দেখতে দেখতে পুজো এসে যায়। ষষ্ঠীর রাতে ধীরুকাকা এসে বলল বাড়ি খালি করে দিতে হবে। নতুন ভাড়াটে আসবে। মা অনেক কান্নাকাটি করল। মাঝরাতের দিকে একটা ঠেলা এসে দাঁড়াল বাড়ির সামনে। বাড়ির পাশের কাশফুলের ঝোপ সেই প্রথম চাঁদের আলোয় দেখে সাবু। গেলবারের ঘোর বর্ষায় ধীরুকাকা পরপর ইট পেতেছিল বাঁধানো রাস্তা অব্ধি। ঝুরো ঝুরো নীলচে আলোয় সেগুলো মনে হয় কেউ আলপনা এঁকেছে বুঝি। ঠেলাওয়ালা বলে দুগগা বলে চলুন দিদি।ঠেলার উপর সংসার, তার উপরে সাবু। আকাশে আলগোছে চাঁদ। বাতাসে রাতজাগা শিউলির গন্ধ।সেইরাতে কোনওরকমে একটা বাড়ি জোগাড় হল। একচালা, আধভাঙ্গা। মাটির বাড়িতে আলো নেই। পুঁটুলি করা জামাকাপড় বাসনকোসনের উপরেই ঘুমিয়ে গিয়েছিল সাবু। ঘুম ভাঙল ঢাকের শব্দে। নতুন ... ...
ইদানীং মেয়েদের পোষাক নিয়ে বেশ কিছু নীতি বাগিশ ফেসবুকে ঝড় তুলছেন। যারা এই সামান্য বিষয় নিয়ে রাতের পর রাত জাগছেন তাঁদের বলছি আপনারা আর কবে মানুষ হবেন? মানুষ শব্দটা এসেছে মান আর হুশ নিয়ে। ব্যাকরণগত ভাবে হয়ত আমার এই শব্দ দ্বয় ভুল হতে পারে। গুণীজন সংশোধন করে দিলে উপকৃত হব।
১কাগজের উড়োজাহাজ পেরিয়ে যাবে জার্মানিযুযুৎসুটা শিখে এলেই কব্জা হবে জাপানি; এক কিম্বা দুইশতবর্ষে ছুঁইএই রান্না ২৪এর, সেবক স্বয়ং রাঁধুনী।২আমি এত যে তোমায় কোটি দিয়েছিতবু মনে হয় এতে তুমি খুশী নয় কেন আরো সুধীর ভাইদের পাঠালে না হায়!-আমি এতো যে তোমায় দিয়ে চলেছি...
পর্ব ৮ গাড়ি পার্ক করতে জয়িতার অনেকটা সময় চলে গেল। পিছন ফিরে তুতুল কে দেখল জয়িতা। তুতুল একটা চকোলেট মন দিয়ে চুষে যাচ্ছে। জয়িতা দ্রুত হাতে পরপর কাজগুলো করে যাচ্ছে। সমস্যা হল তুতুল এখন হাঁটতে শিখেছে। কিছুতেই সে পেরাম্বুলেটারে বসবে না। কিন্তু মার্কেটিং করতে মেয়েকে এমনি ছেড়ে দিলে এক দণ্ড এক জায়গায় থাকবে না। জোর করেই জয়িতা তুতুলকে নিয়ে পেরাম্বুলেটারে বসিয়ে সিট বেল্ট বেঁধে দিল। সপ্তাহের সব জিনিস প্রায় শেষ। জয়িতা কাজের দিনে কিচ্ছু সময় পায়নি।ইদানিং জয়িতা একটা লাইব্রেরিতে কাজ নিয়েছে। সেখান থেকে মাঝখানে যে বেড়িয়ে আসবে সে উপায় নেই। কাজের শেষেও জয়িতা আর এক মুহূর্ত সময় নষ্ট করে না । ... ...
মিডিয়া। বর্তমানে বিশ্বব্রহ্মাণ্ডে অসীম শক্তিশালী এনটিটি এই তিন অক্ষরের গুরুঘণ্টাল। স্পেস টাইমে এমন কোনো বিন্দু নেই, যেখানে মিডিয়া সিঁদ কাটতে পারে না। ব্যক্তি থেকে সংগঠন, অতীত থেকে ভবিষ্যত, শিল্প থেকে বিজ্ঞান... কার আস্পর্ধা তাদের বিরুদ্ধে কথা বলে! এই ফেক নিউজ পরিবেশন করে সবাইকে উত্তেজিত করে তুলল, এই প্রযুক্তিকে কাজে লাগিয়ে পাবলিক পারসেপশন বদলে দিল, প্রয়োজন পড়লে মিডিয়া ট্রায়াল আর রিভিউ বম্বিং করিয়ে করে কোনো আর্ট ফর্মকে বয়কট করানোতেও তাদের জুড়ি নেই। পাশাপাশি তলায় তলায় আখের গুছিয়ে নিতে তারা ওস্তাদও বটে। তবে কিনা খবরদার...মিডিয়ার সঙ্গে আবার সাংবাদিকতাকে গুলিয়ে ফেলবেন না। সাংবাদিক ও সাংবাদিকতা...ও জিনিস এ যুগে বিরল। ও নামে যারা আছে, তারা ... ...
শিক্ষক দিবসে অনেকেই পোস্ট দিচ্ছেন। এই সূত্রে একটা ঘটনার কথা মনে পড়ে গেল। কিন্তু ব্যাপারটা বলার আগে খানিক ভূমিকা বেঁধে নেওয়া দরকার। আমার জীবনে রক্ত মাংসের শিক্ষকদের প্রভাব খুব বেশি নেই। যতটা শিখেছি, বই পড়ে, নানান ধরনের লোকের সঙ্গে আলাপ করে আর পথে পথে ঘুরে। যেমন, কাকাবাবুর 'ভয়ংকর সুন্দর' গল্পে পড়া 'আকাশ পুরোনো হয় না' কথাটা আমার জীবনের শ্রেষ্ঠ শিক্ষার একটা বলেই মনে করি। একজন আমাকে বলেছিল, টিচিং লাইজ ইন ডিসগাইজ। কোথায় সে দেখা দেবে, কেউ জানে না। হ্যাঁ, স্কুলজীবনে অনেক শিক্ষকের সাবজেক্ট নলেজ ভালো ছিল, যত্ন নিয়ে পড়াতেন, কিন্তু ওইটুকুই। পাউডার কৌটোর টেলিস্কোপ আমাকে কেউ বানিয়ে দেয়নি, প্রোফেসর লুপিনের মতোও কেউ ... ...
সুতো কাটা ঘুড়ি ঊর্ধ্ব গগণে উড়ছেকখনও রৌদ্রে দেহ মন তার পুড়ছেকখনও বাতাস মেঘজল মেখে হাসছেসুতো কাটা ঘুড়ি দুঃখবিলাসে ভাসছেসুতো কাটা ঘুড়ি খুঁজছে রঙিন লগ্নসুতো কাটা ঘুড়ি আপন খেয়ালে মগ্নঘুড়ি তাই মোটে পারে না কখনও জানতেনিঃস্ব নাটাই পড়ে আছে কোন প্রান্তে?নাটাই, নাটাই, কোথায় তুমি? কী করছো?সিঁড়ি ঘরে শুয়ে বেদনার লিপি পড়ছো?সিঁড়ি ঘরে বুঝি ধুলো খুব? বায়ু নিশ্চল?ভীষণ আঁধার? সিড়িঘর, হতবিহ্বল?থাকগে নাটাই, ঘুড়ি গেছে যাক, যাকগে;কী করে এড়াবে যা আছে তোমার ভাগ্যে?নিজেকে লুকাও সংযত মন্তব্যেউড়ে যাক ঘুড়ি তার নিজ গন্তব্যে- ... ...
এদিকে বারুদ-বারুদ গন্ধ নিয়ে শরত আসে। চুপিচুপি মা-কাকিমারা আলোচনা করে। কারা যেন দেশের শত্রু। সাবু ভাবে মহিষাসুরের কথা, মা-দুর্গার কথা। পাশের পাড়ার সরোজদা মহালয়ার আগের দিন বিকেলে যুগবাণী ক্লাবের দিক থেকে ফিরছিল পড়া সেরে। পরেরদিন সবার ঘুম ভাঙল ওর মায়ের কান্নাকাটিতে। তারপর থেকে সন্ধে নামলে কেউ আর সচরাচর বাড়ি থেকে বেরোয়না। নিঝুম সন্ধ্যার আবহে দূরে কাদের বাড়ি থেকে মহিষাসুর-মর্দিনী ভেসে আসে।এর মধ্যেই একদিন হীরু এসে বলল, ‘জানিস আমি আর দাদাভাই এবার একটা পত্রিকা বার করব পুজোর আগে। তুই লিখবি?’হীরুর সাথে সাবুর আলাপ হয়েছিল গলফক্লাবে। দুজনেই গিয়েছিল সাহেবদের ফেলে দেওয়া গলফবলের সন্ধানে। মনে আছে সেদিন হীরু একটা পেয়েছিল, কিন্তু সাবু পায়নি। ... ...
লোকগুলো হারিয়েই গেল প্রায়। সেই সাদা ধুতি পাঞ্জাবি, একরাশ গম্ভীর কিন্তু নরম মনের মানুষগুলো যারা ডাক দিয়েছিলেন প্রথম -'দড়ি ধরে মারো টান, রাজা হবে খান খান', তারা আজ আর নেই। সারা দিনের বকবকানির ধকল সামলে ঘোষেদের ছেলেটা আজ এলোনা কেন, কিংবা ঈদের পরের দিনও হোসেন কেন নতুন ড্রেস পরে আসেনি, সে কথা ভাবার লোকগুলো আজ লুপ্তপ্রায়। কয়েকজন আছেন। টিমটিম করে মিসিং লিংক হয়ে। মনে আছে কি ওনাদের? ... ...
এক যে ছিল ট্রামপর্ব - ৫|| রক্তে লাল ট্রামলাইনে মহিনের ঘোড়াগুলি চরে ||"আমরা যাই নি মরে আজও--তবু কেবলই দৃশ্যের জন্ম হয়:মহীনের ঘোড়াগুলো ঘাস খায় কার্তিকের জোছনার প্রান্তরে,প্রস্তরযুগের সব ঘোড়া যেন--এখনও ঘাসের লোভে চরেপৃথিবীর কিমাবার ডাইনামোর 'পরে।"কার্তিকের জোৎস্নায় ঘোড়া চরে বেড়াচ্ছে ধু ধু প্রান্তরে বরিশালের কোনো এক অখ্যাত গ্রামে | হয়তো তিনি দেখে থাকতে পারেন | যে অপার্থিব দৃশ্য দেখে তার মনে হয়েছিল আমৃত্যু আমাদের সামনে এসে এমনি দাঁড়ায় অজস্র দৃশ্য | কবির ছাত্র প্রখ্যাত কবি অরবিন্দ গুহ এক লেখায় বলেছেন বরিশালে তাঁর মামাবাড়ি তে লক্ষ্মী পুজোতে নেমন্তন্ন থাকতো, তিনি অনেকবার দেখেছেন মন্তাজ মিয়াঁর আস্তাবলের ঘোড়াগুলি কোজাগরী পূর্ণিমার রাতে চারিদিক ভেসে ... ...
ভারতীয় উপমহাদেশ থেকে ব্রিটিশ চলে যাওয়ার পরে ভারতবর্ষ, পাকিস্তান, শ্রীলঙ্কা দেশগুলোর স্বাধীন রাষ্ট্রের অস্তিত্ব মেনে নেয় জাতিসংঘ থেকে পৃথিবীর বিভিন্ন রাষ্ট্রগুলো। স্বাধীন রাষ্ট্র হিসেবে এরপরে এই দেশগুলোর অন্যান্য অনেক আবশ্যিক বিষয়ের সঙ্গে প্রয়োজন হয়ে পরে রাষ্ট্রের জাতীয় সংগীতের। ভারতবর্ষ রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের 'ভারত-বিধাতা' গানটির প্রথম স্তবকটিকেই জাতীয় সংগীত হিসেবে গ্রহণ করে। হঠাৎ করেই যে গানটি আমাদের জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি পেল তা একদমই নয়, এর পেছনে এক দীর্ঘ ইতিহাস আছে। গানটির রচনাকাল থেকে জাতীয় সংগীত হিসেবে স্বীকৃতি পাওয়া অব্দি ইতিহাসটা এইরকম:'ভারত-বিধাতা' (জন গণ মন অধিনায়ক জয় হে) ... ...
বৃষ্টিলেখা নবকলিকা,বাতি'রা উল্টে ম্লানরসিক জানে তোমাতে বসত করেনা অজুহাত;আকাশ ভেঙে টুকরো টুকরো,সুধার পরশ দান মনের বারুদ কবোষ্ণ রেখো,বর্ষা মুখর রাত। বাইরে যত বারুদের স্তূপ হোকনা নিষ্ফলশুষ্ক থেকে সিক্ত হয়ে উঠুক জমির তল;শিহরন জাগে,কর্ষনে মেতে ঘর্মাক্ত কিষাণবিন্দু বিন্দু শরীর জুড়ে নবকলিকার স্নান!
এটা ছোটদের গল্প নয়। এটা একজন ছোট্ট মানুষের গল্প। নাম তার সাবু। আর এ এমন এক সময়ের গল্প যেখানে এখনো অজস্র পায়ে থিতলান কদমফুল পড়ে ছড়িয়ে আছে এখানে সেখানে। সাবু তখনো আকাশে ওড়েনি। একটা শিমূলগাছ পুঁতেছিল ২ বছর আগে। তার কথা বলার সময় আসেনি এখনো।সাবুদের একঘরে জীবনের পায়খানাটা একটু দূরে। জামাপ্যান্ট খুলে ২ মিনিট দৌড়ে একটা ইটের ঢিবি ৩ লাফে পেরিয়ে হ্যাঁচকা টানে আধভাঙ্গা দরজা খুলে ঝুলপড়া বাংলা পায়খানা। দৌড়ের সময় ঘাড়টা একটু ডানদিকে উপরে বাঁকিয়ে দেখে নিতে হয় উপরে ঝুমুর দেখছে কিনা।তবে ভিতর ঢুকে গেলে নিশ্চিন্দি। সাবু আকাশপাতাল ভাবে - বহুদূর থেকে ছুটে এসে প্রচণ্ড গতিতে বল ছুঁড়ে দিয়েছে ... ...
এক যে ছিল ট্রামপর্ব - ৪|| আমরা তখন ক্লাস ইলেভেন, আমরা তখন কালো ফুলপ্যান্ট ||মাধ্যমিকের পর সবারই লেজ গজায় | অন্তত আমাদের সময়, সেই সুদূর নব্বইতে গজাতো | নিজেদের স্কুলেই বিজ্ঞান নিয়ে ভর্তি হয়েছি আমরা প্রায় সবাই যারা বেহালা থেকে ট্রামে আসতাম | ২৭ এর সাথে যোগ হয়েছে আরো একটি রুটের ট্রাম | ২৪/৩৭ - যা বালিগঞ্জ থেকে জোকা যাবে | আমাদের অনেকেই বেহালা ট্রামডিপো থেকে জোকার মধ্যে থাকে | তাই সবারই খুব সুবিধে হলো | আমাদের গ্যাং আরো বেড়ে গেলো |সাথে সাথে বাড়লো পথের দাবি | অন্তত চারটে স্কুল ও একটা কলেজ থেকে ট্রামে উঠতো শাড়ি, স্কার্ট, সালোয়ার কামিজ ... ...
.ফিল্মের মহারথীদের একের পর এক বিপুল বাজেটে নির্মিত ফিল্ম বক্স অফিসে মুখ থুবড়ে পড়ছে। একটি আপাত জোলো কারণ আকাশে বাতাসে মিডিয়ার কল্যাণে ভেসে বেড়াচ্ছে। হ্যাশ ট্যাগ দিয়ে কিছু লোক নাকি বয়কট লিখে সামাজিক মাধ্যমে পোস্ট করছে। তাই নাকি ফিল্মগুলো দর্শক দেখতে হ'ল ভরাচ্ছেন না। আমির খান, অক্ষয় কুমার প্রমুখ তারকা খচিত একটি ছবি, কয়েকজনের করা বয়কট পোস্টের জন্য মানুষ মুখ ফিরিয়ে নিলেন ? এই বালখিল্য যুক্তিটি মানানসই বলে মনে হয় ? বিশেষ করে আমির খান ও অক্ষয় কুমারের মত সুপার স্টারের ছবি ! মুম্বইয়ের অনেক তাবড় ফিল্ম বিশেষজ্ঞদের ভাবনা অনুযায়ী কারণ এমনটাই বর্ণিত। অথচ দক্ষিণী ছবিগুলো ডাবিং করে সারা দেশ ... ...
এ খেলা কেমন খেলা,জীবন ওঠে শঙ্কা ভরে।যাপন হেথায় দুর্বিষহ,গান গাইছে নাকিসুরে।ফাঁকাই থাকে খেলার মাঠ,অফিসবাড়ী ধু ধু করে।কারখানার তালা বন্ধ সব,কল গিয়েছে চাবির তরে।নারীর মান শূন্যে লুটায়,ইজ্জত গড়ায় ধুলার পরে।লক্ষ্মী কবেই হাল ছেড়েছেন,বীনাও আর নেইকো সুরে।চতুর্দিকে অসুর ও বেসুর,শুধুই ভীড় নদীর তীরে।বিসর্জনের সুরটা শুধুই,বাজছে যে ভাই শরীর জুড়ে।তবুও সবাই বলছে শুধুই,খেলা হবে, খেলা হবে।খেলার মধ্যে লাভটা কি,উন্নয়ন কিছু দেখা যাবে?নাকি, শুধুই কাকতাড়ুয়া,জমির আলে দাঁড়িয়ে রবে? ... ...
পুরানো দিনের স্নান ঠোঁটে নিয়ে উড়ে আসে যারা, বাদামি হলুদ লাল হাঁসবাঁধা হবে কি জ্বরের শরীরে বাসা, তাদের আকাশ? আমন্ত্রণ লেখা ছিলো শিরাধমনীতে, তৃষিত গহনে ঘন বাসখোলা হবে কি দরজা নলিপথ, একে একে টানা হবে শ্বাস সাহস রক্তে থাকে, সংসারে প্রাণ থাকে অস্তবিকেলময় যদিআজন্ম ভয়ের তাড়না, কাকভোর থেকে ফুলে ওঠা রাত্রি অবধিঅথচ দিন ফুরালে জলের শরীরে মেশা সরু নীল শব্দহীন নদীহয়ে বয়ে যাওয়া রক্তে লেখা ছিলো, সেই ক্ষত ভুলেছে পরিধি ক্রমাগত ছোট হতে হতে, যখন কালো পাখির তীক্ষ্ণ ছুরি শিসছিন্নভিন্ন করে ঘুমমহল্লা, নখের বাড়িতে জমা হতে থাকে অহর্নিশবাঁ চোখের দুর্ভাগ্য এবং দুর্ভাগ্যজনিত গ্রহবিষসেই থেকে সমস্ত মাংস শুধু, চরাচর দুর্বোধ্য আমিষ ধুয়ে জল নামবে উঠোনে ... ...
"কবে তৃষিত এ মরু ছাড়িয়া যাইব তোমার রসালো নন্দনে"। চোখ দিয়ে বারিনবাবুর জল গড়িয়ে পড়ছে, বারিনবাবুর স্ত্রী ও একমাত্র ছেলে লক্ষ্য করছে। তাদের চোখও ভিজে গেছে। বারিনবাবু কিন্তু গেয়েই চলেছেন, "কবে তাপিত এ চিত করিব শীতল, তোমারি করুণা চন্দনে"। প্রতিদিনই ঠাকুরঘরে কালীমায়ের ছবির সামনে বসে বারিনবাবু শ্যামাসঙ্গীত গেয়ে থাকেন এই সন্ধ্যাবেলায়, একনিষ্ঠ ভক্ত তিনি কালীমায়ের। তবে আজকে তিনি রজনীকান্তের গান গাইছেন, যদিও এটাও সমর্পণেরই সঙ্গীত। গানের গলাটাও চমৎকার বারিনবাবুর। এইসময় তাঁর কোনো বাহ্যিক জ্ঞান থাকেনা। স্ত্রী ও ছেলে বহুবার লক্ষ্য করে দেখেছে। বাহ্য জ্ঞান তিনি হারিয়ে ফেলেন, যখন তিনি নিজেকে সমর্পণ করেন মায়ের শ্রীচরণে। আজকে তাঁর গলায় গানটাও যেন অন্যদিনের ... ...
রামায়ণে পড়েছি, কোন এক সময় এক জোড়া জুতো দেশ শাসন করেছিল, কিন্তু আজ জুতোর কোন সম্মান নেই। এই কারণে জুতোর জন্য আমার বড়ো কষ্ট হয়। জুতো ছাড়া আপনি চলতে পারবেন না, অথচ তাকে আপনি আপনার ঘরে ঢুকতে দেন না। অন্যের ঘরে ঝগড়াঝাটি বাঁধাতে আপনি ঐ জুতো উল্টে দিয়ে