এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • মেজরেটেরিয়ান রেজিম ও ধর্ষকাম

    Mani Sankar Biswas লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০১ মার্চ ২০২০ | ৩৭৫৩ বার পঠিত | রেটিং ৪ (১ জন)
  • ১.

    খুনির আর ধর্ষকামীর মন, মানসিকতা একই পাড়াতে বাস করে সামান্য দূরত্বে দুটো আলাদা রাস্তায়। আত্মগোপন করে থাকতে থাকতে প্রায়ই এরা ভুলে যায় এদের আত্মপরিচয়। অথচ ভদ্রপাড়ায় বাস করবার জন্য যে পরিচয়েই এরা বাসা ভাড়া নিক না কেন, ফেক আত্মপরিচয় বহন করতে করতে ক্লান্ত হয়ে গিয়ে এরা এমন কিছু করে বসে বা এমন কিছু বলে বসে যে একটু চেষ্টা করলেই এদের আইডেন্টিফাই করা যায়। এই বিশেষ মানসিক গঠনই সংখ্যাগুরু। জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রেই, এরা অপোনেন্টকে রেপ করতে চায়, শেষ করে করে দিতে চায়। বিরাট এই সংখ্যাগুরু 'হতাশ' মানুষের দল, একদল সত্যিই ডিপ্রাইভড, আর অন্য এক দল, যাদের সেই অর্থে কোনো বিপক্ষকে চিহ্নিত না করতে পারাতেই হতাশ হয়ে সম্ভবত বিভিন্ন ক্ষেত্রের সংখ্যালঘুকে বেছে নিয়ে এক কল্পিত যুদ্ধের অবতারণা করে, এবং সেই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করতে চায়। এই যুদ্ধটিতেও কাপুরুষের মতো সে ব্যবহার করতে চায় তার সংখ্যাগুরু ওজন, ধর্ষণের ক্ষেত্রে যেরকম হয়। জীবনকে এরা ভাবে যুদ্ধক্ষেত্র। বিপক্ষকে গুড়িয়ে দিতে চায়, ধ্বংস করে দিতে চায় তার আত্মা। কেনা জানে কলোনিয়াল প্রভুরা, বা তার আগে থেকেও, বিভিন্ন সাম্রাজ্যবাদী আগ্রাসী সামরিক বাহিনী যখনই বিপক্ষের জাতটিকে ধ্বংস করে দিতে চেয়েছে, তখনই অজস্র ধর্ষণ করে, সেই জাতের সংস্কৃতিকে ভেঙেচুরে এমন একটা জায়গায় নিয়ে গেছে, যাতে করে আর কখনো ওরা মাথা তুলে না দাঁড়াতে পারে। অভিজ্ঞতা থেকেই জানি নিউজিল্যান্ডে মাউরি, অস্ট্রেলিয়ায় অ্যাবোরজিনাল, যুক্তরাষ্ট্রে রেড ইন্ডিয়ানরা আর কখনোই ওই দেশগুলিতে বিদ্রোহ করে তাদের পূর্বপুরুষের জমি রিক্লেইম করবে না। এই যে ভারতীয় গণতন্ত্রে একটি বিশেষ দল, তার এত লিডার ধর্ষণে অভিযুক্ত হচ্ছেন, কিছু খবর বাইরে আসছে, কিছু আসছে না, বা তারই ধর্মীয় শাখা দলটির, এমনকি মূল দলটির বহু নেতাকর্মীকে প্রায়শই আমরা বলতে শুনি "দরকারে ওদের মেয়ে-বোনদের রেপ করতে হবে", এই বিশেষ মানসিকতাটিকেই অজান্তে প্রতিফলিত করে। কিন্তু সত্যিই কী এরা, এদের কর্মী-সমর্থকরা বিপক্ষের উপরে, সংখ্যালঘুর উপরে ঝাঁপিয়ে পড়ে প্রতিদিন রেপ করছে? না সেটা হচ্ছে না, কিন্তু মানসিক গঠনের ভিতর এই কালচারটা স্থায়ী হয়ে যাচ্ছে। অবচেতনে যার ছাপ পড়ছে। ফলে বদলে যাচ্ছে কথাবার্তা, সংস্কৃতি। অনেক অনেক সংখ্যক মানুষ যারা এই ভারতীয় জনতা পার্টিকে রাষ্ট্রের শাসক দল হিসেবে নির্বাচিত করেছেন, এই ধর্ষকামকে সমর্থন জানাচ্ছেন, প্রকাশ্যে অথবা অপ্রকাশ্যে। এই মানসিকতার কথা দিয়েই শুরু করেছিলাম। এরা জীবনের নানা ক্ষেত্রে, উদাহরণ দিই, বাংলাদেশের সঙ্গে ক্রিকেট খেলায় এরা ইন্ডিয়ান ক্রিকেট টিমের সাপোর্টারগিরি করে বিরাট দেশভক্তির পরিচয় দেয়। সোশ্যাল মিডিয়ায়, অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নয়নের সূচকে অনেক পিছিয়ে থাকা পাকিস্তানের উদ্দেশ্যে মিম বানায়। নিজেরই দেশের সংখ্যালঘুদের দেশের সব সমস্যার মূল ধরে একটি কল্প-যুদ্ধের অবতারণা করে। জীবনে কোনো ক্ষেত্রেই যে বা যারা বিরাট কোনো ভূমিকা রাখে না, তাদেরই বিরুদ্ধে এই সংখ্যাগুরু একটা যুদ্ধ ঘোষণা করে দেয়। রাস্তার এক ফলওয়ালা, অসফল কোন ছাত্র, কর্পোরেট চাকুরে, সবার জীবনের মূল সমস্যা হয়ে দাঁড়ায় কাশ্মীর। কাশ্মীরি পণ্ডিতদের দুঃখে ভারী হয়ে আসে এদের বুক। দু এক দিন আগেই, এক লেখিকার পোস্ট আমাকে কেউ হোয়াটসঅ্যাপে ফরোয়ার্ড করেছিল। তিনি লিখেছেন, "মুসলিমদের নিয়ে দু'লাইন লিখেছি দেখলে লিখে যাবেন হিন্দুদের ওপর অত্যাচারের সময় কোথায় ছিলাম? তাদের নিয়ে কখনও এক লাইন লিখেছি?" এখনকার সব ইতিহাসবিদ, শিক্ষাবিদ, লেখক, সমাজতত্ত্ববিদের, এই একই সংকট, এই এক অসহায়তা, যে সাধরণ মানুষ, অফিস-ফেরতা মানুষ, কোর্টকাছারির মানুষ, ট্রেনে হকারি করা মানুষ, গণিতের শিক্ষক, ইতিহাসের ছাত্ররাও এই একই প্রশ্ন করছে! অথচ যে প্রসঙ্গে ওই লেখা, সেই খানে এই প্রশ্নই ছিল অপ্রাসঙ্গিক। তবু ওঁকে এই উল্লেখ করে দিতে হচ্ছে, যে হ্যাঁ, আমি জানি আপনি এই প্রশ্ন করবেন! আর একটা সমস্যা হল, এই যারা লেখালেখি করেন, তাদের আঁতেলফাতেল বলে অনেক গালি দেওয়া যায়, প্রশ্ন করা যায়, কিন্তু তাঁরা কোনো প্রশ্ন করতে পারেন না। তো সেই তাঁদের পক্ষ থেকে আমি যদি প্রশ্ন করি?

    প্রশ্নটি হল এরকম, আধুনিক ভারতে মুসলমানদের সামাজিক উন্নয়নের সূচক দেখলে বোঝা যায়, মুসলমান সমাজের আদৌ কোনো উন্নতি হয়নি, ওঁরা স্বাধীনতার পরে বিশেষ কায়দায় বরং অপ্রেসডই হয়েছেন। তবু ধরা যাক তর্কের খাতিরে যে ওঁরা হিন্দুদের উপর নানারকম অত্যাচার করেছেন। এই ধরুন মহরমের দিন দুর্গাপূজার ভাসান না করতে পারা, বা একটি বিশেষ অঞ্চলে সরস্বতী পুজো করতে পারেননি ওই অঞ্চলের সংখ্যালঘু বা ধরা যাক সংখ্যাগুরু মানুষ। কিন্তু কোনো পরিসংখ্যান ছাড়াই বলা চলে, স্বাধীন ভারতবর্ষে এই 'অত্যাচার'-এর হাজারগুণ বেশি অত্যাচার, নিপীড়ন, শোষণ চালিয়েছে বর্ণহিন্দুরা, দলিতদের উপরে। নানারকম গুমখুন, ঘর জ্বালিয়ে দেওয়া, নিম্নবর্ণের মেয়েদের রেপ করা, প্রতিদিনই ঘটছে ভারতবর্ষের আনাচে-কানাচে। কই তখন তো আপনাকে বলতে শুনি না যে দলিতদের উপর অত্যাচারের কথা অমুক লেখক (আপনার ভাষায় 'আঁতেল') কেন বলছেন না? আপনাকে তো কোনোদিন এই বিষয়ে একটা কথাও বলতে শুনিনি? এই যে আমারা যারা 'সংখ্যালঘু', যারা সবসময়ই ভয় পাচ্ছি, যে এই মুহূর্তে আমাকে প্রশ্ন করা হবে, যখন আওরঙ্গজেব মন্দির ভাঙছিল তখন কোথায় ছিলেন, যখন জিজিয়া কর নেওয়া হচ্ছিল তখন কোথায় ছিলেন, যখন কাশ্মীরের পণ্ডিতদের তাড়ানো হচ্ছিল তখন কোথায় ছিলেন? তাদের ভয়টা এই কারণে নয় যে এর উত্তর আমরা জানি না। ভয়টা এই কারণে যে ১. এর উত্তরটা শোনবার ধৈর্য আপনার নেই। ২. এও এক খুনে মানসিকতা। ধর্ষকাম। যে আমাদের উপর 'অত্যাচার' হয়েছিল। এখন নে, আমরা সংখ্যাগুরু, আমরা আমাদের পুরো ওজন (পুলিশ, প্রশাসন, জনমত) দিয়ে তোদের শরীর-আত্মাকে গুড়িয়ে দেব। হ্যাঁ কাজটা হয়তো খুব ভালো হচ্ছে না, কিন্ত এমন তো হয়ই। বাংলাদেশে দুর্গা পুজোর সময় কত মণ্ডপে ঢুকে কত প্রতিমা ভাঙ্গা হয়! পাকিস্তানে সংখ্যালঘু হিন্দুরা তো ১২.৯% থেকে কমতে কমতে ১.৬%-এ এসে ঠেকেছে। অর্থাৎ কোনো ভাবেই যে দেশ, যে ভূখণ্ডের সঙ্গে মানুষজনের সঙ্গে আমরা আর ততখানি একাত্ম নই, সেই দেশে ঘটে যাওয়া অন্যায়কে টেনে এনে, এ দেশের ইসলাম ধর্মাবলম্বী মানুষের উপর যে কোনো রকম অন্যায়কে জাস্টিফাই করা। হ্যাঁ, এও এক ধরণের ধর্ষকাম-ই।

    ২.

    আমরা সকলেই অল্পবিস্তর হলোকাস্টের ইতিহাস জানি। এও জানি অ্যাডলফ হিটলারের একার পক্ষে ৬ মিলিয়ন ইহুদিকে মেরে ফেলা সম্ভব ছিল না। বোঝাই যায়, অসংখ্য মানুষের তীব্রতম আসুরিক প্রবৃত্তির এক সংঘটিত রূপ এই হলোকাস্ট। কারা ছিলেন এরা? সবাই কী দৈত্য-দানব বা নরক থেকে উঠে আসা শয়তান ছিলেন? কি ভাবে এরকম একটা ঘৃণ্য কাজের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছিলেন এত, এত মানুষ? নৃশংসতার কোন পর্যায়ে পৌঁছে মানুষ, একটা বাচ্চাকে ফার্নেসের আগুনে ছুড়ে দিতে পারে? আমরা যদি সঠিকভাবে আউশভিৎস বা অন্যান্য কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলির ইতিহাস ঘাঁটি, একথা মনে হতে বাধ্য যে এক বিশেষ ধরণের জানোয়াররা এই নিষ্ঠুরতম হত্যালীলায় অংশগ্রহণ করেছিল। কোত্থেকে এসেছিলেন এরা? অন্য গ্রহ থেকে? হলোকাস্টের পর মাত্র দুই তিন জেনারেশন পর কোথায়ই বা গেল এইসব 'এলিয়েন'-রা? কিভাবেই বা এদের সংগ্রহ করা হয়েছিল, এই 'বিশেষ' কাজের জন্য? হলোকাস্ট বিশেষজ্ঞরা পর্যন্ত আউশভিৎস বা অন্য ক্যাম্পগুলির রেকর্ডপত্র ঘেঁটে তেমন কোনো তথ্য যোগাড় করতে পারেননি, যা দিয়ে এই বিষয়ে আমরা একটা ডকুমেন্টেড হিস্ট্রি পেতে পারি। এই যে বিশাল সংখ্যক স্বার্থপর দৈত্যদের দল হাওয়ায় মিলিয়ে গেল, তার প্রকৃত কারণ হল এরা আদপেই কোনো দৈত্যদানো ছিল না, ছিল অত্যন্ত অনুল্লেখযোগ্য সাধারণ মানুষ। এদের বেশিরভাগের ছিল সরকারি চাকরি। ছিল প্রেমিকা, স্ত্রী, সন্তান, পরিবার পরিজন, সাধারণের অবসর বিনোদন। অবসরে কেউ বাগান করতেন, কেউবা ছিলেন শখের কৃষি-বিজ্ঞানী। কেউ অবসরে মাছ ধরতে যেতেন, কারো আবার শখ ছিল মিউজিকাল অপেরা দেখা। আদ্যন্ত সাধরণ মানুষ। এরা কেউই ভাড়াটে খুনি ছিলেন না, উপরন্তু এঁদের অনেকেই ছিলেন উচ্চশিক্ষিত, বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বোচ্চ ডিগ্রিধারী। কারো ডিগ্রি ছিল এগ্রিকালচারে তো কারও ছিল ইতিহাসে বা হিউম্যানিটিজে। এ বিষয়ে লেখালেখি করবার জন্য প্রখ্যাত, সাংবাদিক রাহ্‌বি স্মুলি বোহটেহাখ লিখেছেন, "Ludolf von Alvensleben, one of the SS leaders in Poland and Crimea, had a degree in agronomy, for example, and spent his years after the war overseeing fisheries in Argentina (no, he was never brought to justice.) Hans-Adolf Prützmann likewise earned a degree in agriculture just a few years before he would oversee the Einsatzgruppen detachments that perpetrated the Holocaust in the Baltic States. Paul Blobel, who murdered over 33,000 Jews in the forest of Babi Yar and commissioned the first gas vans, was a trained architect and spent nearly a decade in that profession. Richard Baer, who ran Auschwitz in the last year of the war, was a trained confectioner. Yes, one of the men who ran the world’s largest factories of death originally made sweets for a living."

    তো এই নাৎসিরা কোনো দানব বা অসুর ছিলেন না। সাধরণ মানুষ, যারা বিশ্বাস করেছিলেন জার্মানরা পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ জাত এবং জার্মানিতে শুধু এদেরই থাকবার অধিকার আছে। আর অগাধ বিশ্বাস করেছিলেন, এদের 'ফিওর'-কে। ঈশ্বরপ্রতিম।
    দু'বার নাৎসিরা নির্বাচনে জয়ী হয় এবং ১৯৩৩-এ ৪৩.৯% ভোট পেয়ে এরা বিরাট মার্জিনে জার্মানির জনপ্রিয়তম দল নির্বাচিত হয়। ১৯৩৩ সালে পার্লামেন্টে সম্পূর্ণ অসাংবিধানিক একটা আইন পাশ হয়, যার দ্বারা হিটলার এবং তার সহযোগীরা (Deutschnationale Coalition) প্রায় যা ইচ্ছা তাই করবার অধিকার পেয়ে যান এবং 'আইন' পাশ হয়, যে এই যা-ইচ্ছা-তাই করবার জন্য পার্লামেন্টের কোনো অনুমোদন নেবার দরকার নেই। অর্থাৎ হিটলারের এমন জনপ্রিয়তা ছিল, নাৎসিদের এমন মেজরিটি ছিল যে তাই দিয়ে সংবিধানই বদলে দেওয়া যেত, এবং দেওয়া হয়েও ছিল। ১৯৩৪ সালে প্রেসিডেন্ট হিন্ডেনবার্গ মারা গেলে, হিটলার একটি রেফারেন্ডাম আনেন এবং ৮৮% মানুষ, হিটলারকে সর্বোচ্চ ক্ষমতা দেবার পক্ষে ভোট দেন। ১৯৩৬-এ কুখ্যাত নুরেমবার্গ ল পাশ হয়। এই আইন দিয়ে ইহুদিদের সব নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়া হয়। এর অব্যবহিত পরেই, ১৯৩৬-এর ইলেকশনে, ৯৮.৮% মানুষ হিটলারের পক্ষে ভোট দেন। ৯৮.৮%। এই ৯৮.৮ শতাংশ মানুষ সবাই রক্তলোলুপ শয়তান ছিলেন?
    ইতিহাসবিদ ইয়ান কের-শ বলছেন, ১৯৪০ নাগাদ হিটলারের জনপ্রিয়তা শীর্ষে পৌঁছায়। এই সময় হিটলারের ফ্রান্স জয় করে প্যারিস ট্যুর থেকে ফিরে আসেন। দিকে দিকে তখন কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পগুলির ফিতে কাটা হয়ে গেছে, শুরু হয়ে গেছে মানুষকে জ্বালানি করে আগুনে ছুড়ে ফেলা। অথবা একটা প্রকোষ্ঠে ঢুকিয়ে নার্ভ-গ্যাস দিয়ে ভরে দেওয়া হচ্ছে চেম্বারটি। সাধরণ জার্মানরা কিন্তু জেনেছিলেন এসব কথা। কেউ প্রতিবাদ করেননি। সবাই ভেবেছিলেন এই নীরবতাই দেশপ্রেম। ভেবেছিলেন জার্মানি "আবার জগত সভায় শ্রেষ্ঠ আসন লবে", তার জন্য এই নীরবতাটুকু, এই দেশপ্রেমটুকু জরুরী। একটা কথা মাথায় রাখতে হবে, হিটলার তার নির্বাচনী প্রচারে কোত্থাও বলেননি, হলোকাস্টের কথা, কনসেন্ট্রেশন ক্যাম্পের কথা। তিনি শুধু ঘৃণার আগুনটুকু উসকে দিচ্ছিলেন বিভিন্ন সভা সমিতিতে। তিনি শুধু 'জার্মান-অস্মিতা'-বোধ জাগ্রত করেছিলেন। আর 'সাধারণ' মানুষ জন্তু-জানোয়ার না হয়েও জন্তুর মতো ঝাঁপিয়ে পড়েছিলেন সংখ্যালঘু ইহুদীদের উপর। অথবা ঝাঁপিয়ে পড়াকে সমর্থন করেছিলেন। মিলটা বোঝা যাচ্ছে তো? নাকি আমাদের আরও কিছুদিন অপেক্ষা করতে হবে, সংবিধান বদলে যাওয়া পর্যন্ত? ঘোষিত 'হিন্দুরাষ্ট্র' হওয়া পর্যন্ত?
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০১ মার্চ ২০২০ | ৩৭৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • প্রতিভা | 162.158.154.222 | ০২ মার্চ ২০২০ ১৫:১৪91202
  • মুখোশ উন্মোচনের লেখা।
  • সুমনা সান্যাল | 162.158.167.183 | ০২ মার্চ ২০২০ ১৫:৩৮91203
  • খুব দরকার ছিলো এই লেখাটার। অনেক কল্পিত ছায়াযুদ্ধে এইরকম ধর্ষকামী মন লুকিয়ে থাকে। এই প্রবণতা আরও বেশি চিৎকৃত ভাষ্যে উন্মাদনা বলে, লেখে প্রচুর পরিমাণ সমর্থন, সহানুভূতি আর হাততালি পেলে। বলাবাহুল্য, এইসব একমাত্রিক সমর্থনও অবচেতনের ধর্ষকাম থেকে আসে। ব্যক্তিগত আর সামাজিক রাজনৈতিক সব স্তরেই এর ছায়া পড়ে। নিউজ থ্রেডগুলোর কমেন্ট বক্সে দৈবাৎ কোনো মুসলমান হিন্দুত্ববাদী এজেণ্ডা নিয়ে লিখলে তার দিকে ছুটে আসা সংখ্যাগুরুদের কমেন্টগুলোও ধর্ষকামী মন কে সামনে এনে দেয়।
  • | 162.158.118.39 | ০২ মার্চ ২০২০ ১৫:৫২91204
  • খুব ভাল লেখা।
    হ্যাঁ এই বিজেপী সমর্থকরা অদ্ভুত রকমের সেক্শ্যুয়ালি পার্ভার্ট। এদের সাধারণ কথা, গালিগালাজ তো বটেই সেই পার্ভার্শানের সাক্ষ্য দেয়।

    জার্মানিতে গ্যাস চেম্বার বানিয়েছিল। ভারতীয় জুগাড় আক্রান্তদের বাড়িগুলিকে ওভেন-ে পরিণত করেছে। আরো কম খরচে বেশী লাভ আর কি।
  • Soumen Chakrabortty | ২৭ অক্টোবর ২০২০ ১০:০৪99134
  • আমরা এখন এর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর জন্য কি করতে পারি? 

  • Amit | 203.0.3.2 | ২৭ অক্টোবর ২০২০ ১০:২৫99135
  • সাধারণ মানুষ যারা এদের  হেট্ মঙ্গেরিং কে এক্টিভলি সাপোর্ট করেননা , তারা অন্তত নিজেদের সোশ্যাল মিডিয়ায় এদের রেসিস্ট আর ফেক ফরওয়ার্ড গুলো ব্লাইন্ডলী অন্যদের ফরওয়ার্ড করা বা লাইক / শেয়ার বন্ধ করুন পার্সোনাল সম্পর্কের পরোয়া না করে । এই হেট্ প্রোপাগান্ডা জাগারনাট টাতে ব্রেক টানলেই ৫০-%কাজ এগিয়ে যাবে। 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন