সেই পুরোনো লোক, আম্বেদকর। সেই পুরোনো দল, আরএসএস। নতুন সাল, ২০১৬। নতুন মতামত — ‘মেলাবেন, তিনি মেলাবেন’। ২০১৬-র এপ্রিলে সে-ই অর্গানাইজার-এরই সংখ্যায় প্রচ্ছদ হল — “Ultimate Unifier”। সঙ্গে ছবি — না, মৈত্রেয় বুদ্ধের নয় — আম্বেদকরের। স্তুতির বন্যা বয়ে গেল। ‘গোটা দেশকে জুড়ে রাখার ফেভিকল তিনি সাপ্লাই করেছেন’ থেকে শুরু করে, ‘ব্রাহ্ম-প্রার্থনা-আর্য – সমস্ত সমাজের ভাল ব্যাপারগুলোই তাঁর চিন্তাধারায় বর্তমান’ হয়ে, ‘মোটেই তিনি ব্রাহ্মণদের বিরুদ্ধে ছিলেন না, ব্রাহ্মণ্যবাদের শ্রেণীবিভাগের বিরোধী ছিলেন’ পর্যন্ত। ... ...
পবিত্রতা, সারল্য, অহিংসা, সত্যাশ্রয়, ত্যাগ, দয়া, মৃদুস্বভাব, তেজস্বিতা, ক্ষমা, ধৈর্য্য, মঙ্গলাচরণ, এবং অবশ্যই আত্মশ্রদ্ধা ও আত্মজ্ঞান – রবীন্দ্রনাথ তার প্রতিটিই প্রায় কর গুনে তুলে এনেছেন তাঁর এই রচনায়। আমরা যে দেশের স্বাধীনতার ৭৫ বছর উদযাপন করলাম, তার মধ্যে আজ কি এই গুণাবলী পাই আমরা? ... ...
আমি ব্যক্তিগত ভাবে মনে করে বঙ্গন্ধুকে পয়গাম্বার বানানোর যে চেষ্টা করা হয় তার কোন দরকার নাই। তিনি মানুষ ছিলেন, কোন প্রেরিত পুরুষ ছিলেন না। তিনি এই বাংলার একদম মাটি থেক উঠে আসা মানুষ ছিলেন, কৃষক পরিবার থেকে উঠে, কোন প্রকার রাজনৈতিক ঐতিহ্য না থাকা সত্ত্বেও এই ভূখণ্ডের সকল রাজনৈতিক ব্যক্তিত্ব থেকে নিজেকে নিয়ে গেছেন অনন্য উচ্চতায়। কিন্তু তিনি মানুষ ছিলেন এইটা আমরা যেন না ভুলে যাই। এত বছর পরে উনার ভুল ত্রুটি নিয়েও আলোচনা হোক, আমরা উনার অবিশ্বাস্য সব কৃতীর কথা জানি, এক রোখা ভঙ্গিতে সমস্ত চাপকে পিছনে ফেলে দেশকে ধরে রেখেছিলেন ধর্মনিরেপক্ষ হিসেবে। পেট্রো ডলারের প্রলোভন ছিল, উল্টা দিক থেকে ইজরাইলের মত দেশের তরফ থেকেও প্রলোভন ছিল। রাশিয়া হাত ধরলেও আমরা চলে যেতে পারতাম সম্পূর্ণ ভিন্ন এক দিকে। কোন সঠিক ছিল কোনটা ভুল ছিল এই সব নিয়ে আলোচনা না হলে ভবিষ্যতে বিপদেই পড়ব আমরা। ... ...
বাবা একদিন বললেন পনের-কুড়ি দিন তো হয়ে গেল, আর ফোন নয়; একবার ওই অফিসে গিয়ে খোঁজ নাও। আর এক বন্ধুও সেখানে চাকরি পেয়েছিল আর আমারই মত হাপিত্যেস করে বসে ছিল। দুজনে মিলে গেলাম ডালহৌসি পাড়ার সেই অফিসে যেখানে গিয়ে পরীক্ষা দিয়েছিলাম। আর গিয়ে বুঝলাম মহামতি নিৎসে কেন ওই কথাটা বলেছিলেন। কথাটা হল, “যাবতীয় খারাপ জিনিসের মধ্যে সবচেয়ে বাজে হল আশা, কারণ মানুষের যন্ত্রণাকে সে ব্যাটা দীর্ঘায়িত করে।” ... ...
অবশ্য তিনি এই ভদ্রলোকের মত হিন্দি বলেন কি না জানা নেই যিনি পাঞ্জাবি ক্লায়েন্টকে বলেছিলেন, "হাম ঘরমে খাকে বনকা মোষ কিঁউ তাড়ায়গা?" অথবা সেই আর একজনের মত। ইনি একগাদা প্রিন্টআউট নিয়ে যাকে দেওয়ার তাঁকে বলেন, "পেজ থোড়া আগে পিছে হো গিয়া, আপ থোড়া গুছা লেনা।" ... ...
তেমনই আমরা জানতে পারব না এলেন কেন উচ্চশিক্ষায় আগ্রহী হলেন। কেন আর দশটা ইউরেশিয়ান মেয়ের মত একটু পড়তে শেখা, একটু সেলাই-ফোঁড়াই , একটু নাচতে শেখা এই যা সব নিয়ে সাধারণ ইউরেশিয়ান মেয়েরা সন্তুষ্ট থাকত,এলেন কেন তার সীমানা ছাড়িয়ে বাইরে তাকাতে চাইলেন? তখনকার সাধারণ চাকুরিজীবি অ্যাংলো-ইন্ডিয়ান বাড়িতে কি খুব পড়াশোনার চর্চা ছিল, বিশেষত মেয়েদের মধ্যে? ১৮৮২ সালের তথ্য থেকে পাই তার থেকে দেখা যায় যে ইউরোপিয়ান আর ইউরেশিয়ানদের মধ্যে, অন্তত কলকাতায়, প্রাইমারি বিভাগে মেয়েদের ভর্তির হার ছেলেদের প্রায় দ্বিগুণ। খুবই আশ্চর্য তথ্য। তবে মিডল স্কুলে গিয়েই এই অনুপাত উলটে যাচ্ছে। বিভিন্ন আংলো-ইন্ডিয়ান স্মৃতিকথার টুকরো-টাকরা যা হাতে এসেছে, তার থেকে এও ধারণা করা যায় যে ইউরেশিয়ান মেয়েদের অক্ষরজ্ঞান দরকার এই অবধি ঠিক আছে, তবে তার থেকে খুব বেশি শিক্ষার দরকার বলে কেউ ভাবেন নি সেই সময়। ওই প্রাইমারি স্কুলই ঢের। অবশ্য এই জনগোষ্ঠীর ছেলেরাও যে খুব বেশি দূর পড়াশোনা করতেন এমন তো নয়। আলাদা করে শ্রেণিবিভাগ করা থাকত না বলে একদম সঠিক করে বলা শক্ত, তবে এলেন যে বছর এন্ট্রান্স বা এফ এ পাস করেছেন সেই সেই বছরের তার সহপাঠীদের তালিকায় কিন্তু সাহেবি নামের ছাত্রের সংখ্যা নেহাতই হাতে গোণা। ... ...
“ওঁ পূর্ণমদঃ পূর্ণমিদং পূর্ণাৎ পূর্ণমুচ্যতে। / পূর্ণস্য পূর্ণমাদায় পূর্ণমেবাবশিষ্যতে।। / ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ”। (সন্ধি ভাঙলে – ওঁ পূর্ণম্ অদঃ পূর্ণম্ ইদম্ পূর্ণাৎ পূর্ণম্ উচ্যতে। / পূর্ণস্য পূর্ণম্ আদায় পূর্ণম্ এব অবশিষ্যতে।। /ওঁ শান্তিঃ শান্তিঃ শান্তিঃ।) অর্থাৎ ব্রহ্মাণ্ডে নিরাকার রূপে যিনি পূর্ণ, এই জগতে সাকার রূপেও তিনি পূর্ণ, পূর্ণ থেকেই পূর্ণের সৃষ্টি, পূর্ণ থেকে পূর্ণ গ্রহণ করলেও, পূর্ণই অবশিষ্ট থাকেন। হে পরমাত্মন, সকল বিঘ্নের শান্তি হোক। এই পূর্ণতার সংজ্ঞা যদি অসীম (Infinity) ধরা যায়, সেক্ষেত্রে অসীম থেকে অসীম নিলেও, অবশিষ্ট অসীমই থাকেন বৈকি! ... ...
কয়েকটি মন্দির দেখি বনজঙ্গলে ঢাকা। নষ্ট হয়ে যাচ্ছে এত বড় ঐতিহ্য। কিছু করছেন না? কে করবে? সবাই শিবলিঙ্গ খুঁজে বেড়াচ্ছে। এদিকে কত ভালো ভালো মন্দির পড়ে আছে। তার মুখেই শুনলাম, ঠিক মতো বেতন হচ্ছে না, অস্থায়ী কর্মী বেশি। ... ...
আজ রাত্রি বারো ঘটিকায় ঘটবে আমাদের পঁচাত্তরতম স্বাধীনতা দিবসের অমৃত-মহোৎসবের শুভ উদ্ঘাটন। সেই অমৃত আস্বাদনের আগে প্রায় পঁচাত্তর বছরের পুরোন "পাঁচন"-এর তিক্ত স্বাদে আমাদের চিত্তশুদ্ধি ঘটুক। সকলকে জানাই আন্তরিক শুভেচ্ছা। ... ...
কে বলে মানুষের পাশে আজ মানুষ থাকে না। ঘরে সাপ ঢুকেছে? ডাকো তাঁকে। বাড়িতে করোনা? অক্সিজেন চাই। ফোন দাও তাঁকে। করোনা? ঘরেতে কেউ আসছে না! খাবার বা ফলমূল দরকার? জানাও তাঁকে? বয়স্ক মানুষ। বাজার দোকান করার লোক নেই? খবর দাও তাঁকে। বাড়িতে ভূতুড়ে কারবার? প্রমোটারের কারসাজি? হাজির তিনি। ... ...
এইখানে লিপিবদ্ধ করা রইল ফেসবুকিয় কিছু টুকিটাকি যেগুলোতে পাবলিক মারহাব্বা দেয় ... ...
দিনে ১০-১২ ঘন্টা কাজ। বসার ব্যবস্থা নেই। আমার চেনা একজন কাজ করেন শপিং মলে। শুনলাম সেখানেও বসার নিয়ম নেই। ১০-১২ ঘন্টা বিউটি। হাজার দশেক টাকা বেতন। যাতায়াত সাজপোশাকেই কত খরচ চলে যায়? আগে শুনতাম ইউনিয়নের জন্য ঝামেলা। এখন তো দেখছি, ইউনিয়ন না থাকলেই ঝামেলা। ১০-১২ ঘন্টা দাঁড়িয়ে কাজ করতে পারেন মানুষ? ... ...
রাজ্যের বা সাম্রাজ্যের রাজা যদি, প্রধান অমাত্য ও সেনাধ্যক্ষদের নিয়ে সর্বদাই যুদ্ধে – সে নিজের রাজ্য রক্ষার জন্যেই হোক অথবা অন্য রাজ্য জয়ের জন্যেই হোক – ব্যস্ত থাকেন, প্রদেশ থেকে গ্রাম পর্যন্ত প্রশাসনিক ব্যবস্থায় দুর্বলতা আসতে বাধ্য। প্রশাসনিক দুর্বলতার পিছনে অবধারিতভাবে আসে দুর্নীতি। অর্থাৎ প্রাদেশিক থেকে গ্রামিক আধিকারিকরা মিলিতভাবে দুর্নীতিগ্রস্ত হয়ে উঠে নিজেদের স্বার্থসিদ্ধিতে মগ্ন হয়ে পড়তেন। অতএব একদিকে যেমন প্রশাসনিক আধিকারিকরা হয়ে উঠতেন অত্যাচারী আঞ্চলিক রাজা, অন্যদিকে সাধারণ প্রজাদের দুর্গতির সীমা থাকত না। ... ...
আজ রাখী পূর্ণিমা। বছরের এমন কিছু কিছু উৎসবের দিন আসে, যেদিন ছোটবেলার স্মৃতি মনে ভিড় জমায়। আজ তেমনই একটা দিন। সেই উপলক্ষে এই গল্পটি এখানে শেয়ার করলাম। সকলকে শুভেচ্ছা জানাই, ভালো থাকুন, সুস্থ থাকুন, আনন্দে থাকুন। ... ...
আশির দশকের যাদবপুর মেয়ে হস্টেল। ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতা। ... ...
কয়লা নয় তেল নয় গ্যাস নয় এমনকি আণবিক রিঅ্যাক্টর নয়। ফেলডহাইমের বাতি জ্বলে এমন শক্তি দিয়ে যা জীবাশ্ম জ্বালানির মতন এক দিন ফুরিয়ে যাবে না । এই পৃথিবীর ভু রাজনীতি যে বা যারা সঞ্চালন করুন না কেন, ফেলডহাইমের শক্তির উৎস বইবে অনন্ত কাল কারণ তার মৃত্যু নেই । পুড়িয়ে ভস্মীভূত অথবা শস্ত্র দিয়ে ছেদ করা যায় না তাকে। সেই উৎস চিরন্তন, এই পৃথিবীর মতন। ... ...