এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • মরীচিকা

    দীপাঞ্জন মুখোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ | ৪২৩ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • কুড়ি মিনিট। অনাবিল নিজেই মোবাইলের অ্যাপে সময় দিয়ে ইলেক্ট্রিকের নল সবুজ নাম্বার প্লেটের গাড়িতে লাগিয়ে দিল। এই স্টেশনে আরো তেরোখানা চার্জিং পোর্ট আছে। জাতীয় সড়কের পাশে থাকা স্টেশনের চার্জিং পোর্টের হিসেবে ১৪ তেমন বড় সংখ্যা নয়। অথচ এই রিচার্জিং স্টেশন ফাঁকা। মাথার ওপরে শুধু একগাদা সিসি ক্যামেরা নানরকম কোণ করে লাগানো।
      
    অনাবিল ক্যামেরা থেকে মাথা নামিয়ে ডিজিটাল ওয়ালেট থেকে পেমেন্ট করল। এবার চার্জিং পোর্টে সংখ্যা ভেসে উঠছে। শতাংশের হিসেব। সত্তর শতাংশ চার্জ আছে তার গাড়িতে বলে দেখাচ্ছে। কুড়ি মিনিটের দ্রুত চার্জিংয়ে নব্বইয়ের ওপর উঠে যাবার কথা। 

    সরে এসে অনাবিল খানিক আড়মোড়া ভাঙল। সবে তিনঘন্টা শহর থেকে বেরিয়েছে। এখনও আদ্ধেকের বেশি রাস্তা বাকি, ভাগ্যে এই রিচার্জিং স্টেশন আজ ফাঁকা পাওয়া গেছে। কাল রাতেই তো পুরো চার্জ দিয়েছিল। ঘন্টায় দশ শতাংশ করে কমছে, ব্যাটারি খারাপ হয়ে যাচ্ছে নাকি? 

    অবশ্য চার বছরের পুরনো ইলেকট্রিক গাড়ি। তাতে এ যাত্রায় একলা অনাবিলের সহযাত্রী রেলু আর মেনকা। কিন্তু এদের দুজনের ভেতর কোনও প্রতিযোগিতা নেই। রেলুকে ডাকা ডাকি করলে মেনকা রেগে যায় না। উলটোটাও সত্যি। রেলু গাড়ি চালাতে সাহায্য করে। ওকে গাড়ির অটোপাইলট বলা চলে। আর মেনকা অনাবিলের মোবাইলে বাস করে। যেহেতু গাড়ি চালাতে চালাতে মোবাইল ব্যাবহার করা বিপজ্জনক তাই সেসময় মেনকাকে নির্দেশ দিতে হয়। যেমন বর্ণাকে ফোন করো। এছাড়াও আর কত রাস্তা বাকি এইসব প্রশ্ন করলে উত্তর দেয়। ওটিপি বা ইলেক্ট্রনিক মেল এলে সোচ্চারে জানায়। 

    গত তিনঘন্টায় কুয়াশা ঘেরা পাহাড় থেকে নামতে হয়েছে। রাস্তায় অনেক আলো জ্বালানো সুড়ঙ্গ পড়েছিল। চাকরির ট্রান্সফার। ছেলেকে নিয়ে বর্ণা আগেই চলে গেছে সমুদ্রতীরের শহরে নতুন কোয়ার্টারে। কাল রাতে ওদের প্লেন ছিল। আজ সকালে এসেছিল প্যাকারস অ্যান্ড মুভারস। তাদের রওনা করে দিয়ে গাড়িটা অনাবিল নিজেই চালিয়ে নিয়ে চলে যাবে। এই তো প্ল্যান। ট্রাকে করে পাঠাতে দশ হাজার লাগত, তার বদলে অনাবিল ভাবল নিজেই চালিয়ে নিয়ে চলে যাই। রাস্তা তো ভালই। কোথাও না থামলে আটঘন্টা লাগার কথা। 

    এরও আগে অনাবিল এক নদীর ধারে পাহাড়ঘেরা উপত্যকায় থাকত। অনাবিল যেখানে যায় বছরে বৃষ্টিদিনের সংখ্যা সেখানে বেড়ে যায়। ছোটবেলা থেকেই সে এরকম দেখছে। সেখানে তখন বারোমাস বৃষ্টি, রাতে জলে ডুবে থাকা রাস্তাঘাট। কয়েকবছর কাটার পর সেই বৃষ্টিই একদিন সঙ্গে করে আনল সংসার গুটিয়ে সমুদ্রের ধারে যাবার আদেশ। 

    এক গ্যারেজ ভর্তি প্যাকিং বাক্স। সব গত কয়েকবছর ধরে জমেছিল । বর্ণা আর সে মিলে পরিষ্কার করতেই এক সপ্তাহ লাগিয়েছে। আর কি সব প্রাগৌতিহাসিক জিনিস যে সেখান থেকে এই কদিনে বেরল। 

    সেভাবেই খুঁজে পাওয়া কলেজে ডিপার্টমেন্টাল একটা গোলগলা টি শার্ট আর কফি মগ অনাবিল পেয়ে গেল হাতের সামনে। এই টি শার্টটাই আজ রাস্তায় পরে যাবে বলে ঠিক করে ফেলল। জামাটা পরে দেখল একটু আঁটোসাঁটো হলেও খুব দমবন্ধ হয়ে আসছে না। তারপর কফি মগটা হাতে তুলে নিতে গিয়ে হঠাৎ তার হাত ফসকে গেল। 

    কাপটা বিরাট জোর শব্দ করে মেঝের ওপর পড়ে টুকরো টুকরো হয়ে চারদিকে ছড়িয়ে পড়ল। টুকরোগুলোর দিকে তাকালে সন্দেহ হচ্ছিল, মাত্র এক সেকেন্ড আগেও একট সমগ্র কাপের অস্তিত্ব নিয়ে। ভেঙে যাবার পর এখন আর কাপটার কোন অস্তিত্ব নেই, টুকরোগুলোর আছে। 

    আপশোস হয়। কাপটা তাদের শেষ বছরে ফেয়ারওয়েলে জুনিয়ররা সবাইকে একটা করে দিয়েছিল। পাশ করে বেরোনোর পরে সে আর সেখানে ফিরে যায়নি তাই জানে না যে সেখানকার প্রাক্তনীদের পুনর্মিলন উৎসবে এইরকম কাপ এখন ঢেলে বিক্রি হয়। তুলনায় টি শার্টটা তার কাছে অনেক বেশি দুষ্প্রাপ্য হওয়া উচিত। নিজেরা সবাই মিলে চাঁদা তুলে, ডিজাইন করে, অর্ডার দিয়ে বানানো হয়েছিল। কাপের টুকরোগুলোকে বুটজুতো পরা পা দিয়ে একপাশে সরাতে সরাতে সে স্মৃতিমেদুর হচ্ছিল। আগে কোনওদিন ব্যবহার না করা, অস্তিত্ব ভুলে মেরে দিয়ে এতদিন ধরে যত্নে বয়ে নিয়ে বেড়ানোর পর কাপটার কপালে এই ভবিতব্য লেখা ছিল। 

    কিছুক্ষণ বাদে চারজন লোক এসে ঝটপট বাকি সমস্ত জিনিসগুলো ট্রাকে তুলতে শুরু করল। হয়ে যাবার পর, চলে যাবার আগে তাদের নেতা হাত কচলাচ্ছিল অনাবিলের সামনে দাঁড়িয়ে। বকশিশ চাইছে মনে হয়। অনাবিল না বোঝার ভান করে একবার তাকাতেই বলল -"এবার আমাদেরটা মিটিয়ে দিন। আর তো কোনোদিন দেখা হবে না।"

    চার্জ হয়ে গেছে। গাড়ি চালু করার সঙ্গে সঙ্গে রেলুও জেগে ওঠে। ইঞ্জিনের কোন শব্দ না করে ইলেকট্রিক গাড়িতে নিঃশব্দে গতি বেড়ে যায়। চোখের পলকে শূন্য থেকে একশো কিমি/ঘণ্টা। 
    রাস্তায় পাঁচটা মোট টোল পড়ার কথা। রেলু জিপিএস চালু করে রেখেছে। টোল ট্যাগের স্টিকার লাগানো আছে গাড়িতে। টোল বুথে দাঁড়ানোর দরকার পড়ে না । গাড়ি আস্তে করতেই স্যাট করে গেট উঠে যায় ওপরে। 

    অনাবিল ড্যাশবোর্ডে নির্দিষ্ট জায়গায় মোবাইল আটকায়। মোবাইলের চার্জ ফুরিয়ে আসছে।  প্লাগ থেকে টেনে এনে তার সাথে চার্জার লাগিয়ে দেয়। 
     
    বর্ণা ফোন করছে দেখে মেনকাকে অনাবিল বলল “ফোনটা রিসিভ করো।” 
    "কদ্দুর? আমরা কিন্তু অপেক্ষায় আছি।" 
    দূরে দূরে মাঠের মধ্যে সারি দিয়ে দাঁড়িয়ে আছে হাওয়াকল, তাদের ডানা ধীরে ধীরে ঘুরছে। একজায়গায় ধাবার জটলায় ডাবের দোকান দেখে অনাবিল গাড়ি দাঁড় করায়। পাশের ধাবায় টেবিলে গরম জলে ফুটছে কাঁটা চামচ। ভুট্টা সেঁকার গন্ধ বাতাসে ভাসছে। ছোট ছোট কয়লার ওপর সাজিয়ে রেখে পোড়ানো হচ্ছে। পট পট আওয়াজ। পোড়ানোর পর খোলার ওপর রেখে, বিটনুন লেবু মাখিয়ে দোকানি এগিয়ে দিল অনাবিলের দিকে।

    "ঝড় আসছে। এবার গুটোতে হবে।" - ওপরের দিকে তাকিয়ে বলল ভুট্টাওয়ালা। রোদ পড়ে গিয়ে আকাশ মেঘলা হচ্ছে।  
    ভুট্টা শেষ করে গাড়িতে উঠে অনাবিল দেখে দূরে বৃষ্টি নামছে। আর পাঁচ মিনিটের মধ্যে সে তার মধ্যে গারিসুদ্ধু ঢুকে পড়বে। উইন্ড স্ক্রিনে আছড়াবে জলকণা। গাড়ির ক্লেদ ধুয়ে যাবে। মেনকা নিজের থেকে বলে উঠল - “ট্র্যাফিক স্লোওিং অ্যাহেড ডিউ টু রেন।"  রেলু বলে উঠল - “ভেজা রাস্তা ডিটেকটেড। গাড়ি স্কিড করার সম্ভাবনা ২ শতাংশ যেহেতু একমাস আগেই টায়ার বদলান হয়েছে।" অনাবিল জানলা তুলে এসি চালিয়ে দিল। গাড়ির কাঁচের ছাদে হালকা বৃষ্টি শব্দ। 

    “মেনকা, একটা গল্প শোনাও"
    "কিসের গল্প ? তোমার জীবনের?"
    "তুমি তো এই সবে কবছর জন্মালে। তুমি আমার জীবনের পুরো গল্প জানো?"
    "তোমার সব ইতিহাস ভূগোল আমি জানি।" 
    "বেশ শোনাও তবে।" 
    "শুরু করছি , তবে মাঝখানে কোনো প্রশ্ন করা যাবে না। তাহলে আমি গল্প বলা বন্ধ করে দেব।" 
    "বুঝলাম।" 

    সে অনেককাল আগের কথা। আমার তখনো জন্ম হয়নি। তুমি থাকতে নদীর ধারে এক শহরে। সেই নদীর ধারেই ছিল ঘন অরণ্য ভেঙে বানানো, দাহ্য বস্তুতে ঠাসা সমস্ত কারখানা আর করাতকল। 

    মনে করো সেইসব ভর দুপুরবেলা কলেজের ক্লাস কেটে এদিকসেদিক পালিয়ে যাওয়া নেশাড়ু ছেলেদের দঙ্গল। সারা শহরে তোমরা নেশার ঘর খুঁজে বেড়াতে। কোনো মেসের একতলার ঘরে নড়বড়ে প্লাইয়ের তক্তপোষ ছিল। সারাবছর ভেজা দেওয়াল থেকে চুন সুরকির গন্ধের ভাপ। হাত দিলে পলেস্তারা খসতে থাকা স্যাঁতস্যাঁতে শ্যাওলার স্পর্শ। 
    আবার এর বিপ্রতীপে কারুর ফাঁকা ফ্ল্যাটে কনকনে ঠান্ডা এসি চলত। দেওয়ালজোড়া পঞ্চাশ ইঞ্চি টিভির স্ক্রিনসেভারে কমলা জলের মধ্যে নীল মাছগুলো খেলা করতে করতে উপচে পড়ত পাশের দেওয়ালে। সেই ঘরের বাইরে সারাবছর জমাট বেঁধে থাকত সন্ধ্যাকালীন শীত।
    এখন তোমরা কেন্দ্রে একটা নীলদাঁতের স্পিকার রেখে চৌকো একটা আয়তক্ষেত্র তৈরী করে বসে আছ। তাতে গান চলছে আর গানের তালে তালে নীলদাঁতের লাল আলো জ্বলছে নিভছে। বাইরে কাঠফাটা দুপুর এখন। একসময় তুমি অবাক হয়ে দেখলে স্পিকার নয়, সবার মাঝখানে একটা অক্ষের ওপর ভর করে পৃথিবী সূর্যকে প্রদক্ষিণ করছে। 
    "বাপরে দরজা জানলা সব বন্ধ করে একেবারে হটবক্স বানিয়ে ফেলেছে।" 
    "খামকা ব্যাড ট্রিপ দিচ্ছিস। ভয় পেলে নেশা বেড়ে যাবে।"
    "হাত পা ছেড়ে দিস না।"

    বাকিদের এইসব কথাবার্তা শুনতে শুনতে তুমি চোখ বন্ধ করে দেওয়ালে হেলান দিলে আর চড়ে গেলে এক রঙিন নাগরদোলার ওপর। সেটা কখনো ঘড়ির কাঁটার দিকে ঘুরছে। কখনও ঘড়ির কাঁটার উল্টোদিকে। কখনো জোরে কখনো আস্তে। 
    তন্দ্রা ভেঙে গেলে তুমি দেখলে মেসের পিছনের জঙ্গলে ঘোরাঘুরি করছে কেউ , খুঁজছে কিছু। শিশিবোতলওয়ালা সাদা সাদা ছেঁড়া শুঁয়ো বেরিয়ে থাকা বড় বস্তা নিয়ে এসেছে। ভাঙা কাঁচের টুকরো, পেরেক এইসব তারা খুঁজে পাচ্ছিল। 
    সেই অফুরন্ত বিকেলদের শেষেও বৃষ্টি আসত। ধোঁয়াটে জলভরা মেঘ মোড়ানো সেইসব গলির মোড়ে জেগে থাকা সি এফ এল আলোর মধ্যে দিয়ে হেঁটে যেতে যেতে মনে হত এই পথ শেষ হবে আরেক শহরে। সেখানে সবাই রোবট। পুতুলের মত ঘাড় ঘোরায়। কথা বলে। ভর বিকেলবেলা তোমরা দলবেঁধে মিষ্টির দোকানে গিয়ে দেখলে গরম গরম মিষ্টি ভাজা হচ্ছে। সেইসব ক্ষীরের জিলিপির স্বাদ আঠার মত এখনো তোমার হাতে লেগে আছে।  
     
    তুমি দূরে আলতো বাজ পড়তে দেখলে। এক বেগুনি বিদ্যুৎরেখা মেঘদলকে গোলাপি করে দিল। চমকে গিয়ে সরে এসেছিলে রাস্তার দিকে আর ছুটন্ত গাড়ির চাকার তলায় চলে যেতে পারতে। তোমাকে হ্যাঁচকা টানে সরিয়ে দিল কেউ ফুটপাথের দিকে। পরে দেখেছিল সেই শিশিবোতল ওয়ালার মুখ। তোমাকে রাস্তা থেকে সরিয়ে দিয়েই ভিড়ে মিশে গেল।  

    সিঁড়ি দিয়ে তুমি নেমে গেলে মাটির তলায়। সেখানে কনকনে ঠান্ডা বাতাস। হাজার ওয়াটের আলো সূঁচের মত তোমার চোখে এসে বেঁধে। তোমার চোখ ব্যাথা করে, ছোট হয়ে আসে। পাতালরেলের কামরায় উঠেও ফের ঝকঝকে স্টিলের আকাশ ফাটিয়ে বিদ্যুৎ চমকাল দেখে তুমি বুঝতে পারলে এই বৃষ্টির কোনও শেষ নেই…

    “অ্যালার্ট! অ্যালার্ট! তুমি ঘুমিয়ে পড়েছ, অ্যালার্ট!"
    জোর ক্যা ক্যা শব্দে চমকে উঠে অনাবিল আঁকড়ে ধরল স্টিয়ারিং। এই এক বাঁচোয়া। গাড়িতে রেলুর ক্যামেরায় ধরা পড়ে গেছে, চালক ঘুমিয়ে পড়লেই অ্যালার্ম সিস্টেম চালু হয়ে যায়। গাড়ি অটো পাইলট থেকে নিজের নিয়ন্ত্রণে আনতে অনাবিলের কিছুক্ষণ সময় লাগে। মেনকা নিশ্চয় হ্যালুসিনেট করছিল। এইসব ডিজিটাল সহকারীদের মাঝে মাঝে গল্প বলতে বললে একদম বানিয়ে বানিয়ে এসব গাঁজাখুরি গল্প বলে। 

    চারপাশ দেখে অনাবিল বুঝতে পারে সে  সমুদ্রের কাছাকাছি এসে গেছে। জানলার কাঁচ নামিয়ে দিলে মুখেচোখে নোনা বাতাসের ঝাপটা।

    দিগন্তে ছায়ার মতন উল্লম্বভাবে ভেসে উঠছে তার গন্তব্য শহরের অবয়ব। মাঝে মাঝে সেই শরীরের কিছু অংশ আবছা হয়ে যাচ্ছে, মিলিয়ে যাচ্ছে। স্পষ্ট ধরা দিতে চাইছে না যেন। আরও কাছাকাছি গেলে হয়ত তখন আর হারিয়ে যাবে না এভাবে। রাস্তার ওপর ঝুলে থাকা সাইন বোর্ড  দেখে বুঝতে পারল আর দশ মিনিট। তারপরেই ব্যস্ত জাতীয় সড়ক শেষ হয়ে শহরে ঢোকার অলস টোল বুথ। ঝকঝকে আলোর মালা সেখানে সবাইকে স্বাগত জানাচ্ছে। 

    এখানেও ঝুপ ঝুপ করে বৃষ্টি পড়া শুরু হল। দূরের পেন্সিলে আঁকা শহর বন্দর সমুদ্র মুছে যেতে থাকল সেই জলের ধারায়। গাড়িতে রেলু আর মেনকা দুজনেই একেবারে চুপ করে গেছে। ভয় পেয়েছে মনে হয়। চালাতে চালাতে গাড়ির মধ্যে বসে অনাবিল নিজের মনে হাসছিল। সে জানে এরপর বর্ণা দেখা হলে কি বলবে  - "আবার এখানেও তুই সঙ্গে করে বৃষ্টি নিয়ে এলি।"
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ | ৪২৩ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • kk | 2607:fb90:ea99:1143:6078:5fdf:a197:7f64 | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৪:২৯526394
  • খুব ভালো লাগলো। খুবই। অনেকটা ইমার্সিভ এক্জিবিটের মত লাগলো, কেন জানিনা। আপনার চরিত্রদের নামগুলোও আমার বেশ ইন্টারেস্টিং লাগে। অচিন-বার্তা, অনাবিল-বর্ণা। এই যে AB -AB,এর কি কোনো বিশেষ কারণ আছে না এমনিই?
  • ইন্দ্রাণী | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৭:২০526396
  • খুব ভালো লেগেছে। কাপ ভেঙে যাওয়ার পর, তার অস্তিত্ব আর নেই, টুকরো গুলোর আছে- এই অনুভবের ওপর ভিত্তি করে অত্যন্ত সুন্দর নির্মাণ। স্মৃতির ব‍্যবহার। মনে থাকবে। শিখলাম অনেক।
    একটি মৃদু অনুযোগ করি। প্রথম বাহান্ন শব্দে ছয় বার 'টা' ব‍্যবহার হয়েছে। সময়টা , নলটা, তেরোটা, স্টেশনটা (দু'বার) চোদ্দটা। এড়াতে পারলে ভালো হত- আমার মতে।
  • অমিতাভ চক্রবর্ত্তী | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৮:৩৯526402
  • ভালো লাগল। খুব দূরে নয় এমন ভবিষ্যতের ছবি - এর একটা বিশেষ আকর্ষণ আছে। 
    ছোটাইদির অনুযোগ মৃদুভাবে না নিয়ে গুরুত্বের সাথে নেওয়ার অনুরোধ রইল।
  • | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:১১526404
  • খুবই ভাল লাগল।  দীপাঞ্জনের গল্পে আধো তন্দ্রায় আসা স্মৃতির টুকরোগুলো ভারী ইন্টারেস্টিং হয়। 
  • dc | 2401:4900:1f2b:4306:20d4:6071:f8d6:3977 | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ০৯:৫৪526407
  • ভালো লাগলো। আর ডগলাস অ্যাডামস মনে পড়ে গেলোঃ 
     
    And as he drove on, the rainclouds dragged down the sky after him, for, though he did not know it, Rob  McKeena was a Rain God. All he knew was that his working days were miserable and he had a succession of lousy holidays. All the clouds knew was that they loved him and wanted to be near him, to cherish him, and to water him.
  • দীমু | 182.69.177.254 | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ১৭:২৮526421
  • ধন্যবাদ কেকে , ইন্দ্রাণী , অমিতাভদা , দ , ডিসি 
     
    কেকে , চরিত্রের নামের প্যাটার্ন ইচ্ছাকৃত নয়। পরের গল্পেও নিজের অজান্তেই এরকম AB প্যাটার্ন লেখা হয়ে গেছে laugh। বদলে দেব। 
     
    ইন্দ্রাণী / অমিতাভদা , এই 'টা' ব্যবহার আমার এক মুদ্রাদোষ। এই লেখাতে আরো কয়েক প্যারাতে অত্যধিক টা ছিল , ঠিক করে দিয়েছি। ভবিষ্যতে লেখার সময় এটা মাথায় রাখতে হবে। 
     
    দ , এখানে আরেকটু ইন্টারেস্টিং করে তোলার জন্য মেনকার মত ডিজিট্যাল এসিস্ট্যান্টকে দিয়ে ভুলভাল ভাবে বলিয়েছি laugh 
     
    ডিসি , এই রব ম্যাকেনার ব্যাপারে জানতাম না , বেশ মজার লাগল। এই গল্পে বৃষ্টিকে একটা মেন্টাল স্টেটের মত দেখাতে চেয়েছি। চরিত্রটি যেখানেই যায় তাকে অনুসরণ করে। অনাবিল অতীত থেকে ভবিষ্যতের দিকে এগোচ্ছে কিন্তু মেন্টাল স্টেট তাকে ছাড়ছে না।  
  • kk | 2607:fb90:ea99:1143:6078:5fdf:a197:7f64 | ২৩ নভেম্বর ২০২৩ ২৩:০৪526427
  • না না, বদলাবেন কেন? থাক না। AB প্রসঙ্গে বললাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন