এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

  • দিল্লী লৌহস্তম্ভ – এখনো ক্ষয়ে যায় নি কেন? (শেষ পর্ব)

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি | ১১ অক্টোবর ২০২০ | ২৮৬১ বার পঠিত | রেটিং ৪ (২ জন)
  • পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩

    দিল্লী লৌহ স্তম্ভ আদৌ অক্ষয় কিনা তা বুঝতে হলে একটু হালকা করে জেনে নিতে হবে যে ধাতু ক্ষয়ে যায় কেন! এই আমার মত পাবলিক, যারা ধাতুর ক্ষয় নিয়ে কাজ কর্ম করে – তাদের ব্যাপার স্যাপার অনেকটা ডাক্তারদের মত! মানুষ পৃথিবীর বুকে নাড়াচাড়া করলে ডাক্তারদের যেমন একটা চাহিদা থেকে যাবেই, ঠিক তেমনি যতদিন মানব সমাজ ধাতু দিয়ে জিনিস পত্র বানিয়ে সেগুলো যাতে ভেঙে না পরে সেই দিকে নজর দেবে, ততদিন টাচ-উড আমাদের কাজ-কর্ম থাকবে মার্কেটে।



    এবার আপনি ভাবছেন ডাক্তাররা যেমন রোগ ভালো করে দেয় চিকিৎসা করে অনেক ক্ষেত্রে, আমরা তেমনি ধাতু ক্ষয় রোধ করতে পারি কিনা পুরোপুরি। তাহলে আর একটু খোলসা করে বলি, আমাদের মিল বেশি ওই ক্যান্সার চিকিৎসকদের মত! আগে ভাগে ডিটেক্ট ইত্যাদি করতে পারলে বলতে পারি যে ভাই আরো বছর দশেক টানতে পারবেন, বা আর মাত্র মাস ছয়েক রয়েছে আপনার হাতে। এটা বিন্দুমাত্র বাড়িয়ে বলছি না – সত্যি করেই কল-কারখানায় পাইপলাইন বা ভেসেল/ইকুইপমেন্ট যাই বলুন – আমরা ডাক্তারদের মতই ‘রিমেনিং লাইফ’ নিয়ে রোজ নাড়াচাড়া করি।ডাক্তারদের মতই আমরা চেক-আপ করার নিদেন দিই রোগের গুরুত্ব অনুসারে এবং প্রতিকার ব্যবস্থা।



    বিশাল চুলচেরা বিচারে না ঢুকে এটা মোটামুটি জানিয়ে রাখি যে ধাতু ক্ষয় পুরোপুরি রোধ করা প্রায় একেবারেই অসম্ভব। ধাতু ক্ষয়বেই – থার্মোডায়নামিক্স তাই বলছে। এর ব্যত্যয় নেই। তাহলে এবার আপনি প্রশ্ন করতে পারেন, তাহলে তোমাকে বাপু পোষা কেন! এর উত্তরও আমার রেডি – আমাদের কাজ ওই ‘কাইনেটিক্স’ পার্টটা নিয়ে বেশীর ভাগ সময়। মানে ক্যান্সার রোগীকে টেনে নিয়ে যাওয়া আর কি। টাইম-স্কেলটাই যা পার্থ্যকের!  ধাতু পঞ্চাশ হাজার বছর, নাকি পাঁচ হাজার, নাকি পঞ্চাশ, নাকি পাঁচ বছর, নাকি পাঁচ মাসে মধ্যে ক্ষয়ে যাবে সেটাই দেখার। খুব কম কিছু প্রয়োগ ছাড়া কোন ধাতু পঞ্চাশ হাজার বছরে ক্ষইবে কিনা সেই নিয়ে কারো তেমন মাথাব্যাথা থাকে না। হাজার হাজার বছরের প্রয়োগ বলতে ওই নিউক্লিয়ার ইন্ডাষ্ট্রি (পারমাণবিক বিদ্যুৎ মূলত) – পারমাণবিক ছিবড়ে গুলো আপনি কোথায় ফেলবেন? এতো আর মায়ের রাঁধা ডাঁটা চচ্চড়ি নয় যে চিবিয়ে শুষে বাকিটা পাড়ার ভুলো কুকুরের মুখের সামনে ফেলে দিলেন! পারমাণবিক জ্বলানির ছিবড়ে গুলো ধাতুর ক্যানেস্তারা তে ভরে কোন এক পাহাড়ের গহ্বরে চালান করা হয়। কিন্তু খেয়াল রাখতে হবে যে সেই ক্যানেস্তারা যেন হাজার পঞ্চাশ বা তেমন এক গাম্বাট টাইম ফ্রেমের আগে ক্ষয়ে না যায়!  



    আমরা চারপাশে ধাতু দিয়ে বানানো যে সব জিনিস পত্র দেখি তার বেশীর ভাগই কুড়ি-পঞ্চাশ বা রেয়ার কেসে একশো বছর টিকে থাকবে তেমন হিসেব করে বানানো। এই ধাতু ডাক্তার আমাদের ক্ষমতা নেই যে ধাতু কুড়ি বছর টিকবে তাকে ঔষুধের ডোজ দিয়ে পাঁচশো বছর টেনে দেওয়া। তবে কুড়ি বছরের জিনিসটা এটা সেটা দিয়ে বছর তিরিশ বা আরো দশ তো টেনে দেবার চেষ্টা চলতেই পারে। আবার প্রশ্ন ছুটে আসতে পারে যে ভাই ভারি দশ বছরের লাইফ বাড়িয়ে এতো ঘ্যাম নেবার কি আছে!



    ঘ্যাম নেবার যে একটা মৃদু অধিকার আমাদের আছে সেটা হয়ত একটু ভালো করে বুঝতে পারবেন যদি বলি সারা বছর ধাতু ক্ষয়ের পিছনে কত টাকা খরচ করা হয়। সারা পৃথিবীর হিসেব পাওয়া চাপের, তবে আমেরিকার হিসেব আছে এবং আরো কিছু উন্নত দেশও নিজেরা এষ্টীমেট করেছে যে তারা বছরে ক্ষয়ের পিছনে কত খরচ করে। ক্ষয়ের পিছনে খরচের পরিমাণ দেশের সাইজ এবং ইকনমির উপর নির্ভর করলেও জি ডি পি অনুপাতে তা বেশ সামঞ্জস্যপূর্ণ দেখা গেছে। বেশীর ভাগ দেশেই জি ডি পি-র প্রায় ৩.৫ থেকে ৪% খরচ হয় এই ক্ষয়ের পিছনে। যেমন আমেরিকায় ২০০৪ সালের হিসেব অনুযায়ী ক্ষয় সংক্রান্ত খরচ হয়েছিল প্রায় ৩০০ বিলিয়ন ডলার! হ্যাঁ – ঠিকই দেখছেন, ভারতীয় মুদ্রায় প্রায় ২২৫ লক্ষ কোটি টাকার সমান! আগে যেমন বলেছি, ধাতু ক্ষয় হবেই – তাই চেষ্টা করলেই যে এই ২২৫ লক্ষ কোটি টাকা বাঁচিয়ে দেব আমরা এই ধাতু ক্ষয় ডাক্তাররা এমন ক্লেম করি না। আমাদের টার্গেট থাকে এই খরচের ১০-২০% বাঁচানো – তাহলেও বুঝতে পারছেন পরিমাণটা খুব একটা কম নয়!



    এবার আসা যাক ধাতু তা হলে ক্ষয় কেন? বা ক্ষয় হতে গেলে কি কি চাই? এর ভিতরে পুরোই থার্মোডায়নামিক্স যেটা আমরা ধাতুবিদরা খুব একটা বেশী বুঝি না। ইঞ্জিনিয়ারিং থার্মোডায়নামিক্স জিনিসটা এক বেদনার – কে আর হৃদয় খুঁড়ে বেদনা জাগাতে ভালোবাসে! শুধু এটুকু আপনারাও জেনে নিন যে এই সবের মূলে আছে ‘এনার্জি’। পৃথিবীর যাবতীয় কিছু ঠিক খুঁজেপেতে নিজের সবচেয়ে লো-এনার্জি স্টেটে যাবে – মানে যাবেই, যতই আপনি আটকাতে চেষ্টা করুন। এবার আপনি নীচের ছবিটা দেখুন –





    হচ্ছে কি আপনি তো আকরিক থেকে এটা সেটা করে, হিট দিয়ে ধাতু নিষ্কাশন করলেন। কিন্তু সেই জিনিস করতে গিয়ে আপনি মালটাকে এনার্জি  খাইয়ে হাই করে ছেড়েছেন! সে নিজেও হীট খেয়েছে! কিন্তু এবার মিঃ ধাতু চেষ্টা করবে নিজের হাই অবস্থা থেকে ক্রমে নীচে নামতে। খুব সহজে বলতে গেলে – এটাই হল ধাতু ক্ষয়। কাব্যি করে বলতে গেলে, সব জিনসই মাতৃ প্রকৃতির কোলে ফিরতে চায়। তাই যে লোহার আকরিক থেকে নিষ্কাষণ করে আপনি লোহার গ্রীল বানিয়েছেন সেও কালে কালে আবার নিজের আকরিক অবস্থায় ফিরতে চাইবে!



    নীচের এই ছবিটাও একটু দেখে নিন জাষ্ট একটু আইডিয়া পাবার জন্য – যে যত বেশী এনার্জী স্টেটে আছে তার ক্ষয়ে যাবার প্রবণতা তত বেশী।





    দেখুন এই স্কেলে সোনা রয়েছে নীচের দিকে – আর তাই সোনা তত বেশী চট করে ক্ষয় না। বছরের পর বছর হাতে গহনা হাতে বৌ আর আঙটি হাতে আপনি আমি ঘুরছি – তেমন কিস্যু হচ্ছে না। বৌ বলেছে সোনার গহনা কিনেছি ইনভেষ্ট পারপাশে, আপনি জানেন তার থেকে বড় ধোঁয়াটে ব্যাখা আর কিছু হয় না! যাই হোক, দেখবেন কার্বন স্টিল (মানে ইস্পাত) আছে বেশ উপরের দিকে – অন্তত স্টেনলেস স্টিলের উপরে। তাই বাড়িতে স্টেনলেস স্টিলের বাসন পত্র না ক্ষয়ে অনেক দিন চলে। আচ্ছা এই ফাঁকে একটা কথা বলে রাখি – স্টেনলেস স্টিল জিনিসটা নিয়ে বাজার পুরো জালি কারবার চলে। স্টিলের থালা-বাসন পত্র যদি সত্যি কারের দামী অথেন্টিক কোম্পানীর হয়, তাহলে দেখবেন 18-8 লেখা থাকবে কোন এক কোণে। সেটা দেখেই কিনুন। ওজন অনুপাতে ১৮%  ক্রোমিয়াম এবং ৮% নিকেল থাকার কথা। কেন থাকে এরা সেই নিয়ে অন্য পর্বে লিখব ক্ষণ – শুধু জেনে রাখুন বাজারে নিকেলের দাম বেশ ওঠানামা করে, তাই অনেকেই কম নিকেল দিয়ে কাজ চালায়। আর এটাও একটু মনে রাখবেন যে স্টিলকে ‘স্টেনলেস’ হতে হলে তাতে অন্তত ১২% ক্রোমিয়াম থাকতেই হবে।



    ধাতু ক্ষয় এর জন্য কি কি উপাদান চাই সেটা বোঝাবার জন্য সহজ ভাবে আমরা উদারহণ দিই ‘ফায়ার ট্রায়াঙ্গেল’ এর। আগুন জ্বলবার জন্য তিনটি উপাদান চাইই চাই – ১) জ্বালানি, ২) এনার্জি বা আগুন জ্বালাবার জন্য শক্তি, এবং ৩) অক্সিজেন। এই তিনটি উপাদানের কোন একটাকে সরিয়ে নিলেই আগুনের পক্ষে আর জ্বলা সম্ভব হবে না। খুব সহজ উদাহরণ, রান্না ঘরে যে ফায়ার ব্ল্যাঙ্কেট রাখা থাকে তা কাজ করে আগুন লাগা জায়গার থেকে অক্সিজেন অবলুপ্ত করে দেবার জন্য। গ্যাস সিলিন্ডারে আগুন নেভাবার জন্য আমরা জ্বালানির সরাবরাহ বন্ধ করি। বাকি অনেক উদাহরণ আপনারা নিজেরাই বের করতে পারবেন।



    ক্ষয়ের ক্ষেত্রে তিন মূল উপাদান হল – ১) ধাতু, ২) জল, ৩) ক্ষয়কারী জিনিস। নীচের ছবিটা একবার দেখে নিন। এই তিনটের যেকোন একটা সরিয়ে নিলেই আর ক্ষয় হবে না! বললে বিশ্বাস করবেন কিনা জানি না – এই পৃথিবীর যত কিছু ক্ষয়রোধ কারী উদ্ভাবনী ব্যবস্থা আছে তারা সবাই এই অত্যন্ত সোজা ব্যাপারটির উপর নির্ভর করে চলে। আর এবার নিশ্চয়ই আরো একটা জিনিস ক্লিয়ার হয়ে গেছে আমি কিভাবে করে কম্মে খাই! বিষয় এর থেকে জটিল হলে বলাই বাহুল্য আমার পক্ষে করে-কম্মে খাওয়া সম্ভব হত না!





    তবুও – তবুও কিছু একটা হালকা হলেও জটিলতা তো রাখতেই হবে সবার কথা মাথায় রেখে! দিলওয়ালে দুলহনীয়া লে জায়েঙ্গে তেও অমরেশ পুরীকে রাখতে হয়। ইন্ডাষ্টিতে বা কলকারখানায় মূল সমস্যা হল আপনি ওই উল্লিখিত তিনটি জিনিসের যাকে নিয়েই টানাটানি করতে যান, টাকা পয়সার ব্যাপার চলে আসবে। আর আসবে বাস্তবতা। ধরুণ, আমরা মূল সমস্যা থেকে তো কোন দিনই ধাতুকে সরাতে পারব না! ধাতু ছাড়া জিনিস পত্র বানাবো কি দিয়ে! তাহলে বাকি রইল জল এবং ক্ষয়কারী জিনিস জিনিস নিয়ে খেলাধূলা করা।



    তবে ধাতুকে পুরোপুরি সরাতে না পারলেও এমন তো কিছু করতেই পারেন যাতে সেই ধাতু তাড়াতাড়ি ক্ষইবে না! আগেই তো দেখেছেন যে স্টেনলেস স্টিল অনেক অনেক কম ক্ষয় হয় কার্বন স্টিল (মানে ইস্পাত) এর থেকে। তাহলে সব কিছু আমরা স্টেনলেস স্টিল দিয়ে বানাই না কেন! প্রথমত স্টেনলেস স্টীল সাধারণ ইস্পাতের থেকে প্রায় পাঁচ থেকে ছয় গুণ দামি। ছোট খাট ভেসেল বা ইনস্ট্রুমেন্ট স্টেনলেস স্টিল দিয়ে বানানো গেলেও যদি ভারতের এক প্রান্ত থেকে অন্য প্রান্ত যে পাইপ লাইন গুলো গেছে সেগুলো স্টেনলেস স্টিলের বানাতে হলে কোম্পানী দেউলিয়া হয়ে যাবে! সেটা জাষ্ট ইকোনেমিক্যাল নয়! এছাড়াও আরো অনেক সমস্যা থেকে – যেমন স্টেনলেস স্টিলের শক্তি ইস্পাতের থেকে অনেক কম – তাই পয়সা থাকলেও অনেক সময় আপনি ইস্পাত ছাড়া অন্য কিছু ব্যবহার করতে পারবে না। অনেক সময় হালকা ধাতুর দরকার হয় – যেমন উড়োজাহাজে এই জন্য অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করা হয় – ইত্যাদি ইত্যাদি।



    দেখা গেল তাহলে যে ধাতু নিয়ে আমরা কিছু এদিক ওদিক করতে পারি। আর ইস্পাতের মধ্যে এটা সেটা মিশিয়ে আমরা আরো বেশী ক্ষয়রোধকারী ধাতু বানিয়ে তুলি। আগে একদিন মনে হয় বলেছিলাম যে সংকর ধাতু তৈরী অনেকটা রান্না করার মত – এটা সেটা মশালা মিশেয়ে বানানো হচ্ছে তরকারী। লোহার সাথে যে প্রধান পদার্থ  গুলি মিশেয়ে ক্ষয় রোধকারী ধাতু বানানো হয় তারা হল – ক্রোমিয়াম, নিকেল, মলিবডেনাম, ভ্যানাডিয়াম, টাঙস্টেন ইত্যাদি। যত গুড় দেবেন তত মিষ্টী – আর তার দাম তত বেশী। কিছু অধাতুও মেশানো হয় তরকারীতে যারা দেখা গেছে অনেক সময় ক্ষয় রোধকারী ক্ষমতা বাড়ায়। তেমন এক মৌল হল নাইট্রোজেন। আর দিল্লী স্তম্ভের ক্ষেত্রে দেখা গিয়েছিল যে ফসফরাস থাকার ফলে তার ক্ষয়রোধী ক্ষমতা অনেক বেড়ে গিয়েছিল।



    তবে এর মধ্যেও অনেক ব্যালেন্সের ব্যাপার আছে – শুধু ধাতু পিন্ড ফার্ণেসে বানালেই তো হবে না! সেই ধাতু দিয়ে যদি কিছু জিনিসপত্র বানানোই না গেল, তাহলে আর কি হবে! ফলে ভঙ্গুরতা একটা গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর হয়ে দেখা দেয়। পিটিয়ে-পাটিয়ে যেন যা চাইছি তেমন আকার দেওয়া যায়! এই যে এটা সেটা যোগ করা হয় সংকর ধাতু তৈরীর করার সময়, এদের অনেকের আবার পরিবেশের অক্সিজেনের প্রতি বিশাল টান থাকে! এই টান থেকে কিছু একটা অক্সাইড বানিয়ে ফেলে এরা নিজেরাই সেই সংকর ধাতুর একেবারে স্তরে – তাবলে এরা কিন্তু পেন্টিং বা কোটিং এর মত নয়! খালি চোখে দেখার প্রশ্নই নেই – একদম ন্যানোমিটার (২৫-৫০ ন্যানোমিটার) লেভেলের হয়ে থাকে। যেমন স্টেনলেস স্টিলে ক্রোমিয়াম বাতাসের অক্সিজেনের সাথে বিক্রিয়া করে ক্রোমিয়াম অক্সাইড এর একটা লেয়ার বানিয়ে দেয় একদম উপরে। এই ক্রোমিয়াম অক্সাইড লেয়ারের জন্যই স্টেনলেস স্টিল হচ্ছে গিয়ে স্টেনলেস। একই ভাবে অ্যালুমিনিয়ামের উপরে তৈরী হয় অ্যালুমিনিয়াম অক্সাইড যা কিনা pH চার থেকে সাতের মধ্যে খুব স্টেবল। তাই বাড়িতে খুব বেশী অ্যাসিড জাতীয় বা ক্ষার জাতীয় জিনিস অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে খাবেন না। এই যে অক্সাইড লেয়ারগুলোর কথা বলছি এদের একটা বিউটি হল, এরা ড্যামেজ হয়ে গেলেও অক্সিজেনের সংস্পর্শে এলেই খুব খুব তাড়াতাড়ি নিজেদের সারিয়ে নেয়!



    আচ্ছা এত জিনিস ভাঁটিয়ে এবার দিল্লীর লৌহস্তম্ভে ফিরে আসা যাক। ক্ষয় নিয়ে ব্যাকগ্রাউন্ড তৈরী হল এতক্ষণে।  উপরের লেখা পড়ে এবার আপনি নিশ্চয়ই বুঝতে পেরে গেছেন যে ওই লৌহ স্তম্ভ কেন ক্ষইছে না তা খুঁজতে গেলে কি কি জিনিস টার্গেট করবে গবেষকরা? প্রথম ধারণা করা হবে যে আবহাওয়ার একটা ব্যাপারটা আছে। মানে যেখানে এই স্তম্ভ খাড়া ছিল আগে এবং এখন দিল্লিতে, সেখানে বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা কি স্তম্ভের জন্য ভালো ছিল? অর্থাৎ বাতাসে জলীয় বাষ্প বেশী নেই – শুকনো বাতাস! যেই কারণে দীঘার হোটেলের বারান্দার গ্রীল কলকাতার হোটেলের গ্রীলের থেকে অনেক বেশী তাড়াতাড়ি ক্ষয়। দ্বিতীয়ত, সেই প্রায় ষোলশো বছর আগে যারা বানিয়েছিল ওই স্তম্ভ তারা কি ধাতুর সাথে অন্য কিছু স্পেশাল মিশিয়েছিল? তৃতীয়ত, ধাতুর সাথে বানাবার সময় কিছু না মেশালেও পরে কি স্তম্ভকে সুরক্ষা দেবার জন্য তাতে কিছু্র প্রলেপ বুলিয়েছিল? ইত্যাদি ইত্যাদি।



    দিল্লীর লৌহ স্তম্ভ যে লোহার সেটা নিয়ে আমরা আগেই আলোচনা করেছি। কি পদ্ধতিতে বানানো হয়েছিল বলে মনে করা হয় সেটা নিয়েও আলোচনা করেছি আগের পর্বে। লোহা ক্ষইলে তা থাকে মরিচা, যা কিনা এক প্রকার আয়রন অক্সাইড সেটাও আমাদের জানা – অবশ্য নানা প্রকার অক্সাইডের মিশ্রণ হতে পারে। দিল্লীর লৌহস্থম্ভের লোহায় ফরফরাসের গড়পড়তা পরিমাণ বেশী আছে আছে সেটাও জানা হয়ে গেছে এতদিনে বিজ্ঞানীদের। তো এই সব মিলিয়ে নীচের থিওরীগুলো খাড়া করা হয় দিল্লীর লৌহ স্তম্ভের বিষ্ময়কর ক্ষয়রোধকারী ক্ষমতার সম্ভাব্য কারণ হিসাবে। এখানে মনে রাখা স্মরণীয় যে কেবলমাত্র ‘একটি’ বিশেষ কারণের জন্য লৌহস্তম্ভ ক্ষইছে না এমনটা নয়। কম-বেশী কয়েক্টা কারণের অবদান আছে। আর একটা কথা এমন কোন প্রমান পাওয়া যায় নি যে তখনকার দিনের কারিগরেরা জেনেশুনে বিজ্ঞান সম্মত ব্যাখা সহযোগে এই স্তম্ভ বানিয়েছিলেন। হয়ত তাদের সামনে ব্যবহারিক উদাহরণ ছিল, সেটা তাঁরা দেখেছিলেন – কিন্তু কেন হচ্ছে এই ব্যাখা তাঁরা জানতেন বলে কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি।



    ১) বোভার-ব্রাফ পদ্ধতি



    দিল্লীর লৌহস্তম্ভের ব্যাপারে এই থিওরীটি বাজারে চালু করেন রোজেনস্টাইন – কিন্তু পরীক্ষালব্ধ প্রমাণ কিছু দিতে পারেন নি তিনি। এই পদ্ধতিতে একদম লাল তপ্ত লোহার উপর দিয়ে স্টিম বাষ্প প্রয়োগ করা হয় – আর তার ফলে তৈরী হয় ম্যাগনেটাইট (Fe3O4) খুব সুন্দরভাবে, আমাদের যে লাল মরিচা দেখি সেটাতে পরিবর্তিত না হয়ে। দিল্লীর লৌহ স্তম্ভ তৈরী করার সময় নাকি কারিগরেরা এই পদ্ধতির সাহায্য গ্রহণ করেছিলেন। অন্য কোন প্রমাণ পাওয়া যায় নি – কিন্তু তবুও অনেকে এখনো এটা বিশ্বাস করেন।



    ২) লৌহস্তম্ভের লোহার ঘনত্ব ও বিশুদ্ধতা



    অনেক গবেষক বিশ্বাস করতেন যে লৌহস্তম্ভের লোহার ঘনত্ব ও বিশুদ্ধতা থেকেই নাকি এর বেশী ক্ষয় রোধক ক্ষমতার জন্ম। পরে যখন লৌহস্তম্ভের লোহায় ফসফরাসের উপস্থিতি এবং স্ল্যাগ ইনক্ল্যুশন আবিষ্কার হল তখন এই থিওরী ভ্রান্ত বলে সাইডলাইনে চলে গেল।



    ৩) লৌহস্তম্ভে তেল মালিশ



    বহুকাল আগে এই থিওরী বাজারে এনেছিল ইতিহাসবিদ এবং প্রত্নতত্ত্ববিদরা। উদয়গিরিতে হিন্দু মন্দিরে যখন এই লৌহ স্তম্ভটি ছিল, তখন নাকি এই স্তম্ভের গায়ে নিয়মিত তেলমালিশ হত! আর এই তেল মালিশের ফলে নাকি স্তম্ভের লোহার গায়ে ক্ষয়রোধী এক স্তরের জন্ম হয়েছিল। পরে যখন দিল্লীতে মুসলিম সুলতান এক মসজিদের প্রাঙ্গণে এই স্তম্ভ খাড়া করলেই তখন থেকে তেল মালিশের ব্যাপার হাওয়া হয়ে গেল। এই থিওরী খুব একটা কনভিন্সিং না মনে হবার কারণ হল স্তম্ভের উচ্চতা। এই সাত মিটার উঁচু স্তম্ভে চড়ে কে রোজ তেলমালিশ করবে? আর স্তম্ভে উপরের ভাগে যে অন্য কোন ভাবে চড়া হত তার প্রমাণও পাওয়া যায় নি।



    ৪) বাতাসের আপেক্ষিক আর্দ্রতা



    এটা আজকের দিনে পরীক্ষার দ্বারা প্রমাণিত হয়েছে যে লোহার আবহওয়া জনিত মরিচা ধরার প্রকোপ কমে যায় যদি বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৭০% এর কম হয়। বহু বছর ধরে দিল্লীর আবহওয়ার রেকর্ড বিবেচনা করে দেখা গেছে যে বছরের বেশীর ভাগ সময়েই দিল্লীতে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ ৭০% এর কম থাকে। তাহলে এই কারণে ক্ষয় কিছু কম হলেও হতে পারে। কিন্তু দিল্লীতে আসার আগে আরো কয়েকশো বছর ধরে এই স্তম্ভ উদয়গিরিতে ছিল। সেখানকার আবহাওয়া কেমন ছিল তখনকার দিনে সেই নিয়ে আরো বিস্তারে গবেষণার অবকাশ আছে।



    ৫) লৌহস্তম্ভের লোহাতে ফসফরাসের আধিক্য



    লৌহস্তম্ভের লোহার প্রথম বিশ্লেষণ করেন হ্যাডফিল্ড সাহেব সেই কোন ১৯১২ সালে! তার পরেও নানা গবেষক সেই লোহা নিয়ে নাড়াঘাঁটা করেছিলেন। মোটামুটি সবাই ফসফরাসের পরিমাণ ০.১৫-০.২৫% মত বের করেছিলেন – যা প্রচলিত আধুনিক লোহাতে থাকা ফসফরাসের তুলনায় বেশ বেশী। শুধু দিল্লীর লৌহস্তম্ভের লোহাতেই নয়, সেই সময়ের প্রাচীন ভারতে পাওয়া অন্য লোহাতেও ফসফরাসের পরিমাণ বেশি পাওয়া যায়। এই বেশী পরিমাণ ফসফরাস থাকার মূল কারণ হিসাবে মনে করা হয় তখনকার দিনে ভারতে লোহা নিষ্কাষণের পদ্ধতিকে। আজকের দিনের আধুনিক ব্লাষ্ট ফার্ণেসের মত তখনকার দিনে লোহা নিষ্কাষণের সময় চুন যোগ করা হত না। এর কারণে যে ‘স্ল্যাগ’ তৈরী হত নিষ্কাষণের সময় তাতে থাকত আয়রণ অর্থোসিলিকেট। আজকের দিনে আমাদের জানা আছে যে লোহাতে বেশী ফসফরাস ভালো নয় নানা কারণে, তাই ধাতু নিষ্কাষণের সময় আজকাল চুন দেওয়া হয় যা ফসফরাসকে ধাতু থেকে সহজে বের করতে সাহায্য করে।



    দিল্লী লৌহস্তম্ভের লোহাতে এই ফসফরাসের পরিমাণ বেশী থাকাকে ক্ষয়রোধী ক্ষমতার এক অন্যতম মূল কারণ মনে করা হয়। লৌহস্তম্ভের মরিচা বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে যে স্তম্ভের বাইরের ভাগে ফসফরাসের পরিমাণ ভিতরের দিকের থেকে বেশী। কেমন করে এই ফসফরাসের সমৃদ্ধি হল সেই নিয়ে প্রোফেসর বালার থিওরী আছে, যাদের ইচ্ছে দেখে নিতে পারেন। মূল কথা হল লৌহস্তম্ভের বাইরের ভাগে তৈরী হয়েছে কৃষ্টালাইন আয়রণ হাইড্রোজেন ফসফেট হাইড্রেট যা স্তম্ভকে ক্ষয়রোধী ক্ষমতা প্রদানের সাহায্য করছে। নীচের ছবিতে ব্যাপারটা একটু ভালো করে বোঝানো যাবে।





    এই খুব পাতলা স্তরটা তৈরী হয় লোহা আর লোহার অক্সাইডের সংযোগস্থলে। এবং এটাও মনে করা হয় যে, দিল্লীর বর্তমান আবহাওয়া, অর্থাৎ কখনো শুকনো এবং কখনো ভিজে – এই ব্যাপারটা নাকি ওই ফসফেট হাইড্রেট স্তরটিকে ভালো ভাবে তৈরী হতে সাহায্য করে।         



    দিল্লীর লৌহ স্তম্ভের গল্প এখানেই শেষ – পাঁচ নম্বর থিওরীই এখন মোটামুটি সর্বজনস্বীকৃত। তাই আপনাকেও কেউ জিজ্ঞেস করলে এটাই বলতে পারেন J     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    পর্ব ১ | পর্ব ২ | পর্ব ৩
  • আলোচনা | ১১ অক্টোবর ২০২০ | ২৮৬১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুকি | 49.207.218.224 | ১১ অক্টোবর ২০২০ ১৬:২৭98277
  • আপাতত লম্বা ছুটি - 


    অনেক দিন ধরে বি-দা, গবু আর কয়েকজন লৌহ স্তম্ভের লেখাটা শেষ করার জন্য অনুরোধ জানিয়েছিলেন। তাই নিজে একটু চাপ নিয়ে ফেললাম দু-দিন :)  

  • মেঘ | 103.77.46.53 | ১১ অক্টোবর ২০২০ ১৮:৫২98282
  • সুন্দর। 

  • দেবরাজ গোস্বামী | 2402:3a80:131a:5c9d:6ba:7d91:dcff:cb7b | ১১ অক্টোবর ২০২০ ১৯:০৮98284
  • যাক জানা গেলো ফসফরাসের ব্যাপারটা। কিন্তু প্রশ্ন হচ্ছে আপনি যে বললেন বেশি ফসফরাস লোহার জন্য ভালো নয় তাই আধুনিক কালে চুন ব্যবহার করে লোহায় ফসফরাস কমিয়ে দেয়া হয় এর কারণ টা কি। ফসফরাস যদি ক্ষয় রোধ করতে সাহায্য করে তাহলে থাকাই তো ভালো। 

  • সুকি | 49.207.218.224 | ১১ অক্টোবর ২০২০ ২০:৪৫98292
  • স্টিলে বেশী ফসফরাস থাকলে তার অনেক প্রবলেম আছে। আগে কার দিনের ওই স্টিল দিয়ে আজকালকার দিনের যন্ত্রপাতি স্ট্রাকচার ইত্যাদি বানানো সম্ভব নয়। কারণ পুরানো স্টিলের ম্যানুফ্রাকচারাবেলিটি খুব একটা সুবিধের নয়। দিল্লী লৌহ স্তম্ভের লোহা দিয়ে স্তম্ভই ঠিক আছে। আজকের দিনের স্টিলের ওয়েল্ডিং না করা গেলে তার প্রয়োজন কমে যায় অনেক। আর ফসফরাস বেশী থাকলে ওয়েল্ডিং এ সমস্যা। ক্র‍্যাক করে যায় ইস্পাত 

  • একক | ১১ অক্টোবর ২০২০ ২১:০৮98293
  • আমিও অপেক্ষায় ছিলুম। গুছিয়ে শেষ  করার জন্যে ধন্যবাদ।  একবার  পড়লুম। আবার  পড়ব। 

  • রম্যানি | 2409:4065:102:9adf:15b:38b2:8e69:fc26 | ১১ অক্টোবর ২০২০ ২২:১৮98304
  • দারুণ লেখা। এক টানে পড়ে ফেললাম। আপনার লেখার হাত এমনিতেও অপূর্ব! অনেক জিনিস জানা গেলো

  • Ranjan Roy | ১১ অক্টোবর ২০২০ ২৩:৩৪98307
  • আমার বিজ্ঞানের কাঁড়-কাকুড় জ্ঞান নেই। শুধু সুকির লেখার টানে সবটা পড়ে ফেললাম। টেকনিক্যাল কথাবার্তা সবটা বুঝিনি। কিন্তু একটা আবছা ধারণা তো হয়েছে, বিশেষ করে কেন প্রাচীন পদ্ধতি আজকের প্রয়োজন মেটাতে পারেনা। অনেক ধন্যবাদ লেখককে।

  • Amit | 203.0.3.2 | ১২ অক্টোবর ২০২০ ০৪:০৫98312
  • দারুন হয়েছে লেখাটা সুকি। এরকম একটা খটমট সাবজেক্ট এতো সুন্দর করে সোজা ভাষায় লেখা -- সত্যি অসাধারণ। 

  • Rajkumar Raychaudhuri | ১২ অক্টোবর ২০২০ ০৭:৩৯98315
  • পড়লাম। ভাল লেগেছে। তবে সেহেতু ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্র, তাই হিট ট্রিটমেন্,  গ্রেইন স্ট্রাকচার নিয়ে আরেকটু বিশ্লেষণ হলে  মনে হয় লেখাটা পরিপূর্ণতা পেত।  তবে লেখাটায় একটা  টান আছে

  • b | 14.139.196.11 | ১২ অক্টোবর ২০২০ ০৭:৫৫98316
  • বেশ বেশ। অনেক ধন্যবাদ সুকি। পুরোটা আবার ভালো করে পড়তে হবে।


    ক্রোমিয়াম-্নিকেলের কথাটা মাথায় রাখবো। তবে এই মার্কা যে থাকে সেটাই জানা ছেলো না। 


    (আর ইয়ে,  বৈদ্যরাজ ডি কে লোধও মনে হয় ধাতুক্ষয়ের চিকিৎসা করেন। )। 

  • অরিন | ১২ অক্টোবর ২০২০ ০৯:০২98321
  • দারুন ভাল  লেখা । ছবিগুলো খুব ভালো এঁকেছেন!

  • সুকি | 165.225.106.99 | ১৩ অক্টোবর ২০২০ ১১:৪২98394
  • মেঘ, দেবরাজ, একক, রম্যনি, রঞ্জনদা, অমিতাভদা, রাজকুমার, বি-দা, অরিন-দা এবং আরো যারা পড়লেন সবাইকে ধন্যবাদ।


    রাজকুমার, হ্যাঁ হিট ট্রিটমেন্ট বা গ্রেন স্ট্রাকচার নিয়ে লিখলে তো ভালোই হত। কিন্তু তাতে করে লেখা অনেক বড় হয়ে যাবে আর ফোকাসও ঠিক রাখা যাবে না। তাই বিস্তারে ঢুকি নি - পরে একদিন এই সব নিয়ে লিখব আলাদা করে।


    বি-দা - ডাঃ লোধের কেস তো আমি লিখেছিলাম "নিমো গ্রামের গল্প" - তে :)


    অরিনদা - ছবিগুলো ঠিক আমার আঁকা নয়, আমার কলিগের। তবে এগুলো বেশ জেনারেল বলে আলাদা করে পদাটিকা দেওয়া হয় নি । 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে মতামত দিন