মালবিকার মত আরো হাজার হাজার মানুষ ভ্যাকসিনকে একটা মিরাকল ভাবছেন। অসুখ যেন ম্যাজিকের মত ভ্যানিশ হয়ে যাবে। ইট উইল নট। মানুষকে মানিয়ে চলতে হবে। যেমন সে মানিয়ে নিয়েছে। অনেক কিছু। ... ...
বাংলায় শিক্ষা-টিক্ষা চালু করার কথা এলে, প্রথমেই দুটো তর্ক উঠে আসে, যা সেই রবীন্দ্রনাথের আমল থেকে চলছে। এক, বাংলার পরিভাষাগুলো অদ্ভুত। ছোটো থেকে শুনে আসছি, গতিজাড্য, ভরবেগ, জ্যা, ব্যাসার্ধ, কূটাভাষ, চলগতিবিদ্যা, বস্তুবাদ, যুক্তিবাদ, তাত্ত্বিক প্রস্থানবিন্দু, এইসব নাকি খুব কঠিন কথা। 'উদস্থৈতিক কূট'? হ্যাহ্যাহ্যা সেটা আবার কী? আমরা মফঃস্বলবাসীরা এ জিনিস শুনে-শুনে পচিয়ে ফেলেছি। অথচ, কথাটা একেবারেই ফালতু। ইংরিজি দারুণ-দারুণ সোজা পরিভাষার ডিপো, তা নয়। যা আছে, তার বহু কিছুই ইংরিজিভাষীদের পক্ষেও কঠিন। মায়ের পেট থেকে পড়েই 'হাইড্রোস্ট্যাটিক প্যারাডক্স' কাকে বলে কেউ বুঝে যায়না, আর অ-ইংরেজভাষীদের পক্ষে, খুব অভ্যাস না থাকলে, বলতে দাঁত খুলেও যেতে পারে। স্ট্যালাগটাইট, স্ট্যালাগমাইট, ইন্টারডিসিপ্লিনারি-ডিসকোর্স, এসবই কঠিন জিনিস। বৈজ্ঞানিক নামগুলো তো, ওরে বাবা। পেরিপ্ল্যানেটা আমেরিকানা, মানে নাকি আরশোলা, হোমো-স্যাপিয়েন্স মানে মানুষ। তার আগে ছিল নিয়েন্ডারথাল, হোমো-ইরেকটাস। প্রচুর মুখস্থ না করলে মনে রাখা সম্ভব না। আমাদের পন্ডিতদের যেমন তৎসমের উপর একটা ঝোঁক ছিল, পশ্চিমের পন্ডিতদের ছিল লাতিনের উপরে। সব একই রকম খটোমটো। অভ্যাস করলেই অভ্যাস হয়ে যায়। নইলে হয়না। ... ...
অফিস থেকে বেরিয়ে কয়েক পা দূরে প্যাটেল চৌকের দিকে হেঁটে যাচ্ছি, একটু থামছি, চারপাশ দেখছি। আপাততঃ এদিকে আর আসা হবে না, কবে আসব, বা আদৌ কোনও দিন আর আসব কি না, কে জানে। এই চত্বরে আসার পরে প্রথম প্রথম আশপাশগুলো তাকিয়ে তাকিয়ে দেখতাম, তারপর সব রুটিন হয়ে গেল। এখন চলে যাওয়ার আগে ফের সব একবার দেখে নিতে সাধ জাগছে কেন তাই বা কে বলবে? ... ...
একদিনের গল্প, যা আসলে প্রতিদিনেরও... ... ...
এখন আর বাচ্চাদের মুদির দোকানে যেতে হয় না। তাদের মায়েরা বাড়িতে বসে নেইলপলিশ পরা আঙুলে কয়েকটা নম্বর স্পর্শ করলেই সব জিনিস বাড়িতে চলে আসে সিল প্যাকড হয়ে। দাম বেশ কম। লাইনে দাঁড়ানো নেই। ডিসকাউন্ট আছে। প্রোডাকশন বেশি। কস্ট কম। কর্পোরেট তার অক্টোপাসের বাহু প্রসারিত করছে ... ...
নতুন এ রচনা। গন্ধ নিয়ে। গন্ধ মানে সৌরভ, গন্ধ মানে পারিফিউম, গন্ধ মানে কলকাতায় দিনমানে চলা কর্পোরেশনের জঞ্জাল ফেলার গাড়ি, গন্ধ মানে শেষযাত্রার অগুরু, গন্ধ মানে ধুপ-ধূনো, গন্ধ মানে মায়ের খোলা চুল। এমন কতো কিছুই। আপনাদের উৎসাহ পেলে ভরসা বাড়বে। ... ...
এসে গেলো আবার এই "শ্রেষ্ঠ দেশের" স্বাধীনতা দিবস -- ফোর্থ অফ জুলাই। আহা, কী দেশপ্রেম! অন্যদিকে লক্ষ লক্ষ মানুষ অভুক্ত, অসুস্থ, অশিক্ষিত। এই আমেরিকাতেই। ... ...
ঈশান খবর দিয়েছে ত্রিদিবের জ্বর কমেছে। সুগার নর্মাল। কিন্ত সোয়াব টেস্টের রেজাল্ট দেরি হবে। প্রত্যেক নার্সিংহোম ক্রাউডেড। ভীষণ চাপ। কোভিড ওয়ার্ড।নন কোভিড ওয়ার্ড। টুপুর জিজ্ঞেস করেছিল, বাড়িতে আইসোলেশনে রাখা যায় না? ধর দোতলাতে রাখলাম। আমরা কেউ যাবো না। ডাক্তার রাজি হন নি। নট ফর এ পেশেন্ট উইদ কো মর্বিডিটি। বিশেষ করে সুগার পেশেন্ট। ... ...
অনুষ্ঠানের নাম ঘরের বায়োস্কোপ। কদিন আগে হয়ে যাওয়া টিভি নাইন আয়োজিত বাংলা সিরিয়াল, ওটিটি এসবের পুরস্কার-প্রদান অনুষ্ঠান। এইসব গুচ্ছের হয় জানি, দেখিনা, কিন্তু প্রদীপ্ত ভট্টাচার্যের প্রত্যাখ্যান করার ঘোষণার পর আগ্রহ বেড়ে যাওয়ায় খানিকটা দেখেই ফেললাম। পুরোটা দেখিনি, অনেক লম্বা, কিন্তু যেটুকু দেখিলাম, জন্ম-জন্মান্তরে না হলেও, অনেকদিন ভুলবনা। প্রদীপ্ত কিছু ভুল বলেননি। রাজনীতিকরা যে টিভি-সিরিয়ালের জগতে এত গুরুত্বপূর্ণ, সে এই অনুষ্ঠান না দেখলে জানতেই পারতামনা। মঞ্চে যাঁদের দেখলাম, তাঁদের মধ্যে সবার উপরে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অনুরাগ ঠাকুর। দিল্লিতে তখনও কুস্তিগীরদের ধর্ণা চলছে, কেন্দ্রীয় সরকারের দিল্লি পুলিশ তাঁদের ঠ্যাঙাচ্ছে, আর ক্রীড়া ও সম্প্রচার মন্ত্রী এসে মঞ্চ আলো করে বাণী দিচ্ছেন। তিনি সম্প্রচারের জগৎই বদলে দিচ্ছেন, অনূর্ধ উনিশ ক্রিকেট দলে ছিলেন, পরিচিতিতে এইসব বলা হল। খাঁটি ইংরিজিতে, আহা বেচারি বাংলা বোঝেননা। তিনিও প্রচুর ভালো-ভালো কথা বললেন ভাষণে। মিঠুন আর সত্যজিৎএর একই রকম প্রশংসা করলেন, রবীন্দ্রনাথকে রবিন্দরনাথ বললেন, নিজেরও পদবী ঠাকুর, তবু টেগোর বললেন, উচ্চারণটা শিখে নেবারও প্রয়োজন বোধ করেননি। বললেন অবশ্যই হিন্দিতে, পশ্চিমবঙ্গের সকল মানুষের হিন্দি জানার কথা, আর ওঁরা উচ্চারণ অবধি না জানলেও চলবে, এই বা কে না জানে। ... ...
...তিনি নিজেও চান না, এই পাড়ার ছেলেপিলেদের সঙ্গে ছাড়তে। কলকাতার লোকজন সম্বন্ধে তাঁর একটা ভীতি মনের মধ্যে কাজ করে। এখানে ছেলে-ধরা কিংবা ছেলেকে বখাটে বানিয়ে তোলার হরেক আয়ো... ... ...
শেষের এক দৃশ্যে মেয়েটি যখন তুমুল বৃষ্টিতে ভিজে ছেলেটিকে মনে করছে, ছেলেটিও তখন বারান্দায় তাকে মনে করেই আকাশের দিকে তাকিয়ে... ... ...
ট্রাইবাল টেনেন্সি অ্যাক্টগুলো মেয়েদের উত্তরাধিকার আর বহির্বিবাহ দুইয়ের ক্ষেত্রেই বাধা হয়ে দাঁড়ায়। ভারতের সাতশো খানা ট্রাইবের সাতশো আলাদা আলাদা বৈবাহিক আর উত্তরাধিকার আইন আছে। অনেক আইনই নথিবদ্ধ নয়। কিছু আইন ব্রিটিশরা লিখিত আকারে আনে।ইউনিফর্মিটি আনার জন্য প্রথম কাজ হবে সাতশোখানা আইন স্টাডি করা। ... ...
কলেজ স্ট্রিট এলাকা নিয়ে সাড়ে চার দশকের অবলোকন ... ...
একদিন অঙ্কের খাতার দিকে অনেকক্ষণ তাকিয়ে ছিলাম আমার অবধারিত প্রশ্ন বুঝতে পেরেই আগেভাগে বলে উঠেছিল - এ মেলানোর অঙ্ক নয় ... ...
তোয়াদিদি মনে মনে বলল, ‘তোদের সঙ্গে যখন থাকি, মন হয়ে যায় আকাশ, ওরে ছোট্ট ছোট্ট পাখি; আমরা সবাই থাকব ভালো, যদি তোদের ভালো রাখি।’ ... ...
কাংড়া, ধরমশালা, ম্যাকলিওডগঞ্জ সব জায়গা থেকেই সামনে দেখা যায় ধওলাধার পর্বতমালা। যত ওপরের দিকে যাবেন তত আরো সামনে এগিয়ে আসবে। ম্যাকলিওডগঞ্জ অনেকে যায় ত্রিউন্ড বলে একটা জায়গায় ট্রেক করার জন্য। ট্রেক বিশেষজ্ঞদের মতে এটা হিমালয়ের সবথেকে সোজা ট্রেক এবং বাচ্চারাও করতে পারে। ট্রেকিংয়ের জুতো বা অন্যান্য গিয়ার না হলেও চলে। ... ...
করোনা ভাইরাসের একটা অদ্ভূত ফিচার আছে। আমাদের ইমিউন সিস্টেম খুব তাড়াতাড়ি এদের ভুলে যায়। মিসলস যদি একবার হয় আর জীবনেও হবে না। লাইফলং ইমিউনিটি। করোনাভাইরাস ঠিক সেরকম নয়। এস আর এস কোভ টুর জন্য মানব ইমিউনিটি শর্ট লিভড কতোটা এখনো ঠিক পরিষ্কার নয়। অ্যান্টিবডিগুলো খুব তাড়াতাড়ি নষ্ট হয়, লাইফ লং ইমিউনিটি গ্রো করার কোনো সম্ভাবনা নেই। ভাইরাস অ্যাডাপটিভ ইমিউনিটি সেলের অ্যাক্টিভিটি নষ্ট করে দেয়। ভ্যাকসিন ইজ হাইলি টেইলর্ড। স্পেসিফিক প্যাথোজেনকে কিক অন করতে কয়েক সপ্তাহ সময় লাগে। ... ...
মানুষ সবসময়ই আমাদের ওপর এক্সপেরিমেন্ট করে কেন বলো তো? টিকটিকি। আরশোলা। অ্যালপাকা। লামা। আমাদের প্রাণের কী কোনো দাম নেই? মানুষই সব? ইরফান চেয়ে রইলেন। নেই। কোনো দাম নেই। মানুষ যাইই করুক না কেন। ... ...
আমি রুমে ফিরে যাব। কারণ এই ভেজা শরীরে অন্য কোথাও যাওয়ার প্রশ্নই উঠে না। কিন্তু এমন একটা প্রস্তাব আসল যে আমি বললাম চলুন, যাওয়া যাক। আমাদের মানে আমরা পাঁচজন ছিলাম তখন। আমাদের এই পাঁচজনের মধ্যে একজন একটু সিনিয়র। তিনি বেশ দুনিয়া ভেজে খাওয়া লোক। দুবাই থেকে এসেছেন কত বছর। এখন এখানেও হয়ে গেছে কয়েক বছর। তিনি বললেন তিনি ক্যাসিনতে যাবেন। এই জায়গাটা কেমন তা আমার দেখার খুব ইচ্ছা ছিল। এর আগের অভিজ্ঞতা তো সব বইপত্র আর পর্দায় যা দেখছি তা। তবুও আমি হয়ত রাজিই হতাম না। আমাকে বলা হল ৫০ রোন দিয়ে ঢুকতে হবে। এরপরে সারারাত থাকা যাবে। এতে লাভ? লাভ হচ্ছে সারা রাতই খাওয়ার ব্যবস্থা থাকবে! আপনি যত খুশি যা ইচ্ছা খান! আমি জানি না, সত্য মিথ্যা। হয়ত একটা মাত্রা আছে, এর বেশি গেলে হয়ত কেউ এসে না করবে। কিন্তু আমার কথা হচ্ছে তার আগ পর্যন্ত আমাকে ফেরায় কে? আমি বললাম রাজি। ... ...
ট্রাইবাল স্টেটাস নিয়ে একটা বড় আর একটা ছোটখাটো সংঘাত দেশে চলছে। সমস্যাটা হল ট্রাইবালের সংজ্ঞা নির্ধারণে। ট্রাইবাল স্টেটাস শুধু চাকরি আর উচ্চশিক্ষায় সংরক্ষণ নয় সেখানে জমির অধিকারের প্রসঙ্গও আসে ... ...