বৈজ্ঞানিকদের পুর্ব-লব্ধ জ্ঞান এক্ষেত্রে বিশেষ কাজে লেগেছে। সেগুলো হল – (১) করোনা ভাইরাসের দেহের স্পাইক প্রোটিনের ভূমিকা সম্বন্ধে আগাম ধারণা থাকা, (২) ইমিউনিটির ক্ষেত্রে স্পাইক প্রোটিন প্রতিরোধের ক্ষেত্রে “নিউট্রালাইজিং অ্যান্টিবডি”-র ভূমিকা, (৩) নিউক্লিক অ্যাসিড (যেমন আরএনএ বা ডিএনএ) ভ্যাক্সিন প্ল্যাটফর্মের উন্নত চেহারায় বিবর্তন এবং (৪) ভ্যাক্সিন তৈরির প্রক্রিয়াকে ধাপে ধাপে (sequentially) করার পরিবর্তে সমান্তরাল ভাবে (parallel) করা, কিন্তু যারা ভ্যাক্সিন স্টাডিতে অংশগ্রহণ করেছে তাদের ক্ষেত্রে কোন ঝুঁকি না নিয়ে। পূর্বোল্লেখিত সম্পাদকীয়তে বলা হয়েছে – “কার্যকারিতা কেবলমাত্র তখনই নির্ধারণ করা যাবে যখন যাদেরকে ভ্যাক্সিন দেওয়া হয়েছে এবং অতিমারির হটস্পটের মধ্যে তুল্যমূল্য বিচার (match) করা যায় ... এজন্য প্রাথমিক এন্ড পয়েন্টগুলোকে সতর্কতার সাথে নির্বাচন করতে হবে (এ বিষয়ে এর আগে বিস্তারিত আলোচনা করেছি), নির্বাচন করতে হবে স্টাডি-ডিজাইন এবং স্যাম্পেল সাইজের (অর্থাৎ কতজনের ওপরে ট্রায়াল দেওয়া হবে) সম্ভাব্যতার পুনর্মূল্যায়ন বিবেচনায় রাখতে হবে।” ... ...
যাঁরা কোলকাতায় ক্লাসে বসে ছাত্রছাত্রীর কাছে শিক্ষাতত্ত্ব (education theory) পরিবেশন করছেন আর যে মানুষটি রোজ ভোর চারটের সময় ঘুম থেকে উঠে তিনঘণ্টা দৌড়ে স্কুলে পৌঁছে একটা ছোটো বাচ্চার ভবিষ্যৎ গড়ার লক্ষ্যে সাধনা করছেন তাঁদের দর্শন এবং মতামত কিন্তু আলাদা। ভাগ্যবশত দু-বছর আগে পশ্চিমবঙ্গের কিছু জেলার বহু শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে মতামত আদানপ্রদানের সুযোগ পেয়েছিলাম, সীমিত সুবিধা, সীমিত সংস্থান, সীমিত অর্থ সংস্থানের মধ্যেই, প্রত্যহ অনেক চ্যালেঞ্জের সঙ্গে লড়াই করেই তাঁদের অপ্রতিহত যাত্রা এবং সাফল্য। সেখানে পরিষ্কার হয়ে উঠেছিল যে নতুন শিক্ষাব্যবস্থা ও উন্নত পরিকাঠামো অবশ্য প্রয়োজন। শিক্ষক-শিক্ষিকার সঙ্গে আমার আলোচনার একটা বড়ো অংশ জুড়েছিল, ‘Authentic learning'-এর প্রসঙ্গ, এই প্রক্রিয়ায় স্কুলে শ্রেণিকক্ষে এবং শ্রেণিকক্ষের বাইরে inquiry based learning, project based learning কীভাবে প্রয়োগ করা যায়? ... ...
করোনা আবহে স্কুল বন্ধ।বাড়িতে বন্দী শিক্ষার্থীরা। নিষেধের বেড়াজালে তাদের প্রাণ হাফিয়ে উঠেছে।বন্ধুর সঙ্গে সামনাসামনি দেখা করার সুযোগ নেই।আড্ডা, মজা,দুষ্টুমি সব অতীত। কতদিনে শেষ হবে অতিমারির প্রকোপ তা তাদের আজানা।বড়োরাও কোনো দিশা দিতে পারছে না।কোনো পরিকল্পনা করে ওঠা সম্ভব হচ্ছে না।পড়াশোনা নিয়ে ঘোরতর অনিশ্চয়তা। বেসরকারি স্কুলের সম্পন্ন ছাত্রদের অনলাইনে ক্লাস চলছে। সেখানে অনিচ্ছা থাকলেও "অন "হতে হচ্ছে দিনের মধ্যে একাধিক বার। চলছে পড়াশোনার ঝকমারি। লেখাপড়ার হদ্দ মুদ্দ। সোনার খাঁচায় বন্দি করে ইন্টানেটের ডগা দিয়ে শিশুর মুখে ঢুসে দেওয়া হচ্ছে শিক্ষা। ... ...
২০১৯ ছিল কবি ও গদ্যকার সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষ। সেই উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ— দুই বাংলা থেকে প্রকাশিত হয় দুটি স্মারক-গ্রন্থ। এবারের প্রথমপাঠ বিভাগে আলোচিত হল দুটি গ্রন্থই। ... ...
২০১৯ ছিল কবি ও গদ্যকার সুভাষ মুখোপাধ্যায়ের জন্মশতবর্ষ। সেই উপলক্ষে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশ— দুই বাংলা থেকে প্রকাশিত হয় দুটি স্মারক-গ্রন্থ। এবারের প্রথমপাঠ বিভাগে আলোচিত হল দুটি গ্রন্থই। ... ...
অজিত কৌর। আধুনিক পাঞ্জাবি সাহিত্যের উজ্জ্বলতম নক্ষত্রদের একজন। সাহিত্য অকাদেমি পুরস্কার সহ বহু সম্মানে ভূষিত। ভারতীয় উপমহাদেশের নারীলেখক বিশ্বে ঘরহীন নারীর আত্মকথার পরিপুষ্ট ধারায় আরও একটি খরস্রোতা ধারা যুক্ত করেছেন দুটি গ্রন্থে বিস্তৃত তাঁর আত্মকথা—‘খানা বাদোশ’ ও ‘কড়া-কাবাড়া’, জয়া মিত্র ও পুষ্পা মিশ্র-র করা বাংলা তরজমায়—‘জিপসি নদীর ধারা’ এবং ‘আবর্জনা’। পড়লেন লেখক তৃষ্ণা বসাক। ... ...
খোর্খে ভোলপি। মেক্সিকোর বিখ্যাত লেখক—ঔপন্যাসিক ও প্রাবন্ধিক। বয়স মাত্র বাহান্ন, এর মধ্যেই লিখেছেন ৭৪টি বই। বহু সাহিত্যসম্মানে ভূষিত এবং পাঠকমহলে অত্যন্ত জনপ্রিয়। তাঁর বিপুল সাহিত্যসৃষ্টির মধ্যে বিশেষ উল্লেখযোগ্য উপন্যাসত্রয়ী—‘ইন সার্চ অফ ক্লিংসর’, ‘দ্য এন্ড অফ ম্যাডনেস’ এবং ‘সিজন অফ অ্যাশ’। মূল স্প্যানিশে পড়লেন স্প্যানিশ ভাষার শিক্ষক ও তরজমাকার জয়া চৌধুরী। ... ...
সপ্তগ্রাম। বঙ্গের প্রাচীন তীর্থভূমি ও মধ্যযুগের গমগমে বন্দর-শহর। এই এলাকার উপর আধিপত্য বজায় রাখতে বিভিন্ন যুগে লড়াই বেধেছে বিভিন্ন জনগোষ্ঠীর মধ্যে। সে অঞ্চলের ইতিহাস, সংস্কৃতি নিয়ে আরও একটি নতুন বই প্রকাশিত হল সম্প্রতি। পাঠ করলেন আঞ্চলিক ইতিহাস ও লোকসংস্কৃতির গবেষক রামামৃত সিংহ মহাপাত্র। ... ...
এই শিশুরা এখানে কেন? এদের সে এখানে আশাই করেনি। কিন্তু শিশুদের উপস্থিতি তার ভালোলাগল। শিশুরা থাকলে সে সবসময়ই নিরাপদ বোধ করে। মা আর বুড়ো অভিনেতা থাকলেও। মঞ্চে অভিনয় করার সময় এবং অভিনয় নিয়ে বইপত্র ঘাঁটার সময়ও সে একইভাবে নিরাপদ ভাবে নিজেকে। কিন্তু বাকি প্রতিটি মুহূর্তে কেমন একটা নিরাপত্তাহীনতার অনুভূতি হতে থাকে তার। সে কিছুতেই স্বস্তি বোধ করে না। কিছুতেই নিজেকে বয়স্ক লোকেদের একজন ভাবতে পারে না। বিশেষ করে শক্তি ও ক্ষমতার সামনে কেমন যেন গুটিয়ে যায়। এখনও গুটিয়েই ছিল। কিন্তু শিশুদের উপস্থিতি সমস্ত জড়তা থেকে মুক্তি দিয়ে স্বচ্ছন্দ ও সাবলীল করে তুলছিল তাকে। ... ...
এই পরিস্থিতির সাথে আমি আগেও পরিচিত। আমাদের আর একজন গৃহ সহায়িকা অঞ্জুদিকে পাশের পাড়ার এক বাড়িতে বলেছিল, 'তুমি ডাক্তারবাবুর বাড়িতে কাজ করো। ডাক্তারবাবু রোজ জ্বরের রোগী দেখছেন। ওই বাড়িতে কাজ না ছাড়লে আমাদের বাড়ি আর কাজ করতে পারবে না।' অঞ্জুদি আমাকে হেসে বলেছিলেন, 'বললুম, আপনাদের কাজটাই তাহলে ছেড়ে দিই। তবে আপনারা জ্বর হলে কোথায় যাবেন? ডাক্তার কি দেখাবেন না?’ ... ...
পবিত্র পরিচয় করিয়ে দিলো, এই আমিনুলদা, বিপ্লবের ভার বহন করতে করতে চিঁড়ে-চ্যাপ্টা হওয়ার যোগাড়; আর উজ্জয়িনী, উজ্জয়িনী ভৌমিক, এত বড় নামটা এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে, সাবজেক্টিভ আর অবজেক্টিভ কণ্ডিশন মিলে গেলেই ওজনদার নামটা ত্যাগ করে বিপ্লবকে নিয়ে নেবে মাথায়। আমিনুলদা, আমাদের নতুন কমরেড সোমেশ্বর, সোম বলে ডাকতে পারো, ফাটাফাটি কবিতা লেখে। লাল-টালের ছিটে আছে, রক্তপাতও ঘটাচ্ছে একটু একটু, আর এই ওর বন্ধু স্বরাজ। একে একে বিভিন্ন কলেজের কিছু কিছু ছেলেমেয়ে আসতে শুরু করলো, আড্ডা শুরু হলো, একটু-আধটু কবিতা, গান, আর তার পরেই জোর তর্ক। এ তর্কে যোগ দিতে পারলো না সোমেশ্বর, বিষয়টা প্রায় অজানাই ওর। তেনালী নামের কোন একটা জায়গায় কম্যুনিস্ট পার্টির লোকজনরা কিছু একটা মীটিং করেছে, সেই মীটিং নিয়েই তর্ক। ... ...
ঠাকুমা তাড়াহুড়ো করে উনুনে নিরামিষ কড়াই বসায়। তাতে সর্ষের তেল, আর কালোজিরা ফোড়ন। এরপর সবগুলো শিম পড়ে কড়াইয়ে। হলুদ আর লবণ সেই কচি শিমে পড়তেই তাদের রঙগুলো আরোও সবুজ হয়ে ওঠে। এরপর লম্বা ফালি করে রাখা আলুও ঢেলে দেয় ঠাকুমা কড়াইয়ে। অল্প সময় ঢেকে ঢেকে সেই শিম আর আলু মজায় ঠাকুমা। শিম আর আলুগুলো মজে আসতেই চন্দনের মতো মিহি করে বাটা সর্ষে আর কাঁচামরিচ বাটা পড়ে তাতে। এরপর একটু সেই সর্ষে বাটার বাটি ধোয়া জল। ... ...
সবে দোকানের ঝাঁপ খুলেছি। ঝিলমিল ঝিলমিল প্রজাপতি রোদ্দুর মিছিল করে দোকানে ঢুকে পড়ল আমার কফির দোকানে। আমিই মালিক আমিই বারিস্তা। আমার তো পুঁজি খুব কম। ছোট্ট দোকান। তবে জায়গাটা এক্কেবারে মোড়ের মাথায়। মোড়ের মাথা মানে চারদিক থেকে ঢালু পাথর বাঁধানো রাস্তা উঠে এসে এখানে মিলেছে। একটা দামাল ঝামড়া বেদানা গাছ। তার ঠিক পাশটায়। সেদিক থেকে মোটামুটি জমজমাট। এখন সবে ঠান্ডা পড়তে শুরু করেছে। আমি কফির মেশিন গুছিয়ে রাখছি। ক্যাকটাসগুলো জানালার কাছে রেখে দিচ্ছি। বোগেনভিলিয়া লালে লাল হয়ে আছে আমার দোকানের কাচের দরজার ওপর। আমি হাট করে দরজা খুলে রেখেছি। রোদ মেখে ফুলের একটা লালচে রং আমার লালসাদা চেক চেক কফিটেবিলের নকশা বুনছে। আন্দালুসিয়ার সেভিয়াতে বরাত জোরে একটু দোকানের ব্যবস্থা হয়ে গেল কোনোমতে। সে আর-এক গপ্প। পরে বলবখন। ... ...
আমরা, পাড়ার বন্ধুরা বেনারস গিয়েছিলাম চুয়াত্তর সালে। প্রায় এগারোজন। ফেরার সময় টাকাপয়সা শেষ। মোগলসরাই থেকে হাওড়া - দিল্লি জনতা এক্সপ্রেসের জেনারেল কামরায় ফিরছি। মোগলসরাই পেরিয়েই এক মোষ কাটা পড়লো ট্রেনে। ট্রেন আর চলেই না। জল ফুরিয়ে গেছে। প্রচন্ড গরম। কামরাটা ফুটছে গরমে। গার্ডসাহেব বললেন ঘন্টা দুয়েকের আগে ছাড়বেনা ট্রেন। আমাদের বললেন - মাঠ পেরিয়ে সামনের গ্রামে চলে যান। জল পেয়ে যাবেন। গাড়ি ছাড়বেনা। নিশ্চিন্তে যান।আমরা তো চললামই। আমাদের সংগে আরো জনা পঞ্চাশ লোক। সবার হাতে ওয়াটার বটল। ... ...
ফের অন্যায় হল সুদর্শনের সাথে। বিস্মিত পদার্থবিজ্ঞান মহল। সুদর্শন নোবেল না পাওয়ায় ক্ষুব্ধ হলেন অনেকেই। স্থির হল প্রতিবাদপত্র পাঠানো হবে নোবেল কমিটিকে। সেই মতো লেখা হল এক চিঠি। চিঠিতে লেখা হল, “আমরা সবিনয়ে জানাতে চাই... সুদর্শনের আলোর কোয়ান্টাম তত্ত্বের মৌলিক অবদানের প্রতি উদাসীন থেকে ন্যায়ের জন্ম দিতে ব্যর্থ হয়েছে” কমিটি। ১০ জন (মূলত ভারতীয়) পদার্থবিদের সই সম্বলিত এই পত্র পাঠানো হয় নোবেল দফতরে। প্রতিবাদ জানিয়ে নোবেল দফতরে পত্র লেখেন সুদর্শনও। লিখলেন, “এই বছরের ঘোষণায় আমি প্রকৃত অর্থেই বিস্মিত এবং হতাশ।” ... ...
হিলগার্ড আর ওয়াইৎসেনহফার তৈরি করেন স্ট্যানফোর্ড হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি স্কেল। তাঁরা দেখেন মোটের ওপর ৮-১০% জনতা আছে, যারা হাইলি হিপনোটাইজেবল। ৮৪-৮৮% মডারেট আর ৪-৬% লো। ওই হাই এবং কিছু মডারেট লোকের মধ্যেই সেই বৈশিষ্ট্যাবলী আছে যাতে তারা খুব সহজে হিপনোটাইজড হতে পারে, এবং তাদের ক্ষেত্রেই হিপনোসিস খুব কার্যকরী চিকিৎসাপদ্ধতি হতে পারে কিছু কিছু রোগের জন্য। তাঁরা আরো দেখলেন যে এই বৈশিষ্ট্যগুলোও স্ট্যাটিক না, বয়সের সাথে একটু আধটু পাল্টায়। সাধারণত ৯-১২ বছর বয়সের জনতা যারা বেশি কল্পনাপ্রবণ, ফ্যান্টাসিতে থাকে, এবং যাদের কনক্রিট অপারেশনাল থিঙ্কিং তৈরি হচ্ছে, তারা বেস্ট ক্যান্ডিডেট। মজার ব্যাপার, সাময়িকভাবে এলেসডি বা এমডিএমএ জাতীয় ড্রাগ বা সেনসরি ডিপ্রাইভেশন কিছুক্ষণের জন্য এই হিপনোটাইজেবিলিটি বাড়িয়ে দিতে পারে, যদিও সেটা বেশিক্ষণ টেকে না। আর হ্যাঁ, কোন ধরনের লোক সহজে হিপনোটাইজড হবে আন্দাজ করার কোনো নিখুঁত রুল অব থাম্ব নেই, মোটামুটি মনোসংযোগদক্ষতা, একাগ্রতা, কল্পনাপ্রবণ ও অনুভূতিপ্রবণ মানুষের সম্ভাবনা বেশি থাকে। আমার সামনের লোকটি হাই হিপনোটাইজার কি না, তা বোঝার স্কেল থাকে, এবং সাধারণত তা বোঝার পর হাই জনতাদেরই হিপনোসিস অফার করা হয় চিকিৎসার ক্ষেত্রে। পাতি লক্ষ্মণবিচার আর কি। সেইসব টেল টেল সাইন দেখে বোঝার চেষ্টা করা হয় সামনের ইনি সেই গিফটেড ৮% এর মধ্যে পড়েন কিনা। মার্কিনীরা সেইসব লিস্টির গালভরা নাম দিয়েছে - "হিপনোসিস ইন্ডাকশন প্রোফাইল", " স্ট্যানফোর্ড হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি স্কেল", "হার্ভার্ড গ্রুপ স্কেল অব হিপনোটিক সাসেপটিবিলিটি", "বারবার সাজেস্টিবিলিটি স্কেল" ইত্যাকার। এর মধ্যে ঐ হিপনোসিস ইন্ডাকশন প্রোফাইলটায় তো মাথার ওপর দিকে তাকাতে বলে চোখে স্ক্লেরার ভিজিবিলিটি দেখেই কিসব বোঝা যায় বলে দাবী করে। আর তার মেডিক্যাল ব্যাখ্যাওয়ালা হাইপোথিসিস রয়েছে গুটিকয়, যদিও এভিডেন্স বেসড নয়। সবার ওপরে, যিনি করবেন, তাঁর মানুষ চেনার এতদিনের অভিজ্ঞতা। ... ...
মা যে হল ঘরে ছিলেন, তার এ মাথা থেকে ও মাথা এত দূর যে শেষ অব্দি মা'র চোখ পৌঁছাতো না। সারাদিন লাঠি দিয়ে ঘর আর বাথরুম মোছা হতো। নার্সদের ব্যস্ততার কোনো সীমা ছিল না। সকাল থেকে রাত তাঁরা এ রোগী থেকে ও রোগীর মাথার কাছে ছুটে বেড়াচ্ছেন।হাগিজ পাল্টে দেওয়া, পরপর ঘড়ি ধরে ওষুধ খাওয়ানো, ইনজেকশন দেওয়া, অনেককে খাইয়েও দিতে হতো। দুপুরে বাড়ির লোকদের সাথে ভিডিও কলে দেখা করিয়ে দিতেন তাঁরাই। সারারাত তাঁরা কেউ না কেউ হলঘরে পায়চারি করতেন। মা'র হাসপাতালে থাকাকালীন ওই ওয়ার্ডে একজনেরও মৃত্যু হয়নি। খান দশেক বেড ফাঁকা ছিল বেশ কিছুদিন। ... ...
নিউমার্কেট এবং কলকাতা কর্পোরেশনের নিকটেই রক্সি সিনেমা হলটা নিশ্চয় অনেকেই চেনেন। ওর সামনে দিয়ে কতোবার হেঁটে গেছেন অতীতে,যেখানে ওই সিনেমা হলটার উলটোদিকের ফুটপাতে সাব্বির ব্যাগওয়ালা বসতো নানানরকমের জুটের এবং কাপড়ের ব্যাগ নিয়ে! মনে আছে? যেটাতেই হাত দিতেন, ঝাঁকড়াচুলো সাব্বির বলতো "ওনলি থ্রি হান্ড্রেড।" ওই রক্সি সিনেমা হলটা এখন কলকাতা কর্পোরেশনের স্থায়ী কোভিড টেস্টের সেন্টার। দারুণ ব্যবস্থা। পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন। প্রত্যেক কর্মীই ভীষণ সহানুভূতি সহকারে এবং সুশৃঙ্খলভাবে নিজের নিজের কাজ করে যাচ্ছেন। অনেকে এই সেন্টারটার কথা জানেন না বলে গিজগিজে ভীড় নেই। আর সবচেয়ে বড়ো কথা ওই বড়ো বড়ো ঘরগুলোর কোথাও কোনো মন খারাপের ছায়া বা বিষণ্ণতা লুকিয়ে নেই। যাঁর কোভিড পজিটিভ ধরা পড়বে, তিনি ওখান থেকে ভয় নিয়ে বেরোবেন না। তাঁর মনে হবে কোয়ারেন্টিনে থাকলেই সুস্থ হয়ে যাবো। আর হবেনও তাই। উচ্চবিত্তরাও কিন্তু নিশ্চিন্তে যেতে পারেন। পুরসভা,সরকারি,ঘিনঘিনে, গন্ধ,জানোয়ারের মতো ব্যবহার, ছোটলোকদের জায়গা...ওখানে গিয়ে দাঁড়ালে এসব কথা মনেই হবে না। ছুটি এবং লকডাউনের দিন ছাড়া বাকি সব দিন খোলা। ... ...
সুদর্শন-মারশাকের এই লেখা প্রকাশের পর থেকেই শুরু হল এক নতুন বিতর্ক। আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় অনেকেই ততদিনে এই V-A তত্ত্বকে ফাইনম্যান-জেল-ম্যান তত্ত্ব হিসবেই দেখতে শুরু করেছেন। অনেকেই আবার এটাকে সুদর্শন-মারশাক তত্ত্ব হিসেবেই জানেন। প্রশ্ন দাঁড়াল, V-A তত্ত্বের প্রকৃত জনক কে? সুদর্শন-মারশাক না ফাইনম্যান-জেল-ম্যান? পদার্থবিজ্ঞান মহল দ্বিধাবিভক্ত। যতদিন যায় বিতর্ক ততই বেড়ে চলে। যদিও ততদিনে প্রত্যেকেই নিজেদের অন্যান্য গবেষণায় মনোনিবেশ করেছেন তাঁরা প্রত্যেকেই। কিন্তু তবুও ধিকি ধিকি করে বহু দিন ধরে জিইয়ে রইল এই বিতর্ক। বিতর্ক কিছুতেই পিছু ছাড়ছে না দেখে ৫ বছর পর, ১৯৬৩ সালে, এক প্রকাশ্য বিবৃতিতে ফাইনম্যান জানান, “V-A তত্ত্বের জনক সুদর্শন-মারশাক। আমি আর জেল-ম্যান তা প্রকাশ করেছি মাত্র”। ... ...
ভ্যান্ডারলুস্ট। আর কোনো শব্দে ব্যাখ্যা করা যাবে না এ কাণ্ড। ১৯৭৫। বাঁকুড়ার ছোট্ট মফস্সল শহর বিষ্ণুপুর থেকে বেরিয়ে পড়লেন তিন তরুণ। দুনিয়া ঘুরে দেখতে হবে। সাইকেলে। ইন্টারনেট নেই। জিপিএস নেই। অর্থবল নেই। মাতৃভাষা বাংলা বই দুটি ভাষা জানা নেই। সম্বল স্রেফ স্বপ্ন। আর জেদ। হাল ছাড়লেন দুজন। কুছ পরোয়া নেহি। ঘুরতে থাকল তৃতীয়জনের সাইকেলের চাকা। ১৭ বছর। ৩ লক্ষ ৮৪ হাজার কিলোমিটার। ১৫৪টি দেশ। আজও এ কীর্তিতে তিনি অদ্বিতীয়। এ সফরনামা শুধু রুদ্ধশ্বাস নানা ঘটনার ভিড় নয়, নানা ভাষা, নানা মত, নানা পরিধানের মানুষের সঙ্গে একাত্ম হয়ে যাওয়া এক মুসাফিরের অনন্য জীবনবীক্ষা। এই প্রথম দীর্ঘ সাক্ষাৎকারে সে পরমাশ্চর্য সফরের অনুপুঙ্খ কাহিনি শোনাচ্ছেন জয় মণ্ডল। আলাপে নীলাঞ্জন হাজরা। ... ...