এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  অন্য যৌনতা

  • অসুখ সারান - তৃতীয় ও শেষ কিস্তি

    ঈপ্সিতা পালভৌমিক লেখকের গ্রাহক হোন
    অন্য যৌনতা | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৩৬৪ বার পঠিত
  • (দ্ব্বিতীয় কিস্তির পর )


     


    ভাট নং ৫ ঃ অ্যাভার্শান থেরাপি ফলপ্রসূ তো নয়ই, চূড়ান্ত বিপজ্জনক


    ---------------------------------------


    অনেক ব্যক্তিই হাজার হাজার ডলার খরচ করেও এই চিকিৎসায় সুফল তো পান ই নি, উল্টে এই যৌনতা পরিবর্তন করার মানসিক চাপ নিতে না পেরে কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়েছেন, এমনকি আত্মহত্যাও করেছেন বলে শোনা যায়।


    'নগ্ন পুরুষের ছবি দেখানোর সাথে সাথে একটি ওষুধ খাওয়ানো হল আমায়। বমি করে দিলাম নিজের উপরেই। বাহাত্তর ঘণ্টা আমি ঐ বমির মধ্যেই শুয়ে ছিলাম। আমার ডাক্তারের পায়ে পড়েছিলাম, বন্ধ করা হোক, যখন জানানো হল, চিকিৎসার পরের ধাপে আমার লিঙ্গে দেওয়া হবে ইলেকট্রিক শক। সেদিন তার পর আট ঘন্টা ধরে স্নান করেছিলাম, আর দু মাস বাদে মেনে নিয়েছিলাম, আমি গে।' কুড়ি বছর বাদে তাঁর সেই অভিজ্ঞতার কথা নিয়ে নাকি মুখ খুলেছেন মিঃ প্রাইস (http://news.bbc.co.uk/2/hi/uk_news/magazine/3258041.stm)। এবং বলাই বাহুল্য, যে জীবন এই কুড়ি কুড়ি বছরের পারে চলে গেল, তাকে ফিরিয়ে আনার আর উপায় নেই।


    এই ‘আস্বাভাবিকতা’ কাটাতে গিয়ে কেউ নাকি আর কখনো স্বাভাবিক ভাবে  জীবনে ফিরতে পারেননি, কেউ করেছেন আত্মহত্যাও।  ইত্যাদি ইত্যাদি। আর এক শুধু নেটের আর্টিকলপত্তরে রক্ষা নেই, আছে ইউটিউব দোসর। কোন সময় উটার কোন ইউনিভার্সিটিতে ছাত্ররা গে হলেই ধরে ধরে বাধ্যতামূলকভাবে আভারশন থেরাপি করা হত, সেসব থেরাপির গ্রাফিক বর্ণনা সমেত ইন্টারভ্যিউ  এমনভাবে দেওয়া যে দেখলে এসব থেরাপির প্রতি আপনারো আভার্শন চলে আসতে পারে !



     এইসব থেরাপি করতে গিয়ে যারা যারা আত্মহত্যা করতে বসেছিলেন, তাঁদের আকাউণ্ট নিয়ে অব্দি এরা ভিডিও বানিয়ে রেখেছে !



    অ্যাভার্শান থেরাপি নিয়ে কানে আসবে এইসব প্রচুর নেগেটিভ কথাবার্তা। অন্য কান দিয়ে বের করে দেবেন। দেখালে চোখ বন্ধ করে রাখবেন।



    ভাট নং ৬ ঃ সমকামিতা সারনোর ওষুধ আদৌ নেই


    ---------------------------------------------------------------


    সমকামিতা সারানোর নামে যেসব ওষুধপত্র চলে, তার নাকি সবই ভুলভাল।  উদাহরণ স্বরূপ ব্যাঙ্গালোর মান্থলি আপডেটে বেরোনো রাধা থমাসের এই 'মাই স্টোরি অব গে ইন গার্ডেন সিটি', এই লেখাটি যদি না এসেছে !


    'আমার ডাক্তার বলেছিলেন, সবই মনের ব্যাপার। থেকে থেকেই হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়তাম। এখন বুঝতে পারি, এটা আমার সমকামিতার থেকে মুক্তি পাবার চেষ্টার জন্য আসছিলো। কিন্তু আমার ডাক্তার তখন বল্লেন,এটা আসছে স্কিৎসোফ্রেনিয়া থেকে। আর সেটার মূলে আছে সমকামিতা, যার জন্য আমার হ্যালুসিনেশন হচ্ছে। আমাকে নিউরোএপিলেপ্সির ওষুধ ওরাপ আর সেরেনেস দিলেন। সে ওষুধ খাওয়ার দিনগুলো আজ ও আমার কাছে বিভীষিকা। প্রতিটা মুহূর্তে মনে হত নরকযন্ত্রণা ভোগ করছি। একদিন আর পারলাম না। ওরাপের বেশি ডোস খেয়ে নিলাম। মরতে চেয়েছিলাম। বাঁচিয়ে তোলা হল আমাকে, শুরু হল শক থেরাপি। আমার দু’ বছরের স্মৃতি, সব হারিয়ে গেল, কলেজ যাওয়া ছেড়ে দিতে হলো।


    ডাক্তার এবার নতুন ওষুধ শুরু করলেন, 'সেমাপ'। নাঃ, সমকামিতা সারলো না। তখন ডাক্তারবাবু শুরু করলেন এপিলেপ্সির ওষুধ, সেটা নাকি আমার পুরুষত্ব বাড়াবে। বলেছিলেন, এবার আমি বিয়ে করতে পারবো .....'


    নাঃ , এতেও আপনাদের ঘাবড়ে যাবার কিছু নেই। লাইফ পার্টনার হোক রক্তমুখী নীলা,কি ওষুধ,সবার তো সব কিছু সহ্য হয়না।



     ভাট  নং ৭ ঃ সমকামিতা সারানো সংক্রান্ত বইগুলি ঢপের


    -------------------------------------------------------------------------


    যেসব বই কেনার সাজেশন দেওয়া হয়েছে, কিনতে গিয়ে দেখবেন, amazon.com এর সাইট ভরে রয়েছে এই ধরণের রিভিউতেঃ 'ব্লার্বে বলা আছে, বইটি 'ক্লিনিক্যাল এক্সপেরিয়েন্স ও প্রফেশনাল রিসার্চের ভিত্তিতে লেখা।' অথচ আদৌ তা না, এটা লেখকের কোনোরকম ভিত্তিহীন নিজস্ব মতামত মাত্র, যা একটি গোষ্ঠীর বিশেষ প্রোপাগাণ্ডা, মনোচিকিৎসক ও গবেষকদের সাথে এই মত মেলে না।'


    এমনকি এরকম বেশ কিছু বই প্রত্যাহার করাও শুরু হয়েছে ! 


    এসব পড়ে মোটেও ঘাবড়ে যাবেন না। সব পাঠক সমালোচককে সন্তুষ্ট করতে সক্ষম হওয়া বই তো ঐ বুদ্ধের বলা কোনো মৃত্যুস্পর্শহীন বাড়ির সরষে দানার মতই বিরল! অতএব আমাদের ও নিজের সিদ্ধান্তের উপর ভরসা থাকুক।



     ভাট  নং ৮ ঃ সমকামিতা প্রাকৃতিক, বৈজ্ঞানিক, অতএব অসুখ নয়


    --------------------------------------------------------------------------------


    সমকামিতা সন্তান উৎপাদনে অক্ষম, অর্থাৎ বিবর্তনবাদের পরিপন্থী । অতএব অবৈজ্ঞানিক, প্রকৃতির বিরুদ্ধে ও অস্বাভাবিক। অর্থাৎ অসুখ। এই মোক্ষম, অকাট্য যুক্তিকেও ওনারা কাটতে আসেন, কি না, জীবজগতের সমকামিতার একহাজারি লিস্ট বানিয়ে। অন্যান্য সব প্রাণীর মধ্যেই আছে যখন,তখন প্রাকৃতিক না হয়ে আর যায় কোথায়। বিবর্তনের ধাঁধাও দূর করে দিয়েছেন ‘কিন সিলেকশন’ এর তত্ত্ব দিয়ে। অর্থাৎ সমকামীরা নাকি প্রজাতির অন্যদের সন্তানের উপর বিশেষভাবে যত্নশীল। ধুর ! শেষমেশ কিনা হোমো জিরাফ আর পেঙ্গুইনের গপ্পো শুনে বিশ্বাস করতে হবে সমকামিতা স্বাভাবিক ? ভাটেরও তো একটা লিমিট আছে মাইরি!



     ভাট  নং ৯ ঃ সমকামিতা প্রাকৃতিক না হলেও অসুখ নয়


    ------------------------------------------------------------------


    দাঁড়ান, দাঁড়ান। একদল ভাটদাতা এর পরেও তর্ক করে যাবেন। বলবেন, বেশ , হোমো জিরাফ আর পেঙ্গুইনের গপ্পো শুনে সমকামিতাকে বৈধতা দিতে হবে না, প্রাকৃতিক না হলেও সমকামিতার গ্রাহ্যতা কিছু কমে না। তাঁরা বলছেন, সমকামিতা যদি অন্য প্রাণীতে না থাকত, সমকামিতা দিয়ে বিবর্তনের ব্যাখ্যা নাও দেওয়া যেত, তাতেই বা কী? দুজন প্রাপ্তবয়স্ক মানুষ নিজেদের পছন্দ অনুযায়ী পরস্পরকে পার্টনার বেছে নিচ্ছেন। সে, স্বাভাবিক প্রবৃত্তির কারণেই হোক কি কোন আপাতগ্রাহ্য কারণ বিনেই। সেটাই বা ক্যানো গ্রাহ্য হবেনা? বলছেন আরেক দল। স্বাভাবিকতাই নাকি এক অস্বাভাবিক নির্মাণ। আর আমরা, মানুষেরা সভ্যতার গোড়া থেকেই নানাবিধ ‘অপ্রাকৃতিক’ কাজকর্মের মাধ্যমে সভ্যতা এগিয়ে নিয়ে চলেছি, তার বেলা?


    এঁরা এও বলবেন, ওভাবে প্রাকৃতিক বা স্বাভাবিক বলে কিছু হয়না। বিষমকামিতাও  সংখ্যাগরিষ্ঠের জন্য ‘প্রাকৃতিক’ বা ‘স্বাভাবিক’ না  সামাজিক চাপের ফলে প্র্যাক্টিসড সে কে বলবে ?  বিপরীত সামাজিক পরিস্থিতি হলে সমকামিতাও প্রচলিত প্র্যাকটিস হতেই পারে। উদাহরণ দেবেন প্রাচীন গ্রীসের। যেখানে সমকামিতার সামাজিক স্বীকৃতি ছিল এবং দেখা যেত অনেক নাগরিকই উভকামী আচরণ করেন।  বুঝতেই পারছেন, উত্তরাধুনিক কচকচানিতে ঢুকে পড়ছেন এনারা। পোমো আর হোমো বাজ ওয়ার্ড হয়েছে এখন , আর, পোমোগণ এই হোমোদের মধ্যে এক হিদার্টো আনএক্সপ্লোরড প্রান্তিকতার সন্ধান পেয়েছেন এবং তত্বকথার ফুলকি ছোটাচ্ছেন।  দূর থেকে আঁচ পোহাতে পোহাতে এসব শৌখিন মজদুরি করে বেশ বাহবা পাওয়া যায়,আপনিও হয়ত করতেন, বলা যায় না, কিন্তু নিজের ঘরে আগুন লাগলে আগে তো সেটা নেভাবার ব্যবস্থা করতে হবে , নাকি ? তবে?



     ভাট ১০ ঃ রামদেববাবা ভাট দিয়েছেন


    ------------------------------------------


    রামদেববাবাকে নাকি চ্যালেঞ্জ জানিয়েছেন মহেন্দ্র গোহিল নামে এক রাজপরিবারের সন্তান (গে বলে নিজেকে জাহির করার পর যদিও রাজবাড়ি থেকে বিতাড়িত হয়েছেন)। তাঁর বক্তব্য,তিনি দশ বছর ধরে নিয়মিত ভাবে ঐ সকল যোগাভ্যাস করার পরও যেমন গে তেমনিই থেকে গেছেন, বিন্দুমাত্র সোজা হননি। দেখুন,ঐ কী ্যেন বলে, অবিশ্বাসী মন নিয়ে করলে ঠিকঠাক ফল হয় না,মনের অসুখের বেলা তো আরোই না। মূল কথা হল, আস্থা। আস্থা হারাতে দেবেন না। আস্থা দেখতে থাকুন নিয়মিত। যোগবলের জাদুমন্ত্রে যিনি ক্যান্সার থেকে এই এইডস অব্দি সারিয়ে দিতে পারেন বলে দৃঢ়প্রত্যয়ী, তিনি এই সামান্য সমকামিতা সারাতে পারবেন না ?   


    -----------------------------------------------------------------------------------------------------


     আমাদের এই গাইডটি সঙ্গে রাখুন, পড়ুন, পড়ান, কনফিডেন্সের সাথে সমকামিতা সারান।


    এমনকি এই সব ক’টি ভাট সত্যি হলেও এটি অনুসরণ করুন। অঘটন আজও ঘটে। অবিশ্বাস্য হলেও সত্যি হয়না কি ? এই ঘোর কলিতেও ?


    এছাড়াও আপনার চেষ্টাটাই আসল। এই অসুখ সারাতে উদ্গ্রীব সকলের জন্য রইলো শুভেচ্ছা বার্তা, গেট ওয়েল সুন !  ;-)



    ( এই লেখায় ব্যবহৃত কিছু মনোবিদের বক্তব্য অরভিন্দ নারায়ণ ও বিনয় চন্দ্র লিখিত 'It’s not my job to tell you it’s okay to be gay ‘ -Medicalisation of homosexuality: a queer critique'  থেকে নেওয়া।)


      


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • অন্য যৌনতা | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ | ১৩৬৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • তাপস | 233.29.202.172 (*) | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ ০৭:৩২77784
  • এইবার চটি হয়ে যাক
  • সুকি | 212.160.18.114 (*) | ২৬ ডিসেম্বর ২০১৩ ১১:২৮77785
  • যাঁরা বর্ডার লাইন কেস, মানে নিজে ঠিক সমকামী কিনা বুঝতে পারছেন না - বা একটা তুল্যমূল্য বিচার করে তারপরই কোন একটা দিকে ঝুঁকতে চাইছেন, তাঁদের আমার একটা পরামর্শ দেবার আছে - খুঁজে পেতে কোন এক গে-কাপলের সাথে কিছুদিন ওঠা বসা করুন। মনে রাখবেন একা গে-এর সাথে মিশে বিশেষ সুবিধা হবে না - মাঝে থেকে নিজের পিছনটি মারা যেতে পারে।
    লিগ্যালি ম্যারেড গে-কাপলের কথা বলছি - এদের সাথে ওঠা বসা করুন। নদীর ওপারের ঘাস কেমন একটু পরিষ্কার হয়ে যাক বা ঠাকুমার কথায় 'কত ধানে কত চাল' সেটাও একটু খোলসা হয়ে যাক। এই নিয়ে যে কত কথা বলার আছে - একেবারে হেঁসেলের খবর যাকে বলে - কোন দিন সময় সুযোগ হলে বলা যাবে ক্ষণ!
  • Somnath Roy | 127.197.65.34 (*) | ০৪ জানুয়ারি ২০১৪ ০৪:২৫77787
  • কবির সুমন একটি সাম্প্রতিক সাক্ষাৎকারে বলেছেন উনি আগে সমকামী ছিলেন, এখন আর নন।
  • sswarnendu | 222.73.197.99 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৪ ১১:০৯77788
  • দারুণ হয়েছে... শুধু একটা কথা, কিন সিলেকশন কিন্তু খুবই বিতর্কিত তত্ত্ব, নয় কি? আমার জীববিদ্যার নলেজ খুব ভরসা করার মত নয়, তাই জানতে চাইছি।
  • বিপ্লব রহমান | 190.234.214.22 (*) | ০১ জুলাই ২০১৫ ০১:৪০77789
  • আজ অনেকদিন পর এই নিয়ে একটি সংবাদ লিখতে গিয়ে পাইয়ের এই নোটটির কথা মনে পড়লো। জিও!

    __

    সমকামি বিয়ে নিয়ে বর্ণিল অন্তর্জাল
    Wednesday, 1 July 2015 14:48
    //নিউজনেক্সটবিডি ডটকম

    বিশেষ প্রতিনিধি, ঢাকা: যুক্তরাষ্ট্রের আদালত সম্প্রতি সমকামি বিবাহকে বৈধতা দেওয়ায় এদেশের অন্তর্জালে এ নিয়ে শুরু হয়েছে তোলপাড়। এদেশের অনেকেই এ রায়কে সমর্থন জানিয়ে বর্ণিল করছেন নিজস্ব অন্তর্জালিক পরিচয়।

    খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফেসবুক, টুইটার, কমিউনিটি ব্লগসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শুরু হয়েছে নতুন করে বিতর্ক। প্রতিদিন এর পক্ষে বিপক্ষে লেখা হচ্ছে শত শত পোস্ট। সমকামিতায় প্রজন্ম রক্ষা হয়না দেখে প্রায় সব ধর্মেই এটি রীতি বিরুদ্ধ। আর এটিই উস্কে দিয়েছে বিতর্ককে।

    সমকামি, উভকামি ও লিঙ্গ পরিবর্তিতকামিদের আন্তর্জাতিক সংগঠন এলজিবিটি প্রাইড ও এলজিবিটি স্যোশাল মুভমেন্ট দলীয় পতাকা হিসেবে ব্যবহার করছে রংধনুর সাতটি রং। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের রায়কে সমর্থন জানিয়ে ফেসবুক প্রতিটি সদস্যর প্রোফাইল ছবি সাত রঙে বর্ণিল করার সুযোগ দিয়েছে। বাংলাদেশের অনেকেই সচেতনভাবে নিজ নিজ প্রোফাইলের ছবি বর্ণিল করায় সমকামিতা নিয়ে দেখা দিয়েছে মতভেদ।

    অন্যদিকে ‘বিজ্ঞান আনে চেতনা, চেতনা আনে সমাজ পরিবর্তন’ শ্লোগানে অগ্রসর কমিউনিটি ব্লগ মুক্তমনা ডটকম যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের রায়কে সমর্থন জানিয়ে সাইটের ব্যানারটি সাত রঙে বর্ণিল করেছে। সেখানে সমকামি বিয়ের আইনগত স্বীকৃতিদান নিয়ে লেখা হয়েছে আলাদা পোস্ট।

    ওই সাইটের নির্মাতা, বিজ্ঞান লেখক অভিজিৎ রায় মৌলবাদী হামলায় গত ২৬ ফেব্রুয়ারি খুন হন। একইভাবে ১২ মার্চ খুন হন আরেক মুক্তমনা লেখক অনন্ত বিজয় দাস। এই দুই হত্যাকাণ্ডসহ ব্লগার হত্যার কোনো ঘটনারই এখনো বিচার হয়নি।

    ২০১০ সালে অমর একুশে গ্রন্থমেলায় প্রকাশিত অভিজিৎ রায়ের বই ‘সমকামিতা’ ব্যপক সাড়া ফেলে। এটি ছিল সমকামিতা নিয়ে একটি বৈজ্ঞানিক ও সমাজ-মনস্তাত্ত্বিক অনুসন্ধানমূলক বই। এই বইয়ের মাধ্যমে তিনি লেখক মহলে সাড়া ফেলেছিলেন।

    এছাড়া দেশের শীর্ষ ব্লগ সাইট সামহোয়ারইনব্লগ ডটনেট, সচলায়তন ডটকম, নাগরিকব্লগ ডটকম, ইস্টিশন ডটকম-সহ বিভিন্ন ব্লগে সমকামিতা নিয়ে চলছে আলোচনা। ওপার বাংলার ব্লগাজিন গুরুচণ্ডালি ডটকম বহু বছর ধরে সমকামিতাকে বৈধতা দানের পক্ষে লেখালেখি করছে। যুক্তরাষ্ট্রের আদালতের ঘোষণা তাদের আলোচনাকে উৎসাহিত করেছে।

    অর্থনীতিবিদ ও লেখক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ তার প্রতিক্রিয়া জানিয়ে ফেসবুক নোটে লিখেছেন, ‘যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট সমকামি সম্পর্ককে বিবাহ হিসেবে আইনী স্বীকৃতি দেবার পক্ষে রায় দিয়েছে। এই অধিকার সে দেশের মানুষের দীর্ঘদিনের আন্দোলনের ফসল। আমি যুক্তরাষ্ট্রের অনেক ব্যক্তি, রাজনৈতিক-সামাজিক সংগঠন চিনি যারা এই আন্দোলনের সঙ্গে কমবেশি যুক্ত ছিলেন। যারা আন্দোলনে ছিলেন তারা নিজেরা অনেকেই সমকামি নন। নিজেদের জীবনে তা চর্চার ইচ্ছাও তাদের নেই। কিন্তু তারা এই অধিকারের পক্ষে লড়েছেন। কেননা এটা সমাজের বৈষম্য, নিপীড়ন এবং অস্বীকৃতির একটি ধারা থেকে অনেক মানুষকে মুক্ত করতে পারে। চিন্তা ও সম্পর্কের বিভিন্নতার প্রতি স্বীকৃতিও এটি।’

    নিউজনেক্সটবিডি ডটকম/বিআর/এসএ

    - See more at: http://bangla.newsnextbd.com/article175253.nnbd/#sthash.SAPYH271.dpuf
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন