এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  গপ্পো

  • গল্প | বিপ্রতীপ

    তারেক নূরুল হাসান লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১৮৪৭ বার পঠিত
  • ডান হাতটা এখনও পুরোপুরি জেগে ওঠেনি। ঘুমঘোরেই সেটা আলগোছে ধরে আছে ধূসর রঙের একটা টুথব্রাশ। এক ফালি নীল টুথপেস্ট তার ব্রিসলে লেপ্টে আছে কেমন একটা চিৎকারের মতন যেন। এই সকাল বেলায় সেই নীলাভ ধূসরকে সন্তর্পনে মুখের কাছে তুলে আনতে আনতে হঠাৎ আয়নায় বাবাকে দেখতে পেয়ে একেবারে চমকে গেল শাহেদ!  

    নাহ, পেছনে কেউ নেই। সকালের অলস বাথরুমে সে একাই দাঁড়িয়ে আছে। 

    একটা বিস্বাদ অনুভূতি কেমন করে যেন মুখের ভেতরে ঢুকে গেল ওর। আর অবাক ব্যাপার, সেই সাথে তিতকুটে একটা গন্ধও যেন আছে সেই অনুভূতির। ছোট্ট একটা দীর্ঘশ্বাস ফেলে সে আয়নায় ভেসে ওঠা কমবয়েসি ফারুক আহমেদের দিকে ভুরু কুঁচকে তাকিয়ে রইলো কয়েক মুহুর্ত। চোখে অনেকখানি বিরক্তি। 

    টুথব্রাশটা বেসিনের এক পাশে নামিয়ে রেখে শাহেদ এবারে সোজা হয়ে দাঁড়ালো। কোথাও কি একটা কিছু অমিল ঘটিয়ে দেয়া যায় না? চেষ্টা করেই দেখা যাক। 

    হাতের মুঠোয় এক আঁজলা পানি নিয়ে ও সবার আগে আক্রমণ করলো মাথার চুলে, এরাই সম্ভবত সবচেয়ে বড় কালপ্রিট। ভেজা আঙুল চালিয়ে বাঁকা চুলগুলোকে সোজা করে ফেলার চেষ্টা করলো কিছুক্ষণ। উঁহু, কাজ হচ্ছে না তেমন। তবু হাল ছেড়ে না দিয়ে মুখে খানিকটা কাঠিন্য নিয়ে আসার চেষ্টা করে সে। তা-ও হলো না। ঠিক আছে। এবারে চোখ দুটো একবার ছোট করে দেখল, তারপরে আবার বড়। না, কাজ হচ্ছে না আসলে কোনো কিছুতেই। হঠাৎ খুব দ্রুত বেগে অল্প গরম পানিতে মুখ ভালো করে ধুয়ে নিল বেশ কয়েকবার। বেসিনের পাশে ঝুলিয়ে রাখা কড়কড়ে শুকনো টাওয়েল দিয়ে খুব করে মুখ মুছে নিয়ে আবার আয়নায় তাকিয়ে শাহেদ দেখে, এত কিছুর পরেও ওর সারা মুখ জুড়ে কোথাও খুব অস্বস্তিকরভাবে বাবা লেপটে আছে। 

    শাহেদ হতাশ হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো কিছুক্ষণ। 

    দরজার বাইরে হঠাৎ কীসের যেন একটা শব্দ হলো তখনই; ও কান খাড়া করে শোনার চেষ্টা করলো সেটা। 

    বেলা এগারোটা বাজে এখন, এই মুহুর্তে বাসায় কোথাও শব্দ হবার কথা নয়। মা প্রতিদিন সকাল আটটার ঠিক আগে আগেই অফিসের জন্যে বের হয়ে যান। তারপরে বাসায় থাকে শুধু শাহেদ, একা। মা কি আজ বাসায়ই আছে তাহলে, বেরোননি? 

    শাহেদ এখনো নিশ্চল দাঁড়িয়ে আছে। 

    শব্দ পাওয়া যাচ্ছে না আর, সম্ভবত ভুল শুনেছে সে। মা খুব সহজে অফিস মিস করেন না, কোনো কারণ না থাকলে। আবার পানির কল ছেড়ে দিলো ও। 

    আয়নায় শেষবারের মত একবার তাকিয়ে লম্বা একটা শ্বাস ফেলে ও আপনমনে ভাবল, আজকের দিনটা খুব বিচ্ছিরি একটা দিন হতে যাচ্ছে ওর জন্যে। দুপুরের দিকে ওর আজ হোটেল র‍্যাডিসনে যাবার কথা আছে। ওর বাবা ফারুক আহমেদের সঙ্গে  দেখা করতে। আর থাকবেন বাবার স্ত্রী মিসেস আয়েশা ফারুক। 

    ***

    শাহেদের বাবা মা আলাদা হয়ে গেছেন অনেক বছর হলো। ওর ঠিকমত মনেও নেই কত আগে সেটা ঘটেছিলো। খুব ছোট ছিল, সম্ভবত টু-তে পড়ত সে তখন। 

    মাঝে মাঝে খুব শান্ত কোনো একটা দিঘীর গভীর সবুজ জলে ডুব দেবার মত করে ও শুধু মনে করতে পারে সেই শিশুবেলার একটা ছবি, যেখানে লাল একটা শার্ট পরে ও বাবা আর মা দু'জনের মধ্যিখানে হাসিমুখে বসে আছে। মায়ের চুল টেনে বাঁধা পেছন দিকে, কালো গোঁফের সাথে মিল রেখেই যেন বাবার চোখে একটা কালো রোদ-চশমা। আর ওদের তিনজনের মুখেই একটা লুকোনো আনন্দ ছড়ানো ছিল ছবিটায়। 

    কিন্তু সেই ছবির পরে, শাহেদের স্মৃতির কোথাও আর বাবার অস্তিত্ব নেই তেমন করে। যতদূর মনে করতে পারে, ওর জগতের সবটা জুড়ে কেবলই ওর মা, সারা মন আর শরীরে সুর্যের মতন আলো মেখে ওর হাত ধরে দাঁড়িয়ে আছেন তিনি। 

    ছেলেবেলার পরে একটা লম্বা সময় পার হয়ে কয়েক বছর আগে একদম হঠাৎ করেই ওর জীবনে আবার বাবার আবির্ভাব ঘটেছিলো। তার আগে পর্যন্ত ওরা মায়ে-ছেলেয় দু'জনে মিলে খুব সহজ কিন্তু অসম্ভব সুন্দর একটা জীবন পার করে দিচ্ছিল। 

    শাহেদ নাইনে উঠেছে কেবল তখন। সায়েন্স নিয়ে পড়ছে। ওর খুব কাছের বন্ধু সজল, যার মধ্যে কবি-ভাব প্রবল, সে একদিন শাহেদকে ধরে খুব সুন্দর যুক্তি দিয়ে বুঝিয়ে দিলো, সাহিত্যপ্রেমী শাহেদের কেন সায়েন্স বাদ দিয়ে আর্টস নিয়ে পড়া উচিৎ। আর্টসের সপক্ষে কয়েকটা সায়েন্টিফিক ইকুয়েশানও হাজির করেছিল সে। সজলের কথায় শাহেদ পুরোপুরি কনভিন্সড, মোটামুটি মন ঠিক করে ফেলেছে, ওর স্যারকে বলে গ্রুপ বদলে ফেলবে কালই। কিন্তু মা কি রাজি হবে? 

    সেদিন স্কুলের বাকি সময়টা এই ব্যাপার নিয়ে ভাবতে ভাবতে শাহেদ বাড়ি ফিরে দেখেছিল, ওদের বসার ঘরে খুব লম্বামতন একটা লোক মুখে আধো আধো হাসি নিয়ে বসে আছে মায়ের সামনে। 

    মা খুব সহজ ভঙ্গিতে পরিচয় করিয়ে দিয়েছিলেন তাঁদের, 'উনি তোর বড় চাচা।'  

    শাহেদ আজ সকালের আয়না দেখার মত করেই চমকে গিয়েছিলো সেদিনও। 

    সেদিনের আগে ওর দাদার বাড়ির কারো সাথে কোনো যোগাযোগ ছিল না ওর অথবা মায়ের। তাতে তেমন করে কোনো সমস্যা হয়নি ওদের কারো। শুধু একবার, ও তখনো ছোট, মা-কে একদম নিছক কারণ ছাড়াই ও জিজ্ঞেস করেছিলো, ওর দাদাবাড়ির কেউ কেন ওকে দেখতে আসে না। ও যেন একটা বড় মানুষ, মা ঠিক তেমনি করেই ওকে উত্তর দিয়েছিল, 'তা তো জানি না রে। আমি কখনও মানা করিনি ওদের। হয়তো ওদেরই ইচ্ছে করে না।' 

    শাহেদের তেমন কোনো দুঃখবোধ আসেনি শুনে। শুধু বুঝেছিল, ওর জীবনের এই দরজাটা তালাবন্ধ হয়ে থাকবে হয়তো সবসময়। 

    স্কুল থেকে ফিরে সেদিন তাই বড় চাচাকে দেখে ওর মনে হয়েছিলো, একজন চাবিওয়ালা যেন। আর সত্যিই উনি এসে ওর দাদাবাড়ির সাথে যোগাযোগের বন্ধ দরজা হঠাৎ করে খুলে দিয়েছিলেন। 

    বড় চাচা খবর এনেছিলেন, ওর বাবা দেশে আসবেন পরের মাসে। প্রায় সাত বছর পরে প্রথম। শাহেদকে দেখতে চেয়েছেন তিনি। তাই চাচা এসেছিলেন বাবার বার্তাবাহক হয়ে। 

    চাচা-র অসহজ বসার ভঙ্গির কারণ বুঝতে পেরেছিল সে তখন। একই সাথে এই হঠাৎ সংবাদের ধাক্কা সামলে নিতে কিছুটা হাবুডুবু খাচ্ছিল সে। 

    বাবা নামটা বহু আগের কোনো স্টিমারের ধোঁয়ার অন্য পাশের ঝাপসা হয়ে যাওয়া কোনো দূর ফেরিঘাট ছাড়া আর কিছু নয় তখন তার কাছে। 

    মায়ের কাছে আর্জি রেখে বড় চাচা বিদায় নিয়েছিলেন সেদিনের মত। 

    শাহেদ তেমন কোনো অনুভূতি টের পাচ্ছিল না। বড় চাচা-র সাথে দেখা হওয়াটাই একটা হঠাৎ ঝড়ের মত ব্যাপার ওর জীবনে। বাবার সাথে দেখা হওয়ার সম্ভাবনার ওজন ও তখনও ধরতে পারছিল না।  

    বড় চাচা পরের মাসে যেদিন ওকে বাবার কাছে নিয়ে যেতে এসেছিলেন, শাহেদ সেদিন সকাল থেকে মা-কে দেখছিল কেবল চুপ করে। না, মা খুব বিষণ্ণ ছিলেন না। একটা ছুটির দিন ছিল সেটা। রোজকার মতনই সকালে উঠে মা নাস্তা বানিয়ে বসার ঘরে গা এলিয়ে বসে গান শুনছিলেন। অদিতি মোহসীন মন খারাপ করা কণ্ঠে গাইছিলেন, 'আমার ভুবন তো আজ হলো কাঙাল, কিছু তো নাই বাকি, ও গো নিঠুর, দেখতে পেলে তা কি?' 

    শাহেদ ওর ঘর থেকে বেরিয়ে এসে চুপ করে দাঁড়িয়ে ছিল সোফার পেছনে এসে। যে জায়গাটায় অদিতি গাইলেন, 'আমার আপন আঁধার আমার আঁখিরে দেয় ফাঁকি… ‘, শাহেদ ডেকে উঠলো, 'মা।'  

    মা খুব সহজ ভঙ্গিতে উঠে দাঁড়ালেন সোফা ছেড়ে। গান শেষ হলে পরে ওকে নাস্তা খেতে দিয়েছিলেন। এর মাঝেই বড় চাচাও এসে পড়লো। 

    বড় চাচা-র সঙ্গে বের হবার মুখে মা ওকে একবার শক্ত করে জড়িয়ে ধরেই ছেড়ে দিলেন আবার, মুখে বলেছিলেন, 'ঠিকঠাক ফিরে আসিস আমার কাছে।' 

    তা যে আসবে, সেই নিয়ে শাহেদের কোথাও কোনো সন্দেহ ছিল না। নিজের মনের সাথে কোনোদিন কোনো কথা না বলেও শাহেদ আপনাতেই সেটা জানে, বহুদিন হয়, জেনে গিয়েছিল।    

    মাত্রই তিন বছর আগের ঘটনা, তবু সেই প্রথম দিন বাবার সাথে ওর দেখা হবার ব্যাপারটা এখন শাহেদ আর ঠিকমত মনে করতে পারে না। ঝুম বৃষ্টির চাদরে মোড়ানো একটা ঝাপসা দিনের সাদা কালো অবয়বের মত মনের কোণে পড়ে আছে সেটা, খুব পরিষ্কার কোনো ছবি নেই কোথাও।  

    যখন শাহেদ আরও ছোট ছিল, ওদের স্কুলের অডিটরিয়ামে একবার প্রোজেক্টর বসিয়ে সিনেমা দেখানো হচ্ছিলো। সত্যজিতের জন্মদিন উপলক্ষে উঁচু ক্লাসের ছেলেরা উদ্যোগ নিয়েছিল সেই সিনেমা উৎসবের। দেখানো হয়েছিল 'গুপী গাইন আর বাঘা বাইন।' আর সেই সাথে 'পথের পাঁচালী।' গুপী গাইন বাঘা বাইন সবাই খুব আনন্দ নিয়ে দেখলো, হেসে কুটিপাটি প্রায় সকলেই। কিন্তু পরের সিনেমাটা দেখতে গিয়ে বেশ বেগ পেতে হয়েছিলো ওদের বেশিরভাগ ছাত্রের। স্কুলের ছেলেরা অনেক চেষ্টা করেও বুঝতে পারেনি রেলগাড়ি দেখার জন্যে এত পরিশ্রমের কী প্রয়োজন ছিল ওই ছোট্ট দুটি ছেলেমেয়ের। পুরো সিনেমায় শাহেদের শুধু মনে আছে রেলগাড়ির দেখার স্বপ্নে বিভোর দূর্গার চোখজোড়ার ছবি, কেমন জ্বলজ্বল করছিলো সে দুটো। 

    সাত বছর পরে সেদিন ওকে দেখতে পেয়ে বাবার চোখগুলোকে দূর্গার চোখের মতই জ্বলজ্বলে লাগছিলো ওর কাছে। 

    সেদিনও একটা বড় হোটেলের লবিতে ফারুক আহমেদ বসে ছিলেন ওর অপেক্ষায়। শাহেদের মনের ভেতরে রয়ে যাওয়া সেই পারিবারিক ছবিটার সাথে কেবল অল্প কিছু পাকা চুলের পার্থক্য ছিল চেহারায়। আর তেমন কিছু নয়। 

     বাবা বলেছিলেন, বছরে একবার তিনি আসার চেষ্টা করবেন দেশে, শাহেদ যেন দেখা করতে যায় তাঁর সাথে। 

    সেরকমই হয়ে এসেছে। 

    গত তিন বছর ধরে এটা তাই শাহেদের বাৎসরিক রুটিন। 

    এবছরও ঢাকায় আসার পরপরই শাহেদের সাথে নিয়ম-মাফিক যোগাযোগ করেছেন বাবা। দেখা করতে চান। 

    কিন্তু এবারে শাহেদের খুব একটা ইচ্ছে হচ্ছিল না তেমন। বড় চাচার কাছে শুনেছে ফারুক আহমেদ এবারে একা আসেননি। তাঁর সঙ্গে আয়েশাও এসেছেন। বড় চাচা বারবার করে নিশ্চিত করেছেন, আয়েশা অনেকবার করে জিজ্ঞেস করেছে শাহেদের কথা। দেখা হলে শাহেদেরও ভালো লাগবে। 

    খানিকটা ছন্দপতনের মত মনে হচ্ছিলো ওর কাছে। অনেক অস্বস্তিও। মনে হচ্ছিলো সাদা কালো ছবিটায় যেন হঠাৎ করে মরচে রঙের ছোঁয়া লাগিয়ে দিবে আয়েশা ফারুকের উপস্থিতি। 

    ও ভাবছিল এবারে দেখা করতে না গেলে কেমন হয়? কিছুটা সমর্থনের আশায়ই কয়েকদিন আগে মা-কে জিজ্ঞেস করেছিল, ‘মা, যাবো?’ 

    সেই মুহুর্তটায় মা ফ্রিজ খুলে একটা কিছু বের করছিলেন। শাহেদের প্রশ্ন শুনে একটু থমকে গিয়ে মুখ ঘুরিয়ে তাকিয়েছিলেন ছেলের দিকে। ভুরু দুটো সোনালি ডানার চিলের মত বাঁকা হয়ে ছিল অল্প বিরক্তিতে। মা জিজ্ঞেস করেছিলেন, ‘বয়স কত হলো তোর?’ 

    শাহেদ একটু ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে গিয়েছিলো প্রশ্ন শুনে। ঠিক কোন দিক থেকে আক্রমণ আসছে বুঝে নেবার চেষ্টা করছিলো। কিছু একটা বলবে বলে মুখ হা করেই আবার সেটা বুজে ফেললো। 

    মা তারপরে সোজা হয়ে বলেছিলেন, ‘সুতপার সঙ্গে দেখা করতে যাবার বেলায় প্রতিবারে আমাকে জিজ্ঞেস করিস?’ 

    শাহেদ নিশ্চুপ। শুধু মাথা নাড়লো দু’বার, ডানে বামে। 

    ফ্রিজের দরজা লাগিয়ে মা তাঁর নিজের ঘরে চলে গিয়েছিলেন তারপরে। 

    মা এমনই। কখনই খুব বেশি কথা বলার মানুষ নয় তিনি। যেখানে যতটুকু প্রয়োজন, তাঁর বাইরে কিছু বলাটা তাঁর কাছে ভীষণ অদরকারি। 

    মজার ছলে মাঝে মাঝে শাহেদ জিজ্ঞেস করে, ‘মা, এই যে তুমি কথা এত কম বলো, এই কথাগুলো জমিয়ে জমিয়ে তুমি কী করো? ব্যাংকে রেখে দাও?’ 

    মা নিঃশব্দে হাসেন তাঁর কথা শুনে। বলেন, ‘না তো, আমি সেগুলো দিয়ে কবিতা লিখে ফেলি। তোদের সাথে খামোকা কথা খরচ করলে আমার কবিতাগুলোয় শব্দ কমে পড়ে যাবে না বল?’ 

    মা-র লেখা কবিতার শাহেদ দারুণ ভক্ত। মা বলেই নয়, শাহেদ এমনিতেও খুব সিরিয়াস পাঠক। মায়ের কবিতার ভালো মন্দ সব নিয়েই বেশ উচ্চস্বরে নিজের মতামত অবলীলায় জানিয়ে দেয় সে। ‘ভোরের কাগজ’-এর  সাহিত্য পাতায় নিয়মিত ছাপা হয় মায়ের কবিতা। শাহেদ সেগুলো যত্ন করে কেটে একটা ফাইলের ভেতর জমিয়ে রাখছে অনেক দিন ধরে। কিছুদিন হলো মা-কে ও নিয়মিত তাগাদা দিয়ে যাচ্ছে একটা বই করার কথা বলে। মা-ও বেশ আগ্রহী আছেন বলে মনে হয়েছে ওর কাছে। 

    সুতপার প্রসঙ্গ হঠাৎ এমন করে টানায় শাহেদ একটু লজ্জা পেয়েছিলো সেদিন, কিন্তু মনে মনে আবার খুশিও হয়েছিলো। 

    কলেজে গিয়ে প্রথম কয়েক মাস ও খুব মন দিয়ে ক্লাস করেছে। ক্লাস টেন শেষ করে এসএসসি পরীক্ষার পরে ইলেভেনে ভর্তি হলো যখন, পড়ার চাপ এক লাফে অনেকখানি বেড়ে গেল। এই দুইয়ের হয়তো কোনো তুলনা চলে না; কিন্তু সত্যিই, এসএসসি পরীক্ষা দেবার সময় যখন মনে হয় এর চেয়ে কঠিন কিছুই আর নেই, ইলেভেনে প্রথম দুইমাস কাটানোর পরে আগের পড়াগুলোকে মনে হয় কত সহজ ছিল সবকিছু। 

    পড়ার চাপে প্রথম কিছুদিন শাহেদের আর কারো সাথে বন্ধুত্ব হয়ে ওঠেনি। স্কুল থেকে পাশ করে এক সাথে যারা এ কলেজে এসে ভর্তি হয়েছে, শুধু তাঁরাই। একেবারে পুরোদমে বয়েজ স্কুল থেকে হঠাৎ করে কো-এডুকেশনে ভর্তি হওয়াতে শুরুর দিকে মেয়েদের নিয়ে খানিকটা অস্বস্তি ছিল ঠিকই। তবে সেই অস্বস্তি কাটতে শাহেদের লেগেছিল ঠিক দু’মাস বারো দিন। কারণ তের দিনের মাথায়ই ওর সাথে সুতপার পরিচয় হয়। এবং মাস ঘুরতে না ঘুরতেই দেখা গেলো দু’জনে বেশ গলায় গলায় বন্ধু বনে গেছে। 

    ***

    আয়না থেকে চোখ ঘুরিয়ে নিয়ে অবশেষে বাথরুম থেকে বের হয়ে এলো সে। 

    বেরুবার জন্যে কাপড় বদলে তৈরি হতে হতে শাহেদ ভাবল, সুতপাকে একবার ফোন করে নিবে কিনা। আজ ক্লাস নেই ওদের কারো, সুতপা বাসায়ই আছে নিশ্চিত। গতকাল ওকে জানিয়েছে শাহেদ, আজ ও বাবার সাথে দেখা করতে যাচ্ছে। 

    কিন্তু ফোন করার পরে কেউ ধরল না ওই প্রান্তে। 

    শাহেদ আর অপেক্ষা না করে বের হয়ে গেলো হোটেলের উদ্দেশ্যে।

    রিকশায় করে আধা ঘণ্টার মত সময় লাগলো। হোটেলে পৌঁছে সামনের বিশাল দরজা দিয়ে ঢুকতে গিয়ে ওর চোখে পড়লো, এক বছরে ভেতরের সাজসজ্জা অনেকখানি বদলে গেছে এটার। এরকম বড় হোটেলগুলো সম্ভবত কোনো প্রয়োজন ছাড়াই কিছুদিন পর পর সজ্জা বদলায়। হয়তো চলতি ট্রেন্ডকে ধরে রাখতে হয় ওদেরকে সবসময়।  

    ভেতরে গিয়ে রিসিপশান থেকে ও জেনে নিলো কোন দিকের লিফটে উঠতে হবে তাকে। তারপর সেই লিফটের সামনে বোতাম চেপে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করতে লাগলো। 

    অপেক্ষার সময়টায় এদিক ওদিক তাকিয়ে শাহেদ দেখতে থাকে লবির সোফায় বসা অপেক্ষমাণ মানুষদের। বেশ কিছু বিদেশীকে দেখা গেল সেখানে। এই ঝকঝকে পরিচ্ছন্ন লবিতে তাঁদের একটুও বেমানান লাগলো না ওর কাছে। বরং মনে হলো, এই সোফার কোনো একটায় যদি এখন ওর মা বসে থাকতেন, সেই সাদা আর হাল্কা সবুজ জামদানি শাড়িটা পরে; মা-কে নির্ঘাত মানাতো না এখানে। 

    এই কথা ভেবে কেন জানি খুব শান্তি পেল মনে। 

    সামনের লিফটের দরজাও তক্ষুনি খুলে গেলে, দুতিনজন বিদেশির সঙ্গে একজন বাংলাদেশি ভদ্রলোকও বের হয়ে এলেন। শাহেদের মুখের উপর থেকে তাঁর দৃষ্টি সরে গিয়েই আবার থমকে দাঁড়ালো যেন। ভদ্রলোক একটু চোখ ছোট করে তাকালেন ওর দিকে, যেন ভালো করে দেখতে চাইছেন। 

    শাহেদের একটু অস্বস্তি হচ্ছিলো। 

    হঠাৎ তিনি হেসে পা বাড়িয়ে এসে দাঁড়ালেন ওর সামনে। বললেন, 'তুমি নিশ্চয়ই ফারুকের কাছে এসেছ তাই না?' 

    শাহেদ একটু অবাক হলো, মুখে কোনো কথা বললো না ও, শুধু মাথা দোলাল  একবার উপরে নীচে। 

    ভদলোকের মুখের হাসি এবারে আরও বিস্তৃত হলো, 'দেখেই বুঝেছি তোমাকে। আমি ওর বন্ধু জামান। যাও, উপরে যাও, তোমার কথাই হচ্ছিলো এতক্ষণ ওখানে।' 

    শাহেদ কী অভিব্যক্তি দিবে মুখে ঠিক বুঝতে পারছিলো না। তবে সম্ভবত কোনো  কিছুর প্রয়োজন নেই। লিফটের বন্ধ দরজায় নিজের প্রতিবিম্বের দিকে তাকিয়ে সকালের আয়নার কথা মনে পড়ে গেল ওর। 

    সপ্তম তলায় পৌঁছে লিফট থেকে বেরিয়ে ওর বাবার রুমের দিকে এগিয়ে যেতে যেতে শাহেদের মনে হলো, এই পথটুকু ও যেন হাজার বছর ধরে হেঁটে চলেছে, ঠিক সেরকম অবসন্নতা ওর পায়ে।   

    রুমের দরজায় হাতের আঙুল দিয়ে শব্দ করতেই দরজা খুলে দিলেন আয়েশা। খুব  স্নিগ্ধ চেহারার একজন মানুষ, সুন্দর করে হাসলেন তিনি শাহেদকে দেখে। 

    ঘরের মাঝামাঝি বড় আকারের একটা বিছানা, সেটার পায়ের দিকে দেয়ালের কাছে রাখা নীল রঙের সোফাটায় বসে আছেন ফারুক আহমেদ। 

    শাহেদ এগিয়ে গেলো বাবার দিকে। 

    কাছে গিয়ে ঠিক কোন জায়গাটায় বসবে, এই সিদ্ধান্ত মনে মনে নিতে গিয়ে শাহেদ টের পেলো, গত তিন বছরেও বাবার সাথে ওর সম্পর্ক আসলে সহজ হয়ে ওঠেনি এতদিনে। 

    বাবার পাশে বসে টুকটাক আলাপ চালাচ্ছিল সে। বাবা ওর সাথে অফিসিয়ালি পরিচয় করিয়ে দিলেন মিসেস আয়েশা ফারুকের। 

    বড় চাচার কাছে খবরটা জানার পর থেকেই সে এই মুহুর্তটার জন্যে মনে মনে অনেকদিন ধরে রিহার্সাল দিয়ে এসেছে। নাটকের দৃশ্যের মত করেই। বাবা কী বলবে, আয়েশার অভিব্যক্তি কী হবে, ওর প্রত্যুত্তর কী হবে। কিন্তু সব কিছু কেমন গুবলেট পাকিয়ে গেল আজ; রিহার্সাল কাজে আসলো না তেমন। শাহেদ একবার শুধু হেসে বাকি সময়টা চুপ করে বসে রইলো। 

    ফারুক আহমেদ এমনিতে মৃদুভাষী মানুষ। অল্প কথায় শাহেদের খোঁজ খবর নিয়ে নিলেন। ওর পড়ালেখার কী অবস্থা, নতুন কলেজে কেমন লাগছে, এইসব। 

    সামনের কফি টেবলের ওপরটা নানা রকম খাবারে ভরে আছে। কিছু চিপস, বিস্কিট। এক পাশে একটা ছোট ঝুড়িতে কিছু ফলও রাখা। 

    কথার ফাঁকে ফাঁকে আয়েশা তাকে অনেক কিছু সাধলেন খেতে। শাহেদ প্রায় সব কিছুতেই না না করে গেল। ওর আসলে খাবার তেমন ইচ্ছে নেই। আয়েশা তারপরেও জোর করতেই ও নেহাত অনিচ্ছায় ফলের ঝুড়ির দিকে হাত বাড়িয়ে দুটো আঙুর ছিঁড়ে নিল হাতে। 

    আয়েশা সাথে সাথে বলে উঠলেন, 'হু, শুধু যে দেখতে বাবার মত তাই না, খাওয়ার পছন্দও দেখি একই!' 

    এ কথা শুনে বাবা আর শাহেদ হঠাৎ করেই পরস্পরের দিকে মুখ ঘুরিয়ে তাকাল একবার, যেন চলতি পথে হঠাৎ করে দেখা হলো দু’জনের।

    ঘরে ঢোকার পরে এই প্রথম শাহেদ ভালো করে বাবার দিকে তাকিয়ে দেখে। চেহারায় গাম্ভীর্য পাকাপাকি জায়গা করে নিয়েছে তাঁর। পাকা চুলের সংখ্যা আরও বেশ কিছু বেড়েছে। চুলের সংখ্যা কমেছে কিছু, যদিও সিঁথির পাশ থেকে কপালের উপরে নেমে আসা ট্রেডমার্ক চুলের ঘূর্ণির তেমন কোনো পরিবর্তন আসেনি এত দিনেও। ভারি চশমার ওপাশ থেকে বড় বড় দু'টি চোখ থেকে অবশ্য রেলগাড়ি দেখার কৌতূহল হারিয়ে গেছে অনেক বছর আগে। 

    লাঞ্চের পরে ওদের কাছ থেকে বিদায় নিলো শাহেদ। হাতে ওর জন্যে আনা গিফটের একটা প্যাকেট। আয়েশা একেবারে লিফট পর্যন্ত এগিয়ে দিতে আসায় আগেরগুলোর চেয়ে এবারের বিদায় পর্ব খানিকটা নতুন ঠেকে ওর কাছে।

    হোটেল থেকে বের হয়ে রিকশা খুঁজে পেতে আবারও খানিকটা সময় লাগলো শাহেদের। বিকেলের ব্যস্ত জনস্রোতে বাড়ি ফেরার লোকেদের সংখ্যা অনেক। যতদূর দৃষ্টি যায় কোনো রিকশাই খালি নেই। ও হাঁটা শুরু করে দিল দাঁড়িয়ে না থেকে। বেশ খানিকক্ষণ হাঁটার পরে এই আকালের মাঝেই সামনের গলি থেকে হঠাৎ একটা খালি রিকশা বের হয়ে এলো। ধীর গতিতে সেটা পাশ দিয়ে চলে যাবার সময় ও চট করে তাতে উঠে বসলো। 

    মাথার ভেতরে অজস্র চিন্তা ভিড় করে আছে ওর। খানিকক্ষণ ঝিম ধরে বসে থেকে সেগুলো গোছানোর চেষ্টা করলো, তেমন কাজ হলো না। 

    প্রায় চারটা বেজে গেল শাহেদের বাসায় ফিরতে ফিরতে। মায়ের আসার সময় হয়ে যাবে একটু পরেই। 

    ওদের বাসার সামনের সরু গলি দিয়ে রিকশা ঢোকে না। গলির মুখেই ও রিকশা থেকে নেমে গেল।  

    ‘কত দিব মামা?’ আড়চোখে তাকিয়ে পকেট থেকে ওয়ালেট বের করতে করতে জিজ্ঞেস করে শাহেদ। 

    ‘ইনসাফ কইরা দিয়েন ভাই।’ রিকশাওয়ালা ঘাড়ের গামছা দিয়ে ঘাম মুছতে মুছতে বললো। 

    মাথায় টুপি পড়া সজ্জন চেহারা লোকটার। শাহেদ জানে, হয়তো বহুদূরের কোনো  গ্রামে তাঁর কয়েক কাঠা ধানী জমি আছে। এই গরমে সে জমিগুলো ধানের বদলে শুকনো ঘাসে ছেয়ে আছে, কোনো বোকাসোকা গরুও সেখানে চড়ে বেড়ায় না। হয়তো ঘরের উঠোনে ভেজা শাড়ি শুকিয়ে দিতে দিতে তাঁর বউ আনমনে কদম গাছের দিকে তাকায় বারে বারে। গত বর্ষায় হঠাৎ করে লোকটা একটা কদম ফুল পেড়ে চুলে গুঁজে দিয়েছিল তার।

    শাহেদ একটা গোপন দীর্ঘশ্বাস ফেলে। যতই ইনসাফের কথা বলুক, ভাড়া দিতে গেলেই এরা খেঁকিয়ে উঠে, বেইনসাফির পক্ষে সাফাই গাইতে হয় তখন যাত্রীদেরকে। 

    ‘বিশ টাকা রাখেন।' পঞ্চাশের নোট বাড়িয়ে ধরে একটু জোর গলায় বলে ওঠে শাহেদ। 

    গলার স্বর শুনে আনমনা লোকটা চমকে ওঠে একটু। তারপরে শাহেদকে অবাক করে দিয়ে আগে পকেট থেকে একথোক টাকা বের করে সেখান থেকে ত্রিশ টাকা আলাদা করে শাহেদের হাতে তুলে দেয় সে, এরপরে তাঁর হাত থেকে পঞ্চাশ টাকার নোটটা হাত বাড়িয়ে নিয়ে রিকশা টেনে চলে যায়। কোনো কথা বলে না আর। 

    শাহেদ একটু মন খারাপ করে দাঁড়িয়ে থাকে। 

    ভাড়া আসলে পঁচিশ টাকা হওয়া উচিত ছিল। বেইনসাফির সম্ভাবনার অগ্রিম আতংকে শাহেদ সত্যি সত্যি অন্যায় করে বসলো রিকশাওয়ালার সঙ্গে। মনের ভেতর একটা গাঢ় অস্বস্তি গুনগুন করতে থাকলো অনেকক্ষণ।

    মা ফেরেননি এখনো। 

    নিজের মধ্যে একটা অস্থিরতা টের পেল শাহেদ, মা আসবে কখন?   

    আজ সারাটা দিন খুব অদ্ভুত গেল আসলে ওর। বাইরে ঝকঝকে সুন্দর উজ্জ্বল একটা দিন, কিন্তু তবু যেন কোথাও না কোথাও গুমোট হয়ে জমে  আছে অনেকগুলো কালো মেঘের দল। 

    ঘণ্টাখানেক বাদে দরজায় বেলের শব্দ হতেই যেন সেই মেঘ কেটে গিয়ে হঠাৎ বৃষ্টি নেমে এলো ওর মনে। 

    শাহেদ ভীষণ খুশি হয়ে উঠলো মা-কে দেখে। 

    মায়ের মুখেও হাসি, ছেলেকে এটা সেটা জিজ্ঞেস করলেন তিনি, দিন কেমন গেল, খাওয়া হয়েছে কি না ঠিক মত। নানা কথার উত্তর দিতে দিতে শাহেদ হঠাৎ মা- কে বলে উঠলো, 'দেখো তো মা, সবাই খালি বলে আমি নাকি বাবার মতো হয়েছি! কেমনটা লাগে!'  

    মা তখন টেবলের উপরে রাখা ফুলগাছটায় দিবেন বলে পানিভর্তি একটা কাপ হাতে নিয়ে যাচ্ছিলেন সেদিকে, একবার শুধু মুহূর্তের জন্যে থামলেন। তারপরে শাহেদের দিকে না তাকিয়েই মৃদু স্বরে বললেন, 'সবাই বললে কিছু যায় আসে না। আমি বলছি, তুই একেবারেই তোর বাবার মত নোস।'  

    শাহেদ খুব খুশি হলো শুনে, 'তাই না, বলো?'  

    মা এবারে কিছুক্ষণ চুপ করে রইলেন। যেন কী বলবেন ছেলেকে খানিকটা গুছিয়ে  নিলেন মনে মনে। তারপরে শুধু বললেন, 'তুই তো আমাকে ভালবাসিস, বাসিস না?'  

    এ প্রশ্ন শুনে কী যে হলো, শাহেদ সোজা উঠে গিয়ে মা-র গলা জড়িয়ে ধরল পেছন থেকে। আদুরে গলায় বললো, 'অবশ্যই বাসি মা, পৃথিবীর সবচাইতে বেশি ভালবাসি তোমাকে!'  

    মা মৃদু হেসে হাত উঠিয়ে আঙুল বোলালেন শাহেদের মাথায়, সিঁথির পাশের চুলের ঘূর্ণিটা খানিকটা এলোমেলো হয়ে গেলো ওর তাতে। সেটুকু সোজা করে দিতে দিতে মা বললেন, 'এটাই।'  

    ---- 

    ( ডিসেম্বর ২০১৯ )  

     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • গপ্পো | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ | ১৮৪৭ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    ইঁদুর  - Anirban M
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২০:২২96880
  • ইবুকে ছিল এই গল্পটা। ভাল লেগেছিল।
  • গল্পটা | 151.197.225.87 | ০২ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:০৪96881
  • এই ভাল লেখাটায় আদিম সরলতা রাখতে পেরেছেন।

    কেউ যদি টেকনিকালি খারাপ লেখা বলে কাটাছেড়া করত, তবে বেশ হত।

    মানে একটা ঝগড়াঝাটি বা শিক্ষার স্কোপ পাওয়া যেত।
  • মেঘ | 45.64.226.136 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১১:২৭96886
  • সুন্দর

  • রঞ্জন | 122.162.96.204 | ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৭:৩১96893
  • তারেকভাই,

      মন ছুঁয়েছে , গল্পে এর বেশি কিছু আমি চাইনা। আপনার লেখা আগেও পড়েছি, ভালো লাগে।

  • বিপ্লব রহমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:৪০96908
  • অনেক দিন পর তারেকের লেখা পড়লাম।  দীর্ঘ রিপোর্টাজ ধাঁঁচের গল্পোটি অনলাইনের জন্য কিছুটা বড় মনে মনে হয়েছে। ভালোই লেখা। 

     গুরুচণ্ডা৯ তে স্বাগতম    

  • বিপ্লব রহমান | ০৪ সেপ্টেম্বর ২০২০ ১৪:৫১96910
  • *"মনে" কথাটি একটা বাদ যাবে,  টাইপো    

  • পুরনো নীপা | 2405:8100:8000:5ca1::2f6:196b | ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ০৯:১১96968
  • ওয়েলকামব্যাক তারেক নুরুল হাসান। গুরুচন্ডালির উষাযুগের অতি পুরনো কন্ট্রিবুটারদের একজন।
    নাম দেখেই ভীষণ খুশি হোলাম। এবার গলপ পড়ি
  • Gopa Mukhopadhyay | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:৩৮97023
  • অনেক দিন বাদে একটা ভালো গল্প পড়লাম।প

  • Gopa Mukhopadhyay | ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২১:৩৮97022
  • অনেক দিন বাদে একটা ভালো গল্প পড়লাম।প

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভ্যাবাচ্যাকা না খেয়ে প্রতিক্রিয়া দিন