এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • গোরা নকশাল : শেষ পর্ব

    Kallol Lahiri লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২০ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৩৩ বার পঠিত
  • “ছোট্টমোরগ ঘাড় উঁচু করে স্বপ্ন দেখে
    প্রাসাদের ভেতর রাশি রাশি খাবার!”
    (একটি মোরগের কাহিনী/সুকান্ত ভট্টাচার্য)

    মাথার কাছে অনবরত বেজে চলেছে মোবাইলটা। আমি তখনো ঘুমের ঘোরে। আমি তখনো স্বপ্নে। হাতড়ে হাতড়ে খুঁজে চলেছি তাকে যে আমার এই মুহূর্তের ঘুম নষ্ট করছে। স্বয়ংক্রিয় দূরাভাষের যন্ত্রটি জানাচ্ছে এই এতো ভোরের সংবাদ সুখের নয়। পূর্বের অভিজ্ঞতা বলছে এই বার্তা এনে দিতে পারে অমোঘ নিষ্ঠুর পরিণতি। ঠিকুজি, কুলজি বলছে এই বংশের বেশিরভাগ মৃত্যু শীতকালীন। এবং ঊষা লগ্নে। জড়তা, স্বপ্ন, আখ্যানের অঙ্গ সজ্জা ত্যাগ করে জানতে পারি এই মুহূর্তে টিবি হসপিটালে ১৩৮ নম্বর বেডের পেশেন্টের অবস্থা সুবিধের নয়। যত তাড়াতাড়ি সম্ভব হাজির হওয়া দরকার। আপনি বাড়ির লোক তো? দেখলাম আপনার নাম্বারটাই এখানে দেওয়া আছে। আসছেন তো? আমার হ্যাঁ বা না বলার মতো কোনো অবকাশ থাকে না। কে যেন খামচে ধরেছে আমার পা। কে যেন শিথিল করছে স্নায়ু। কে যেন বলছে কোনো এক মাঘের শীত গায়ে চাপিয়ে কার সাথে যেন সাক্ষাৎ ঘটেছিল?

    সেদিন শ্রীরামপুর লোকাল আসতে চলছিল। ঘন কুয়াশায় ঢেকে ছিল রেল পথ। ঘন কুয়াশায় ঢেকে ছিল আমার প্রায় তারুণ্য পেরোনো দিন গুলো। আমাদেরও কোনো তাড়া ছিল না সেদিন। হাতে ছিল না শীতলার মিষ্টির প্যাকেট, ওষুধের ফর্দ, মায়ের রান্না করে দেওয়া খাবার। ফ্লাস্ক ভর্তি গরম জল। ছিল না অনেক কিছু গিয়ে বলার...অনেক কিছু গল্পের অবকাশ। ঠিক সেই সময়ে জানলার ধারে গাছগুলো শিশিরে আর কুয়াশায় স্নান করছিল অবিরত। কোনো এক কালে কোনো এক মা তার একমাত্র ছেলের মৃত্যুতে শোকে পাথর হয়ে এই হসপিটালটা করেছিলেন। তারপর থেকে মুমূর্ষ টিবি রোগীরা এখানে ঠাঁই পান সরকারী খরচায়। সরকারী অতিথি হয়ে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। আমার যে সুজন এখানে ভর্তি, তিনিও বেশ কিছুদিন সরকারী অতিথি। এর আগেও জীবনের শুরুর বছর গুলোতে তিনি অনেকবার অনেক জায়গায় শুধু সরকারী অতিথি হয়েই কাটিয়ে দিয়েছেন। অনেক গুলো বছর। তার প্রমান স্বরূপ তার একটা পা ভাঙা। একটা চোখে ভালো দেখতে পান না। হাতের মাংস খোবলানো। থমকে দাঁড়িয়ে যাই। একটা ফলকের সামনে। ক্ষয়াটে পাথরের ফলকটা মনে করাচ্ছে এই হসপিটালের স্থাপিত হবার দিনক্ষণ। সবে তখন টিবির চিকিৎসা শুরু হয়েছে। আর তারিখটা বলছে তার কিছুদিন আগে চলে গেছেন এক কিশোর কবি। যিনি পূর্ণিমার চাঁদকে বলেছিলেন “ঝলসানো রুটি”। একজন নার্স আমাদের দিকে এগিয়ে আসেন। ১৩৮ নম্বরের বাড়ির লোক তো? আমি দাদার দিকে তাকাই। আমার সেই ছোট্ট থেকে ক্লাসে প্রথম হয়ে আসা দাদা এখন তার কর্পোরেট অফিসের বড় বাবু সুলভ গাম্ভীর্য এনে বলে হ্যাঁ। আমরাই বাড়ির লোক। কোন দিকে যাবো? ভদ্র মহিলা দোতলার সিঁড়ি দেখান। আমি দাঁড়িয়ে থাকি। উঠতে পারি না। এগোতে চায় না আমার পা। দাদা সেই ছোট্ট বেলার মতো আমার দিকে হাত বাড়ায়। আয় টুকনু। আমি হাত বাড়িয়ে দিই। দাদা শক্ত করে ধরে আমার হাত সেই ছোটবেলার মতো। আমি এগিয়ে যাই।

    ঠিক তখনি হসপিটালের লম্বা করিডোরটাকে আমার মনে হয় একটা বিশাল স্টেজ। ঘুমন্ত রোগগ্রস্ত মানুষ গুলোকে মনে হয় সেদিনের সেই জনসভার একমাত্র সাক্ষী। হাততালি পড়ে। ঝলকে ওঠে ফ্ল্যাশের আলো। এক পাদ প্রদীপের তলায় এই যুগের এক অখ্যাত মেগা সিরিয়াল লেখক হাত জোড় করে দাঁড়ায়। ফ্ল্যাশব্যাকে ফিরে যায় আখ্যানের পরিসর। মাইকের আওয়াজ গমগম করতে থাকে। পাড়ার জলসায় বাম ফন্ট্রের নবতম জিতে আসা কোনো এক ভোটের বিজয় উল্লাসে কাঁচের ফ্রেমের মধ্যে থেকে এক তরুণকবি গালে হাত দিয়ে খুব মিষ্টি মুখ নিয়ে তাকিয়ে থাকেন রজনীগন্ধার মালার আড়াল থেকে ঠিক আমারই দিকে। আর আমার সেদিনের সেই বড় আদরের টুকনু এবার তাকায় তার সামনের সম্মিলিত জনগণের দিকে। সে কোথাও খুঁজে পায় না তাকে যে একটা কবিতা প্রায় রোজ বলে বলে মুখস্থ করিয়ে দিয়েছে। কেমন ভাবে স্টেজে উঠে বলতে হবে, দাঁড়ি, কমা, হসন্ত দেখে নিশ্বাসের গতি থামাতে হবে। কোন লাইনে, কোন শব্দবন্ধে গলার খাদ উঠবে, পড়বে, কোরাসের মতো এগিয়ে যাবে, কোথায় গিয়ে থামতে হবে, আর কোথায় গিয়ে একটুও থামবে না সেইসব গোপন স্বর প্রক্ষেপণের কারিগরী শিখিয়ে দিয়েছে যে টুকনুকে, না সে কোথাও নেই। সেই মুখভর্তি কোঁকড়ানো দাড়ি, মন ভালো করে দেওয়া হাসি। মন থেকে না মোছা মণির মামদোটা কই? যে টুকনুকে এক মুহূর্তের জন্য ছেড়ে যায় না। অনেক দূরে থেকেও যার ছায়া, প্রচ্ছায়া অনুভব করে সে।

    মুহূর্তের সময় মুহূর্তেই কেটে যায়।

    সামনের দর্শকের সারি থেকে গুঞ্জন ওঠে “ভুলে গিয়েছে রে টুকনু...কবিতা ভুলে গিয়েছে”। উইংসের আড়ালে দাদা একটু অস্থির হয়। দূরে দেখতে পাই হাঁদা চায়ের দোকানের বাইরে এসে দাঁড়িয়েছে। হয়তো মণি, ঠাম্মা, মা সবাই বাড়ির জানলায় এতোক্ষণ। বাড়ির পেছনের লাইটপোস্টে বাঁধা মাইকে আমার নাম শোনা মাত্র সবাই ছুটে এসেছে। মনে মনে দুষ্টু নকশালটা কি করছে ভাবার চেষ্টা করলো টুকনু। হয়তো ওর খুব হিংসে হয়েছে। টুকনু কবিতা বলছে দেখে, আজ বিকেলের পর থেকে একটুও উঠোনে নামেনি সে। এক সপ্তাহ ধরে কবিতা আবৃত্তি শুনেছে পাঁচিলের ওপর বসে বসে। গলা ফুলিয়ে যেই বকম বকম করতে এসেছে ঠিক তখনি টুকনু ওর দিকে তাকিয়ে গড় গড় করে বলে দিয়েছে কবিতাটা। কী বলেছে? ...একি ভুলে যাচ্ছে নাকি টুকনু সত্যি সত্যি কবিতার প্রথম লাইনটা? ইশ, এক্ষনি সবাই হাসতে শুরু করবে হয়তো। এই যে এতবার সে প্র্যাক্টিস করলো। এই যে এতোবার সে বিজয় কাকুর জামরুল গাছকে শোনালো। জুটমিলের রামদেওকে শোনালো। জমাদার বৌ প্যায়ারীকে শোনালো। গঙ্গায় পয়সা কুড়োতে কুড়োতে ঠুলি শুনলো। বুড়ির মার পোয়াতি গোরুটা শুনলো। আর এখন? এতো লোকের মাঝে সে প্রথম লাইনটাই ভুলে গেল? হাত-পা ঠান্ডা হয়ে আসে টুকনুর। জিভের ওপর, মুখের ভেতর ভিড় করে আসে থুথুর স্রোত। ঢোক গিলতে গেলে কোথাও গলার কাছে ব্যাথা করে। হিসি পায়। ছোট্ট দুটো চোখ তন্ন তন্ন করে একজনকে খোঁজে। নাহ, সেই লোকটা কোথাও নেই। কোত্থাও না। যে বলেছিল আসলেই আমরা কিছু ভুলে যাই না টুকনু। আমাদের সব কিছু ভুলিয়ে দেওয়া হয়। কে ভুলিয়ে দিল টুকনুকে? ওই পাজি হতচ্ছাড়া নকশালটা? একদিন যদি না তোর ওই মোরগের মতো অবস্থা হয় তাহলে আমার নাম...। থেমে যায় টুকনুর ভাবনাটা। মোরগ...ঠিক...মনে পড়ে গেছে...মোরগ...। আরে এই তো কবিতাটা মনে পড়ে গেছে। নমস্কার। কিশোর কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যের লেখা। একটি মোরগের কাহিনী...।

    “একটি মোরগ হঠাৎ আশ্রয় পেয়ে গেল
    বিরাট প্রাসাদের ছোট্ট এক কোণে
    ভাঙা প্যাকিং বাক্সের গাদায়
    আরো দু-তিনটি মুরগীর সঙ্গে।
    আশ্রয় যদিও মিললো,
    উপযুক্ত আহার মিললো না।”

    বাঁধ ভাঙা হাততালির মধ্যে গড়গড় করে বলে চললো টুকনু কবিতাটা। একবারও না থেমে, এতোটুকু না আটকে। একবারও আর না ভুলে গিয়ে। সবটা। কিন্তু টুকনুর এতে তো আনন্দ হবার কথা। ওই তো ডায়াসে উঠে দাদা এসে তাকে নামিয়ে নিয়ে যাচ্ছে কোলে করে। সবাই সাবাশ সাবাশ করছে। তবুও টুকনুর চোখে জল কেন? একি কাঁদছে টুকনু? নাকি এটাও তার একটা বদমাইশি?

    “মন খারাপ তোমার টুকনু?” ঠাম্মা ল্যাম্ফোর আলো জ্বেলে সামনে ধরেন। “বুঝতাছি গোরার জন্য তোমার মন খারাপ। ওরে আমি কেমন বকুম একবার দেখিস তুই”। ঠাম্মা গোরা নকশালকে বকেছিল কিনা টুকনুর মনে পড়ে না। সে জানে তার ঠাম্মা মিথ্যে কথা বলছে। এই বাড়িতে গোরা নকশালের নামে কেউ খারাপ কথা বলে না। কেউ তাকে বকে না। সবাই তার সামনে আস্তে আস্তে কথা বলে। গঙ্গার ধারে চিলে কোঠার বই ভর্তি ঘরে কত মানুষ আসে, কত আলোচনা হয়, কত লোক কত অভিযোগ জানায়, গোরা নকশাল চুপ করে শোনে। আর দরজার পাশে লুকিয়ে থাকা টুকনুকে দেখতে পেলে দাড়ি ভর্তি মুখে হাসির জোয়ার ওঠে। হঠাৎ মাঝে মাঝে কাশির দমক বাড়লে গোরা নকশাল কোথায় যেন চলে যায়। বাড়ির কেউ কিছু জানে না। “লোকটা অনেক কিছু লুকোয়। অনেক কিছু...।” একদিন বাবা, মাকে বলছিল কথাগুলো। মটকা মেরে ঘুমের ভান করে পড়ে থেকে সব শুনে নিয়েছে টুকনু। শুনে নিয়েছে এক উদ্বাস্তুর লড়াইয়ের কিছু টুকরো অংশ। আর লুকিয়ে লুকিয়ে দেখেছে কাশির দমকে মুখ দিয়ে রক্ত উঠেছে গোরা নকশালের। হাতের সাদা রুমাল লাল হয়ে যাচ্ছে। ভয় পেয়েছে টুকনু। কাউকে বলেনি সে কথা কোনোদিন। তারপরে অনেক পরে... অনেক অনেক পরে...। যাদবপুরে যখন সে ফিল্ম নিয়ে পড়তে গেছে, তখন সাদা পর্দায় দেখেছে কাশির দমকে মুখ দিয়ে রক্ত ওঠা একটা মেয়েকে। ঘাড় কাত করে মেয়েটা চেয়ে থেকেছে তার বাড়ির লোকের দিকে। কেউ তাকে পাত্তা দেয়নি। তারপর একদিন সবার অলক্ষ্যে মরে গেছে সে। মনখারাপ হয়ে যায় টুকনুর। অনেক রাতে সে ফিরে আসে ভাঙাচোরা বাড়িটার কাছে আরো ভাঙা চোরা চিলে কোঠার ঘরে। দেওয়ালে ফিকে হয়ে আসা চে’র ছবির নীচে ভাঙা ফ্রেমের চশমা পড়া অমলিন হাসির লোকটাকে জিজ্ঞেস করে “তোমার শরীর এখন কেমন? গোরা নকশাল মুখ তুলে তাকায়। আর অমলিন হাসিতে ভরে যায় তার মুখ। আরে সামনে আয়। দেখি দেখি...যাদবপুরে গিয়ে আমার টুকনু আমার চে’র মতো দাড়ি রাখছে নাকি? লজ্জা পেয়ে যাই আমি। জানতে এসেছিলাম তুমি ওষুধ গুলো ঠিক করে খাচ্ছো? গোরা নকশাল হাতের বইটা ভাঁজ করে রেখে পাশে বসায় তার বড় হয়ে যাওয়া টুকনুকে। “এই বইটা পড়েছিস?” টুকনু হাতে নেয় বইটা। ‘চিলিতে গোপনে’? কই না তো? গাব্রিয়েল গার্সিয়া মার্কেজ? অনুবাদ করেছেন বুদ্ধদেব ভট্টাচার্য? তুমি এখন এই বই কেন পড়ছো গোরা নকশাল? কিছু বলে না লোকটা। টুকনুর নীল রঙের কাপড়ের ঝোলার মধ্যে ঢুকিয়ে দেয় বইটা। তারপর সেই উজ্জ্বল দৃষ্টি নিয়ে টুকনুর দিকে তাকিয়ে বলে “শুনলাম টুকনু ফিল্ম নিয়ে পড়ছে। তাই মনে হল আমিও একটু পড়াশুনো করি। এই যে লোকটাকে নিয়ে লেখা...সেই মিগুয়েল লিতিন তো কলকাতায় এসেছিলেন। শুনতে গিয়েছিলাম তার কথা।” আমাকে অবাক করে দিয়ে হোহো করে হেসে ওঠে লোকটা। তরঙ্গায়িত হাসির ধারা ছড়িয়ে পড়ে আশেপাশে। ভাঙা বাড়ির শরিকী ঝামেলা ঝঞ্ঝাটের কড়িতে বড়্গায়। ফাঁকে ফোঁকড়ে। রাতের গঙ্গায় জেলেদের ছোট ছোট ডিঙি আর ছোট ছোট ডিঙিতে টিপ টিপ হ্যারিকেনের আলোয়। জানলা থেকে মুখ সরিয়ে বলি, কিন্তু যেটা বলতে চাইছিলাম সেটা তোমাকে বলা হলো না যে। এখন তো রিলিফ ক্যাম্প নেই। এখন তো স্বাস্থ্যকেন্দ্র। যাদবপুরের কাছে...মানে আমার ইউনিভার্সিটির পাশেই একটা ভালো হসপিটাল আছে। চলো একবার...। ডাক্তার কাকিমা বলেছে তিনমাস অন্তর একটা এক্সরে করতে হবে। দাদা কিন্তু নিয়মিত চিঠি লিখছে আর ধমকাচ্ছে। গোরা নকশাল আমার দিকে মিটিমিটি চায় আর হাসে। এখন রোজ অঙ্ক করতে পারছে না তো তাই রোজ চিঠি লিখছে। পারা যায় না তোমার সাথে। বেরিয়ে আসি আমি। ভেতর থেকে ভেসে আসে সেই চেনা স্বর, যাওয়ার সময় দরজাটা বন্ধ করে দিয়ে যাস টুকনু। বাল্বের এই হালকা সিপিয়া আলোটা এখন অনেক রাত পর্যন্ত থাকবে এইঘরের চারপাশ জুড়ে। গঙ্গার জলের ওপর ছায়া ফেলবে। মাঝিরা জানে লোকটা ঘুমোবে না প্রায় সারা রাত। লোকটা জেগে থাকবে। কী করে সারা রাত ধরে গোরা নকশাল? কেউ জানে না। দিনবদলের স্বপ্ন দেখা চোখে ঘুম নামে না আর। ঘুমের ওষুধ খেতে চায় না লোকটা। পাছে যদি সত্যি সত্যি দিন বদলটা সে না দেখেই ঘুমিয়ে পড়ে!

    কিন্তু আজ এতো ঘুম এলো কোথা থেকে? সকালের নরম রোদ এসে পড়েছে ১৩৮ নম্বর বেডের পেশেন্টের গায়ে। আজ এই মুহুর্তে গোরা নকশালের চোখ বন্ধ। পাশে পড়ে আছে অর্ধ সমাপ্ত স্যালাইনের বোতল। একটা অক্সিজেনের সিলিন্ডার। গায়ে ওপর ছড়ানো আছে লাল রঙের কম্বল। টুকনু দাঁড়িয়ে থাকে মাথার কাছে। ডাক্তার ফিসফিস করে বলে যায় চার ঘন্টার আগে কিন্তু বডি ছাড়া হবে না। একে একে রোগীরা এসে দাঁড়ায়। দাদা কাদের যেন ফোন করে চলেছে অনবরত। কারা যেন সিঁড়ি দিয়ে উঠে আসছে একে একে। কারা যেন ফিস ফিস করে একটা কবিতা বলছে... “একটা মোরগ ঘাড় উঁচু করে স্বপ্ন দেখে প্রাসাদের ভিতর রাশি রাশি খাবার...”। কেউ যেন বলে উঠছে... “টুকনু ভুলে যেও না ওরা তোমার সুশান্তকে মেরেছিল...। ওরা আমাদের শিক্ষার অধিকার দেয়নি...স্বাস্থ্যের অধিকার দেয়নি...ওরা আমাদের দুবেলার খাবার নিশ্চয়তা দেয়নি। ওরা আমাদের দিন বদলটা আটকে দিয়েছে। ওরা আমাদের শুধু জেলের মধ্যেই মারেনি ওরা আমাদের জ্যান্ত লাশ করে দিয়েছে।’’

    সোনালী রোদে ওই যে ডানা ঝাপটিয়ে উড়ে বেড়াচ্ছে পাখিটা ওটা কি হাঁদার নকশাল? আমি ঠিক জানতাম, যারা উড়তে পারে তাদের নকশাল বলে। নকশাল আসলে পায়রাদের টাইটেল। কিন্তু নকশালের হ্নন্তারক কি আমিও ছিলাম না? আমিও কি দীর্ঘ দিন অপেক্ষা করিনি সত্যিই হাঁদার বদমাইশ নকশালটাকে কবে ও বাড়ির হুলোটা এসে নিয়ে যাবে। আর যেদিন সত্যি ও বাড়ির হুলোটা এসে ঘাড় মটকে রক্তের বিন্দুর ছিটে ফেলতে ফেলতে নিয়ে গেলো নকশালকে তখন আমি বাধা দিই নি কেন? কারণ টুকনু বড় ভয় পেয়েছিল তার একমাত্র বন্ধুর মৃত্যুতে। তার ভয়টা কেউ বিশ্বাস করতে পারেনি। কবেকার হারিয়ে যাওয়া ঠুলিও কি সেদিন টুকনুর দিকে তাকিয়ে বলেনি...কি নিষ্ঠুর তুই টুকনু...? আমি কেঁদেছি...আমি হাতড়িয়েছি কিন্তু কোথাও খুঁজে পাইনি আর নকশালকে। আমার ফেলে আসা শৈশবকে। আজ যেখানে দাঁড়িয়ে সেটাও তো একটা মৃত স্বপ্ন। কিন্তু সত্যিই কি তাই? তাহলে না জানা, না চেনা লোকগুলো ভিড় করে এসেছে কেন বার্নিং ঘাটে? যার মুখাগ্নি হবে না। যার আত্মার আত্মীয় বলে কেউ নেই। যার গঙ্গার ধারের চিলে কোঠা চলে যাবে কয়েকদিনের মধ্যে কোনো এক বড় প্রোমোটারের কাছে। যেখানে অনেক উঁচুতে থাকার লোভ নিয়ে অনেক টাকার ই এম আই এর কিস্তি জুগিয়ে যাবে আরো কিছু মানুষ। যাদের চোখে কোথাও কোনদিন দিন বদলের স্বপ্ন থাকবে না। একটা মৃত স্বপ্নের ওপর কি দাঁড়িয়ে থাকবে একটা মৃত গাছ? তাহলে এই সময় কি মিথ্যে? এই আখ্যান মিথ্যে?

    হয়তো না।

    কারণ যে জনপদের গল্প বলতে বসেছিল টুকনু সেই জনপদ মিথ্যে হতে পারে না। ওই তো বিউগল বেজে উঠছে। ধামসা বেজে উঠছে দ্রিমি দ্রিমি দুম দুম। ওই তো মেথর পাড়া থেকে এসেছে রামদহীন, জেলে পাড়া থেকে এসেছে লঙ্কেশ...ওই তো বন্ধ হয়ে যাওয়া জুটমিলের শ্রমিকরা। ওই তো লাল শালু ঢেকে দিচ্ছে ওরা। ওই তো ওরা গেয়ে উঠছে... “হাম ভুখ সে মরনেবালো ইয়া মত সে ডরনেবালো আজাদিকা ঝান্ডা উঠাও...”। ওই তো ভেঙে পড়ছে চিলে কোঠার ঘরটা। চে’র মুখের ছবি চূর্ণ বিচূর্ণ হচ্ছে। ওই তো খুলে যাচ্ছে চুল্লির স্বয়ংক্রিয় দরজা। ইলেকট্রনিক আগুনের রক্তাভ বিকিরণের মাঝে ঢুকে পড়ছে একটা স্বপ্ন। যে স্বপ্নের মৃত্যু নেই...। যে স্বপ্ন সংক্রমিত হচ্ছে জ্বলন্ত এক দেহ থেকে সমষ্টির দেহে। কমরেড গোরা জ্বলছে। পুড়ে যাচ্ছে অস্থি...। যদিও এই মুহূর্তে সেই আলোকিত শবাধারের মধ্যে নেই কোনো নতুন ভোরের সঙ্কেত। আছে শুধু এগিয়ে চলার আহ্বান। (সমাপ্ত)

    ঋণ- সেইসব ঘরে না ফেরা...ফিরতে চাওয়া গোরাদের। যারা আমাকে প্রতিনিয়ত তাড়া করে বেড়ায়।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২০ এপ্রিল ২০১৬ | ১২৩৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Kallol Lahiri | 127.194.8.111 (*) | ২০ এপ্রিল ২০১৬ ০৫:১২52892
  • ধন্যবাদ সবাইকে।
  • Tapas | 126.202.201.237 (*) | ২০ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৫১52890
  • কি করে উত্তর বা মতামত দেব তা তো জানিনা ---- আসলে লেখাটা তো পড়তেই পারছিলামনা, আমার দেখা আর না দেখা সেই পায়রাগুলো বারবার চোখের সামনে চলে আসছিল -- কতগুলো পায়রা আবার উড়েও গিয়েছিললো -- ওরা হয়ত নকশাল ছিলনা, তবে মাঝের কিছু কিছু সময়ে কিছু কিছু পায়রাকে আমি প্রবল ভার পিঠে নিয়ে হাটতে দেখেছি। আপনার এই লেখা আমার মুঠোর মধ্যে শক্ত করে ধরে থাকা তাদের কিছু খাবার, যা আমি তাদের দেবনাই ভেবে রেখেছিলাম --- কেড়ে নিয়ে গেল।
  • Shamik Choudhuri | 117.167.116.219 (*) | ২০ এপ্রিল ২০১৬ ১০:৫৫52891
  • Sob sotti sob sotti sotti
  • Kallol Lahiri | 11.39.39.112 (*) | ২১ এপ্রিল ২০১৬ ০৩:৪০52893
  • এ আখ্যানের ওপর কোন মন্তব্য হয় না। শুধু নৈশব্দ। তারপর কেবল হাত মুঠো করা। গোরা নকশাল মৃত্যুহীন। তাঁর স্বপ্নও।
  • junayed hossain | 133.108.244.94 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:৫৬52894
  • লড়াই'ই জীবন। কেউ নিজে লড়ে আবার কেউ লড়াইটাকে বাঁচিয়ে রাখে আপাত হেরে যাওয়া মানুষগুলোর হয়ে। কতোভাবেই না আমরা বাঁচিয়ে রাখি সেই কাঙ্খিত ভোরের আশায়।
  • d | 24.97.195.154 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ০৯:৫৭52895
  • অদ্ভুত একটা এল্খা। এর উপর কোনও মন্তব্য হয় না।
  • ranjan roy | 24.99.182.4 (*) | ২২ এপ্রিল ২০১৬ ১১:০১52896
  • একই মত।
  • Atoz | 161.141.85.8 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৬:৩৫52899
  • লেখাটা পড়ে স্তব্ধ হয়ে রইলাম।
  • kihobejene | 77.180.29.67 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৪৮52897
  • bodda taratari shesh kore dilen eto bhalo lekhata; apnar shuru te je somoi bornona korlen aar shesh porbe je somoi ke bornona korlen - tar majher somoi e gora nokshal ki bhabe katalen eta janar khoob icche chilo
  • de | 24.139.119.173 (*) | ২৬ এপ্রিল ২০১৬ ০৮:১০52898
  • কিছু বলার নেই!
  • Kallol Lahiri | 127.194.5.235 (*) | ৩০ এপ্রিল ২০১৬ ০৭:৫৯52900
  • সবাইকে আবার ধন্যবাদ জানাই। লেখাটা এতো মন দিয়ে পড়ার জন্য। বিশেষ করে শাক্যজিৎকে। সে খুব উৎসাহ না দিলে গুরুতে গোরা নকশাল প্রকাশিত হতো না। এই লেখাটা আমি যখন শুরু করি সেটা ২০১৩। আমার নিজস্ব ব্লগ 'লিখতে বসে'তে। লেখাটা অনেকের পছন্দ হয়। পরবর্তী কালে গল্পপাঠেও প্রকাশিত হয় ধারাবাহিক ভাবে। আসলে আশির দশকের শুরুতে আমরা যারা আমাদের একদম শৈশব কাটিয়েছি, বিশেষ করে মফস্বলে তারা অনেকেই এমন হাতে গোনা হলেও বেশ কয়েকজন গোরা নকশালকে হয়তো খুঁজে পেলেও পেতে পারেন। যারা নিজের মনে মনে ভেঙে গিয়েছিলেন দ্রুত। ভেঙে দেওয়া হয়েছিল। আসলেই জোর করে ভুল প্রমানিত করতে পারলে প্রতিপক্ষ খুশি থাকে। অথচ বাড়ির পাশেই যারা ছায়ার মতো ঘোরা ফেরা করছিলেন। যারা সত্যিই শাদা আর কালোটা ভালো করে চিনতে শিখিয়েছিলেন। কিম্বা সন্ধ্যেবেলা শুধু একটা ফুল কিভাবে ফুটবে তাই দেখার জন্য ঘাড় ধরে বসিয়ে রেখেছিলেন সন্ধ্যামণি গাছের পাশে। একরাশ বিরক্তি নিয়ে মশার কামড় খেয়ে যখন আমার প্রায় পাগোল অবস্থা। ওদিকে ছন্দা সেন সাদা কালো দরজা দেওয়া টিভিতে খবর পড়তে শুরু করে দিয়েছেন আর একটু পরেই অমিতাভ বচ্চনের 'বই' শুরু হবে তখন সন্ধ্যামণির ফুল ফোটা কোনো কাব্যিক রসদ তুলে আনতো না। তারো বহুযুগ পরে যখন আর আমার পাড়ার কোথাও সন্ধ্যামণি দেখতে পাই না। চটকলের সাইরেন শুনতে পাই না। মিছিলের সামনে কেউ হাম ভুখ সে মরনেওয়ালো গান গাইতে যায় না। এই অনেক গুলো না গোরা নকশালের নক্সী কাঁথা বোনে। আমার তখন সন্ধ্যামণি খুঁজতে ইচ্ছে করে। চটকলের সাইরেন খুঁজতে ইচ্ছে করে। ল্যাপটপ বলে এই মুহূর্তে হারিয়ে যাবে অনেক না পাওয়া। একজন জানতে চেয়েছেন গোরা নকশালের মাঝের জীবন কেমন ছিল? এইসব মানুষদের মাঝ আর শেষ বলে কিছু থাকে না। সবটাই জীবন। এই যেমন এখন মরে গিয়েও। এতো জায়গায় গোরা নকশাল জীবিত। ভালো থাকবেন সবাই। অনেক শুভেচ্ছা।
  • Kallol Lahiri | 182.58.104.158 (*) | ০১ জুন ২০১৭ ০৮:১৪52901
  • Du
    ই লেখাটাই তো পড়ার ছিল। প্রথম পর্বের পড়ে কোথায় হারিয়ে গিয়েছিল আজ খুঁজে পেলাম। আর সব কটা পড়ে নিলাম অদ্ভুত এক ঘোরে।
  • aranya | 83.197.98.233 (*) | ০২ জুন ২০১৭ ০২:২৪52902
  • এই পর্ব-টা পড়া হয় নি আগে। অসম্ভব ভাল লাগার, ছুঁয়ে যাওয়া লেখা - প্রতিটি পর্বই।
    কাকদ্বীপ, তেলেঙ্গানা, নকশালবাড়ী - আন্দোলন কখনও ব্যর্থ হয় না, সুদূরপ্রসারী তার প্রভাব, এমনই মনে হয়। হয়ত একটু বেশি আশাবাদী বলেই, 'আমার কিন্তু স্বপ্ন দেখতে আজও ভাল লাগে'
  • সিকি | 158.168.96.23 (*) | ০২ জুন ২০১৭ ০৪:২০52903
  • পড়লাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ প্রতিক্রিয়া দিন