নামটা শুনে ‘বনলতা সেন’ মনে পড়লে অবাক হবেন না কারণ এটা সেই একই জায়গা। মধ্যপ্রদেশের ভোপালের একটু আগে এই স্টেশনটায় বর্ষাকালের একদিন ভোর ছটার সময় নামলাম প্রধানত দুটো জায়গা দেখার জন্য। সাঁচি স্তুপ এবং উদয়গিরি গুহামালা। ট্রেনটা ভোপালের দিকে চলে গেল।
স্টেশন প্ল্যাটফর্মের ওভারব্রিজ থেকে নামতেই অটো পাওয়া গেল। সাঁচি আলাদা রাইসেন জেলায় পড়ে তাই সাঁচি পাহাড়ের ওপর যাবার জন্য বিদিশার অটো চালকদের কর দিতে হয়। সে পাহাড়ের ওপর যাবে না। সাঁচি পাহাড়ের নিচের রাস্তায় ছেড়ে দেবে। দুশো টাকা। সেখান থেকে আবার সাঁচি ঘুরিয়ে বিদিশা পৌঁছে দেবার আলাদা অটো ধরে দেবে বলল।
স্টেশন চত্ত্বর থেকে অটো নিয়ে বেরোতেই জিজ্ঞেস করল -"চা খাবেন ? আমিই খাওয়াচ্ছি। আসলে ভোরবেলা তো, সবে ঘুম থেকে উঠে এলাম। এক কাপ চা না হলে ঠিক ..." তার কথামতন স্টেশনের বাইরেই একটা দোকানে দুধ চায়ে চুমুক দেওয়া গেল। দোকানটার বাইরে আমাদের মতোই সবে ঘুম ভেঙে উঠে আসা লোকজনের ভিড়। গতরাতে বৃষ্টির জন্য রাস্তা হালকা ভেজা।
বিদিশা ছোট ঘিঞ্জি শহর। শহর থেকে বেরিয়ে চওড়া জাতীয় সড়ক। পনেরো মিনিট বাদে দূরে সবুজ পাহাড় দেখা গেল। ওটাই সাঁচি পাহাড়। আমার এতদিন ধারণা ছিল স্তূপগুলো সমতলের ওপর কিন্তু তা নয়।
"এটা ভারতের একেবারে কেন্দ্র। উত্তর দক্ষিণ পূর্ব পশ্চিম লাইন টানলে এখানে এসে মিলবে। ভোপাল পেরিয়ে অল্প কিছুটা গেলেই কর্কটক্রান্তি রেখা। অনেকদিন আগে স্কুলে পড়ার সময় ভেতরে গেছিলাম। পর্যটকদের ছাড়তে আসি প্রায়ই কিন্তু অনেকদিন আর ভেতরে ঢোকা হয়নি। সারা পৃথিবী থেকে লোকজন আসে পাথরের গায়ে ছবি খোদাই করা স্তুপ দেখতে।" - অটোওলা এইসব বলছিল - "এই ভারতের কেন্দ্র হবার জন্যই সাঁচিকে সবাই এত গুরুত্ত্ব দেয়।"
সে ছেড়ে দিল পাহাড়ের নিচে সাঁচি সংগ্রহশালার সামনে। সংগ্রহশালা দেরী করে খুলবে। এখানে অটো বদল হল। সাঁচীর এক অটোওয়ালা দাঁড়িয়ে ছিল , আমাকে উঁচু পাহাড়ের ওপর নিয়ে গিয়ে ছেড়ে দিল প্রধান সাঁচি ক্যাম্পাসের সামনে।
অটো থেকে নেমে প্রথমেই চোখে পড়ল স্তুপ ক্যাম্পাসে ঢোকার আগেই বাঁদিকে চেতিয়াগিরি বিহার। সিংহলী বৌদ্ধদের মহাবোধি সোসাইটি দ্বারা নির্মিত। ক্যাম্পাসের ভেতর ব্যাগ নিয়ে ঢোকা বারণ। ব্যাগ নিরাপত্তারক্ষীদের ঘরে জমা রেখে খাতায় সই করতে হল।
ভোর সাতটার সময় বৃষ্টিভেজা সাঁচি। মাঝে মাঝেই কোথাও ট্রেন যাবার অদ্ভুত ঝমঝম শব্দ হচ্ছে। সবথেকে আশ্চর্য - ট্রেনের শব্দই পাওয়া যাচ্ছে কেবল , অনেক চেষ্টা করেও দেখতে পেলাম না। আর কেকার আওয়াজ। বর্ষাকাল , এত গাছপালা , ঘাস , দু তিনটে ময়ূরকে দেখে প্রথমেই যেটা মনে হল - সাপ আছে নাকি? ঘোরা শুরু করার আগে ঐতিহাসিক স্তম্ভ্যের স্থাপত্য নিয়ে একটা কথা বলে রাখা যাক। যেকোনো স্তম্ভের আসলে তিনটে অংশ থাকে - একদম ওপরে ক্যাপিটাল , মাঝখানে এবাকাস এবং বাকিটা আসল স্তম্ভটা যার গায়ে অনেক সময় লিপি খোদাই করা থাকে স্তম্ভটার ব্যাপারে।
এই ক্যাম্পাসটা অনেকটা জায়গা নিয়ে ছড়ানো। ~২৫০ খ্রিস্টপূর্বে, অশোকের আমলে তৈরী হয়েছিল শুধু ইঁটের স্তুপ, ঘোরানো সিঁড়ি আর স্তুপের মাথার ওপরের তিনটে ছাতা। আর একটা বালিপাথরে বানানো স্তম্ভ। যার মাথায় পাথর কেটে তৈরী চারটে সিংহের প্রতীক। তারপর ~১৭৫ খ্রিস্টপূর্বে শুঙ্গ বংশের সময়ে ইঁটের স্তুপকে পাথরে মুড়ে দেওয়া হল , চারদিকে তুলে দেওয়া হল গোল পাঁচিল [circumambulatory]। এরও পরে ~৫০ খ্রিস্টপূর্বে সাতবাহন বংশের দ্বিতীয় সাতকর্নির সময় সেই স্তুপের গলির চারদিকে চারটে তিনথাকওয়ালা তোরণ [architrave] তৈরি হল। তাদের গায়ে খোদাই করা হল নানান রিলিফ। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে নানারকম বৌদ্ধ বিহার, মন্দির ইত্যাদি স্তুপগুলোকে ঘিরে গড়ে উঠতে লাগল। চোদ্দোশো শতাব্দীর পর কোনো অজ্ঞাত কারণে এই সমস্ত পরিত্যক্ত হয়। বেঙ্গল ক্যাভালরির জেনারেল হেনরি টেলর ১৮১৮ সালে আবার সাঁচি পুনরাবিষ্কার করেন। জন মার্শাল পাহাড়ের নীচে সাঁচি সংগ্রহশালাটা বানান তারও একশো বছর পর।
রিলিফগুলোর মধ্যে বৌদ্ধ জাতকের গল্প , জলের ওপর হাঁটা ইত্যাদি অতিপ্রাকৃত ঘটনা বা মিরাকল , মারবিজয় , মৃত্যুর পর গৌতম বুদ্ধের দেহাবশেষ নিয়ে কুশিনগরের মল্ল এবং আরো সাতজন রাজার মধ্যে যুদ্ধ এরকম নানা ছবি খোদাই করা হয়েছে। বুদ্ধের দেহাবশেষ আটটা রাজ্যের মধ্যে ভাগ হয়। তার কয়েক শতাব্দী পর অশোক সমস্ত দেহাবশেষ সাতটা রাজ্য থেকে সংগ্রহ করে আবার ৮৪০০০ স্তুপ তৈরি করে তাদের মধ্যে ছড়িয়ে দেন। একমাত্র নেপালের শক্তিশালী নাগ বংশের অধিকারে থাকা রামগ্রামের ছাই অশোক সংগ্রহ করতে পারেননি। এই বিদিশার এক বণিকের মেয়ের সঙ্গে অশোকের বিয়ে হয়েছিল বলে নিরিবিলি পাহাড়ের ওপর এই সাঁচিকে তিনি একটা বড় স্তুপ তৈরীর জন্য বেছে নিয়েছিলেন।
সবথেকে মজা রিলিফগুলোর কোথাও কোথাও গৌতম বুদ্ধকে দেখানো হয়নি। কোথাও ধর্মচক্র , কোথাও ধর্মপথ আবার কোথাও একটা ফাঁকা সিংহাসন দিয়ে বোঝানো হয়েছে। প্রত্নতত্ত্ববিদ জন মার্শাল তার বই 'a guide to sanchi' তে সাঁচীর প্রত্যেকটা রিলিফের ওপর বিশদে লিখে রেখে গেছেন। এছাড়া তোরণগুলোর উল্টোদিকে ঘাসজমির ওপর লাল পাথরে কালো অক্ষরে খোদাই করেও লেখা আছে কত নম্বরে কিসের ছবি।
বিদিশার শিল্পীরা এই সমস্ত অলঙ্করণের কাজ করেছিলেন।
সাঁচি পশ্চিম দিকের তোরণের সামনের দিকের অলঙ্করণ। এই তোরণের মূল বৈশিষ্ট দুদিকে দুই গাছের ডালে ঝুলন্ত যক্ষিণীর মূর্তি।
সাঁচি পশ্চিম তোরণের পিছনের দিকের অলঙ্করণ সাঁচি উত্তর তোরণের সামনের দিক , এই তোরণের মূল বৈশিষ্ট যক্ষদের ক্যাপিটাল। সাঁচি উত্তর তোরণের পিছনের দিক , এদিককার মূল বৈশিষ্ট একগাদা গ্রিফিনের অলংকরণ।
সাঁচি পূর্ব তোরণের সামনের দিক , চারটে হাতির ক্যাপিটাল এবং শুধুমাত্র ডানদিকের যক্ষিণীর মূর্তি দেখে এটিকে আলাদা করা যায়। এখানেও ডানাওলা সিংহের অলঙ্করণ আছে।
আলাদা করে খুঁটিয়ে দেখলে বোঝা যায় প্রতিটা প্যানেল আলাদা।
শুধুই সামনে বা পিছনের দিকে নয় , পাশের দিকেও প্যানেল আছে।
সাঁচি পূর্ব তোরণের পিছনের দিক। সাঁচি দক্ষিণ তোরণের সামনের দিক। চারটে সিংহের ক্যাপিটাল। সাঁচি দক্ষিণ তোরণের পিছনের দিক। সাতবাহনদেরও পরে পাঁচশো খ্রিস্টাব্দে মালওয়ার শাসক ক্ষত্রপদের আমলে মথুরা থেকে আনিয়ে এই চারটে বুদ্ধমূর্তি স্তুপের চার দিকে স্থাপন করা হয়েছিল।
রেলিংয়ের গায়ে উল্লেখযোগ্য গান্ধার শিল্পকলা
সাঁচি পাহাড় থেকে চাষের সবুজ তৃতীয় স্তুপের মাথায় একটাই ছাতা শুঙ্গদের সময় বানানো তৃতীয় স্তুপটা প্রথম স্তুপের একটা ছোট সংস্করণ। পাঁচিলটা নেই। আর একটামাত্র তোরণ। বুদ্ধের দুই অনুগামী সারিপুত্র এবং মহামোগ্গল্লানার দেহাবশেষ এখানে রাখা আছে বলে মনে করা হয়।
তৃতীয় স্তুপের তোরণটা সাতবাহনদের সময়কালে বানানো।
জাতীয় পাখি
চেতিয়াগিরি বিহারের জিনিসগুলো নাকি কানিংহ্যাম দেশে নিয়ে গিয়েছিলেন যা পরে শ্রীলঙ্কায় ফেরত দেওয়া হয়।
আড়াই ঘন্টা ঘোরাঘুরির পর ফোন করতে সাঁচীর অটোওলা এসে উপস্থিত। তাকে বললাম উদয়গিরি গুহা ঘুরিয়ে বিদিশায় ছেড়ে দিতে। এই রাস্তায় রেললাইনটা পড়ল। মালগাড়ি যাচ্ছে বলে সে নেমে খৈনির পকেট বার করল। মধ্যপ্রদেশে এই একটা ব্যাপার - সবাই হাতে কিছু একটা ডলছে বা এদিক ওদিক তাকিয়ে একফাঁকে একটা প্যাকেট থেকে কিছু একটা ঢালছে মুখে। একটা প্যাকেট থেকে অন্য প্যাকেটে কিছু একটা ঢেলে বড় প্যাকেটটা মন দিয়ে ঝাঁকিয়ে নিচ্ছে। রেল স্টেশনে দেখেছি অনেকে পকেটে নিয়ে ঘুরে বেড়াচ্ছে সুপারি আর জাঁতা।
মালগাড়ি চলে যাবার পর অটোওলা পিছনে গিয়ে একটা দড়ির টুকরো দিয়ে ইঞ্জিনে বেঁধে দু তিনবার টান মারল ইঞ্জিন চালু করার জন্য ।
সাঁচি থেকে প্রায় কুড়িমিনিট দূরে উদয়গিরি গুহামালা। ঘিরে রাখা উদয়গিরি গুহাগুলোতে একদিকের সমতল দিয়ে ঢুকে ওপরের দিকে হেঁটে উঠতে হয়। তারপর আবার অন্য দিকে দিয়ে নেমে এসে সমতলে বেরোবার জায়গা। কালো আগ্নেয় শিলার পাহাড় কেটে এই কুড়িটা গুহা বানানো হয়েছিল চতুর্থ এবং পঞ্চম শতাব্দীতে , যখন চন্দ্রগুপ্ত বিক্রামাদিত্য শকদের হারান। দুটো গুহার মধ্যে জৈন মূর্তি এবং বাকিগুলোতে হিন্দু মূর্তি পাওয়া গেছে। কোনো কোনো ঐতিহাসিক বলেছেন এই উদয়গিরি থেকেই দিল্লির কুতুব মিনারের পাশে লোহার স্তম্ভটা নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। কারণ এখানে ইলতুৎমিশ দাপিয়ে বেড়াতেন একটা সময় , আর জিনিসপত্র ভাঙতেন।
ঢোকার মুখেই এই ১৯ নং গুহায় দেখানো হয়েছে সমুদ্র মন্থন করে অমৃতের উত্থান।
সিঁড়ি দিয়ে ওপরে উঠে এসে
রাস্তা দিয়ে হেঁটে অন্যদিকে চলা
উদয়গিরি পাহাড় থেকে দূরে বিদিশা জেলার গ্রাম। এই পাহাড়ের ওপর আছে দুটো জৈন গুহা।
তেরো নং গুহায় ক্ষীরসাগরে অনন্তশয়ানে বিষ্ণু। চতুর্থ শতক। শ্যাওলা জমা মূর্তিটা দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্তের। এটা অনন্তশয়ানে বিষ্ণুর পাওয়া প্রাচীনতম মূর্তি। বর্তমানে কাঁচ দিয়ে ঢেকে দেওয়া হয়েছে।
১২ নং গুহায় বিষ্ণুর নরসিংহ অবতার। এই গায়ের চারশো শতাব্দীতে করা কালো প্যাঁচানো চিন্হগুলো মূর্তিগুলোর থেকে পুরোনো। এবং এই শঙ্খলিপির পাঠোদ্ধার করা যায়নি।
৪নং গুহা বীণা গুহা বলে পরিচিত। বাঁদিকের মূর্তিটি বীণা এবং ডানদিকের মূর্তিটি সারেঙ্গী বাদ্যরত। গুহার ভেতরে শিবের একটি একমুখী লিঙ্গ [শিবলিঙ্গের একদিকে শিবের মুখ খোদাই করা] মূর্তি আছে।
বীণা গুহার পাশে ৩ নং গুহায় আছে শিবের পুত্র কার্তিকেয়র মূর্তি।
দূর থেকে ৩ এবং ৪নং গুহা।
এর পর পাঁচ নং গুহায় আছে গুপ্তযুগে এই পাহাড়ের গায়ে কেটে বানানো সবথেকে বিখ্যাত বিষ্ণুর বরাহ অবতারের একটা মূর্তি। আগে সামনের এই রেলিংটা ছিল না।
ভূদেবীকে অপহরণ করেছিল হিরণ্যকশিপুর ভাই হিরণ্যাক্ষ। পৃথিবী হারিয়ে গেছিলেন মহাজাগতিক সমুদ্রে। সমুদ্রের তলা থেকে সেই পৃথিবীকে উদ্ধার করার জন্য বিষ্ণু বরাহ অবতার ধারণ করলেন। সমুদ্রে নামলেন এবং ডানদিকের দাঁতে করে তুলে আনলেন ভূদেবীকে। এই মূর্তির ডানদিকের একদম ওপরের সারিতে ছোট মূর্তিগুলোয় আছেন আদিত্যরা , অগ্নি , বায়ু এবং অষ্টবসু। তার নিচের সারিতে এগারোজন রুদ্র এবং গণদেবতারা। তাদের নিচে তিনটে সারিতে আছেন নানা ঋষিরা।
এই ৬ নং গুহার ভেতরে পাওয়া লিপি থেকে জানা যায় 'শঙ্খনিকা' বলে একটি স্থানীয় উপজাতিদের হারিয়ে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত এই মালওয়া অঞ্চল জয় করেন।
কানিংহ্যাম এই ৮ম গুহাটার নাম দিয়েছিলেন তাওয়া গুহা। এটার ভেতরে পিছন দিকের দেওয়ালে লিপি থেকে দ্বিতীয় চন্দ্রগুপ্ত এবং তার সেনাপতি বীরসেনের প্রশস্তি পাওয়া গেছে।
গণেশ এবং মহিষাসুরমর্দিনীর সবথেকে প্রাচীন দুটো মূর্তিও এই উদয়গিরি গুহায় পাওয়া গেছে।
এছাড়া বিদিশায় আছে হেলাডোরাস স্তম্ভ। গরুড়কে উৎসর্গ করে খ্রিস্টপূর্ব প্রথম শতাব্দীতে তৈরি করেছিলেন শুঙ্গ রাজা ভগভদ্র। তক্ষশীলা [বর্তমান পাকিস্তানে] র ইন্দো গ্রীক রাজা এন্টিয়ালসিডাসের পাঠানো দূতের নাম ছিল হেলিডোরাস। স্তম্ভ আবিষ্কারের পর সেই দূতের নামেই স্তম্ভের নাম দেন কানিংহ্যাম। যার মাথার প্রতীকটা [ক্যাপিটাল] ক্ষয়ে গেছে। গায়ে খরোষ্ঠী লিপি অবিকৃত। স্থানীয়রা একে খাম্বা বাবা বলে ডাকে। স্তম্ভের গায়ে ব্রাহ্মীলিপিতে কৃষ্ণ বাসুদেব এবং রাজা ভগভদ্রের প্রতি বন্দনা পাওয়া গেছে। এই স্তম্ভের কাছে একটা খ্রিস্টপূর্ব চারশো বছরে বিষ্ণু মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ পাওয়া গেছে।
হাতে আরো সময় আছে বলে এরপর মধ্যপ্রদেশ সরকারের সংস্কৃতি দফতরের অধীনে বিদিশা জেলা সংগ্রহশালায় গেলাম। স্টেশনের কাছেই কিন্তু উল্টো দিকে , যেদিকে উদয়গিরি , হেলিডোরাস স্তম্ভ , সাঁচি সেদিকে এটা নয়।
মিউজিয়ামের বাগানে রাখা অনন্তশয্যায় বিষ্ণু
বরাহ অবতারের মূর্তিও আছে সেখানকার বাগানে।
এরকম বড় একটা বরাহ অবতারের মূর্তি আছে খাজুরাহোর বরাহ মন্দিরেও। এছাড়াও মধ্যপ্রদেশের বেত্রবতী নদীর এক উপনদী বীণার তীরে মধ্যপ্রদেশের আরেকটা ঐতিহাসিক জায়গা এরানে সবথেকে বড় বরাহ অবতারের মূর্তির গায়ের লিপি থেকে জানা গেছে এরানে পাঞ্জাবের আলকান হুন রাজা তোরমানের সঙ্গে বিদিশার রাজা ধন্যবিষ্ণুর যুদ্ধ হয়েছিল। সেই যুদ্ধ জেতার পর তোরমান পরবর্তী দু বছরে পশ্চিম এবং মধ্য ভারত দখল করেন।
পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।