ইরমের আড়ালে কা তব কান্তা কস্তে পুত্র - কাফি কান্ড আছে মেড়া জানে সূত্র। পাঠান বা জওয়ান - কেবল ফাইটিং, ওড়াউড়িং, ল্যান্ডিং, কামানিং, ট্রাকিং, হেলিকপ্টিং - নতুন আমদানি মেট্রো হাইজ্যাকিং। ... ...
পর্দা জুড়ে ফুটে ওঠে পরিত্যক্ত মন্দিরে এক বিশাল রামের মূর্তি। আধুনিক দর্শক আশা করি এই অনুষঙ্গ ভালোই বুঝতে পারবেন। রাম গেরুয়া ধুতি পরে রামের মূর্তি থেকে তীর ধনুক খুলে নেয়। জড়িবুটির ম্যাজিকে তার সমস্ত ক্ষত এতক্ষণে উধাও। সারাংশে রাম আর ভীম, সঙ্গে রয়েল বেঙ্গল বাঘ, কম্পজ্বর ভাল্লুক, চিড়বিড়ে চিতাবাঘ, চোখানাক নেকড়ে, দৌড়বাজ হরিণ, উপজাতির শিকারী ভায়েরা - সিনেমার গল্প জুড়ে সবার মিলিত প্রচেষ্টা বড়লাটের বাড়ি উড়িয়ে দিয়ে সব খারাপ ইংরেজ খতম করে। প্রথম দৃশ্যের নির্মম ফার্স্ট লেডির ময়ূর আঁকা নিথর হাতটি শূন্যে দোলে। কিন্তু এতো শুধু খোলসের বিবরণ। ভাবুক দর্শকের সামনে খুলে যায় বোধের দরজা। আর্য আর ফর্সা ইংরেজের সঙ্গে যুদ্ধ করে ভীম। পাঁচ নিষাদ পুত্রকে তাদের মায়ের সঙ্গে জতুগৃহে পুড়িয়ে মারার গ্লানি ধুয়ে আজ সে নিজেই নিষাদের কন্ঠস্বর, তাদের চেতনার প্রতিভূ। আর আবহ জুড়ে গান বাজে রাঘবম রাজসম। তীরধনু আর অক্ষয় তূনীর হাতে ভীমকে সুরক্ষা দেন রাম। পুলিশ অফিসার রামের অহল্যা মনোভূমি আজ ভারতের ঐতিহ্যধারী রামের স্পর্শে প্রাণ পায়। আজ সে সত্যিকারের শ্রীরামচন্দ্র হয়ে ওঠে। ... ...
- কোনো ক্রাইসিস পিরিয়ডে ঘুম থেকে উঠে, আগে ভাত আর ডাল বসিয়ে দিতে হয় জানোনা। তুমি তো অনেকক্ষণ উঠেছো। ডালটা সিটি দেওয়া থাকলে, তাতে ডুবিয়েও তো সবাই পাঁউরুটি খেতে পারতো। তিনটে অসুস্থ, দুটো সুস্থ মানুষ খাবে কী এখন। ঘড়িতে সকাল দশটা বাজতে যায়? কর্তা দেখলাম জুৎসই উত্তর হাতড়াচ্ছেন। এমন সময় রান্নার মেয়েটি ঘর থেকে বেরোলো, আর বাংলার পাঁচ, ছয়, সাত সবরকম মুখ করে চাল ধুতে শুরু করলো। সহোদরাও বেরিয়ে পড়লো। আমাদের ঘরে তো আর অ্যাটাচড বাথ নেই। আর পতিদেব সুযোগ বুঝে - 'ওরে বাবা, চারদিকে করোনা বেরিয়ে পড়েছে, মাস্ক আমার মা - স্ক' - এই বলে এক লাফে বেডরুমে ঢুকে পড়লেন। আমি দাঁত কিড়মিড় করে ঘরের দরজার ফাঁক দিয়ে দেখলাম, কর্তা একেবারে কম্বলের তলায় ঢুকে পড়েছে আর দুটো চোখ বার করে দেখছে, আমি তাকে দেখছি কিনা। যেই আমি তাকিয়েছি, দেখি মুখে একটা অসহায় হাসি, এদিকে কম্বল থেকে একটা পা বার করে নাচাচ্ছে - পা দেখিয়ে আমায় রাগাচ্ছে। কী আর করি। পাত্তা দিলাম না। কিন্তু বুঝলাম মাটন স্টুটা আমাকেই রাঁধতে হবে। একমনে মহা করোনাঞ্জয় মন্ত্র আওড়ালাম - "মাটোন আমার কাঁটোন সই উনুনের ঝিক। রাম করোনা বুকে আছে পারবো আমি ঠিক।" ... ...
প্রিয় ছাত্রছাত্রীরা, এসো, কোভিড অতিমারীকে হারিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফেরার জন্য আমরা দ্বাদশ অঙ্গীকার করি। ... ...
মনে করা হয় যে শরৎকালের পূর্ণিমায় চাঁদ ষোলো কলায় পূর্ণ হলে অমৃত বর্ষণ করে। অনেক বাড়িতে পায়েস দেওয়া হয় চাঁদকে। তাছাড়া শাশুড়ি বলতেন লক্ষ্মীঠাকুর সারা রাত ঘুরবেন, চাঁদ যদি মেঘের আড়ালে লুকিয়ে গিয়ে আলো না দেন, তবে তো খুব মুশকিল হয়ে যাবে। চাঁদকে নৈবেদ্য দেওয়ার সময়ে তুলসী গাছকেও পুজো করা হয়। তুলসী নারায়ণের প্রতীক হিসেবে পুজো পান। ... ...
শুক্তোর সব আনাজ আগে ভেজে নেওয়া হয়। শুকনো লঙ্কা, জিরে, পাঁচফোড়ন দিয়ে আদাবাটা, সর্ষে বাটা, চিনেবাদামবাটা, চারমগজ বাটা দিয়ে কষা হয়। এবারে ভাজা আনাজ দিয়ে কষে জল, নারকেল দুধ, নুন, মিষ্টি দেওয়া হয়। নামানোর আগে ভাজা লঙ্কাগুঁড়ো, ভাজা সর্ষের গুঁড়ো, চিনেবাদাম গুঁড়ো ছড়িয়ে দেওয়া হয়। এখানে শুক্তোয় ঝাল মশলার প্রাবল্য বেশি। অথচ ছোটবেলা থেকে ছড়া পড়েছি, ছি ছি ছি, রানী রাঁধতে শেখেনি। শুক্তুনিতে ঝাল দিয়েছে অম্বলেতে ঘি। এবাড়িতে অম্বলেতে ঘি না পড়লেও শুক্তোয় এত লঙ্কা দেখে খুবই অবাক হয়েছিলাম প্রথমদিকে। ... ...
আজ অষ্টমীতে , গোপীনাথ মন্দিরে খিচুড়ি ভোগ। দুর্গাদেবীর কাছে টমেটো খেজুর, কাজুবাদামের চাটনি, কুমড়ো ঘন্ট, আট রকম ভাজা, সুজি, লুচি, সিমাইয়ের পায়েস, কলার বড়া, খই, মুড়কি, দুরকম নারকেল নাড়ু - এই হল অষ্টমীর ভোগ। ... ...
সপ্তমীর ভোগ সাতরকম ভাজা, ডাল, শুক্তো, আলুপটল, নটেশাকের ঘন্ট, চালতার চাটনি, সিমাইয়ের পায়েস, লুচি, সুজি, চিনি আর গুড়ের নাড়ু, সন্দেশ আর ফলপ্রসাদ। এটি আমার শ্বশুরবাড়ির পুজো। এই প্রসাদ কিন্তু আমরা দুপুরে পাবোনা। কারণ দুর্গাপুজো শেষ হতে সন্ধ্যে হয়ে যায়। তাছাড়া কায়স্থ বাড়ি বলে অন্নভোগ দেওয়া যায়না। ঠাকুরের রান্নাঘরে আজ যা রান্না হচ্ছে, তার থেকে কিছুটা সরিয়ে রেখে গোপীনাথের মন্দিরে অন্নভোগ দেওয়া হবে। সেটা আমরা দুপুরে খাব। আর দুর্গাদেবীর প্রসাদ খাওয়া হবে রাতে। মানে early dinner। গোপীনাথের মন্দিরে নিত্য অন্নভোগ গত দুশ বছর ধরে চলছে। কোনদিন বন্ধ হয়নি। আগে এলাকার বহু নিরন্ন মানুষের দুপুরের খাবারের যোগানদাতা ছিল এই মন্দির। কিন্তু এখন এলাকায় গরীব মানুষ কমে গেছে। পরিবারেরও সঙ্গতি কমেছে, তাই সাধারণ দিনে এখন সাত আটজনের মতো রান্না হয়। ... ...
আমি এবারে ভেঙে পড়লাম। সেই কেজি ওয়ান থেকে অপেক্ষা করছি। ভেবেছিলাম ইন্দিরা গান্ধী চিঠি দেবে ওভারটাইমের জন্য। সে হেরে গেছে। আমি তাহলে দেশের দরকারে লাগব কী করে? চোখে জল চলে এল আমার। মা একটু সময় নিয়ে ব্যাপারটা বুঝল, আমার সমস্যাটা কী? তারপরে বলল, - তুমি ভুল বুঝে কষ্ট পাচ্ছ। দেশ ঐভাবে চিঠি দেয়না। দেশ কি চায়, সেটা বইতে লেখা থাকে। আর খেলতে গেলে হারজিত হবেই। কখনো মোহনবাগান জিতবে, কখনো ইস্টবেঙ্গল। এতে দুঃখের কিছু নেই। আমি কান্না ভেজা গলায় বললাম, - তা সে কোন বইতে দেশের দরকার লেখা থাকে, সেটা কি তোমার কাছে আছে? আমি পড়তাম তবে। ... ...
আঁধার ছাতে চুল এলোমেলো করা হাওয়া দেয়। এখানে আকাশে আজ মেঘ কম। কৃষ্ণপক্ষের মৃদু চাঁদ আর অজস্র তারার মেলা। কন্যা হঠাৎ পিছন থেকে জড়িয়ে ধরে আমায়, ওপরে আঙ্গুল দেখিয়ে নতুন শেখা কবিতা বলে - দেখো মা - হাওয়া বয় শনশন তারারা কাঁপে হৃদয়ে কি জং ধরে পুরোনো খাপে কি বললি বাবু! মনে হঠাৎ একটা ফুলঝুরি জ্বলে ওঠে। মেয়েকে আঁকড়ে ধরে ওর কাঁধে চিবুক রেখে আকাশে চোখ পেতে দিই। ওগো প্রেমেন বাবু আজ নতুন করে তোমার কথার মানে বুঝেছি আমি। হাসিখেলা দুখমেলা স্মৃতির বাঁকে, আঁখিতারা তারা জুড়ে মাকেই আঁকে। হৃদপাতে সরোবর - হোথা মায়েরা থাকে। ... ...