এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মানবিক

    Anamitra Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ | ১৮২৫ বার পঠিত
  • এনআরএস-এর ঘটনা কোনো বিচ্ছিন্ন ঘটনা নয়। এরকম ঘটনা বারেবারেই ঘটে চলেছে এবং ভবিষ্যতে ঘটতে চলেছে আরও। ঘটনাটি সমর্থনযোগ্য নয় অথবা ঘৃণ্য অথবা পাশবিক (আয়রনি); এই জাতীয় কোনো মন্তব্য করার জন্য এই লেখাটা লিখছি না। বরং অন্য কতগুলো কথা বলতে চাই। আমার মনে হয় এই ঘটনার মূল কারণ সরকারের যথোপযুক্ত পলিসির অভাব, এবং পলিসি যদিও বা কিছু থেকে থাকে কার্যক্ষেত্রে তার প্রয়োগের অভাব। কোনো নির্দিষ্ট সরকারের কথা বলছি না। কেন্দ্র, রাজ্য, সবাই সমানভাবে দায়ী। আমরা মানুষের বাচ্চা। মুরগীর মাংসের দোকানে একটা নধর মুরগীর দিকে আমাদের চোখ পড়লে হ্যাঁ না বলে উঠতে পাড়ার আগেই "কোনটা? ঐটা?" বলে দোকানী অবলীলায় তার ডানাদুটো ধরে উল্টোদিকে মুড়িয়ে দেন। আমরা জীবজগতের প্রভু। আমরা Foie Gras খাবো বলে অগণিত হাঁসেদের মুখে ধাতব নল পুরে জোর করে খাবার ঢুকিয়ে ঢুকিয়ে তাদের লিভার বড় করা হয়। অন্যপ্রাণীকে অকারণ আঘাত করতে বিন্দুমাত্র বাধে না আমাদের। কথাতেই তো আছে, "রাস্তার কুকুর বিড়ালের মতো লাথি ঝ্যাঁটা..."! আর মেরে ফেলা? সে তো কেরালায় দীর্ঘদিন ধরে হয়ে এসেছে। একসময় বন্দুকও বিক্রি হয়েছে প্রকাশ্যে কুকুর মারার জন্য। সেই বন্দুকের দামের ওপর আবার ৫০ শতাংশ নাকি ছাড়ও পাওয়া যেত কুকুর খুন করার পূর্বঅভিজ্ঞতা থেকে থাকলে। হায়দ্রাবাদে গত বছর মে মাসে ১৫০, এবং অক্টবরের শুরুর দিকে প্রায় ১০০টি স্ট্রে ডগকে বিষ খাইয়ে মারা হয়েছে। শুধু কুকুর নয়, দুন্দিগল-এর এয়ারফোর্স অ্যাকাডেমীতে রীতিমত লিখিত পড়িত ভাবে শার্পশুটার ভাড়া করে ৫০টি বুনোশুকর মারা হয়েছিল গতবছর। কেন? --- কারণ তারা ফ্লাইট টেক অফ-এর সময় রানওয়েতে চলে আসতো বলে নাকি বড় ধরণের দুর্ঘটনার সম্ভাবনা ছিল যেকোনো দিন। কনট্র্যাক্ট পেয়ে সফলভাবে কাজটি করেছিলেন যে শুটার, নবাব শফথ আলী খান, তিনি অবশ্য জানিয়েছিলেন যে তাঁরা শুধুমাত্র বেছে বেছে আলফা মেল শুয়োরগুলিকেই মেরেছেন যাতে বংশবিস্তারের হারের উপর নিয়ন্ত্রণ রাখা যায়। ডিস্ট্রিক্ট ফরেস্ট অফিসার জানান যে তাঁরা সামসাবাদ এয়ারপোর্টের মতো শুয়োরগুলোকে ধরতে যাওয়ার কষ্ট করতে যাননি! পয়েন্ট থ্রি নট নট সিক্স টেলিস্কোপিক রাইফেল দিয়ে এক্কেবারে মেরে দিয়েছেন। একদম ব্রেন লক্ষ্য করে গুলি করা হয়েছে যাতে শূকরগুলি কম কষ্ট পায়। তারপর গতবছরের শেষের দিকে অবনী-র ঘটনা তো আমাদের সবারই জানা নিশ্চয়ই। তো, এইভাবেই অন্যান্য নানান ভয়ানক প্রজাতির সাথে প্রজাতিগত দ্বন্দ্বে জয়লাভ করার মধ্য দিয়ে আমরা নিরীহ মানুষের বাচ্চারা বেঁচে আছি। আমাদের প্রজাতির মধ্যেও কখনও সন্দেহজনক মোবাইল চোর কিংবা বেপরোয়া ট্রাক ড্রাইভার জাতীয় দুর্দমনীয় কোনো ভয়াবহ ধরণের জীবের দেখা মিললে আমরা ধরে গোড়ালির শিরা কেটে দিই। অথবা খুঁটিতে বেঁধে ততক্ষন অবধি পেটাই যতক্ষণ না পুরোপুরি মরে যাচ্ছে। এইভাবে যুগযুগান্ত ধরে পৃথিবীকে নবজাতকের বাসযোগ্য করে তুলে তবেই রোজ রাত্রে নিশ্চিন্তে নিদ্রা যাচ্ছি আমরা। এখন একথা খুব স্বাভাবিক যে হাসপাতাল হোক অথবা রেসিডেন্সিয়াল এস্টেট, কোনো একটি নির্দিষ্ট অঞ্চলে জনঘনত্ব সীমাতীতভাবে বেড়ে গেলেই যেখানে নানানরকম বাওয়ালের সম্ভাবনা বেড়ে যায় সেখানে মনুষ্যব্যতীত অন্য প্রজাতির প্রাণীর সংখ্যা বাড়লে সংঘাত তো লাগবেই এক না একদিন। এই পরিস্থিতি ঠেকানোর জন্য স্টেরিলাইজেশন বলে একটা ব্যাপার হয়, স্পেয়িং বা নিউটারিং-ও বলা হয় যাকে। এলাকাভিত্তিক ভাবে ভুলু এবং মেনিদের স্টেরিলাইজ করার কি একটা যেন ব্যাপার রয়েছে শুনেছি কর্পোরেশন মিউনিসিপালিটি ইত্যাদিদের। মানে, শুনেছি যে হয়, কিন্তু হয়েছে বলে শুনিনি কখনও। ভুলুদের সাধারণত ৬ থেকে ৯ খানা ছানা হয় একেকবারে। তার মধ্যে গড়ে খানতিনেক বাঁচে। এইবার ২ টো থেকে একবছরে যদি হয় পাঁচটা, পরেরবছর কটা হবে? তার পরের বছর কটা হবে? একটা পাড়ায় ওদের খাবার তো দেয় দুটো কি তিনটে বাড়ি থেকে। এতগুলো ছানা খাবে কি? যাবে কোথায়? অনেক ভেবেছি, উত্তর পাইনি! তার ওপর আবার সাইনোফোবিয়া বলে একটা মানসিক ব্যাধি হয়। এটা অনেকেরই থাকে, অধিকাংশই জানে না। এরকম হতেই পারে যে সুযোগ বুঝে একজন সাইনোফোবিক বিষমেশানো ভাত রেখে আসলো জায়গায় জায়গায়। কারণ সে সাইনোফোবিক। তার পাড়ায় তিনটে গলি। গলিগুলো ২০০ মিটার করে। আর এই তিনটে গলিতে ভুলুর সংখ্যা মোট ১৭। তিন বছর আগে পাঁচটা ছিল। তখন অসুবিধা ছিল না। এখন এই সাইনোফোবিক ব্যক্তি যদি মানসিকভাবে উপদ্রুত বা বিপর্যস্ত হয়ে পরে এই অস্বাভাবিক সংখ্যাবৃদ্ধির ফলে দোষটা কার?

    দোষ কারো নয় গো মা --- আমাদের দেশের সরকারগুলো ভোট দেওয়া ট্যাক্স দেওয়া মানুষদেরই দায়িত্ব নিয়ে উঠতে পারলো না এখনও। এরা যে অবলা জীবের দায়িত্ব নেবে এমন আশা রাখি কোন সাহসে! একবার খুব নিরুপায় হয়ে এক সরকারি শেল্টারে ফোন করেছিলাম দুটো বেড়ালছানার জন্য আশ্রয় চেয়ে। তাঁরা বলেছিলেন, "এখানে পাঠাবেন না দাদা, মরে যাবে! তার চেয়ে মাসখানেক বয়স হলে আশেপাশে কোনো বাজার অঞ্চলে ছেড়ে দিতে বলুন"। এদিকে যে ছানাদুটোর কথা হচ্ছে তাদের মা কে গলায় কোপ দিয়ে মেরেছিলো বাজারেরই এক কসাই। ওদের তখন দিন কুড়ি বয়স। প্রাইভেটেও ফোন করেছিলাম। বললো বেড়াল প্রতি দশহাজার জমা করিয়ে দেবেন আর মেডিক্যাল কার্ড করাতে হবে; ইনজেকশনের খরচ আলাদা।

    একেকটা ঘটনা ঘটে যায় তারপর আমরা ভাবতে বসি। আমরা হইচই জুড়লে একেকটা ঘটনায় কিছু মানুষ দোষী সাব্যস্ত হয়ে শাস্তি পায়। কিন্তু তাতে পরবর্তী ঘটনাটা ঠেকানো যায় কি? আমাদের দেশের রাজনৈতিক দলগুলো মানুষের দায়িত্ব নিতে গিয়ে কেউ বংশপরম্পরায় অন্য বংশের নাম ভাঁড়িয়ে দেশশাসন করছে তো তাদের বিরোধীতা করতে গিয়ে কেউ হিন্দুর দায়িত্ব নিয়ে বসে থাকছে। তার উপর আবার কেউ উচ্চবর্ণের দায়িত্ব নিচ্ছে তো কেউ দলিতদের। কেউ শিয়াদের দায়িত্ব নিচ্ছে তো কেউ সুন্নিদের। শালা গোটা মানুষ ব্যাপারটার দায়িত্বই কোনো রাজনৈতিক দল নিয়ে উঠতে পারলো না আজ অবধি। অবলা জীবরা তো ভোটও দেয় না আর ট্যাক্স-ও দেয় না। ওদের কথা ভাবতে বয়েই গেছে এই মনুষ্যরূপী বেবুনের বাচ্চাদের। এরা শুধু সংসদ-বিধানসভা আলোকিত করে বসে থাকবে আর ২৬শে জানুয়ারীর দিন প্যারেডের সামনে দাঁড়িয়ে স্যালুট ঠুকবে। স্পিচ-ও তো দিতে হবে তাছাড়া! এতসব কি কম কর্তব্য! দু-একটা বিচ্ছিন্ন ঘটনায় আদপেই আমাদের (ধৃত)রাষ্ট্রের কিছু যায় আসে না!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৫ জানুয়ারি ২০১৯ | ১৮২৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Anamitra Roy | 671212.206.342323.173 (*) | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:২৮50439
  • খাওয়ার জন্য মেরে ফেলাটা অন্য বিষয়। আমরা যখন হান্টার-ফরেজার ছিলাম সেই আমল থেকেই আমাদের খাদ্যাভ্যাস এইরকম বলে প্রমান পাওয়া যায়। অনেক আদিবাসী সমাজে শুনেছি/পড়েছি শিকার করার পর শিকারের সামনে নতজানু হয়ে বসে ঈশ্বরের প্রতি কৃতজ্ঞতাপ্রকাশ ও নিহত পশুটির কাছে ক্ষমাপ্রার্থনার চল ছিল। হোমো হয়তো তখন সত্যিই সেপিয়েন্স ছিল, কে জানে! মুরগি এখন কনভেয়ার বেল্টে সার বেঁধে কাটা হয় বলে পড়েছি। শুয়োরের পিছনে রড ঢোকানো হয় এদেশে। বাইরে ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেটাপে কি হয় জানি না... কিন্তু অনর্থক আঘাত বা হত্যা করাটা অত্যন্ত বিরক্তিকর একটা ব্যাপার; বিশেষত অন্যান্য উপায় অবলম্বন করা যেতে পারে যেসব ক্ষেত্রে।

    @বেবুন, আপনাদের বলিনি। আপনাদের অপত্যদের বলেছি, মানে ইয়ং জেনারেশন আর কি।
  • sm | 2345.110.783412.101 (*) | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:০৩50440
  • অনর্থক আর অর্থপূর্ণ,এ দুটোর পার্থক্য বোঝা এক্ষেত্রে অন্তত আমার কম্ম নয়। ম্যাড কাউ ডিজিজ। নামটা চেনা ঠেকছে নিশ্চয়।পৃথিবীর একটি বিরলতম রোগ। রেবিস, এর থেকে কয়েকশ গুন বেশি কমন।
    কতো পশু মারা গেল?অনলি ইউ কে তে একবছরে চুয়াল্লিশ লক্ষ গবাদি পশু!সংখ্যাটি বিরাট না?
    মানুষ সব পারে।উন্নত/অনুন্নত সব দেশ ই এবলে আমাকে দেখ..
    চীন ও ভিয়েতনামে তো খাঁচা বন্দী কুকুরের সামনে সারমেয় মাংস কেটে কেটে বিক্রয় হয়।
    এই হিংসা মানুষের জিনে রয়েছে। এ জিনিস মুছবার নয়।
  • বেবুন | 562312.20.2389.164 (*) | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:২৩50437
  • অহে অনামিত্র, শেষের আগের লাইনটায় আমাদের গাল দিলে কেন?
  • sm | 2345.110.124512.119 (*) | ১৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৯:০২50438
  • কিছু প্রশ্ন আছে।
    মুরগী ফার্মে কিছু মুরগী মরলেই, বার্ড ফ্লু এর ভয়ে লক্ষ লক্ষ মুরগী কালিং করা হয় কেন?সোয়াইন ফ্লু এর ভয়ে মেক্সিকোয় কতো শুয়োর এবং ইউরোপে কত সহস্র গবাদি পশু নিধন করা হয়েছে,তার হিসেব?
    মানুষ তার বাঁচার জন্য এসব তো করবেই। খাওয়ার জন্য পাতে মুরগীর চাপ,তন্দুরী,সসেজ,কচি পাঁঠার ঝোল এসব ও চাই।
    কিন্তু গুরুত্বপূর্ন কথা হচ্ছে মানবিকতা! যদি পর্দার আড়ালে কুচ করে কেটে ফেলা হয় ,তাহলে বোধ হয় মানবিকতা বজায় থাকে।
    বিদেশে কি করে কে জানে।শুনেছি মুরগি নিধন হয় কার্বন মনোক্সাইড চেম্বারে।গরু,শুয়োর,পাঁঠার জন্য কি নিদান কে জানে!
  • বিপ্লব রহমান | 340112.231.236712.110 (*) | ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:০৫50442
  • খাদ্য বস্তু ও শিকার, ভিন্ন জিনিস, সেটা বাঁচার তাগিদে আদি কাল থেকেই চলে আসছে, ফুড চেন। কিন্তু অহেতুক প্রাণী হত্যা, উৎসবের নামে বলি বা কোরবানি স্রেফ হত্যাযজ্ঞ। জীবজন্তুকে কষ্ট দেওয়ায়ও 'পাশবিক'ই বটে।

    এইসব 'পশুত্ব' থেকে বেরিয়ে এসে কবে আমরা আরো মানবিক হবো?

    লেখাটা ভাবাচ্ছে, অনামিত্র।
  • Anamitra Roy | 671212.206.342323.173 (*) | ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ১১:১৮50445
  • এই অভীক মন্ডল আর রূপম মন্ডল এসে স্প্যাম করছে কেন? :-/
    লাগে লু তো লাগে লু, তার জন্যে আমি কি করবো? :-|

    @এসএম, আপনি বোধহয় ইউলিন ফেস্টিভ্যালের কথা বলছেন। ওটা চীনের ট্র্যাডিশন একেবারেই নয়। টিয়ার থ্রী সিটিগুলো অপেক্ষাকৃত গরীব। ওখানে সস্তা ডগ মিট কনসাম্পশন প্রমোট করার জন্য মাংস ব্যবসায়ীরা এটা শুরু করেছে ট্র্যাডিশনাল নাম দিয়ে। এই নিয়ে কেয়ার টু টিমের সাথে চীনের প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী বা এই জাতীয় কারও একটা দীর্ঘ লাইভ সাক্ষাৎকার দেখেছিলাম গতবছর।
    ম্যাড কাউ ডিসিজ সংক্রান্ত ডিজাস্টার-এর ঘটনাটা নিয়ে দু-একটা আর্টিকেল-এর লিংক পেলে ভালো হয়। বীফ থেকে মানুষের দেহে ছড়ানো আটকানো সম্ভব তো ওই রোগটা। যদ্দুর শুনেছি ব্রেন ও সুষুম্নাকান্ড সংলগ্ন অঞ্চলের স্নায়ুর ভিতরের বিশেষ একধরণের প্রোটিন দায়ী কন্টামিনেশনের জন্য।
  • sm | 2345.110.783412.134 (*) | ১৭ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:১৮50446
  • ম্যাড কাউ ডিজিজ হয় গরুর।এক্ষেত্রে এফেক্টেড ক্যাটেল এর চলচ্ছক্তি কমে যায়,ওজন কমে যায়।এক কথায় ,রোগগ্রস্ত ওই গবাদি পশুর মাংস খেলে মানুষের এর ভ্যারিয়েন্ট ডিজিজ বা ভ্যারিয়েন্ট অফ ক্রুজফেল্ট জ্যাকব ডিজিজ হয়।
    আক্রান্ত ব্যক্তির ডিপ্রেশন,ডিমেনশিয়া,চলচ্ছক্তি কমে যাওয়া,ওজন কমে যাওয়া ইত্যাদি লক্ষণ দেখা যায়।বছর দু এক এর মধ্যে মুক্তি মানে ওপরে যাওয়ার টিকিট।কোন রেমেডি/ঔষধ নাই।
    দু তিনটি জিনিস লক্ষণীয়।
    এক,মনে করা হয়, রোগগ্রস্ত গরুর স্নায়ুকোষে একধরণের প্রোটিন (প্রায়ণ) এই রোগ মানুষের দেহে ট্রান্সমিট করে।
    দুই, গরু তৃণভোজী প্রাণী।তাকে হাড় গোড় বা মিট প্রোডাক্ট ভোজন করালে, তবেই তারা এই রোগের শিকার হন।
    মাংস সিদ্ধ করলেও ডিজিজ স্প্রেড করতে পারে।
    তিন,সারা পৃথিবীতে মাত্র শ দুয়েক মতন মানুষ ,এই রোগে বছরে আক্রান্ত হন।ইউ এস এ তে মাত্র 4 জন হয়েছেন এ পর্যন্ত।
    এগুলো হলো তথ্য।অর্থাৎ গরু নামক তৃণভোজী প্রাণী কে মাংস ও হাড় খাইয়ে,এই কুকীর্তি টি করেছেন মানুষ নামক জীব।
    প্রতিকার হিসাবে,আগেই বলেছি লক্ষ লক্ষ গবাদি পশু মেরে ফেলা হয়েছে।
    আরো ইম্পরট্যান্ট দিক হলো,উন্নত দেশ গুলিতে 3বছরের বেশি বয়স যুক্ত গবাদি পশুর মিট প্রোডাক্ট মানুষের খাদ্য চেনে আসতেই পারে না। নিষিদ্ধ।
    তাহলে, তিন বছরের অধিক বয়সী কোটি কোটি গবাদি পশুগুলোর কি পরিণতি হয়?উত্তর পাইনি।
    শ দুয়েক আক্রান্ত মানুষের জন্য যদি কোটি কোটি গবাদি পশু মেরে ফেলা যায়,তাহলে ভাবতে শিহরণ জাগে রেবিস এর ভ্যাকসিন না আবিষ্কার হলে,সারমেয় দের কি হাল হতে পারতো!
  • sm | 3490012.31.0145.11 (*) | ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ০৪:০১50448
  • ইউরোপের উন্নত দেশে,ম্যাড কাউ ডিজিজ এর জন্য তিন বছরের অধিক কোন বিফ প্রোডাক্ট ফুড চেনে আসতেই পারে না।তাহলে তাদের কি পরিণতি হয়? নিশ্চয় তিন বছরের আগেই মেরে ফেলা হয়।অর্থাৎ ১০-১২ বছর আয়ুষ্কাল নরম্যালি বাঁচতে পারবেনা কোন গবাদি পশু!কি সাংঘাতিক!
  • Anamitra Roy | 671212.206.342323.246 (*) | ১৮ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:৫৩50447
  • মধ্যপ্রাচ্যের ইসলামিক দেশগুলোয় একটা সময় সারমেয়দের অবস্থা খুবই শোচনীয় ছিল বলে পড়েছিলাম কোথায় যেন; মনুষ্যবসতির ধারেকাছে দেখলেই মেরে ফেলা হতো কোনো একটা রোগের ভয়ে; বিশদে মনে নেই তবে পঞ্চদশ শতাব্দীর আশেপাশের কথা।
  • Anamitra Roy | 671212.206.342323.246 (*) | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৪50449
  • যারা বাঁচে তাদেরকেও যে অবস্থায় রাখা হয় সেটা মর্মান্তিক। বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন যে গরুর ইমোশন হয় এবং তার সোশ্যাল ইন্টারঅ্যাকশন এর প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। অথচ অধিকাংশ গরুকেই তার গোটা জীবনটা একটা খুপরির মধ্যে কাটাতে হয়। সেখানে ঠিক করে শোয়া বসাও যায় না। নিজের প্রজাতির সঙ্গে মেলামেশার সুযোগও তারা প্রায় পায় না বললেই চলে। এখন একমাত্র যদি ভবিষ্যতে গবেষণা করে এরকম জানা যায় যে এতে দুধ-এর পরিমান কমে যায় বা মাংসের কোয়ালিটি খারাপ হয়ে যায় তবেই বোধহয় এই ব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন আসতে পারে।
  • sm | 2345.110.013412.18 (*) | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫০50450
  • একটা জিনিস লক্ষ করেছেন,মিডিয়াতে কুকুর মারার ঘটনা নিয়ে কোন রিপোর্টিংই আর চোখে পড়ছে না।অদ্ভুত।এর মধ্যে একজন ব্যক্তি,ক্যাটারিং এর কাজ সেরে রাতে বাড়ি ফিরছিলেন।শ্যামবাজার পাঁচমাথার মোড়ের কাছে,কুকুরের তাড়ায় রাস্তায় নেমে পড়েন ও একটি লরির চাকার তলায় পিস্ট হয়ে মারা যান।কটা কাগজ বা টিভি চ্যানেল ভাল করে কভার করেছে কে জানে!
  • Anamitra Roy | 671212.206.342323.246 (*) | ১৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:১৫50451
  • আমি কোনো কাগজও পড়ি না, চ্যানেল ও দেখি না। আমার মিডিয়া বলতে সোশ্যাল মিডিয়া আর গুগল নিউজ। সেখানে কিছু দেখিনি। খুবই দুর্ভাগ্যজনক ঘটনা। কুকুরের সাথে কনফ্রন্টেশনের ক্ষেত্রে প্রথম মাথায় রাখা দরকার যে ভয় পেতে নেই। ভয় পেলে ওরা সম্ভবত গন্ধ পায় হরমোনের। এবং তাতে আরও অ্যাগ্র্রেসিভ হয়ে ওঠে, বিশেষত প্যাকে থাকলে। কোনো দ্রুত মুভমেন্ট করতে নেই, সম্ভব হলে গাছের মতো স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে হয় মাটির দিকে চোখ করে বিবেকানন্দ পোজে। এবং হাই তোলা আর জিভ চাটা খুব ভালো কাজ করে এসব ক্ষেত্রে। ওটার লিটারাল ট্রান্সলেশন হলো আমি থ্রেট নই এবং বাওয়ালে ইন্টারেস্টেড নই। ওরা এসে শুঁকে চলে যাবে ৯০ ভাগ ক্ষেত্রে। আর বাকি দশভাগ ক্ষেত্রে, মানে মারামারির ক্ষেত্রে যেতে হলে সেটারও কতগুলো ট্যাকটিকস রয়েছে। এখানে লিখলাম না।
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:১৯50452
  • ভাল লিখেছ, অনমিত্র।
    মানুষের সাথে পশু, উদ্ভিদ অন্য প্রজাতির কোন রকম সহাব্স্থান আর সম্ভব হচ্ছে না আজকাল, হত্যাই একমাত্র সমাধান হয়ে দাঁড়িয়েছে
  • sm | 2345.110.013412.18 (*) | ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৪৯50453
  • সহাবস্থান মানে কি?মানুষ,জীবজন্তু ও উদ্ভিদ নিজের নিজের জায়গায় থাকবে?যদি একসঙ্গে থাকতে চায় তো সংঘাত তো অনিবার্য।
    মানুষ কে বৃক্ষ কেটেই রাস্তা বানাতে হবে।
    আপনি উন্নত দেশে থাকেন।রাস্তায় স্ট্রিট ডগ বা হাসপাতালের ওয়ার্ডে কুকুর ঘুরতে দেখেছেন?
    কিন্তু খাদ্য!কত কোটি পাখি,গবাদি পশু নিধন হচ্ছে খাবার জন্য।জাস্ট প্লেটে সাজিয়ে আসবে বলে।
    আগের প্রশ্ন আবার করি উন্নত দেশে তিন বছরের অধিক ক্যাটেল দের পরিণতি কি হয়?
    ব্রাজিল এর এমাজন অরণ্য উড়িয়েই তো দুর্দান্ত ফার্নিচার শোভা পায়, আপনার আমার ড্রইং রুমে।
    খালি পিছন ওয়াইপ করার টিস্যু সাপ্লাই হেতু উন্নত দেশে
    মানুষ পিছু,দুটো বড় বৃক্ষ নিধন হয়।আমাদের দেশে ধনী ব্যক্তি বা হোটেল ও টিস্যু ইউজ করে।ক্রমবর্ধমান!
    এসব ভাবলে মাথা ঘুলিয়ে যাবে মশয়!
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৫৯50454
  • ঠিক-ই বলেছেন, মাথা ঘুলিয়ে যাওয়ার মতই। সহাবস্থান চাই বটে, কিন্তু তা কিভাবে সম্ভব জানি না
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৯:১৬50455
  • স্ট্রে ডগ নেই, এখানে হরিণ দেখি। পপুলেশন বাড়ছে, রাস্তায় চলে আসে প্রায়ই, ধাক্কা লাগে গাড়ির সাথে, বিশেষতঃ একটু রাতের দিকে গাড়ি চালালে। আমারও অ্যাকসিডেন্ট হয়েছে।
    খুব সংখ্যা বাড়লে হরিণ শিকারের অনুমতি দেয় সরকার।
    হত্যাই সমাধান, মানুষের দিক থেকে :-(
  • amit | 340123.0.34.2 (*) | ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ০৯:৩৬50456
  • এক্সিডেন্ট হয়ে গেলে খারাপ লাগে, কিন্তু সেটা দুর্ভাগ্য বলে মেনে নেওয়া, আর কি করা, কারোর হাত ছিল না তাতে।

    কিন্তু এই NRS এর ঘটনাটা পড়ে বড়ো বেশি খারাপ লেগেছে কারণ, কুকুর হোক বা অন্য কিছু, বাচ্চা কোনো প্রাণীকে এভাবে পিটিয়ে মারাটা বড়ো বেশি অমানবিক মনে হয়। অন্তত এর থেকে যদি বস্তায় ভরে দূরে কোথাও ফেলে দিয়েও আসতো, তাহলেও এতটা নির্মম মনে হতো না। যারা করেছেন, তাদেরকে খুনী বলছি না বা জেলে রাখতে বলছিনা, জাস্ট কাজটা খুব নৃশংস লাগছে।
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ২০ জানুয়ারি ২০১৯ ১০:১৬50457
  • পৃথিবীতে শুধু মানুষেরই বাঁচার অধিকার, মানুষের জন্যই সবকিছু - এই ধারণটা থেকে বার হওয়া দরকার
  • Anamitra Roy | 671212.206.342323.218 (*) | ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:৫৭50458
  • @অরণ্য বাবু, একমত।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা মনে চায় মতামত দিন