প্রথম উপন্যাসে প্রোজ্জ্বল কোনো দার্শনিক প্রস্তাবনা, ন্যারেটিভের জটিলতা , ব্যক্তিমনের অন্তর্লীন শুলুকসন্ধানে প্রবৃত্ত হন নি। একেবারে সোজাসাপটা গল্প বলতে চেয়েছেন তিনি। কিন্তু তাঁর জোরের যে জায়গাটা সেটা হল এই কাজটুকু তিনি ভীষণ আন্তরিকতা আর সততার সঙ্গে করতে পেরেছেন। ... ...
জ্ঞানী ব্যক্তিরা বলেন খেলাধুলোর সঙ্গে রাজনীতির কোনো সম্পর্ক নেই, থাকা উচিত নয়। কিন্তু এটাও তো সত্যি যুদ্ধ বাধানোর অপরাধে জার্মানি ১৯২৪, ১৯২৮, পশ্চিম জার্মানি ১৯৪৮ সালে, জাপান ১৯৪৮ সালে অলিম্পিকে যোগদানের অনুমতি পায় নি ; একই কারণে ১৯৫০ সালের বিশ্বকাপ ফুটবলে জার্মানির দ্বার রুদ্ধ ছিল – একমাত্র বিশ্বকাপ যেখানে জার্মানি খেলেনি। রাশিয়ার আফঘানিস্তান দখলের প্রতিবাদে ১৯৮০র মস্কো অলিম্পিক বয়কট করে পশ্চিমের কিছু দেশ ; বদলা নিতে ওয়ারশ চুক্তির দেশ গুলি (ব্যতিক্রম রোমানিয়া) লস এঞ্জেলস অলিম্পিক বয়কট করে। ... ...
এই পরিপ্রেক্ষিতে ১৮২৩-২৪ সালে দেশে কলের সুতো এল। হাতে বোনা সুতোর থেকে তার দাম কম। ধীরে ধীরে বাজার ছেয়ে গেল কলের সুতোয়। টিঁকে রইল শুধু খুব মিহি সুতো আর খুব মোটা সুতো, যা পরে দেশের গরীরগুর্বোরা। সেই সময়ে ১৮২৮ সালের সমাচার দর্পনে এক সুতাকাটুনির দুঃখভরা চিঠি বেরোল, তিনি দৈনিক দুই তোলা সুতো কেটে দিনে এক টাকা আয় করতেন। এই কাজ করে তিনি সাত গন্ডা টাকা দিয়ে মেয়ের বিয়ে দিয়েছেন, এগার গন্ডা টাকা দিয়ে শ্বশুরের শ্রাদ্ধ করেছেন, ভাত কাপড়ের কোন চিন্তা ছিল না। কিন্তু কলের সুতো এসে তার আয়ের উপায় কেড়ে নিয়েছে। তাঁর দৈনিক কাটা সুতোর পরিমাণ আর আয়ের হিসেব দেখে অবশ্য একটু অবাকই লাগে। কারণ ১৮২২-২৩ সালেও নাকি ক্ষীরপাই, রাধানগরে কোম্পানির কাটুনিদের মাসিক আয় ছিল ৩ টাকা আর মালদহে ২টাকা ৮ আনা। অসামান্য দক্ষতা ছাড়া এই আয় সম্ভব না। তাই আমরা ব্যক্তির দুঃখে দুঃখিত হই, কিন্তু সামগ্রিক ভাবে বিজ্ঞানের অগ্রগতির জয়গান গাইব নাকি মেয়েদের আয়-হরণের দুঃখে কাতর হব তা ঠিক বুঝে উঠি না। ... ...
[ আমার চোখে দেখা আর হৃদয়ে্র অনুভবে জারিত এই ছোট্ট ছোট্ট চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এখনো মোছেনি আমার মাথার স্মৃতিকোষগুলোর থেকে। তার থেকে তুলে আনা এই মণি-কাঞ্চনগুলোয় যেমন পেয়েছি সাক্ষাৎ ভগবানদের, তেমনি কিছু কিছু সাংঘাতিক ঘটনা নেহাৎ-ই সহ্য করেছি উপায়ান্তরহীন যাপনে। ক্রোধে ফেটে পড়েছি মননে। রক্তচাপ বাড়িয়েছি বারংবার – মধ্যবিত্ত মনোভাবনায়। পেয়েছি আচম্বিত বাড়ানো হাত - অকাতর অকৃপন স্পর্শে। কৃতজ্ঞতাও হয়তো অব্যক্ত ছিল আমার পক্ষে সে সময়। তো এইসব ছিন্নবিচ্ছিন্ন ঘটনার কিছু রেশ গ্রন্থিত করছি প্রাণের আনন্দে। এখনো বেঁচে আছি, বেঁচে আছে আমার প্রজন্ম। তাই ভগবানের নামকীর্তন যেমন করেছি অক্লেশে, আবার সেই ‘আতঙ্ক’ চলচিত্রের মতো যেন কিছুই দেখিনি আমি হয়ে পাল্টেছি চরিত্র কিম্বা স্থান-নাম। মহাবীর-বুদ্ধ-নানক-রামকৃষ্ণের পুণ্যভুমিতে আজ হিংসা পৌনঃপুনিকতায় ছড়াচ্ছে বিদ্বেষের লাল আগুন। যে আগুন শুধুই ভস্ম-জন্ম আহ্বান করে। নিরুপায় আমি করজোড়ে মার্জনা চাইছি আমার এটুকু অপৌরুষেয়তার।] ... ...
রেমডেসিভির বিষয়ক দু-একটি কথা। দেখা যাচ্ছে যে ধরণের প্রমাণের ভিত্তিতে রেমডেসিভিরকে আমেরিকার এফ ডি এ ছাড়পত্র দিয়েছেন, সেই সমস্ত প্রমাণ খুব জোরালো নয়। এতৎসত্ত্বেও ভারতে রেমডেসিভির নিয়ে এক ধরণের উন্মাদনা তৈরী হয়েছে কি? ... ...
কুলদা রায়ের সাহিত্য নিয়ে একটি লাইভ আলোচনায় আমন্ত্রিত হয়ে কিছু কথা বলার সুযোগ হয়েছিল স্বয়ং লেখকের উপস্থিতিতে। তার থেকে অনেক বেশি কথা না বলা থেকে গিয়েছিল, সময় সংক্ষেপের কারণে । সেই বলা এবং না বলা কথা, যা ছিল ঐ আলোচনার একটি প্রস্তুতি পর্বের নোট ,পাঠকের সঙ্গে ভাগ করে নিলাম। ... ...
[ আমার রেজিস্ট্রেশন নাম্বার পড়ে গেল সে ফাইলে। আর ফাইলের ওপরে মোটা কালো স্কেচ পেন দিয়ে লেখা হ’ল ‘Allergic to ……” সালফার। এই মামুলি অথচ অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ইনফরমেশন এর আগে আর কোথাও এত গুরুত্ব দিতে দেখিই নি। আর এই এ্যালার্জির কারণেই দেখি কতো পেশেন্টের কতো রকমের সমস্যা হ’তে।] ... ...
[ আমার চোখে দেখা আর হৃদয়ে্র অনুভবে জারিত এই ছোট্ট ছোট্ট চিকিৎসা সংক্রান্ত ঘটনাগুলি এখনো মোছেনি আমার মাথার স্মৃতিকোষগুলোর থেকে। তার থেকে তুলে আনা এই মণি-কাঞ্চনগুলোয় যেমন পেয়েছি সাক্ষাৎ ভগবানদের, তেমনি কিছু কিছু সাংঘাতিক ঘটনা নেহাৎ-ই সহ্য করেছি উপায়ান্তরহীন যাপনে। ক্রোধে ফেটে পড়েছি মননে। রক্তচাপ বাড়িয়েছি বারংবার – মধ্যবিত্ত মনোভাবনায়। পেয়েছি আচম্বিত বাড়ানো হাত - অকাতর অকৃপন স্পর্শে। কৃতজ্ঞতাও হয়তো অব্যক্ত ছিল আমার পক্ষে সে সময়। তো এইসব ছিন্নবিচ্ছিন্ন ঘটনার কিছু রেশ গ্রন্থিত করছি প্রাণের আনন্দে। এখনো বেঁচে আছি, বেঁচে আছে আমার প্রজন্ম। তাই ভগবানের নামকীর্তন যেমন করেছি অক্লেশে, আবার সেই ‘আতঙ্ক’ চলচিত্রের মতো যেন কিছুই দেখিনি আমি হয়ে পাল্টেছি চরিত্র কিম্বা স্থান-নাম। মহাবীর-বুদ্ধ-নানক-রামকৃষ্ণের পুণ্যভুমিতে আজ হিংসা পৌনঃপুনিকতায় ছড়াচ্ছে বিদ্বেষের লাল আগুন। যে আগুন শুধুই ভস্ম-জন্ম আহ্বান করে। নিরুপায় আমি করজোড়ে মার্জনা চাইছি আমার এটুকু অপৌরুষেয়তার।] ... ...
মুখবন্ধ:গত এক বছর ধরে জ্যাক কেরুয়াকের "wake up" নামে বুদ্ধজীবনী ও সুরঙ্গমা সূত্রের ওপর লেখা একটি বইয়ের অনুপ্রেরণায় একটি বই লিখেছি। পুরো একত্রিত অবস্থায় আপনাদের জন্য এখানে তুলে রাখলাম। এক বছরের গবেষণা, একটু একটু করে লেখা। বাংলায় এর আগে হয়ত বুদ্ধদেবের জীবনী নিয়ে লেখা হয়েছে, বৌদ্ধ ধর্ম নিয়েও লেখা হয়েছে (রাহুল সাংকৃত্যায়ন, বাণী বসু (মৈত্রেয় জাতক), শরদিন্দু বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা), তথাপি যেটা নিয়ে সেভাবে লেখা হয়নি সেটা বৌদ্ধ সূত্র নিয়ে, থেরাবাদ বৌদ্ধধর্ম নিয়ে, থেরিগাথা নিয়ে। আশা করব আপনারা পড়বেন, ... ...
প্রাচীন কাল থেকেই তন্ত্রসাধনায় কল্পিত হয়েছে মানব শরীরের দুটো নাড়ী। শরীরের বামদিকে যে নাড়ী থাকে তাকে বলে ‘ইড়া’, আর ডানদিকে যে নাড়ী থাকে তাকে বলে ‘পিঙ্গলা’। বৌদ্ধ সাধনায় এই দুটি যথাক্রমে শুন্যতা ও করুনার প্রতীক। ... ...
গল্প ... ...
এই দ্বিতীয় পর্বের প্রাককথায় বলেছিলাম, প্রতিটি উত্তরণ হল সভ্যতার অসীম সিঁড়ির এক একটি ধাপ। আমাদের সমাজের বেশ কিছু মানুষ এই পর্যায়ে এসে সভ্যতার অনেকগুলি ধাপ খুব দ্রুত পার হতে পেরেছিল, কিন্তু প্রাকৃতিক বিপর্যয় ও রপ্তানির বাজার মন্দা হওয়ার কারণে, তারাই আবার বেশ খানিকটা পিছিয়ে দিল আমাদের সভ্যতার অগ্রগতি। ... ...
মনোলীনা ছায়াছবির এক উঠতি নায়িকা জেনে ভেদীপ্রিয়ার রাগ সেদিন চরমে...আর ওর রাগ মানেই ছোঁড়াছুঁড়ি... প্রথমে বালিশ, চাদর তারপর মগ, প্লেট যা হাতের কাছের পায়... ঘরেতে প্রান ফিরেছে, তাই চুপ থাকলেও পরে কাঁটাচামচ দেখে চিৎকার... এবারে কি সত্যি সত্যি মার্ডার করবেন!!...রাখুন ওটা, বলে ভেদীপ্রিয়ার হাত থেকে যখন কাঁটাচামচ ছাড়াচ্ছি, টের পেলাম ল্যাপটপ স্ক্রীনে মনোলীনার ছবিটা ঝাপসা হয়ে আসছে... এরপর সব শান্ত...কি যেন একটা ঘটে গেল ... ভেদীপ্রিয়ার মুখ লাল... দু কারণে হতে পারে... ... ...
আপনি চান আপনার হাজার ডলার। রাশিয়া বলছে দেবো না বলিনি, রুবেলে দেবো বলেছি। আপনি নেবেন না। অতএব আপনি বাজারে খোঁজ খবর করলেন। যে বন্ডের কাগজটি আপনি যক্ষের ধনের মতো আগলে রেখেছিলেন সেটা রাশিয়ানরা না হোক অন্য কেউ কি কিনবে? যাঁদের মারফত আপনি এই মহামূল্য বন্ডটি কিনেছিলেন সেই জে পি মরগান বা গোল্ডম্যান জাখসকে ফোন করলেন। অবশ্যই আপনার টাকা বাঁচল কি ডুবল তাতে এঁদের কিছু এসে যায় না। আপনি প্রাপ্ত বয়স্ক নিবেশক – চোখ খুলে, জান বুঝকে টাকা লাগিয়েছিলেন। এখন তাদের কাছে ঘ্যান ঘ্যান করলে তারা শুনবে কেন? তার মানে কি এঁরা হাত উলটে বসে থাকবেন? তা কখনো হয়? আপনি তাঁদের খদ্দের, খরিদ্দার প্রভুর সমান লেখা দেখেন নি কলকাতার দোকানে দোকানে? শ্যামবাজারে মায়ের সঙ্গে শাড়ি কিনতে গিয়ে কতবার দেখেছি। ... ...
কৈশোর থেকে যৌবনের উড়াল। বদলে যায় পরিবেশ। বদলে যায় স্বজন-বান্ধব-পরিচিতি। বদলে যায় সময়। বদলে যায় জীবন, পুর্ব-লালিত ধ্যান ধারণা। সবার নয়, কারোর কারোর। এ বদলের ছাপ আবার সবসময় বাইরে পড়ে না। তাই আশেপাশের অজান্তেই ঘটে যায় অদল-বদল। আর কখনো কখনো এই বদলের কেন্দ্রে থাকে একটি জড়বস্তু। একটি শিক্ষাস্থান। খিড়কী থেকে সিংহদুয়ারের জীবনে খোলা হাওয়া। বদলের ক্যাটালিস্টও। জীবনে বদলই ধ্রুব। জ্ঞানীরা তাই বলেন। তবু কতটা সহজ হয় এই অন্তর-যাত্রা? কতটা মূল্য দিতে হয়? ... ...