পৃথিবীর বয়স কত? ধরুণ গিয়ে ঐ মোটামুটি ৪.৩ বিলিয়ন ইয়ার, মানে ওই ৪৩০ কোটি বছরের মত আর কি। তো এই এত বছর বয়সে পৃথিবীর বুক থেকে ‘প্রাণ’ নাম জিনিসটার পুরোপুরি অবলুপ্তি হয়েছে বার কয়েক ধরে নেওয়া যাক। ওই যেমন ডাইনোসার রা হাপিস হয়ে গিয়েছিল। সেই অর্থে মনুষ্য প্রজাতির (হোমো স্যাপিয়েন্স) এর অবলুপ্তি পৃথিবীর বুক থেকে এখনো হয় নি। কিন্তু যদি হত? ... ...
কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার ভয়াবহতা ... ...
১৯৭৩ এর ফেব্রুয়ারিতে দেখলাম অনেকদিন আগে জামিন পাওয়া দুজন কয়েদী জেলে ফিরে এল। বছর পঁচিশেকের বুধনি আর তার শাশুড়ি। বুধনির বর জেলেই আছে, কিন্তু গত বছরখানেকের মধ্যে পয়সার অভাবে ওরা কেউ গ্রাম থেকে দেখা করতে আসতে পারেনি। এই দুই মহিলা "জামিন অমান্য" করার অপরাধে আবার আটক হয়েছে। ওদের গ্রাম থেকে বাসে করে হাজারিবাগ আদালতে আসতে বাস ভাড়া লাগে ছ'টাকা। সেই টাকা ছিল না বলে আদালতের হাজিরার দিন ওরা আসতে পারেনি। ওরা বাড়িতে বেআইনি আগ্নেয়াস্ত্র রাখার দায়ে আতক হয়েছিল - কেস মিটমাট করার জন্য জমি, গয়না, জিনিস সবই বেচে দিয়েছে। সর্বস্বান্ত হয়ে যাওয়ার পরও আদালতে মামলা ওঠেনি। এই ক'দিন দু'জন লোকের বাড়ি বাড়ি কাজ করে কোন রকমে দিন গুজরান করেছে। ... ...
কবিতা পত্রিকার সম্পাদকও কবির রচনাকে বুঝতে পারেন না ... ...
শারদ পূজায় জ্যান্ত প্রতিমার মজা আছে - কিন্তু প্রেস্টিজ পাংচারের ভয়ও থাকে... ... ...
স্নিগ্ধার তত্ত্বাবধানের দায়িত্বে আছে ননদ রূপা। তার কাছে শোনা হয়ে গেছে কয়েদিদের মধ্যে খুনীদের একটু কম সন্দেহের চোখে দেখা হয়। নিতান্ত পেশাদার খুনী না হলে তারা হয়তো উত্তেজনার মূহুর্তে অপরাধ করে ফেলে কিন্তু স্বভাব অপরাধী হয় না। চোররা সবচেয়ে খারাপ। ডাকাতরা মাঝারি। নিখিল আবার ঠিক চোরডাকাত কিছুই নয়। ফরেস্টে কাঠ চুরির কেসে ফেঁসে গেছে। কোন কাঠমাফিয়ার হয়ে জেল খাটতে রাজি হয়েছিল, অর্থের বিনিময়ে। মায়ের অসুখ। টাকার খুব দরকার। ভেবেছিল কিছুদিন কয়েদ খেটে ছাড়া পেয়ে যাবে। তারপর যা হয়, মামলাই উঠছে না।... ... ...
ধর্মনিরপেক্ষ ভারতে জাতপাতের গুরুত্ব নিয়ে আমি রোজই বেশি বেশি করে সচেতন হচ্ছিলাম। বইয়ে পড়া চার বর্ণের সাদাসিধে হিসেবটা পড়েই ভাবতাম ভারতের জাতের ব্যাপারটা আমি জানি। আস্তে আস্তে জানলাম এই সব জাত আবার মোটামুটি আড়াই হাজারের মত আলাদা আলাদা সম্প্রদায়, গোষ্ঠী এসবে ভাগ করা - তাদের বিয়ে টিয়ের অতি জটিল এবং সুনির্দিষ্ট নিয়ম কানুন, আচার, সংস্কার আছে। প্রতিটি জাত অন্য জাতের সঙ্গে কীভাবে আর কতদূর সম্পর্ক রাখতে পারবে তার নির্দিষ্ট নিয়ম আছে। সোমরি বলেছিল জেলের বাইরে ও ব্রাহ্মণ বা নিজের জাতের বাইরে কারো রান্না করা ভাত খেতে পারে না, কিন্তু নির্দিষ্ট কিছু জাতের তৈরি অন্য কিছু কিছু শুকনো খাবার খেতে পারে। ... ...
মুশকিল হচ্ছে এই সব হচ্ছে প্রশাসনের নাকের ডগায়! আর এখানেই রোমানিয়া পিছিয়ে গেছে পশ্চিম ইউরোপ থেকে। গেম মারা চলছে, এখন গরমের সময়, এখনও চলছে, শীত আসলেও চলবে। সমস্যার গোরায় হাত না দিলে গেম মারা থামান যাবে না। গেম মারার দিক থেকে বাংলাদেশ শীর্ষে। আর সাথে সাথেই আছে ভারত পাকিস্তান। ( এখানে কিন্তু ভারত পাকিস্তানে কোন ভেদাভেদ নাই। পাকিস্তানি দালাল ধরে ভারতীয়রা হরহামেশা গেম মারছে। পাকিস্তানি নাপিতের জন্য সবাই বসে থাকে, কখন আসবে আর সস্তায় চুল কাটাবে! ) নেপালের বেশ সুনাম রোমানিয়ায়। তারা গেম মারে না বা খুব কম মারে। যতদূর জানি সামনে এই তিন দেশ থেকে আর লোক নিবে না রোমানিয়া। কিন্তু যদি শ্রমিক বান্ধব না হতে পারে তাহলে আসলে কোন কাজই কাজে আসবে না। কেন যায় এইটার উত্তর বের করতে পারলেই গেম মারা বন্ধ হবে। আমি একজন ইথুইপিয়ার নাগরিককে চিনি, তার সঙ্গী সাথী সব গেম মেরে চলে গেছে, তিনিও যাবেন। কাজেই গেমের দোষ শুধু আমাদের দিয়ে আমাদেরকে ব্ল্যাক লিস্ট করে আসলে কোন কাজ হবে না। সমস্যার গোরায় যেতে হবে। ... ...
মোদ্দা কথা টাকা থাকলেই আসবে ক্ষমতা – এবার সেই ক্ষমতা নিয়ে আপনি কি করবেন সেটা আপনার ব্যাপার। টাকা আর ক্ষমতা কাছে চলে এলে আপনি আপনার চারিদিকে যে পাবলিক ঘুরঘুর করছে তাদের কন্ট্রোল করতে পারবেন – এবং তারা আপনার জন্য আপনার চাদিকের পৃথিবী পালটে দেবার চেষ্টা করবে আপনার পছন্দ মত। এবং সেই ক্ষমতা বাড়তে বাড়তে একসময় এমন পর্যায়ে পৌঁছে যায় যে আপনি চারপাশের ‘বাস্তবতা’ নিজে ইচ্ছে মত তৈরী করে নিতে পারবেন! এই পর্যায়ে আপনাকে আর সত্যের বিকৃতি ঘটাতে হবে না টাকা উপায়ের জন্য, টাকাই আপনার জন্য সত্যের বিকৃতি ঘটিয়ে দেবে! ... ...
জেলের বাইরে ভারত তখন ক্ষতবিক্ষত হচ্ছে। আসামে ভাষা আন্দোলন, পাঞ্জাবে ছাত্র বিক্ষোভ, দেশের অন্যান্য প্রান্তে একেক জায়গায় একেক রকম সমস্যা। একদিন হাজারিবাগ থেকে তিরিশ মাইল দূরে রামগড়ের এক ধর্না আন্দোলন থেকে গ্রেপ্তার হওয়া বিহারের এক বিধায়ক এলো আমাদের এখানে। ও আমাদের সঙ্গে অল্পদিনই ছিল, কিন্তু সেই অল্প কদিনে আমি অনেক কিছু জানতে পেরেছিলাম। ও রামগড়ের সিপিআই বিধায়ক। আগে ওর স্বামী বিধায়ক ছিল - নির্বাচনের অল্প ক'দিন পর সে খুন হয়। দল তখন ঠিক করে ঐ আসনে এ দাঁড়াবে, জিতেও যায় - সহানুভূতির ভোটও ছিল বিপুল। আমার ইচ্ছে ছিল ওর সঙ্গে রাজনীতি নিয়ে একটু কথা বলার। ও দেখলাম মার্কস এঙ্গেলস বা লেনিনের ব্যাপারে কিছু জানে না। সরকারী নীতি নির্ধারন এসব নিয়ে জিজ্ঞেস করলাম - অকপটে স্বীকার করলো ও ইংরেজি জানে না, আর বিধানসভার কাজকর্ম সব ইংরেজিতে হয় তাই ওখানকার আলোচনা বা বিতর্ক কিছুই ও ধরতে পারে না। ... ...
হারানো প্রযুক্তি ... ...
শ্রমক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ বাড়া ভালো লক্ষণ, কিন্তু এই বাড়তি মহিলা শ্রমের সিংহভাগই কৃষিতে যাচ্ছে, শস্তার শ্রম হিসেবে ব্যবহার হচ্ছে- এগুলো সুবিধার লক্ষণ নয়। ... ...
মেঘলা মেদুর দিনে এক ব্যাংবাজির গল্প হয়ে যাক। ... ...
তিরিশ মাইল দূরের ছাতরার সাব-জেল থেকে একটি অল্পবয়সী মেয়ে এল - কোলে তার কংকালসার ছেলে, শ্বাসটুকুই যা চলছে। হাত পা গুলি সরু কাঠি, ব্যথায় মলিন বড় বড় চোখদুটি যেন মুখ থেকে ঠেলে বেরিয়ে এসেছে। কনুই, গোড়ালি, হাঁটু খোস পাঁচড়ায় ভরা, শরীর রক্তশূণ্য, চামড়া ঝুলে পড়ছে। বাচ্চাটার কাঁদারও শক্তি নেই - এমন ভাবে মায়ের কোল আঁকড়ে থাকে মনে হয় যেন কোনভাবে নতুন করে বাঁচার জন্যে ও মায়ের গর্ভে ফিরে যেতে চাইছে। দুমাস ধরে আন্ত্রিক রোগে ভুগছে - ছাতরায় চিকৎ্সার কোন ব্যবস্থা নেই। বাঁচার আর আশা একেবারেই নেই বোঝার পর ওখানকার জেলার তড়িঘড়ি হাজারিবাগে পাঠিয়েছে "চিকিৎসা"র জন্য। ঠিক মাথায় দু'দিনের ছেলেটা আমার কোলেই মারা গেল। কী দুঃসহ অপচয় একটা জীবনের, আঠারো মাসের একটা শিশুর মৃতদেহ এই প্রথম আমি চোখের সামনে দেখলাম। পাথরের মত বসে তাকিয়ে রইলাম - ডোম এসে কাপড়ে মুড়িয়ে কংকালসার দেহটাকে নিয়ে গেল - জেলখানার দেওয়ালের ঠিক বাইরেই ঝিলের ধারে ওর দাহ হবে। ... ...
আসলে শেকড়ের শেকল থেকে মুক্তির উদ্দেশ্যে মানুষের আকাঙ্ক্ষা যেন আরেক পেষণের, আরেক শেকলের; ধরণীতলের কঠিন শেকল যা মানুষকে করেছিল গুহাবন্দী, তাকে ছিন্ন করে উপরের জলে গড়া নরম শেকলে সে স্বপ্ন দেখে মুক্তির। নিয়ম আর আচারের শেকড়-বাকড় উপড়ে ফেলে বর্ষা নগ্ন মানুষকে মুখোমুখি করে প্রকৃতিদেবীর, যার জন্য সে কতদিন পথ চেয়ে ছিল! বৃষ্টির কোলে শায়িত অবস্থায় এক তীব্র পেষণে যখন ফিনকি দিয়ে রক্ত ছোটে আদিম সব গুহা থেকে, এক নতুন পৃথিবীর জন্ম হয় তখন! বৃষ্টির পরম শাসনে সভ্যতার মুখোশ খোলার অব্যর্থ সব বাণ নিক্ষিপ্ত হতে শুরু করে সেখানে; তার পিঠের উপর পড়তে থাকে বৃষ্টির তীব্র চাবুক! বর্ষা তাই পৃথিবীর আরেক রেঁনেসা। নগ্নতার অমোঘ আহবানে পরিচয়-যুদ্ধের মাতাল মাঠ ছেড়ে মানুষ পাড়ি জমায় অকুলের অনন্ত নৌকোয়। ... ...
মার্কিন রাষ্ট্রদূত এরিক গার্সেটি এই সেদিন কলকাতা এসে ঘুরে গেলেন। আসার আগে দিল্লির বঙ্গভবনে গিয়ে তিনি মোচার চপ, মাছের ঝোল খেলেন। কলকাতায় এসে হলুদ ট্যাক্সির সামনে দাঁড়িয়ে ছবি তুললেন, রাস্তার পাশে ভাঁড়ের চায়ে চুমুক দিলেন। অলি-গলিতে হেঁটে বেড়ালেন। বিবিধ সংস্কৃতির পীঠস্থান লস এঞ্জেলেস শহর। গার্সেটি আগে ছিলেন সেখানকার মেয়র। দিল্লিতে মার্কিন দূতাবাসের দায়িত্ব নেবার পরে বাংলার সংস্কৃতি, বাংলার রান্নার বৈশিষ্ট্য, বাংলার মন বুঝতে এসেছিলেন। কিন্তু তাঁর সেই চেষ্টায় বোধ হয় একটা ফাঁক থেকে গেল। মল কালচার, দেশি-বিদেশি রেস্তোঁরা, ফুড ডেলিভারি অ্যাপ আর বিলীয়মান ঘরোয়া রান্নার এই যুগে আমেরিকান সাহেব দুপুরের আহারটা কলকাতার কোন একটি পাইস হোটেলে সারলেই পারতেন। কারণ, এই পাইস হোটেলগুলিই কলকাতার আসল হেরিটেজ ইটারি। মেনুতে থাকত সদ্য ধোয়া কলাপাতার ওপরে লেবু-লঙ্কা সহ ধোঁয়া ওঠা গরম ভাত, সুক্তো, পাঁচফোড়ন দেওয়া পাতলা মসুরির ডাল, কুমড়ো ফুলের বড়া আলু-পোস্ত এবং আলু-পেঁপে-কাঁচকলা সহ মাছের কবিরাজি ঝোল, হাঁসের ডিমের ডালনা, আলুর বড় টুকরো দিয়ে কচি পাঁঠার ঝোল এবং কাঁচা আমের চাটনি। সঙ্গে রাখা যেত মাটির খুড়িতে মিষ্টি দই, একটা নরম পাকের সন্দেশ ও রসগোল্লা। বেরিয়ে আসার সময় একটা মিঠে পাতার পান। বাঙালির ইটিং আউটের প্রায় শতবর্ষের বিবর্তনের সঙ্গে জড়িত এই রাজ্যের অর্থনীতি, কর্মসংস্থান, পারিবারিক আচার, জাতীয়তাবাদের উন্মেষ এবং ব্যবসার বর্তমান হাল হকিকতের একটা পরিষ্কার চালচিত্র তাহলে তিনি পেয়ে যেতেন। তিনি আরও উপলব্ধি করতেন, এই সব পাইস হোটেলে একটা সময় সাধারণ মানুষ মাত্র এক পয়সার বিনিময়ে ঠিক বাড়ির মতো রান্না খেয়ে পেট ভরাতেন। কলকাতার আসল বাঙালিয়ানার হদিস পেতে হলে এই পাইস হোটেলগুলিতেই আসতে হবে। বাঙালির খাদ্য সংস্কৃতির ইতিহাসে পাইস হোটেলের হেরিটেজ কোনভাবেই অস্বীকার করা যায় না। সেখানে বসে সাবেকি রান্নার আস্বাদ গ্রহণ তারিয়ে তারিয়ে ভিনটেজ ওয়াইন উপভোগ করার মতোই অতুলনীয়। ... ...
সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় ? তাঁকে দেখাবো আমার কাঁচা প্রেমের কবিতা ? যার মাত্র সতেরো বছর বয়েসে লেখা কবিতা ‘ একটি চিঠি ‘ সাগরময় ঘোষ দেশ পত্রিকায় ছেপেছিলেন ? যিনি লিখেছেন , ‘ আমার যৌবনে তুমি স্পর্ধা এনে দিলে / তোমার দুচোখে তবু ভীরুতার হিম’। এই তো সেদিন চৌঠা এপ্রিল, শুক্রবার ওভারটুন হলে কৃত্তিবাসের সভায় যাকে প্রথম চাক্ষুষ করে এসেছি! তেত্রিশ বছরের দুঃখ উজাড় করে বলে গেলেন মাঝি নাদের আলী , আগমনী গাওয়া বোস্টুমি তাদের কথা রাখে নি। সুনীলদার সামনে বসে এই প্রথম তাঁর আবৃত্তি শোনা । তারপরে কত পূর্ণিমা অমাবস্যা কেটে গেলো কিন্তু সেদিন শোনা ‘ কেউ কথা রাখে নি ‘ মনে থেকে গেছে সারা জীবন। কোন কবি পারেন সে গীতি শোনাতে। তার রেশটুকু আজও থেকে গেছে। হাতের কাছে বইটা পেয়েও সোনালি দুঃখ আর পড়িনি । ত্রিস্তান ইসোলদে নামক হলিউডি ছবিটি দেখা দেয় বছর পনেরো আগে , দেখি নি। এক আশ্বিনের বিকেলে বীরভূমের গ্রামের দিগন্ত বিস্তৃত মাঠের মুখোমুখি বসে দু চোখ ভিজিয়ে দেওয়া পাওয়া ও হারানো ভালোবাসার যে রাগিণী শুনেছিলাম সেটি বাজে মাত্র একবার। ... ...
অঁতনা আতো'র কথা ... ...
সোমবার ফ্লাইট। তাই আমাকে বিদায় জানাতে ক্যাম্পে তেমন কেউ ছিল না। যারা ছিল তাদের মধ্যে একজনের চোখ কী ছলছল করে উঠেছিল? না কি আমারই চোখ ভিজে যাচ্ছিল? কিন্তু কেন? এই সেই কুখ্যাত ক্যাম্প, যেখানে বৃষ্টিতে আমাদের রুমে নোংরা পানি ঢুকে সয়লাব হয়ে গেছিল। এখানেই বদমায়েশ কোম্পানি দুই মাস ধরে গরম পানি বন্ধ করে রেখেছে। এখানেই শীতের সময় হিটার বন্ধ করে দিত। এই ক্যাম্পের একটা স্ক্রুরর প্রতিও কোন প্রেম থাকার কথা না আমার। অথচ বুকের ভিতরে মোচড় দিয়ে উঠল কয়েকবার! অদ্ভুত মানুষের মন। ... ...
কিছুদিন পর সুপার জানালো ২৯শে মার্চ জামশেদপুরে আমার আদালতে হাজিরার দিন ঠিক হয়েছে। বাবা চিঠি লিখেছিল - তাতেও এই খবর ছিল। সুপার বললো একটা চার্জশিট জমা পড়েছে, আরেকটার কাজ চলছে। আমি আকাশ থেকে পড়লাম - দ্বিতীয় কেস বলে কিছু আছে আমার তো তাই জানা ছিল না - কিসের চার্জশিট ! সুপার নিজেও মনে হল ধন্দে পড়ে গেছে। একজন দপ্তরী আমাদের কথা শুনে দেখে বললো সত্যিই আমার বিরুদ্ধে আরেকটা সমন আছে। কাগজপত্র ঘেঁটে সেটা বেরুলো - ঐ কেসটা নিয়ে আমাকে কেউ কিছু জানানোরই প্রয়োজন বোধ করে নি। ওটা প্রথমটা থেকে অনেক বেশি ভয়ানক - রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও যুদ্ধঘোষনা। এই অভিযোগে মৃত্যুদণ্ড পর্যন্ত হতে পারে। অভিযোগ, ১৯৭০ সালের জুন মাস পর্যন্ত আমি রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত ছিলাম। ওদিকে ঐ সময়ে আমি দু'সপ্তাহ জেলে কাটিয়ে নিয়েছি। ... ...