এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  লঘুগুরু  উৎসব

  • তুষ্টি ভট্টাচার্য : মলয় রায়চৌধুরীর প্রেমের কবিতা

    Malay Roychoudhury লেখকের গ্রাহক হোন
    লঘুগুরু | উৎসব | ৩০ নভেম্বর ২০২২ | ১৬৬৭ বার পঠিত
  • 1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 | 30 | 31 | 32 | 33 | 34 | 35 | 36 | 37 | 38 | 39 | 40 | 41 | 42 | 43 | 44 | 45 | 46 | 47 | 48 | 49 | 50 | 51 | 52 | 53 | 54 | 55 | 56 | 58 | 59 | 60 | 61 | 62 | 63 | 64 | 65 | 66 | 67 | 68 | 69 | 70 | 71 | 72 | 73 | 74 | 75 | 76 | 77 | 78 | 79 | 80 | 81 | 82 | 83 | 84 | 85 | 86 | 87 | 88 | 89 | 90 | 91 | 92 | 93
    তুষ্টি ভট্টাচার্য : মলয় রায়চৌধুরীর প্রেমের কবিতা


     
    মলয় রায়চৌধুরী কেবল কবি নয়। মলয় রায়চৌধুরী পাটনার ইমলিতলা পাড়ার ছোটলোক, অন্ত্যজদের সঙ্গে ছেলেবেলা কাটিয়েছেন । মলয় রায়চৌধুরীর কেনা জাঠতুতো ভাই  মেজদা চোর ছিলেন। কবিতা লেখার দায়ে মলয় রায়চৌধুরীকে কোমরে দড়ি বেঁধে কয়েকজন চোর-ডাকাতের সঙ্গে রাস্তায় হাঁটিয়ে পুলিশ আদালতে তুলেছিল। হিংসুটেরা বলে, মলয় রায়চৌধুরী আত্মপ্রচার সর্বস্ব একজন মানুষ। সেযুগে যখন আন্তর্জাল ছিল না, হাংরি বন্ধুদের কাছে পোস্টকার্ডে নিজের লেখার খবর জানাতেন। মলয় রায়চৌধুরী অত্যন্ত অশ্লীল লেখেন, কম বয়সী মেয়েদের সঙ্গে এখনও নষ্টামি করে চলেছেন। আমি এই মলয় রায়চৌধুরীর গত জন্মের ঠাকুমা ছিলাম। এ জন্মেও সেই আত্মিক টান কাটিয়ে উঠতে পারি নি। বছর চারেক আগে   ‘কালিমাটি’ পত্রিকার একটি সংখ্যায় আমার বাবাকে নিয়ে একটু লিখেছিলাম। তখনও মলয় রায়চৌধুরীকে আমি চিনি না। মানে গত জন্মের স্মৃতি মনে আসে নি।

    উনি সেই লেখা পড়ে মন্তব্য করলেন, ‘বাবার মুখ রেখেছিস তুই। যোগ্য বাপের যোগ্য মেয়ে।’ পড়ে খুবই আবেগ প্রবণ হয়ে পড়লাম। আর তারপর বললেন, ‘আমি তোর বাপের চেয়ে পাঁচ বছরের বড়। আমাকে জেঠু বলবি।’ সেই নতুন লিখতে আসা একটি মেয়ে এরকম আন্তরিকতার ছোঁয়া পেয়ে স্বাভাবিক ভাবেই আপ্লুত হয়েছিল। এবং তারপর থেকে আমার সমস্ত লেখার দিকে ওঁর কড়া নজর থাকে। এক সময়ে জানালেন, ‘বড় লেখার হাত তৈরি হয়ে গেছে। এবার উপন্যাস শুরু কর।’ বারবার আমাকে কঠিন কঠিন বিষয় নিয়ে প্রবন্ধ লিখতে উৎসাহ দিয়েছেন। আর শুধু উৎসাহ বললে কম বলা হবে, কোন সাইটে গেলে ভাল তথ্য পাওয়া যাবে, সে বিষয়েও জানিয়েছেন। তো সেই আত্মপ্রচারক মলয় রায়চৌধুরী, যে কিনা নিজের লেখা ছাড়া আর কারুর লেখার দিকে নজর দেয় না বলে প্রচারিত ছিল, বুঝলাম সেই ধারণা কত ভুল, কত ঈর্ষান্বিত। এক সময়ে ওঁর নিজের মুখেই শুনেছি, যার বা যাদের লেখা ওঁর ভাল লাগে, তাদের উনি এভাবেই নিশ্চুপে উৎসাহ দেন।

    মলয় রায়চৌধুরীকে নিয়ে লেখা, বা ওনার কবিতা নিয়ে লেখা, আমার কর্ম নয়, এ আমি স্পষ্ট বুঝে গেছি। এখনও এই বয়সে হাজার রকম শারীরিক অসুবিধে নিয়ে এক আঙুলে কিবোর্ডে টাইপ করে লিখে চলেছেন। কবিতা, গল্প, উপন্যাস, নাটক, অনুবাদ আর প্রবন্ধ কত যে লিখেছেন আর লিখছেন, ছোটবেলার স্মৃতিকথা, ওঁর দাদার কথা, আমি এই লেখার সমুদ্রে পড়ে হাবুডুবু খেতে-খেতে হাল ছেড়ে দিয়ে ডাঙায় উঠে বসেছিলাম বেশ কিছুদিন। নাহ, মলয় রায়চৌধুরীকে  নিয়ে লেখা আমার দ্বারা আর হল না। তবু মাঝেমাঝে মনে পড়ে যেত ওঁর কথা। এই তো সেদিন ওনার দাদা সমীর রায়চৌধুরী চলে গেলেন, মৃত্যুর পরে ওঁকে নিয়ে কত লেখালেখি হল, হয়ে চলেছে, হবে। মলয় রায়চৌধুরী সম্পর্কে লেখার জন্য আবার আদা জল খেয়ে নামলাম। ইদানীং নিজের ব্লগে মলয়দা ওঁর বেশ কয়েকজন তরুণী প্রেমিকাকে নিয়ে কবিতা লিখেছেন। তার আগে ওঁর সেই বিখ্যাত অবন্তিকা সিরিজ পড়েছি। তাই ভাবলাম, এমন একজন প্রেমিক পুরুষের প্রেমের কবিতা নিয়েই কিছু লিখি। হয়ত লিখতে গিয়ে এত-এত প্রেম ওঁর আসে কোত্থেকে, জানা যাবে!

    মলয় রায়চৌধুরীর ‘প্রচন্ড বৈদ্যুতিক ছুতার’-এর উল্লেখা না করলে উনি অসম্পূর্ণ থেকে যাবেন। এরকম এক পাগল করা কবিতা পড়তে গিয়ে আমি যে লাইন গুলোয় থেমে যাই, যেখান থেকে প্রেমিক মলয় রায়চৌধুরীর জন্ম, সেই উৎসমুখ হল শুভা।

    ‘আজ আমি মগজের শরণাপন্ন বিপর্যয়ের দিকে চলে এলুম
    আমি বুঝতে পার্ছি না কী জন্যে আমি বেঁচে থাকতে চাইছি
    আমার পূর্বপুরুষ লম্পট সাবর্ণচৌধুরীদের কথা আমি ভাবছি
    আমাকে নতুন ও ভিন্নতর কিছু কোর্তে হবে
    শুভার স্তনের ত্বকের মতো বিছানায় শেষবার ঘুমোতে দাও আমায়
    জন্মমুহূর্তের তীব্রচ্ছটা সূর্যজখম মনে পড়ছে
    আমি আমার নিজের মৃত্যু দেখে যেতে চাই
    মলয় রায়চৌধুরীর প্রয়োজন পৃথিবীর ছিল না
    তোমার তীব্র রূপালি য়ূটেরাসে ঘুমোতে দাও কিছুকাল শুভা
    শান্তি দাও, শুভা শান্তি দাও
    তোমার ঋতুস্রাবে ধুয়ে যেতে দাও আমার পাপতাড়িত কঙ্কাল
    আমাকে তোমার গর্ভে আমারই শুক্র থেকে জন্ম নিতে দাও
    আমার বাবা-মা অন্য হলেও কি আমি এরকম হতুম?
    সম্পূর্ণ ভিন্ন এক শুক্র থেকে মলয় ওর্ফে আমি হতে পার্তুম?
    আমার বাবার অন্য নারীর গর্ভে ঢুকেও কি মলয় হতুম?
    শুভা না থাকলে আমিও কি পেশাদার ভদ্রলোক হতুম মৃত ভায়ের মতন?
    ওঃ বলুক কেউ এসবের জবাবদিহি করুক
    শুভা, ওঃ শুভা
    তোমার সেলোফেন সতীচ্ছদের মধ্যে দিয়ে পৃথিবীটা দেখতে দাও আমায়
    পুনরায় সবুজ তোশকের ওপর চলে এসো শুভা
    যেমন ক্যাথোড রশ্মিকে তীক্ষ্ণধী চুম্বকের আঁচ মেরে তুলতে হয়’

    কবির নিজের ভাষাতেই বলি, যেন ধর্ষণ থেকে ফিরে এসেছেন প্রেমে। নিজের মৃত্যু দেখতে চেয়েছেন, আরেকটা জন্ম পাবেন বলেই। আর এই শুভা ছাড়া এই বিবর্তন আমরা দেখতে পেতাম না কিছুতেই। এইখান থেকে শুরু হল এক উপাখ্যান। হাংরি মলয় রায়চৌধুরীর পাশে চিরনবীন, সবুজ এক প্রেমিক কবিকে পেয়ে গেলাম আমরা।

    এরপর দেখি অবন্তিকাকে। একজন আধুনিকা যিনি টেবিলের ওপর ঝুঁকে বসে আলফা, গামা, বিটার বিস্তারে অঙ্ক কষছেন, আর কবির তখন এই ইউক্লিডিনি প্রেমিকার অঙ্ক দেখে মাথা ঝাঁঝাঁ করছে, তাঁর নিজের লেখা চিঠিকে মহেঞ্জোদরোর লিপি বলে ভ্রম হচ্ছে। কবি তাঁর নবতম প্রেমিকা অবন্তিকার প্রেমে পুড়ে যেতে-যেতে তাকেই আকুল হয়ে জিজ্ঞেস করে চলেছেন, কি লিখেছিলাম আমি ওই পুরনো ভাষায়?  এই সুন্দরী কি মর্ম উদ্ধার করতে পেরেছে প্রবীণ কবির অস্থিরতাকে? তারপর যখন দেখি এই কবিকে তন্নতন্ন করে কী যেন খুঁজছেন। অবন্তিকাকে খুঁজছেন মাঝরাতে? নাকি মায়ের ট্রাঙ্ক খুলে নিজের বিয়ের কার্ড দেখছেন? লকআপে পেচ্ছাপের ওপর বসে থাকা বেশ্যাকে খুঁজছেন? দুপুর রোদে লাঙল কাঁধে চাষীকে খুঁজছেন? রক্তমাখা অতীতকে খুঁজছেন আসলে। এবং সেটাও কবিতায় কবিতায়। এভাবেই প্রেমিক মলয় রায়চৌধুরীর এক একটি নির্মাণ কী নিপুণ ভঙ্গিতে কবিতা হয়ে উঠছে!

    আবার কখনও এই অবন্তিকা যেন এক অনির্ণেয় সংজ্ঞা। যাকে কেউ কখনও দেখে নি, যার কন্ঠস্বর কেমন কেউ জানে না। যার নরম যৌনতাকে তুলনা করা যায় না কোন যৌনভাষ্য দিয়ে। যার পূর্বপুরুষের কোন দেশ, কাল সীমা নেই। সে যদি কোনও বেড়ালকে কোলে তুলে আদর করে, সে নিজেই তখন বেড়াল হয়ে যায়। যেমন তেমন বেড়াল না, আলফা বিড়ালিনী! তার ক্যাট-ওয়াকে চন্দ্র সূর্য হেলে যায়, সৌরমন্ডল কেঁপে ওঠে। এমন এক অবিশ্বাস্য প্রেমিকা কবির কাছে নীলাভ দূরত্বে থাকা অরুন্ধতী ছাড়া কীই বা হতে পারে! কোনও পুরুষ এই অবন্তিকাকে ছুঁতে পারে না। ক্ষমা, শ্রদ্ধার প্রতিমূর্তী এই অবন্তিকাই আবার ক্যাটওয়াকের সময়ে কবিকেই খোঁজে!

    এ হেন আধুনিকা অবন্তিকাকে কবি আবার বিড়ি ফোঁকা, গুটকা খাওয়া, বাংলা টানা, মিছিলে যাওয়া শ্রমিক মজুরের মত কল্পনা করেছেন। তার চুমুতে শ্রমের স্বাদ, নিঃশ্বাসে ঘুমের গন্ধ, তার জিভে রক্তের ছোঁওয়া, আর গায়ের ঘামে দিবাস্বপ্ন দেখতে পেয়েছেন কবি। জরায়ু বাদ দিয়ে গোরস্থানে দাঁড়িয়ে থাকা অবন্তিকা যখন তার পূর্ব প্রেমিকদের বহুগামীতার কথা ভাবছে, তখন কবি লিখছেন শরীরই সার্বভৌম :-.

    ‘এই মনে করে যে দেহটা তো সার্বভৌম, মন বা মনন নয় –
    মন না চাইলেও দেহে খেলে যায় ওগরানো তরল বিদ্যুত
    যা কিনা ভালো-খারাপের উর্দ্ধে; ঠিকই বলেছিস তুই
    শরীরই সার্বভৌম….’

    আর ‘অবন্তিকার শতনাম’ কবিতাটি আমার মনে হয় অবন্তিকা সিরিজের সেরা কবিতা। কয়েকটি লাইন এখানে দিই:-

    আমি অবন্তিকার দুটো মাইয়ের নাম দিয়েছি কৃষ্ণচূড়া আর রাধাচূড়া… বাঁদিকেরটা আদর করলেই গোলাপি হয়ে যায়… ডানদিকেরটা আদর করলেই হলদেটে রঙ ধরে… বাঁদিকের বোঁটার নাম করেছি কুন্দনন্দিনী… বঙ্কিমের বিষবৃক্ষ তখন ও পড়ছিল চিৎ শুয়ে… ডানদিকের বোঁটার নাম ও নিজেই রেখেছে কর্নেল নীলাদ্রি সরকার যে লোকটা সৈয়দ মুস্তফা সিরাজের ডিটেকটিভ… ডিটেকটিভ বই পড়তে ওর জুড়ি নেই… ছুঁলেই কাঁটা দিয়ে ওঠে তাই… যোগেন চৌধুরীর আঁকা ঝোলা মাই ওর পছন্দ নয়… প্রকাশ কর্মকারের আঁকা কালো কুচকুচে মাই ওর পছন্দ নয়… পেইনটিঙের নাম রাখা গেল না… যোনির কি নাম রাখবো চিন্তা করছিলুম… অবন্তিকা চেঁচিয়ে উঠলো পিকাসো পিকাসো পিকাসো… পিকাসোর যোনির কোনো আদল-আদরা নেই… কখনও বাদামি চুল কখনও কালো কখনও কিউবিক রহস্য… তাহলে ভগাঙ্কুরের… ও বলল সেটা আবার কি জিনিস… ওর হাত দিয়ে ছুঁইয়ে দিতে বলল অমঅমঅমঅম কি দেয়া যায় বলতো… পান্তুয়া চলবে… ধ্যুৎ… রস মানেই পান্তুয়া নাকি আরও কতো রকম মিষ্টি হয়… ছানার পায়েস… নারকেল নাড়ু… রসমালাই… নকশি পিঠা… রাজভোগ… লবঙ্গলতিকা… হলদিরামে ভালো লবঙ্গলতিকা পাওয়া যায়… আমি বললুম স্বাদ কিছুটা নোনতা… ও বলল দুর ছাই আমি নিজে টেস্ট করেছি নাকি যাকগে বাদ দে… হ্যাঁ… এগোই… পাছার কি দুটো নাম হবে… ডিসাইড কর… ডিসাইড কর… তুই কর আমি তো দেখতে পাচ্ছি না… না না ফের ফের… লাবিয়া নোনতা হলেও ওটার নাম দিলুম গোলাপসুন্দরী… পারফেক্ট হয়েছে… তাহলে পাছার একটাই নাম দিই… নরম নরম কোনো নাম… পাসওয়র্ড… ঠিক… এর নাম দেয়া যাক পাসওয়র্ড… ধ্যাৎ… পুরো রোমান্টিক আবহাওয়া ফর্দাফাঁই করে দিচ্ছিস…… গ্যাস পাস হয় বলে পাসওয়র্ড হতে যাবে কেন… ছিঃ… তাহলে এর নাম হোক গরমের ছুটি…’
    অমর্ত্য মুখোপাধ্যায় | মলয় রায়চৌধুরীর কবিতা

    এই কবিতায় যেন দুই কিশোর কিশোরীকে প্রত্যক্ষ করলাম আমি। যেন এরা শরীরের খেলায় মাতছে না, খেলা এদের প্রাণের। এদের বয়সও বাড়বে না যেন কোনদিন, এভাবেই এরা ছেলেমানুষ থেকে যাবে। কবিতাটি তাই যৌনক্রীড়া ছেড়ে কেমন ভাবে যেন শিশুখেলার মাঠ হয়ে গেছে, কীভাবেই বা হল এমন…… ভাবি আর ভাবতেই থাকি।

    অবন্তিকা ব্যায়াম করা থেকে ওঠাবসা, প্রায় সমস্ত কল্পনাতেই কবি তীব্র প্যাশন এনেছেন। অবন্তিকাকে নিয়ে অনেক অনেক কবিতা লিখেছেন কবি, হয়ত সংখ্যায় সব থেকে বেশি প্রেমের কবিতা লিখেছেন এই অবন্তিকাকে নিয়েই। প্রেমের মোহময় রূপ শুধু না, শরীরী আকর্ষণ শুধু না, অবন্তিকার সুখ, দুঃখ, রোজকার জীবনের ছোট বড় সমস্ত অভিঘাত এসেছে এই সিরিজে । এক কথায় বলতে গেলে, অবন্তিকাই কবির স্পেশাল প্রেমিকা। তবে সমস্ত কবিতাগুলোতেই আবেগ যেমন আছে, প্যাশন যেমন আছে, নির্মাণও তেমনি আছে ষোলকলায়। আর এই মিস্তিরিগিরিতে মলয় রায়চৌধুরী আমাদের সবাইকে চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়েছেন, কীভাবে একেকটি নির্মাণ নিপুণ শিল্প হয়ে উঠতে পারে, আদ্যপান্ত কবিতা হয়ে উঠতে পারে।
    মলয় রায়চৌধুরীর প্রেমের কবিতা by মলয় রায়চৌধুরী

    মলয় রায়চৌধুরী কবি ও প্রেমিক। কবিতা, নাকি তাঁর প্রেম, কাকে মাহাত্ম্য দেব, আমি বুঝে পাই নি এখনও। আর চিরতরুণ সবুজ এই কবি নিজেই লিখেছেন তাঁর ‘ঘাস’ কবিতায় –

    ‘ঢেউ তুলব ঘর্মাক্ত শরীরে, একদা
    সবুজ ঘাস আমি, নবজন্মে আজ
    প্রহেলিকা ইশারার ফাঁদ পেতে আছি
    জানি কোনো সৎ-কাপুরুষ আসবে
    তার বাড়তি বীজ ফেলার জন্য রাতে’
     
    তাই তাঁর প্রেম আর ফুরোয় না। বিগত জন্মের যে প্রেমিকাকে স্বীকৃতি দিতে পারেন নি, এ জন্মে তার জন্যই লিখেছেন, মাথা কেটে পাঠাচ্ছি, যত্ন করে রেখ :- 

    ‘মাথা কেটে পাঠাচ্ছি, যত্ন করে রেখো
    মুখ দেখে ভালোবেসে বলেছিলে, “চলুন পালাই”
    ভিতু বলে সাহস যোগাতে পারিনি সেইদিন, তাই
    নিজের মাথা কেটে পাঠালুম, আজকে ভ্যালেনটাইনের দিন
    ভালো করে গিফ্টপ্যাক করা আছে, “ভালোবাসি” লেখা কার্ডসহ
    সব পাবে যা-যা চেয়েছিলে, ঘাম-লালা-অশ্রুজল, ফাটাফুটো ঠোঁট
    তুমি ঝড় তুলেছিলে, বিদ্যুৎ খেলিয়েছিলে, জাহাজ ডুবিয়েছিলে
    তার সব চিহ্ণ পাবে কাটা মাথাটায়, চুলে শ্যাম্পু করে পাঠিয়েছি
    উলঙ্গ দেখার আতঙ্কে ভুগতে হবে না
    গৌড়ীয় লবণাক্ত লিঙ্গ দেখবার কোনো স্কোপ  নেই
    চোখ খোলা আছে, তোমাকে দেখার জন্য সবসময়, আইড্রপ দিও
    গিফ্টপ্যাক আলতো করে খুলো, মুখ হাঁ-করাই আছে
    আমার পছন্দের ননভেজ, সন্ধ্যায় সিঙ্গল মল্ট, খাওয়াতে ভুলো না
    মাথাকে কোলেতে রেখে কথা বোলো, গিটার বাজিয়ে গান গেও
    ছ’মাস অন্তর ফেশিয়াল করিয়ে দিও, চন্দনের পাউডার মাখিও
    ভোর বেলা উঠে আর ঘুমোতে যাবার আগে চুমু খেও ঠোঁটে
    রাত হলে দু’চোখের পাতা বন্ধ করে দিও, জানো তো আলোতে ঘুমোতে পারি না
    কানে কানে বোলো আজও উন্মাদের মতো ভালোবাসো
    মাথা কেটে পাঠালুম, প্রাপ্তি জানিও, মোবাইল নং কার্ডে লেখা আছে ‘



    কী ভয়ানক প্রেমিক! পড়লে গা শিউরে ওঠে। যে চিত্রকল্প তৈরি হয়েছে এই কবিতায়, একটা কাটা মাথা র‍্যাপারে মুড়ে পৌঁছচ্ছে প্রেমিকার বাড়ি।  সেই মুখে আবার ছ’মাস অন্তর ফেশিয়াল, আবার আলো পড়লে ঘুমোতে পারেন না বলে চোখের পাতা বুজিয়ে দিতে হবে! এই অসম্ভবকে সম্ভব করতে এই কবিই পারেন সম্ভবত। 
    আবার এই কবিই ‘এক ন্যাংটো তন্বীর জন্য প্রেমের কবিতা’য় লিখছেন - 

    ‘কুচকুচে চকচকে পুংঘোড়া হাঁকিয়ে ন্যাংটো তন্বী তুমি
    দুর্বিপাক ডেকে আনলে ঝুলে-পড়া গোলার্ধ দুটোয়
    জুজুবুড়ি জুজুবুড়ো খোকোন খুকুরানি তটস্হ সক্কলে…’ 

    যেন মনে হচ্ছে পৃথিবী ধ্বংসের মুখে দাঁড়িয়ে, আর কবি এই মেয়েটিকে আর তার ঘোড়াকে দায়ী করছেন এর জন্য। যৌনতাকে এখানে তিনি ‘সবার আগে’ বা ‘সার্বভৌম’ বলতে পারেন নি। এও কি তাহলে এক দ্বিচারিতা নয়?  নাকি অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে যৌনতার ভেদাভেদ হয়? এখানে আমাদের কবি ভাবার সময় দিয়ে চলে গেলেন অন্য কবিতায়। ‘কঙ্কালের দেশের জন্য প্রেমের কবিতা’য় যেখানে লিখছেন – 

    ‘আমি বিষ খাই বিষ খাই বিষ খাই দীর্ঘ হয়ে উঠি
    আকাশে মাথা ধাক্কা খেলে বুঝতে পারি উড়ছে অন্ধ পেঁচারা
    আমার চোখ লক্ষ্য করে কঙ্কালরা হাড়ের স্লোগান আওড়ায়
    চারিদিকে মানুষীদের জরায়ু পড়ে আছে বিষে নীল
    নেকড়েরা তবুও জরায়ু টানাটানি করে চলেছে
    আমি দীর্ঘ হতে থাকি দীর্ঘ হতে থাকি দীর্ঘ হতে থাকি
    বিষ আমাকে এতো ক্ষমতা দেবে তা তোমরা জানতে না
    তোমরা মানুষ ছিলে এককালে এখন জানোয়ারের কঙ্কাল হয়ে গেছো’ 

    এখানে দেখি, মানুষের অধঃপতন আর তার ফল। এই বিষ কি আমাদের শরীরেও প্রবেশ করল না কিছুটা? মানুষের চামড়ায় ফোস্কা পড়বেই, যদিও তারা ক্রমে জানোয়ার না হয়ে উঠেছে। 

    অবন্তিকা ছাড়াও কবি প্রেমের কবিতা লিখেছেন অনেকের জন্যই। তানিয়া চক্রবর্তীর জন্য প্রেমের কবিতায় দেখতে পাই, কবি যেন এক উদাসী পুরুষ। বারবার সাবধান করছেন প্রেমিকাকে:-

    ‘আমি তো বুনোপ্রেমিক সাধু, আমার প্রেম বদনাম করবে তোকে
    প্রাণচঞ্চল বাদামি পাথরের কাঁপুনি, অণুরণন, অয়ি প্ররোচনাময়ী
    অ্যানার্কি — হাই ভোল্টেজ উল্কি — ক্রিয়া না বিশেষ্য বুঝতে পারি না
    আমি তো মাটিতে-পোঁতা সাধু, তুই খুঁড়ে তুলবি বিপদে পড়বি
    আমি ভাটিয়ালি গেয়ে বেড়াই, নৌকোর দাঁড় বাইনি কখনও’

    দিল্লি-নিবাসী সুন্দরী সম্পাদিকা সোনালী মিত্রকে লিখছেন এভাবে:-

    ‘সোনালী প্রেমিকা ! তুইই বুঝিয়েছিলিস : হুদোহুদো বই লিখে
    বিদ্বানের নাকফোলা সাজপোশাক খুলে দেখাও তো দিকি
    কালো জিভ কালো শ্লেষ্মা কালো বীর্য কালো হাততালি
    উলঙ্গ নাচো তো দেখি তাণ্ডবের আঙ্গিকবর্জিত তালে তালে
    চুমুর পুনঃচুমু পুনঃপুনঃচুমু দিল্লির নিম্নচাপ মেঘে
    এ দ্যাখ গণ্ডারের শিব-সত্য-সুন্দরের চামড়া খুলে ফেলে
    আজকে পেয়েছি নখে প্রেমিকার চুলের জীবাশ্ম !’
    মলয় রায়চৌধুরীর কবিতা - কবিতা অঞ্চল
    কবিকে যেন পান্ডিত্যের, আভিজাত্যের বর্ম থেকে বের করে সাধারণ মানুষের মত বোধ আয়ত্ব করিয়েছেন তাঁর এই প্রেমিকা।
    বিবাহিতা ইন্দ্রাণী মুখোপাধ্যায়-এর জন্য প্রেমের কবিতায় কবি যেন হয়েছেন সুন্দরের পূজারী:-

    ‘অসহ্য সুন্দরী, আমার নিজের আলো ছিল না
    তোর আলো চুরি করে অন্ধকারে তোরই ছায়া হয়ে থাকি
    তোর আর তোর বরের নাঝে শ্বাসের ইনফ্যাচুয়েশানে
    অসহ্য সুন্দরী, বেহালার কোন তারে তোর জ্বর, তা জানিস ?
    জানি না কেমন করে রেমব্রাঁর তুলি থেকে পিকাসোর তুলিতে চলে গেলি !’

    বাংলাদেশি প্রেমিকা উপমা অগাস্টিন খেয়ার জন্য প্রেমের কবিতায় রয়েছে শুধুই প্রেম আর প্রেম, একটু বিষাদ মাখা বিরহের ছোঁয়াও আছে অবশ্য:-
    ‘উপমাকে পেতে আমার সারা জীবন লেগে গেল, জানি পাবো না
    পুরুষদের কাটা মাথার আবর্জনায় আমার মাথা তুই চিনতে পারিসনি
    কবিতারা কেন যে উপমাকে বাদ দিতে শকুন কলোনিতে ঢোকে
    আকাশে পাক ধরেছে, দেখতে পায় না—‘
    মলয় রায়চৌধুরীর প্রেমের কবিতা: Malay Roychoudhury's Love Poems - মলয়  রায়চৌধুরীর প্রেমের কবিতা
    এভাবেই একে একে অনামিকা বন্দ্যোপাধ্যায়, কৃতি ঘোষ, সোনালী চক্রবর্তীর জন্য লিখেছেন বিভিন্ন স্বাদের প্রেমের কবিতা। কবির অফুরান কলমের কালি, অবিরাম মেধা আর শ্রম রয়েছে এই কবিতাগুলোর পিছনে।
    তবে ব্যক্তিগত ভাবে আমার দুটি কবিতাকে মনে হয়েছে ভীষণ রকম আন্তরিক। যার পেছনে কারিগরির থেকে অন্তরের আবেগের টানটাই বেশি। 
    অবন্তিকা বানুর জন্য প্রেমের কবিতা : মলয় রায়চৌধুরী | Hungryalist Poems &  Photos
     
    ‘বুড়ি’ কবিতার কাছে আমার আজীবন প্রণাম রেখে গেলাম। আর কবির মৃত্যুচেতনা নিয়ে লেখাগুলোর মধ্যে এটিও একটি।

    ‘এই বুড়ি আমার দিদিমার বয়সী
    চুল পেকে গেছে, কয়েকটা দাঁত
    নেই, দিদিমার মতন শুয়ে থাকে–
    কবে শেষ হয়ে গেছে পুজো-পাঁজি
    ক্যালেণ্ডারে ছবি-আঁকা তিথি
    দিদিমার মতো এরও প্রতিরাতে
    ঘুম পায় কিন্তু আসে না, স্বপ্নে
    কাদের সঙ্গে কথা বলে, হাসে
    চোখে ছানি তবু ইলিশের কাঁটা
    বেছে ঘণ্টাখানেকে মজে খায়
    দিদিমার মতো, বলেছে মরবে
    যখন, চুড়ি-নাকছাবি খুলে নিয়ে
    পাঠাতে ইনসিনেটরে, এই বুড়ি
    চল্লিশ বছর হলো সিঁদুর পরে না
    পঞ্চাশ বছর হলো শাঁখাও পরেনি
    দামি-দামি শাড়ি বিলিয়ে দিয়েছে
    দিদিমা যেমন তপ্ত ইশারায়
    দাদুকে টেনে নিয়ে যেতো রোজ
    এও আমাকে বলে এবার ঘুমোও
    আর রাত জাগা স্বাস্হ্যের পক্ষে
    খারাপ, এই বুড়ি যে আমার বউ
    বিছানায় শুয়ে বলে, কাউকে নয়
    কাউকে দিও না খবর, কারুক্কে নয়–
    এ-কথাটা আমারই, কাউকে নয়
    কারুক্কে বোলো না মরে গেছি ।‘

    আরেকটি কবিতা, যা ঠিক প্রেমের কবিতা না হলেও এখানে উল্লেখ না করে পারছি না। নববিবাহিত দুজনের প্রেমের ওপর বাবা-মা’র যে আস্কারা বা যে অধৈর্য হয়ে পড়ার চিত্র এই কবিতায় দেখি, তাও মনে থাকবে অনেক দিন।

    ‘নতুন বউ
    আমরা দুজনে বাথরুমে বৃষ্টির তলায় নাচি
    আমাকে সাবান মাখাচ্ছে ও, আমি ওর চুলে
    শ্যাম্পু লাগিয়ে তুলছি বঙ্গোপসাগরের ফেনা
    মুখে ঢেউ বুকে বানভাসি হাসছি দুজনে
    দেড় ঘণ্টায় আমি ওর ও আমার মাংসে মিশেছে
    বন্ধ দরোজার ভেতরে আয়না লাগিয়ে
    দিয়ে গেছে দাদা, নতুন বউ যে এসেছে সংসারে–
    দেখাচ্ছি দুজনের বেপরোয়া পেছলা তাণ্ডব
    প্রথম দিনের স্নানে জীবন্ত পেইনটিঙ
    বাথরুমে বনাঞ্চল ঝর্ণা নতুন বউকে নিয়ে
    সাবান মাটিতে পড়লে চেঁচিয়ে উঠছে ও
    “এই এই ভালো হবে না কিন্তু বলে দিচ্ছি
    বাথরুমে নয়, কালই তো ফুলশয্যা করেছিলে” 
    হঠাৎ বাইরে থেকে বাবার কন্ঠস্বর শুনি :-
    “আর কতোক্ষণ লাগবে তোদের, দুঘণ্টা তো হলো
    কখন করব চান, কখন বসব খেতে, আজকে পূর্ণিমা”
    মায়ের ফিসফিসানিও শুনতে পাই, বাবাকে বলছেন :-
    “আহ, দাও না দুজনকে একটু ভালোভাবে
    পরিচয় করে নিতে, কাল থেকে তো সেই
    চাড্ডি মুখে গুঁজে নিয়ে দশটা পাঁচটার সংসার”’

     মলয় রায়চৌধুরী | মলয় রায়চৌধুরীর কবিতা

    অনেক দিন আগে  মলয় রায়চৌধুরী লিখেছিলেন, সুনীল গঙ্গোপাধ্যায় প্রতিষ্ঠিত ‘কৃত্তিবাস’ পত্রিকার জন্য আমন্ত্রিত এক কবিতায়, যা পত্রিকা-কর্তৃপক্ষ প্রকাশ করেননি, ‘নীরা আমার ঠাকুমা ছিলেন।’ সুনীলের নীরাকে নিজের ঠাকুমা বানিয়ে দিয়েছিলেন অবলীলায়! একজন নীরা, যে কিনা সারাজীবন আগের প্রজন্মের এক কবির প্রেমিকা, অধরা মাধুরী, যার বয়স কোনদিন বাড়ল না, আর তাকেই মলয় রায়চৌধুরী বানিয়ে দিলেন নিজের ঠাকুমা! তো, সব শেষে এসে এইখানে নিজের জন্য একটু আশার আলো আমি দেখতে পাই। নীরা যদি ঠাকুমা না হয়েও মলয় রায়চৌধুরীকে দিয়ে ঠাকুমা’র কবিতা লেখাতে পারেন, আমি যে কিনা মলয় রায়চৌধুরীর গত জন্মের ঠাকুমা ছিলাম, আমাকে  নিয়েও নিশ্চই লেখা হবে কোন যুগান্তকারী কবিতা, একদিন না একদিন।
    মলয় রায়চৌধুরীর যৎসামান্য কবিতা: প্রেমের কবিতার ডাক্তার

    >>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>>

    তুষ্টি ভট্টাচার্য হুগলি জেলার শেওড়াফুলির বাসিন্দা এবং বোটানিতে স্নাতক। গদ্য ও কবিতা লেখায় সমান আগ্রহ। প্রকাশিত কবিতার বইয়ের সংখ্যা তিন - ভিজে যাওয়া গাছ, ব্ল্যাক ফরেস্ট ও এরিসেডের আয়না। গদ্যের বইয়ের নাম পদাবলি।
     
     

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
    1 | 2 | 3 | 4 | 5 | 6 | 7 | 8 | 9 | 10 | 11 | 12 | 13 | 14 | 15 | 16 | 17 | 18 | 19 | 20 | 21 | 22 | 23 | 24 | 25 | 26 | 27 | 28 | 29 | 30 | 31 | 32 | 33 | 34 | 35 | 36 | 37 | 38 | 39 | 40 | 41 | 42 | 43 | 44 | 45 | 46 | 47 | 48 | 49 | 50 | 51 | 52 | 53 | 54 | 55 | 56 | 58 | 59 | 60 | 61 | 62 | 63 | 64 | 65 | 66 | 67 | 68 | 69 | 70 | 71 | 72 | 73 | 74 | 75 | 76 | 77 | 78 | 79 | 80 | 81 | 82 | 83 | 84 | 85 | 86 | 87 | 88 | 89 | 90 | 91 | 92 | 93
  • লঘুগুরু | ৩০ নভেম্বর ২০২২ | ১৬৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • প্রশ্ন | 185.220.101.11 | ৩০ নভেম্বর ২০২২ ১৪:৫৩514273
  • ' বছর চারেক আগে   ‘কালিমাটি’ পত্রিকার একটি সংখ্যায় আমার বাবাকে নিয়ে একটু লিখেছিলাম' - ওনার বাবার নাম কি?
  • তুষ্টি | 2409:4060:2e8d:12a::8388:ca00 | ৩০ নভেম্বর ২০২২ ২০:৫৫514281
  • আমার বাবা, অর্থাৎ যেমন আর পাঁচজন সাধারণ মানুষের বাবাকে নিয়ে ভালো লাগা, ইত্যাদি থাকে। সেই অর্থে সেলিব্রিটি নন তিনি।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে প্রতিক্রিয়া দিন