গুরুচন্ডালির পাঠক দের বৃহদংশের কাছে এই কথোপকথন আগ্রহ জাগাতে পারুক বা না পারুক, ব্যক্তিগত ভাবে এই ভাবেই এই বিচিত্র অতিমারীর প্রকোপে মানুষের মধ্যে সংযোগহীন অবস্থায় এই ভাবেই ভদ্রলোক কে স্মরণ করলাম, তাঁর মৃত্যুর বেশ কিছু বছর পরে। ... ...
স্বয়ং অযোধ্যাবাসীর আজকের অনুষ্ঠান নিয়ে বক্তব্য কী? বাইরে থেকে জানা খুবই কঠিন, কারণ আজকের অনুষ্ঠানের আগে আদিত্যনাথের পুলিশ অযোধ্যাকে নিরাপত্তার বলয়ে প্রায় মুড়ে দিয়েছে। মাত্র দুটি প্রতিক্রিয়া আমরা সংগ্রহ করতে পেরেছি - একজন, রামমন্দিরের ঠিক পার্শ্বস্থিত রাম-জানকি মন্দিরের মহান্ত শ্রী যুগল কিশোর শাস্ত্রী, অন্যজন আজকের অনুষ্ঠানের কারণে উচ্ছেদ হওয়া একটি চায়ের দোকানের মালকিন রজনী। মূল লিঙ্কটি লেখার নীচে দেওয়া রইল পাঠকের সুবিধার্থে। ... ...
সারা দেশ জুড়ে ভিন্ন মতের প্রতি অসহিষ্ণুতার পরিবেশ তৈরির অভিযোগ মোদি সরকারের বিরুদ্ধে নতুন নয়। এই রাজনৈতিক দলটি এবং এদের শাখা প্রশাখা নানা সংগঠন একই সঙ্গে অসহিষ্ণুতার জয়গান করে এবং নিজেদের রাম ভক্ত বলে দাবি করে। অনেকেই মেনে নিয়েছেন, রামায়ণের ইজারা এখন এদেরই হাতে। কিন্তু সত্যিই কি রামায়ণ এমনই অসহিষ্ণুতার কথা বলে! ... ...
এটা কি শুধুই সমাপতন যে একবছর আগে কাশ্মীরের বিশেষ মর্যাদা কেড়ে নেবার দিনটি অর্থাৎ ৫ আগস্টকেই বাছা হয়েছে রামমন্দিরের শিলান্যাসের জন্য? নাকি মরার ওপর খাঁড়ার ঘায়ের মতো সম্পূর্ণ বঞ্চিত ও হতোদ্যম কাশ্মীরের ক্ষতে আঙুল দিয়ে খুঁচিয়ে দেশজোড়া সংখ্যালঘুকে বোঝানো হল তার দৌড় কতটা? তৈরি করা হল দুষ্টের দলন শিষ্টের পালন জাতীয় একটি মিথ? বলার চেষ্টা হল কি যে তুমি যদি মুসলমান-বিদ্বেষী হও তবে রামলালা স্বয়ং তোমার রক্ষাকর্তা? সরাসরি সেলিব্রেশন বিক্ষোভের জন্ম দিতে পারে, সুতরাং আইস, আমরা অপ্রত্যক্ষভাবে দুষ্ট-দলন দিবসটিকে যথোচিত মর্যাদায় পালন করিয়া ছাড়ি। ... ...
দুটি সমকামী ছেলের আত্মহত্যা করার ঘটনা নিয়ে কপি-পেস্ট করার মত আবেগ (এবং হ্যাশট্যাগ) বাজারে ছাড়া যায় না। ওটা নিয়ে আমরা চায়ের টেবিলে আলোচনা করতে পারি না যে। আর মাস হিস্টিরিয়ার উপাদান তো নেইই। আবেগ আর ভাবাবেগ ঠিক এক জিনিস নয়। আবেগটা নিজের ভিতর থেকে আসে। দ্বিতীয়টা অনেকটা গড্ডলিকাপ্রবাহের মত। একটা ধর্ষণের ঘটনার পর প্রচুর লোক আছে যারা "ডেথ পর রেপিস্ট" বলে হ্যাশট্যাগ দেয়। যাদের দায়বদ্ধতা থাকার কথা - সরকার, পুলিশ, আইনব্যবস্থা- এরাও কিন্তু চায় একটা সহজ ভাবাবেগ নিয়ে মানুষ মেতে থাকুক- কারণ খুঁটিনাটি সংস্কার অনেক সময়সাপেক্ষ, সংসাধনসাপেক্ষ কাজ। যেসব বিষয় নিয়ে গোষ্ঠী-আবেগ, ভাবাবেগ এগুলো জাগানো যায় না সেগুলো কম মনোযোগ পায়। ... ...
আমাদের ব্যাংক-কর্মী সকলেরই এইটুকু সাধারণ বুদ্ধি আছে বলে মনে করি যাতে করে আমরা কোন্টা ‘মানবিক’ এবং ‘স্বাভাবিক’ তার সঙ্গে প্রায় অনৈতিক চাপ তার পার্থক্য করতে পারব। আমরা এটাও বুঝি যে সব কিছু কর্তৃপক্ষের নিয়ন্ত্রণে থাকে না—তাই এই লেখায় সেই সব বিষয়ই কেবল উল্লেখ করব যে বিষয়ে হস্তক্ষেপ করে কর্তৃপক্ষ চাইলেই সমাধান করতে পারতেন। গ্রামীণ ব্যাংকের উন্নতির এক প্রধান অভ্যন্তরীণ অন্তরায় হল সঠিক টেকনোলজি এবং কম্পিউটিং ব্যবস্থা ঠিকমতো না করা। অন্য সব ব্যাংকে যে কাজ কম্পিউটার দিয়ে সারা হয় বহু বছর ধরে, সেই সাধারণ বেসিক টেকনোলজিও প্রদান করা হয়নি বহু ব্যাংকে। এবং তাই স্বাভাবিক ভাবেই কর্মীদের কাজ বেড়ে গেছে ম্যানুয়ালি সব কিছু সম্পন্ন করতে করতে। ... ...
প্রেমিকাকে বিরল দুধরাজনাগ সাপের খেলা দেখাতে গিয়ে সাপ-পাগল এক যুবার সর্পদংশনে মৃত্যু স্থানীয় হাসপাতালে অ্যান্টিভেনাম সিরাম না থাকায়। কল্পধন্বন্তরির আশায় মৃতদেহ মঞ্জুষে শুইয়ে মনসার ভাসান গাইতে গাইতে গ্রামবাসীর নদীপথে যাত্রা। আশাভঙ্গে অবশেষে মৃতকে গঙ্গায় অর্পণ। তিন দশক আগের মালদা-সন্নিহিত নদীবহুল উত্তরবঙ্গের পটভূমিতে রচিত আখ্যান। অভিজিৎ সেনের নতুন উপন্যাস নাগমঙ্গল। পাঠ করলেন শিক্ষাবিদ ও লেখক অমিয় দেব ... ...
কোভিড অতিমারির বিশ্ব জুড়ে যা তৈরি হবে, তা সোভিয়েত ইউনিয়নের ১৯১৮ সালের ‘যুদ্ধকালীন কমিউনিজম’-এর নতুন একটি সংস্করণ। লিখেছেন স্লোভেনিয়ান দার্শনিক স্লাভোই জিজেক। তাঁর সাম্প্রতিক বই প্যান্ডেমিক। পড়লেন সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় ... ...
বিজান এলাহি। আজকের ফারসি সাহিত্যের অন্যতম প্রভাবশালী ও জনপ্রিয় কবি ও সাহিত্য-তরজমাকার। জীবনের শেষ তিরিশ বছর ছিলেন লোকচক্ষুর অন্তরালে। জীবৎকালে তাঁর একটি কাব্যগ্রন্থও প্রকাশ করতে পারেননি বারদুয়েক চেষ্টা করেও। ২০১০ সালে প্রয়াণের পর জনসমক্ষে আসা শুরু হয়েছে তাঁর কবিতার ও তরজমার বিপুল ভাণ্ডার। লিখছেন ইরানি কবি, তরজমাকার, সাহিত্যের গবেষক ও এনসাইক্লোপিডিয়া ইরানিকার প্রাবন্ধিক মাহদি গঞ্জভি ... ...
শব্দ সরস্বতী। ব্রহ্মপুত্র, গঙ্গা ও মহানদী তীরের নারীসাহিত্য-প্রতিভাদের নিয়ে রচিত একটি বিরল গ্রন্থ। এবং এ গ্রন্থ শুধু সেই প্রতিভাদের লেখালিখির আলোচনাতেই সীমিত নয়, অবরুদ্ধ অন্দর থেকে শুরু করে আজ নারী যে জায়গায় এসে পৌঁছেছে, তার একটা রুটম্যাপ যেন। রচিত ওড়িয়া ভাষায়। লেখক মনোরমা বিশ্বাল মহাপাত্র। বাংলা তরজমা করেছেন ভারতী নন্দী। পড়লেন লেখক ও তরজমাকার তৃষ্ণা বসাক ... ...
বিগত একদশকে প্রকাশিত বাংলাদেশের চারজন লেখকের চারটি জরুরি বই—দুটি উপন্যাস, একটি ছোটোগল্প সংকলন ও একটি ভ্রমণকাহিনি সংকলন। পড়লেন লেখক জাহাঙ্গীর মোহাম্মদ আরিফ ... ...
বঙ্গের প্রাচীন রাঢ় অঞ্চল দীর্ঘকাল ছিল নাচ-গান-বাজনা-ছড়ায় গমগমে এক অঞ্চল। এখন সেই সাংস্কৃতিক বৈচিত্র্য বিবর্ণ প্রায়। তবুও রয়ে গিয়েছে কিছু রেশ। তাই নিয়েই একটি সাম্প্রকিত বই। পড়লেন লোকসংস্কৃতি গবেষক রামামৃত সিংহ মহাপাত্র ... ...
পুস্তকপরিচিতিগুলি লিখেছেন রন্তিদেব রায় ... ...
ইলিনয় বিশ্ববিদ্যালয়ে কাজ করাকালীন সেখানকার এক রসায়নের ছাত্রের সাথে আমার প্রায়ই গল্প হতো। ছেলেটি ব্রাজিলের, তখন সে ডক্টরেট করছে। ব্রাজিল বললেই আমার মন চিরকাল উচাটন হয়। রিও বা সাও পাওলোর ছবি, টিভির পর্দায় বা নেটে যেমন দেখেছি, ভেসে ওঠে। সিটি অফ গডের দৃশ্যাবলী, ফুটবল মাঠের ম্যাজিক স্টিলগুলো, অসংখ্য খেলোয়াড়ের নাম, তাদের নিয়ে মাতামাতি, বিশ্বকাপে কলকাতার চালচিত্র ---এইসব অজস্র ছবির কোলাজ। কিন্তু সেই ছেলের কাছে আমি অন্য এক ব্রাজিলের আঁখো দেখি গল্প শুনতাম। ছেলেটির বাবা একজন নামকরা সার্জেন, অগাধ পয়সা। এমনিতেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে স্কলারশিপ ছাড়া পড়া খুবই খরচসাপেক্ষ। সেই ছেলে খুবই অপরাধবোধ নিয়ে বলেছিলো, তার বাবার কাছে ঐসব খরচ গায়েই লাগেনি। একেবারে হাইস্কুল থেকে ছেলেটি তাই মার্কিন মুলুকের বাসিন্দা। স্কুল কলেজের পড়াশুনোয় তাকে কোনদিন কোন কাজ করতে হয়নি, অথচ তার বেশিরভাগ বন্ধুরাই নানারকম ছোটখাটো কাজ করতে বাধ্য হয়েছে পড়ার পাশাপাশি। ব্যক্তিগত প্রিভিলেজ, পারিবারিক বৈভব, ব্রাজিলের আর্থিক বৈষম্য, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে (পৃথিবীর অন্যত্রও) ক্রমশ বেড়ে চলা "ট্রাম্পিয়ানা" তাকে বিষন্ন করতো। ... ...
ইস্টবেঙ্গল ক্লাবের গোড়াপত্তনের প্রারম্ভ্রে বাঙালি জাতি সাময়িকভাবে এক বিভাজনের রাজনীতির শিকার হয় যা অবিভক্ত বাংলার ভৌগোলিক মানচিত্রকে আপামার জনসাধারণের মানসচিত্তে পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্ববঙ্গ রূপে দ্বিখণ্ডিত করে দিয়েছিল। ১৯০৫-এর বঙ্গভঙ্গ প্রশাসনিকভাবে ১৯১১ তে রদ হলেও তা বাঙালি জাতিকে দীর্ঘস্থায়ীভাবে সামাজিক সীমারেখা দিয়ে ধর্মীয় (হিন্দু বাঙালি এবং মুসলমান বাঙালি) ও প্রাদেশিক (পূর্ববঙ্গনিবাসী 'বাঙাল' এবং পশ্চিমবঙ্গবাসী 'ঘটি') পরিচিতিতে ভাগ করে দেয়। অতএব বাঙালি জাতি ১৯১০ এর দশকের প্রেক্ষাপটে একদিকে ছিল বঙ্গভঙ্গের ক্ষতের সামাজিক অস্থিরতায় দোদুল্যমান এবং অন্যদিকে হয়ে উঠেছিল ফুটবলকে কেন্দ্র করে জাতীয়তাবাদী আবেগে বিচ্ছুরিত। এই পটভূমিকায় পয়লা অগাস্ট ১৯২০তে ইস্টবেঙ্গলের আত্মপ্রকাশ সমগ্র বাঙালির কাছে এক ঐতিহাসিক সন্ধিক্ষণ। সেই ইতিহাসে শুধু ফুটবল ছিল না, ছিল ফুটবলের প্রতিযোগিতাকে হাতিয়ার করে নব্য শুরু হওয়া সংকীর্ণমনা আন্তর্দেশীয় প্রাদেশিকতা ও ব্রিটিশ ঔপনিবেশিকতার ঘৃণ্য রাজনৈতিক অভিসন্ধিকে পরাস্ত করার শপথ। তাই বলাবাহুল্য যে ইস্টবেঙ্গলে যাত্রা শুরুই হয়েছিল লড়াইয়ের আহ্বানের মধ্যে দিয়ে। ... ...
অনেক রোগী খুপরিতে ঢুকে প্রথমেই স্যানিটাইজারের বোতল থেকে দু-চার ফোঁটা তরল বসার চেয়ার, আমার টেবিলে ছড়িয়ে দিচ্ছেন। আজ এক ভদ্রমহিলা গঙ্গাজল এর মত আমার গায়ে কয়েক ফোঁটা স্যানিটাইজার ছিটিয়ে দিলেন। মানে চেয়ার-টেবিলের সাথে তিনি ডাক্তারকেও স্যানিটাইজ করে নিলেন। ওদিকে রোগীর সংখ্যা রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে। অধিকাংশই জ্বরের রোগী। জ্বর আসলেই এখন অনেকে গন্ধ শুঁকছেন। একজন বললেন, 'ডাক্তারবাবু, খাবার-দাবারের গন্ধ পাচ্ছি না। কিন্তু ডেটলের গন্ধ, ডেনড্রাইটের গন্ধ এগুলো দিব্যি পাচ্ছি।' একজন রোগী দুদিন আগেই দেখিয়ে গেছেন। জ্বর কমছে না। আবার এসেছেন। তার পুরোনো প্রেসক্রিপশন পুরো সাদা। আমি অবাক হয়ে বললাম, 'এ কি? আমি কোন ওষুধপত্র লিখিনি নাকি?' উনি বিব্রত মুখে জানালেন, 'হ্যাঁ লিখেছিলেন। কিন্তু বাড়ি গিয়ে প্রেসক্রিপশন স্যানিটাইজ করতেই সব লেখা উবে গেছে।' ... ...
সেই যে সব প্রাণ একটি একটি করে বেঁচে গেল, তার মধ্যে আমিও বাঁচলাম, বেঁচে রইল আমার হিরামনও। সে এখন বেশ ডাগরডোগর। বাঁকানো লাল ঠোঁট, চকচকে সবুজ পালক। আমার কাঁধে বসে থাকে। এখনও বসে আছে। তাকে কাঁধে নিয়েই আমি চলেছি। মেহরাউলির পথে। শুধু আমি একা নই। গোটা শাহজাহানাবাদ আমার সঙ্গে চলেছে। আমার সঙ্গে চলেছে বললে ভুল বলা হবে। চলেছে সব বাদশার সঙ্গে। বলতে গেলে শাহজাহানাবাদ আজ ফাঁকা। বাদশা সাজগোজ করে চতুর্দোলা সাজিয়ে মেহরাউলির পথে চলেছেন। বাদশা চলেছেন তাঁর প্রিয় উৎসবে। শুধু বাদশার নয়, তামাম শাহজাহানাবাদের বড়ো খুশির তেওহার। ফুলওয়ালো কি সয়ের। সয়ের এ গুলফারোশাঁ। ফুল ব্যবসায়ীদের মোচ্ছব। চারিদিকে শুধু রং আর রং। ... ...
সংক্রামক রোগীকে সমাজ-বিচ্ছিন্ন রাখার জন্যে চালু হয়েছিল কোয়ারেন্টাইন প্রথা। তার জন্যে রোগীকে রাখা হত লোকালয়ের বাইরে কোন কোয়ারেন্টাইন হাউজে। চিকিৎসা বা শুশ্রূষার পরিবর্তে সেখানে যে কী অমানবিক আচরণ জুটত তার বরাতে তার প্রমাণ মেলে অসমের বরাক উপত্যকায় শিলচরের এক পুরনো বিবরণে। কলেরা রোগীকে কোয়ারেন্টাইন হাউজে নিয়ে আসার সময় ও সুযোগ হত না। কলেরায় আক্রান্ত রোগী অধিকাংশ ক্ষেত্রে সংক্রমণের ২৪ ঘন্টার মধ্যে মারা যেত। কিন্তু গুটিবসন্তের আক্রমণ হলে রোগীকে কয়েকদিন ভুগতে হত। গুটিবসন্তে আক্রান্ত কোন বেওয়ারিশ রোগী পেলে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ ওই রোগীকে কোয়ারেন্টাইন হাউজে পাঠিয়ে দিতেন। সাধারণত গুটিবসন্তের রোগী রাখা হত বলে ঘরটার নামই হয়ে গেল 'গুটিঘর'। ... ...
শিকড় তো অনেক গহীনে। সেখানে প্রবেশ করবে কী করে রেখা। সে ছিল নিরূপায় নিরালম্ব এক মানবী, খালেকও কি তাই নয়? খালেক--পোকার রক্তে যে শৈশব রয়েছে তাকে সে এড়াতে পারে না। তাকে সে ভোলে নি। টিপু ভাইজান, মনি ভাইজান, ছবিদি, ইস্কুল, পা ভাঙ্গা শালিক...... কী অপূরব এক শৈশব এঁকেছেন মাহমুদুল হক। সেই শৈশবই খেয়েছে তার প্রাণমন। সেই ফেলে আসা গ্রাম, মানুষজন। ১৯৪৭-এর কথা তা। তখন বালকের বয়স আট হবে বড় জোর। ক্লাস টু। তার দাদা টিপু কলেজে ভর্তি হয়েছে। মনি ভাইজান ক্লাস নাইন হবে কি? সেই বালকের অমল শৈশবই এই উপন্যাসের আধার। এই উপন্যাসের প্রাণ। ছোট ছোট এমন অনুষঙ্গে ভরে আছে এই উপন্যাস যে পড়তে পড়তে বুক মুচড়ে যায়। দেখতে পাই আমার জন্মের আগের পৃথিবী। উপন্যাস তো আমাকে জাতিস্মর করে তোলে। দেখতে পাই সেই সময়কে। ... ...
লকডাউন পিরিয়ড কর্মহীনতাকে মাত্রাছাড়া করে তুলেছে। ধুঁকতে থাকা অর্থনীতির ফাঁদে পড়ে বহু ছাত্রকেই আয়ের পথ খুঁজে বেড়াতে হচ্ছে। যে ছাত্রকে আজ সুদিনের আশায় অব্যহতি দেওয়া হল সে ফিরতি বছরে আদৌ স্কুলমুখী হবে কিনা তা বলা মুশকিল। গোটা বিশ্বেই এই আশঙ্কা ঘনীভূত হচ্ছে যে অতিমারীর প্রকোপ কাটলে ভয়াবহ ড্রপ আউট হতে চলেছে স্কুল কলেজে। ভারতে এর মাত্রা যে ঠিক কত ভয়াবহ হতে পারে তা আন্দাজ করাও মুশকিল। জিরো অ্যাকাডেমিক ইয়ারের প্রাথমিক অব্যহতি নড়িয়ে দিতে পারে ফিরতি বছরের শিক্ষার্থীর হারকেই। তাছাড়া শিক্ষাব্যবস্থা নিজেই অর্থনীতির একটা বড় অংশ। এই গোটা ব্যবস্থার সাথে যুক্ত শিক্ষক ও শিক্ষাকর্মীদের ভিতর বিভাজন কম নয়। ... ...