এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • দ্রোহহীন

    স্বাতী রায় লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১৩৯২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • নবীন, সদ্য-স্নাত অজগরের মতন চকচকে বিটি রোড। তার থেকে দুমুখে দুই রাস্তা। এক রাস্তা গেছে গঙ্গার দিকে। সে পথ ভক্তির। গঙ্গার দিকে চলেছে। আগে এ পথে অনেক স্নানার্থীর দেখা মিলত। এই ভোরের দিকে। এখন সে সব অতীত। মাঝে সাঝে দু চার জন বুড়ো মানুষের দেখা মেলে । বুড়ো না, বুড়ি বেশির ভাগই। মাথায় চড়ানো ভিজে গামছা। কপালের ডাগর তিলক দেখে বোঝা যায় স্নানফেরত। এক হাতে জল ভরা ঘটি । ঠোঁটে অষ্টোত্তরশত নাম। অন্য হাতে শক্ত করে ধরা একটা বাচ্চার হাত। সে নাতিই হোক বা নাতনি। বুড়ির চলনদার।

    কখনো কখনো মুঠিটা শক্ত হয়ে চেপে বসে। দূর থেকে কটা মানুষ দল বেঁধে আসছে। মাথা নীচু। চারজনের কাঁধে খাটিয়া। বল হরি, হরি বোল। রতনবাবুর ঘাটে যেতেও এটাই পথ। সঙ্গে আরও কটা লোক। তাদের হাবভাব দেখেই বোঝা যায়, এ সুখের মরণ নয়। কে জানে কোন মায়ের কোল খালি হল! আজকাল এই ছবিটা বেড়েছে। সময়টা অস্থির। বুড়িও অস্ফুটে বলে ওঠে, বল হরি হরি বোল। আতিপাতি করে মুখগুলো খোঁজে। পরিচিত মুখ আছে কিনা। খুঁজে না পেলে স্বস্তি। অন্য হাতটা কপালে উঠে যায়। উঠেই থাকে, যতক্ষণ না খাটিয়া মিলিয়ে যায় পথের বাঁকে। তারপর অকারণেই একটু ধমক লাগায় সঙ্গের জনকে। তাড়াতাড়ি পা চালা। পড়তে বসতে হবে না বাড়ি গিয়ে?

    বিটি রোডের থেকে আরেকটা রাস্তা চলে গেছে পূব দিকে। এঁকে বেঁকে চলে গেছে রেললাইন অবধি। তার থেকে শিরা উপশিরার মত ছড়িয়ে আছে গলি, গলির গলি, তস্য গলি। সে পথের মালিকানা কিছুদিন আগেও ছিল ফিরিওয়ালাদের। সকাল থেকে দুপুর একের পর এক বিচিত্র সুর উঠত। দুপুরের পর অবশ্য মালিকানা বদল। তখন আসত বাসনওয়ালির দল। রঙিন শাড়ী, কাঁচের চুড়ি, রুপোর পাঁয়জোর। কখনো বা উল্কিও। আলো পড়তে শুরু করলে তারা লুকিয়ে পড়ত। আবার সুর বদল। এবার 'চা-ই ঘুগনি'। গরমের দিনে কুলপি মালাই। এখন সে সব বদলে গেছে। এখন, পথ তুমি কার? পেটো হাতে নকশাল যুবকের। পথ তুমি কার ? ভারী বুটের পুলিশের সেপাইএর।

    ফিরিওযালারা আসে, যায়। পেটের টান তো আছেই। তবু আগের মত জোরালো গলায় আর ডাক আসে না। সব চেয়ে জোরালো গলা ছিল "শিল কাটাও"এর। তাকেই তো সেদিন ...

    বুড়ি সেদিনও ভোরবেলা গঙ্গায় গিয়েছিল। এতটা পথ হেঁটে সবে বাড়ীর গলির মুখে পৌঁছেছে। নতুন বৌমা সেখানে কলতলায় বসে সাবানে ভেজানো কাপড় কেচে তুলছিল। কচি বাচ্চার ঘর, রোজই কাপড় বেরোয় একরাশ। অত জল টেনে টেনে বাড়িতে নিয়ে আসা পোষায় না। সবাই তাই করে অবশ্য। কলের লাগোয়া বাড়ির শুভ্রারা, ওটাই প্রথম বাড়ী এ কানাগলির। তারপর ওদের বাড়ি। তারপর মনাদের বাড়ি। সে বাড়ির পাঁচ ঘর ভাড়াটেরও একই নিয়ম। তাই কলতলায় তখন সব বাড়ির মেয়েদের ভিড়। সবার চোখের সামনে ছেলেগুলো শিল কাটাও কে ঘিরে ধরল। সামনের বাড়ির সরখেলদের ছোটটা, কি যেন নাম, হ্যাঁ তরুণ, দুধ দেয় যে ঘোষেরা তাদের বাড়ির নারান, আরও সব ছেলে পিলে ছিল ভিড়ের মধ্যে। বুড়ি ঘাড়ে মাথায় জল দিয়ে উঠেই দেখে সামনে দলটা। অবাক হয়ে বলে, অ নারান, অরে লইয়া কই যাস। তখনই নতুন বৌমা উঠে এসে শাশুড়ীর হাত চেপে ধরে, গলির মধ্যে টেনে নিয়ে যায়। চাপা গলায় বলে, " সে খোঁজে আপনার কি কাম ? বাড়ি চলেন, বাড়ি চলেন।"

    ***

    রাতের বেলা ছেলেরা খেতে বসলে কথাটা ওঠে ফের। অতু, পুতু আর নান্টু। বড় বৌমার কানে কলতলার কথাটা উঠেছে। সে ঝাঁঝিয়ে উঠে বলে, "মায়ের যেমন কান্ড! ছেলেপিলে নিয়ে ঘর, ওই মানুষ মারা গুণ্ডাদের কাছে আবার জানতে গেছেন, কই লইয়া যাও।" অতু-পুতু দুই ছেলেই একটু বিরক্ত মুখে বড় বৌ এর দিকে চায়। মায়ের মুখে মুখে ঝাঁঝানো এ বাড়িতে এখনো চালু হয় নি। বুড়িও একটু লজ্জিত হয়। বিড়বিড় করে বলে, "নারানরে তো জন্মাইতে দ্যখছি , তাই ভাবি নাই আগুপিছু।" নান্টু কথা ঘোরায়। বলে, "জ্যাঠাইমা জানো তো, ছেলেটাকে মেরে ফেলেছে। হরিসভার মাঠে। গলা কাটা। পুলিশে পুলিশে মাঠ ভরা।" ঘরে নিস্তব্ধতা নামে। আর তখনই গাড়ী এসে দাঁড়ানোর হালকা শব্দ আসে। একটা তো না কয়েকটা। তারপরই গলিতে বুটের শব্দ। ভারী পায়ের আওয়াজ। দরজায় দুমদুম কড়া নাড়ার শব্দ। জোর গলায় হাঁকার, "দরজা খুলুন, পুলিশ।"

    দুই ছেলে তাড়াতাড়ি দরজা খুলতে যায়। এঁটো হাতেই। শব্দ শুনে নতুন-বৌমাও নেমে এসেছে। মেয়েকে খাইয়ে দাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে সে সবে বই খাতা খুলে বসেছিল। পরীক্ষা কবে হবে জানা নেই। যতটা পড়া এগিয়ে রাখা যায়। শব্দ শুনে সে ছাদে গিয়ে দেখেছে, খান চারেক পুলিশের গাড়ী এসে থামল। তাই দেখেই সে ঘুমন্ত মেয়েকে কোলে নিয়ে নেমে এসেছে। বুড়ি তাকেও রান্নাঘরে টেনে নেয়। ওইটুকু রান্নাঘরে চারজন বড়মানুষ প্রায় নিশ্বাস বন্ধ করে থাকে। শুধু নিশ্চিন্তে ঘুমায় কোলের শিশুটি। নান্টুকেও কোলের মধ্যে টেনে নেয় বুড়ি। শক্ত করে ধরে রাখে। নাই বা হল নিজের পেটের ছেলে, কোলে করে মানুষ করেছে তো। বুকের দুধও খাইয়েছে কতদিন! ওদিকে বড় ঘরে বিছানার উপর কাঠ হয়ে বসে আছে অতুর ছেলে-মেয়ে। পুতুর হাতের বেড়ের মধ্যে। পুলিশ ততক্ষণে সব ঘর তছনছ করছে। খাটের তলা থেকে সব জিনিস টেনে বের করে, বই খাতা লন্ডভন্ড করে ... অতু এক ফাঁকে এসে বলে যায়, "কম্বিং অপারেশন হচ্ছে। সব বাড়িতেই একসাথে তল্লাশি হচ্ছে। তোমরা এঘরেই থাকো।" সে অবশ্য থাকা গেল না। রান্নাঘরও খানাতল্লাশি হবে তো। ওইটুকু ঘরে কতজন আর ধরে। তারপর নান্টুকে টানা জিজ্ঞাসাবাদ। উনিশ বছরের ছেলে। বড্ড বাজে বয়স। অতু-পুতুর প্রশ্নোত্তর পর্ব চুকেছে আগেই। একজন সরকারী চাকুরে, একজন মাস্টার শুনে হয়তো বেশি ঘাঁটায় নি। তারপর একসময় ঝড় থামে। সব বাড়ি থেকে পুলিশরা বেরিয়ে এসে গাড়ীতে চাপে। সঙ্গে একদল ছেলে। সরখেলদের বড় আর মেজ। ঘোষ বাড়ির দুই ছেলে। আরও কত জন। বুড়ি নান্টুর গায়ে মাথায় হাত বোলায়। ঠাকুর রক্ষা করেছেন। বাপ-মা পড়ে আছে অন্য দেশে। ছেলেটার কিছু হলে মুখ দেখান যাবে না তাদের কাছে। বার বার নান্টুকে চুপি চুপি বলে, “তুই য্যান ওদের লগে লগে যাস না। পড়া হ্যাষ কইরা সাকরি ল’। বাবা-মারে ওইহান থিকা লইয়া আয়। হেইডা হইল আসল পুত্রের কাম।” নান্টু মাথা নাড়ে। সে জানে। বাবা-মা পালিয়ে এসেছেন বাংলাদেশ থেকে। জমি-জমা পড়ে রয়েছে। কিছু হিল্লে করা যায় নি। দেশভাগ যা পারে নি, মুক্তি যুদ্ধ তাই করে দিল। মা-জ্যাঠাইমার গয়নাপত্র সব ছিল দেশের বাড়িতে। সেসব আর সেই সঙ্গে ধান বেচা টাকা সব জমা দিয়ে এসেছিল তালুকদারদের আড়তে। ওরা এদেশে এনে দেবে কথা ছিল। পড়চিও ছিল। কিন্তু ওদের এখানকার আড়ত থেকে খালি ঘোরাচ্ছে। ও নিজেই তো কতবার গেছে। ছ’মাস হয়ে গেছে। গয়নার কোন হদিশ নেই। আর মনে হয় পাওয়াও যাবে না। নান্টুর বাবা-মা এখন হাওড়াতে। ওর মাসির বাড়িতে। এখানে দুই ঘরের মধ্যে নটা লোক। তাদেরই জায়গা হয় না। তার উপর মাঝে মাঝেই বাংলাদেশের থেকে লোক আসে-যায়।

    ***

    অতজনকে ধরে নিয়ে গেল। মাত্র দু চার জনই ফিরে এলে। বাকীদের খবর পাড়ার লোকের অজানা। সরখেলদের ছোট ছেলেটা পালিয়ে যেতে পেরেছিল। বড় ছেলেটা আর জি করে ডাক্তারি পড়ে। মেজটা ভৈরব চন্দ্র কলেজে। অঙ্ক নিয়ে পড়ে। তাদেরও ধরে নিয়ে গেল!
    এর কিছু দিন পরই সেই ঘটনাটা ঘটল। আবছা কুয়াশায় বাজার করতে যাচ্ছিল অতু। হঠাৎ দেখে লরিটা। সামনে কটা পুলিশের গাড়ী। ধীরে সুস্থে চলে গেল বি টি রোডের দিকে। লরিতে ডাঁই করা একরাশ দেহ। রক্ত ছড়াতে ছড়াতে চলে যাচ্ছে। রাস্তায় যে দু চারজন লোক ছিল, সবাই স্থবির। অতুর বাজার করা হল না। বাড়ি ফিরে এল। রাস্তাও নিমেষে শুনসান। দুপুরের দিকে নান্টু কোথা থেকে খবর নিয়ে এল। আগের দিন আটাপাড়া-হরিসভার ওখানে সারা রাত পুলিশ তান্ডব চালিয়েছে। বাড়ি থেকে টেনে টেনে বের করেছে ছেলেদের। যারা পালাতে গেছে, নির্বিচারে গুলি করেছে। বুড়ি শুনে শিউরে ওঠে। কি যে হচ্ছে, ভালমত বোঝেও না। দুই বৌ বোঝাতে চেষ্টা করে। "মা, অরা সব নকশাল। সব লোকজনরে ধইর‍্যা ধইর‍্যা মাইর‍্যা ফ্যালাইতেসে। দ্যাখেন নাই, সেদিনের শিল-কাটাউটারে কেমন কইর‍্যা ধইর‍্যা লইয়া গেল!" বুড়ি খাবি খায়। বলে, "তয় যে কইসিলা নকশালরা ভাল। মাইনষের ভাল চায়।" এই বার দুই বৌও তথমত খায়। সত্যিই তো, শুরুতে তো সব ভালোই ছিল। ভালো ভালো কথা বলত। কখন যে নকশালেরা ভালোর থেকে খারাপ হয়ে গেল।

    ঘরের মধ্যে সেঁধিয়ে তো দিন চলে না। অফিস-কাছারি, স্কুল-কলেজ সবই তো খোলা। তাই আবার সবাই বাইরে বেরোয়। রক্তের দাগ আর নেই রাস্তায়। উধাও। কিভাবে ? কেউ জানতেও চায় না। সবাই বৌ-বাচ্চা নিয়ে ঘর করে। সব আবার গতিতে ফেরে। শুধু কলতলার উল্টোদিকের আড্ডা মারার জায়গাটা ফাঁকা। সেখানে আর সকাল থেকে বসে থাকা ছেলের দলের দেখা মেলে না। কানাঘুষো শোনা যায়, সরখেলদের ছোট ছেলেটাকে নাকি ওর বাবা-মা মধ্যপ্রদেশে পাঠিয়ে দিয়েছে। সেখানে ওর এক মামা থাকে। ওখানে থেকেই পড়বে। এখানে থাকলে বেঘোরে মারা যাবে। বড়-র নামে পুলিশ কেস দিয়েছে। মেজ’র জিজ্ঞাসাবাদ চলছে। ওদের বাবা-মাকে আর তেমন বাড়ির বাইরে দেখা যায় না। তবে বাতাসে ফিসফিস ভাসে, এ পাড়ায় পুলিশের কোন গুপ্তচর আছে। সেই তল্লাশির রাতে পুলিশ সব বাড়িতে বাড়িতে যেসব জায়গায় সাধারণভাবে কেউ কিছু খোঁজে না, সেখানেও হাত দিয়েছে। জানল কি করে? মাইতিদের বাড়ীতে পায়খানার ঘুলঘুলিতে বই লুকানো ছিল। তাও টেনে বার করেছে। নির্ঘাত ঘরের শত্রু বিভীষণ আছে ।

    ***

    মুক্তিযুদ্ধের শুরু থেকেই বাংলাদেশ থেকে লোকজনের আনাগোনা বেড়েছে। একেকবারে একেকটা দল আসে। কদিন করে থাকে। এদিক ওদিক ঘুরে ফিরে কিছু একটা ব্যবস্থা করে। তারপর চলে যায়। তার মধ্যে বুড়ির মাসির বাড়ির দলটা ছিল অনেকদিন। মাসি অবশ্য নামেই। আসলে বুড়ির থেকেও ছোট বয়সে। অথচ কি কপাল! বড় ছেলেটা কেমন হাবলা মত। একমুখ দাঁড়ি-গোঁফ, জঙ্গল একেবারে। সকালে ঘুম থেকে উঠেই গিয়ে ছাদে বসে পড়ে। সারাদিন ওখানেই বসে থাকে। সারা দিন। ছাদের আলসের উপরে। রোদ-জল-বাতাস কিছুর পরোয়া করে না। বাড়ির লোক ডেকে ডেকে হয়রান। খায়ও না সারাদিন। কটা মুড়ি দিয়ে আসা হয়। তার কিছু নিজে খায়। কিছু কাক-শালিককে খাওয়ায়। ছাদের উপর দড়ির মাচাতে লকলকিয়ে বাড়া ধুঁধুল গাছের উপরেও ছড়ায় খানিক। পাগলের কারবার!

    একদিন পুতু স্কুলের থেকে ফেরে গম্ভীর মুখে। অতু অফিস থেকে ফিরলে দুভাই কিসব শলা করে। তারপর মা’কে ডেকে বলে, "মন্টুকে আর ছাদে যেতে দিও না।" জানা যায়, স্কুল থেকে ফেরার পথে পুতুকে দুটি ছেলে ধরেছিল। বছর পঁচিশেক বয়স। পুতুর অচেনা। তবে তারা নিশ্চয় পুতুকে চেনে। মাস্টারমশাই বলে ডেকেছিল যখন। জানতে চেয়েছে, বাড়ীতে কারা এসেছে। মন্টুর কথা জিজ্ঞেস করেছে। ও সারাদিন ছাদে বসে থাকে কেন, তাও। পুতু জানিয়েছে, ও পাগল। ওরাই সতর্ক করে দিয়েছে, ওকে ছাতে যেতে দেবেন না। বিপদ হতে কতক্ষণ! বিপদ শুনেই বৌদের মুখ শুকনো। কথার ধার বাড়ে। দিদিশাশুড়ী সম্পর্কে, তাই মুখ তুলে তেমন কিছু বলতে পারে না। তবু ঠারে ঠোরে যা বেরোয়, তাই বা কম কি! কিছুদিন বাদে অতিথিরা বাড়ি ছাড়ে। বিদায় দিতে গিয়ে বুড়ির চোখে জল আসে। মাসির অপমানটা গায়ে বাজে। তবু ছেলেপিলের বাড়ি, তাদের বিপদের কথা ভাবলে বুকটা শুকিয়ে আসে।

    তবে এত করেও বিপদ কাটানো যায় না। একদিন খটখট কড়া নড়ে ওঠে। সন্ধ্যেবেলা। সবে উনুনে আঁচ পড়েছে। চায়ের জল চেপেছে। অতু সদ্য অফিস থেকে ফিরে জুতোমোজা খুলছে। এমন সময় সুমন্ত এসে হাজির। বোসবাড়ীর। নান্টুর সঙ্গে স্কুলে পড়ত। সঙ্গে আর একটি ছেলে। থাকার জায়গা চাই তাদের। রাতে। দুই বৌ রান্নাঘরের দরজা থেকে মুখ বাড়িয়ে শোনে। চোখে বিপদ ঘনায়। ততক্ষণে পুতুও এসে দাঁড়িয়েছে অতুর পাশে। দুজনে দুজনের দিকে তাকায়। এড়ানোর উপায় নেই। পাড়ার ছেলে। শুধু বলে, একটু ঘুরে এসো। রাতের রান্না সেরে নিক এরা। তারপর রান্নাঘরে শুয়ো। তারা কিন্তু নারাজ। তাদের দাবী অতু বা পুতুর সঙ্গে থাকবে। এইবার দুই ভাই ঘাড় নাড়ে। সে কিভাবে হবে! না, তা হতে পারে না। তারা চলে যায়। যাওয়ার আগে বলে যায়, মাস্টারমশাই কাজটা ভালো করলেন না। দুই বৌ ভয় চেপে রাখে বুকে।

    কদিন পরে পুতু স্কুল থেকে ফিরে মাকে জানায়, ওরা বোধহয় আমার উপর নজর রেখেছে। কদিন ধরেই দেখছি, রোজ নেতাজী সুইটসের সামনে দাঁড়িয়ে আছে একটা ছেলে। আমি কোথায় কোনদিকে যাচ্ছি তাকিয়ে তাকিয়ে দেখছে। সবাই মিলে পরামর্শ করে। ঠিক হয় দরকার ছাড়া বাড়ি থেকে বেরোন নেই এখন কদিন। অতুর অফিস, পুতুর স্কুল, নান্টুর কলেজ, রবি-ববির স্কুল এতো যেতেই হবে। তা বাদে আর সব বন্ধ। নতুন বৌমার ক্লাসও কদিন কামাই হোক। এখান থেকে কলেজ স্ট্রীট যাওয়া এই অবস্থায়, কলেজ স্ট্রীটে নিত্য গণ্ডগোল এখন, রাস্তাঘাটও চেনে না ভালো করে। কি দরকার! বাড়িতেই পড়াশোনা চলুক, যতদিন না সব শান্ত হয়। নতুন বৌমার মুখটা শুকিয়েই থাকে। ক্লাস বন্ধ হওয়ার দুঃখে নাকি স্বামীর জন্য দুশ্চিন্তায়, কে জানে! রাতের বেলায় রুনিকে থাবড়াতে থাবড়াতে পুতুকে প্রশ্ন করে, "হ্যাঁগো, কিছু বিপদ হবে না তো!" পুতু ঠাকুর প্রণাম শেষ করে বালিশে মাথা দিতে দিতে বলে, "হলে আর কি করা যাবে! স্কুলে যাওয়া বন্ধ করে বাড়ি বসে থাকলে খাবে কি!"

    অবশ্য বেশি দিন ভয়ের সঙ্গে বসত করতে লাগে না। কটা সন্ধ্যের পরেই একদিন রুনিকে কোলে নিয়ে সিঁড়ি দিয়ে উঠছিল নতুন বৌমা। হাতে দুধের বাটি। হঠাৎ দ্রাম দ্রাম করে দুটো শব্দ। পুরো বাড়ি কেঁপে উঠল। ভেজিয়ে রাখা সদর দরজা হাট করে খুলে গেল। শব্দ-ধোঁয়া-টুকরোটাকরা সব হুড়মুড়িয়ে ঢুকে এল। রান্নাঘর আর অতুদের ঘরের দরজার মাঝের এক চিলতে জায়গাটার দখল নিল। প্রচণ্ড শব্দে সিঁড়ির নীচের আলগা হওয়া চূন-সুরকি ঝরে পড়ে ঝাপসা হয়ে গেল বুড়ির বিছানা। বুড়ি পাশেই একটা খুপচিতে বসে মালা জপ করছিল। তাড়াতাড়ি প্রণাম করে জপের থলি নামিয়ে রাখল। ততক্ষণে অন্য সব বাড়ির থেকেও লোক বেরিয়ে এসেছে। কেউ পরপর দুটো বোম ছুঁড়ে পালিয়েছে। গলির মধ্যে, বুড়ির দরজার সামনে। ছেলেরা সব গলির মোড়ে গভীর আলোচনায় ডুব দেয়। মেয়েরা সবাই নতুন বৌমার প্রসংশায় মাতে। বিপদেও মাথা ঠিক রাখায়। অতবড় কাঁসার জামবাটিটা হাত ফসকে পায়ের উপর পড়লে যে কি হত! তার উপর গরম দুধ ভরা। একটু দুধ ছলকেছে খালি, আর কিছুই হয় নি। এইসবের মধ্যে পাশের বাড়ির মনা হাত বাড়িয়ে রুনিকে কোলে নিতে যায়। তখনই দেখে ও জামা প্যান্ট সব ভিজিয়ে ফেলেছে। মনাই সব ছাড়িয়ে ছুড়িয়ে পরিস্কার করে দেয়। তখন রুনি ফুঁপিয়ে কেঁদে ওঠে। সেই কান্না চলে রাতভোর। ববি-রবির হাজার খেলা করার চেষ্টা, বাড়ির সবার, পাড়ার সবার আদর কিছুতেই সেই থেকে থেকে ফোঁপানি থামে না।

    ***

    সব উত্তেজনাই থিতিয়ে আসে একসময়। বিস্মরণের সর পড়ে। নতুন বৌমার কলেজে যাওয়াও শুরু হয় আবার। সে অবশ্য ক্লাস করে, বাড়ি আসে। কোনদিকে তাকায়ও না। উত্তাল সময়ের ঢেউ তাকে ছুঁতেও পারে না। ক্লাসের অন্যরাও একই পথের পথিক। প্রেসিডেন্সি-পোড়ানো আগুন বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারবি-ভাসের সম্মিলিত প্রতিরোধে নিভে যায় ক্লাসরুমের দোরগোড়াতেই। আবার রুটিন ফিরে আসে জীবনে। শুরু হয় বুড়ির গঙ্গাস্নানও। অবশ্য শীতও কেটেছে। সন্ধ্যেবেলার তাসের আড্ডাও শুরু হয় আবার। অতুর ভয়ানক নেশা। মাঝখানে ডামাডোলের বাজারে কদিন বন্ধ ছিল। আড্ডাধারীরা সবাই এই গলির না। তাঁরা রাত-বিরেতে বাড়ি ফিরতে ভয় পাচ্ছিলেন। এখন ভয় একটু কমেছে। অনেকদিন কোন উটকো খবর আসে নি।

    কলতলার সামনের আড্ডাতে আবার একজন দুজন করে এসে বসে। ঘোষেদের নারান ছাড়া পেয়েছে বেশ কিছুদিন। সে এসে বসে সকালে। ভোর ভোর দুধ আনতে গিয়ে বুড়ি একদিন নারানের মা’কে চুপি চুপি বলে, "অ বৌমা, নারানটার বিয়া লাগাও। একলা পোলার মাথার ঠিক থাকে না। " নারানের মা ফ্যাকাসে হাসে। এদিক ওদিক চেয়ে ফিসফিসিয়ে বলে, "আমিও তাই কইতাসি জ্যাঠাইমা। ছেলে মুখ ঘুরায়। কি জানি, পুলিশের মার খাইছে তো, কি হইছে কি জানি! তয় বিয়ায় মন নাই। তারপর বিষণ্ণ হয়ে পড়ে। "মাথার ঠিক তো নাই-ই। মাথা ঠিক থাইকলে কি কোন মাইনষে পুলিশের লগে লইড়তে যায়! মাথাখান বেবাক গ্যাছে গিয়া।" বুড়িও আস্তে আস্তে মাথা নাড়ে। বাড়ি ফিরে আসে। বাড়িতে মেলা কাজ। আগে মনারা রুনিকে সকাল বেলা ওঁদের বাড়ি নিয়ে চলে যেত। সারা সকালটা রুনি ওদের বাড়িতেই থাকত। সেই ফাঁকে নতুন বৌমা কাজকর্ম সেরে নিত, কলেজে বেরোত। দুপুরে রুনিকে নিয়ে এসে খাইয়ে দাইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দিলেই হত। এখন মনা অনেকদিন বাড়ি নাই। মনার মা বলে, মামাবাড়ি গেছে মেয়ে। থাকবে সেখানে এখন। দিদিমা নাকি অসুস্থ। বুড়ি ভাবে, "থাউক কয়টা দিন, মামাবাড়ির আদর খাক। এরপর বিয়া হইলে কোথায় মামাবাড়ি, কোথায় কি! সব তো ভাইস্যা যাইব।" তবে মনা না থাকায় রুনি এখন সকালটা বাড়িতেই কাটায়। তাই বুড়ির কাজ বেড়েছে। সকালবেলায় তাড়াতাড়ি পুজো-আর্চা সেরে নিয়ে রুনিকে না ধরলে নতুন বৌমা কাজ সারতে পারে না। বৌমাদের কাজ ভাগাভাগি করা। সকালে নতুন বৌমা, সন্ধ্যেতে বড় বৌমা। নতুন বৌমা রান্না শেষ করতে না পারলেও বড় বৌমা সকালে রান্নাঘরে ঢুকবে না। তখন বুড়িকেই করতে হবে। তাতে আবার ছেলেরা রাগ করে। মা ঠাহর পায় না কাজের। কি করতে গিয়ে কি হবে, তখন কে সামলাবে! তাই বুড়ি সকালে রুনিকে দেখে। ওর মা কাজ সারে।

    সেদিনও বুড়ি রুনিকে নিয়ে খেলা করছিল। পায়ের পাতার উপর বসিয়ে, দোল দোল দুলুনি। মেয়েটা খিলখিল করে হাসছিল। হঠাৎ তীব্র শব্দটা একবার তার-সপ্তক ছুঁয়েই চুপ। কি হল। রুনিকে কোলে নিয়েই গলির মুখটাতে আসে বুড়ি। এসে যা দেখে তাতে হতবাক হয়ে যায়। সরখেলদের বন্ধ দরজাটা হাট করে খোলা। ওদের উঠোনে একটা চালি শোয়ান। তার উপর পড়ে আছে সরখেলদের বৌ, অরুণ-বরুণ-তরুণের মা। বুড়ি চিক্কুর পাড়ে," ও বৌমা, কি হইছে। অ অতু-পুতু-নান্টু, অ শুভ্রা, অ মনার মা, অ কাজলের মা, অ নারানের মা শিগগির আস, মহা বিপদ। " তড়িঘড়ি রাস্তা পেরিয়ে সরখেলদের উঠোনে পা দেয়। কোলের থেকে রুনিকে ভুঁয়ে নামিয়ে অরুণের মা’কে জড়িয়ে ধরে। সে ততক্ষণে অজ্ঞান হয়ে গেছে। বুড়ির চিৎকারে রাস্তার এপাশে ওপাশে অনেক বাড়ির থেকেই লোক বেরিয়ে আসে। কিন্তু ব্যাপার দেখে কেউ এগোয় না। রাস্তার ওপারে গলির মোড়ে জটলা বড় হয়। মনার মা বড় বৌকে বলে, "শাশুড়ীরে ডাক দাও। পুলিশের মড়া, কেডা যাইব ওইখানে! যেই যাইব, তাইর গুষ্টিশুদ্ধ নাম উঠব পুলিশের খাতায়। অতু–পুতুরেও নিষেধ করো। নিজেরাও যাইও না। " নতুন বৌমা রাস্তার এপার থেকেই রুনিকে হাতছানি দিয়ে ডাকে। চলে আসতে বলে এইপারে। বুড়ি আবার ডাক পাড়ে, “অ বৌমা, একটু জল আন। চোখেমুখে জলের ছিটা দিই। জ্ঞান হারাইছে।”

    ভিড়ের থেকে কেউ এগোয় না। সরখেল-কর্তা দাওয়ায় ঠেস দিয়ে বসেই আছে। একা। কেউ পাশে এসে দাঁড়ায় না। বড় বৌমা অতুকে ডেকে বারণ করে, "খবরদার ওদের ওখানে যাবে না। পুলিশে ছুঁলে আঠারো ঘা। তোমার ভাইদেরও বলে দাও, তারাও যেন না যায়। চাকরী বাকরী নিয়ে টানাটানি পড়ে যাবে।"

    শুধু নারানের মা এগিয়ে আসে। হাতের খাপড়িতে জল। বুড়ির পাশে বসে অরুনের মাকে কোলে টেনে নেয়। মুখে মাথায় জলের ঝাপটা দিতে থাকে। আর বলে, "জ্যাঠাইমা, ওঠেন। আপনে বাড়ি যান। আপনার জন্য হক্কলডি বিব্রত হইতাসে। আমি অরে দ্যাখতাসি। আমরা হইলাম নকশালের বাপ-মা। আপনাগোর থিক্যা আলাদা জাত। এত্তডি ফারাক। আপনে বোঝবেন না।"
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১৩৯২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • মেঘ | 103.77.46.53 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:২৬97064
  • এই গল্প গুলো পড়লে মন কেমন করে৷ কিসের জন্য কে জানে৷ একটা ভুল পথে যাওয়া ডেডিকেটেড লড়াইয়ের হারিয়ে যাওয়া, নাকি মাঝখানে ডুবে যাওয়া মানুষগুলোর জন্য ,  না অন্য কারণ ঠিক বুঝিনা৷ কিন্তু মন খারাপ হয়ে যায়৷    

  • রঞ্জন | 122.162.127.139 | ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:৪৮97065
  • কালীচরণ ঘোষ রোড, রতনবাবু রোড, কুঠিঘাট, নবজীবন যুবক সংঘ, কুম্বিং, আলকাতরা মাখানো নিথর দেহগুলো, আমডাঙা, রাত্তিরে কোনরকমে পালিয়ে আসা ছেলেটির পাশে শুয়ে সারারাত কেঁপে কেঁপে ওঠা--সব মনে পড়ে গেল।

     স্বাতী রায়, জানিনা তখন আপনার বয়েস কত ? জিজ্ঞেস করতে নেই। কিন্তু আপনার দরদী কলমের মায়ায় সব মনে করিয়ে দিলেন। ধন্যবাদ!

  • অরিন্দম ভট্টাচার্য্য | 103.249.6.118 | ১০ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:০৩97120
  • খুব সাবলীল ,চমতকার । ফেলে আসা দিনগুলো মনে পডল - যেন "হাজার চুরাশির মা " ।

  • স্বাতী রায় | 42.110.153.83 | ১২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০১:২৯97159
  • রঞ্জন,  আপনি দেখেছেন? একটু লিখুন না। আমি খুবই ছোট তখন। সদ্য জন্মেছি, হামা দিচ্ছি এই রকম। তাই কিছুই মনে নেই। তবে জানার ইচ্ছে খুব। 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঠিক অথবা ভুল মতামত দিন