এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • মাজার সংস্কৃতি

    Muhammad Sadequzzaman Sharif লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৩ এপ্রিল ২০১৮ | ২১১১ বার পঠিত
  • মাজার সংস্কৃতি কোন দিনই আমার পছন্দের জিনিস ছিল না। বিশেষ করে হুট করে গজিয়ে উঠা মাজার। মানুষ মাজারের প্রেমে পরে সর্বস্ব দিয়ে বসে থাকে। ঘরে সংসার চলে না মোল্লা চললেন মাজার শিন্নি দিতে। এমন ঘটনা অহরহ ঘটে। মাজার নিয়ে যত প্রকার ভণ্ডামি হয় তা কল্পনাও করা যায় না। মাজার ভেদে লক্ষ লক্ষ টাকার ব্যবসা হয়। বাংলাদেশের সব চেয়ে বড় মাজার সম্ভবত সিলেটের শাহজালালের মাজার। ওই মাজারের ব্যবসা দেখেই কিনা কে জানে, সিলেটে অলিতে গলিতে মাজার। চট্টগ্রামের অবস্থাও তেমনই। বায়জিদ বোস্তামির মাজার কে ঘিরে জমজমাট অবস্থা। আরেকটা মাজার আছে যেখানে যাওয়ার হয় নাই আমার, কুষ্টিয়ার লালনে মাজার। যেহেতু দেখি নাই তাই মন্তব্য করব না। এর বাহিরে যা দেখছি সব মাজার কে ঘিরে ধান্দা, বিরাট অংকের টাকার খেলা। ঢাকা শহরের প্রাণ কেন্দ্রে মাজার চুটিয়ে ব্যবসা করছে কেউ বলার নাই। রাজনীতিবিদ থেকে শুরু করে সমাজের উঁচু নিচু সবার যাওয়া আসা আছে মাজারে। এরশাদ ক্ষমতায় থাকতে দেশের সব মাজারেই পায়ের ধূলি দিয়েছিলেন, যদিও তাতে শেষ রক্ষা হয়নি।

    আমি আসলে মাজারের বিপক্ষে কুৎসা গাইতে চাচ্ছি না। পরিস্থিতিটা বললাম আর কি। যা বলতে চাচ্ছি তা হচ্ছে মাজারের অন্য একটা দিক। মাজার সংস্কৃতির শক্তি যেটা। আমার কাছে মনে হয় মাজার সংস্কৃতির শক্তি হচ্ছে এর অসাম্প্রদায়িক ব্যাপারটা। কোন কারনে বা কেন একজন খাঁটি হিন্দু মুসলিম একজনের মাজারে মানত করে? যে মানত করে সে কি সব জায়গায় মানত করে? মানত করা অভ্যাস তাই করে? আমার মনে হয় না। সিলেটে দেখছি, ভারতের আজমেরি শরীফের কথা শুনেছি, ধর্ম বর্ণ নির্বিশেষে মানুষ এই সব মাজারে গিয়ে বসে থাকছে, মাথা ঠুকছে। এই যে অসাম্প্রদায়িক চরিত্র মাজারের, এটাই শক্তিশালী করে রেখেছে মাজার কে। মাজার কাঁটাতারের বেড়া কেও অতিক্রম করে। শেরপুরের সীমানা মানে বাংলাদেশের সীমানা ঘেঁষে যে মাজার আছে সেখানে যখন ওরস হয় বর্ডার খুলে দেওয়া হত এই সেদিনও। কোন এক অজানা কারনে এখন বন্ধ আছে। চরনতলায় যে মেলা হয় তা যদিও ওরস না, কালীপূজা উপলক্ষে মেলা তবুও সেই মেলায় বর্ডার ওপেন থাকত সব সময়। আমার দেখার সৌভাগ্য না হলেও আমার বন্ধুদের অনেকেরই এই দৃশ্য দেখার সৌভাগ্য হয়েছে। কিন্তু কোন অজানা কারনে এখন আর বর্ডার ওপেন থাকে না। যদিও কামালপুরের মাজারের ওরসের সময় কাঁটাতারের দুই পাসে মানুষ জময়ায়েত হয়, দুই পাসেই মেলা বসে, কাঁটাতারের ফাঁক দিয়ে হাত ঢুকিয়ে দান খয়রাত সব চলে, শুধু বর্ডার ওপেন থাকে না। বিএসএফ আর বিজিবি দাঁড়িয়ে থাকে পাহারায়।

    আমি এসব থেকে শত হস্তে দূরে থাকার মানুষ। শুধু কৌতূহল বসে শেরপুরের খুব প্রাচীন মাজার শাহ কামালের মাজাররে বার্ষিক ওরসে গিয়ে ছিলাম। মাস ব্যাপী ওরস। হাজার হাজার মানুষ আসছে মাজারে। এতদিন ধরে দেখছি এই মাজার কিন্তু এর এই বিশাল সৌন্দর্য আমার চোখে পড়েনি। সত্য হচ্ছে ওরস চলাকালে এই এলাকা থেকে দুরেই থাকতাম। আমার যাওয়া হলোও আমার এক হিন্দু বন্ধুর মাধ্যমেই। ও মাজারে শিন্নি দিবে। আমাকে বলল থাকিস, আমি রাজি হলাম ব্যাপারটা দেখার জন্য। মাজারে শিন্নি কি বস্তু তা জানতাম না, শুনেই এসেছি শুধু। দেখলাম মানুষের ঢল আর সার্বজনীন চরিত্র। মনে হলো দেখা যাক ভিতরে কি আছে। খুব বেশি কিছু অবশ্য জানতে পারলাম না। যেদিন আমি গেলাম সেদিন শেষ দিন, আগের রাতেই আনঅফিসিয়ালই ওরস শেষ, ওরস উপলক্ষে মেলা বসে সেই মেলাও শেষ। তবুও মানুষ প্রচুর মানুষ। মেলার এক প্রান্তে পাগলদের জন্য আলাদা করে জায়গা করে দেওয়া আছে। সেখানে পলিথিনের তাঁবু টাঙ্গিয়ে তাঁরা থাকে। ওরস বা মেলার প্রাণ এরা। এরাই সারা দেশে ঘুরে ঘুরে বিভিন্ন ওরসে যোগ দেয়। তাঁদের তাঁবু ঘুরে দেখলাম। গাঁজা নিয়ে এখানে কোন লুকোচুরি নেই। বানাচ্ছে, খাচ্ছে, মেলে নিয়ে বসে আছে। শেষ দিন দেখে তাদেরও ঘর গোছানোর চিন্তা, পরবর্তী ঠিকানা জামালপুরের দুর্মুঠ। সেখানেও শাহ কামালের ওরস। দুই জায়গায় একজনের মাজার? কাহিনী বলছি, একটু অপেক্ষা …

    আমাদের শেরপুরে যে শাহ কামালের মাজার সেখানে আসলে শাহ কামালের কবর নেই। এখানে তার সঙ্গী সাথীর কবর আছে আর তার এক ঘোড়ার কবর আছে। এই তথ্য আমি সেখানকার খাদেমকে বলে জানতে পারিনি, তিনি অত কিছু জানেন না। শুধু জানেন তার বাপ দাদা এই মাজারের খাদেম ছিলেন, এখন তিনি খাদেম। আমি একটু ঘাঁটাঘাঁটি করে জানলাম যে শেরপুরে এই স্থানে তিনি কিছুদিন বসবাস করেন। এখানে তার সহচর কয়েকজনের কবর আছে। আবার ভিন্ন মতও আছে।শাহ কামাল এবং শাহ জামাল দুইজন ভাই বলে পরিচয় পাওয়া যায়। শাহ জামালের নামে জামালপুর জেলার নামকরণ হয়েছে। ১৫০০ শতকের দিকে বাংলায় যে ১২ জন আউলিয়া ইসলাম প্রচারের জন্য এসেছিলেন, যার মধ্যে অন্যতম শাহজালাল, এই দুই জন সেই সময় এদের সাথেই ছিলেন। চার পাঁচশ বছর পুরাতন মাজার দেখেই সম্ভবত ধীরে ধীরে এই মাজার গুলো সার্বজনীন আকার ধারণ করেছে।

    দুই একদিন পরেই আমার দুর্মুঠ যাওয়ার সুযোগ হয়ে গেলো। এবার আমার আগ্রহ আসল মাজার দেখার, যেখানে এই আউলিয়া শুয়ে আছে। ভণ্ডামি কোন মাত্রায় চলে তা দেখাও আরেকটা উদ্দেশ্য। শেরপুরের মাজারে তুলনায় এই মাজারের ব্যাপকতা অনেক বেশি। বিশাল এলাকা নিয়ে মেলা শুরু হয়ে গেছে। হেন জিনিস নাই যা মেলায় উঠেনি। পাগলদের আড্ডাও অনেক বড়। সারা দেশ থেকে সব হাজির হয়ে গেছে। গান চলছে, ঢোল করতালের শব্দে পরিবেশ যেন হয়ে উঠছে অন্য রকম। ওরস নাকি এখনো জমেনি, কিন্তু আমি পা ফেলার জায়গা পাচ্ছি না। জমে গেলে সেখানে নাকি দম বন্ধ হয়ে যাওয়ার অবস্থা হয়। এক দোকানীর সাথে কথা বললাম মাজার সম্পর্কে, তিনি বেশ আত্মবিশ্বাসের সাথে বললেন, কয়েক হাজার বছর পুরাতন মাজার এটা। বুঝলাম মিথ কিভাবে তৈরি হয়। মাজার দেখলাম। সিলেট, চট্টগ্রামের মত অত বড় না বলেই হয়ত ধান্দা বা ভণ্ডামির মাত্রা তেমন দেখলাম না। তবে যেটা শুরুতেই বলেছিলাম, অসাম্প্রদায়িক চরিত্র, তা পুরোপুরি বিরাজমান। শাঁখা সিঁদুর পড়া নারী, ধুতি পড়া বৃদ্ধ, টুপি পড়া মাওলানা সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে কবরের কাছে যাচ্ছে, খাদেম কে যার যার সাধ্যমত দান খয়রাত করে আসছে। পাসে সরে যাচ্ছে অন্য জন এসে দাঁড়াচ্ছে। রান্না করে আনছে, কেউ এখানেই রান্না করে খাওয়াচ্ছে সবাই কে। এখানেও এক মাস ধরে ওরস চলবে এবং এটা নিশ্চিত এই একমাস আশেপাশের কোন পরিবার না খেয়ে থাকবেন না। ঐতিহাসিক মূল্য ছাড়াও, মাজারের অসাম্প্রদায়িক চরিত্র আর এর অছিলায় গরিব দুঃখীদের তিন বেলা খাওর ব্যবস্থার জন্যও না হয় টিকে থাক মাজার গুলো। যতদিন না আমরা বুঝতে শিখছি কবরে শায়িত কেউ আমার জন্য কিছু করতে পারবে না, যতদিন না আমরা একজন অন্য জনের উপরে ধর্মের কারনে ঝাঁপিয়ে পরা বন্ধ না করছি ততদিন মাজার থেকেই অসাম্প্রদায়িক চেতনা ছড়িয়ে পরুক।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৩ এপ্রিল ২০১৮ | ২১১১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কল্লোল | 116.51.22.122 (*) | ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৫৮62249
  • ভালো লাগলো।
    একসময় ফারজীরা এই সংস্কৃতির বিরুদ্ধে ফতোয়া দিয়েছিলেন। মুসলমানের কাছে এটি বুত্পরস্তি বা পৌত্তলিকতার পাপ। এই মাজারে গিয়ে নিজের দুঃখ দূর করার জন্য মানত করা মানে আল্লা যিনি একমাত্র তাকে অস্বীকার করা - ফারজীদের এইসব যুক্তি ছিলো।
    কিন্তু তাতে কোন ফল হয় নি।
    পশ্চিমবাংলাতেও সতী মায়ের মেলা, কেঁদুলীর মেলার মতো বহু মেলা ও দাদাপীরের মাজার, ফুরফুরা শরিফের মাজার সহ বহু মাজারে হিন্দু মুসলমান নির্বিশেষে যোগ দেন।
    এই ফকির-দরবেশ-বাউলেরা তো বাংলার সুফি ঐতিহ্যের ধারা। এখানে হিন্দু-মুসলমান হয় না, শুধুই মানুষ হয়।
    একই দৃশ্য আজমীর শরিফে, নিজামুদ্দীন আওলিয়ার দরগায়, সলিম চিস্তির দরগায়।
  • শঙ্খ | 52.110.141.130 (*) | ২৪ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:৩৬62250
  • ভালো লাগল।
  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | 129.30.38.131 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৫:৫৩62251
  • সুফিবাদ আর মাজার মিলেমিশে আছে। এই উপমহাদেশে ইসলাম প্রথমে আসছে সুফিবাদের হাত ধরে। পরে আসছে অন্যভাবে।সুফিবাদের হাত ধরে আসার কারনে এইদিকের ইসলামের চেহারা আর আরবের ইসলামের চেহারা ভিন্ন। আরবে যতদিনে ওহাবিজম চালু হইছে ততদিনে এদিকে সুফিবাদের মাধ্যমে ইসলাম প্রচার পেয়ে গেছে। পরবর্তীতে ফরায়েজিরা নতুন করে সালাফি তথা ওহাবি মতবাদ চালু করতে চাইলেও সফল হয়নি। এখন পর্যন্ত এই উপমহাদেশের ইসলামের চেহারা আর আরবের ইসলামের চেহারা ভিন্ন।
    সুফিবাদ নিয়ে কিছু বলি নাই লেখায় কারন সুফিবাদ নামক মহাসমুদ্র থেকে আমি এক গ্লাস পানিও পান করি নাই। তাই সেই বিষয় নিয়ে কিছু বলি নাই। আমি নিজেও মাজারে বিশ্বাস করি না। ধর্মমতে আমি জানি মৃত ব্যক্তি আমার জন্য কোন কিছু করতে পারবে না। উল্টা আমি তার জন্য দোয়া করতে পারব, সেই দোয়ার ভাগ তিনি পেতে পারেন। কিন্তু এও জানি সুফিবাদ এক অতল সমুদ্র, আমার মত মানুষ এর তল পাবে না সহজে। লেখা ভাল লেগেছে জেনে ভাল লাগল। ধন্যবাদ।
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ২৫ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:২৫62252
  • দিব্য লেখা, বেশ লাগল।

    'পরবর্তীতে ফরায়েজিরা নতুন করে সালাফি তথা ওহাবি মতবাদ চালু করতে চাইলেও সফল হয়নি। এখন পর্যন্ত এই উপমহাদেশের ইসলামের চেহারা আর আরবের ইসলামের চেহারা ভিন্ন'

    - এটা সত্যি হলে আনন্দের কথা। আমার ধারণা ছিল বাংলাদেশে ওয়াহাবি মতবাদ ক্রমেই প্রবল হচ্ছে, সৌদি আরবের পেট্রো ডলারে প্রচুর মাদ্রাসা তৈরী হচ্ছে, যারা এতে ইন্ধন যোগাচ্ছে।
  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | 47.111.201.143 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:০৩62253
  • সৌদি টাকা যে আসছে না তা না। তবে আমরা বড় খারাপ জাতি, নুন খায়া গুন গাই না!! মসজিদ হচ্ছে, টাকা আসছে কিন্তু কাজ হচ্ছে না তেমন। তবে প্রভাব যে কিছু পরছে না তা না। প্রভাবের কারনেই তো ব্লগার হত্যা, জঙ্গি উত্থান, হলি আর্টিজেন... তারপরেও সংখ্যায় তারা আর কয়জন? এখনো সংখ্যা গুরু আমরাই। ধন্যবাদ।
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৪৫62254
  • 'এখনো সংখ্যা গুরু আমরাই' - আশা আছে তাহলে। ভাল লাগল
  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | 47.111.201.107 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৮ ০৮:০২62255
  • অবশ্যই আশা আছে। বললাম না আমরা নুন খাই কিন্তু গুন গাই না!! যাদের এই অভ্যাস আছে তাঁদের কে কিনে নেওয়া মুশকিল। একদম বাস্তব অভিজ্ঞতা বলি। আমার বাড়ি বাংলাদেশে শেরপুর জেলায়, এখানে রাজাকার কামরুজ্জামানের বাড়ি। আমার বাড়ির পাসেই তার শশুর বাড়ি। ছোট বেলায় আমরা যে কোন অনুষ্ঠানেই তার কাছ থেকে চাঁদা নিতাম। বলতে দ্বিধা নেই তিনি ভাল চাঁদা দিতেন। বড় হয়েও দেখলাম একই অবস্থা, সারা জেলার মানুষই উনার কাছ থেকে নানা ছলে বলে টাকা নিত। উনার নামে কি পরিমাণ মানুষ ঢাকায় বিনে খরচে চিকিৎসা সেবা নিয়েছে তার কোন হিসেব অন্তত আমার জানা নাই। কিন্তু আমরা অন্য জায়গায় একদম কঠিন! যতই টাকা দেক আর আমরা নেই, কোনদিন কামরুজ্জামান আমাদের এখান থেকে নির্বাচনে পাশ করতে পারিনি। টাকার জোরে ভোট বাড়ছিল আস্তে আস্তে কিন্তু জিততে পারেনি কোন বারেই। ফাঁসি না হলে কি হত জানি না, রাজনীতির মার প্যাঁচে সামনে কোনদিন এখানকার এমপি হতে পারত কিনা জানা নেই। তবে আমরা কোনদিন দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিইনি। কামরুজ্জামান জামাতের যে মাপের নেতা ছিলেন সেই মাপের নেতা হিসেবে সে যে প্রতিবার হেরে গেছে এখান থেকে এটা আমাদের একটা গর্বেরও বিষয়।
    শুধু আমার এলাকা না। ওয়াজ শুনান আর যাই শুনান ভোটের সময় আমরা নৌকা আর ধানের শিষ খুঁজে নেই। এও কারনেই যে মাওলার ওয়াজে লাখ লাখ মানুষ হয় তার মার্কায় সিল পরে না শয়ে শয়েও!! এইটা আমাদের চরিত্র। এ আছে বলেই টিকে আছে। নাহলে এতদিনে পীর ফকিরেরাই সরকার গঠন করে ফেলত।
  • কল্লোল | 233.191.35.105 (*) | ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০২:৫৫62256
  • এটা বেশ কৌতূহলোদ্দীপক। সুবিধা নিচ্ছে, ভোট দিচ্ছে না।
  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | 129.30.35.48 (*) | ২৭ এপ্রিল ২০১৮ ০৬:৩৫62257
  • সুবিধা নিচ্ছে ভোট দিচ্ছে না এটা আমার এলাকার কথা বললাম। কিন্তু যে পীর সাহেবের ওয়াজে লাখ লাখ মানুষ হয়, সারা দেশে যার ফ্রাঞ্চাইজ খোলা সে কেন নির্বাচনে জামানত হারাচ্ছে? কারন এইদিকের লোক রাজনীতি আর ধর্ম দুইটা দুই জায়গায় রাখতে পছন্দ করে। এইটাই হচ্ছে টার্গেট অনেকের। তাঁরা এটাকেই ভাঙ্গতে চাচ্ছে। ধর্ম আর রাজনীতি এক করে মানুষকে বোঝাতে চাচ্ছে অনেকে। এই চেষ্টার নাম হচ্ছে হেফাজতে ইসলাম, জেএমবি, হলি আর্টিজেন। তবে তারা যারাই হোক বা যে নামেই হোক, তারা যে ভুলটা করছে তা হচ্ছে এদিকের লোকের পালস বুঝতে না পারা। পাকিস্তান আমলেরও আগে থেকে এদিকের লোকজন রাজনৈতিক ভাবে সচেতন। পাকিস্তানও বলছিল যারা পাকিস্তানের বিরুদ্ধে অস্ত্র ধরেছে তারা কাফের, তারা ইসলামের ধ্বংস চায়। লাভ হয় নাই। এখনো হবে না তা তীব্রভাবে আশা করি। এখনো আমরা ওয়াজ শুনি কিন্তু ভোট দেই না। যে মসজিদের ইমাম সাহেব রাজনৈতিক কথা বার্তা কইতে চায় সে ফিনিশ হয়ে যায়। মানুষজন মুখ ফিরিয়ে নেয় তার কাছ থেকে। তাই আশা আছে, আলো জ্বলবেই।
  • aranya | 172.118.16.5 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০১:০৮62258
  • আপনার লেখা খুবই ভাল লাগছে। বাংলাদেশকে নিজের দেশ বলেই মনে হয়। গুরু সাইট-এর মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষজনের সাথে কথাবার্তা হচ্ছে, এটা আমার কাছে খুবই আনন্দের ব্যাপার।

    'পীর সাহেবের ওয়াজে লাখ লাখ মানুষ হয়' - কিছু ওয়াজের ক্লিপিং শুনেছি, যাতে স্লোগান থাকে অন্য ধর্মের বিরুদ্ধে বা অন্য ধর্মের মানুষ - কাফের-দের বিরুদ্ধে। এ ধরণের ওয়াজে র জনপ্রিয়তা কেমন?
  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | 129.30.32.77 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২১62260
  • আমি সম্ভবত বুঝাতে পারছি না। পীরের ওয়াজে মানুষ হয় যেহেতু তাই তারা যে জনপ্রিয় তাতে কোন সন্দেহ নেই। কিন্তু তা ওই ওয়াজ শুনা পর্যন্তই। যখন ভোটের প্রসঙ্গ এসে যায় তখন এই ভোটারদের চেহারা পরিবর্তন হয়ে যায়। তবে তাদের সমর্থক যে নাই তা না। আমাদের এখানে কামরুজ্জামান নির্বাচনে হারলেও ভোট তো পেয়েছিল খারাপ না। আমি বলতে চাচ্ছি ভোট বেশি পেলেও তা এখনো কমই আছে অন্য দল গুলো থেকে। আবার অন্য এলাকার কথা যদি বলি সেদিকে তো জামাতের অনেক নেতাই পাশ করেছে। পাশ করেছে অকল্পনীয় পরিমান টাকা খরচ করে। আমার এলাকার উদাহরণ আবার দেই। কামরুজ্জামান জামাতের নেতা ছিলেন। জামাতের অর্থে ইসলামি ব্যাকং চলে। নির্বাচনের সময় কোন চেক ফেক লাগত না কিচ্ছু লাগত না। কাগজের স্লিপে কামরুজ্জামানের স্বাক্ষর থাকত আর টাকার পরিমান লেখা থাকত, ব্যাংকে গেলে টাকা দিয়ে দিত। এগুলা আমরা নিজেরাই দেখছি। অন্য এলাকাও এমন না হওয়ার কোন কারন নাই। টাকা দিয়ে বিভিন্ন জায়গায় নির্বাচনে জিতেছিল জামাত নেতারা। আর ওয়াজ করা হুজুরা কোনদিনই পাস করতে পারেনি। জামানত হারানোর রেকর্ড আছে অনেক মাওলানার। এই ক্ষেত্রে ব্যাতিক্রম হচ্ছে সাইদি। সাইদি ওয়াজ করা হুজুর সাথে আবার জামাত নেতা। সব মিলিয়ে সে পাশ করেছিল নির্বাচন। সাইদি নিজেও অবশ্য রাজাকার ছিল। যাই হোক, ধন্যবাদ আপনাদের কে।
  • কল্লোল | 116.203.176.171 (*) | ২৮ এপ্রিল ২০১৮ ০২:২৯62259
  • এই চিত্রটি কি শুধুই ওই এলাকার? নাকি সামগ্রিকভাবে বাংলাদেশেরও
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন