পাপের স্পর্শ ( A touch of Sin ) ছবিতে হিংসা, রক্তপাত, আত্মহনন ভালো পরিমাণে আছে। কিন্তু এসব আছে এমন একটা সমাজে বাঁচার প্রতিক্রিয়া হিসেবে যেখানে প্রতারণা আছে, নিষ্ঠুরতা আছে, আছে অর্থগর্বী প্রমত্ততা। দেখে কখনো মনে হবে না যে ৭৪ বছর আগে জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব ঘটে যাওয়া , সমাজতান্ত্রিক পথে হাঁটা কোনো দেশের ছবি দেখছি। ... ...
“মনিরুলেরা জীবনে আসে, চলে যাওয়ার জন্য”... ... ...
আসলে আমাদের প্রত্যেকেরই হয়তো লিখিত বা অলিখিত এমন কেউ থাকেন যাকে প্রকাশ্যে আনার দরকার নেই, ভেতর কুঠুরি দখল করে থাকুক মস্ত সে রাজকুমার... ... ...
এই ফুটবলের বাজারে আমি লোভে পড়ে একটা সিনেমা দেখে ফেললাম। কলকাতার সিনেমাজগতের পুরাযুগ নিয়ে সিনেমা, জিনিসটায় আমার আগ্রহ আছে, সেই লোভে। সিনেমার নাম কলা। ইংরিজিতে QALA। তাই থেকেই বোঝা উচিত ছিল কেসটা। কিন্তু আমি আবার ঠেকে শিখি। খুলে দেখি একেবারে কাঁচQALA । যেমন মিস্টিসিজম, তেমনই ডার্ক, কিন্তু সিনেমাটা কীসের প্রেক্ষাপটে, সুইজারল্যান্ড না কলকাতা, বোঝার উপায় নেই (ভাষা হিন্দি, তাতে অসুবিধে নেই, কারণ,হিন্দি সিনেমার প্রেমিক-প্রেমিকাদের প্রায়ই সুইজারল্যান্ডে দেখা যায়।) কলকাতার সিনেমা নিয়ে ছবি, কিন্তু সারাক্ষণ দেখে গেলাম সিমলারও উত্তরে কোন এক জায়গায় ধাঁইধপাধপ বরফ পড়ছে। কেদার-বদ্রীতেও সারাবছর বরফ পড়েনা, আলাস্কাতেও না, কিন্তু এখানে পড়ে, হয়তো উত্তরমেরুর কাছাকাছি, কে জানে। সেখানে এক সঙ্গীতশিল্পী মহিলা তাঁর মেয়ের উপর হেবি অত্যাচার করেন, আর বেপাড়ার একটা পাঞ্জাবি ছেলেকে ধরে এনে গান শেখান। সেই জাল ভেদ করে মেয়ে একদিন কলকাতায় গানের জগতে সুপারস্টার হয়, এই হল গপ্পের একটা অংশ। শুরুর পাঁচ মিনিটেই এটা বুঝতে পারবেন, কাজেই স্পয়লার নয়। ... ...
দম বন্ধ করে, দাঁত চেপে দেখে শেষ করলাম নতুন করে বানানো ক্লাসিক 'অল কোয়ায়েট অন দা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট'। এরিক মারিয়া রেমার্কের অসাধারণ এই উপন্যাস অবলম্বনে এর আগে আরও দুইবার সিনেমা বানানো হয়েছে। ১৯৩০ সালের সিনেমাটা দুর্দান্ত ছিল। এবারের সিনেমা নেটফ্লিক্স তৈরি করেছে এবং অসাধারণ ভাবেই তৈরি করেছে। এই সিনেমা নেটফ্লিক্স কেন হলে মুক্তি দিল না তা আমার ঠিক বুঝে আসল না। এই বছরের অন্যতম সেরা সিনেমা এইটা। অস্কারের জন্য যোগ্য দাবিদার হতে পারত কোন সন্দেহ ছাড়াই। একাডেমী অ্যাওয়ার্ডের নিয়ম অনুযায়ী মনোনয়ন পেতে হলে সিনেমাকে অবশ্যই হলে মুক্তি দিতে হবে এবং কয়েক সপ্তাহ অন্তত চলতে হবে। সেই সূত্রে অল কোয়ায়েট অন দা ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট অস্কারের জন্য মনোনীত হবে না হয়ত। ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্যাটাগরির নিয়ম জানা নাই, আইএমডিবির তথ্য অনুযায়ী এইটা ইন্টারন্যাশনাল ফিল্ম ক্যাটাগরিতে এবারের জার্মান মনোনয়ন অস্কারের জন্য। অস্কারের ছোট্ট তালিকায় জায়গা পেলে আমি অবাক হব না, বরং খুশিই হব। ... ...
বিশ্বায়ন ও নারী প্রবন্ধটি আমার মতে এই বইয়ের সেরা প্রবন্ধ। বাংলাদেশের গার্মেন্টস সেক্টর থেকে শুরু করে পৃথিবীব্যপী মেয়েদের উপর বিশ্বায়নের প্রভাব, পুঁজির প্রসারের সাথে সাথে নারী ও শিশুদের খাদ্যসুরক্ষা ও পুষ্টির অধিকার সংকুচিত হয়ে আসা, জলের অধিকার প্রায় হারিয়ে ফেলা এই সবই উঠে এসেছে। লেখক তাঁর সহমর্মিতার হাত বুলিয়ে গেছেন সেইসব লক্ষ লক্ষ মেয়েদের প্রতি যাঁরা একই সাথে রোজগার করতে, গৃহকর্ম সামলাতে বৃদ্ধ ও অসুস্থের সেবা করতে করতে লুকিয়ে ফেলতে বাধ্য হন নিজের স্ট্রেস, হারিয়ে ফ্যালেন নিজস্ব অবকাশ। লেখকের তীক্ষ্ণ দৃষ্টি দেখে ফেলেছে মেয়েদের সর্বত্রগামী উপস্থিতি, বিশেষত সার্ভিস সেক্টরে, ব্যাংকিং ইত্যাদির বিভিন্ন পদে মেয়েদের স্বচ্ছন্দ বিচরণ কাজগুলোকে করে তুলেছে কম গুরুত্বপূর্ণ। মেয়েরা সময় দিচ্ছেন বেশী, পয়সা পাচ্ছেন ঢের কম। এ এক অদ্ভুত অলাতচক্র। ... ...
প্রিয় মিশ্রাজি (পরিচালক – দীপক কুমার মিশ্রা) … এই যে প্রশ্নপত্র হাতে আমাদের দাঁড় করিয়ে গেলেন আশাকরি তার উত্তর শীঘ্রই পাব পঞ্চায়েত ৩ এ। ততদিন মনের মনিকোঠায় লুকোনো থাক ফুলেরা গ্রামের গল্পরা … ... ...
বয়সের অনেক ফারাক থাকা স্বত্ত্বেও ভাবনায় এক হয়ে যাওয়া দুটো মানুষ আবারও মুম্বাইকে ঘিরে বেঁচে থাকার স্বপ্ন দেখে নিজ নিজ জগতে। ... ...
পর্দা জুড়ে ফুটে ওঠে পরিত্যক্ত মন্দিরে এক বিশাল রামের মূর্তি। আধুনিক দর্শক আশা করি এই অনুষঙ্গ ভালোই বুঝতে পারবেন। রাম গেরুয়া ধুতি পরে রামের মূর্তি থেকে তীর ধনুক খুলে নেয়। জড়িবুটির ম্যাজিকে তার সমস্ত ক্ষত এতক্ষণে উধাও। সারাংশে রাম আর ভীম, সঙ্গে রয়েল বেঙ্গল বাঘ, কম্পজ্বর ভাল্লুক, চিড়বিড়ে চিতাবাঘ, চোখানাক নেকড়ে, দৌড়বাজ হরিণ, উপজাতির শিকারী ভায়েরা - সিনেমার গল্প জুড়ে সবার মিলিত প্রচেষ্টা বড়লাটের বাড়ি উড়িয়ে দিয়ে সব খারাপ ইংরেজ খতম করে। প্রথম দৃশ্যের নির্মম ফার্স্ট লেডির ময়ূর আঁকা নিথর হাতটি শূন্যে দোলে। কিন্তু এতো শুধু খোলসের বিবরণ। ভাবুক দর্শকের সামনে খুলে যায় বোধের দরজা। আর্য আর ফর্সা ইংরেজের সঙ্গে যুদ্ধ করে ভীম। পাঁচ নিষাদ পুত্রকে তাদের মায়ের সঙ্গে জতুগৃহে পুড়িয়ে মারার গ্লানি ধুয়ে আজ সে নিজেই নিষাদের কন্ঠস্বর, তাদের চেতনার প্রতিভূ। আর আবহ জুড়ে গান বাজে রাঘবম রাজসম। তীরধনু আর অক্ষয় তূনীর হাতে ভীমকে সুরক্ষা দেন রাম। পুলিশ অফিসার রামের অহল্যা মনোভূমি আজ ভারতের ঐতিহ্যধারী রামের স্পর্শে প্রাণ পায়। আজ সে সত্যিকারের শ্রীরামচন্দ্র হয়ে ওঠে। ... ...
সিনেমা রিভিউ ... ...
পাঠপ্রতিক্রিয়া ... ...
পাঠসমলোচনা ... ...
শিল্পী সুলতানের কথা আমার বলার অধিকার আছে? আমি জানি না। উনার কিংবদন্তী কাজ গুলো সম্পর্কে তো খুব অল্প জানি। এদিক সেদিকে কিছু কাজ দেখার সুযোগ হয়েছে। যা সকলের দৃষ্টি আকর্ষণ করে তা আমাকে করে ছিল। ক্ষেতে খামারে কাজ করছে কিন্তু একেকজনের কী পেশিবহুল শরীর একেকজনের। সুলতান লেখককে ব্যাখ্যা করেছে কেন তার চরিত্ররা এমন দারুণ স্বাস্থ্যের অধিকারী। তিনি বলছেন বাঙালিকে দুর্বল ভাবার কোন সুযোগ নাই। যারা প্রতি বছর ঝড় বন্যার সাথে যুদ্ধ করে ক্ষেতে খামারে কাজ করে টিকে আছে তারা কীভাবে দুর্বল হয়? তিনি এই খেটে খাওয়া মানুষদের ভিতরের শক্তির ছবি এঁকেছেন! তখন প্রশ্ন আসছে উনার আগের ছবিতে কেন এমন চরিত্র আঁকেন নাই? তখন কি তিনি তেমন ভাবতেন না? সুলতান জবাব দিয়েছেন তখনো তিনি তেমনই ভাবতেন। কিন্তু আঁকেন নাই। কেন? কারণ হচ্ছে তখন বাংলাদেশ স্বাধীন হয়নি! মুক্তিযুদ্ধের পরে উনি যা এঁকেছেন সব জায়গায়ই এমন পেশিবহুল মানুষের আনাগোনা। উনার কথা হচ্ছে পরাধীন একটা জাতিকে এমন শক্তসমর্থ করে আঁকলে তা বিশ্বাস যোগ্য হত না। কী দারুণ না! ... ...
বছর তিরিশ আগে এক তরুণ ডাক্তার গিয়ে পড়েছিলেন দক্ষিণ চব্বিশ পরগণার এক প্রত্যন্ত গ্রাম বেল্পুকুরের স্বাস্থ্যকেন্দ্রে যা এক আশ্চর্য নেই-রাজ্য। এরপর কীভাবে তিনি ভোল পাল্টালেন এই স্বাস্থ্যকেন্দ্রের সেই কথাই তিনি লিখেছেন একটি ছোট্ট বইতে। বইটি আমাকে প্রভাবিত করেছে গভীরভাবে। বইটি পড়ার সূত্রে আসা কিছু ভাবনা ভাগ করে নিলাম পাঠকদের সঙ্গে। ... ...
১৯৮৬ সালে এক অসামান্য কাজ বেরিয়েছিল বীরেন্দ্র চট্টোপাধ্যায়ের কবিতার ওপর। "আগুনের ফুল"। ... ...