এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অপার বাংলা

  • তিরিশ বছর পর নেলী

    দেবর্ষি দাস লেখকের গ্রাহক হোন
    অপার বাংলা | ৩১ জুলাই ২০১২ | ২৪০৭ বার পঠিত
  • আসামে যা ঘটে গেল তা আমাদের কাছে কেমন এক হঠাৎ হিংসার মতো চমক নিয়ে এলো। আদতে শুধু আসাম নয়, গোটা উত্তর-পূর্ব ভারত সম্পর্কেই দেশের বাকি অংশ বড়ো কম জানে, জানতে চায়। সাম্প্রতিক হিংসার প্রেক্ষাপটে অপার বাংলার এই অংশটি নিয়ে এবারের বুলবুলভাজায় রইল এক গুচ্ছ লেখা।


    বহুদিন ধরে নেলীর সাথে বসবাস করছি। ঝাপসা মনে পড়ে আসাম ট্রিবিউনের প্রথম পাতায় ছাপা নেলীর সাদা কালো ছবি। তখনকার দিনের খবরের কাগজের ছবি যেরকম হত, কনট্রাস্ট বেশি, অস্পষ্ট। ছবির বিষয়বস্তু হল শীতের ধানখেতে সারি সারি লাশ।

    সে ছিল ফেব্রুয়ারি ১৯৮৩। গোটা রাজ্য তিন বছরের বেশি ধরে বিক্ষোভ, বনধ, হত্যা, কার্ফিউয়ের ঘুর্ণীতে লাট খেয়ে যাচ্ছে। ইন্দিরা গান্ধীর কেন্দ্রীয় সরকার ঘোষণা করেছে ফেব্রুয়ারিতে একসাথে বিধানসভা আর লোকসভা নির্বাচন করতে হবে। অসমিয়া জাতীয়তাবাদী সংগঠণ আসু (All Assam Students’ Union), অসম গণসংগ্রাম পরিষদ (All Assam Gana Sangram Parishad) আসাম আন্দোলনে (১৯৭৯-১৯৮৫) নেতৃত্ব দিচ্ছিল, তারা ভোট বয়কটের ডাক দিল। কারণ ভোটার লিস্টে নাকি বহু অবৈধ বিদেশী নাগরিক রয়েছে। ইতিমধ্যে ১৯৮০ সালে একই বিবাদের ফলে আসামে লোকসভা নির্বাচন করানো যায় নি। ভারতের কোনো রাজ্যের পক্ষে এরকম প্রথম ঘটনা। ১৯৮৩-র ভোটকে অন্যান্য দলগুলো কিন্তু স্বাগত জানিয়েছিল, কিছু বাঙালি ও বোড়ো গোষ্ঠীও। ফেব্রুয়ারির আগেই রাজ্যজুড়ে সংঘাতের ঘটনা আরম্ভ হয়ে গিয়েছিল। ফ্রেব্রুয়ারিতে পরিস্থিতি চরমে পৌঁছেছে।


     
    আসামের ট্রিবিউনের কথায় খবরের কাগজের কথা মনে পড়ল। খবরের কাগজ পাওয়া তখন রীতিমত ঝকমারির ব্যাপার। চার-পাঁচ দিনের কাগজ হয়তো এক লপ্তে শহরে এলো। কার্ফিউ চলত যখন লোকজন বিকেলের কার্ফিউ রিল্যাক্সেশনের সময় বেরুত নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্তর চাল, ডাল, ডিম, দুধ কিনতে। আর তখন কাগজ নিয়ে আসত। খবরের আর বিশেষ উৎস ছিল না, রেডিও সিগন্যাল ভয়ানক বিচ্ছিরি, টিভি বিরল। কার্ফিউ রিল্যাক্সেশনের জিনিসপত্তর কেনা নিতান্ত সহজ ছিল না। কার্ফিউ আর বনধ সাধারনত একসাথে হয়; যখন রাজনৈতিক দল বনধ ডাকে ঝামেলার আশঙ্কায় প্রশাসন কার্ফিউ ঘোষণা করে দেয়। বনধের দিনে যদি দোকান খোলা রাখেন দোকানের সুরক্ষার গ্যারান্টি কেউ দেবে না। আমাদের চৌমাথার বাজারের দোকানদাররা মধ্যপন্থা অবলম্বন করেছিল। দোকানের পাট নামিয়ে ভেতরে নিঃশব্দে বসে থাকত, গ্রাহক পাশের ছোট্ট দরজাতে টোকা দিলে সন্তর্পনে মাল বেচাকেনা চলত।


     
    এইসবের মধ্যে নেলী ঘটে গেল। নেলী গুয়াহাটির পূর্বদিকে প্রায় ৫০ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি ছোট শহর। ফেব্রুয়ারির ১৮ তারিখে নেলীর কাছাকাছি ১৪টি গ্রামের বাঙালি মুসলমানদের পরিকল্পিতভাবে ঘিরে ফেলা হয়। তারপর হত্যা চলে। ঘটনার আগে উস্কানিমূলক গুজব শোনা গেছিল ওই অঞ্চলের উপজাতি শিশুদের মুসলমানরা তুলে নিয়ে মেরে ফেলেছে। আসল কারণ হয়তো অন্য। ১৪ তারিখে ভোট হয়েছিল। শোনা গিয়েছিল অঞ্চলের মুসলমানরা বড় সংখ্যায় ভোট দিয়েছে। এরকমও সন্দেহ করা হয় রাষ্ট্রীয় সয়ংসেবক সংঘের ক্যাডাররা আসুতে ঢুকে পড়েছিল, তাদের হাত থাকতে পারে। (১)

    তবে অন্যান্য লোকজনের সাহায্য থাকা বিচিত্র নয়। ঘটনার তিনদিন আগে কাছের একটি থানা থেকে মেসেজ ওপরমহলে যায়, “one thousand Assamese villagers [are] getting ready to attack…with deadly weapons”। মেসেজটি উপেক্ষা করা হয়। মূলত, লালুং উপজাতির লোকেরা আক্রমণ চালায়, সাথে কিছু অসমিয়া ছিল। সরকারি হিসেবমতে মৃতের সংখ্যা ১৮১৯। অ-সরকারিমতে তিন হাজারের ওপর। হত্যার জন্য সাবেক হাতিয়ার তরোয়াল, বর্শা, দা, লাঠি, বন্দুক ব্যবহার করা হয়েছিল। মৃত ও আহতদের মধ্যে একটা বড় সংখ্যা শিশু আর মহিলাদের। যেন উদ্দেশ্য ছিল অবৈধ বিদেশীদের ভবিষ্যত প্রজন্ম নিশ্চিহ্ন করে দিতে হবে।

    নেলীর জন্য আজ পর্যন্ত কাউকে দোষি সাব্যস্ত করা হয় নি, শাস্তি দূরস্থান। পুলিশ চার্জশীট বানিয়েছিল, পরে সেগুলো বাতিল করে দেওয়া হয়েছে। ১৯৮৩ সালে তিওয়ারি কমিশন নিযুক্ত করা হয়। ১৯৮৪ সালে তার রিপোর্ট সরকারের কাছে দাখিল করা হয়। তাতে কী লেখা আছে পরের কোনো রাজ্য সরকার জানায়নি। গোপনীয়তার ঐতিহ্য আজ পর্যন্ত চলছে। ২০০৪ সালে এক জাপানী গবেষক গুয়াহাটির অমিয় কুমার দাস ইন্সটিটিউটে নেলীর ওপর পেপার পড়তে গেলে রাজ্য সরকার তাঁকে আটকে দেয়।

    এই ছোট্ট বর্ণনার পর ১৯৮৩ ফেব্রুয়ারির আমাদের শহরে ফেরা যাক। নেলী ছাড়া অন্যান্য চাঞ্চল্যকর ঘটনা কানে আসছিল। এক রাতে এক পরিচিত কংগ্রেসি নেতাকে খুন করা হল। আরেক রাতে কলেজের ছাত্ররা শহরের বাইরের মুসলমান অঞ্চলে আক্রমণ চালাতে গেলে তাদের নেতা উলটে খুন হয়ে গেল। শহীদ বেদী, মূর্তি, স্মারক, দেওয়াল লিখনের সংখ্যা বাড়তে লাগল। ঘরবাড়ি দোকানপাটে আগুন দেওয়া চলল। সেই সময়ের একটি স্লোগান আমাদের ভারী প্রিয় হয়ে উঠেছিল, 'এই জ়ুই জ্বলিছে, জ্বলিব জ্বলিছে। এই আগুন জ্বলছে, জ্বলবে জ্বলছে।' নামঘরের বাদ্যযন্ত্র সহকারে রাতে শহরের রাস্তা দিয়ে লম্বা মিছিলে বেরুত। বেশিরভাগ স্কুল কলেজের ছাত্রছাত্রী, হাতে হাতে মশাল। আমাদের উত্তেজনায় আরো ইন্ধন যোগাতে বিএসএফের একটি পল্টন ইস্কুলে ক্যাম্প বানিয়ে বসে পড়ল। অনির্দিষ্টকালের জন্য ইস্কুল বন্ধ। দুঃখের বিষয়, বাবা-মা’রা সচরাচর এরকম রোমাঞ্চকর ঘটনাবলীর কদর বোঝেন না। বাড়িতে তালা মেরে আসাম ছেড়ে একটা লম্বা ভ্রমণে বেরিয়ে পড়তে হল। এরপর ৪০০০ মানুষের হত্যা হয়ে গেলে পরে রাজীব গান্ধী আন্দোলনের নেতাদের সাথে ১৯৮৫ সালে আসাম চুক্তিতে সই করবেন।
     
    তো, নেলী আমাদের সাথেই আছে, অনেক দিন ধরে আছে। নেলী, মানে নেলী নামের অঞ্চলটি, আসামের আর পাঁচটা ছোট মফস্বলের মতই। ঘন সবুজ ধানখেত, দিগন্তে মেঘালয়ের কালো পাহাড় দেখা যাচ্ছে, দুএকটা জায়গায় সেগুনগাছ-ঝোপঝাড়, ব্যস্ত বাজার, দূর্গাপূজার মন্ডপ, আর জামাকাপড় থেকে বড়সড় মুসলমানদের জনসংখ্যা অনুমান করা গেল। ১৯৮৩-র দিনটিতে কী হয়েছিল তার কোনো স্মারকচিহ্ন খুঁজে পাওয়া গেল না।

    তবে এরকমই তো হওয়ার কথা ছিল। দিল্লী ১৯৮৪ বা গুজরাট ২০০২-হত্যাকান্ডকে রাষ্ট্র ন্যূনতম বিচারের মাধ্যমে জবাব দিয়েছে, তার কারণ তাদের প্রেতাত্মারা ফিরে ফিরে আসে। আর নেলী দেশের দূরের কথা, রাজ্যের রাজনীতিতেও এক বিস্মৃত অধ্যায়। গরিব, পাড়াগেঁয়ে মুসলমানরা মরেছে এরকম এক গণহত্যা কে মনে রাখে। দ্বিতীয়ত, যারা মরেছে মরেছিল অবৈধ বিদেশীদের বিরুদ্ধে আন্দোলনের সময়। ফলে তাদের সুবিচারের দাবি আরেকটু নড়বড়ে হয়ে যায় বইকি। দিল্লী বা গুজরাটের মৃতদের ঠিকঠাক ধর্ম ছিল না, কিন্তু তারা যে ভারতীয় নাগরিক, অনুপ্রবেশকারী নয় এই নিয়ে সন্দেহের বিশেষ অবকাশ নেই। তৃতীয়ত, হত্যাকান্ড ঘটেছে এক প্রান্তিক প্রদেশে, ভারতীয় মূলভূমি থেকে অনেক দূরে। তাই আমাদের জাতীয় যৌথ বিস্মৃতি ঘণ হয়ে ওঠে। সংক্ষেপে, নেলীর কথা কেউ শোনে না। একটি হত্যাকান্ডের পরোক্ষ বৈধতার জন্য যখন আগের একটিকে খাড়া করা হয়, নেলীর নাম তখনো আসে না।  কেননা নেলীর মধ্যে পরবর্তী কোনো হত্যাকান্ডকে বৈধতা দেওয়ার মূল্যটুকু নেই। দেশের যৌথ স্মৃতির কাছে নেলী ঘটেইনি।

    কাউকে যদি নেলীর অশরীরীরা আজও জ্বালিয়ে থাকে তারা মনেহয় রাজ্যের বামমহল। নেলী তথা আসাম আন্দোলনের পরে রাজ্যে বামদলগুলো অবস্থা ক্রমে দুর্বল হয়ে পড়েছে। একটি তথ্য দিলে ব্যাপারটা পরিস্কার হবে। ১৯৭৮ সালে বিধানসভা নির্বাচনে সিপিআই মোট ভোটের ৪.৩% পায়, ১২৬-র বিধানসভায় ৫টি আসন। সিপিএম পায় ৫.৬% ভোট, ১১টি আসন। বামদলগুলো ক্রমে শক্তিশালী হয়ে উঠছিল। আসাম আন্দোলন শুরু হল ১৯৭৯ সালে। তারপর থেকে বামদলগুলোর ক্রমে শক্তিহানি হয়েছে। সাম্প্রতিকতম ২০১১-এর ভোটে সিপিআই ও সিপিএম পেয়েছে যথাক্রমে ০.৫২% ও ১.১৩% ভোট। যদি সাবেক বামদলগুলোর থেকে চোখ ফেরাই নতুন বাম দলগুলোর দিকে, তারাও দাঁত ফোটাতে পারছে না। শোনা যায় মাওবাদীরা উজানি আসামে বিশেষত চা উপজাতিদের মধ্যে সংগঠন তৈরি করছে। তবে এর মধ্যে কতটা সত্যতা আছে তা সন্দেহের। সম্প্রতি চারজন মাওবাদী ক্যাডারকে এনকাউন্টারে মারা হয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর মতে এতে প্রমাণ হয় মাওবাদীরা আসামে সক্রিয়। তবে ওই এনকাউন্টার আদৌ সত্যিকারের না ভুয়ো, লোকগুলো আদৌ মাওবাদী কিনা এইসব প্রশ্ন উঠেছে। (২)

    ১৯৮৩ সালে নেলীতে তথাকথিত বহিরাগতদের সাথে আর কী ধ্বংস করা হয়েছিল? বামদলগুলো আগের মত জনসমর্থন আর কেন আকর্ষণ করতে পারছে না? যদি এই প্রশ্নের জবাব না পাওয়া যায় আসামে বাম আন্দোলন কখনো শক্ত জমি খুঁজে পাবে বলে মনে হয় না।

    নেলীর মত ঘটনা কেন বিশ্লেষণ করা জটিল, ফলে চটজলদি রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া দুরূহ, তার উত্তর সম্ভবত এই যে বহু রাজনৈতিক, সামাজিক প্রবাহের তার এরকম ঘটনার সাথে জড়িয়ে থাকে। অনেকে মন্তব্য করেছেন জাতিসত্তার লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সাবেক বামদলগুলোর অবস্থানে অস্পষ্টতা রয়েছে । অস্পষ্টতার কি কোনো বৈধ কারণ আছে? নেলীকে ভাবতে গেলে কী ধরনের জটিলতার সন্মুখীন হতে হয় এক এক করে খতিয়ে দেখে নেওয়া যাক।
     
    প্রথমত, নেলীর হতাহতরা বেশিরভাগ চাষি বা খেতমজুর। সাধারণভাবে, এ বিষয়ে খুব সন্দেহ নেই যে আসাম আন্দোলনের বেশিরভাগ “বহিরাগত” হতাহতদের রোজগার তাদের শ্রমের থেকে আসত। মূলত অদক্ষ  (unskilled) শ্রম। বাম রাজনীতির প্রথম নীতি বলছে যে এদের জীবন ও জীবিকার প্রতি সমর্থন থাকা উচিত।

    debarshi4.png

    দ্বিতীয়ত, হতে পারে নেলীর অনেকে বাংলাদেশ বা পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রব্রজন করেছিলেন । অর্থাৎ দেশের সীমা লঙ্ঘণ করেছিলেন। এখানে উল্লেখ্য যে বাম দলগুলোর দস্তাবেজে রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখন্ডতা ও সীমাকে প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হয়। (৩) তাহলে কী দাঁড়াল? শ্রমজীবী মানুষের জীবন ও জীবিকার অধিকারের প্রতি সমর্থনের প্রশ্ন তাদের দেশের বৈধ নাগরিক হওয়ার প্রশ্নের সাথে মিশে সামান্য জটিল রূপ ধারণ করল।


    তৃতীয়ত, আন্দোলনকারীদের বক্তব্য কী? তারা নিজেদের জাতীয় স্বার্থ রক্ষা করতে চাইছে। উত্তরপূর্বের বিভিন্ন জাতি উপজাতিগুলো যে বিভিন্ন ধরনের শোষণের শিকার এতে অনেকে একমত হবেন। অত্যাচার কখনো আর্থিক শোষণের রূপ নেয়, কখনো প্রাকৃতিক সম্পদ লুটের, কখনো রাষ্ট্রীয় দমনের। বামদলগুলোর দৃষ্টিভঙ্গী থেকে দেখলে প্রব্রজনী শ্রমিকের অধিকার রক্ষার প্রশ্ন আরো জটিলতা ধারণ করছে কেননা প্রব্রজন জাতীয়তাবাদী স্বার্থের প্রতিকূলে কাজ করে। কখনো স্থানীয় অধিবাসীরা ও প্রব্রজকরা একই প্রাকৃতিক সম্পদের ওপর অধিকার কায়েম করতে চায়। সেরকম বিবাদের মীমাংসা সুদূরপরাহত মনে হতে পারে।

    চতুর্থত, জাতীয়তাবাদী সংগ্রাম অনেক সময় বিচ্ছিন্নতাবাদী রূপ নেয়। এই রাজনৈতিক ভাষ্যে সাম্রাজ্যবাদী ভারতীয় রাষ্ট্রের কাছে উত্তরপূর্ব একটি উপনিবেশ যার ভারতের কাছে উপযোগিতা আর্থিক বা সামরিক কারণে। স্থানীয় গোষ্ঠীগুলোর প্রকৃত আর্থিক বা সামাজিক উন্নয়ন হতে পারে তখনই যদি তারা ভারতের থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এখন স্মরণ করুন যে সাবেক বাম দলগুলোর কাছে ভারতীয় রাষ্ট্রের সীমারেখা কিন্তু পাক। জাতিসত্তার অধিকার খুব ভাল কথা কিন্তু তাকে সাংবিধানিক পরিসীমার মধ্যে নমনীয় করে নিতে হবে। জাতিসত্তার অধিকারের আন্দোলনের দিক থেকে দেখলে বামপন্থীদের এই অবস্থান তাদের সন্দেহজনক করে তোলে। অনেক বামপন্থী সমর্থককে আসাম আন্দোলনের সময়ে ভারত সরকার চর হওয়ার অপবাদ সহ্য করতে হয়েছিল। এর একটা কারণ বামদলগুলো ১৯৮৩-র ভোটে অংশগ্রহণ করেছিল। কিন্তু আরেকটি প্রচ্ছন্ন কারণ হয়তো এই যে বামপন্থীরা সেরকম জাতিসত্তা আন্দোলনের কল্পনা করতে অক্ষম, বা নারাজ, যা ম্যাপের গন্ডির ভেতরে বাঁধা থাকে না।
      debarshi5.png
    শেষ করার আগে এক জোড়া স্পষ্টীকরণ দিয়ে রাখি। প্রথমত, উত্তরপূর্বের রাজনীতির আবর্তের জটিলতা নিরশন করা এই নাতিদীর্ঘ প্রবন্ধটির উদ্দেশ্য ছিল না। উদ্দেশ্য ছিল অন্তত কয়েকটি জটিলতা বোঝা। জটিলতাগুলোর মধ্যে আছে শ্রমজীবীদের আন্তর্জাতিক প্রব্রজন, জাতীয়তাবাদী আন্দোলন , আত্মরক্ষার স্বার্থে রাষ্ট্রের ক্ষমতার খেলা, তার সাথে পুঁজির জোয়ার-ভাঁটা, ধর্ম, ভাষা, এথনিসিটির বিভিন্ন মাত্রা ইত্যাদি। প্রাথমিকভাবে মনে হয়, জাতিসত্তার লড়াইকে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্বের আতশ কাঁচ দিয়ে দেখা বামদলগুলোর পক্ষে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করেছে। দেশের সীমানাকে অলঙ্ঘনীয়তার মর্যাদা দিয়ে বামপন্থীরা নিজেদের জাতিসত্ত্বার লড়াই ও প্রব্রজক শ্রমিক দুই পক্ষ থেকেই দূরে সরিয়ে নিয়েছে।


    দ্বিতীয়ত, প্রবন্ধে প্রব্রজন ও উত্তরপূর্ব নিয়ে আলোচনা হয়েছে। প্রব্রজন কিন্তু উত্তরপূর্বের সব রাজ্যে তত বড় বিষয় নয় যতটা আসামে। আসামেও দেখা যাচ্ছে গত কয়েক দশকে জনসংখ্যার বৃদ্ধির হার কমছে। বর্তমানে আসামের হার সারা ভারতের বৃদ্ধির হারের থেকে সামান্য কম। এর থেকে হয়তো বলা যায় প্রব্রজন কমে আসছে । তবে মনে রাখা ভাল যে ১৯৮০-র দশকের প্রথমার্ধে রাজ্য রাজনীতি একটা বড় পরিবর্তনের মধ্যে দিয়ে গেছে যা বাম রাজনীতির কোমর ভেঙে দিয়েছে। যে সামাজিক-রাজনৈতিক ইস্যুগুলোকে ব্যবহার করা যেত রাষ্ট্রের শোষক চরিত্রকে তুলে ধরতে সেগুলো বিভিন্ন পরিচয়বাহী রাজনীতির (identity politics) দলগুলো কবজা করে নিয়েছে। নেলীর সেই হাজারকয়েক চাষি ও খেতমজুর, যাদের লাশ বাম রাজনৈতিক ভাষ্য এই তিরিশ বছরে ছোঁয়নি, আসামের সমাজকে নতুনভাবে ও সততার সাথে বোঝার চেষ্টা করে বামপন্থীরা তাদের প্রতি শ্রদ্ধাজ্ঞাপন করতে পারে।

    (কৃতজ্ঞতাঃ ইন্ডিয়া টুডে ম্যাগাজ়িনের একটি পুরনো সংখ্যার ছবির স্ক্যান ব্যবহার করা হয়েছে। অশোক প্রসাদের কয়েকটি প্রশ্নের জন্য ধন্যবাদ জানাই। প্রবন্ধটি প্রথমে ইংরিজিতে বেরিয়েছিলঃ http://sanhati.com/excerpted/5221/)
    তথ্যসূত্রঃ
    Anju Azad and Diganta Sharma (2009) “Nellie 1983” TwoCirclesNet, February 18, http://twocircles.net/special_reports/nellie_1983.html

    Sanjib Baruah (1986) “Immigration, Ethnic Conflict, and Political Turmoil – Assam, 1979-1985,” Asian Survey, Vol. 26, No. 11 (November, 1986), pp. 1184-1206.

    Teresa Rehman (2006) “The Horror’s Nagging Shadow” Tehelka, September 30 http://www.tehelka.com/story_main19.asp?filename=Ne093006the_horrors.asp

    Myron Weiner (1983) “The Political Demography of Assam’s Anti-Immigrant Movement,” Population and Development Review, Vol. 9, No. 2 (June, 1983), pp. 279-292.

    ফুটনোটঃ

      1. http://twocircles.net/2009feb20/who_responsible_nellie_massacre.html

      2. http://sanhati.com/articles/5054/,  http://sanhati.com/articles/5062/

      3. আসামের পরিপ্রেক্ষিতে সাবেক বামদলগুলোর ব্যর্থতা অধ্যাপক হীরেন গোঁহাই এই সাক্ষাৎকারে আলোচনা করেছেনঃ http://sanhati.com/excerpted/2208/
     


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অপার বাংলা | ৩১ জুলাই ২০১২ | ২৪০৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Shovon | 24.99.112.25 (*) | ০১ আগস্ট ২০১২ ০২:৪৫90381
  • I don't have any issues with the content of the write-up. Almost 100% true. But, the citations provided do not meet the quality standards, especially, twocircles.net, which is a well known biased, fundamentalist website. Probably, you could have given better and reliable sources as citations.
  • সুশান্ত | 127.198.51.161 (*) | ০১ আগস্ট ২০১২ ০৬:০৬90382
  • একটা প্রবন্ধ লিখতে গেলে টু সার্কেল নেট, কেন পাঞ্চজন্য থেকেও তথ্য নেয়া যেতে পারে। সুতরাং অনুপ্রবেশকারীর বিরুদ্ধে আন্তরিক যুদ্ধ ঘোষক শোভনের প্রস্তাব সংগত নয়। লেখাটা তথ্যবহুল, বাইরের লোকেরা জানবেন। নেলীর ঘটনা নিয়ে তিওয়ারী কমিশনের প্রতিবেদন এখনো প্রকাশ্যে আসে নি, বামেরাও দাবি করেন না। শোভন যাদের মৌলবাদী বলে, তারা দাবি করে থাকেন। বস্তুত এরা ছাড়া আর কেউ এদের নিয়ে কথাও বলেন না। দিগন্ত শর্মা নামে, সাদিন কাগজের এক সাংবাদিক কবছর আগে ব্যক্তিগত উদ্যোগে এক তদন্ত মূলক প্রতিবেদন লিখেছিলেন। অসমিয়াতে বই হয়ে বেরুলে আমি এর অনুবাদ করি, সেটিও বই হয়ে বেরিয়েছে। অসম আন্দোলনের একটা কারণ নিশ্চয় ছিল সাম্রায্যবাদ বিরোধী লড়াইকে, শ্রমিক বিরোধী চেহারা দিয়ে দেয়া। তাতে তারা সফল হয়েছে। কিন্তু একে সাধারণ ভাবে বাম আন্দোলনকে প্রতিহত করতে পরিচালিত করা হয়েছিল, এটা 'বামে'দের সংকীর্ণ প্রচার।, সিপি আই-তো শুরু থেকেই এই আন্দলনের পক্ষে ছিল, সিপি আই এম এল (লিবারেশন)প তবে কি মানতে হবে তারা নিজেরাই 'বামে'দের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করেহিলেন? সি পি আই অসম চুক্তির সমর্থকও ছিল। বস্তুত, এরা এখন মুসলমান বিরোধী এই জিগিরকে নিতান্ত হিন্দু-মুসলমান' সংঘাত হিসেবেই দেখেন। এবং অসমিয়া বা বডো জাতীয়তাবাদের সঙ্গে থাকতে ভালো বাসেন। এর একটা কারণ আমি কদিন ধর ভাবছি, সিপিএমে-এর মূল সাংগঠনিক ভিত্তি এতো দিন ছিল বাঙালি হিন্দু সাদা কলারের কর্মচারীদের মধ্যে।,এখন সে জায়গাতে অসমিয়াদের প্রাধান্য বেড়েছে, সুতরাং ওদের বামপন্থাও পালটে গেছে। এরা বডোল্যান্ডকেও সমর্থণ করেন , বডোদের জাতীয় আবেগকে সম্মান জানাবেন বলে, কিন্তু তবে কোচ, সাঁওতাল, রাভা, গারো , বাঙালি হিন্দু জাতীয় আবেগের কী হবে, এই প্রশ্নে নীরব। মুসলমানদের কথা না হয় বাদই দিলাম ।অবশ্যি, মুসলমানদের দুর্দশা নিয়ে সিপিএম-এর খুব ভালো কিছু অধ্যয়ন আছে। এদের অধ্যয়ন এদের রাজনৈতিক লাইনের বিরুদ্ধে যায় বলেই আমার ধারনা। যেমন অনুপ্রবেশকারীর অস্তিত্বকে এরাই চ্যালেঞ্জ জানিয়ে এসছে, কিন্তু যারা যাছেন তাদেরকে অসমিয়া হয়েই থাকতে হবে, এই নিয়ে সিপিএমে খুব বিরোধ নেই। যারা অসমিয়া হজতে চাননা, তারা মৌলবাদী ! খুচরো মন্তব্য দিলাম কিছু।
  • Shovon | 24.96.23.25 (*) | ০২ আগস্ট ২০১২ ০৩:০১90383
  • "একটা প্রবন্ধ লিখতে গেলে টু সার্কেল নেট, কেন পাঞ্চজন্য থেকেও তথ্য নেয়া যেতে পারে।"
    Well, I think that this is an article, which probably has not been written by you, and most importantly, unlike your "creative" and "imaginative" news-stories, represents the truth in a truthful manner. The only weak-point in the article is the reference from TwoCircles.net - which, as everybody knows (that is, if they don't deny the truth), is a Muslim fundamentalist site.

    So, the next time, when someone quotes http://rssonnet.org, will you maintain the same position, Mr. Kar? (Of course, we know the answer already!)
  • সুশান্ত কর | 127.198.62.231 (*) | ০৩ আগস্ট ২০১২ ০৪:৫২90384
  • আমিতো তা করেই থাকি। কেন করব না, ওদের কোনো বক্তব্য তুলে ধরতে হলে, তথ্যসূত্র দেব না?
  • সুশান্ত কর | 127.198.62.231 (*) | ০৩ আগস্ট ২০১২ ০৪:৫৬90385
  • আর কে ফাণ্ডামেন্টালিস্ট, আর কে নয় সেই বিচারইবা তোমার মতো এতো সরলরেখাতে করব কী করে? আমি তো শরৎচন্দ্র পড়ে দেখি ওই ভদ্রলোকও প্রচণ্ড মৌলবাদী ছিলেন। আর সুজিত চৌধুরীও কোথাও কোথাও সাম্প্রদায়িক। বঙ্কিমের কথা নাই বা বললাম। কত সাম্প্রদায়িক , মৌলবাদী পাঠ আমাদের রোজ কলেজে পড়াতেই হয়।
  • দেবর্ষি | 135.20.82.165 (*) | ০৩ আগস্ট ২০১২ ০৮:১৩90386
  • শোভনবাবু,
    টু-সার্কলস নেটের তথ্য একজায়গায় ব্যবহার করা হয়েছে। আসুতে RSS-এর কর্মীরা ঢুকে পড়েছিল এই মর্মে টু-সার্কলসে তৎকালীন দলিল দেওয়া হয়েছে। এছাড়া ওদের প্রকাশিত নেলী প্রবন্ধটা রেফারেন্সে দিয়েছি কারণ তথ্যসমৃদ্ধ মনে হয়েছিল। আপনার সহৃদয় মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ।

    সুশান্তদা,
    আপনার নেলীর ওপর বইটা পড়ার আগ্রহ রইল। মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। কাল নেলী সংক্রান্ত একটা প্রবন্ধ পড়লাম। শেয়ার করছি, http://ibnlive.in.com/blogs/arijitsen/148/63760/assam-violence-old-wounds-new-plans-and-peace-hypocrisy.html
  • মনজুরুল হক | 212.79.21.7 (*) | ০৯ আগস্ট ২০১২ ০৫:৫১90387
  • "১৯৮৩ সালে নেলীতে তথাকথিত বহিরাগতদের সাথে আর কী ধ্বংস করা হয়েছিল? বামদলগুলো আগের মত জনসমর্থন আর কেন আকর্ষণ করতে পারছে না? যদি এই প্রশ্নের জবাব না পাওয়া যায় আসামে বাম আন্দোলন কখনো শক্ত জমি খুঁজে পাবে বলে মনে হয় না।

    নেলীর মত ঘটনা কেন বিশ্লেষণ করা জটিল, ফলে চটজলদি রাজনৈতিক অবস্থান নেওয়া দুরূহ, তার উত্তর সম্ভবত এই যে বহু রাজনৈতিক, সামাজিক প্রবাহের তার এরকম ঘটনার সাথে জড়িয়ে থাকে। অনেকে মন্তব্য করেছেন জাতিসত্তার লড়াইয়ের ক্ষেত্রে সাবেক বামদলগুলোর অবস্থানে অস্পষ্টতা রয়েছে । অস্পষ্টতার কি কোনো বৈধ কারণ আছে? নেলীকে ভাবতে গেলে কী ধরনের জটিলতার সন্মুখীন হতে হয় এক এক করে খতিয়ে দেখে নেওয়া যাক।

    প্রথমত, নেলীর হতাহতরা বেশিরভাগ চাষি বা খেতমজুর। সাধারণভাবে, এ বিষয়ে খুব সন্দেহ নেই যে আসাম আন্দোলনের বেশিরভাগ “বহিরাগত” হতাহতদের রোজগার তাদের শ্রমের থেকে আসত। মূলত অদক্ষ (unskilled) শ্রম। বাম রাজনীতির প্রথম নীতি বলছে যে এদের জীবন ও জীবিকার প্রতি সমর্থন থাকা উচিত।

    দ্বিতীয়ত, হতে পারে নেলীর অনেকে বাংলাদেশ বা পূর্ব পাকিস্তান থেকে প্রব্রজন করেছিলেন । অর্থাৎ দেশের সীমা লঙ্ঘণ করেছিলেন। এখানে উল্লেখ্য যে বাম দলগুলোর দস্তাবেজে রাষ্ট্রের ভৌগোলিক অখন্ডতা ও সীমাকে প্রধান গুরুত্ব দেওয়া হয়।"

    দেবর্ষি বাবুর এই বিশ্লেষণটুকুই যথেষ্ট মনে হচ্ছে না। বাম দলগুলো সম্পর্কে যে তথ্য দিয়েছেন সম্ভবত সেটুকুই সব নয়।
    নক্সালমুক্ত ভারতে মার্কসবাদীরা বেশ উন্নতি টুন্নতি করেছে। সাম্রাজ্যবাদী পুঁজির সঙ্ঘাটাই পাল্টে দিয়েছে। নন্দীগ্রাম নিয়ে বামপন্থার আধুনিকায়নও বেশ চমকপ্রদ। তার পরও, নেলী নিয়ে তাদের নির্লিপ্ততা রীতিমত সন্দেহজনক। আমরা এত দূরে বসে সব কিছু ভালোভাবে বুঝব না, কিন্তু সাধারণভাবে কিছু প্রশ্ন যা এক্ষেত্রে প্রাসঙ্গিক হয়ে উঠেছে। এ বিষয়ে কি দেবর্ষি বাবু খানিকটা আলোকপাত করতে পারেন?

    ১.সাম্প্রতিক ঘটনাবলী এবং নেলীকাণ্ড নিয়ে মাওবাদীদের মূল্যায়ন কি? তারা কি ওই চারজনের এনকাউন্টার পর্যন্ত শেষ কথা ধরে নিয়েছে?
    ২. অসম নিয়ে বর্তমানের কলকাতাকেন্দ্রীক বামেদের মূল্যায়ন কি?
    ৩. নক্মাসালি/মাওবাদী বাদে যারা নিজেদের মার্কসবাদী বলে দাবিটাবি করে থাকেন তারা কি এই ইস্যুকে আঞ্চলিক না সর্বভারতীয় এই বিতর্ক করছেন? নাকি অসমের 'অভ্যন্তরীণ' সমস্যা বলে এড়িয়ে যাচ্ছেন?

    এই প্রশ্নগুলো করছি কোনো প্রকার বৈরী বিতর্কের জন্য নয়। আসলে আমি বিষয়টির আরো একটু গভীরে জানতে চাইছি। যদি কেউ এ সংক্রান্ত লেখা আমার ওয়ালে পোস্ট করে দেন তাহলে খুব ভালো হয়।

    লেখাটির জন্য দেবর্ষি বাবুকে আন্তরিক ধন্যবাদ।
  • দেবর্ষি | 135.20.82.164 (*) | ১০ আগস্ট ২০১২ ০৬:৫৬90388
  • সরকারি ব্যান লাগার মাওবাদীদের বিবৃতি টিবৃতি পাওয়া মুশকিল হয়ে গেছে মনজুরুলবাবু। ওদের বক্তব্য জানতে পারা যাচ্ছে না। সিপিএমের বোড়ো-মুসলমান দাঙ্গা নিয়ে অবস্থান ঠিকঠাক মনে হল। পড়ে দেখতে পারেন,

    http://www.cpim.org/content/violence-assam

    নিচের লেখাটা সিপিএম সাইটে পেলাম,

    http://pd.cpim.org/2012/0805_pd/08052012_19.html

    কলকাতাকেন্দ্রীক বামপন্থী কাদের বললেন বুঝলাম না। যাইহোক, আপনার মন্তব্যের জন্য ধন্যবাদ। বিশ্লেষণ যথেষ্ঠ এরকম অবাস্তব দাবি করছি না। নেলী বা আসাম আন্দোলনকে বুঝতে গেলে আরো পেছনে, আরো গভীরে যেতে হবে। বৃটিশ সাম্রাজ্যের জমি রাজস্ব চাহিদা, আসামে পাট চাষের চলন, আসামের প্রাদেশিক রাজনীতির গতিপথ (আসাম আর সিলেট এক রাজ্য ছিল তখন), মাইগ্রেশন, জমির ব্যবহার (আদিবাসীরা সাধারনত শিফটিং চাষ করে, unlike the migrants), ...সব মিলিয়ে দেখা উচিত মনেহয়। ১৯৪৭-এর আগের আসামের রাজনীতির (ও অর্থনীতির) বিশদ আলোচনার জন্য অমলেন্দু গুহ'র Planter's Raj to Swaraj দেখতে পারেন।
  • mahmud | 236712.158.565623.99 (*) | ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৩:৩৮90389
  • May Allah destroy them..
  • আরো কিছু | 124512.101.6778.237 (*) | ২৭ অক্টোবর ২০১৯ ০৪:১৫90390
  • য়ারো কিছু বাকি রয়ে গেল হয় তো। নেলী হত্যাকাণ্ডের দুদিন আগে অটলবিহারী বাজপেয়ীর সেই উস্কানিমূলক ভাষণের উল্লেখটি দেখলাম না। তিনি আজকাল আবার মরণোত্তর ভারতরত্ন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। দ্বিধা না করে প্রতিক্রিয়া দিন