এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  রাজনীতি

  • কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়কে একটি খোলা চিঠি

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | রাজনীতি | ০৭ অক্টোবর ২০২২ | ৯৩৯ বার পঠিত | রেটিং ৪.৮ (৫ জন)
  • ফেসবুকে আপনার সর্বশেষ  পোস্টটি কিছু আগে পড়লাম, তার অন্তস্থ বার্তাটা খুব ভালো লাগল। তাই এই লেখা। অন্যভাবেও হয়তো বার্তাটা দেওয়া যেত, কিন্তু সবই খোলামেলা হচ্ছে, বক্তব্যও খোলাখুলিই থাক। 

    আপনার এর আগের পোস্টটাও ভালো লেগেছিল। বস্তুত রাসবিহারীতে সিপিআইএম এর বইয়ের স্টলে শাসক দলের আক্রমনের খবরটা সেখান থেকেই জানি। হ্যাঁ, আপনি 'শাসক দল' ই লিখেছিলেন। সঙ্গে আহ্বান করেছিলেন "যাঁরা বই লেখেন, পড়েন বা পাবলিস করেন তাঁদের এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়া উচিৎ নয় কী ? যাঁরা বামপন্থায় বিশ্বাস রাখেন বা বাম ঐক্যের কথা বলেন তাঁদের এই প্রতিবাদ সভায় অংশ নেওয়া প্রয়োজন নয় কী ? সংশ্লিষ্ট জনমাধ্যমের কর্মীদেরও কী আমরা পাশে পাবো না?"

    তা আমি বই লিখি, পড়ি, প্রকাশ করারও অংশ, গুরুচণ্ডালি নামক একটি সংস্থার সঙ্গে যুক্ত থাকার সুবাদে। কিন্তু কলকাতায় থাকিনা। ফলে সভা-টভায় যাওয়া সম্ভব না। এক্ষেত্রে যেটুকু পারি, সেটুকুই করি। একখানি লেখা লিখি, সেটা এখনও আমার ফেসবুকের দেয়ালেই আছে। আপনি আহ্বান করেছেন বলে একেবারেই না। করা উচিত মনে করেই করি। তাতে, যা হয় আর কি, 'শাসক দল'এর এই কাজের নিন্দে করি। একে বাক-স্বাধীনতার উপর আক্রমণ বলি। ইত্যাদি প্রভৃতি।

    অদ্ভুত ঘটনা ঘটে এরপর। 'শাসক দল'এর কোনো কর্মী বা সমর্থক নন, সিপিআইএমএর সমর্থকদের দিক থেকে আক্রমণ আসে। শোনা যায় 'তৃণমূল' না লিখে 'শাসক দল' লিখে খুব অপরাধ করে ফেলেছি। আপনিও তাইই লিখেছিলেন। বস্তুত স্পিরিটের দিক থেকে আমার লেখায় আলাদা কিছু ছিলনা। কিন্তু এই দোষে বোধহয় আপনি অভিযুক্ত হননি। 

    এটা একবারের অভিজ্ঞতা হলে ছুটকো ছাটকা বিষয় বলে উড়িয়ে দেওয়াই যেত। কিন্তু ব্যাপারটা ধারাবাহিক। যখনই শাসক দলের কিছু সমালোচনা করা হয়, সিপিআইএম এর অনলাইন কিছু কর্মী দেখি ঝাঁপিয়ে পড়েন তার বিরুদ্ধে। না, সবাই না, বেশিরভাগও না, দক্ষিণ কলকাতার একটি অংশের কিছু উগ্র কর্মীবৃন্দ। এটা বহু সময় দেখেছি। বগটুইএর ঘটনায় নিজে লিখে দেখেছি। জয় গোস্বামীর 'দগ্ধ' বইটি আমরা প্রকাশ করেছি, তখন দেখেছি। ব্যাপর দেখে মনে হচ্ছিল বগটুই না, পশ্চিমবঙ্গে আলোড়ন ফেলা নিন্দনীয় একটাই ঘটনা ঘটেছে, যার নাম দগ্ধ। এই সব আক্রমণেরই মূল উপজীব্য একটাই। পছন্দমতো কেন প্রতিবাদ হচ্ছেনা। কেন 'শাসক দল' লেখা হচ্ছে। কেন ঘটনা দেখে দুঃখ হচ্ছে, 'প্রতিবাদে গর্জে উঠুন' কেন বলা নেই। সারা জীবনে বহু জিনিসে প্রতিবাদ ইত্যাদি করেছি। কিন্তু এই অদ্ভুত জিনিস কখনও দেখিনি, যে, যাঁরা সর্বস্তরের মানুষের কাছে প্রতিবাদের আহ্বান করছেন, তাঁদেরই কর্মীবাহিনীর একাংশ সেটাকে বানচাল করে দিতে চাইছেন। এই ঔদ্ধত্য, কে কী বলবে, ঠিক করে দেবার মানসিকতা, কোথা থেকে আসে বলা মুশকিল। হয়তো একরকম অন্তর্ঘাতও হতে পারে। আমার জানা নেই। আবারও বলি, এটা কর্মীবাহিনীর খুবই ক্ষুদ্র একটা অংশ। মফস্বলের কর্মীদের মধ্যে আদৌ এ জিনিস দেখিনি, গোটা কলকাতা শহরের বৃহদাঞ্চলেও না। নেতৃত্বর মধ্যে তো দেখিইনি, মহম্মদ সেলিমও সেবার আপনার সুরেই যেকোনো লেখাকেই স্বাগত জানিয়েছিলেন।  কিন্তু একটি অংশ, যাঁরা আপনাদের পাশেই দাপিয়ে বেড়ায়, কে সদস্য, কে নয়, আমি জানিনা, তবে আপনাদের এই দুর্দিনেও আপনাদের লাইনকেই কাঁচকলা দেখিয়ে, সর্বত্র এই ঔদ্ধত্যের  প্রকাশ ঘটিয়ে চলেছে। বস্তুত আপনাদের পায়ে কুড়ুল মারছে। 

    আমি আমার ব্যক্তিগত অভিজ্ঞতার কথা বললাম, বহু মানুষই এই অভিজ্ঞতার শরীক। আপনারা স্বীকর করবেন কিনা জানিনা, এরা ভীষণভাবে বাস্তব, এদের একটা অনলাইন পরিচিতিও আছে, ট্রোল বাহিনী হিসেবে। এই বাহিনী আপনাদের উপকার করছে কিনা সেটা আপনারাই ভেবে দেখবেন। কিন্তু আমি এত কথা লিখলাম, একটাই কারণে, যে, আপনি যখন বাইরের লোকজনকে প্রতিবাদ করতে অনুরোধ বা আহ্বান করছেন, যখন লিখছেন, "তার মানেই তিনি ভিন্নমত প্রকাশ করেন বা তিনি শত্রু - তা কিন্তু নয়।  মনের দরজা খুলে রাখাই ভালো।  কখন কে কড়া নাড়ে। অহেতুক judgemental না হয়ে inclusive হওয়ার চেষ্টা করা যাক", তখন এই কথাগুলো সম্ভবত আপনার সঙ্গীসাথীদেরকেই আগে বুঝিয়ে বলা দরকার। নইলে এই আহ্বানের কোনো মানে থাকবেনা। 

    এটা ব্যক্তিগতভাবে  আমার কথা বলছিনা। আমি সিপিআইএম বা অন্য কোনো দলেরই কেউ না। আহ্বান-টাহ্বানের তোয়াক্কা করিনা, যখন যেটা বলা উচিত মনে করব, তাইই করেছি এবং করব। ইতিপূর্বে সিঙ্গুর নন্দীগ্রাম পর্বে আমি সিপিআইএমের লাইনের চূড়ান্ত বিরোধিতা করেছি। ২০২১ এর নির্বাচনের আগে সিপিআইএম এর রাজনৈতিক লাইনকে আত্মঘাতী মনে করেছি। সেটাও ভোট শেষ হবার আগে বলা উচিত নয় মনে করেছি বলে ভোটের পর লিখেছি। নোনাডাঙা বা হোককলরব পর্যায়ে তৃণমূল কংগ্রেসের বিরুদ্ধে দাঁড়িয়েছি। রাজ্যসরকারের শিক্ষানীতি সম্পূর্ণ ভুল পথে চালিত হচ্ছে মনে করি। ইত্যাদি প্রভৃতি। এর কোনোটা নিয়েই খোলাখুলি বলতে বা লিখতে আমার কখনও আটকায়নি। এর পরের দিনও যা মনে হবে, তাইই বলব। আহ্বান টাহ্বান ব্যতিরেকেই। সেটা আপনার পক্ষে যাবে, তারও কোনো গ্যারান্টি নেই। এই মতবিরোধটুকু আমি সুস্থ মনে করি। তবে একটা গ্যারান্টি দেওয়া যায়, যে,এই রাজ্যে আমি বামদের উত্থানও চাই। চাই, তৃণমূল-বাম এই মেরুকরণ তৈরি হোক এই রাজ্যে, বিজেপিকে উড়িয়ে দিয়ে। 

    তো, আমি ব্যক্তিগতভাবে অতি নগণ্য ব্যক্তি। কিন্তু আমিও সমাজের একটি অংশের প্রতিনিধিত্ব করি, যারা এইরকমই ভজকট। যারা দলীয় আনুগত্যকে অপছন্দ করে, যারা কখন কী করবে কিচ্ছু বোঝা যায়না। এই অংশের লোকজন কক্ষনো কাউকে সমর্থনের গ্যারান্টি দেবেনা। কিন্তু আপনাদের কর্মীবাহিনীর একাংশ যেচে তাদের শত্রু বানাবে কিনা, সেটা তাদেরই ঠিক করতে হবে। 

    এত কথা লিখলাম, কারণ, আপনার পোস্টটা আমার খুব ভালো লেগেছে। নমস্কার জানবেন। 

    সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায় 

    পুঃ একটা কথা বাদ পড়ে গেল, যে, এসব ঠিক হাওয়ায় বলছিনা। পুলিশ এবং আরেসেসের কর্মীদের হাতে রামঠ্যাঙানি আমাদের ছেলেমেয়েরাও খেয়েছে, ১৯এর নির্বাচনের আগে। বইমেলায়। আমরা মানে কোনো দল নয়, আমাদের সংস্থা, এবং নানা মতাদর্শের বিবিধ বন্ধুরা।  তাতে আমরাও প্রতিবাদ করেছি, যতটুকু পেরেছি, অন্যের পাশে দাঁড়িয়েছি। অন্যরাও যে চেয়েছেন পাশে দাঁড়িয়েছেন। কিন্তু যাঁরা পাশে দাঁড়াননি, এই যেমন, আপনারই কোনো বিবৃতি দেখিনি, তাতে করে তাঁরা আমার শত্রু হয়ে যাননি। "আমরা খুব রেগে গেছি", তাই অন্যদের আক্রমণও করতে যাইনি। এই সহিষ্ণুতাটুকু সাধারণ এবং ভজকট লোকজনের থাকে।

    সংযোজন- আমার পুরোনো ফেসবুকের পোস্টঃ
    রাসবিহারীতে সিপিএমএর বইয়ের স্টল ভেঙে দেওয়া হয়েছে দেখলাম। এ অতি বিপজ্জনক ব্যাপার। মানুষ মারার মতো ভীষণ না হলেও, এটা মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকে খুন, বা খুনের চেষ্টা। বিরোধীরা তো বিরোধিতা করবেই, নিজের মতাদর্শও প্রচার করবে। মাইক ফুঁকে করবে, লিখে করবে, বই বেচে করবে। রাজ্য সরকারের কী ভীষণ ভালো তো বলবেনা। ক্ষমতাসীনের পক্ষে ওসব ভালো-ভালো কথা বলতে কোনো স্বাধীনতা লাগেনা, ইয়েস স্যার বা ইয়েস ম্যাম বলতে কোনো অধিকারই প্রয়োগ করতে হয়না। উল্টো কথা, উল্টোপাল্টা কথা বলতে পারাটাই স্বাধীনতা। চোঙা ফুঁকে শাসকের পক্ষে অস্বস্তিকর কথা বলাটাই স্বাধীনতার মাপকাঠি। সেটা না করতে পারলে বাক-স্বাধীনতা মৃত। বহুস্বর খুন হয়ে গেছে অবেলায়। 
    বস্তুত পুজোর সঙ্গে মার্কসবাদী সাহিত্যের এই অদ্ভুত যোগাযোগ, এটাই নিজেই সেই বহুস্বরের প্রমাণ, যা দেখে আসছি শৈশব, কৈশোর-যৌবন হয়ে এখনও অবধি। আলাদা করে আর চোখে পড়েনা, কিন্তু কলকাতার পুজো যদি ইউনেস্কোর স্বীকৃতি পেয়ে থাকে, তো তার অংশ এটাও। জানিনা লাতিন আমেরিকার বামপন্থীরা চার্চের অনুষ্ঠানে মার্কসবাদী বই নিয়ে বসেন কিনা। বসলেও জানিনা। ভাবতে ভালো লাগে, এই আকালেও, এসব শুধু বাংলায় হয়। বাংলার এই আজব কার্নিভালে। যেখানে মাইকে বাজে মরণযাত্রার গান, ঢাক বাজে দ্রিমদ্রিম, পুজো হয় শাস্ত্র মেনে-টেনে, আর বই বেচেন নিরীশ্বরবাদীরা। ধর্ম-কর্ম না করেও একদা আমরা এভাবেই জড়িয়ে গেছি উৎসবে, বন্ধুবান্ধবরা এখনও স্টল দেয়। বহু কিছুই গেছে, এই আজব সহিষ্ণুতা টুকু যদি শাসকের দিক থেকে উঠিয়ে দেবার চেষ্টা হয়, তো তার প্রতিরোধ দরকার। 
    তার মানে অবশ্য এই নয়, যে, এ শুধু নস্টালজিয়ার চর্চা। বা কেবলমাত্র মার্কসবাদী বই বেচার ছক। বা বন্ধুকৃত্য। আমাকে ধ্রুপদী মার্কসবাদী বললে আমার বন্ধুরাই ঠাঠা হাসবে। বন্ধুকৃত্য বললেও। বস্তুত রাসবিহারির স্টলে যে ছেলেটি খানিক মার খেয়েছে শুনলাম, দীর্ঘদিনের পরিচিত সেই ছেলেটি গত বছর দুই, হঠাৎই বিশ্ববিপ্লবের স্বার্থে বা অন্য কোনো অদ্ভুত অজ্ঞাত কারণে, আমায় এবং গুরুকে শত্রু ঠাউরেছিলে, অকারণ বিষও উগরেছিল বিস্তর। সে কাসুন্দির জায়গা এটা নয়। পয়েন্টটা হল, বন্ধুকৃত্য বা মতাদর্শ বা নস্টালজিয়া কিচ্ছু না, এ হল অধিকারের কথা। আমাকে যদি কেউ গালও দেয়, আমি তারও বাক-স্বাধীনতার পক্ষে। কারণ সেটা তার অধিকার। এই অধিকারটাও আমাদের অর্জন। আমি এই অধিকারের পক্ষে। আমি পুজোর ঐতিহ্যের পক্ষে। আমি বহুস্বরের পক্ষে। 'লড়ছি-লড়ব' বললে ভালো হত। কিন্তু আমি চাল্লাইন লেখার বেশি কিছু করবনা। অন্য কেউ কিছু করলে অবশ্যই, একটু আধটু পাশে থাকব।    

    কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়ের পুরোনো পোস্টঃ
    জানি আজ অষ্টমী - আনন্দের দিন।  তবু, এই আবেদন জানাতে বাধ্য হচ্ছি।  সহমত হলে এই বক্তব্য ছড়িয়ে দিতে বিশেষ অনুরোধ করছি।   
    শুভদীপ গাঙ্গুলী রাসবিহারী অঞ্চলে বসবাসকারী জনৈক বামপন্থী মানুষ - অঞ্চলের সমাজকর্মী এবং নিজস্ব পড়াশোনা নিয়ে ব্যস্ত থাকা একজন নির্বিরোধী লোক । শুভদীপ মূলত বাংলা ও বিশ্ব সাহিত্যের একনিষ্ট পাঠক।  লেখালিখির কাজ করে শুভদীপ। কাল সন্ধ্যেয় শুভদীপ আক্রান্ত হলেন।        
    সপ্তমীর দিন সন্ধ্যেয় (গতকাল) রাসবিহারীতে ভারতের মার্ক্সবাদী কমিউনিস্ট পার্টি আয়োজিত বইয়ের স্টলে শুভদীপ ও তাঁর অগ্রজসম রানাদা বসেছিলেন। সেই সময় অঞ্চলের শাসক দল  আশ্রিত দুই দুষ্কৃতী (সান্টু ও গদাইয়ের নেতৃত্বে কয়েকজন সমাজবিরোধী এসে রাসবিহারীর সেই বইয়ের স্টল আক্রমণ করে, বইয়ের স্টল ভেঙে দেয় ও শুভদীপ ও রানাদাকে মারধর করে। গোটা ঘটনাটাই কর্মরত পুলিশের চোখের সামনেই ঘটে এবং পুলিশ নির্বিকার মুখে দাঁড়িয়ে ঘটনাটা দেখে। সংলগ্ন কালীঘাট অঞ্চলের কমরেডরা এসে শুভদীপ ও রানাদাকে বাঁচান এবং পরিস্থিতি সামাল দেন - যদিও তাঁরা যথেষ্ট আহত।      
    নিয়মানুগ ভাবে, ঘটনার পরে, এই আক্রমণের কথা বিবৃত করে টালিগঞ্জে থানায় অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।  
    আজ অর্থাৎ অষ্টমীর বিকেলে - ৫টা নাগাদ - ওই জায়গায় একটি প্রতিবাদ সভা সংগঠিত হচ্ছে। আমি থাকবো।  আপনিও আসুন।   
    বামপন্থীরা বহু বছর ধরেই (ক্ষমতায় থাকা বা না থাকাকালীন) পুজোর সময় বিভিন্ন অঞ্চলে বইয়ের স্টল দিয়ে থাকেন। অনেকেই স্বেচ্ছায় বই কেনেন (যেমন মানুষ বই কেনেন বই মেলায়) । সেই সব স্টলে মার্ক্সীয় দর্শন বা প্রয়োগের ওপর লেখা বই ছাড়াও অনেক প্রথিতযশা সাহিত্যিকের সাহিত্যকর্ম থাকে। প্রশ্ন হলো : বই বিক্রি করে জনসাধারণের চেতনার উন্মেষ ঘটানোর প্রক্রিয়া কি গণতান্ত্রিক নয় ? বইয়ের স্টল থেকে তো কাউকে জোর করে বই কিনতে বলা হয় না এবং তা পুজোর আনন্দে কখনো ব্যাঘাত ঘটায় না। সেক্ষেত্রে বামেদের দেওয়া বইয়ের স্টল ভেঙে দেওয়া বা স্টলে বসা মধ্যবয়স্ক ও প্রৌঢ় মানুষকে মারধর করার কোন রাজনৈতিক যুক্তি আছে কী ? এ ঘটনা গণতান্ত্রিক মানুষকে ভাবাবে না  ? 
    যাঁরা বই লেখেন, পড়েন বা পাবলিস করেন তাঁদের এই প্রতিবাদে অংশ নেওয়া উচিৎ নয় কী ? যাঁরা বামপন্থায় বিশ্বাস রাখেন বা বাম ঐক্যের কথা বলেন তাঁদের এই প্রতিবাদ সভায় অংশ নেওয়া প্রয়োজন নয় কী ? সংশ্লিষ্ট জনমাধ্যমের কর্মীদেরও কী আমরা পাশে পাবো না ? 
    নতুবা এই শাসক দল আশ্রিত দুষ্কৃতীরা ও নিষ্ক্রিয় পুলিশ প্রশাসন একদিন আপনার হাতের বইটাও কেড়ে নেবে।     
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৭ অক্টোবর ২০২২ | ৯৩৯ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Sobuj Chatterjee | ০৭ অক্টোবর ২০২২ ১১:০৯512591
  • 'আমি ব্যক্তিগতভাবে অতি নগণ্য ব্যক্তি। কিন্তু আমিও সমাজের একটি অংশের প্রতিনিধিত্ব করি, যারা এইরকমই ভজকট। যারা দলীয় আনুগত্যকে অপছন্দ করে, যারা কখন কী করবে কিচ্ছু বোঝা যায়না। এই অংশের লোকজন কক্ষনো কাউকে সমর্থনের গ্যারান্টি দেবেনা। '
     
    দারুন লাগলো এই স্বচ্ছতা ও তীক্ষ্মতার জন্য।
  • Ranjan Roy | ০৭ অক্টোবর ২০২২ ১২:৫৩512597
  • Kamaleshwar বাবু ও সৈকত বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রতিবাদে গলা মেলালাম   মার্কসবাদী সাহিত্যের 
    বুক স্টল ভেঙে দেওয়া আমাদের এবং গনতন্ত্রের সংস্কৃতি বিরুদ্ধ বলেই মনে করি। 
    এভাবে কোন ক্ষমতার হাত যদি ভবিষ্যতে অন্য কোন দলের বইয়ের দোকানে আক্রমণ করে তাহলেও প্রতিবাদ করব।  সেই দলের বা দোকানের বই আমার অপছন্দের হলেও। 
  • হজবরল | 185.220.101.34 | ০৭ অক্টোবর ২০২২ ১৩:১০512598
  • "ফেসবুকে আপনার সর্বশেষ  পোস্টটি কিছু আগে পড়লাম, তার অন্তস্থ বার্তাটা খুব ভালো লাগল। তাই এই লেখা।" - এই সর্বশেষ  পোস্টটাও এখানে সংযোজন করলে ভাল হয়
  • হেহে | 2405:8100:8000:5ca1::22:9796 | ০৭ অক্টোবর ২০২২ ১৪:৩৫512601
  • ইকি দীপচাড্ডি নাকি যে পিত্থিমির জিনিষ টেনে এনে ইখানে কপি মারবে! পাবলিক স্ট্যাটাস গিয়ে দেখে আসুন।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন