পরে দেবযানীদের বাড়ী, দোতলা থেকে ঘোরানো লোহার সিঁড়ি উঠে গেছে ছাদে, ওদের দোতলাতেও একটা ছাদ আছে আবার তিনতলাতেও! ইন্দ্রাণীদি, দেবযানীর দিদি বিকেল পাঁচটা বাজলেই পড়তে বসে দোতলার ঘরে জানলার পাশে। কী করি? কী করব? জিজি আসবে সাড়ে সাতটা আটটার পরে। মন্টুদাদা ওদের গ্রামের গল্প বলে। সব গল্প শোনা হয়ে গেছে, নতুন গল্প জানে না। মা'কে বলি গল্প বলো। গল্প বলার আবদার বাড়তে থাকে, মা যদিও গল্প প্রায় বলেই না, আমার ঘ্যানঘ্যান তবু থামে না।
ইস্কুলে যেতে শুরু করার এক কি দুই সপ্তাহের মধ্যে মা একদিন বিকেলে বেরোল, আমাকে নিল না, মন্টুদাদার কাছে রেখে বেরোল আর রমেশ মিত্র মোড়ের নাথ ব্রাদার্স নাকি তার সামনের ফুটপাথ থেকে একটা শুকতারা আর একটা চাঁদমামা কিনে নিয়ে এলো। হাতে দিয়ে বলল পড়ে দেখ এতে কত্ত গল্প আছে। সব নতুন নতুন গল্প। প্রথমেই আমি অবশ্য শোনার আরাম ছেড়ে পড়ার কষ্টে যেতে চাই নি। পড়ে শোনাবার কথা বলায় মহিলা তাঁর টিপিক্যাল ভুরু কুঁচকে কপালে ত্রিশূল বানিয়ে তাকালেন, বাপরে ঐ ত্রিশূল দেখলে আমরা তো কোন ছার দাদু পর্যন্ত থমকে যেত! কাজেই একটা দুটো করে পাতা উল্টাতে শুরু করি আর মায়ের আক্ষেপ চলতে থাকে .. বুড়োধাড়ি মেয়ে এখনও বই পড়তে শিখল না! গল্পের বই পড়ে না এ কি আমাদের বাড়ির মেয়ে না অন্য কোথাও থেকে এসেছে? শুকতারা বেরোত প্রতিমাসে আর চাঁদমামা প্রতি সপ্তাহে। সপ্তাহে একবার করে একটা নতুন বই পাওয়া সেও মনে হত কত্ত দেরী করে যে আসে! এই করতে করতে এসে গেল দুর্গাপুজো আর পুজোর ঠিক আগে আগে জিজি নিয়ে এলো 'পুরবী' নামে দেব সাহিত্য কুটীরের একটা ইয়াম্মোটা পুজোবার্ষিকী! উহ সে যেন এক রত্নখনি! শিশুসাহিত্যে সেই সময় মামা আর দাদাদের রাজত্ব। সেই বগলামামা, অমরেশমামা, পল্টু-কানু-বাঞ্ছু, পিন্ডিদা, সাধু কালাচাঁদ দের কান্ড কারখানা আমাকে একেবারে স্নান খাওয়া ঠাকুর দেখাও ভুলিয়ে দিল। হ্যাঁ সেইবারই বোধহয় নতুন বার্মিজ লুঙ্গি আর টপ পরে জিজির সাথে ঠাকুর দেখতে বেরিয়ে ভবানীপুর থানা আর আশুতোষ কলেজের মাঝামাঝি কোথাও রাস্তার ফুটপাথে জলকাদার মধ্যে থেবড়ে বসে পড়েছিলাম।
বাবা তখন বোম্বে যায় ট্যুরে আর ফেরার সময় আমার জন্য ফ্রক কিনে আনে। ছোটদি বলে সেসব জামার রঙ ডিজাইন সবই নাকি নতুন রকম। এবারে এনেছে গোড়ালির কাছে সুতোর কাজ করা হলদে আর কমলা রঙের দুটো লুঙ্গি আর আর সুতোর কাজ করা টপ। নতুন জামা পরিয়ে জিজি বেরোল আমায় নিয়ে ঠাকুর দেখতে। বকুলবাগান, সঙ্ঘমিত্র আর মুক্তদলের ঠাকুর দেখে বিজলী সিনেমা আর ভবানীপুর থানার মাঝখানের গলি দিয়ে বেরিয়ে বড়রাস্তায় উঠে থানা থেকে হাজরামোড়ের দিকে দু’চার পা এগোতেই জিজি দেখলাম রাস্তায় বসে পড়ল থপাস করে তারপর আমার দিকে হাত বাড়িয়ে দিল। আমি দেখি রাস্তায় কত জলকাদা, একটু কেমন লাগল, কিন্তু জিজি তো হাত বাড়িয়ে আছে। আমিও তাই বসে পড়লাম। আর অমনি জিজি হাঁউমাউ করে জোরে জোরে কিসব বলতে লাগল। কোত্থেকে দুজন লোক এসে জিজির হাত ধরে টেনে দাঁড় করিয়ে আমাকেও টেনে তুলে দিল। জিজির শাড়ি আমার লুঙ্গি জলকাদায় মাখামাখি। জিজি একটু কেৎরে লেঙচে হাঁটছে। রাস্তা পেরিয়ে ইন্দিরা সিনেমার পাশ দিয়ে ঢুকে এসে সোজা বাড়ি, খুব ভয়েভয়ে জিজি মা’কে বলে ও যে কেন রাস্তায় বসে পড়ল কি জানি! নতুন জামাটা নষ্ট হয়ে গেছে, লন্ড্রীতে দিলেই ঠিক করে দেবে। মা কেমন অবাকমুখে আমার দিকে তাকাতেই আমি বলে দিই জিজি যে রাস্তায় বসে আমার দিকে হাত বাড়াল তাইজন্যই তো আমিও বসলাম। ওমা অমনি মা ভীষণ জোরে জোরে হাসতে শুরু করে দিল! সঙ্গে সঙ্গে জিজি আর মন্টুদাদাও। বড়রা কেমন অদ্ভুত হয় দেখো! তিনজনে মিলে হেলেদুলে হেসেই যচ্ছে হেসেই যাচ্ছে! এরপরে তো বাবা , কুটুবাবু, পিসামশাইরা ছোটমামা, দাদু-দিদা যে যখন এলো একপ্রস্থ করে হেসে গেল। সেই টেনিদা বলে না মুখে শাঁকালুর দোকান খুলে বসেছে, এরা অবিকল তাই।
পুজোর পরে বিজয়া করতে যাওয়া হত কোন্নগরে মামাবাড়ি আর কল্যাণীতে মীনামার বাড়ি। এমনিতে এই দুই জায়গাতেই যেতে আমি খুব ভালোবাসি। এই দুটো বাড়িতেই মা’র কপালে ভুরুর ত্রিশূল তেমন গভীর হয়ে তৈরী হত না। কিন্তু এই প্রথমবার আবিষ্কার করলাম এই দুটো বাড়িতেই একটা করে গুপ্তধনের গুহা আছে। কোন্নগরে দোতলার মাঝের ঘরে আর একতলার বসার ঘরে জানালার উপরের তাকে। মীনামার বাড়িতে সেটা পুরোটাই দোতলার ঘরে। মীনামার বাড়িটা ভারী মজার ছিল, প্রত্যেকটা ঘরে আলাদা ডিজাইনের আর রঙের মোজাইক, সিঁড়ি টুকটুকে লাল আর ধারে চওড়া কালো বর্ডার। সিঁড়ি দিয়ে উঠেই একটা মস্ত চৌকোমত ঘর আর তার তিনদিকের দেয়াল জুড়ে জানালা, একদিকের দেয়ালে দেওয়াল আলমারী। তাতে ঠাসা সব দেব সাহিত্য কুটিরের পুজাবার্ষিকী আরো কত কত বই। এই ঘরটার মেঝেতে কিন্তু মোজাইক নয় রেড অক্সাইডের লাল টকটকে মেঝে আর ঐ চওড়া কালো বর্ডার। কোন্নগরের বাড়ির সবগুলো ঘরের মেঝেই লাল চকচকে আর দেওয়াল থেকে একটু ছেড়ে দেড় ইঞ্চি সরু কালো বর্ডার , চারকোণে একটু কোণাচে ঢেউ খেলানো। সেইসব লালমেঝে বছরের পর বছর ধরে ছবিরমা-মাসী বা জ্ঞানদাদির ঘষে ঘষে মোছার ফলে এমন চকচকে মসৃণ যে ঝুঁকে দিব্বি নিজের মুখ দেখা যায়। আর গরমকালে একটা বই নিয়ে সেই মেঝেতে হাত পা ছড়িয়ে শুতে যে কি আরাম কি বলব! তা মামাবাড়ির একতলার বসার ঘরের উপরের তাকেও অমনি দেব সাহিত্য কুটিরের পুজাবার্ষিকী। দোতলার মাঝের ঘরেও অনেক বই, তবে তার মধ্যে অনেকগুলো নাকি 'বড়দের বই' তাই আমি পড়তে পারবো না। ছোটমামা আবার 'আনন্দমেলা' নামে একট বড়সড় লম্বা চওড়া বই কিনে এনে রেখেছে। আমাকে আর পায় কে। সেই 'বড়দের বই'গুলো অবশ্য আমি ক্লাস ফাইভের মধ্যেই শেষ করে ফেলেছিলাম, তবে সেসব গোপন কথা এখন থাক।
সেইসব বাড়িগুলো, লাল চকচকে মেঝেগুলো, সেইসব মানুষগুলো সঅব অন্য ডাইমেনশানে চলে গেছে, শুধু মাথাভর্তি হয়ে রয়ে গেছে তাদের গল্পগুলো।
পছন্দ | জমিয়ে রাখুন | গ্রাহক | পুনঃপ্রচার |
এই অন্য ডাইমেনশনে যারা চলে গেছে তাদের গল্পগুলো ধরে রাখা খুব জরুরি।
হাঁ করে গিলছি। নিজের ছোটবেলা মনে পড়ছে। আঠেরো বছর বয়সে আমার একটা ঠেক ছিল ইন্দ্র রায় রোড, স্টেট ব্যাংকের সামনের ফুটে চায়ের দোকান, সিভাকো নামের একটা দোকানের সামনের ফুটপাথ, রাত এগারোটা পর্য্যন্ত আড্ডা। গতবছর সেই জায়গাটা পায়ে হেঁটে ঘুরলাম।
পড়ছি ...
দময়ন্তীদির লেখায় আমি খুব ইউনিক একটা জিনিষ পাই। লেখাগুলো সবই অসম্ভব ডিটেল। মনে হয় খুব কারুকার্য্য করা একটা কাঠের ফলক, যেটা শুধু চোখ দিয়ে দেখলেই হয়না। হাত দিয়ে ছুঁয়ে ছুঁয়ে তবে পুরো নক্শাটা বুঝতে হয়। লেখকের প্রত্যেকটা অনুভূতির খাঁজ, ভাঁজ, এখানে একটু টোল, ওখানে গোল হয়ে ঘুরে আসা, সব ছুঁয়ে বুঝতে পারা যায়। কিন্তু আবার সেই একই সাথে পুরোটার মধ্যে একটা অদ্ভুত নির্মোহ ব্যপার থাকে। নিরপেক্ষ দর্শকের জায়গা থেকে দেখার মত একটা অনায়াস ডিট্যাচমেন্ট। ফ্যালাসি হয়ে যাচ্ছে, কিন্তু আমার এইরকমই লাগে। এটা একটা অদ্ভুত ভালোলাগা দেয়।
বেশির ভাগ লেখকই লেখার ইমোশনের সাথে খুব মিশে যান।
আমরা যারা ৭০-৮০র দশকে ছোট ছিলাম তাদের ফেলেআসা দিনগুলোর ছবি কী ভীষণ মিলে যাচ্ছে।
একটা ছোট্ট সংশোধন। সাখাওয়াত মেমোরিয়ালোর পোষাক ছিল নীল স্কার্ট সাদা ব্লাউজ । সবুজ নয়। আমার শৈশব আর কৈশোর তো । তাই একটু বেশী আবেগ।