এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • হ্যাশট্যাগ ভার্চুয়াল জুতোপেটা: এত হইচই কিসের!

    Anamitra Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ১৮০৩ বার পঠিত
  • কেউ কেউ এখনও জানতে চাইছে বাওয়ালটা ঠিক কি নিয়ে। ওদিকে কাল ইপ্সিতাদিও বলছিলো এসভিএফ-এর পিছনে এত এনার্জি নষ্ট করিস না, লিখে রাখ বরং। এমনিতে বিপ্লবটা আজকাল উইকেন্ড দেখেই করতে হয়। আজ সন্ধ্যের পর নিজের পক্ষেই আর সময় দেওয়া সম্ভব হবে না। কয়েকজনকে মেসেজে লিখলাম একটু আগে, বড় ঘটনা, পরে বলবো / ধীরে ধীরে লিখছি ইত্যাদি। তারপর ভেবে দেখলাম ব্লগ যখন আছে, তুলেই রাখি, কেউ জানতে চাইলে লিংক পাঠিয়ে দেব। কোনো সাহিত্য নয়, যেরকম যা ঘটেছে এবং মনে হয়েছে লিখে যাচ্ছি।

    আমি আর শ্রীপর্ণা আপাতত অনেকগুলো ওয়েবসিরিজ দেখে গ্যাংস্টার জনরে নতুন কিছু দেখার খোঁজে রয়েছি যেটা দেখে মজা পাবো। গোদার নয়। পাতি বিনোদন যেটা খেতে খেতে দেখা যায়, কাজের ফাঁকে একঘন্টা পেলে টুক করে দেখে ফেলা যায়, এরকম কিছু; জাস্ট একটু ওয়েলমেড, একটু কনভিন্সিং। তো, হইচই-এর একটা সিরিজের নাম বেশ কিছুদিন ধরেই শুনছিলাম। সেখানে এমন একজন কাজও করেছেন যিনি সম্ভবত আমার এই শর্ট ফিল্মটাতেও (আজাদ বিশ্বাস অন্তর্ধান রহস্য) কাজ করবেন। তাছাড়া পরিচিত অনেকেই ট্রেলার দেখতে বলছিলো, বলছিলো ভালো হবে। হাতে অন্য কিছু না থাকায় ভোর চারটের সময় কাজ শেষ করে খেতে বসে সিরিজটা চালাই। বিঞ্জওয়াচিং-এর মুডে ছিলাম, ৩-৪ ঘন্টা সময় ছিল হাতে, তাড়া ছিল না। কিন্তু কিছুক্ষনের মধ্যেই রিয়ালাইজ করি যে এটা মনে হয় দেখতে পারবো না পুরোটা। ঘটেও তাই। গোটা একটা এপিসোড-ও শেষ করতে পারিনি এতটাই জঘন্য লেগেছিলো আমার। তার ঘন্টাদুয়েক বাদে, নেটফ্লিক্স-এ আরো দু-একটা এটাসেটা দেখার চেষ্টা করার পর শুতে যাওয়ার আগে হইচই-এর সিরিজটা নিয়ে খিল্লি করে ফেসবুকে একটা স্ট্যাটাস দিই। খিল্লি করার মূল কারণ এই জঘন্য সিরিজটাকে "বাংলা ওয়েবসিরিজে বিপ্লব" বলে প্রমোট করা হচ্ছিলো হইচই-এর তরফে। তো, আমি স্ট্যাটাস দিয়ে শুতে চলে যাই। বিকেলবেলা উঠি। সন্ধেবেলা কাজে বসি। নভেম্বরের শেষ থেকেই কাজের চাপ চলছিল বেশ। একটা বেশ বিরক্তিকর স্পিকার-এর সেশন এডিট করছিলাম, ফেসবুকেও খুব একটা আসিনি। রাত্রে দেখলাম ইনবক্সে ফেসবুকের দুটো মেল্ রয়েছে যে অয়নদা (চক্রবর্তী) আমাকে কোথাও কমেন্টে মেনশন করেছে। এদিকে ফেসবুকে যে দু-একবার ঢুকেছিলাম আমি কিন্তু কোনো নোটিফিকেশন পাইনি। ইনবক্সে আসা মেলে কমেন্টটা দেখে মনে হচ্ছিলো ওই সিরিজ সংক্রান্ত কিছুই সম্ভবত। লিংকে ক্লিক করে দেখতে যাওয়াতে ফেসবুক দেখালো কন্টেন্ট নট অ্যাভেলেবল।

    বাচ্চা বয়স থেকেই আমার নানা জায়গায় বারেবারে ব্লক হওয়ার অভিজ্ঞতা আছে। ফলে মনে হলো কেউ হয়তো আমাকে ব্লক করে থাকতে পারে। এক ক্লায়েন্টের ফেসবুক লগইন ডিটেলস ছিল আমার কাছে; মেন্ উইন্ডো থেকে ইউআরএল কপি করে সেই লগইন ডিটেলস ব্যবহার করে ইনকগনিটো থেকে ঢুকে পোস্টটা দেখলাম। এডিট এফএক্স স্টুডিওর এক কালারিস্ট, যে কিনা আজ আট বছর প্রায় আমার ফেসবুক বন্ধু, আমার স্ট্যাটাসের স্ক্রিনশট পোস্ট করে সিনেমাটোগ্রাফি আর সাউন্ডে কি কি ভুল ছিল সেসব ডিটেলে লেখার দাবী জানিয়েছে। তার নিচে নানান লোক নানা কথা বলছে। কেউ আমায় হিংসুটে বলছে, কি কাজ করেছি জানতে চাইছে, তো কেউ আবার আমায় বাঙালী কাঁকড়া বলার মতো হাবভাব করছে, কিন্তু বলছে না। (এই দ্বিতীয় বক্তার সাথে আমার কিছু ব্যক্তিগত ইতিহাস আছে। সেসব পরে কখনও বলা যাবে। এখানে অপ্রয়োজনীয়)। ভাবখানা এমন যেন সিরিজটির পরিচালক প্রশংসা পাচ্ছে বলে আমি হিংসেয় জ্বলে যাচ্ছি। অথচ আমি চিনিও না যার কাজ তাকে আদেও। সেও আমায় চেনে বলে মনে হয় না। অয়নদাকে কিছু মেসেজ করলাম তারপর। এটা বেশ রাতের দিকের কথা। ও ততক্ষনে অফলাইন হয়ে গিয়েছে। সেদিন আমার কাজ চলে সকাল সাড়ে পাঁচটা অব্দি প্রায়। তারপর কি একটা যেন দেখছিলাম। মনে নেই। শুতে যাওয়ার আগে মনে হয় আমার এই ব্যাপারটা নিয়ে কিছু একটা লেখা উচিত। তো লিখলাম। বিকেলে হিরণ দা (মিত্র)-র বাড়ি যাওয়ার কথা ছিল একটা কাজে গুরুচন্ডা৯-র কয়েকজনের সাথে। সেখানে গেলাম, ফিরলাম, আবার কাজে বসলাম। রাত্রিবেলা এক বন্ধুর পোস্ট থেকে একটা অদ্ভুত জিনিস জানলাম তারপর।

    যে সিরিজটার কথা আমি বলছি সেখানে মূল চরিত্রের নাম মৃনাল সেন। তিনি একজন ব্যর্থ পরিচালক। এই অবধি অবশ্য আমি নিজেই দেখেছি। বন্ধুটি দেখলাম একটি ফ্রেম শেয়ার করেছে ওই সিরিজ থেকে যেখানে ফ্রেমে বসে থাকা তিনজনের নাম যথাক্রমে ঋত্বিক, মৃনাল ও সত্যজিৎ। এই জায়গাটা আমি যতটুকু দেখেছি তার মধ্যে আসেনি। প্রাথমিকভাবে একটু হতভম্বই হয়ে গিয়েছিলাম ব্যাপারটা দেখে। এত ফালতু একটা কাজ একদিকে, স্ক্রিপ্টের মা বাপ নেই, স্ক্রীনপ্লের নাটবল্টু খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না, তার মধ্যে আবার এরকম চ্যাংড়ামো! কিছু একটা সমস্যা হচ্ছিলো নিজের ভিতর। কিন্তু কেন হচ্ছে বুঝতে পারছিলাম না। আমি একেবারেই অমুককে নিয়ে চ্যাংড়ামো করা যাবে না, বা তমুকের নাম টানা যাবে না কোথাও; এই ধরণের চিন্তাভাবনা নিয়ে চলা পাবলিক নই। তো, বোঝার চেষ্টা করলাম প্রব্লেমটা কোথায়। বেশ খানিক ভাবনাচিন্তার পর বুঝতে পারলাম আমার চলচ্চিত্রকার হিসেবে নয়, নিতান্তই একজন ক্রেতা বা উপভোক্তা হিসেবে এদের এই সার্বিক ঔদ্ধত্যটা মেনে নিতে ইগোতে লাগছে সম্ভবত।

    চেপে যেতে পারতাম সেখানেই। কিন্তু চেপে যাওয়ার কোনো কারণ পেলাম না। কোনও একটা ভালো অ্যাস্পেক্ট থাকলে হয়তো চেপেই যেতাম। কিন্তু প্রচুর লোক ওদের প্রজেক্টে কাজ করে ছাড়া আর কোনো কারণ পেলাম না যেটা আমায় থামাবে। তা, প্রচুর লোক তো আরামবাগ ফুড মার্ট বা অ্যাপোলো ফার্মেসিতেও কাজ করে। সেখানে কেউ আমার সাথে "আপনাদের চিকেনটা আগেরবার পচা ছিল" বা "এই ওষুধটার এক্সপায়ারি ডেট পেরিয়ে গেছে" বলার জন্য অভদ্র ব্যবহার করলে আমি কি করতাম? কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি চলে আসতাম? মনে তো হয় না। মতামত জানতে চেয়ে তারপর লেখার সুযোগ না রেখে ব্লক করে দেওয়া ব্যাপারটা আরও একধাপ এগিয়ে। এটা অনেকটা নিজের বাড়িতে বসে আরামবাগের চিকেন খারাপ বলার জন্য রাস্তায় আরামবাগ রিটেল স্টোরের কর্মীর হাতে গলাধাক্কা খাওয়া এবং "সেকেন্ড টাইম যেন স্টোরের সামনে না দেখি" শুনতে বাধ্য হওয়া। এতটা বাড়াবাড়ি বোধহয় তখনই মেনে নেবো যখন প্রতিপক্ষের নাম পাবলো এস্কোবার, হোয়াকিন গুজমান লোয়েরা, গনেশ গায়তোন্ডে কিংবা নিদেনপক্ষে অখণ্ডানন্দ ত্রিপাঠী। তাছাড়া সমসাময়িক আরও কিছু ঘটনা মনে পরে গেলো। সেসব সবাই জানে, কাজেই আলাদা করে উল্লেখ করছি না আর। মোদ্দা কথা হলো, এটা যে শুধু আমার সাথেই ঘটলো তা নয়। এরকমটা প্রায়ই ঘটছে। আজ এ ব্লক হয়ে যাচ্ছে, কাল সে ব্লক হয়ে যাচ্ছে, পরশু তার নামে তমুকের ওয়ালে খাপ পঞ্চায়েত বসছে... এবং এই ঘটনাগুলোর মধ্যে মিল একটাই!
    প্রত্যেকবারই এগুলো ঘটছে শ্রী ভেঙ্কটেশ ফিল্মস-এর বিভিন্ন প্রযোজনা বিষয়ে দর্শকরা বিরূপ মতামত প্রকাশ করলে। না, হাউস থেকে স্টেটমেন্ট দেওয়া হচ্ছে না অবশ্যই । কিন্তু কখনও পরিচালক, কখনও পরিচালকের ঘনিষ্ঠ অন্য কোনো পরিচালক, কখনও পরিচালকের বিশেষ ভালোবাসাধন্য কোনো ভক্ত, তো কখনও কাজটির সাথে যুক্ত অন্য কেউ এই ঘটনাগুলি ঘটাচ্ছেন। এবং সবক্ষেত্রেই এইসমস্ত ব্যক্তিদের মূল বক্তব্য থাকছে, "যিনি এসব লিখছেন তিনি ফিল্মের কিছু বোয়েন? বোয়েন না"! অনেক ক্ষেত্রেই সত্যিই যাঁরা বিরূপ মন্তব্য রেখেছেন তাঁরা ফিল্মের সাথে কোনোভাবেই যুক্ত নন। ফলে তাঁরা চেপে যেতে বাধ্য হচ্ছেন একটা সময়ের পর। আর যাঁরা ফিল্মের সঙ্গে যুক্ত এবং কলকাতায় কাজ করেন তাঁরা প্রকাশ্যে বিরূপ মন্তব্য রাখার সাহসই দেখাতে পারছেন না কখনও। কারণ সবারই আশা আছে আমারও একদিন হবে। ভেঙ্কটেশ ডাকবে আমাকে একদিন, টাকা দেবে, সিনেমা বানাবো, নামকরা পরিচালক হবো। অথবা সেরকম আশা না থাকলেও অন্তত করেকম্মে খেতে তো হবে এই মার্কেটেই। জলে থেকে কুমীরের সঙ্গে শত্রুতা? এর বাইরে যাঁরা, যেমন ধরুন ফিল্ম স্টাডিজের প্রফেসর হলে এসভিএফ-এর এই চাড্ডিকুল এসে বলছে, "সিনেমা বানিয়েছেন কখনও? বানাননি। আগে বানিয়ে দেখান, নইলে বড় বড় কথা বলতে আসবেন না"। --- কিন্তু ডুডগণ, ঘটনা হচ্ছে, আন্দ্রে বাঁজা-র নাম যদি তোমরা বাই চান্স কোনোদিন শুনে থাকো তাহলে মাথায় রেখো উনিও কোনোদিন চলচ্চিত্র পরিচালনা করেননি। ভদ্রলোক কে বা কি খোঁজ নিয়ে দেখো একটু নাম না শুনে থাকলে। এ-এন-ডি-আর-ই, বি-এ-জেড-আই-এন --- বানানটা বলে দিলাম, গুগল করতে সুবিধা হবে। তোমাদের সিজিদ্দাকেই জিজ্ঞেস কোরো না হয়, উনি বলে দেবেন। এই বালবাজারীগুলো অন্য দশ জায়গায় চলতে পারে, আমার সাথে চলবে না।
    কারণ প্রথমত আমি ফিল্মটা বুয়ি। সেটা তোমরা আমার প্রথম শর্ট ফিল্ম দেখলেই বুইতে পারবে। ৮৪০ টাকায় বানানো ছবি, জঘন্য আলো (অভীকবাবু নেই), জঘন্য সাউন্ড (হ্যান্ডিক্যামেই রেকর্ড করা), তারপরও আট বছর বাদে এখনও লোকে লিংক চেয়ে দেখছে। অত কথা বাদ দাও, শেষ হওয়ার পর যখন দেখবে যে মাথার ওপর দিয়ে গেলো তখনই বুইবে যে আমি বুয়ি। আর দ্বিতীয়ত, যদি কি কাজ করেছি জিজ্ঞেস করো আমি ইন্ডিয়ান আর্মির রেজিমেন্টের জন্য কাজ করেছি ওদের সাথে চারমাস থেকে। সেই সুদূর অতীতে, ২০১১ সালে। কেন ডেকেছিল শুনবে? বাজেট ছিল না বলে। তোমরা জানো না, তোমাদের বুলি ফোটেনি তখনও, তাই। গত ৫ বছর ধরে যে চুপচাপ বসে আছি তার জন্য তোমাদের মহান ইন্ডাস্ট্রিও অংশত দায়ী।

    হয়েছে কি, আমরা একটা ছবি করছিলাম, ফিচার, তাও পাবলিকের থেকে চাঁদা তুলে। সাধ করে ক্যাম্পেনের নাম রেখেছিলাম ওয়ান রুপি ফিল্ম প্রজেক্ট। সেখানে শ'দুয়েক লোক ছবিটা বানানোর জন্য টাকা দিয়েছিলো আর ৫০-এর ওপর মানুষ স্বেচ্ছায় বিনামূল্যে দিয়েছিলো শ্রম। মানে প্যাকেজ করে বেচার জন্য মাল রেডি ছিল। মহান কিছু কাজ নয়, কিন্তু বেচা যেত। যে মাল তোমরা বেচার চেষ্টা করছো ইদানিং তার চেয়ে অনেক সহজেই বেচে দেওয়া যেত ছোট্ট করে নিশ অডিয়েন্স দেখে। কিন্তু কলকাতা শহরে কো-প্রোডাকশন অফার করার মতো একটা লোকও ছিল না। রাফকাট নিয়ে বসে বসে প্রায় সাতমাস ঘষেছি। সুতরাং বলা যেতে পারে, তোমাদের ইন্ডাস্ট্রিকে আমি খুব একটা খারাপ চিনি না। মেশিনগুলোয় তেল ফেল দিও মাঝেমধ্যে, নাহলে দেহ রেখে দিতে পারে যেকোনোদিন। সেই সাতমাসের পর সাড়ে চার বছর হলো পেটের জন্য যেসব কাজ করতে হয় সেইসব কাজ করছি। সেটাও এই অডিও-ভিজ্যুয়াল ফিল্ডেই, শুধু সেটা এই কলকাতায় নয়, শ্রমের আন্তর্জাতিক বাজারে। কাজেই এই কিছু বোঝে না, কোনো কাজ করেনি, এইসব গল্পগুলো অন্য জায়গায় দিও।

    এবার সিনেমাটোগ্রাফি আর সাউন্ডে ভুলের জায়গাগুলোয় আসি। আমি তোমাদের সিনেমাটোগ্রাফি আর সাউন্ড দেখতে বসিনি, একটা ওয়েবসিরিজ দেখতে বসেছিলাম। তো সেগুলো নিয়ে খুব একটা যে অ্যাটেনটিভ ছিলাম এরকমটা নয়। এবং কেউ একজন প্রশ্ন করেছে বলে ওই গু আবার ঘেঁটে দেখতে যাবো এরকম ইচ্ছাও আমার নেই। আরও একটা কথা, একজন স্বাধীন চলচ্চিত্রকার হিসাবে আমি এই সেক্টরগুলোর মান্যতাপ্রাপ্ত ঠিকভুলগুলোয় বিশ্বাস করি না একদমই। অডিও-ভিজ্যুয়াল রিপ্রেসেন্টেশনে ঠিক বা ভুল বলে কিছু হয় না। যদি গোটা জিনিসটার সাথে যায়, তাহলে যেকোনো কিছুই করা যেতে পারে। তোমাদের মূল ফেলিওরটা ওইখানে। মালটা কোহেরেন্ট নয়, কনভিন্সিং নয়। যতটুকু দেখেছি তাতে যেগুলো চোখে পড়েছে পরপর বলে যাচ্ছি।

    ১) শুরুর ভয়েসওভারের টেকটা ওকে হলো কি করে? ওই এক্সপ্রেশনটা যাচ্ছে ওই ডায়লগগুলোর সাথে? আচ্ছা, বাদ দাও ডিরেক্টরিয়াল পার্টের ব্যাপার না হয় সেটা।

    ২) টাইটেলের আগের দৃশ্যের সঙ্গে পরের দৃশ্যের স্ক্রীনটোনের পার্থক্য চোখে লাগছে। কোহেরেন্স বলতে এটার কথাই বলছি। ধানবাদ ব্লুজ লেখাটা যেভাবে স্ক্রিনে এলো তার আগে সেটাও বেশ চোখে লাগছে। একেকটা একেকদিকে যাচ্ছে। আচ্ছা, এটা নাহয় ডাইরেক্টর এবং ক্রিয়েটিভ প্রোডিউসারের ঘাড়ে গেলো।

    ৩) টিভিস্ক্রীনটা কি মোকাতে করা? ট্র্যাকিং ঠিক নেই। নিচের আর ডানদিকের ব্ল্যাকটা ভালো করে দেখো। আচ্ছা, এসব নাহয় সাধারণ দর্শক দেখবে না। জিজ্ঞেস করলে তাই বললাম আর কি।

    ৪) ডায়লগগুলোকে তুলে এরকম গাছের মগডালে বাঁধা হয়েছে কেন? সাউন্ড শুনে যদি মনেই হয় এটা ডাব করা সাউন্ড, আলাদা করে বসানো, তাহলে সেটা কোন ধরণের সাউন্ড ডিজাইনিং? আচ্ছা, বাদ দাও আমার বাড়িতে স্পিকার না হয় খারাপ।

    ৫) মৃণাল পিঁপড়েদের নিয়ে ব্যস্ত। সিঁড়িতে আলো নেই সেকেন্ড ক্যারেক্টার হাতে জামাকাপড় নিয়ে উঠে আসছে যখন। পিছনের জানলা থেকে আসা ব্যাকলাইট মুখ অন্ধকার করে দিয়েছে। ওখানে কোনোভাবে একটু লাইট ঢোকানো যেত না রিফ্লেক্টর দিয়ে? আচ্ছা ঠিকাছে, আমার মনিটরের ক্যালিব্রেশন করা নেই নাহয় ঠিকঠাক।

    ৬) মৃণাল মেয়ের ইস্কুলে পৌঁছনোর পরের সিঁড়ির দৃশ্য। এটা কোন ইস্কুল ভাই? এত আলো? তাও দিনেরবেলা জ্বালিয়ে রেখেছে? রাখে হয়তো! কে জানে! পৃথিবীতে তো কতরকমই হয়। আমরা তার কতটুকুই বা জানি!

    ৭) টেবিলে কনভারসেশন "মৃণালবাবু".. "হ্যাঁ মৃণালবাবু, লেট্ নিয়ে আপনার সঙ্গে..." প্রথমত এইভাবে দুবার ডেকে কে কথা বলে? "হ্যাঁ" বলে তারপর নাম ব্যবহার করে একজন আরেকজনকে সম্বোধন করে খুব কম সিচুয়েশনে। এটা ন্যাচারাল নয়। ছাড়ো। এই ডায়লগটার এখানে লিপটা আরেকটু চেক করে আরেকবার টেক নেওয়া দরকার ছিল। কোথাও একটা মিলছে না। ঝট করে চোখে লাগছে। দেখে নিও। নিজে এডিট করি তো টুকটাক। এগুলো বেঁধে চোখে। এত বড় প্রফেশনালদের থেকে এইগুলো এক্সপেক্টেড নয়।

    ৮) ফেরার অটোয় অটোচালকের মাথার পিছনটায় চুলটাতে একটু ব্লু শ্যাডো রয়েছে কি? নাকি আমি ভুল দেখছি? শার্টের ব্লু টা বাউন্স করছে বুঝি? কালারিস্ট-এর দোষ হবে না নিশ্চয়ই, মানে, এডিট এফএক্স এত নামকরা ষ্টুডিও যখন।

    ৯) বাইকের দৃশ্য। সিনেমাটোগ্রাফি, কালার দারুন, কিন্তু সাউন্ডট্র্যাকে বাইক কোথায় আর ডায়লগ কোথায়।

    এরকম অনেক কিছু বলা যায়। অনেক দৃশ্যেই কন্ট্রাস্ট বেশি আর নীল বেশি মনে হয়েছে আউটডোরে। এগুলো ম্যাটারই করে না মূল জায়গাটা ঠিক থাকলে। মূল গন্ডগোল মূল জায়গাতেই। উদাহরণ স্বরূপ বলছি, সুন্দর কালার কো-অর্ডিনেটেড সিকোয়েন্স। ডন বসে আছে গাড়িমার্কা সোফায়, কোক-টোক নিচ্ছে। আশেপাশে ডনের কোনো বডিগার্ড কি গানম্যান নেই কেন? ওই গাড়িমার্কা সোফাটা ওখানে কোত্থেকে এলো? দেখেই তো মনে হচ্ছে প্রোডাকশনের ছেলে বসিয়ে দিয়ে গেছে। একটা ওরকম ওয়্যারহাউস মার্কা জায়গায় ওই সোফাটা আসবে কেন? ওটা কিসের ওয়্যারহাউস? একদিকে টায়ার, ড্রাম, তার মধ্যে আবার টেবিল ল্যাম্প, ওই বিদঘুটে গাড়িমার্কা সোফা; মানে জায়গাটা কি? কি হতো ওখানে আগে? একদম কনভিন্সিং নয়। বাস্তবের সাথে মেলে না। এটাও সম্ভবত দিনেরবেলা। কারণ যে ক্যারেক্টার গুলো ঢুকছে সেগুলোকে লাস্ট দিনেরবেলায় দেখেছিলাম। মানে বাইরে সূর্য, এদিকে ভেতরে পুরো নীল ধোঁয়া ধোঁয়া। তার মধ্যে আবার ওই সোফাটার ওপর আবার ওপর থেকে একটা ছোট্ট ইয়েলো সোর্স পড়ছে। মানে, এটা মাফিয়ার ঠেক, না সিনেমাটোগ্রাফারের? এই জায়গাটার আলোটা দেখতে খুব ভালো নিশ্চয়ই স্ক্রিনে, কিন্তু বাস্তবে করেছেটা কে? ওয়ারহাউসে আলো লাগানোর পেছনে কোন মাফিয়া এত চিন্তাভাবনা করে?
    আসলে সিনেমাটোগ্রাফিটা ইনভেন্ট করার বিষয়, নকল করার নয়। অনুরাগ কাশ্যপ করেছে বলে আমিও কালার জুড়ে দিলাম যেখানে যেরকম পারলাম, ভাবলাম না কোথায় এবং কখন, এটা কোনো কাজের কথা নয়। বাস্তববুদ্ধি থাকলে এই ধরণের সমস্যাগুলো এড়ানো যায়।

    যাক গে, আমার সময় শেষ হয়ে আসছে। আশা করি কৌতূহল নিরসন ঘটাতে পেরেছি যে কিসে আপত্তি এবং কেন আপত্তি! এতোকিছুতেও কোনো আপত্তিই হতো না এই কলার তোলা অভদ্রতা না দেখতে হলে। দীপাংশুর কমেডি দেখবো বলে নিজের পকেটের পয়সা দিয়ে সাবস্ক্রাইব করেছিলাম। সায়ন্তনের ব্যোমকেশ দেখেছিলাম তারপর। আশা জেগেছিলো হয়তো নতুনদের একটু বেটার কাজ করার সুযোগ দিতে চাইছে হইচই, নিজেরাও একটা নতুন প্ল্যাটফর্ম যেহেতু। সে আশা যে ভ্রম ছিল সেটা হাড়ে হাড়ে টের পেয়েছি এই "ওয়েবসিরিজে বিপ্লব" প্রত্যক্ষ করতে গিয়ে। বিপ্লবটা ওয়েবসিরিজে নয়, তার সাথে যুক্ত লোকজনের হাবভাবে হয়ে গেছে যা বুঝছি।

    শেষ একটা কথা বলে শেষ করি। মাছ চেনার ব্যাপারে। একজন সৎ মৎস্যব্যবসায়ী এবিষয়ে তাঁর খদ্দেরদের সাহায্য করে থাকেন। নিজেই বলে দেন, এটা নেবেন না, কিংবা, ঐটা ভালো আছে দেখতে পারেন। মাছ চিনতে কিছু এলেমও লাগে বৈকি। মাছ কাটার সময় রক্ত দেখে বোঝা যায় মাছটা ক'দিন বরফে ছিল। ওষুধে চোবানো মাছের চোখ দেখলে বোঝা যায় মালটা ওষুধের। এই যে এলেমটা লাগে চেনার জন্য সেটা মৎস্যবিক্রেতা জানেন বৈ কি। আমি মাছ মোটেই চিনি না, সেই আমিই যখন জানি তিনি তো জানবেনই। এবার কখনও কখনও এরকম হয় যে ভালো বলে ধরিয়ে দেওয়া মাছ হয়তো খারাপ বেরোলো। পরের দিন বাজারে গিয়ে মাছওয়ালাকে সেকথা জানালে তিনি সেদিনকার মাছটা প্রানপনে ভালো দেওয়ার চেষ্টা করেন। হয়তো ওজনের চেয়ে দামও কম নেন কিছুটা। ব্যবসাটা এভাবেই হয়। "আপনি মাছের কি বোঝেন" বা "দেখান দেখি মাছটা কোনখানে খারাপ ছিল" কিংবা "মাছ ধরেছেন কখনও? আগে ধরুন তারপর বলতে আসবেন" বলে হয় না। যাকে তাকে মাছের কোয়ালিটির নিন্দেমন্দ করার জন্য ওই বিক্রেতা বা তাঁর দোকানের কর্মচারীরা যদি বাছবিচারহীনভাবে ক্রেতাদের গলাধাক্কা দেওয়া শুরু করেন খুব শিগগিরই তাঁকে ক্রেতার অভাবে পাততাড়ি গোটানোর ব্যবস্থা করতে হতে পারে। এটুকুই বলার ছিল। কাজে গেলাম।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ | ১৮০৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • ® | 785612.35.340112.34 (*) | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:৫৪65516
  • অনর্থক এসভিএফের সাথে যুদ্ধ করে লাভ নেই।ওরা এম্নিতেও জিজিতে যাবে।মানে গাধার ইয়েতে।বরং রোমা দেখুন।আর ল্যান্থিমোসের নতুন ছবি, যেটাতে র‍্যাচেল ওয়েইস আছেন।দুটোই টরেন্টে এসে গেছে
  • Anamitra Roy | 561212.187.8945.181 (*) | ২৪ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৩:৩৪65517
  • রোমা তো নেটফ্লিক্স-এই আছে। দ্য ফেভারিট এসে গেছে টরেন্টে অলরেডি?
  • Anamitra Roy | 561212.187.8945.181 (*) | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ০২:২৩65520
  • প্রতিভা দি, ব্যোমকেশগুলো দেখতে পারো, মানে সায়ন্তন ঘোষালের পরিচালনায় যে কটা। বেশ আশাব্যঞ্জক ছিল।

    পাই দি, না, আসেনি। কখনও যদি আসে অ্যাড করে দেব।
  • প্রতিভা | 671212.72.123412.195 (*) | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:২১65518
  • আমি হৈচৈয়ের নামই জানতাম না। এখন ভাগ্যিস জানি। ভুল করেও ওদের কোন সিরিজ দেখে ফেলার চান্স রইল না।
  • pi | 781212.194.6712.159 (*) | ২৫ ডিসেম্বর ২০১৮ ১২:৫৪65519
  • ১-৯ এর কোন জবাব এসেছে ?
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:২০65521
  • ভেঙ্কটেশ-এর মালিক-দের নামে কিছু একটা চার্জ ছিল, কাগজে পড়েছিলাম, বন্দর এলাকায় বেআইনীভাবে অনেক জমি দখল করে স্টুডিও বানানো - এরকম কিছু।
    সিনেমা মানেই ব্যাপক টাকা দরকার, যত রাজ্যের করাপ্ট প্রোডিউসার-দের ওপর নির্ভরতা - এটা একটা বাজে ব্যাপার।
    'ওয়ান রুপি ফিল্ম প্রজেক্ট' -টা দাঁড়িয়ে গেলে সত্যিই ভাল হত
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ২৯ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৯:৩২65522
  • 'কিন্তু কলকাতা শহরে কো-প্রোডাকশন অফার করার মতো একটা লোকও ছিল না' - এই কো-প্রোডাকশনে কেমন বাজেট দরকার?
  • Anamitra Roy | 561212.187.8945.58 (*) | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:২৯65523
  • @aranya, ২০১৩-র হিসেবে অনুযায়ী লাখ তিনেক। অথবা ফ্রি কালার কারেকশন এবং ফ্রিতে সাউন্ড (ডাবিং, ফলি, মিক্স, মাস্টার, এবং ট্র্যাক গুলো রেকর্ড ও অ্যারেঞ্জ করা ঠিকঠাকভাবে) করার সুবিধা। কো-প্রোডাকশন মানে আসলে দ্বিতীয়টা। এই অফারগুলো এসেছিলো জয়পুর, বেঙ্গালুরু এবং মুম্বাই থেকে। সেখানে টিম নিয়ে গিয়ে কাজ করার জন্যই যা বাজেট লাগতো সেটা জোগাড় করা সম্ভব ছিল না তখন। কলকাতায় যা প্রস্তাব পেয়েছি সবই "এত শতাংশ ছাড় দেওয়া যেতে পারে বদলে ডিভিডি আমরা বেচবো" জাতীয়। তবে কাজটা এখন আর করা সম্ভব বলে মনে হয় না। একজন অভিনেতা, যদিও সামান্য সময়ের স্ক্রীন প্রেজেন্স ছিল, আর জীবিত নেই। তার অংশটা অন্য কাউকে দিয়ে ডাব করাতে হবে। দু একজন মাঝে বিদেশ চলে গিয়েছিলো, ফিরেছে কিনা কে জানে! তাছাড়া আমি নিজেও ফ্রিল্যান্সিং-এ পুরোপুরি ঢুকে গেছি। মাসদুয়েক ক্লায়েন্টদের কাজ না করে অন্য কিছু করা সম্ভব নয়। ফলে একজন পোস্ট-প্রোডাকশন সুপারভাইজার দরকার। এইরকম ভাবে প্রতিকূলতার তালিকা ক্রমশ লম্বা হয়ে যাচ্ছে।
  • ধনঞ্জয় | 785612.35.232312.86 (*) | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৫০65524
  • এক ভদ্রলোক অনেক পড়াশোনা করে এখন বিদেশে গিয়ে সাহেবদের পদসেবা করছে। তিনি বলেছিলেন ওয়েবসিরিজ দেখলে নাকি কেউ সিনেমা সিরিয়াল দেখবে না । তার কথা শুনে " হইচই " আপলোড করে কয়েকটা দেখে মনে হল এর থেকে স্টার জলসায় " ইরাবতীর চুপকথা" , " ফাগুন বউ " তো অনেক ভালো । আমার মোবাইলে " হইচই " কে বিদায় দিয়ে স্টার জলসা, জি বাংলার, কালার্স বাংলা, আকাশ আট দেখছি । হিন্দি গুলোর ট্রেলার দেখে মনে হল সবের মধ্যে কি খালি সেক্স আর মারামারি ? যারা দেখেছেন তারা জানালো ওখানে মহিলারা উর্ধাঙ্গে কিছু পড়ে না । আর দেখতে ইচ্ছে করল না ।
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৮:২০65525
  • অনমিত্র, বুঝলাম।
    একটা ভাল সিনেমা তৈরী হয়ে পড়ে রইল, এটা দুঃখের
  • Anamitra Roy | 561212.187.8945.58 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২২65526
  • @aranya, ভালো কিনা জানি না, অনেক সীমাবদ্ধতা এবং প্রতিমূলতার মধ্যে কাজ করতে হয়েছিল; তবে আনিউজুয়াল ছিল অন্তত। মানে এক্সটেন্ডেড ট্রেলারে যেরকম লেখা ছিল, সিনেমা বাট নট কোয়াইট। ;-)
  • এই | 238912.66.90023.199 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২৬65527
  • এই ধনঞ্জয়টি বগ্গসন্তান সেজে বাম্লা রাবিশ ফিলিম প্রোমোট করে না?
  • Anamitra Roy | 561212.187.8945.58 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:২৯65528
  • @ধনঞ্জয়, সেক্স আর মারামারি নিয়ে আপনার বিশেষ আপত্তি রয়েছে বুঝতে পারছি। কারুর ওরকম কোনো আপত্তি না থেকে থাকলে স্যাক্রেড গেম্স্-এর প্রথম সিজন সত্যিই দুর্ধর্ষ। মির্জাপুর-ও বেশ ভালো। স্যাক্রেড গেম্স্ অবশ্য ফর্মের দিক থেকে অনেকটাই নার্কোস-এর মতন। নার্কোস আর তার পরবর্তীতে নার্কোস মেহিকো অত্যন্তই ভালো। তবে ওখানে মহিলাদের উর্দ্ধাঙ্গে আরও ঘনঘন কাপড় থাকে না, এই যা মুশকিল আরকি! :-)

    তো, মহিলাদের কাপড়ের পরিমানের দিক থেকে দেখলে " ইরাবতীর চুপকথা" আর " ফাগুন বউ " আমি নিশ্চিত অনেক অনেক এগিয়ে রয়েছে এসবের থেকে। :-)
  • S | 7845.15.891223.242 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫১65529
  • হিন্দিতে খুব ভালো ওয়েব সিরিজ হয়েছে বেশ কতগুলো। টিভিএফেরে গুলো তো আমার বেশ ভালই লেগেছে। সেক্রেড গেমস তো দারুন বটেই।

    বাংলা টিভি সিরিয়ালগুলোর মতন খারাপ কন্টেন্ট আর প্রোডাকশান আমি আর কোথাও দেখিনি।
  • Anamitra Roy | 561212.187.8945.58 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৪:৫১65530
  • @এই, বঙ্গসন্তান নামেও একজন ছিলেন তো সাইটে। আগে আইএফসি বিষয়ক লেখায় কমেন্ট করতে দেখেছি। ইনিও তিনিই বলছেন?
  • Anamitra Roy | 561212.187.8945.58 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:০৯65531
  • @S, কি আর করা যাবে বলুন। মিডিয়ামটার সম্পর্কে জানাটা একরকম, আর কলকাতায় কাজ করে জানাটা আবার আরেকরকম। এই দ্বিতীয় ধরণের মানুষজনই এই কাজগুলোর দেখভাল করেন। এর ব্যতিক্রম যে নেই তা নয়। কিন্তু এখানে "মার্কেট চায়" এই অনুমানের ভিত্তিতে কিছু ব্যাপার ধরে নেওয়া আছে। তার বাইরে যাওয়ার উপায় নেই। মানে এমনটাও হয় যে একটা অত্যন্ত খারাপ সিরিয়ালের সেটে লাঞ্চ-এর সময় দুজন বার্গম্যান কিংবা কিম কি ডুক নিয়ে আলোচনা করছে। কিন্তু তাদের সেই আলোচনাটা কোনোভাবেই প্রোডাকশনটার ওপর কোনো প্রভাব ফেলবে না, আর সেটা তারা নিজেরাও জানে।
  • | 238912.66.9004512.122 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৫:৫২65532
  • হুঁ স্যাক্রেড গেমস দিব্বি লেগেছে। তবে বইটা আরো বেশী ভাল।

    বাংলা ওয়েব সিরিজ দেখিনি। কিন্তু সিরিয়াল! ওয়াক থুহ! অসম্ভব রিগ্রেসিভ আর বাজে মেন্টালিটির চাষ চলে। এই বাংলা সিরিয়ালগুলো এরকম আস্তাকুঁড়মার্কা মানসিকতা কোত্থেকে তুলে আনে কে জানে!

    ইংরিজি ওয়েব সিরিজও চমৎকার।

    'এই' সম্ভবতঃ ঠিকই বলেছেন। ওন্য মৃণাল সেনের ব্লগের 'রাজ'ও সম্ভবতঃ বঙ্গসন্তান।
  • শঙ্খ | 2345.110.564512.172 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৬:০৫65533
  • হ্যাঁ ঠিক ধরেছেন। ইনি সাহাদা, আবার ছিনাথ বহুরূপী সেজে এসেছেন। কেউ কেউ পড়াশোনা করে বিদেশ গিয়ে সাহেবদের পদসেবা করে, ইনি যেহেতু পড়াশোনা করেন নি, তাই টলিউডে থেকে মোহতা এন্ড কোং এর 'পাদ' সেবা করেন।
  • Anamitra Roy | 561212.187.8945.58 (*) | ৩১ ডিসেম্বর ২০১৮ ০৬:৪৬65534
  • @দ, বইটা আমার পড়া নেই। একটা কথা জানার ভারী ইচ্ছা, বইতে কি "গড" ডায়লগটা ছিল? ওটা আসলে পাবলো এস্কোবারের একটা সংলাপ প্রচন্ড মনে করিয়ে দেয়।

    @শঙ্খদা, এতগুলো বঙ্গসন্তান? বাংলা মায়ের ক্ষী জ্বালা মাইরি!
  • Anamitra Roy | 671212.206.342323.218 (*) | ২৯ জানুয়ারি ২০১৯ ০৮:১১65536
  • এই মাল নামিয়ে তার আবার ফিল্ম-উইদিন-ফিল্ম আর নবারুণ!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে মতামত দিন