এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  খ্যাঁটন  হেঁশেলে হুঁশিয়ার  খাই দাই ঘুরি ফিরি

  • পাকশালার গুরুচণ্ডালি (৭৭)

    শারদা মণ্ডল
    খ্যাঁটন | হেঁশেলে হুঁশিয়ার | ২৯ জুন ২০২৩ | ৭৯৭ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩ | পর্ব ৪ | পর্ব ৫ | পর্ব ৬ | পর্ব ৭ | পর্ব ৮ | পর্ব ৯ | পর্ব ১০ | পর্ব ১১ | পর্ব ১২ | পর্ব ১৩ | পর্ব ১৪ | পর্ব ১৫ | পর্ব ১৬ | পর্ব ১৭ | পর্ব ১৮ | পর্ব ১৯ | পর্ব ২০ | পর্ব ২১ | পর্ব ২২ | পর্ব ২৩ | পর্ব ২৪ | পর্ব ২৫ | পর্ব ২৬ | পর্ব ২৭ | পর্ব ২৮ | পর্ব ২৯ | পর্ব ৩০ | পর্ব ৩১ | পর্ব ৩২ | পর্ব ৩৩ | পর্ব ৩৪ | পর্ব ৩৫ | পর্ব ৩৬ | পর্ব ৩৭ | পর্ব ৩৮ | পর্ব ৩৯ | পর্ব ৪০ | পর্ব ৪১ | পর্ব ৪২ | পর্ব ৪৩ | পর্ব ৪৪ | পর্ব ৪৫ | পর্ব ৪৬ | পর্ব ৪৭ | পর্ব ৪৮ | পর্ব ৪৯ | পর্ব ৫০ | পর্ব ৫১ | পর্ব ৫২ | পর্ব ৫৩ | পর্ব ৫৪ | পর্ব ৫৫ | পর্ব ৫৬ | পর্ব ৫৭ | পর্ব ৫৮ | পর্ব ৫৯ | পর্ব ৬০ | পর্ব ৬১ | পর্ব ৬২ | পর্ব ৬৩ | পর্ব ৬৪ | পর্ব ৬৫ | পর্ব ৬৬ | পর্ব ৬৭ | পর্ব ৬৮ | পর্ব ৬৯ | পর্ব ৭০ | পর্ব ৭১ | পর্ব ৭২ | পর্ব ৭৩ | পর্ব ৭৪ | পর্ব ৭৫ | পর্ব ৭৬ | পর্ব ৭৭ | পর্ব ৭৮ | পর্ব ৭৯ | পর্ব ৮০ | পর্ব ৮১ | পর্ব ৮২
    ছবি - র২হ


    লাবণ্যর শ্বেতপাথরের টেবিল




    - মা তোমার বড়মামার হারমোনিয়াম কেনার ব‍্যাপারটা কী বলছিলে গতকাল, ওটা তো শেষ হলনা।
    - হারমোনিয়াম কিনেছে বলে আনন্দে আমাদের নেমন্তন্ন করেছিল। সেই রবিবার বি টি রোড ধরে, ডানলপ ফেলে, সুখচর গীর্জার পাশ দিয়ে গেলাম বড়মামার বাড়ি। দেখি আমার রাশভারী মা হারমোনিয়ামটা দেখে কী উচ্ছল! নিজের মনে নানা স্কেলে হরেক রকম সারেগামা বাজিয়েই যাচ্ছে। দেখে অবাক হয়ে যাই। মা শিখল কোথায়? আমাদের বাড়িতে তো হারমোনিয়াম নেই। মাকে বললাম,

    - "মা, তুমি গান জানো, আমাকে তো কোনদিন বলোনি।
    - গান জানিনা তো।
    - তাহলে বাজাচ্ছো কি করে?
    - আমার মায়ের কাছে শিখেছি। শুরু করেছিলাম। তারপর আর হলনা।
    - হলনা কেন?
    - হারমোনিয়ামটা হারিয়ে গেল।
    - কীকরে?
    - সে অনেক কথা, পরে বলব।"

    ছোটো করে একটা ধাক্কা লাগল মনে। লাবণ‍্যর হারমোনিয়াম হারিয়ে গিয়েছিল? কি এমন কথা আছে, মা বুকে চেপে আছে?
    - আশ্চর্য তো, হারমোনিয়ামের মত একটা বড় জিনিস কীভাবে হারায় গো মা? যাই হোক,তার মানে লাবণ‍্য গান জানত।
    - হ‍্যাঁ, খুব ভালোই জানত। গানই ছিল তার মুক্তি। মাও তো গাইত খালি গলায়। কখনো অবসর পেলে, মা আমাকে খালি গলায় গান শেখাতো, যে গানগুলো লাবণ‍্যর কাছে শিখেছিল, যেগুলো দিদার প্রিয় গান। দু একটা বলি, তুমি কেমন করে গান করো যে গুণী, কোন আলোতে প্রাণের প্রদীপ জ্বালিয়ে তুমি ধরায় আসো। এছাড়া মেঘের কোলে, আজ ধানের ক্ষেতে, কোথাও আমার হারিয়ে যাবার নেই মানা - এগুলো তো ছিলই।

    গরমের ছুটির দুপুরে ন‍্যাশনাল চ‍্যানেলে ছোটদের অনুষ্ঠান শুরু হল। আর সকাল এগারোটায় কলকাতা দূরদর্শনের ছুটি ছুটি। যেদিন জিনিস বানানো শেখানো হত, খবরের কাগজ নিয়ে বসে যেতাম। কাগজ মুড়ে ওরিগ‍্যামি, শ‍্যাম্পুর শিশি দিয়ে পুতুল, এরকম কতো। ইস্কুলেও ওয়ার্ক এডুকেশনের প্রদর্শনীর সময়ে পুতুল বানানোর যজ্ঞ বসে যেত। সেই থেকে জিনিস বানানোর নেশা চেপে বসল। মা দেখে আর হাসে, বলে
    - "জানিস, আমার মায়ের ও এমন নেশা ছিল। মাছের আঁশগুলো কত কান্ড করে হাঁস বানাতো, আরও কত কিছু। সব মনে নেই। তখন তো আর পাত্তা দিতাম না। এখন ভাবি, মায়ের হাতের কয়েকটা জিনিসও যদি রাখতে পারতাম। কিন্তু কী সব হয়ে গেল, সব হারিয়ে গেল।
    - হারমোনিয়ামটা তো হারিয়ে গেছিল। জিনিসগুলো হারালো কেন? আমি বেশ দেখতাম।
    - এই যে তুই বানাচ্ছিস, আমি দেখছি। তুই তো আমার মা।
    - ধুর, মায়েরটা দেখবে, মেয়েরটা দেখবে, সব দেখা শুধু তোমার ভাগে। আমি দেখবোটা কী?
    - কত বয়স হল রে তোর, সব দেখবি? অপেক্ষা কর। জীবন কত কিছু দেখাবে তোকে, আমি দেখতে পাবোনা।
    - আমি দেখবো, আর তুমি দেখতে পাবেনা, সেটা হয়?
    - আমি কি চিরদিন থাকব পাগলি? আমার মা কি এখন আছে?
    - তুমি থাকবে। আমি ধরে রাখব।"

    মেয়েকে এই অবধি বলে একটু দম নিই। মেয়ে বলে,
    - একটু দাঁড়াও মা, তুমি যা বলছ তার মানে তুমি যে লাবণ‍্যর মত দেখতে সেটাই সব নয়। তোমাদের স্বভাবও একরকম। তোমরা দুজনেই জিনিস বানাতে ভালোবাসো।
    - একদম ঠিক, কিন্তু আমার মা শুধু পড়াশোনা আর লেখালেখি নিয়ে মেতে থাকত। এসব হাতের কাজে নজর ছিলনা। মা বলত,

    - "জানিস, আমি এসব হাতের কাজ এতো পারিনা। ভাল্লাগেনা। কিন্তু আমার মা বলতো, কিছু সৃজন করা ভালো রে খুকু। যার হাত সৃজন করেনা, সে বাঁধা গতে চলা, বোকা হাতের মানুষ। আমি পারিনি। কিন্তু তুই যখন পারছিস, লেখাপড়া বাঁচিয়ে যা প্রাণে চায় কর।"
    আমি বললাম,
    - "আচ্ছা মা, মাসিমণি যে এত সুন্দর রথ সাজিয়ে দেয়, ঝুলন করে, এটাও কি সৃজন?
    - অবশ্যই।
    - আর ছোটোমামা যে যাত্রা করে। সেটাও সৃজন?
    - হ‍্যাঁ, নিশ্চয়ই চরিত্র কে ফুটিয়ে তোলাও সৃজন।
    - তাই নাকি?
    - হ‍্যাঁ, আমার আর ছোড়দার দুজনেরই গলায় সুর ছিল, মায়ের কাছে শিখতাম। আর হলনা। ছোড়দা এখন মঞ্চে ওর ঐ না পাওয়া গুলো পুষিয়ে নেয়।"

    এই অবধি শুনে মেয়ে অবাক -
    - আর একবার দাঁড়াও মা, মামাদাদু যাত্রা করত?
    - শুধু ছোট মামা নয় রে বিকাশচন্দ্রেরও অভিনয়ের নেশা ছিল।
    - বল কী?
    - বাগবাজার তো বাংলার নাট্য আন্দোলনের অন্যতম পীঠস্থান।
    - সত্যি?
    - হ্যাঁ সত্যি। উনিশ শতকে বাগবাজার অ্যামেচার থিয়েটারে যাঁরা অভিনয় করতেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম ছিলেন রাধামাধব কর, ডাক্তার আর জি করের মেজ ভাই। তাঁর কথা আগেই তোকে বলেছি।
    - মানে শ্যামল দাদুর মায়ের দাদু।
    - একদম ঠিক। সেন বাড়িতে নাটক থিয়েটারের খুব ভালোমত চর্চা ছিল। মা বলত, পরিবারের সকলে মিলে বিশাল গাড়ি করে সিনেমা দেখতে যাওয়া হত। বাড়িতে পুরো পিকনিক পিকনিক পরিবেশ। বেশিরভাগ ঐ দিনগুলোতে হাটখোলা দত্তবাড়ি থেকে মায়ের সেজজ্যাঠাইমা আসতেন গাড়ি নিয়ে। তিনি নাকি এতই নাদুস নুদুস মহিলা যে, তিনজন দাসী লাগত, তাঁকে গাড়ি থেকে ওঠাতে নামাতে।
    - ও, তার মানে মেয়েরাও সিনেমা যেত?
    - যেত বৈকি। মহিলারা সব সাজগোজ করে নানানরকম খাবারের অমৃত পুঁটুলি গুছিয়ে নিয়ে সেই গাড়িতে চেপে বসতেন। মা বলত, যেসব মহিলা ভারি ভারি সোনার গয়না বেশি পরতেন, তাঁরা নাকি খুব ফিনফিনে প্রায় স্বচ্ছ কাপড় দিয়ে সেই গহনা ঢেকে নিতেন। মানে বৈভবের শো অফ আছে বটে, তবে উচ্চকিত নয় - এটাই নাকি ছিল ছিল সেযুগের শালীনতা।
    - লাবণ্যও যেত সেই দলে?
    - হুঁ। মা বলত, সিনেমা যাওয়ার কথা হলে লাবণ‍্য ভীষণ খুশি হত।
    - তার মানে লাবণ‍্য সিনেমা ভালোবাসত, ঠিক তোমার মত।
    - ভালো তো বাসবেই - ঘরের ঘেরাটোপের বাইরে একটা আনন্দ করার উপলক্ষ পাওয়া যেত। তাছাড়া অভিনয় ভালোবাসার অন‍্য কারণও আছে।
    - কী কারণ?
    - লাবণ‍্য ঘোষেদের মেয়ে হলেও ঠাকুরদার জন্য ঘোষ পরিবারের বাকি অংশের সঙ্গে তাদের যোগাযোগ কমে গিয়েছিল। লাবণ‍্যর ওপরে তার মামার বাড়ি মানে করেদের প্রভাব পড়েছিল বেশি। আর লাবণ‍্যর দাদুরা কোন না কোন ভাবে বাংলার নাট‍্য আন্দোলনের সঙ্গে যুক্ত।
    - সেতো শুধু মেজদাদু রাধামাধব।
    - বড়দাদু কম কীসে? আর জি করের বাবা দুর্গাদাস করের বন্ধু ছিলেন নাট‍্যকার দীনবন্ধু মিত্র। সেই সংসর্গে আর জি করও থিয়েটারের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েন।
    - তাই নাকি?
    - হ‍্যাঁ রে, এমনকি ১৮৬৮ সালে বাগবাজার অ্যামেচার থিয়েটার তৈরির পুরোধা হলেন তিনি।
    - ওরেব্বাবা!
    - তাহলেই বোঝ, ছোটবেলা থেকে অভিনয়ের আবহে যে বড় হল, সে তো এসব ভালো বাসবেই। শ্বশুরবাড়িতেও বাধা আসেনি। কারণ শোভাবাজারের বাড়িতেও থিয়েটার হত। পুজোর সময়ে মঞ্চ বেঁধে ঐতিহাসিক নাটক হত, সেকথা মামাদের কাছেই শুনেছি। তাছাড়া ১৮৬৫ সালে রাজা দেবীকৃষ্ণ দেবের বাড়িতে মাইকেল মধুসূদনের প্রহসন 'একেই কি বলে সভ‍্যতা' মঞ্চস্থ হয়েছিল - একথা রাজবাড়ির বংশধর সুশান্ত কৃষ্ণ দেবের লেখা 'তিন শতাব্দীর শোভাবাজার রাজবাড়ি' বইতে স্পষ্ট লেখা আছে। আবার এর একশ বছর পরেও ১৯৬০ - এর দশকে ওখানে নিখিলবঙ্গ যাত্রা উৎসবের আয়োজন হয়েছে।
    - আ-চ্ছা, ও মা সিনেমার কথা বলো না, তখন কী কী সিনেমা সকলে মিলে দেখতে যেত?
    - আমার মা বা মামারা যখনকার গল্প বলেছে, সেটা ধর বিশ শতকের পাঁচের দশক। কাজেই ধরে নেওয়া যায় তখন …….
    - কী?
    - কী মানে সাড়ে চুয়াত্তর, সবার উপরে, হারানো সুর, সাগরিকা, চাওয়া পাওয়া - এইসবই হবে।
    - উত্তম - সুচিত্রা?
    - হুঁ, সঙ্গে অসিতবরণ, এমনকি প্রমথেশ বড়ুয়ারাও ছিলেন নিশ্চয়ই।
    - সব বাংলা সিনেমা। তখন হিন্দি সিনেমা হতনা মা?
    - হত বৈকি। খুব হত।
    - লাবণ‍্যরা যেতে পারতনা, মানে যেতে দিতনা বাড়ির লোক।
    - আই ডাউট। তোর কথা মানতে পারছিনা।
    - কী মানতে পারছোনা?
    - লাবণ‍্যরা সেযুগে শুধু বাংলা সিনেমা দেখত, হিন্দি দেখতনা।
    - হিন্দি সিনেমা দেখত, তুমি নিশ্চিত হচ্ছ কী করে?
    - নিশ্চিত হচ্ছি কারণ আমার জন্মের পর লাবণ‍্য নাম রেখেছিল - দেবিকা।
    - দেবিকা!
    - হুম। হিন্দি সিনেমার নায়িকা দেবিকারানীর নামে।
    - তাই নাকি? তুমি যে একবার বলেছিলে লাবণ‍্যর একটা ছবি ছিল উত্তম- সুচিত্রার ছবি জড়িয়ে? দেবিকারানী সুচিত্রার থেকেও বেশি প্রিয়?
    - সুচিত্রাকে লাবণ‍্য পেয়েছে অনেক বড় বয়সে। সে যদি দশ সালেও জন্মায়, সাড়ে চুয়াত্তর এসেছে ১৯৫৩ য় - মানে লাবণ্য তখন চল্লিশের কোঠায়। আর দেবিকারানী অনেক আগের - নির্বাক ছবিও করেছেন। কাঁচা বয়সের ভালো লাগা। তার আবেদন বেশি থাকে। তাছাড়া মনে হয় আরও কারণ ছিল।
    - কী?
    - দেবিকারানীর স্বাধীনচেতা জীবন, পার্সোনালিটি - ইংল‍্যান্ডে পড়াশোনা, জার্মানিতে ফিল্ম তৈরির ট্রেনিং, হিমাংশু রাই মানে প্রথম স্বামীর মৃত্যুর পর নিজেই বম্বে টকিজ কোম্পানি চালানো, তারপর আবার রাশিয়ান চিত্রশিল্পী রোয়েরিখের সঙ্গে ঘর বাঁধা। হতে পারে সংসারের খাঁচায় আষ্টেপৃষ্ঠে বন্দী মেয়েটার স্বপ্ন ছিল স্বাধীনভাবে বাঁচার। কিন্তু পারেনি।
    - তারমানে লাবণ‍্য চেয়েছিল, তুমি স্বাধীন নারী হও!
    - হয়তো। কল্পনা করা ছাড়া আজ তো আর অন‍্য উপায় নেই। তবে আর একটা কথাও মনে হয়।
    - কী কথা বলো, বলো।
    - দেবিকারানীর বাবা মন্মথনাথ চৌধুরী রবীন্দ্রনাথের মেজদিদি সুকুমারী দেবীর ছেলে আর মা লীলাদেবী রবীন্দ্রনাথের বড়দিদি সৌদামিনী দেবীর নাতনি; মানে সৌদামিনীর মেয়ে ইন্দুমতী দেবীর মেয়ে।
    - দেবিকারানী বা-ঙা-লি! আর এখানেও রবি ঠাকুর! আর বলতে হবে না। বুঝে গেছি, সুচিত্রা নামটাকে পিছনে ফেলে কেন নাতনির জন‍্যে দেবিকা নামটা লাবণ‍্যর কাছে জিতে গেছে। তা নামটা রইলনা কেন?
    - রইলনা, কারণ বাবার এক ছাত্রী গৌরী দিদি আমার নাম শ্রী শ্রী মায়ের নামে রাখল সারদা। আর বাবা সেটা করে দিল শরৎ কালের শারদা। মেয়ের নামের ব‍্যাপারে তার বাপের ওপরে কে কথা বলবে?
    - হুম, বোঝা গেল। তাও মনে একটা কথা উঠছে। বিকাশ চন্দ্র লাবণ‍্যর মনে স্বাধীনতার আকুতি কি বুঝতে পারত না? নিশ্চয়ই বুঝত। তার পরেও সে বৌকে সিনেমা যেতে দিত? পাঁচজনের সঙ্গে মিশতে দিত? যত মিশবে, ততই যে খোলা হাওয়া মনের ভিতর ঢুকবে।
    - বৌয়ের দিকটা অত ভেবে দেখতনা। ভাবার জন্য যে মন লাগে, সেটা ছিলনা। আর সিনেমা যেতে দেবেনা কেন? বিকাশ চন্দ্র নিজেও যে সিনেমায় অভিনয় করত। অন্য বিষয়ে যতই বাধা নিষেধ থাক, এই একটা বিষয়ে আমার দাদু একেবারে দিলদরিয়া।
    - বিকাশ্চন্দ্রের কোনো সিনেমা তুমি দেখেছ মা?
    - হুম, খুব ছোটবেলায় দেখেছি একটা - লেকটাউনের জয়া সিনেমা হলে “ষোড়শী”। কথাশিল্পী শরৎচন্দ্রের লেখা কাহিনী, পরিচালক পশুপতি চ্যাটার্জী। সিনেমাটা প্রথম মুক্তি পেয়েছিল ১৯৫৪ সালে, রাধা - পূর্ণ - প্রাচীতে। আমি দেখেছি সত্তরের দশকে। নায়ক নায়িকা - ছবি বিশ্বাস, দীপ্তি রায়। ওই সিনেমার পর্দাতেই একমাত্র দাদুকে দেখেছি আমি, জীবানন্দের গ্রামের মোড়লদের মধ‍্যে - মধ‍্য চল্লিশের কোঠায় বয়স, বা তার একটু বেশি, কালো পাঞ্জাবি পরা, চওড়া কপাল, তোলা চুল, সুপুরুষ।
    - ইশশ, আমিও যদি দেখতে পেতাম।
    - ওসব সিনেমা এখন তো আর আসেনা। ইন্টারনেটেও নেই। হয়তো ফিল্মের রিলটাই নষ্ট হয়ে গেছে। তবে হ‍্যাঁ, ইন্টারনেটে সিনেমার বইটা আপলোড করা আছে।
    - সিনেমার বই মানে উপন‍্যাসটা?
    - আরে না না, তখন সিনেমার সঙ্গে চটি চটি বই বেরোত, সংক্ষিপ্ত তথ‍্য, গল্পের নির্যাস, অল্প কটা ছবি - এসব দিয়ে। হলে বিক্রি হত। অনেকেই কিনত, সংগ্রহে স্মৃতি হিসেবে রেখে দিত। আমাদের বাড়িতেও ছিল খানকয়েক। আমি বায়না করে কেনাতাম। ষোড়শী সিনেমার সেই বইটার পিডিএফ আছে banglacinema100.com ওয়েবসাইটে।
    - আর বিকাশচন্দ্র?
    - আছে, ঐ বইটাতে মোড়লের দলের একটা ছবি আছে। ছবিটার একেবারে ডানপাশে কালো পাঞ্জাবি পরা দাদুকে দেখতে পাবি।
    - আর কোন সিনেমায় ছিল বিকাশচন্দ্র?
    - আর কোন কোন সিনেমায় দাদু অভিনয় করেছে তা আমি জানিনা। তবে থিয়েটারের দুটো চরিত্রে নাকি খুব প্রশংসা পেয়েছিল - একটা হল অলীকবাবু আর একটা রামকৃষ্ণ।
    - এতো আচ্ছা মজার ব্যাপার! তোমার খরুচে দাদু শেষে কিনা হলেন রামকৃষ্ণ! টাকা মাটি মাটি টাকা।
    - হুম, তা বটে। মামারা গল্প করেছে, সন্ধ‍্যে হলেই বাড়িতে অভিনয় আর তার মহলা নিয়ে আড্ডা বসত আর সঙ্গে চলত তাস খেলা। কেটলি কেটলি চা আর থালা থালা জলখাবার উড়ে যেত। দাদু নাকি ভালো ব্রিজ খেলত। তার মধ‍্যেই নিউ মার্কেটের নামী দোকান থেকে দর্জি আসত জামাকাপড় আর সুটের মাপ নিতে। জুতোও অর্ডারি বানানো হত। বিকাশ চন্দ্র আর ক্ষিতীশ চন্দ্র পাল্লা দিয়ে দেদার টাকা ওড়ানোর একরকম প্রতিযোগিতাই করত বলতে পারিস।
    - বুঝলাম, সন্ধের জলখাবারের গল্প তো আগে শুনেছি। ঐ সিনেমা দেখতে যাবার সময়ে অমৃত পুঁটুলি না কী একটা শুনলাম যেন - ঐটে একটু খোলসা করত শুনি।
    - আসলে গিন্নি বান্নিদের মধ‍্যে চলত হাতের জাদুতে জিভ আর হৃদয় বশ করার খেলা। কে কতরকম নতুন খাবার বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিতে পারে সেই নিয়ে টক্কর। মা বলত লাবণ‍্য নাকি মাঝে মধ‍্যে রাঁচির রেসিপি বানিয়ে তাক লাগিয়ে দিত।
    - রাঁচির রেসিপি?
    - হুম। লাবণ‍্যর বাপের বাড়ির একটা অংশ তার ঠাকুরদার কীর্তির পরে রাঁচি চলে গিয়েছিল মনে নেই?
    - হ‍্যাঁ হ‍্যাঁ, ঐ পদ কিছু তো আমরাও খেয়েছি। আম, পুদিনা, রসুনের চাটনি, দেহাতি চিকেন, কিন্তু সিনেমা দেখার মুডে কোনটা খাবে? বাঁশের আচারটা?
    - ধু-স, সিনেমা দেখার মুডে একটা জিনিসই চলতে পারে। কলকাতার রাস্তার রানী যেমন ফুচকা, রাঁচির রানী হল ধুসকা।
    - কীরকম কীরকম? ধুসকা কেমন দেখতে, কীরম খেতে?
    - গোল গোল পুরীর মতো, কিন্তু অতটা ফাঁপা নয়, বাইরেটা লালচে মুচমুচে, ভিতরে তুলতুলে, একটু মশলাদার।
    - কীকরে করে ওটা? আমি পারব বানাতে?
    - অবশ্যই। কোনো অসুবিধে নেই। আজ রাতে সেদ্ধ চাল, ছোলার ডাল আর বিউলির ডাল আলাদা আলাদা তিনটে বাটিতে ভিজিয়ে দে। কাল সকালে মিক্সিতে তিনটেই বেটে নেব। ডাল বাটার সময়ে কয়েকটা কাঁচালঙ্কা আর একটু আদা মিশিয়ে দেব। তারপর তিনরকম বাটা একটা বড় গামলায় ঢেলে তার সঙ্গে হলুদ, নুন, জিরে আর হিং মেশাতে হবে। কিছুটা ধনেপাতা কুচো করে মেশানো যায়। এবার পুরো মিশ্রণটা ভালো করে ফেটাতে হবে। ঐটার ওপরে খেলা নির্ভর করছে। ধোসার মত সময় লাগবেনা। কিন্তু কিছুক্ষণ সময় দিতে হবে, যাতে একটু ফেঁপে যায়। তারপর কষকষে গরম ডুবো তেলে এক হাতা, এক হাতা মিশ্রণ ঢেলে দিতে হবে। এবারে মিশ্রণটা তেলের মধ‍্যে গোল হয়ে ফুলে উঠবে। একদিক ভাজা হয়ে ধুসকা তেলে ভেসে উঠলে খুন্তি দিয়ে ঠেলে টুক করে উল্টে দিতে হবে, যাতে ওপিঠটাও মুচমুচে হয়ে যায়।
    - কিন্তু যদি না ফোলে?
    - ফুলবে ফুলবে। তেল যদি ঠিকঠাক গরম থাকে, আর মিশ্রণের ঘনত্ব ঠিক থাকে, তবে ফুলতে বাধ‍্য। এখন তোকে ধুসকা বানিয়ে বানিয়ে হাত পাকাতে হবে, তবে না!

    আঁধার ঘরেতে স্বপ্ন বুনেছে
    পর্দার দেবিকা।
    লাবণ‍্যরানীর ইচ্ছেরা জ্বালে
    শপথের দীপিকা।
    দীপিকাটি আজও যত্নে বাঁচায়
    নাতনির লিপিকা।
    উনুনের পাশে গাঁথা হয় কত
    মেয়েলি গীতিকা।


    ক্রমশ...

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
    পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩ | পর্ব ৪ | পর্ব ৫ | পর্ব ৬ | পর্ব ৭ | পর্ব ৮ | পর্ব ৯ | পর্ব ১০ | পর্ব ১১ | পর্ব ১২ | পর্ব ১৩ | পর্ব ১৪ | পর্ব ১৫ | পর্ব ১৬ | পর্ব ১৭ | পর্ব ১৮ | পর্ব ১৯ | পর্ব ২০ | পর্ব ২১ | পর্ব ২২ | পর্ব ২৩ | পর্ব ২৪ | পর্ব ২৫ | পর্ব ২৬ | পর্ব ২৭ | পর্ব ২৮ | পর্ব ২৯ | পর্ব ৩০ | পর্ব ৩১ | পর্ব ৩২ | পর্ব ৩৩ | পর্ব ৩৪ | পর্ব ৩৫ | পর্ব ৩৬ | পর্ব ৩৭ | পর্ব ৩৮ | পর্ব ৩৯ | পর্ব ৪০ | পর্ব ৪১ | পর্ব ৪২ | পর্ব ৪৩ | পর্ব ৪৪ | পর্ব ৪৫ | পর্ব ৪৬ | পর্ব ৪৭ | পর্ব ৪৮ | পর্ব ৪৯ | পর্ব ৫০ | পর্ব ৫১ | পর্ব ৫২ | পর্ব ৫৩ | পর্ব ৫৪ | পর্ব ৫৫ | পর্ব ৫৬ | পর্ব ৫৭ | পর্ব ৫৮ | পর্ব ৫৯ | পর্ব ৬০ | পর্ব ৬১ | পর্ব ৬২ | পর্ব ৬৩ | পর্ব ৬৪ | পর্ব ৬৫ | পর্ব ৬৬ | পর্ব ৬৭ | পর্ব ৬৮ | পর্ব ৬৯ | পর্ব ৭০ | পর্ব ৭১ | পর্ব ৭২ | পর্ব ৭৩ | পর্ব ৭৪ | পর্ব ৭৫ | পর্ব ৭৬ | পর্ব ৭৭ | পর্ব ৭৮ | পর্ব ৭৯ | পর্ব ৮০ | পর্ব ৮১ | পর্ব ৮২
  • খ্যাঁটন | ২৯ জুন ২০২৩ | ৭৯৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Kishore Ghosal | ১২ জুলাই ২০২৩ ১৪:৫৩521173
  • এ পর্বটা মিস করে গেছিলাম। "ধুসকা" ব্যাপারটাও বুঝলাম।  
  • kk | 2607:fb91:87b:8018:9766:287c:de26:4fce | ১৬ জুলাই ২০২৩ ০৬:০২521285
  • আমি আজকে ধুসকা বানিয়েছিলাম। অতি চমৎকার হয়েছিলো। আমি বিহার বর্ডারে জন্মেছি, বড় হয়েছি। বিহার-ঝাড়খন্ড অঞ্চলের অনেক জায়গাতেই আনাগোনাও ছিলো। কিন্তু এই জিনিষটা কখনো খাইনি। খুব ভালো লেগেছে। অনুপ্রেরণা আর রেসিপি দুইয়ের জন্যই ধন্যবাদ।
    আর ইয়ে, আপনাকে কী সম্বোধন করবো? শারদা ম্যাডাম, দেবী, দিদি, বোন, জী ...কোনটায় আপনি স্বচ্ছন্দ বোধ করবেন যদি একটু জানান।
  • Sara Man | ১৭ জুলাই ২০২৩ ১৫:৫৬521362
  • শুধু শারদা বলেই ডাকুন, সেটাই ভালো। আমাদের কলেজে একসময়ে প্রিন্সিপাল অবসর নেওয়ার পর, কিছুদিন টিচার ইন চার্জ হয়েছিলাম। এমনই কপাল, সেই সময়েই ন‍্যাক পিয়ার টিম ভিজিট হল। শেষদিন চেয়ারম্যান বিরক্ত হয়ে বললেন, What is this? Every body calls her sharda, sharda, nobody calls her madam. 
    এইশুনে কলেজে কী হিল্লোল, এতবছরের বান্ধবী, সহকর্মিনীরা ডাকছে, এই ম‍্যাডাম, এদিকে আয়। তাহলেই বুঝুন, তাই শুধু শারদাই থাক। 
  • kk | 2607:fb91:87b:8018:195:626:df12:4c33 | ১৮ জুলাই ২০২৩ ০৪:৪৫521379
  • হা হা হা, "এই ম্যাডাম, এদিকে আয়" টা দারুণ :-))
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন