এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • আমার ভোপাল

    Punyabrata Goon লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৪৮৬ বার পঠিত
  • বিশ্বের বৃহত্তম শিল্প-দুর্ঘটনার শহর ভোপাল—২৮ বছর আগে যেখানে ডাক্তার হিসেবে, জনস্বাস্থ্যকর্মী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলাম। না, শেষ অবধি টিঁকে থাকতে পারিনি।

    প্রথম যাওয়া ১৯৮৫-র ২রা জুলাই, জ্যোতির্ময় সমাজদারের সঙ্গে। ঠিক এক মাস আগে ৩রা জুন ইউনিয়ন কার্বাইড প্রাঙ্গণে ‘গণ-হাসপাতাল’-এর ভিত্তি প্রস্তর স্থাপণ করেছিল জনস্বাস্থ্য সমিতি। গ্যাসপীড়িতদের দুটি সংগঠন—জাহরিলী গ্যাস কান্ড সংঘর্ষ মোর্চা, নাগরিক রাহত আউর পুনর্বাস কমিটি, বোম্বের ট্রেড ইউনিয়নগুলির ট্রেড ইউনিয়ন রিলিফ ফান্ড এবং ইউনিয়ন কার্বাইড কর্মচারী সংঘ মিলে জনস্বাস্থ্য সমিতি গড়ে তোলেন।
    ইউনিয়ন কার্বাইড প্রাঙ্গণে শুরু হয় জন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের কাজ। জন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে গ্যাসপীড়িতদের সোডিয়াম থায়োসালফেট ইঞ্জেকশন দেওয়া হত।

    সায়ানাইড বিষের প্রতিষেধক সোডিয়াম থায়োসালফেট। ভোপালের গান্ধী মেডিকাল কলেজের ফরেন্সিক বিভাগের প্রধান ডা হীরেশ চন্দ্র ’৮৪-র ৩রা ডিসেম্বরই গ্যাসকান্ডে মৃতদের শবব্যবচ্ছেদ করে সিদ্ধান্তে আসেন—সায়ানাইড বিষ আছে গ্যাস-আক্রান্তদের শরীরে। তাঁর সুপারিশ ছিল জীবিত গ্যাস-আক্রান্তদের থায়োসালফেট দেওয়া হোক। ইউনিয়ন কার্বাইড কর্পোরেশনের ওয়েস্ট ভার্জিনিয়া-স্থিত কারখানার প্রধান মেডিকাল অফিসার ৪ঠা ডিসেম্বর এক টেলেক্স-বার্তায় বিষ-গ্যাসের প্রতিষেধক হিসেবে সোডিয়াম থায়োসালফেট ব্যবহার করতে বলেন। ৮ই ডিসেম্বর বিখ্যাত জার্মান বিষবিদ ম্যাক্স ডন্ডেরার-এর মত ছিল একই রকম। সে সময় ভারতে সোডিয়াম থায়োসালফেট তৈরি হত না, তাই তিনি রেখে গেলেন ১০হাজার এম্পুল ঐ ইঞ্জেকশন। বিরোধিতা করেন ভোপালের সরকারী চিকিৎসকরা, নানাভাবে যাঁরা কার্বাইডের প্রসাদধন্য। থায়োসালফেটে গ্যাস-পীড়িতদের অবস্থার উন্নতি হওয়া মানে বিষ-গ্যাস মিশ্রণে সায়ানাইডের উপস্থিতি প্রমাণিত হয়ে যাওয়া—এতে কার্বাইডের criminal responsibility অনেকগুণ বেড়ে যায়, অনেক বেশি ক্ষতিপূরণ দিতে বাধ্য হয় কার্বাইড।

    ’৮৫-জানুয়ারী, ফেব্রুয়ারী, এপ্রিলে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকাল রিসার্চ-এর বারবার সুপারিশেও টলে না সরকারী স্বাস্থ্য-দপ্তর। তাই গ্যাসপীড়িতের নিজস্ব উদ্যোগে জন স্বাস্থ্য কেন্দ্রে থায়োসালফেট দেওয়া। এ কাজে উদ্যমী ছিলেন কলকাতা মেডিকাল কলেজে আমার পরের ব্যাচ, তখন যাঁরা ইন্টার্ন। ইন্টার্নশিপ থেকে ছুটি নিয়ে ২-৩ জনের দলে এসে তাঁরা কাজ করতে লাগলেন। দিনে প্রায় দেড়শ’ জনকে ইঞ্জেকশন দেওয়া হতে থাকল, রোগীরা উপকার পেতে থাকলেন, কার্বাইডের বিরুদ্ধে প্রমাণ জোগাড় হতে থাকল। হত্যাকারী কার্বাইড শাস্তি পায়নি, অথচ আক্রমণ নেমে এল জন স্বাস্থ্য কেন্দ্রের ওপর। ২৪শে জুন রাতে ডাক্তার-সহ ৩১জন স্বাস্থ্যকর্মী গ্রেপ্তার হলেন, কেন্দ্র বন্ধ করে দেওয়া হল, স্বাস্থ্য-দপ্তর কেন্দ্রে সোডিয়াম থায়োসালফেট সরবরাহ বন্ধ করে দিল।

    এই পর্যায়েই আমার ভোপাল যাওয়া, অনেকটাই উত্তেজনার খোঁজে। সে সময় আমি হাউসস্টাফশিপ করছি। ভোপাল গ্যাস-কান্ড আমার মনে অন্য যে কোনও শিল্প-দুর্ঘটনার চেয়ে বেশি দাগ কাটেনি। আমার জুনিয়ার বন্ধুরা যখন ভোপাল যাচ্ছেন, তখন আমি হাসপাতালে ব্যস্ত থেকেছি। পুলিশি আক্রমণের পর যখন স্বাভাবিক ভাবেই ডাক্তাররা যেতে ইতস্তত করছেন তখন মনে হল একবার দেখে আসা যাক। ২রা জুলাই বন্দী স্বাস্থ্যকর্মীরা ছাড়া পেলেন, জেলের সামনে ছত্তিশগড়ের শ্রমিকনেতা শংকর গুহ নিয়োগী স্লোগান তুলছেন—জেলকে তালা টুটেগা, হমারা সাথী টুটেগা। সে দফায় সাতদিন ভোপালে ছিলাম আন্দোলনটাকে জানতে বুঝতে। চোখ খুলে গেল—মানুষ কিভাবে স্বাস্থ্যের দাবীতে লড়াই করতে পারেন শেখা শুরু হল।

    আগস্টে হাউসস্টাফশিপ শেষ, ততদিনে ঠিক করে ফেলেছি গ্যাসপীড়িতদের সঙ্গেই শুরু করব আমার চিকিৎসক-জীবন। ২১শে আগস্ট দ্বিতীয়বার গেলাম, সঙ্গে দশদিনের জন্য ডা দেবাশিস চক্রবর্তী। স্বাস্থ্যকেন্দ্র নতুন করে খোলা হল ২৫শে আগস্ট। ২৮শে আগস্ট সুপ্রিম কোর্ট সরকারকে নির্দেশ দিলেন জন স্বাস্থ্য কেন্দ্রকে থায়োসালফেট সরবরাহ করতে।

    প্রতি সপ্তাহে আমরা ৫০জন করে রোগীর চিকিৎসা করতাম। প্রথমে তাঁদের উপসর্গগুলো লিপিবদ্ধ করা হত। সে সময়কার প্রধান উপসর্গগুলো ছিল—সামান্য পরিশ্রমেই হাঁফিয়ে পড়া, ক্ষুধামান্দ্য, পেটে ব্যথা, দুর্বলতা, অবসাদ, অনিদ্রা। সোম থেকে শনি রোজ এঁদের শিরায় থায়োসালফেট ইঞ্জেকশন লাগানো হত—তৃতীয় ও ষষ্ঠ দিনে পরীক্ষা করে দেখা হত রোগী কতটা লাভবান হলেন, সে তথ্য নথিভুক্ত করা হত। যে সময়কার কথা বলছি—তখন ফুসফুসের ক্ষমতা মাপার যন্ত্র স্পাইরোমিটার বহনযোগ্য ছিল না, ছিল না কাজ চালানোর মত পিক ফ্লো মিটার।

    আমি যখন চিকিৎসা ও প্রমাণ জোগাড় করার কাজ করছি, তখন আরেক সাথী মেডিকো ফ্রেন্ড সার্কেল-এর ডা অনন্ত ফাদকে জনশিক্ষার বই লেখার কাজ করছেন। একমাস থেকে তিনি মহারাষ্ট্রে ফিরে গেলেন, এলেন কর্নাটক থেকে ডা সঞ্জীব কুলকার্নি। আমি ছিলাম নভেম্বর অবধি। আমার পরে মুখ্য-চিকিৎসক হিসেবে কাজ করেন যথাক্রমে শহীদ হাসপাতালের ডা শৈবাল জানা, ডা চঞ্চলা সমাজদার। ১৯৮৬-এর শুরুতে ডাক্তারের অভাবে স্বাস্থ্যকেন্দ্র বন্ধ হয়ে যায়।

    দীর্ঘদিন থাকার পরিকল্পনা নিয়ে গিয়েও আমি থাকতে পারিনি। জনস্বাস্থ্য সমিতি-র দুই প্রধান সংঘটক মোর্চা ও এনআরপিসি-র দ্বন্দ্ব স্বাস্থ্যকেন্দ্রের কর্তৃত্ব নিয়ে, পরে মোর্চার মধ্যেকার বিজ্ঞানকর্মীদের কোনঠাসা করার জন্য এসইউসি-র প্রয়াস। তার চেয়েও বেশি নেতিবাচক প্রভাব আমার ওপর ফেলছিল—ভোপালের মানুষের পাশে দাঁড়াতে আসা তরুণ-তরুণীদের বেশ কয়েকজনের ক্ষয়িষ্ণু জীবনযাত্রা-মূল্যবোধ।

    কিন্তু বিষ-গ্যাসের উপাদান কি ছিল ও বিষ-গ্যাস তাঁদের শরীরে কি ক্ষতি করেছে তা জানার দাবীতে, যথাযথ চিকিৎসার দাবীতে ভোপালবাসীদের আন্দোলন আমাকে, আমাদের পথ দেখিয়েছে বারবার ছত্তিশগড়ে, বাংলায়...।

    ****
    সময়ঃ অক্টোবর, ১৯৮৯।
    ১৫-২২শে অক্টোবর ৩৫ সদস্যের এক সার্ভে-দলের সদস্য হয়ে আবার ভোপালে। ১৯৮৫-র মার্চে, গ্যাস-কান্ডের তিন মাস পর গ্যাস-পীড়িতদের শারীরিক অবস্থার দুটো সমীক্ষা করেছিল নাগরিক রাহত আউর পুনর্বাস সমিতি এবং মেডিকো ফ্রেন্ডস সার্কেল। এই সমীক্ষাদুটোর নথি মজুত ছিল। যাঁদের দেখা হয়েছিল সে সময়, পাঁচ বছর পর তাঁরা কেমন আছেন খতিয়ে দেখা ছিল আমাদের উদ্দেশ্য।

    বেশি প্রভাবিত বসতি—জয়প্রকাশ নগর, কাঁইচি ছোলা, গরীব নগর, ওড়িয়া বস্তি, রাম মন্দির, ফুটা মাকওয়ারা, রাজগড় কলোনি, সুভাষ নগর, রেলওয়ে কলোনি, ছোলা মন্দির, কাজী ক্যাম্প এবং কম প্রভাবিত—আন্না নগর-এ ছিলেন আমাদের সমীক্ষার মানুষ-জন।

    এই সমীক্ষায় দেখা যায়ঃ—
    •বেশি-প্রভাবিত এলাকার ৭০-৮০% মানুষ ও কম প্রভাবিত এলাকার ৪০-৫০% কোনও না কোনও অসুস্থতায় ভুগছেন।
    •ক্ষতিগ্রস্ত শরীরের তন্ত্রগুলো হল—শ্বাসতন্ত্র, চোখ, পরিপাক-তন্ত্র ও মাংসপেশি-কঙ্কালতন্ত্র।
    •দুই এলাকার মহিলাদের অধিকাংশই মাসিক রজঃস্রাবের অনিয়মিততায় ভুগছেন।
    •পোস্ট-ট্রমাটিক স্ট্রেস ডিসঅর্ডার গ্যাস-পীড়িতদের বড় মানসিক সমস্যা।
    সমীক্ষার অন্তরিম রিপোর্ট ১৯৮৯-এর ডিসেম্বর-এ প্রকাশিত হয়েছিল Against All Odds নামে।

    সব মিলিয়ে অবস্থাটা আশাব্যঞ্জক মনে হয়নি। ’৮৪-’৮৫-তে গ্যাস-পীড়িতদের অধিকার-আন্দোলনে অগ্রণী ছিল জাহরিলী গ্যাস কান্ড সংঘর্ষ মোর্চা। মোর্চায় রাজনীতিকদের দবদবায় কোনঠাসা হয়ে ভোপাল ছাড়লেন অধিকাংশ বিজ্ঞানকর্মী ’৮৬-তে। আর সরকারের সঙ্গে ইউনিয়ন কার্বাইডের অন্যায় চুক্তিকে সমর্থন জানিয়ে গ্যাস-পীড়িতদের ঘৃণার পাত্রে পরিণত হয় মোর্চা। ১৯৯০-এর লোকসভা নির্বাচনে ভোপালে কংগ্রেসের প্রার্থী মনসুর আলি খান পতৌদির বিরুদ্ধে জনতা দলের প্রার্থী ছিলেন স্বামী অগ্নিবেশ। অগ্নিবেশের নির্বাচনী প্রচারে সাহায্য করতে ছত্তিশগড় মুক্তি মোর্চার এক প্রচার-দলের দায়িত্ব নিয়ে আবার যাই ভোপালে। ’৮৯-’৯০-এ আশার আলো দেখেছিলাম গ্যাসপীড়িত মহিলা উদ্যোগ সংগঠন-এ।

    শুরু থেকে ছিল, আজও আছে সত্যু—বেনারস হিন্দু ইউনিভার্সিটির ইঞ্জিনিয়ারিং-এ স্নাতকোত্তর সতীনাথ ষড়ঙ্গী। পেশা ছেড়ে সত্যু যোগ দিয়েছিল মধ্যপ্রদেশের হোশাঙ্গাবাদ জেলায় শিশুদের বিজ্ঞান-শিক্ষা নিয়ে কর্মরত কিশোর ভারতী-তে। গ্যাস-কান্ডের পর কিশোর ভারতী ছেড়ে মোর্চা, মোর্চা দালালি শুরু করার পর সত্যু গড়ে তোলে Bhopal Group for Information and Action. তারপর সম্ভাবনা ট্রাস্ট। সম্ভাবনা ট্রাস্টের ক্লিনিকে আধুনিক চিকিৎসার সঙ্গে প্রাকৃতিক চিকিৎসা, আয়ুর্বেদের মেল-বন্ধন(?) করে গ্যাস-পীড়িতের কষ্ট লাঘবের চেষ্টা চলে, স্বাস্থ্যকর্মীরা রোগীদের পরীক্ষা করে ফলাফল নথিভুক্ত করেন—ইউনিয়ন কার্বাইডের বিরুদ্ধে প্রমাণ সংগ্রহের কাজ।

    কারখানার মালিকানার হাতবদল হয়েছে, এখন মালিক ডাউ কেমিকাল। ভোপাল আন্দোলন গণ-আন্দোলনের চরিত্র হারিয়ে কিছু শুভাকাঙ্ক্ষী মানুষের আইনী লড়াই-এ পর্যবসিত হয়েছে।

    ভোপাল গ্যাস-কান্ডের ২৯ বছর হল। গ্যাস-পীড়িতদের পরবর্তী প্রজন্মগুলোতে জন্মগত বিকৃতির প্রাদুর্ভাব দেখতে সম্ভাবনা ট্রাস্ট এক সমীক্ষা চালাচ্ছে গত এক বছর ধরে। তাতে অংশগ্রহণকারী ডাক্তাররাও অধিকাংশ পশ্চিমবঙ্গের, শিক্ষক চিকিৎসক, বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক।

    আমি এবার যাইনি। হয়ত যাব, যখন ভোপাল আন্দোলন আবার গণ-আন্দোলনের রূপ নেবে।
    পুণ্যব্রত গুণ
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০২ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৪৮৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • aranya | 78.38.243.161 (*) | ০৪ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৩:২০46199
  • এই সত্যুর কথা আজকের আবাপ-তে রয়েছে
  • π | 118.22.237.132 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৩ ০২:৪২46201
  • আবাপর লেখাটাতে সত্যুর সঙ্গী রচনা ধিংড়ার কথা আছে। রচনা AID এর জীবনসাথী। খুব ইন্টারেস্টিং জীবন। বিদেশ থেকে সব ছেড়েছুড়ে দিয়ে ভোপালে চলে গেছেন। এই ইস্যু নিয়ে প্রচুর কাজ করছেন।
    http://www.oneforindia.org/jeevansaathi/rachna.php
  • a x | 138.249.1.206 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৪:৪৭46202
  • ১০ই ডিসেম্বর প্রেসিডেন্সিতে দুপুর একটা থেকে ভোপালের বিচারের দাবীতে প্রোগ্র্যাম আছে। সতীনাথ বক্তব্য রাখবেন।
  • Ranjan Roy | 132.167.98.244 (*) | ০৫ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৭:২২46200
  • গত ১ ডিসেম্বর ছিলাম ভোপালে। গিয়েছিলাম নেহাত ব্যক্তিগত কাজে। কিন্তু সেদিন গান্ধীভবনে অনেকগুলো গণসংগঠনের উদ্যোগে পরমাণু এনার্জির বিরোধিতা ও বিকল্প শক্তির পক্ষে সম্মেলন হচ্ছে শুনে জানতে বুঝতে হাজির হয়েছিলাম।
    মঞ্চে ছিলেন ডঃ অনিল সদগোপাল। প্রসঙ্গে এসে গেল ভোপাল গ্যাসকান্ডের কথা। অর্থাৎ সরকারের দুর্ঘটনা না হবার আশ্বাসবাণী কত মিথ্যে সেই সব উদাহরণ। ইদানীং কোথায় কোথায় তেজস্ক্রিয়ায় আক্রান্তদের নমো নমো করে বিদেয় করা হচ্ছে সেই কথা।
    ডঃ গুণের সঙ্গে ফোনালাপে জানলাম সদগোপাল বহুদিন আর ভোপালে আসেন না। ষড়ঙ্গী কাজ করে যাচ্ছেন।
    গুণের লেখা পড়ে মনে পড়ল তখন সরকারি ডাক্তারের দল বিশেষ করে ডঃ এন পি মিশ্র ( মুখ্যমন্ত্রী অর্জুন সিং ও ইউনিয়ন কার্বাইডের ডাক্তার) কোম্পানির বুলি আউড়ে যাচ্ছিলেন--- বিষাক্ত গ্যাসটির নাম ফসজিন না মিক( MIC)- এই নিয়ে। কি করে ওয়াটার মেজার যন্ত্রটি খারাপ হওয়াতেও কোম্পানি সারাতে চায়নি। ফলে গ্যাস তৈরি হল।
    হ্যাঁ, ফরেনসিক বিশেষজ্ঞ ডঃ হীরেশ চন্দ্র বলে যাচ্ছিলেন-- শবদেহের মাংসের লাল রং ও আরও কিছু লক্ষণ দেখে উনি নিঃসন্দেহ যে মারণ গ্যাসটি সায়নাইড ছাড়া অন্য কিছু হতে পরে না।
    [আমি এ ব্যাপরে অজ্ঞ; টেকনিক্যাল ভুলগুলো ডঃ গুণ শুধরে দেবেন।]

    আজ মনখারাপ লাগছে, কোন আশা দেখছি না। অ্যান্ডার্সনেরা বহাল তবিয়তে। চম্পাদেবী শুক্লা ও রশিদা আপারা এভাবেই সারাজীবন ডাউ কেমিক্যালের সামনে ঝাঁট দিয়েই যাবেন?
    সেবার নব্বইয়ের দশকে কিছু ক্ষতিপূরণের কথা ওঠায় লোকজন মেডিক্যাল কাগজপত্তর নিয়ে লাইনে দাঁড়াল। অধিকাংশই সম্পন্ন লেখাপড়াজানা মধ্যবিত্তের দল। সে এক সার্কাস। এক পৃথুলা দাঁড়িয়েছেন তাঁর পাঁচটি বাচ্চাকাচ্চা নিয়ে।সবাই নাকি গ্যাসকান্ডের শিকার। নাম লেখার আগে দায়িত্বপ্রাপ্ত অফিসারটি বললেন--- ম্যাডাম, আপনার ছোট দুটি বাচ্চা তো গ্যাসকান্ডের অনেক পরে জন্মেছে? ওরা কি করে গ্যাসপীড়িত হবে?
    কিন্তু কমলি ছোড়তী নহী!
  • π | 118.22.237.132 (*) | ০৮ ডিসেম্বর ২০১৩ ১১:০৫46203
  • VENUE: Physics New Lecture Theatre (NLT),
    Baker Building, Presidency University

    TIME: 1 pm to 4 pm

    SPEAKERS: 1) Satinath Sarangi (Sathyu)
    2) Dr Punyabrata Goon "
  • I | 24.99.7.81 (*) | ০৯ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৫:৫৯46204
  • যাওয়ার খুব ইচ্ছে থাকলেও উপায় নেই।
  • পারমিতা | 111.221.131.192 (*) | ০৩ ডিসেম্বর ২০১৫ ০৪:১৬46205
  • পুরোন কথাগুলো ভেসে উঠছে। কিন্তু প্রতিকার। কি হবে মানুষগুলোর ?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন