এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • " বাপ নে দিয়া হোগা মিউজিক।"

    শিবাংশু লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৭ জুন ২০১৪ | ৫৭৫ বার পঠিত
  • হাজার হোক, গোবিন্দমাণিক্যের রক্ত ; নির্ভেজাল রাজরক্ত, তা নিয়ে তো কারো সন্দেহ নেই । কী আর করা যাবে ? খুড়ো-ভাইপোর লড়াইয়ে ইঁটকাঠের সিংহাসনটা হয়তো হাতছাড়া হয়ে গিয়েছিলো । কিন্তু মানুষের হৃদয়ে যে সিংহাসন পাতা তাতে পিতা-পুত্র, দুজনেরই বাঁধা মৌরসিপট্টা । নয়তো পিতার কবে একশো পেরিয়ে গেছে, আর পুত্র আজ পঁচাত্তর । চোখের সামনে তাঁরা আর নেই । কিন্তু ছড়িয়ে আছে তাঁদের সুরসাম্রাজ্যের নিসর্গ পত্তন । তাঁরা আজও রাজপুত্র ।
    -------------------------------
    সোনার চামচ মুখে নিয়ে জন্ম । কিন্তু লড়াই করে অর্জন করতে হয়েছিলো সব কিছু । বটবৃক্ষের মহিমাবৃত পিতা পুত্রকে ছায়া দিয়েছিলেন কিছুদিন । তবু খ্যাতি-সিদ্ধির মুকুট ছিলো পুত্রের স্বোপার্জিত । খুব সহজ ছিলোনা পথটি । পুত্রের পড়াশোনা নিয়ে যদিও পিতার বিশেষ মাথাব্যথা ছিলোনা । তবে পুত্রের গানবাজনার প্রতি নিষ্ঠাটি নিয়ে তাঁর কিছু দৃঢ় অবস্থান ছিলো। রাজকুমারের উপযোগী পড়াশোনা তিনি নিজেও করেননি । একবার ইংরিজিতে এমএ পড়ার জন্য কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ে এক বছর সময় অপচয় । তার পর আইন পড়ার জন্য আরো কিছুদিন । ত্রিপুরা রাজ্যের প্রধানমন্ত্রীর কনিষ্ঠ পুত্র বংশের একমাত্র স্নাতক হয়েই রয়ে গেলেন । তাঁর নেশা তৃপ্ত হয় কৃষ্ণচন্দ্র, ভীষ্মদেব, বদল খাঁ, সাহেব আলি, আব্বাসউদ্দিনের সান্নিধ্যে । তিনিও পুত্রের কাছে কোনও বড়ো ডিগ্রি হাসিল করার আকাঙ্খা রাখেন না । ব্রজেন বিশ্বাসের কাছে তবলার তালিম । আলি আকবরের কাছে সরোদ । সময় পেলেই রাসবিহারিতে পারিবারিক বন্ধু, কুমিল্লাবাসী মালিকের দোকান মেলোডিতে গিয়ে পশ্চিমের গানবাজনার রেকর্ড জোগাড় করা । বম্বেতে গেলে কের্সি লর্ডের বিপুল সংগ্রহ থেকে জ্যাজ, লাতিন, মার্কিন, য়ুরোপীয়, মধ্যপ্রাচ্যের লং প্লে রেকর্ড থেকে সাগরপারের সুরসন্ধান । পুত্রের এই রকম একটি ব্যবস্থা করেই পিতা তৃপ্ত । দিদিমার আগ্রহে পুত্রকে কলকাতায় রাখতে হয় । বালিগঞ্জ গভমেন্ট ইশকুলে ভর্তি করে বাবা-মা বম্বেতে ফিরে যান । পুত্র কিন্তু সগৌরবে পরীক্ষায় ফেল করে একাধিকবার । অতএব বালিগঞ্জ থেকে বিদায় এবং পাশেই, 'যার নেই কোনও গতি'কে আশ্রয় করা । পিতা একেবারেই চিন্তিত ন'ন । পরীক্ষা ফেলের খবর শুনে পুত্রকে একটি সাইকেল কিনে দিলেন । পুত্র তাতে চড়ে চারদিক ঘুরে ফিরে বেড়ান, খেলাধূলা করেন, ধৈর্যহীন গানবাজনা চর্চা । কিন্তু এই লাগামছাড়া জীবনে যখন কসবা খালপারে গিয়ে গঞ্জিকাসেবনের অভ্যেসটি যোগ হলো, তখন পিতা কিছু চিন্তিত বোধ করলেন । পুত্রের অমতে তাকে নিয়ে সোজা বম্বেতে বামালসমেত নিজের কাছে। সেটা একান্ন সাল ।
    ---------------------------------------------------

    বম্বেতে পুত্র ঘুরে বেড়ান বিভিন্ন স্টুডিওতে, যেসব জায়গায় পিতার নেতৃত্বে সঙ্গীত সৃষ্টি হয়ে চলেছে । পিতার সহকারী নির্দেশকের ভূমিকায়, বস্তুতঃ শিক্ষানবিশি। হাতেকলমে কাজ শেখার পালা । প্রথমে আলি আকবর, পরে তাঁর পুত্র আশিস খানের কাছে তালিম পেয়েছিলেন সরোদে । কিন্তু আমরা শুধু শুনতে পাই পিতার 'ঘুম ভুলেছি নিঝুম' গানের প্রিলিউডে বাজানো ছোট্টো কয়েকটি স্ট্রোক । তাঁর সাফল্য ছিলো হারমোনিকায় । পিতার সুরে 'সোলওয়া সাল' ছবিতে হেমন্তের সঙ্গে 'হ্যঁয় অপনা দিল তো আওয়ারা'য় তাঁর বাজানো হারমোনিকার অনুষঙ্গ এখনও শুনলে বোঝা যায় তাঁর বাজনা গানটিকে কী ধরনের ভিন্ন মাত্রা দিয়েছিলো । গুরু দত্তের 'প্যাসা' ছবির ব্যাক স্কোরে তাঁর হার্মোনিকার সুর লাগানো ক্রমাগতভাবে শোনা যায় । তবে তাঁর এই ক্ষমতাটিকে পূর্ণ মর্যাদা দিয়েছিলেন লক্ষ্মীকান্ত কুদলকর আর প্যারেলাল শর্মা 'দোস্তি' ছবির সুর তৈরি করার সময় । এঁরা দুজনেই তাঁর পিতার সঙ্গীত সহকারী ছিলেন একসময়, তাই তাঁদের মধ্যে ছিলো প্রগাঢ় সৌহার্দ্য । প্যারেলাল একটি সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন পঞ্চম হারমোনিকায় 'বেস্ট ইন দ্য ইন্ডাস্ট্রি' । তবে নিজে না বাজালেও পিতার সহকারী হিসেবে যেসব গন্ধর্বরা সে সময় তাঁর সঙ্গী ছিলেন তাঁরা সকলেই এক একজন মহারথী । কাওয়াস 'কাকা' লর্ড, জয়রাম আচারিয়া, বাসু চক্রবর্তী, মনোহারি সিং, মারুতি রাও কীর, কিছুদিন পরের হোমি মুল্লান, ভূপিন্দর সিং, অম্রুতরাও, ভানু গুপ্তা এবং আরো কয়েকজনের সান্নিধ্য তাঁর সুরসৃষ্টির ধারণা ও ক্রমপরিণতিকে গভীরভাবে প্রভাবিত করেছিলো । কিন্তু স্বাধীনভাবে একটি ছবির সুরসৃষ্টি করার যে আকাঙ্খা সব শিল্পীর মধ্যেই থাকে, তার কোনও রকম সম্ভাবনা তখনও দেখা যাচ্ছিলোনা । অতো বিশাল মাপের একজন পিতার ছায়া থেকে বেরিয়ে এসে যে তিনিও যে নিজের দক্ষতা দেখাতে প্রস্তুত, সে খবর নেবার লোক ছিলোনা কোথাও । ১৯৯২ সালে একটি সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছিলেন, তিনি সেই সময় যখনই কোনও গানের উৎকৃষ্ট সুর তৈরি করতেন, শ্রোতারা শুনে বলতো, " বাপ নে দিয়া হোগা মিউজিক।"
    ------------------------------------------
    এই জাতীয় স্বতঃসিদ্ধ জনভাবনার বিপরীতে গিয়ে নিজের জন্য আলাদা পথ কাটার যে যাত্রা তা ছিলো বেশ বন্ধুর । ফিল্মি দুনিয়ায় যাকে 'ড্রিম লঞ্চ' বলা হয়, সে রকম কোনও চমকদার শুরুয়াৎ ছিলোনা কোথাও । কুমার শচীন দেব বর্মণের পুত্র হিসেবে সুযোগ, সাহচর্য, পরিবেশ সব পেয়েছিলেন, কিন্তু তাঁর স্ট্রাগল ছিলো একান্তভাবে নিজস্ব । আমি এই লেখাটিতে ছোটোকত্তার প্রাথমিক প্রস্তুতির কিছু পরিচয় পাবার চেষ্টা করেছি । পরবর্তীকালে ষাট-সত্তর দশকে হিন্দি ছবির প্রতিষ্ঠিত দিগগজ সঙ্গীত রচয়িতাদের লোকপ্রিয়তা ও সৃষ্টিশীলতার নিরিখে মাৎ করলেও প্রথম সাত বছরের যে যুদ্ধ পঞ্চম দিয়েছিলেন, ভবিষ্যতের চোখ ঝলসানো কৃতিত্বের আলোয় তা অনেক সময় লুকিয়ে থাকে । কিন্তু চিরন্তন 'হ্যাপি গো লাকি' পঞ্চমের জীবনের প্রথম পর্বে এই লড়াই তাঁর শিল্পী চরিত্রের আরেকটা উল্লেখযোগ্য দিক। তখন তাঁর কোনও তাড়া ছিলোনা । জানতেন তাঁর দিন ঠিক আসবে । জীবনের শেষ পর্বে এই শক্তিটিই হারিয়ে ফেলেছিলেন তিনি । নিজের উপর বিশ্বাস চলে গিয়েছিলো তাঁর । তিনি ভাবতে পারেননি তাঁর প্রয়াণের এতোদিন পরের শ্রোতা-শিল্পীরাও তাঁকে শাশ্বত আইকনের সম্মান দেবেন স্বতঃস্ফূর্ত উষ্ণতায়।
    -----------------------------------------
    ষাটের দশকের শুরুতে ভগ্নীপতি সৈয়দ আলি আকবরকে চিত্র পরিচালক হিসেবে সুযোগ করে দেবার জন্য বম্বের মেহমুদ আলি একটি ফিলম প্রোডাকশন কোম্পানি খুললেন । সেই কোম্পানির প্রথম ছবির চিত্রনাট্য তৈরি হলো স্কুলজীবনে মেহমুদের নিজের করা একটি একাংক নাটক অবলম্বনে ; নাম 'ছোটে নওয়াব'। ছবিটি ছিলো কয়েকজন নবাগতের প্রথম ভাগ্য পরীক্ষার উদ্যম । প্রযোজক মেহমুদ, পরিচালক আকবর এবং সঙ্গীতনির্দেশক মেহমুদের ঘনিষ্ট বন্ধু পঞ্চম । এর আগে পঞ্চমের ঊনিশ বছর বয়সে গুরুদত্ত একটা সুযোগ দিয়েছিলেন তাঁকে স্বাধীনভাবে সঙ্গীত নির্দেশনা করার জন্য । ছবিটির নাম ছিলো 'রাজ' । বড়োকত্তা একেবারে রাজি ছিলেন না । এতো কমবয়সে কম্পোজারের বেটন দিতে চাননি পঞ্চমের হাতে । কিন্তু এই সুযোগে পঞ্চম কয়েকটি গান নিজে তৈরি করে ফেলেছিলেন। ইতোমধ্যে 'কাগজ কা ফুল' ফ্লপ করায় গুরুদত্ত 'রাজ' ছবিটিকে পরিত্যাগ করেন এবং গানগুলি পঞ্চমের সংগ্রহে থেকে যায় । এই গানগুলি থেকেই পঞ্চম তাঁর বিখ্যাত "ঘর আজা, ঘির আয়ে" গানটি 'ছোটে নবাব' ছবিতে ব্যবহার করার কথা ভাবেন । প্রকৃতপক্ষে এই গানটিই ছবিতে পঞ্চমের সৃষ্ট প্রথম স্কোর । তা কেউই বিশ্বাস করেনি এই রকম একটা রচনা একটা ঊনিশ বছরের মাথায় পূর্ণতা পেতে পারে । সবাই আবার সেই কথাই বলেছিলো, " বাপ নে দিয়া হোগা মিউজিক।"

    গানটি ছিলো মালগুঞ্জি রাগের উপর বাঁধা । তার আগে বাপবেটার এই রাগের ভিত্তিতে তৈরি কোনও রচনা আমরা পাইনা । বড়োকত্তার একটা পুরোনো বাংলা গান ছিলো বটে এই রাগে, কিন্তু তার নির্মাণ একেবারে পৃথক । গানের মুড বুঝে মারুতি রাও তেওড়া তালে সঙ্গত করেছিলেন খুব নরম ঠোকায় । উস্তাদ কি মার । আরেকটা ব্যাপার চোখে পড়ে এই গানটির অ্যারেঞ্জমেন্টে । গানের দুটি কলির মধ্যে বিভিন্ন পারকাশন দিয়ে ফাঁক ভরানোর যে কৌশল আমরা পরবর্তীকালে পঞ্চমের ট্রেডমার্ক হিসেবে পাই, সেটির প্রথম পরীক্ষা এই গানটিতে করা হয় ঘুঙরুর আওয়াজ দিয়ে । তবে এই গানটির যে ঐতিহাসিক মূল্যটি খুব মহার্ঘ, তা কিন্তু নেহাৎ অসাঙ্গীতিক, কিন্তু নিঃসন্দেহে একটা মোড় বলা যায় । এই গানটির সূত্রেই লতাজি বড়োকত্তার বাসভবন 'জেট'বাংলোয় আবার ফিরে আসেন । একটা ভুল বোঝাবুঝির ফলে তাঁদের মধ্যে বেশ কিছুদিনের জন্য পরস্পর সম্পর্কচ্ছেদ হয়ে গিয়েছিলো ।

    'ছোটা নওয়াবে'র যে গানটি পঞ্চমের প্রথম মার্কামারা, সেটি হলো " মতওয়ালি আঁখো ওয়ালে"। গানটি শুরু হয়েছিলো ফ্ল্যামেংকো বিটে ক্যাস্টানেট ও অ্যাকস্টিক গিটারের ছন্দে। তারপর রফি সাহেবের গলায় আরবী রিফ্রেনের হামিং এবং আবার ক্যাস্টানেট ও গিটারের ফিরে আসা । এই প্রিলিউডটির সঙ্গে গানটির স্থায়ী অংশের কোনও যোগ নেই । তার আগে পশ্চিমিসুরে বাঁধা অন্যান্য গানে মূল সুরটি প্রিলিউডের পর যেভাবে গিটার আর বঙ্গোর চেনা ছাঁদে ( চার মাত্রা বা সাত মাত্রায়) এগিয়ে যেতো, পঞ্চমের এই গানটি তার ব্যতিক্রম । কের্সি লর্ড বলেছিলেন এই গানটি কম্পোজ করার সময় পঞ্চম হাতে তালি আর পা ঠুকে টেম্পোটি ধরে রাখতেন । মুখড়া আর অন্তরার মধ্যে ফ্ল্যামেংকো আর জিপসির সুর ধরে রেখে লতাজিকে দিয়ে হেলেনের লাস্য ফুটিয়ে তোলা একটা কুড়ি-একুশ বছর বয়সের ছেলের জন্য বিরাট চ্যালেঞ্জ ছিলো ।

    কের্সি লর্ডের স্মৃতিচারণায় পাই, প্রায় পঞ্চাশ বছর পর ২০০৯ সালে একদিন গানটি শুনতে শুনতে কের্সি আবেগের তাড়নায় প্যারেলালকে ফোন করে ফেলেন । লক্ষ্মীকান্তের সঙ্গে কের্সি ও প্যারেলাল দুজনেই এই গানটির যন্ত্রসহকারী ছিলেন । দুজনেই ভাবেন, এতো তাজা একটা রচনা ২০০৯ সালেও সমান প্রাসঙ্গিক মনে হয় ।
    ---------------------------------
    ১৯৬১ সালে 'ছোটা নওয়াব' ছবি পঞ্চমকে ব্রেক দিলো বটে, কিন্তু লক্ষ্য তখনও অনেক দূরে । "মতওয়ালি আঁখো ওয়ালে" বিনাকা গীতমালার পঞ্চম ধাপ পর্যন্ত পৌঁছেছিলো । তার পর চার বছর হাতে কিছু নেই । পিতার সহকারী হিসেবে বন্দিনী, তেরে ঘরকে সামনে, বেনজির, মেরি সুরত তেরি আঁখে, জিদ্দি, গাইড আর তিন দেবিয়াঁর অ্যারেঞ্জমেন্ট আর ফ্লোর সামলানো । তবে এই সব ছবিগুলিতেই অন্ততঃ একটা গান থাকতো, যেটি পঞ্চমের ট্রেডমার্ক রচনা ।

    ১৯৬৪ সালে মেহমুদের ইচ্ছে হলো জেরম রবিনসের ব্রডওয়ে মিউজিক্যাল 'ওয়েস্ট সাইড স্টোরি'র অনুসরনে একটা হিন্দি ছবি করবেন । গুরু দত্তকে উৎসর্গ করা ছবিটি ১৯৬৫ সালে মুক্তি পেলো, নাম 'ভূতবাংলা'। ছবিটিতে পঞ্চম অভিনয়ও করেন । তবে ভবিষ্যতের জন্য একটা চিরন্তন জুটি, পঞ্চম ও কিশোরের যুগলবন্দি শুরু হলো এই ছবিটি থেকেই । শ্রোতাদের মন থেকে " বাপ নে দিয়া হোগা মিউজিক" ধারণাটি দূর করার আরেকটি সুযোগ পেলেন তিনি। "জাগো সোনেওয়ালে" একটি বিস্ময়কর সৃষ্টি । এই গানটির প্রিলিউড ১৯৬৫ কেন, আজও সমান বিস্ময়কর । মস্তো বড়ো স্ট্রিং বেসড অর্কেস্ট্রা , লম্বা প্রিলিউড, লম্বা ইন্টারলিউড এবং কিশোরের ইয়োডলিং দিয়ে সি-মাইনর থেকে উঠে যাওয়া সুরেলা দরাজ স্বরক্ষেপন । অমিতকুমার বলেছেন এই গানটির সঞ্চারীটি কিশোরের রচনা । এর সঙ্গে মনোহারি সিংয়ের অ্যারেঞ্জমেন্টে 'ভূ-ও-ও-ঊত বাংগলাআআ" ছোট্টো ব্লুজ স্কেলের রচনাটিও পঞ্চমের ভবিষ্যতের অনেক রচনার প্রথম অংকুর । তবে এই ছবিটির সব চেয়ে লোকপ্রিয় গান ছিলো " আও টুইস্ট করেঁ" । এখন সবাই জানে এটি চাবি চেকারের " লেট আস টুইস্ট আগেন"এর থেকে নেওয়া। গানটির সম্পদ হলো মান্না দের পরিবেশন । মান্না'দা বলেছিলেন তিনি এই গানটির গায়নে অবিকল অনুসরন করেছেন পঞ্চমকে । গানটি বিনাকা গীতমালার দ্বিতীয় ধাপ পর্যন্ত পৌঁছেছিলো ।

    কিন্তু 'ভূতবাংলা' শুধু ছবি হিসেবেই ফ্লপ করেনি । পঞ্চমের সংগীতও তুমুল সমালোচনার মুখে পড়েছিলো । শুধু নৌশাদ আলি বলেছিলেন, বড়ে মিয়াঁ তো বড়ে মিয়াঁ , ছোটে মিয়াঁ সুভানাল্লা ।
    -----------------------------------------------

    তার পর বেশ কিছুদিন ধরে তিনটি অনুল্লেখ্য ছবিতে সুর দেওয়া ; শিকারি, তিসরা কৌন আর পতি-পত্নী । এর মধ্যে 'তিসরা কৌন'এর "প্যার কা ফসানা" বেশ জনপ্রিয় হয়েছিলো । কিন্তু পঞ্চমের মাপে পৌঁছোয়নি । কিন্তু 'পতি-পত্নী'র সূত্রে হিন্দি ছবিতে পঞ্চমের প্রথম আমদানি 'বোসা নোভা' শৈলি। এই লাতিনো প্রকরণটিকে নিজের দেশের বাইরে জনপ্রিয় করেন ফ্র্যাংক সিনাত্রা । রিও'র তটভূমি থেকে পঞ্চম তাকে বম্বের স্টুডিওতে নিয়ে আসেন । আশাজির কণ্ঠে " মার ডালেগা দর্দ-এ-জিগর" পঁয়ষট্টি সালের শ্রোতার জন্য অনেক এগিয়ে থাকা গান । আমি সম্প্রতি একাসনে বসে অনেকবার শুনলুম গান'টি । মুগ্ধ হওয়া ছাড়া কিছু করার নেই । মনোহারি সিংয়ের স্যাক্স আর পঞ্চমের হারমোনিকা। একটি সম্পূর্ণ বিদেশি শৈলির জটিল ফর্ম ও প্যাটার্নকে জটিলতর, কিন্তু পরিচিত দেশীয় ফর্ম্যাটে অবলীলায় জড়িয়ে দেবার যে সিদ্ধি আমরা পরবর্তী কালে পঞ্চমের রচনায় পেয়েছি, তারই পূর্বসূরি এই সব সৃষ্টি । এই ছবিতে আরেকটি গান আমাকে মুগ্ধ করে । শুনেছি পঞ্চমেরও এই গানটি খুব প্রিয় ছিলো । " কজরে বদরওয়া রে" একটি বিস্ময়কর কম্পোজিশন । এই সব গান নিয়ে বিশেষ চর্চা তো এখন দেখিনা । কিন্তু এই সব মণিমুক্তো নতুন করে আবিষ্কারের অপেক্ষায় রয়েছে ।
    ----------------------------------

    ছোটোকত্তার সৃষ্টির গুণমান যেমনই হোক না কেন, সাফল্য তখনও অধরা । পিছু ফিরে দেখলে এখন আমার মনে হয় যে সময়টিতে এসব গান রচিত হয়েছে, তখন যেসব মধ্যবিত্ত শ্রোতারা আমাদের দেশে লোকপ্রিয় শিল্পের সংজ্ঞা নির্দেশ করতেন, তাঁরা একা বা সবার সঙ্গে বসে শোনার জন্য রুচিবিগর্হিত এই আরোপে এসব গান'কে সচরাচর এড়িয়ে চলতেন। এইসব গানের জঁর ছিলো 'লোফার'দের গান । আমাদের বাড়িতে দেওয়ালের টিকটিকি গুলিও হয়তো ক্রমাগত গান শুনে শুনে সঙ্গীতরসিক হয়ে উঠেছিলো । কিন্তু সেই সময়, মানে আমাদের আদি-শৈশব-বাল্যে, এমন কি হাই ইশকুলে উঠে যাবার পরেও, মানে 'কটি পতঙ্গে'র কালেও বাড়িতে বাবা-মা না থাকলেই লুকিয়ে শর্ট ওয়েভ-২তে রেডিও সিলোনের বিনাকা গীতমালা শোনার সুযোগ । বুধবার সন্ধেবেলায় আটটার মধ্যে পড়া শেষ করে পাশের মাঠে হাওয়া খেতে যাচ্ছি এই অজুহাতে গোপাল সিংয়ের পান-দোকানে আমিন সয়ানির ধারাকথা আর একের পর এক গান শুনে রাত ন'টার পর একছুট্টে বাড়ি ফিরে আসা । রুচি ও শিল্পের পরিভাষা কী দ্রুত পাল্টে গেছে ।
    -------------------------------------

    এই রকম একটা সময়ে নাসির হুসেন সাহেবের মনে একটা সাসপেন্স ছবি করার ইচ্ছে জাগলো । নায়ক দেব সাহেব, পরিচালক ভাই গোল্ডি । নায়ক যখন দেবসাহেব, তখন সঙ্গীত পরিচালক হিসেবে শচীনকত্তা ছাড়া তো আর কাউকে ভাবাই যায়না । কিন্তু তখন বড়োকত্তা হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লেন । সঙ্গে সঙ্গে দেব আনন্দও নিজের ছবি 'গাইডে'র কাজে খুব বেশি ব্যস্ত হয়ে পড়ায় নাসির হুসেন সাহেবের ছবি থেকে বিদায় নিলেন । তখন নাসির সাহেবের ঘনিষ্ট বন্ধু মজরুহ সুলতানপুরি তাঁর কাছে পঞ্চমের হয়ে তদবির করলেন । বিজয় আনন্দও পঞ্চমের কাজ খুব পছন্দ করতেন । এঁদের দুজনের অনুরোধে নাসির সাহেব ছবিটির সঙ্গীত পরিচালনার কাজ ছোটোকত্তাকেই দিতে রাজি হয়ে গেলেন । কিন্তু একটিই শর্ত ছিলো । দেব আনন্দের জায়গায় আসা নতুন নায়ক শাম্মি কাপুর যদি রাজি হ'ন তবেই ব্যাপারটা সম্ভব হবে । শাম্মি তখন বম্বের বৃহত্তম স্টার । তিনি যে ছবিতে কাজ করবেন বলে রাজি হ'ন, তার সব কাজকম্মো-ই তাঁর অনুমতি ভিন্ন করে ওঠা যায়না । তিনি ব্যক্তিগতভাবে শুধু দু'জন সঙ্গীত পরিচালককেই পছন্দ করেন, শংকর-জয়কিশন এবং ও পি নইয়ার । নতুন কোনও শিল্পীর চান্স পাওয়া খুব কঠিন । তখন শচীন ভৌমিক ও জয়কিশন সাহেব দুজনে গিয়ে পঞ্চমের জন্য শাম্মির কাছে দরবার করলেন। এঁদের দুজনকে শাম্মি খুব মানতেন । সব শুনেও কিন্তু তিনি কথা দিলেন না । শুধু বললেন, ওকে বলো আমাকে এসে গানগুলো শোনাবে ।

    তা পঞ্চম গেলেন শাম্মির কাছে। তিনি জানতেন যে এটা ছিলো তাঁর ক্যারিয়ারের সব থেকে গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষা । প্রথমে শোনাতে গেলেন নেপালি লোকসুরে " দিওয়ানা মুঝসা নহি"। শাম্মি ঐ টুকু শুনেই খুব নির্লিপ্তভাবে বললেন, ব্যস... পরেরটা শোনাও। স্পষ্ট প্রত্যাখ্যানের ছাপ তাঁর মেজাজে । বলেও ফেললেন, আমি কাজটা জয়কিশনকেই দেবো ভাবছি । অত্যন্ত হতাশ পঞ্চম স্টুডিও'র বাইরে বেরিয়ে গেলেন একটু ধোঁয়া নিতে । একটু পরে ফিরে এসে শোনালেন, " ও মেরে সোনারে", তার পর "আজা আজা ম্যঁয়হুঁ প্যার তেরা" । দেখলেন শাম্মি চুপ করে শুনছেন । শেষে " ও হসিনা জুলফো-ওয়ালেঁ" অর্ধেকটা শেষ হবার আগেই তিনি এগিয়ে এসে হাত মেলালেন, " কাম অন, তুম পাস হো গয়া, ইউ আর মাই মিউজিক ডিরেক্টর"। একটু পরেই পঞ্চম একটা ফোন পেলেন জয়কিশন সাহেবের থেকে। " ইউ মাস্ট মেক ইট টেরিফিক । লোগ বোলেগা কি হাঁ ভাই, ইয়েহ তো বাপ কা বেটা নিকলা"। মনোহারি সিং অবশ্য বলেছেন " ও হসিনা" নাসির হুসেন আগেই রেকর্ড করে রেখেছিলেন ।

    ছবিটির নাম 'তিসরি মঞ্জিল'।
    ---------------------------------
    তার পর পঞ্চমের পৃথিবীতে ওঠাপড়া ছিলো, কিন্তু তাঁকে পিছন ফিরে তাকাতে হয়নি আর। যুদ্ধের প্রথম পর্বটি জিতে নিলেন তিনি । কিন্তু তার আগের ঘাম ঝরানোর পর্বটিও নেহাত ছোটো ছিলোনা। এই পর্বে তাঁর রচনা করা কয়েকটি গানের লিং রাখলুম এখানে । বহুশ্রুত, কিন্তু হয়তো বহু অধীত নয় । এক-আধবার আরো শুনে দেখিনা, যদি নতুন কোনও সুর আবার বুকে বাজে ।

    ছোটে নওয়াবঃ
    ----------------
    মতোয়ালি আঁখোয়ালেঃ

    ঘর আজা ঘির আয়েঃ


    ভূতবাংলা
    ----------
    জাগো সোনেওয়ালে:

    আও টুইস্ট করেঁ :


    পতি-পত্নী
    ------------
    মার ডালেগা দর্দ এ জিগর :

    কজরে বদরওয়া রে :


    তিসরি মঞ্জিলঃ
    -----------------
    আজা ম্যঁয় হুঁ প্যার তেরা ঃ

    ও হসিনা জুল্ফোঁ ওয়ালে :

    ও মেরে সোনা রে :

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৭ জুন ২০১৪ | ৫৭৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কল্লোল | 111.63.199.54 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০১:৫১73457
  • গতকালই আমার এক সহকর্মী বন্ধুর সাথে কথা হচ্ছিলো দোস্তি ছবির হারমনিকা বাজানো নিয়ে। আমার বন্ধুটি গান গয়, হারমোনিকা বাজায়। সে মিলন দত্তের কাছে তালিম নেওয়া এক কলকাত্তাইয়া তামিল।
    দ্যাখো আজ তোমার লেখা পড়ে দোস্তির টাইটেল দেখতে বসে চোখ টোখ রেরিয়ে হাতে চলে এসেছে।
    প্রথম দিকের গ্রুপ ভায়লিন শেষ হতেই হারমোনিকা আর তরপর ব্যান্জো বা ম্যান্ডোলিনে রাহি মনওয়া দুখ কি চিন্তা-র মেলডি লইন। আর তারপরেই আমায় হতবাক করে দিয়ে নিখুঁত আর্ডি বেজে ওঠের স্যাক্সে - মুঝসে ভলা য়ে কাজল তেরা / ন্যায়্ন বসে দিন র‌্যায়ন - ১৯৭০ দ্য ট্রেন। রাজেশ খান্না, নন্দা, আরডি। ১৯৬৪এর কম্পোজিশন ব্যবহার করলেন ১৯৭০ এ এসে। আর তখনই পরিষ্কার হয়ে গেলো দোস্তির হারমোনিকা বাদকের পরিচয়।
  • Manoj Bhattacharya | 79.203.30.37 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০২:০৩73461
  • শিবাংশুবাবু,

    দুর্দ্দান্ত হয়েছে ! ভীষন ভালো হয়েছে ! কোনো প্রশংশাই যথেষ্ট নয় !
  • সিকি | 132.177.144.117 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০৪:০৩73458
  • ফাটাফাটি।
  • কল্লোল | 111.63.192.123 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০৪:২৫73459
  • এই রেঃ। উত্তেজনায় ভুল। মিলন দত নয় মিলন দাস।
  • সিকি | 132.177.195.135 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০৪:২৯73462
  • হ্যাঁ, শুধু দুটি কথা।

    'যার নেই কোনও গতি' কোন ইশকুল? আমি কলকাতার ইশকুল সম্বন্ধে তেমন অবগত নই।

    আর, বামালসমেত শব্দটি সঠিক নয়। বামাল মানে মাল-সমেত।
  • dd | 132.167.171.176 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০৪:৩৮73463
  • বিউটিফুল হয়েছে। য্যামন হয় শিবাংশুর ল্যাখা।

    আর অগতির গতি ছিলো তীর্থোপতি। সত্যের প্রতি অবিচল নিষ্ঠায় জানিয়ে গেলেম।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০৪:৫৮73464
  • হ্যাঁ, হ্যাঁ, দুরন্ত। শিবাংশুসুলভ লেখা।
  • শিবাংশু | 127.197.245.128 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০৫:২৩73465
  • কল্লোলদা,
    ১৯৬৩ সালে তারাচাঁদ বরজাতিয়া যখন সত্যেন বোসকে 'দোস্তি' ছবির স্ক্রিপ্ট বানাতে বলেন, তখন তাঁদের মাথায় গতানুগতিক বোম্বাই ছবির বাইরে গিয়ে একটা অন্যরকম কিছু চিন্তা ছিলো। ভারতীয় ভাবমূর্তিতে বন্ধুত্বের একটা নতুন ব্যাখ্যা দেখাবার কথা ভেবেছিলেন তাঁরা। সঙ্গীতের ব্যাপারেও তাঁরা ঠিক করেছিলেন একটা নতুন মাত্রা দিতে হবে, এইজন্য নতুন সঙ্গীত পরিচালক প্রয়োজন । যদিও ১৯৬৩ সালে 'পারসমণি' ছবির গানগুলি দারুণভাবে হিট করে, কিন্তু লক্ষ্মীকান্ত কুদালিকর এবং প্যারেলাল শর্মার জুটির অর্থকষ্ট তখন তুঙ্গে। বড়োকত্তার সহযন্ত্রীর দায়িত্ব থেকে অব্যহতি নিয়ে তাঁরা স্বাধীনভাবে সঙ্গীত পরিচালনার স্বপ্ন দেখছেন। 'পারসমণি' দিয়ে হবেনা, একটা বড়ো ব্রেক দরকার । তার উপর তাঁদের অর্থাভাবের দ্রুত সুরাহাও করতে হবে । এমতাবস্থায় তাঁরা মাত্র দশ হাজার টাকা পারিশ্রমিকে 'দোস্তি' ছবির সঙ্গীত করতে রাজি হয়ে গেলেন ।

    সেই সময় কৈশোরের স্পিরিট ধরতে গেলে যে বাদ্যযন্ত্রটি প্রথম মনে পড়তো, সেটি হলো হারমোনিকা । তাই ছবির একটি প্রধান চরিত্রকে ঐ যন্ত্রটির সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হলো । এর ফলে সঙ্গীত পরিচালকের কাছে সমগ্র ছবির সুরের ধাঁচাটিকে ঐ যন্ত্রটির সঙ্গে মানানসই করে তোলার অনিবার্যতা হয়ে উঠলো প্রাথমিক দায়িত্ব। কিন্তু সে রকম নির্ভরযোগ্য কোনও হারমোনিকা বাদকের খোঁজ তাঁদের কাছে ছিলোনা । তখন লক্ষ্মীকান্তের বোন বিজয়লক্ষ্মী পঞ্চমকে এই দায়িত্বটি দেবার প্রস্তাব করেন । তার ফলেই পঞ্চম 'দোস্তি'র সঙ্গীতের সঙ্গে যুক্ত হ'ন । বস্তুতঃ লক্ষ্মী-প্যারে দুজনেই পঞ্চমকে সহযন্ত্রী হিসেবে ভাবতে একটু সংকোচ বোধ করেছিলেন । কিন্তু পঞ্চমের প্রবাদপ্রতিম নিরহংকার তাঁদের দ্বিধাকে উড়িয়ে দেয় । পঞ্চম যে 'দোস্তি'র প্রতিটা গানেই হারমোনিকা বাজিয়েছিলেন তাই নয়, তিনি ব্যাকস্কোরে বাজানোর দায়িত্বও নিতে চেয়েছিলেন । কিন্তু এল পি তাঁকে সম্মানের সঙ্গে সেই বন্ধন থেকে মুক্তি দিয়েছিলেন । ঐ কাজটি করেছিলেন মিলন গুপ্ত । শচীন ভৌমিক বলেছিলেন, লক্ষ্মীকান্তের প্রথমে ইচ্ছে ছিলো পঞ্চমের সঙ্গে জুটি বাঁধবেন, কিন্তু সেটা বাস্তবায়িত হয়নি । কিন্তু দুজনের গভীর বন্ধুত্ব ছিলো শেষ পর্যন্ত।

    পঞ্চমের হারমোনিকা আর একজন ব্যবহার করেছিলেন খুব সফলভাবে । তিনি কিশোরকুমার। 'দূর গগন কে ছাঁও মে'র টাইটেল সং " রাহি তু মত রুক জানা" গানে পঞ্চমের হারমোনিকা বেজেছে ।
  • শিবাংশু | 127.248.141.146 (*) | ২৮ জুন ২০১৪ ০৭:৪৪73460
  • @কল্লোলদা,

    মিলন গুপ্ত :-)
  • nina | 78.37.233.36 (*) | ২৯ জুন ২০১৪ ০২:৪৪73466
  • শিবাজি--

    কুর্ণিশ! চুপকথায় জানাই মুগ্ধতা---
  • শিবাংশু | 127.197.242.70 (*) | ২৯ জুন ২০১৪ ০৬:৩০73467
  • @সিকি, ব্যাকরণভাবে একেবারে ঠিক বলেছো । আমি একটু টেনিদা টাইপ স্বাধীনতা নিয়েছিলুম শব্দটিকে কয়েনেজ করে। :-)
  • Pubদা | 209.67.131.156 (*) | ০২ জুলাই ২০১৪ ১০:০১73468
  • খুব ভালো লাগলো লেখাটা :)
    সাথে ইউটিউবের লিংক - অসংখ্য ধন্যবাদ !
  • b | 24.139.196.6 (*) | ০৪ জুলাই ২০১৪ ০৩:১৯73470
  • মিউজিক ডিরেক্টররা শুধু গানে সুর দেন না, বিভিন্ন সিচুয়েশনে ব্যাকগ্রাউন্ড মিউজিক-ও দেন। শিবাংশু এদিকে আলোকপাত করলে ভালো লাগবে।
  • ranjan roy | 24.99.231.72 (*) | ০৪ জুলাই ২০১৪ ০৭:২২73471
  • সেই সময়! কিছু গান অনিবার্যভাবে লোফারদের গান। কিন্তু মন টানে যে!
    শিবাংশু,
    "পঞ্চমের প্রবাদপ্রতিম নিরহংকার" নিয়ে আরও কিছু গল্প শোনাতে পারবেন?
  • sudeep | 125.187.51.91 (*) | ০৪ জুলাই ২০১৪ ১০:৩২73469
  • শিবাংশু,
    খুব ভলো লাগলো ভাই,অনেক কিছু জানতে পারলাম। আমি বাংলা আর ইংরেজী গান বেশী সুনতাম,সিনেমাও তাই।৬০এর দশকের মাঝামাঝি কলেজের বন্ধুরা হিন্দি সিনেমার টিকিট কেটে আমাকে নিয়ে যেতো। আমার অবশ্য সিনেমার চেয়ে গান শোনাটাই বড়ো ব্যাপার ছিল,কারণ আমি তখন স্প্যানিশ গিটার শিখছি। এই ভাবেই একদিন ওরা আমাকে নিয়ে তিসরি মঞ্জিল দেখতে নিয়ে যায়। গান বাজনা শুনে আমি অবাক হই। এর আগে ল্যাটিন আমেরিকান রিদিমে এতো সুন্দর হিন্দি গানে প্রয়োগ শুনিনি।তখন থেকেই রাহুল দেবের সুরের একজন ভক্ত হয়ে গিয়েছিলাম।
    আপনার লেখার মধ্যে দিয়ে এর আগের ইতিহাস জানতে পারলাম। এই প্রসঙ্গে একটা কথা বলি,আমি একটি হিন্দি সিনেমাই হলে তিনবার দেখেছিলাম,সেটার নাম মধুমতী,সলিল চৌধুরীর সুরের টানে। খুব ভালো থাকবেন ভাই।
    সুদীপদা
  • শিবাংশু | 37.63.148.206 (*) | ১৬ জুন ২০১৬ ০৬:১০73472
  • মালগুঞ্জি রাগের ওপর বড়কর্তার পুরোনো বাংলা গানটি কি ছিল? পঞ্চম রচিতটি তো অনবদ্য।
    লেখাটিও তাই। বড় ভালো লাগলো।

    প্রতিভা সরকার।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন