২৯শে সেপ্টেম্বর, ২০২৩ -- নিজের চোখে যা দেখলাম। আমেরিকা ডুবে যাচ্ছে, আক্ষরিকভাবে। ... ...
সেবার দুর্গাষষ্ঠীর দিনটা বেশ কাটলো আমার। বিনা পয়সায় ভার্চুয়ালি করে এলাম দক্ষিণ আমেরিকার Transoceanica হাইওয়ে ধরে ৬৩০০ কিমির - ছদিনের - বিশ্বের দীর্ঘতম বাসযাত্রা। তা শুরু হয়েছিল পূবে অতলান্তিক উপকূলে ব্রাজিলের রাজধানী রিও ডি জেনেরিও থেকে। দক্ষিণ আমেরিকার পেট চিরে - আমাজন বর্ষাবন পেরিয়ে - বিশ্বের দীর্ঘতম (৭৩০০ কিমি) আন্দিজ পর্বতমালার ১৫'৫০০ ফুট উচ্চতার একটি হাই-পাস টপকে সেই এপিক বাসযাত্রা শেষ হোলো পশ্চিমে প্রশান্ত মহাসাগরের উপকূলে পেরুর রাজধানী লিমায়। সেই অনবদ্য অভিজ্ঞতার অভিঘাত বর্ণনার আগে প্রাককথন হিসেবে হ্যাজটা একটু বেশীই হয়ে গেল। বুড়ো বয়সে বাজে বকা রোগ আরকি। ... ...
বিকেল আসে এমনি করেই রোজকার মত নীল আকাশ নিভিয়ে জমির ওধারে ঢুবে যাবে চাঁদ হয়ত বা বাড়ি ফিরতে হবে হয়ত বা বাড়ি ফেরার পালা দেখবে সারি সারি ... ...
টুকটাক ... ...
এপাং ওপাং ঝপাং ... ...
"ওমা তাইতো! সাড়ে তিনটে বেজে গেছে। চল চল আমরা ছুটে যাই রাস্তা অবধি" বলে রাজু বিস্তৃত মাঠের ওপর দিয়ে ছুটতে শুরু করলো। দীর্ঘাঙ্গী হেমাঙ্গিনীও আঁচলটা কোমরে গুঁজে ভাইয়ের পিছনে ছোটে। সরমার দেওয়া কমলা কোটা শাড়ির সরু সুতোর মিহি বুনোনে অনেক চৌখুপিতে সৃষ্টি হয়েছে মায়াবী স্বচ্ছতা। হাতে চটি নিয়ে সবুজ ঘাসে ফরসা পা ফেলে ছুটন্ত হেমার সতেজ শরীরের আভা যেন ঐ শাড়ির অসংখ্য জালি বাতায়ন দিয়ে ফুটে বেরুচ্ছে। ছড়িয়ে পড়ছে চরাচরে। সে এক স্বর্গীয় দৃশ্য! ... ...
ফলে মন্নুকে, যার গেঞ্জিতে কাপড়ের চেয়ে ছেঁড়া ছিদ্রের সংখ্যা বেশী, কচি শীর্ণ মুখে বসন্তের ছিট্, সংসারের দায়িত্ব কাঁধে তুলে নিতে হয়, এমনকি নেশাখোর বাপের হাতে নেশার টাকাও তুলে দিতে হয়। খুব চেনা গল্প, এখনো প্রযোজ্য আমাদের সমাজের জন্য, মন্নুর ‘হেই মোড়ে’ সংলাপটা থেকে পাঠক তার পূর্ববঙ্গীয় ভাষার সাথেও একাত্মতা অনুভব করে, গল্পটার এত বছর পরেও। কিন্তু এই চেনা গল্পের মধ্য দিয়েই জ্যোতিরিন্দ্র ঘুরিয়ে আনেন আমাদের অনেক অচেনা শহর, বন্দর, ঘাট। গল্পটির শুরুতেই তার লক্ষণ টের পাওয়া যায়, যখন গল্পের উত্তম পুরুষ মন্নুকে প্রশ্ন করে, “ এত রাতে পালিশ কি রে?”, আর মন্নু উত্তর করে, “আচ্ছা ক’রে করে দেব, একদম আয়না মাফিক”, পাঠক টের পেতে শুরু করে, এক অদেখা আয়নার মুখোমুখি হতে চলেছে সে, সে আয়নায় জীবন ধরা দেবে বহুবিচিত্র রঙে, রূপে, রসে। ... ...
রামমোহন রায়ের বাড়ির অনুষ্ঠানেই ভারতবিখ্যাত নিকি বাইজি এসেছিলেন, ফ্যানি তাঁর পোশাকেরও বর্ণনা দিয়েছেন। সাটিনের পোশাক (শাড়ি নয়), সঙ্গে পাজামা। এবং সঙ্গে মাতাল করা নাচ। সে নাচ নাকি এতই উদ্দীপক, যে, বিলিতি মহিলারাও ওই পোশাক পরে নিজেদের জমায়েতে ওই নাচ নাচার চেষ্টা করতেন। এবং গরমের দেশে গলদঘর্ম হয়ে, কেউ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়তেন। এতই গুরুতর বিষয় হয়ে গিয়েছিল, যে, এই পোশাক পরতে বারণ করে একটি নোটিসও জারি হয়েছিল। ... ...
জীবন যেদিকে নিয়ে যায় ... ...
মিসেস হুইলার হয়ত একটা নো ম্যান্স ল্যান্ডে বসবাস করতেন। ধর্মের কারণে তাঁকে হিন্দু সমাজ আপন করে নেয়নি। কৃষ্ণমোহন নিজের প্রতিভায় নিজেকে বাইরের জগতে প্রতিষ্ঠিত করেছেন। তবে সাধারণ দেশী পাদ্রীরা কিন্তু সে আমলে বেশ ডিসক্রিমিনেশনের মুখোমুখি হতেন। অর্থ খুবই কম হওয়ায় বিক্ষুব্ধ হয়ে তাঁরা চিঠি চাপাটিও লিখতেন, এই চার্চ ছেড়ে অন্য চার্চেও চলে যেতেন। সেটা একটা দিক। কিন্তু তাঁদের বাড়ির মেয়েদের জীবনের খোঁজ কেউ রেখেছিল কি? কতটা আইডেন্টিটি ক্রাইসিসে ভুগতেন তাঁরা? পরিণত বয়সের ধর্ম ত্যাগের আর সেই সঙ্গে জুড়ে যাওয়া চেনা পরিবেশ-সংস্কৃতি ত্যাগের বাধ্যতার ফল তাঁদের স্ত্রীদের জীবনে কিভাবে আসত? বা তাঁদের পুত্র-কন্যাদের জীবনে একজন পিতার সিদ্ধান্তের ঠিক কি প্রভাব পড়ত? জানা নেই, কারণ দেশি খ্রিস্টানদের স্ত্রীদের বা প্রথম প্রজন্মের ছেলে মেয়েদের কোন গভীর বিশদ আত্মজীবনী আমি হাতে পাইনি। যাই হোক মনোমোহিনীতে ফিরি । ... ...
- - - গ্ৰীণপ্লাই প্লাইউডের সেই ক্রিয়েটিভ কোর্টরুম এ্যাডের মতো - ৩৮ বছর ধরে জজ 'অর্ডার অর্ডার' করে টেবিলে হাতুড়ি ঠুকে গেলেন - মুজরিম জীবনদাস থেকে ভকিলসাব / ম্যাডাম - সবাই বুড়ো / বুড়ি হয়ে গেলেন - বিচারপতি বদলে গেলেন, কিন্তু হাতুড়ির বাড়ি খাওয়া বিচারকের গ্ৰীণপ্লাইয়ের টেবিল - 'চলতা রহে, চলতা রহে'। ... ...
গানটি কয়েকবার চোখ বুঁজেও শুনেছি। মনে তৈরি হয়েছে অপূর্ব সব দৃশ্যকল্প - যেন গভীর রাতে স্নিগ্ধ জোৎস্নায় এক বিস্তীর্ণ সরোবরের জলে ভেসে চলেছি এক ছোট্ট নৌকায়। মৃদুমন্দ হিমেল বাতাসে জুড়িয়ে যাচ্ছে শরীর, মন। মৃদু তরঙ্গায়িত জলতলে ভাসমান চন্দ্রিমা চুরচুরে। আদিগন্ত নিস্তব্ধ চরাচরের মৌনতা চিরে কচিৎ কখনো শোনা যায় কোনো রাতচরা পাখির ডাক। ... ...
একটি আবাসনের হোয়া গ্ৰুপের সভাপতির দৃষ্টিতে গুরতর এক বিষয়ে এক সদস্যের লঘু রম্যরচনা ... ...
ইরমের আড়ালে কা তব কান্তা কস্তে পুত্র - কাফি কান্ড আছে মেড়া জানে সূত্র। পাঠান বা জওয়ান - কেবল ফাইটিং, ওড়াউড়িং, ল্যান্ডিং, কামানিং, ট্রাকিং, হেলিকপ্টিং - নতুন আমদানি মেট্রো হাইজ্যাকিং। ... ...
"আ-আই হ্যাভ আ কোয়েরি।" মা তাকাল আমার দিকে। "তোমাদের… ডিভোর্স হল ফর দিস রিজন?” "মেনলি। একবার ওকে না বলে একটা এনজিওতে ডোনেট করেছিলাম বলেও প্রচুর ঝামেলা করেছিল।... আরও কিছু খুচরো প্রবলেম ছিল। তবে সে সব কম বেশি সব ফ্যামিলিতেই থাকে। তবে ওই… সব যোগ হয়ে ব্যাপারটা ক্রমশ পয়েন্ট অফ নো রিটার্নের দিকে চলে গেল। দুজনেই বুঝতে পারছিলাম কোনও টান আর নেই আমাদের মধ্যে। মিউচুয়াল ডিভোর্স হয়ে গেল। তুই তখন ছোট, ক্লাস ফাইভ, তাই আমিই তোকে পেলাম। তোকে আঁকড়েই বাঁচতে চেয়েছিলাম, কিন্ত…." ... ...
প্লেটের দিকে তাকিয়ে সেদিন সর্বপ্রথম যার মুখটা ভেসে উঠল তিনি আর কেউ নন আমাদের ক্লাশ ইলেভেনের বায়োলজি স্যারের। স্যারের বয়স হচ্ছিল, শরীর তেমন সাথ দিচ্ছিল না – তবুও তিনি আমাদের ফিল্ড ট্রিপে নিয়ে গিয়ে গাছ-পালা চেনাবার চেষ্টা করতেন। আমরা কিছুই শিখি নি – সেটা অন্য ব্যাপার, তাতে স্যারের দিক থেকে খামতি কিছু ছিল না। তো সেদিন প্লেটের দিকে তাকিয়ে আছি, আর মনে মনে ভাবছি এই প্লেট স্যার সামনে পেলে আর আমাদের কষ্ট করে বর্ধমানে রমনার পার্কে নিয়ে গিয়ে গাছপালা চেনাতে হত না! ক্লাসে বসেই যত অচেনা আর অখাদ্য শাক পাতার বিবরণ সহ পরিচিতি হয়ে যেত! ... ...
ফিটজেরাল্ড এর অনুবাদের সূত্র ধরে হরিবংশরায় বচ্চনের হিন্দি ভাষায় অনুবাদ করেন ‘খৈয়াম কি মধুশালা' ১৯৩৫ সালে। ওমর খৈয়ামের রুবাইটি হরিবংশরায় এর কলমে হল- “ঘণী সির পর তরুবর কি ভালো, হরি পাঁওকে নিচে ঘাস, বছর মে মধু মদিরা কা পাত্র, সামনে রোটি কা দো গ্রাস, সরস কবিতা কি পুস্তক হাত, আউর সবকে উপর তুম, প্রাণ, গা রহী ছেড় সুরিলি তান, মুঝে অব মরু নন্দন উদ্যান ।’’ ... ...