এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • নিবারন মামু

    dd লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৯ নভেম্বর ২০১৫ | ১০৫৯ বার পঠিত
  • আপনেরা কেউই আমার নিবারন মামুকে চেনেন না। তা চিনবেনই বা কী করে। আমার মামু গাঁয়ে গঞ্জে থাকেন,সাতে পাঁচে নেই, এমন কি ছয়েও নেই। সাড়ে তিন, পৌনে আড়াই, চার লক্ষ চুয়ান্ন ........... নাঃ, আমার মামু কোথাও নেই।

    সারাদিন মাঠে ঘাটে নিজের মনেই ফ্যা ফ্যা করে ঘুড়ে বেড়িয়ে মামুর আমার দিন দিব্বি কেটে যায়।
    মামুর খালি একটাই সখ - সেটা হচ্ছে বিখ্যাত হবার। সেই ছোটোবেলার থেকেই আমার মামু একটু অন্য রকমের। ঠাকুমাকে জাপ্টে ধরে ঘুমাতে যান আমার মামু, তখন আমার মামুর বয়স কুল্লে সাত। তো ঘুমের মধ্যে মামুর কী খিল খিল হাসি। ঠাম্মার ঘুম ভেঙে যায়। ধাক্কা মেরে তোলেন আমার মামুরে।"এমন পাগোলটার মতন হাসস ক্যান ?" ঠাকুমা জিগান।
    "ভুতের স্বপ্ন দেখি যে", মামু কয়।
    "ভুতের স্বপ্ন দেইখ্যা তর হাসি পায়?" বেজায় অবাক হন ঠাকুমা।
    "পায় তো। স্বপ্নে দেখি মামদো ভুত, কন্ধকাটা,শাঁগচুন্নী, সবাই মিলে আমায় কতো আদর করে,ন্যাবেঞ্চুষ দেয়, ভুতের গল্পো বলে"।
    ঠাকুমা বিস্ময়ে আর আতংকে কেঁদেই ফেলেন। সাত বছরের বাচ্চা, এমন মজারু ভুতের স্বপন দেখছে। বলি, বয়স কালে কি সন্নিসী হয়ে যাবে? বাবারে - ধম্মো কম্মে মতি থাক, ভালো কথা কিন্তু সাধু সন্ন্যাসী হতে যাবে কোনো দুঃখে তাঁর নাতি? সকালে উঠেই ঠাকুমা এক মাদুলি বেঁধে দ্যান মামুর হাতে।"সক্কালে ঘুম থিক্কা উইঠ্ঠাই এই মাদুলি ধোয়া জল খাবি, ভুলবি না"। তিনি নিদান দেন।
    কিন্তু আমার মামুর তো ভোলামন সেই ছোটোবেলার থেকেই। দু দিন পরে ঠাকুমা দেখেন নাতির হাত খালি, মাদুলি কই? তো মামুর সাফ সাফ জবাব, "রোজ ভোর ভোর উঠে মাদুলি ধোয়া জল খাবার কথা মনেই থাকে না।তাই বাড়ীর কুয়োতে ফেলে দিয়েছি গো ঠাকমা। ব্যাস, এখন শুধু সকাল সন্ধ্যা মাদুলি ধোয়া জলই খাই।"

    ফিল্ম স্টার গোবিন্দা এসে হাজির। "মামু গো, তোমার জন্য এক বাস্কো জয়নগরের মোয়া নিয়ে এলাম গো"।
    "হ্যা` রে গোবিন্দো। তুই শুনলাম এম পি হইছিস?'
    "হ্যাঁগো মামু। তোমার আশীর্বাদ"।
    "তো খেয়াল রাখিস। এটা কিন্তু ফক্কুরি মারার যায়গা নয়। মন দিয়ে কাজ করবি, লোকের কথা শুনবি। অমন কটকটে হলুদ রঙের প্যান্টুল পরবি না"।
    ঘরের দরজা দিয়ে উঁকি মারে একটা বাচ্চার মুখ"মামু, অমর্ত্য সেনের ফোন এয়েছে। তোমারে ডাকছে। খুব জরুরী কিছু জানতে চায়"।
    সত্যি, মামুর মোটে বিশ্রাম নেই।

    তো মামুর সখ, খুব বিখ্যাত হবার। কিন্তু কী নিয়েই বা বিখ্যাত হওয়া যায়? মামু লেখাপড়ায় মোটেই ভালো নয়, খেলাধুলাতেও নয়।এমনকি এক্কাদোক্কাও ভালো করে খেলতে পারে না। এদিকে গাঁয়ের সব লোকই তখন জেনে গেছেন - পাঠশালার ছাত্র নিবারন একদিন দেশের মুখ উজ্জ্বল করবে। তাকে ডেকে পাঠালেন হেড স্যার "বলি নিবারন, ঘরের মধ্যে কেলাস চলছে আর তুমি ইশকুলের বাগানে ডাব গাছের নীচে বসে ঘুমাচ্ছো?"
    "আজ্ঞে স্যার। ঘুমাচ্ছিলাম না স্যার। আবিষ্কার করছিলাম।" মামুই বুঝিয়ে দেন হেড স্যারকে"ঐ যে নিউটিল সাহেবের কথা শুনেছিলাম। উনি ন্যাসপাতি গাছের নীচে বসে থেকে থেকে গ্যাবাডিন আবিষ্কার করে ফেলেছিলেন। স্যার, আমি ফলের গাছ দেখলেই নীচে বসে যাই। তাল,পাকুর,বট। সেদিন স্যার আনারস গাছের নীচে হামাগুড়ি দিতে গিয়ে হাত পা কেটে গেছিলো। গ্যাবাডিনের মতন, কিছু না কিছু তো পেয়েই যাবো। না স্যার?"
    "নাঃ। আর শোনো, নিউটিল নয়,নিউটন। গ্যাবাডিন না, গ্রেভিটি আর নেসপাতি নয় - ওটা আপেল গাছ। তুমি বরং কেলাসেই ফিরে যাও আর আঁক কষো গে'"

    আর কিছুদিন পর আমার মামু ইসকুল একেবারেই ছেড়ে দিলেন। গাঁয়ের লোকের খুবই চিন্তা। তাহলে? তাহলে নিবারন কেমনে বিখ্যাত হবে? আচ্ছা, নাচ,গান এইসব সুকুমার কলা,নিদেন পক্ষে কুস্তী, সে সবে কোনো চান্স আছে? কিন্তু মামুর গলায় বাস করে হাড়িচাচা,পায়ে কোলা ব্যাং। নাচ গানে খুব একটা সুবিধে হবে সেই আশা কম।বাকী আর কী রইলো? কুস্তি? টিংটিং চেহারার তালপাতার সেপাই,তায় নাদা পেট - এইসব দেখে কারুরই আর পেত্যয় হয় না যে মামু কখনো ভীমসেনের অবতার হবেন।কিন্তু তিনি যে একদিন বিখ্যাত হবেনই - সে নিয়ে কিন্তু কারোরই সন্দেহ ছিলো না।
    খামোখা হা পিত্যেস করে বসে থাকলেই তো চলবে না। গাঁয়ের মানুষ তখন পন্ডিত মশাইকে ধরলো।পন্ডিত মশাই খুবই আচার নিষ্ঠ মানুষ। পাঁজিতে বৃষ্টি না থাকলে সে যতই না কেনো আকাশ ভেঙে পড়ুক উনি ছাতা খোলেন না। তো তিনি ই ডেকে পাঠালেন নিবারন মামুকে।
    "বলি ও নিবারন। ঠাকুর দ্যাবতাকে স্বপ্নে দেখো? ব্রহ্মা? কিষ্ণো ঠাকুর?"
    "না পন্ডিত মশাই। কাল রাতে অবশ্যি জিলিপির স্বপ্ন দেখেছিলাম"
    পন্ডিত মশাই বড়ো ভাবনায় পড়েন। স্বপ্নকল্পদ্রুম খুলে দেখেন, হনুমান চালিসার পাতা উল্টান।একবার ধারাপাত ও খোলেন। কিন্তু জিলিপির কথা কোথাও লেখা নেই তো। উনি রেগে যান।কটমট করে তাকিয়ে বলেন"আর,আর কী কী স্বপ্ন দ্যাখো শুনি?'
    "বালতির স্বপ্ন দেখি গো ঠাকুরমশাই। এয়াই বড়ো বড়ো বালতি"। চোখ বড়ো বড়ো করে হাত পা নেড়ে মামু বুঝিয়ে দেয়।পন্ডিত মশাই খুসী হন। এসো,বাছাধন,পথে এসো। তৈজসপত্রের স্বপ্ন দেখা হচ্ছে বুঝি ঘুমিয়ে ঘুমিয়ে? ব্যাটাচ্ছেলে।
    কিন্তু মামু থামে না, বলেই চলেন"হ্যাঁ ঠাকুরমশাই। লাল নীল হলুদ রঙের সব বালতিগুলান" ঠাকুর মশাই অসহায় তাকিয়ে থাকেন।
    "বালতিরা গান গায় গো ঠাকুরমশাই,গাছ থেকে ঝোলে আর ডিগবাজী খায়।"
    ঠাকুর মশাই বিষন্ন হয়ে পড়েন।মোড়োলকে ডেকে বলেন "আমি কাশী যাওয়াই ঠিক করলাম। আপনারা নিবারনকে চোখে চোখে রাখুন। দেখবেন যেনো ভেঙে না যায়, টোল যেনো না পড়ে আর পালিশটাও চকচকে রাখবেন"।

    তো,মামু বড় হতে থাকেন।কত বড় বড় জ্ঞানী, বিজ্ঞানীরা, শিল্পীরা,ভাবুকেরা গাছ, মেঘ,সাঁঝের বেলায় বাড়ী ফেরা বকের দল,ছোটো নদী ... এইসব দেখেই কতো কি ভেবে আর বলে যান। কিন্তু মামুর সে সব দিকে নজরই নেই। একমনে ভাঙা দেওয়ালের দিকে তাকিয়ে আছেন নিবারন মামু। পিসীমা চিন্তিত হন।কাছে গিয়ে প্রশ্ন করেন "কী দ্যাখোস রে নিবু?"
    "ইঁট দেখি গো,পিসমা,ইঁট"
    "ইঁট দ্যাখোস? ইঁটে আবার দ্যাখনের কী আসে?' পিসীমা শংকিত চিত্তে মামুর কপালে হাত দ্যান। না, জ্বর জারি কিছু তো নেই।
    "জানো পিসমা,কাঠবিড়ালীরে লাঠি দেখাইলে পলাইয়া যায়। বলদেও শিং বাগাইয়া গুঁতাইতে আসে। কিন্তু ইঁটেরা পাটকেল মারলেও চুপ করে থাকে।"
    পিসীমা বিড়বিড় করতে করতে চলে যান। ভাইপোর রকম সকম তার ঠিক লাগে না।

    “ও মামু, বাড়ী চলো। আমেরিকার প্রেসিডেন' এয়েছেন"
    "ক্লিন্টন,ক্লিন্টন। হ্যাঁ হ্যাঁ। মনে পরেছে"
    "ছাই জানো। সে নেই। বুশ সাহেবও নেই। এখোন তো ওবামার পালা। সেও তো দু বার হয়ে গেলো"
    "উফ। ক্লিন্টন কবে চলে গেছে ? মারা যায় নি তো ? আর আমাকে কেউ কিছু বলেও না।“
    "চলো চলো। বাড়ী চলো। ওবামা সাহেব অনেকক্ষন ধরে ওয়েট করছেন। এক বাটী মুড়ি দিয়ে বসিয়ে রেখেছি।"

    ঐ যে বল্লাম। মামুর সখগুলো খুব অরিজিন্যাল।চিরকালই মামু পাঁচিল দেখতে খুব ভালোবাসেন। কাছাকাছি গাঁয়ে নতুন কোনো পাঁচিল উঠছে শুনলেই মামুর কী উৎসাহ। তখুনি টিপিন কেরিয়ারে লুচি আলুদ্দম নিয়ে বগলে ছাতা নিয়ে হাঁটা দেন।
    পাঁচিল তোলা দেখতে দেখতে একেক সময় খুব উত্তেজিত হয়ে পরতেন মামু। ক্ষেপে যেতেন।চেঁচিয়ে উঠে বলতেন "দ্যাও তো দ্যাও। ঐ পাজীর পাঝাড়া বাঁদিকের লালসোহাগী ইঁটের উপর আরেকটা থুম্বামারা ইঁট চাপিয়ে দাও।বুঝুক মজা"বলে মামু কখনো কখনো ঘুঁষি পাকিয়ে ছুটে যেতেন । বিকট সব ভেংচি কাটতেন তার অপছন্দের ইঁটেদের। আবার দেখুন,কোনো ভালোবাসার ইঁট কারুর হাত থেকে পড়ে গেলে "বাছারে আমার, লাগলো বুঝি?" বলে কোমল হাতে গাঁদাল পাতা ঘষে দিতেন।পাঁচিলের কাজ পুরো হয়ে গেলে মামু খুব দুঃখ পেতেন। চোখ মুছতে মুছতে,বার বার পিছন ফিরে তাকাতে তাকাতে ভাঙা গলায় টা টা করে ছাতা নেড়ে যখন চলে আসতেন অনেক মিস্ত্রীরাও কেঁদে ফেলতো। সে এক মর্মবিদারী দৃশ্য ছিলো। গাঁয়ের পাকড়াশি কাকু তো বললেনই "বাবা নিবু। মন খারাপ করো না। এই তো তোমার সাধের পাঁচিল রইলো আমাদের জিম্মায়। যখনই ইচ্ছা করবে তুমি এসে খানিক পাঁচিলের উপর বসে পা দুলিয়ে নিও। সংকোচ কোরো না"।
    কোন পাঁচিলটা চাঁদনী রাতে দেখতে ভালো আর ঘোর বর্ষার দিনে কোনটি - মামু এইসবের বিশদ খবর রাখতেন।কিন্তু তার সংবেদনশীল শিল্পী মনের যথার্থ স্বীকৃতি তিনি কখনোই পান নি কেননা এই তুমুল বিশ্বায়নের যুগেও ইন্টার অ্যাকটিভ পাঁচিল দৃশ্যশিল্পের কোনো মর্য্যাদা নেই।

    জিরাফ নিয়ে কবিতা লেখার সখও বহুদিনের। কিন্তু সে আপনাদের ঐ "ধর্মে আছো জিরাফেও আছো" টাইপের আধুনিক কেতার কবিতা নয়। মামু অন্ত্য মিল দিয়ে নিঁখুত ছন্দে আবেগে থই থই কবিতাই লিখতে চাইতেন। প্রথম লাইনটা লিখে ফেলেছিলেন "জিরাফ, হ্যাঁরে জিরাফ"। ব্যাস, ব্যাস। ঐ পর্যন্ত্যই। বারো বচ্ছর হয়ে ঠিক পছন্দ মতন মিল না পাওয়ায় কবিতাটা আর এগোয় নি।আমরা তো কতোই সাধাসাধি করলাম,"ও মামু। একটু ধাক্কা ধাক্কি দিয়ে ম্যারাপের সাথে মিল দিয়ে দাও না। আর একবার ম্যারাপ এসে গেলে গোলাপ,প্রলাপ, কথার খেলাপ - উফ। একেবারে মিলের বন্যা বয়ে যাবে।" কিন্তু মামু বড়ো খুঁতখুঁতে, কিছুতেই রাজী হলেন না। পানু বললো "ও মামু, দাও না জিরাফটাকে একটু সিরাপ খাইয়ে। খুব মিলবে কিন্তু।" মামু রাজী নন। বলেন এতো শুভ কবিতার প্রথমেই একটা কড়া ওসুদ খাইয়ে আমি কবিতার ক্ষেতি করতে পারবো না। না,না। সিরাপ চলবে না।" কী মুশকিল। এক লাইনের কবিতাও তো তেমন চলে না।

    "মামু, আমি শ্রীজাত। এইবারে আনন্দ পুরষ্কার পেলাম। তাই ভাবলাম মামুকে একটা পেন্নাম ঠুকে যাই।"
    "ছিজাত? তুমি খুব ভালো কবিতা লেখো। আচ্ছা, জিরাফের সাথে কী মিলবে একটু বাতলে দাও তো"
    শ্রীজাত একটু ঘাবড়ে যান। "ইয়ে, করেছি আমি কী পাপ? এটা চলবে?"
    মামু ঘাড় নাড়েন"মনে হচ্ছে হয়ে যাবে"।
    পানু হৈ হৈ করে ওঠে"মামু, এটাকে ছেড়ো না।এরপর মনে হচ্ছে ঘি ভাতও চলবে"
    মামু বিড়বিড় করে স্বগোতক্তি করেন 'জিরাফ, ওগো জিরাফ,করেছি আমি কী পাপ/ খেয়েছি আমি ঘি ভাত' - হ্যাঁ হ্যাঁ, এটা চলবে।শ্রীজাতকে বলেন,আরে,তুমি তো বড্ডো ভালো লেখো হে।আমি বারো বছর ধরে চেষ্টা করেও জিরাফকে বাগে আনতে পারলাম না আর তুমি চোখের নিমেষে মিলিয়ে দিলে? কী সুন্দর।"
    "আপনার আশীর্বাদ মামু"
    "হ্যাঁ, আরো বড়ো হও। আরো লম্বা হও। দিল্লীতে গিয়ে প্রথম কাব্য মন্ত্রী হও। চাই কী পদ্যভুষণ হও। আমি না হয় মনমোহোনকে কয়ে দোবো। ঐ যে পাগড়ী পড়ে এয়েছিলো"
    "ও মামু" পানু ফিস ফিসিয়ে বলে"সেই পাগড়ীওলা আর নেই কো। এখন তো লরেন বাবু সিংহাসনে"

    মামু যে কীরকম পারফেকশনিস্ট সে তো বুঝতেই পারছেন। জিরাফের সাথে পছন্দ মতন মিল না পাওয়ায় দীর্ঘ বারো বছর কবিতাই লিখলেন না। এখনকার ছোকরা কবিরা, যারা মিনিবাসে ঝুলতে ঝুলতেও প্রেমের কবিতা লিখে ফেলেন তাদের এই ঘটনা থেকে অনেক শেখার রইলো।
    মামু সেইজন্যেই টিকটিকি কে সব সময়েই ডিগটিগ বলেন কেন না দীর্ঘদিন খুব মনযোগ দিয়ে টিকটিকির নানান আওয়াজ শুনে তিনি বুঝতে পেরেছিলেন টিকটিকি মোটেই টিক টিক করে ডাকে না, দু কান ভরে শুনলে বোঝা যায় সব ডিগটিগিরাই ডিগ টিগ করে ডাকে। এরকম আরো একটা মিথ্যাচারণ চলে এমন কি দুধের শিশুদেরও জোর করে শেখানো হচ্ছে "কাক ডাকে কা কা, স্বরে অ স্বরে আ"। কিন্তু সমস্ত কাকেরা আর মামু এটা জানেন এটি এক মর্মান্তিক মিথ্যে কথা। কাকেরা ডাকে খ্যা খ্যা করে। এইসব বেয়াক্কেলে ভ্রষ্টাচারিতায় মামু খুব বিচলিত থাকতেন। কাকেদের দেখলেই তিনি স্বান্তনা দিতেন কিন্তু ঠিক কোন ডিপাটমেন্টে এই নিয়ে দরখাস্ত করতে হবে সেটি তার জানা ছিলো না।

    মামুর জীবনে তাও কতো কিছুই তো হোলো না।বিভুতিদা বল্লেন "অ নিবারন্দা, আপনি বরম কেনো একটা দার্শনিক হয়ে যাননা"
    "দার্শনিক? বটে? তো কি করতে হবে শুনি?'
    "এই ই। তেমন কিছু না। খুব চিন্তা করতে হবে। ভীষণ। নানান জিনিস নিয়ে। জটিল,কুটিল। এই ধরুন।।।।।।।।।।।।"
    "বালতি নিয়ে?" উদ্গ্রীব মামু প্রশ্ন করেন।
    "না মানে ঠিক বালতিতে জুৎ হবে না। বুঝলেন না? বড়ো কিছু। মানে বৃহৎ কিছু। সমাজ,ধর্ম। রাজনীতি। এইসব"
    মামুর মুখ উজ্জ্বল হয়। "শুধু চিন্তা করলেই হবে তো?পারবো। খুব পারবো। আরে আমি তো ছান করতে করতেও দু দশটা চিন্তা করে ফেলি।"
    "আর শুনুন বানী দিতে হবে। কোটেশন লিখতে হবে। একটু ক্রান্তদর্শী হতে হবে,যাকে বলে ভুয়োদর্শী"
    মামুর মুখ শুকিয়ে যায়। "কান্তিদস্যি,ভুওদস্যি। কিন্তু এই বয়সে এতো দস্যিপানা সহ্য হবে তো?" বিভুতিদা আশ্বাস দেন"আরে সেরকম কিছু রিস্ক নেই। খুব গভীর বাণী দেবেন।অল্প দু চার কথা,কিন্তু খুবই দামী, একটু ভবিষ্যতদ্রষ্টা হলে ভালো হয়। আগামী দিনে কী কী হতে পারে - এইরকম। খুব জমবে।"

    মামু সেই থেকে দার্শনিক হয়ে গেলেন। সমাজ নিয়ে চিন্তা করেন,ল্যাম্প পোস্ট নিয়ে চিন্তা করেন, এক বার সতেরো ঘরের নামতা নিয়েও চিন্তা করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে পরেছিলেন।
    সে এক বসন্তের দিন। মৃদু সমীরন ফুর ফুর করছে।নীল আকাশে সাদা মেঘ।পাখী পাখালিরা ক্যাও ম্যাও করে মৃদু গান গাইছে।নরম সুয্যি ফিক ফিক করে হাসছে আর প্রজাপতিরা ফুলে ফুলে ঢলে ঢলে যতো পারে আদিখ্যেতা করছে।
    আমরা পাড়ার ছেলেরা কয়জনে উবু হয়ে বসে ফড়িং গুনছি আর বিড়ি টানছি। এমন সময়ে আমাদের নিবারন মামু দারুন উত্তেজিত হয়ে ছুটে এসে চোখ পাকিয়ে বললেন "দেখবি,দেখবি । তোরা দেখে নিস একদিন ছাতারা ছোট্টো হয়ে বগলে থেকে নেমে পকেটে সেঁধিয়ে যাবে" । শুনে তো আমরা হাঁ। আসলে মামু তো শহরের দিকে পা বাড়ান না - কী করে জানবেন যে এই যুগান্তকারী ভবিষ্যদবানী করবার আগেই ফোল্ডিং ছাতা এসে গেছে। শ্যালদার বাজারে তো ঢেলে বিককিরি করছে এইটুকুনি ছাতা। একটার দাম ৩৫ টাকা,তিনটে একত্তর কিনলে মোট একশো।

    ঈস। মামুর ঐ অতো ভালো ভবিষ্যদবানী মাঠে মারা গেলো। শুধু বছর দশেকের ইদিক উদিক হয়ে গেলো বলে।

    মামু সজারুদের খুব ভালোবাসতেন, কেন না সজারুদের প্রতি অবিচার তাঁকে খুবই বিচলিত করতো। এই দেখুন না, বাঘ,সিংগী,ব্যাং,জিরাফ,ইঁদুর,প্যাঁচা ইস্তক সবাইকে নিয়েই কবিরা কতই না পদ্য ফেঁদেছেন , কতো তাদের মরমী মন। কিন্তু সজারুর ভাগ্যে ঐ বিদ্রুপের মজারু ছাড়া কিছু জুটেছে? দারুন শীতের রাতে ধেড়ে ইঁদুরেরা গায়ে আচ্ছা করে ব্রেড ক্রাম্ব মেখে খাটের নীচে শুয়ে রাত কাটায় আর কবিরাও সেই নিয়ে কেঁদেই কুরুক্ষেত্র। আর সজারুদের দেখুন,শিহরিত আমলকি বনের নীচে দাঁড়িয়ে ঠক ঠক করে কাঁপতে থাকে। তাদের গায়ে এতো কাঁটা ,আহা যদি ভেড়াদের সাথে থাকতো তাহলে নিজেরাই উলের সোয়েটার বুনে নিতে পারতো।
    পাশের বাড়ীর বলরামদা যখন একবাটী গরগরে ঝাল ঝাল সজারুর মাংস এনে দিলো, তখন দেখেছি কেমন পাঁজর কাঁপানো দীর্ঘশ্বাস ফেলে হু হু করে কাঁদতে কাঁদতে আমার নিবারন মামু কী গভীর মমতায় ও বেদনায় আপ্লুত হয়ে আটখানা পরোটা দিয়ে ঐ একবাটী মাংসো সাঁটিয়ে দিলেন। সে এক মর্মান্তিক দৃশ্য।

    আমাদের মামু, জানেন তো, হৃদয়ে ও উদরে কোনো ফারাক মানতেন না।কিন্তু সজারু আর গিনিপিগে করতেন।

    পৃথিবী বিখ্যাত অধ্যাপক ও ডেন্টিস্ট ডঃ চন্দিল যখন প্রশ্ন করেছিলেন "মানব সভ্যতার উষাকালেই যাজ্ঞবল্ক্যদা,চার্বাকদা যে গুহানিহিত পথনির্দেশ করেছিলেন ,তার ক্রম বিন্যাস ও বহুমাত্রিক রূপকল্পরাসের আলায় রেনেসাঁসাসেও লিওনার্দোদা থেকে অধুনার ড্যান ব্রাউনও হিলে যান। পরে দেরিদা অবশ্য নব্য ভাঙনের দুম ফটাস তত্ত্ব দিয়ে সেটিকে কাটাকুটি করে দেন, তাতে আপনি যদি একটু আলোকপাত করেন?"
    মামু বল্লেন "বল্লে হবে? খচ্চা আছে"।
    সভায় ধন্য ধন্য পড়ে যায়।

    কলকাতা থেকে গাঁয়ে গিয়ে শুনি মামুর খুব শরীর খারাপ। গেলাম। চাটাইএর উপর শুয়ে আছে, গায়ে শতচ্ছিন্ন কাঁথা।আমাকে দেখে ঘোলা চোখে বল্লেন "ঘনা?"ঘরে তখন পানু ছিলো। পানু বল্লো "সেই সকাল থেকেই ঘনা,ঘনা করে যাচ্ছে মামু।" আমি তো অবাক হয়ে যাই।- "এই ঘনাটা কে রে?"
    "আরে ঐ পাশের গাঁয়ের লাহাদের জামাই। সে নাকি আমেরিকায় থাকে। এই তল্লাটে চেনাজানার মধ্যে বিদেশে একমাত্র ঘনাই গেছে।"
    "তো সে কেনো আসবে?"
    পানু বলে "মামুর খুব ইচ্ছে। শরীর খারাপ শুনে দেশ বিদেশ থেকে লোকে ছুটে আসবে। কাউকে তো আর চেনে না - ঐ শুধু ঘনার নামই শুনেছে।তো সএই সকাল থেকে বার বার দরজার দিকে তাকাচ্ছে আর বলছে 'ঘনা এলো রে'?"
    আমি ঝুঁকে পড়ে মামুর কানের কাছে মুখ নিয়ে বলি "ও মামু। আমি ডিডি। ডিডি। চিন্তে পারছো?
    মামু অবাক হয়ে কিছুক্ষন তাকিয়ে থেকে হঠাৎ কী একটা বুঝে আমায় বল্লেন "সাংবাদিক?"
    আমি চেঁচিয়ে বলি "হ্যাঁ মামু। আমি সাংবাদিক। আপনের খপরে নিতে এয়েছি"।
    মামুর মুখ তৃপ্তির হাসিতে ভরে গেলো। মামু চোখ বুঁজলেন।

    *************************************************
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৯ নভেম্বর ২০১৫ | ১০৫৯ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    চম - dd
    আরও পড়ুন
    ও শানওয়ালা - dd
    আরও পড়ুন
    দ্রোণ পর্ব - dd
    আরও পড়ুন
    কর্ণসংহার - dd
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • i | 147.157.8.253 (*) | ০৯ নভেম্বর ২০১৫ ১০:১৪66431
  • কতদিন পরে নিবারণ মামু। অসাধারণ।জাস্ট অসাধারণ।
  • ranjan roy | 24.98.134.158 (*) | ০৯ নভেম্বর ২০১৫ ১১:৪১66432
  • ডিডি,
    তোমার শুক্‌কুরবারের পদ্য বন্ধ হয়ে গেছে। কিন্তু গদ্য যা আসছে সাংঘাতিক, একেবারে তিড়িতংক লাগিয়ে দিচ্ছে। সত্যি অসাধারণ।
  • কল্লোল | 125.185.149.67 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০১:১৩66435
  • তোমার জন্য চিলি রোস্ট পোর্ক আর রাম তোলা রইলো। কবে আসবে বলো।
  • dd | 116.51.26.92 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৪৮66444
  • কান্তি বাবুর জন্য।
    https://picasaweb.google.com/109619061153939324777/YiCbmJ#

    এই লিংটি দেখুন তো। এগারো আর বারো পংক্তিতে আমাকে পাচ্ছেন। ঐ যে ডোরাকাটা একটা পাঞ্জাবী পরে = ভ্যবলা কাত্তিক চেহারা। একট দুটো ছবিতে ক্যাপশন দেওয়াও আছে।
  • pipi | 77.175.190.90 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০২:৫১66445
  • খিক্‌! খিক! বেড়ে হয়েছে ঃ)
  • কান্তি | 113.57.239.173 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:২৭66436
  • ঘরে বসে কাটানো বুড়োদের জন্য উপাদেও আর পুষ্টিকর ডিডি -বাবুর এই নিবারন- উপাখ্যানটি ভারি
    সময়োপযোগি। ডিডি-বাবুর জন্য শ্যামা মায়ের পায়ের কাছের রাংগা জবাই উপোহার রইলো। আর আপ্নের
    হাতে দীর্ঘ কলম, সজীব মনের জন্য আকাশ ভেদী কামনা রাখলাম। আফনের একখেন ছবি দিখার বড় বাসনা
    মনে জাগে। কান্তি।
  • | 125.117.212.171 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৫৮66437
  • উরে!!!
  • Tim | 82.36.117.136 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:২৪66446
  • ভালো হয়েছে। সবাই এত হাসছে কেন, এটা তো দুঃখের গল্প।
  • শ্রী সদা | 212.142.69.23 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৩৮66447
  • হুম দুঃখের গল্প, কিন্তু বেশ ভালো। তারাপদ রায়ের নিজের দাদাকে নিয়ে লেখাগুলো মনে পড়ে গেল।
  • lcm | 118.91.116.131 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৪৫66438
  • উফ্‌। এই লেখার পড়ার পরে, কান্তির ন্যায় আমারও শখ হইসে - ডিডিদারে একবার সামনাসামনি দেখার, সায়েবি ইস্টাইলে কইব - "হ্যালো ডিডি, হাডুডু" ।
  • Tim | 140.126.225.237 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৫১66448
  • যাচ্চলে, দুঃখের গল্প ইন জেনেরাল ভালো হয়না নাকি? অ সদা এটা কী বললি?
  • শ্রী সদা | 212.142.69.23 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:২০66449
  • হুম, কূট প্রশ্ন কিন্তু আপাতগ্রাহ্য ঃ)
  • কল্লোল | 125.242.157.20 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:৪০66439
  • আসেন আসেন, ডিডির তরফ থেকে লুরুতে আমন্ত্রন রইলো।
  • সে | 198.155.168.109 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ১০:৫৭66440
  • এগল্প আমার মাথার ওপর দিয়ে গেছে।
  • san | 113.240.239.63 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ১১:১৭66441
  • আহা আহা :-)
  • san | 113.240.239.63 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ১১:১৮66442
  • এতোজ কেও থ্যাংকু , পুরোন লেখার লিং এর জন্য। অনেকদিন পরে পড়ে ভারি আনন্দ পেলাম।
  • sinfaut | 11.39.60.213 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ১১:৪৪66443
  • প্যারাগ্রাফগুলো কেমন খাপছাড়া। সংযোগহীন।
  • | 183.17.193.253 (*) | ১০ নভেম্বর ২০১৫ ১২:৪৮66433
  • কোনও কথা হবে নাঃ)
  • কান্তি | 55.117.200.47 (*) | ১১ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:১০66450
  • ডিডির ছবির খোঁজে যথাস্থানে হানা দিয়ে ভারী গম্ভীর গোছের একজন ডোরা কাটা সাজের ভদ্দোর লোকের দেখা পেলাম। ইনি এক্কেবারে তারাপদর বড়দা। মানসিক ভাবে তো বটেই। শুধু রাত্রি/ সংগীতার পাশে দাঁড়িয়ে একবার একটু হেসেছেন। সে যাকগে,আপনার ছবি আর আপনি মানুষরে জোড়া নমস্কার। নিবারনের ভাগ্নের জন্য হাততালি। কান্তি।
  • oi r ki | 77.180.29.67 (*) | ১২ নভেম্বর ২০১৫ ০১:৫৭66451
  • খুব ভালো
  • de | 69.185.236.55 (*) | ১২ নভেম্বর ২০১৫ ১১:১২66452
  • দারুণ!!!!

    ডিডিদা দিনে দিনে ধারালো হচ্চেন -
  • de | 69.185.236.55 (*) | ১২ নভেম্বর ২০১৫ ১১:১৩66453
  • মানে - আরো ধারালো হচ্চেন!
  • সুকি | 129.160.188.152 (*) | ১৪ নভেম্বর ২০১৫ ১১:০৮66454
  • ভালো লাগলো লেখা
  • Anindya Bagchi | 55.124.4.114 (*) | ৩০ নভেম্বর ২০১৫ ১০:৩৯66455
  • মামু কে নিয়ে লিখে ফাটিয়ে দিয়েছেন মামা! পড়ে আমি উল্টিয়ে পড়েগেলাম। খ্যাঁক খ্যাঁক ফঁচ (হাসি ও কান্নার অভিব্যক্তি একসাথে)।
  • কান্তি | 113.57.239.49 (*) | ০৫ জানুয়ারি ২০১৬ ০১:৫৮66456
  • বড় হোলে ডিডি কি হবেন?
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন