এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • শরীরী গান্ধার ও কর্ণাটরাগিনী

    শিবাংশু লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৯ জুলাই ২০১৬ | ১০৬৭ বার পঠিত
  • "না উড়ে থেমেছো পাখি, সমস্তটা ওড়ো
    কীভাবে উড়ছো তুমি, কীরকম বন্ধ হয়ে আছো
    এভাবে পালকে ওড়ো
    নানান আকারে একবার....."
    (হাজারদুয়ার- স্বদেশ সেন)
    --------------------------------
    রাতের বেলা সুর যেন একটু অন্যভাবে কাছে আসে। নৈঃশব্দ্যের ফ্রেমে বাঁধানো থাকে সোনার রেখায় ফুলকারির আঁকিবুকি। মনে পড়ে কি শংকর জয়কিশনের স্প্যানিশে অমোঘ স্ট্রোকের পেলব মায়া। ধানি সারেগামাপা... ধা পা... রাজ কাপুর নেমে যান স্টুডিয়োতে সাজানো চাঁদজাগা ছায়াময় গাছগাছালির আঙিনায় হ্যামকটিকে দুলিয়ে দিয়ে... নর্গিস তাঁর দীর্ঘনাসা সুষুপ্তিময় চোখের জাদুতে বেঁধে রাখেন শহরগ্রামমাঠময়দান মফস্সলে ছড়িয়ে থাকা লক্ষ গ্রস্ত মুগ্ধ চোখের মানুষজন। মান্না আর লতা ধর্মব্যাধের মতো নির্লিপ্ত সততায় শিকার করে চলেন তাদের হৃদয়। ইয়েহ রাত ভিগি ভিগি , ইয়েহ মস্ত ফিজায়েঁ... উঠা ধীরে ধীরে উওহ চাঁদ প্যারা প্যারা... কিঁউ আগসে লগাকে গুমসুম হ্যাঁয় চাঁদনি, তুনে ভি নহি দেখা মৌসম কা ইয়েহ ইশারা ... অদ্বিতীয় শৈলেন্দ্র.. কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে জেগে থাকে রাগ কিরওয়ানির মাদক আশ্লেষ। অলীক জেনেও কী অনিবার্য অভিঘাত সেই সুরের। তোমার কাছে এ বর মাগি.....

    ইয়েহ রাত ভীগি ভীগি :

    ২.
    দক্ষিণদেশের সুর কিরওয়ানি। শাস্ত্রীয় অর্থে কিরওয়ানি এখনও 'হিন্দুস্তানি রাগ' নয়, অন্ততঃ পন্ডিত ভাতখন্ডে'র তালিকা অনুযায়ী। তাই হিন্দুস্তানি মতে কিরওয়ানির কোনও নিজস্ব ঠাট নেই। যেহেতু হিন্দুস্তানি রাগের শিল্পী ও শ্রোতাদের কাছে কিরওয়ানি অভূতপূর্ব গ্রহণযোগ্যতা ও লোকপ্রিয়তা অর্জন করেছে, সম্প্রতি কিরওয়ানিকে একটা নিজস্ব ঠাট হিসেবেও প্রতিষ্ঠা করার প্রয়াস লক্ষ্য করেছি। এহ বাহ্য, মানুষের হৃদয়ের কাছে পৌঁছোনো'ই সঙ্গীতের লক্ষ্য, সেই যুক্তিতে এই রাগ আদি ঠাটভিত্তিক রাগবিশ্লেষণের এলাকার মধ্যে না এসেও উত্তরভারতের হিন্দুস্তানি ঘরানার শ্রোতা ও শিল্পীদের রুচিকে বিশেষভাবে প্রভাবিত করেছে। হিন্দুস্তানি রাগের সুরসাম্রাজ্যে আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে প্রতিষ্ঠা করেছে নিজেকে। সম্পূর্ণ অঙ্গের রাগ, আরোহ অবরোহে আটটি করে স্বর, কিন্তু জাদু ধরা আছে সব শুদ্ধস্বরের পটভূমিতে চকিতে স্পর্শ করা কোমল গান্ধার আর কোমল ধৈবতের নেশায়। তার মেজাজে ধরা থাকে শৃঙ্গার, বিষাদ আর নির্ভুল শরীরী আবেগ। ব্রাহ্মণ থেকে চন্ডাল কারও নিস্তার নেই সেই সম্মোহনে।
    " শোলা থা জল চুকা হুঁ", মেহদি হসন, :

    মনে পড়ে, মেহদি হাসান সাহেবের 'শোলা থা জল বুঝা হুঁ , দওয়ায়েঁ মুঝে ন দো...' অথবা গুলাম আলি সাহেবের সম্ভবতঃ শ্রেষ্ঠ সৃষ্টি ( আমার মতে) ' পারা পারা হুয়া পয়রাহেঁ এ জান'। জনসমাদরে পিছিয়ে থাকেনা আলি সাহেবের ' অ্যায় হুস্ন বেপরোয়াহ তুঝে, শবনম কহুঁ, শোলা কহুঁ..'
    "পারা পারা হুয়া পয়রাহঁন জাঁ", ঘুলাম আলি :

    ৩.
    কিরওয়ানি রাগটি বেশ জনপ্রিয়, বিশেষ করে যন্ত্রসঙ্গীত শিল্পীদের মধ্যে। এই রাগটির সঙ্গে আমার প্রথম পরিচয় বাল্যকালে পণ্ডিত রবিশংকর পরিচালিত একটি বৃন্দবাদনের অংশ হিসেবে একটা তরানার মাধ্যমে। এই পরিবেশনার সহশিল্পীরা ছিলেন ষাটের দশকে পণ্ডিতজির প্রধান শিষ্য ও অনুসারীরা। পরবর্তীকালে তাঁরা ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের স্তম্ভ হিসেবে নিজেদের প্রতিষ্ঠা করেছিলেন। তাঁদের মধ্যে ছিলেন পণ্ডিত শিবকুমার, পণ্ডিত হরিপ্রসাদ, পণ্ডিত কার্তিককুমার, পণ্ডিত এল সুব্রামনিয়ন,পণ্ডিত কমলেশ মৈত্র,উস্তাদ আল্লারাখা, উস্তাদ সুলতান খান এবং লক্ষ্মীশংকর। টুকরো টুকরো করে পরিবেশিত চতুরঙ্গ, ধমার, কজরি, দেহাতি, নাদেরদানি ইত্যাদি। মূলতঃ বিদেশী শ্রোতাদের ভারতীয় শাস্ত্রীয় সঙ্গীতের সঙ্গে পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য। সারঙ্গি, বেহালা, সেতার, বাঁশি, মৃদঙ্গম, তবলা'র সঙ্গে কণ্ঠ সঙ্গীত। পণ্ডিত রবিশংকরের একটি অতি জনপ্রিয় কম্পোজিশন।
    শিবকুমার শর্মা:


    বড়ো করে গাওয়া বা বাজানো যায়না বলে কোনও অনুষ্ঠানেই মূল পরিবেশনা হিসেবে তা'কে আমরা শুনতে পাইনা। পিলু, কাফি, খমাজ, ভৈরবীর মতো সে একটু দেরিতে আসে। অধিকাংশ সময়েই ঠুমরি দাদরার জামা গায়ে। কিন্তু অভিজ্ঞতায় দেখেছি, দের আই, দুরুস্ত আই। পুরিয়া ধনশ্রী বা বাগেশ্রী'র পর দশ-পনেরো মিনিটের একটি পেশকশ, দিল তরর হো জাতি হ্যাঁয়। মুম্বাইর বিখ্যাত হৃদয়েশ সঙ্গীত সমারোহ অনুষ্ঠানে শুনেছিলুম পন্ডিত রাজন-সাজন ভীমপলাশির পর চ্যালেঞ্জ নিয়ে ধানী গেয়েছিলেন, কারণ পর পর এই দু'টি রাগ নিজস্ব সূক্ষ্ম স্বকীয়তা বজায় রেখে এক আসরে গাওয়া অতি দুরূহ। মন ভরেছিলো নিশ্চয়, কিন্তু ছোঁয়ার একটু বাকি থেকে গিয়েছিলো। সেটা পূর্ণ হয়ে গেলো পরবর্তী শিল্পী পন্ডিত শিবকুমার শর্মা যখন মূল নিবেদন চন্দ্রকোষের পর বড়ো করে কিরওয়ানি বাজাতে শুরু করলেন। সঙ্গতে উস্তাদ জাকির হুসেন। কিরওয়ানি'র লিল্টিং মেলোডির সঙ্গে লয় ও ছন্দকে কীভাবে সীবনহীন মিলিয়ে দেওয়া যায় তার ক্ল্যাসিক নমুনা শুনলুম সেদিন। পন্ডিত শিবকুমারের সন্তুরে কিরওয়ানির রেকর্ডটি এক কথায় অসামান্য। মধুরেণ সমাপয়েৎ কা'কে বলে তখন বুঝতে পারলুম। কর্মক্লান্ত দিনের মহতী আয়োজনকে হয়তো ধরে রাখে মিয়াঁ কি তোড়ি, য়মন কল্যান বা রাগেশ্রী বা দরবারী। কিন্তু তা'কে সাঙ্গ করে শিশিরের শব্দের মতো শান্তি নিয়ে ঐ সব ভীরু পায়ে আসা শ্যামলী মেয়েদের মতো রাগরাগিণীর দল সন্ধ্যা হয়ে নেমে আসে। পন্ডিতজীর জন্য ছিলো স্বতঃস্ফূর্ত স্ট্যান্ডিং অভেশন। আমার জন্য ছিলো ভিলে পার্লে স্টেশনে রাত সাড়ে বারোটা পর্যন্ত বসে বোরিভিলি লোক্যালের অপেক্ষা, মনে মনে নিরন্তর আক্ষেপহীন গুন গুন। কিরওয়ানির চক্করে পরদিন ভোর সাড়ে ছটায় পন্ডিত উলহাস কসলকারের অনুষ্ঠান আর যেতে পারিনি। আর এই সেদিনের কথা। ভুবনেশ্বরে রাজারানি সঙ্গীত উৎসবে সরোদে গোয়ালিয়র ঘরের বর্তমান দীপধারক দুই ভাই অমান আর আয়ান আলি খান বাজালেন এই রাগটি। সুর মেলাবার সময়ই ধরা পড়ে গেলো কী বাজাতে চাইছেন তাঁরা। বেমিশাল সুরের দাপটে রাগ কিরওয়ানি প্রায় মধ্যরাতের বসন্ত আকাশের নীচে একটা অন্যরকম অভিঘাত নিয়ে এসেছিলো।

    অমজদ আলি খান :

    ৪.
    নিখিল বন্দ্যোপাধ্যায় :

    হরিপ্রসাদ চৌরাসিয়া :


    পন্ডিত শিবকুমার, পন্ডিত হরিপ্রসাদ, পন্ডিত বিশ্বমোহন, পন্ডিত রনু মজুমদার, পন্ডিত তরুন ভট্টাচার্য, পন্ডিত তেজেন্দ্রনারায়ণ, যাঁদের বাজানো কিরওয়ানি সামনে বসে শুনেছি তা ছাড়াও মহামহিম দিকপালদের মধ্যে স্বয়ং উস্তাদ আলি আকবর, পন্ডিত নিখিল বন্দোপাধ্যায়, উস্তাদ আমজাদ আলি, উস্তাদ শাহিদ পরভেজ, উস্তাদ আব্দুল হালিম জাফর, পন্ডিত ব্রিজ ভূষণ কাবড়া, পন্ডিত রামনারায়ণ, পন্ডিত ভি জি যোগ, বিদুষী শিশিরকণা ধরচৌধুরী, বিদুষী এন রাজম এবং এক ও অদ্বিতীয় পন্ডিত রবিশংকর, তাঁদের বাজনা রেকর্ডে শুনেছি। এ ছাড়া পন্ডিত এল সুব্রামনিয়ান আর উস্তাদ রইস খানের যুগলবন্দিটিও স্মর্তব্য তার পেশকারিতে কর্ণাটকি শৈলি ও সেনী ঘরানার গায়কী অঙ্গের মেলমিলাপের নৈপুণ্যে। পন্ডিত রবিশংকরের দুই শিষ্য কার্তিক শেষাদ্রি আর অনুষ্কা শংকরও রাগ কিরওয়ানি'র রূপায়নে নিজেদের ঘরানার ছাপ রেখেছেন। প্রত্যেকেই নিজস্ব ধরণে অনন্য এবং এই অনুপম রাগটির সম্পূর্ণ মজা সযত্নে আদায় করে রাগটির মর্যাদা রক্ষা করেছেন ।
    আলি আকবর খান:


    রাশিদ খান :


    শাস্ত্রীয় কণ্ঠসঙ্গীতে আমার প্রিয় শিল্পীদের মধ্যে উস্তাদ রাশিদ খানের গাওয়া রাগ কিরওয়ানি নিঃসন্দেহে সব চেয়ে বেশি মজাতে পেরেছে আমাকে। 'তোরে বিনা মেরে চ্যয়েন নহি, ব্রিজ কে নন্দলালা....' এক কথায় লাজবাব। অফতাব-এ- মৌসিকি উস্তাদ ফৈয়াজ খান একবার বলেছিলেন, রাগ কো উতনা হি ফ্যয়্লাও জব তক উসকা চেহরা সাফ না হো। উসকে বাদ অওর নহি। রাশিদের এই নিবেদনটি নিশ্চয় ওঁর শ্রেষ্ঠ কীর্তি নয়, কিন্তু রাগ কিরওয়ানির আসল চেহারাটি ধরেছেন নির্ভুল। রামপুর সহসওয়ান ঘরানার আরেক দিকপাল উস্তাদ মুস্তাক হুসেন খানের পুত্র উস্তাদ গুলাম হুসেন খানের গাওয়া রাগ কিরওয়ানির রেকর্ড রয়েছে। তবে তিনি মেজাজে অ্যাকাডেমিক, আকূতিতে রাশিদকে ছুঁতে পারেননি। উস্তাদ মশকুর আলি খানের গাওয়া রাগ কিরওয়ানি পরিবেশন শুনেছিলুম কিশোর বয়সে, এখনও কানে লেগে আছে। তাঁকে ছাড়া কিরানা ঘরের আর কারো কণ্ঠে রাগ কিরওয়ানি আমি শুনিনি। শুনিনি আগ্রা বা জয়পুর ঘরের কোনও মুখ্য প্রতিনিধির কণ্ঠেও। চিরকাল গ্রামবাসী হয়ে থাকার ফলশ্রুতি হয়তো।

    অশ্বিনী ভিদে দেশপাণ্ডে :


    ৫.
    "ফিরিয়া যদি সে আসে", সুকুমার মিত্র :

    বাংলাগানে রাগ কিরওয়ানির ছায়া বেশ কম। অবাক লাগে, এতো জনপ্রিয় সুর হওয়া সত্ত্বেও রবীন্দ্রনাথের কোনও গান কিরওয়ানি অঙ্গে বাঁধা হয়নি। সম্ভবতঃ এই রাগটি সেই সময়ে স্বীকৃত প্রধান হিন্দুস্তানি রাগগুলির তালিকায় ছিলোনা। পিলু, কাফি, খমাজ, যোগিয়া ভিত্তিক সুরে গান তো অসংখ্য, এমনকি গারাতে বাঁধা রবীন্দ্রসঙ্গীতও আছে, কিন্তু কিরওয়ানিতে নেই। তাই লঘু মেজাজের সুর বলে অবহেলিত, এমনটি ভাবার কোনও কারণ নেই বোধ হয়। তাঁর গানে যদিও কিছু কর্ণাটকি রাগাশ্রয়ী সুর নেওয়া হয়েছে, কিন্তু সেখানে কিরওয়ানির স্থান হয়নি। হয়তো সেই সময় সে 'ঘরেও নহে, পারেও নহে' গোছের অবস্থানে ছিলো, নয়তো কবিকে হয়তো এই রাগটি কেউ গেয়ে বাজিয়ে শোনায়নি । বাংলাগানে সুরের বৈচিত্র্য ও পরীক্ষানিরীক্ষার ব্যপ্তির বিচারে নজরুলের কোনও প্রতিদ্বন্দ্বী নেই। বিশেষতঃ রাগাশ্রিত সুরভিত্তিক কম্পোজিশন নজরুলের প্যাশন ছিলো। কিন্তু নজরুলের গানেও আমার অতি প্রিয় 'ফিরিয়া যদি সে আসে, আমারে খোঁজে ঝরা গোলাবে' গজলটি ছাড়া চিহ্নিত রাগ কিরওয়ানি আর শুনিনি। তবে নিবেদিত ও সিদ্ধ নজরুলগীতি শিল্পী সুকুমার মিত্র মশায় একটা অনবদ্য কম্পোজিশন করেছিলেন কিরওয়ানিতে, 'যমুনা কি বলতে পারে কতোবার কেঁদেছে রাধা ... .' গেয়েছিলেন শ্রীমতী শিপ্রা বসু। একেবারে মণিকাঞ্চন যোগ। আরেকটি মণিকাঞ্চন ছিলো ছোটোকত্তা আর কিশোরের যুগলবন্দি ' একদিন পাখি উড়ে যাবে যে আকাশে'... মন্তব্য নিষ্প্রয়োজন।

    "যমুনা কি বলতে পারে", শিপ্রা বসু :

    "একদিন পাখি উড়ে", কিশোরকুমার :

    ৬।
    এবার বলি রাগ কিরওয়ানিতে বাংলায় আমার প্রিয়তম রচনা শ্রদ্ধেয় রামকুমার চট্টোপাধ্যায়ের গাওয়া 'আমার মধু বনের ফুল, না ফুটিতে অবেলাতে ঝরিতে আকুল'। আমার কাছে যে লাইভ রেকর্ডিংটি রয়েছে সেখানে স্বয়ং রাধাকান্ত রয়েছেন সঙ্গতে। ঢিমে দাদরায় শুরু হয়ে তা আস্থাইতে যখন ফিরে আসছে দ্বিগুন লয়ে রাধাকান্তের তেরেকেটের মিহিন জালির কাজ, সঙ্গে রামকুমারের কণ্ঠসম্পদ খাজুরাহোর ভাস্করদের ছেনির মতো মসৃণ, দীপ্ত ও দৈবী মহিমায় ঋদ্ধ। রামকুমার গানের বিস্তারের সঙ্গে সঙ্গে ছদ্ম ভর্ত্সনায় অনুজপ্রতিম রাধাকান্তের বাদননৈপুণ্যের ব্যাজস্তুতি করে চলেছেন । বৈঠকী বাংলাগানের একটা পর্যায় সৃষ্টি হয়ে যায় এভাবে।
    ৭।
    "ইয়াদ ন জায়েঁ", মহম্মদ রফি ঃ

    "আঁখো সে জো উতরি হ্যাঁয় দিলমেঁ, আশা ভোঁসলে ঃ

    ভারতবর্ষে সঙ্গীতের সর্বস্বীকৃত জনপ্রিয় ধারা, হিন্দি ছায়াছবির সঙ্গে সম্পৃক্ত সুরের আয়োজনগুলি। বাংলায় রাগ কিরওয়ানির বহুল ব্যবহার তেমন চোখে না পড়লেও হিন্দি ছবিতে বিভিন্ন সিদ্ধ সঙ্গীতকার বার বার এই সুরটিকে আশ্রয় করে বহু কালজয়ী গান আমাদের উপহার দিয়েছেন। শংকর জয়কিশন এই সুরটি নিয়ে প্রায় অবসেসড ছিলেন। প্রথমে যে গানটির কথা লিখেছি, সেটি ছাড়াও মনে পড়ছে কিশোরের কণ্ঠে ' গীত গাতা হুঁ ম্যঁয়, গুনগুনাতা হুঁ ম্যঁয় ' বা রফিসাহেবের কণ্ঠে 'ইয়াদ ন জায়ে বীতে দিনোঁ কি' অথবা 'ম্যঁয় কভি কবি ন বন জাঁউ, তেরে প্যার মেঁ কবিতা'। এ ছাড়াও 'লাভ ম্যারেজ' ছবিতে তিনি উপহার দিয়েছিলেন লতার কণ্ঠে ' কহে ঝুম ঝুম রাত ইয়ে সুহানি, পিয়া হওলে সে ছেড়ো দুবারা...' । এই রাগটি নিয়ে সুরের আরেক জাদুকর পাগল ছিলেন। তিনি ওমকার প্রসাদ নৈয়র, ওরফে ও পি নৈয়র। যদিও সবাই তাঁকে রাগ পিলুর প্রতি সমর্পিত বলেই বেশি জানতেন, কিন্তু কিরওয়ানিতে তাঁর কয়েকটি রচনার কথা ভাবা যাক। রফিসাহেবের কণ্ঠে ' পুকারতা চলা হুঁ ম্যঁয়', 'ম্যঁয় প্যার কা রাহি হুঁ', আশার কণ্ঠে 'আঁখো সে উতরি জো দিলমেঁ, তসবির হ্যাঁয় এক অনজান কি'। ছোটোকত্তাও পিছিয়ে ছিলেন না। 'আনেওয়ালা পল, জানেওয়ালা হ্যাঁয়', 'মেরি ভিগি ভিগি সি পলকোঁ মেঁ রহ গই', 'রিমঝিম গিরে শাওন', 'তুম বিন জাঁউ কঁহা'। এছাড়া আরো দু'টি গানের গানের উল্লেখ তো করতেই হয়। শচীনকত্তার 'দুখি মন মেরে' এবং রবির ' ইয়ে রাতেঁ ইয়ে মৌসম নদী কা কিনারা, ইয়ে চঞ্চল হওয়া'.. ।
    "রিমঝিম গিরে শাওন", কিশোরকুমারঃ

    "ইয়েহ রাতেঁ ইয়েহ মৌসম", কিশোর-আশা,


    ৮।
    এক একটা বিশেষ সুর যখন রাগের মর্যাদা পায়, তখন তার একটা মূর্তিগত অস্তিত্ত্বও সৃষ্টি হয়। তাদের দৃশ্যরূপ নিয়ে ভারতশিল্পে 'রাগমালা চিত্রে'র পৃথক জঁরও কল্পিত হয়েছে। শুধু শ্রাব্য থাকছে না সে আর, দৃশ্যরূপ নিয়ে স্বচ্ছন্দে সামনে এসে দাঁড়াচ্ছে। যারা দেখতে পায়, তারা দেখে। দিলীপ রায়ের ভাষায় ' ওরা হাসে আর বলে হায়রে মধুর স্বপন, বলে কৃষ্ণ কাহিনী কল্পনা কবিকথন। আমি জানি, তাই মানি, আমি অন্তরে তার বাঁশরি শুনেছি তাই আমি তারে মানি'। ধূর্জটিপ্রসাদ রবিশংকরের পরিবেশনা শুনে যে রকম বলেছিলেন, ' ..... এতো স্পষ্ট, যেন মনে হয় রাগিণীর পটভূমি থেকে বেরিয়ে এসে চোখের সামনে দাঁড়ালো। এই বেরিয়ে এসে দাঁড়ানো আধুনিক আর্টের একটি প্রধান লক্ষণ। এতে একটু পশ্চিমী আমেজ থাকে নিশ্চয়ই... তাঁর বাজনা শুনলে আমার পূর্ব বিশ্বাস দৃঢ় হয় যে সঙ্গীত মনের অন্য স্তরের ভাষা। সাহিত্য ছাড়া অন্য, তবু ভাষা....' ।
    রবিশংকর ঃ

    ৯.
    ' আর যা বলে বলুক অন্য লোক
    দেখেছিলেম ময়নাপাড়ার মাঠে
    কালো মেয়ের কালো হরিণ চোখ.....'

    আমি একজন নিতান্ত ইতর শ্রোতা, কিন্তু এই ভাষাটি বোঝার সন্ধান যখন করি তখন আমাদের রাগরাগিণীগুলি এভাবেই মূর্ত হয়ে আমাকে অনেক কথা বলতে থাকে। কিছু বুঝি, বেশিটাই বুঝিনা। তবু অকুলীন রাগ কিরওয়ানির সুর বহু দিগ্গজ সঙ্গীতস্রষ্টার মতো আমার কাছেও ময়নাপাড়ার কৃষ্ণা মেয়েটির মতো অমোঘ আবেদন নিয়ে হাজির হয়। তাই কৈফিয়ৎ দেবার একটা দায় থেকেই যায় ,সবার জন্য।

    ".....যে বলয় তাকে দিতে চাই
    তার অধীনতা ঐ দিয়ে গড়া হোক, ও কর্পূর জ্বলুক ও অশোক
    দুধের বাটির পাশে, গলা রুপো থেকে তৈরি হোক
    বাল্যের শিশির আর ঘুম গান, ঘুমে ঢলে পড়া কথা।"
    (উৎপল কুমার বসু)

    (সৌজন্যেঃ কালিমাটি অনলাইন)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৯ জুলাই ২০১৬ | ১০৬৭ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • আবির | 34.147.192.201 (*) | ০৯ জুলাই ২০১৬ ০৫:৪২58238
  • কিরওয়ানি আমার মত অ-সুর এর কাছেও খুব প্রিয় রাগ। আমি এটার প্রেমে পড়েছিলাম নিচের বাজানোটা শুনে - মনে হয় আপনার দেওয়া তালিকায় নেই, তাই সংযোজন করলাম। এখন বসে বসে আপনার দেওয়া লিস্ট তারিয়ে তারিয়ে উপভোগ করব।
  • ranjan roy | 132.180.212.202 (*) | ০৯ জুলাই ২০১৬ ০৬:৪৭58239
  • মন ভরিয়ে দিয়েছেন শিবাংশু।
    একা জেগে একের পর এক শুনছি। শুরু করেছিলাম গুলাম আলি দিয়ে, যদিও আমার প্রিয় গজল অ্যায় হুসনে বেপরওয়া তুঝে, শবনম কহুঁ য়া শোলা কহুঁ!
    এর পর শুনছি পন্ডিত শিবকুমার শর্মা। তার পর নিখিল ব্যানার্জি শুনে ঘুমোব। বাকিগুলো কাল সারাদিন ধরে শুনব।

    অনেক কমবয়সে আকাশবাণীতে ভীমসেন যোশীর গলায় ও আর একবার ভি জি যোগের বেহালায় কিরবাণী শুনেছিলাম মনে পড়ছে।
  • শিবাংশু | 127.197.246.21 (*) | ০৯ জুলাই ২০১৬ ০৭:৩০58237
  • এই গানটি উপরে বাদ গিয়েছিলো,
  • কল্লোল | 125.242.176.156 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০১:৪৮58240
  • শিবাংশুকে কিইই বা বলার আছে।
    একটা লেখা যে ধ্রুপদী সঙ্গীতের আকার নিতে পারে, তা না পড়লে প্রত্যয় যায় না। আলাপ, বিস্তার আর তানকারীর মজা আছে এই লেখাগুলোয়।
    কখনো কি একত্রে পাওয়া যাবে - বই আকারে? গুরুর সম্পাদকেরা একটু নজর দেবেন।
  • সুকি | 129.160.188.217 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৩:১২58241
  • দারুণ - শিবাংশুদার এই সব লেখা আমার খুবই পড়তে ভালো লাগে।

    স্বদেশ সেনের কবিতা দিয়ে শুরু করাটা আরো চমৎকার লাগল। তাহলে উনার কবিতা নিয়ে একটা লেখা হোক না - আবদার রইল।
  • শিবাংশু | 127.197.81.65 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৭58242
  • ধন্যবাদ আবির। রাগ পিলুর মতো রাগ কিরওয়ানিও পশ্চিমের শিল্পীদের কাছে আদৃত হয়েছে অনেক সময়ই। কারণ এই রাগগুলোর কয়েকটি মেলোডিক প্রগ্রেসন মনে হয় তাঁদের কাছে চেনা মনে হয়।

    রঞ্জন,
    আমি সুতোমাত্র। ফুলগুলো ফুটিয়েছেন দেবদুর্লভ শিল্পীরা। তাঁদের পুণ্যের অংশ যতো ভাগ করে নেওয়া যায়, ততো'ই ঋদ্ধতা বাড়ে আমাদের মতো ইতরশ্রোতার। তবে ভীমসেনের কণ্ঠে কিরওয়ানি আমি শুনিনি কখনও। আপনি ভাগ্যবান। পণ্ডিত যোগের বাজানো রাগ কিরওয়ানি সামনে বসে শুনেছি মধ্য লয়ে রূপক তালে দুলকি ছন্দে মেলোডিক ফ্রেমের নতুন বিন্যাস। তোমারি তুলনা....

    কল্লোলদা,
    এসব কথার তো কোনও উত্তর হয়না, শুনে নিলুম... :-)

    সুকি,
    স্বদেশ সেন আমার পিতৃদেবের সহোদরপ্রতিম বন্ধু ছিলেন এবং আমার আদি মেন্টর। বিষয় হিসেবে কবি ও মানুষ স্বদেশ সেন'কে নিয়ে কিছু আলোচনা শুরু হয়েছে এখন। বাংলাকবিতা নিয়ে যাঁরা এই মূহুর্তে চর্চা করেন, স্বদেশ সেনের প্রাসঙ্গিকতা বাড়ছে তাঁদের কাছে। তাঁকে ও তাঁর কবিতা নিয়ে সামগ্রিকভবে কিছু পর্যালোচনা করার ইচ্ছে আমার বহুদিনের। নিশ্চয় লিখবো। তবে কতোদিনে, সেটা বলা মুশকিল.... :-)
  • Prativa Sarker | 233.191.18.225 (*) | ১০ জুলাই ২০১৬ ০৪:৩৩58243
  • সত্যি খুব ভালো লেখা। এত তথ্যসমৃদ্ধ। আর শুনতে শুনতে পড়া বা পড়তে পড়তে শোনা। একসাথে গেঁথে দিয়ে খুব উপকার করেছেন। বহুদিন ধরে পড়বো আর শুনবো।
  • শিবাংশু | 127.197.76.217 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৩:২৪58245
  • paps,
    অনেক ধন্যবাদ।
    বলা হয়, " নুখতে কি হেরফের সে খুদা সে জুদা হো গয়ে"। এখানেও সেই ভুলটা হয়েছে। 'হওয়াঁয়ে' সে 'দওয়াঁয়ে' হয়ে যাওয়া মারাত্মক ব্যাপার। ভুল ধরিয়ে দেওয়ার জন্য ডবল ধন্যবাদ।
  • paps | 125.187.32.27 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৪58246
  • হিবন্গ্শু দা,
    মেন্ট করার পর বুঝ্লাম কি ছ্ড়নোটাই ছড়িয়েছি। অনেক পরিশ্রম করেও গুরুচন্ডালি লে আউট থেকে 'হওয়াঁয়ে' টাইপ কর্তে পারিনি। অবশ্য খোদার উপর খোদ্কারি কোর্তে গেলে এরকম অভিশাপ লাগে। আমার এক টা অনুরোধ আছে আপ নার প্রতি। আমাদের মতো ইতর জন কে অলোকিত করার প্রয়াস নিয়ে এক টা রাগ-রাগিণী নিয়ে এরকম লেখা আপ নার কি বোর্ড থেকে মাঝে মাঝে বেরিয়ে আসুক। এমন্ত, বাহার, ইমন, ভীম্পলাশি, বেহাগ সবাই আসুক আস্তে আস্তে। আনেক ধন্যবাদ আপ নার এই অসাধারাণ আর প্রান্জল লেখাটির জন্য।
  • paps | 125.187.32.27 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৪:১৬58247
  • সরি, শিবাংশু দা পর্তে হবে।
  • শিবাংশু | 127.197.76.217 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৫:০৩58248
  • paps

    রাগ পিলু নিয়ে লেখাটা পড়েছিলেন কী?
  • paps | 125.187.50.62 (*) | ১৫ জুলাই ২০১৬ ০৫:৩৮58244
  • শিবাংশু বাবুর লেখা বরাবরের মতোই সুন্দর আর উপভোগ্য। এই সুতোয় যে গান এবং instrumental গুলোর লিংক আপনি দিয়েছেন সেগুলোর সবকটাই আমার শোনা। আমার বিশেষ ভালোলাগার জিনিস হলো পণ্ডিত শিবকুমার শর্মার বাজানো কিরওয়ানি। এটার একটা ডুয়েট ভার্শন-ও আছে যেটায় পণ্ডিত শর্মা এবং পণ্ডিত চৌরাসিয়া একসঙ্গে পারফর্ম করেছেন.।লিংকগুলো এখানে







    একটা কথা, মেহেদী হাসান এর গাওয়া গজল এর মুখরা তা বোধ হয় শোলা থা জল বুঝা হুঁ , hawayen মুঝে ন দো।
  • paps | 212.78.236.56 (*) | ১৬ জুলাই ২০১৬ ০৪:১২58249
  • শিবাংশু দা,
    হ্যাঁ, পিলু নিয়ে লেখটা আগেই পড়েছিলাম। পিলু আমার অন্যতম প্রিয় রাগিণী।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে মতামত দিন