এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • অন্য " কুয়োতলা"

    ঈশানী রায়চৌধুরী লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ | ৯৮৮ বার পঠিত
  • " শুদ্ধসীমা থেকে যাত্রা কবিতার সর্বাঙ্গে , যেমন

     মধুর বিহ্বল পায়ে পিঁপড়ে পড়ে ছড়িয়ে সুধায়

    বিষে ও নির্বিষে, আমি যাই….”

    একটি ছোট্ট মেয়ে | সে জানত ,তার  বাবা পদ্য লেখেন | মা ঘরের কাজ , ঘরের বাইরে   চাকরি , রান্নাবান্না, অতিথি  সত্কার , এই যখন তখন তাদের দুই ভাইবোনের খুনসুটি আর লেখাপড়া , কাজ থেকে ফিরে এসে তাদের ভাই-বোনকে নিয়ে সাঁতারের ক্লাস , আঁকার ক্লাস , বাবার খামখেয়াল….দিব্যি হাসিমুখে সয়ে যান | বাড়ি চলে বাবার বেনিয়মে আর মায়ের নিয়মে | মেয়েটি ইশকুল যায় | খুব ক্রিয়েটিভ লেখালেখির চল সে ইশকুলে | সে ঝাঁপালো চুল দুলিয়ে হুমড়ি খেয়ে পড়ে তার বাবার ঘাড়ে  , " দেখো তো , কেমন লিখেছি | " বাবা দেখেন , কখনো কখনো বলেন , " বা: , বাবুইপাখি , তুই তো বেশ লিখিস !" মেয়ে ঠোঁট ফুলিয়ে বলে, "যা: , তোমার খালি খালি ঠাট্টা, না ?"

    মেয়েটি ভাবে  ঠাট্টা ! কেন ভাবে ? কারণ তার বাবা যে 'লেখেন" ! পদ্য-গদ্যের চন্দনগন্ধ ছাপিয়ে যায় রান্নাঘরের মুসুরির ডালে কালোজিরে শুকনো লঙ্কা ফোড়নের ঝাঁঝকে | বাবার বন্ধুরা আসেন গল্প করতে , বাড়িতে সব সময় সদর দরজাটা প্রায় খোলাই থাকে |  মেয়েটি ছোট থেকে বড় হয় বাবাকে লিখতে দেখে | বাবার গলায় উঁচু স্কেলের গান শুনে | বাবার সঙ্গে সেও গলা মেলায় | কিন্তু পাল্লা দিতে পারে না | সে শোনে , শোনে | শুনতে শুনতে তার শ্রুতি তৈরী হয়ে যায় | সে পড়ে আর পড়ে | আগে যত না, এখন বড় হচ্ছে তো…খুব পড়ে…বাবার লেখা….গোগ্রাসে | আর আচ্ছন্ন হয়ে যায় | এতই এ জড়িয়ে থাকা যে সেভাবে আর অন্য কেউ তাকে আচ্ছন্নই করতে পারে না | পারেওনি | আজ পর্যন্ত |

    এই মেয়েটি আমার সই | কথা  হয়েছে অনেকবার | তার বাবাকে নিয়ে | আমার প্রিয় কবিকে নিয়ে | মেলাতে চেষ্টা করেছি মানুষ - পদ্যকার- গদ্যকার এই তিনটি সত্তাকে | এ নিয়ে প্রশ্ন করেছি | জবাব পেয়েছি | সেগুলোই আগে বলি | এখানে | কথোপকথনে |

    -- ছোটবেলার ছবি আঁকো একটু | বাবা লিখছেন….

    -- ছোটবেলা আর বড়বেলায় একটাই ছবি জানো | বাবা লিখছে | খাটে বসে , একমনে | বাঁ হাতটা খাটে ভর দিয়ে রাখা  | মা এসেছে …সংসারের কথা নিয়ে | আমরা হুটোপুটি করছি | বাইরে নানান আওয়াজ, ফেরিওয়ালা….বাবা লিখছে …  লিখছে…. কী পরিষ্কার করে ! কোনো কাটাকুটি নেই | কোনো ডুডলিং নেই | মা বলেছে , 'এই এত আওয়াজ ! তুমি কী করে যে লেখো '!  বাবা বলেছে , ' এটা জানো  আমার মাথার ভেতরে একটা হার্মনির কাজ করে | আর একবার ওই হার্মনি এসে গেলে আর কোনো বাইরের শব্দই আমার কানে আসে না |'

    -- পাণ্ডুলিপিতে কাটাকুটি নেই !  বা: , জানো , প্রেমেন্দ্র মিত্রর ছিল অমন | উনি বলেছেন বড় সুন্দর একটি কথা | ' কেউ পাতায় কাটে, কেউ মনে | আমি মনে কাটি | '

    --  একদম ঠিক | বাবাও ওইভাবেই লিখত  | তোমায় দেখাবো পাণ্ডুলিপি | সেইজন্যই …ওই যে লিখলাম, মনের মতো হল না, ছিঁড়ে ফেলে দিলাম….ও সব পাটই ছিল না |

    -- বাবা গান করতেন | আর আবৃত্তি ?

    -- না ! কই আর ! শুনিনি তো কখনো সেভাবে বাড়িতে | এমনকি এই যে আমাকে আর ভাইকে নিয়ে ছড়া লিখেছে কত , কিন্তু মনেই পড়ে না , বাবার কাছে বসে ছড়া শুনছি ঘরে বসে | আর এমনিতে যদি কবিতা পাঠের কথা বল ,সে তো অজস্র | কবিতার আসর , সাহিত্যবাসর লেগেই থাকত | অনেক কবিতা পড়ত সেখানে | শুনে শুনে আমার যে কত কবিতাই মুখস্থ !

    -- ছড়া ? বা: !  আচ্ছা, কবিতায় ছন্দ নিয়ে কিছু বিশেষ মতামত ছিল ?

    --অবশ্যই ! বাবা প্রায়ই লিখেছে , ‘ ছন্দে লেখো আগে | পরে ছন্দ ভাঙার খেলা’ | এই যে সবাই কবিতা লেখে ; ছন্দের ছাঁকনি খুব দরকার | ওই ছাঁকনি ব্যবহার করলেই অ-কবি রয়ে যাবে ছাঁকনিতে আর কবিরা স্বতন্ত্র হয়ে বিরাজ করবেন | তখন সেই সব কবিদের মধ্যে আবার মূল্য নির্ণয়ন করা যাবে…কে কত উজ্জ্বল | এই তো, শান্তিনিকেতনে হয়েছিল ..কবিতা লেখার ক্লাস | সে কী উত্তেজনা |  ছেলেপুলেরা লিখছে , বাবাকে দেখাচ্ছে, পড়ে শোনাচ্ছে | বাবা মাত্রা মেপে ঠিকঠাক করে শিখিয়ে দিচ্ছে | বাবা বলত , ' ছন্দ গড়তে শেখার পর…. বুঝতে পারবে | ওই যে সেই খুব চেনা কথা ক'টি ….বাবাই লিখেছিল , 'ভাঙা ….গড়ার চেয়েও মূল্যবান কখনো সখনো ' .. |

    [ এবার কিছু স্বয়ং কবির জবানীতে :" আমি যে ভাষায় কথা বলি গদ্যে , আমি বা আমরা , তাকেই মোটামুটিভাবে অক্ষরপ্রধান ছন্দে বসাতে পারা যায় বলে মনে করি | একটু কাটছাঁট দরকার | সে কাটছাঁটের কাজ দর্জি তথা কানের  | মাত্রাবৃত্তে নানারকম ভাবে লিখেছি | সবচেয়ে লিখে মজা পেয়েছি ওই মাত্রাবৃত্তকে  স্বরবৃত্তের মতো  ব্যবহার করে | ওটা একটা দড়ির  খেলা | কান নির্ভর | এবং কান -নির্ভর | ছন্দজ্ঞান থাকলে তবেই ছন্দ ভাঙা যায় | বিহ্বলভাবে ছন্দ ভাঙার আমি ঘোর বিরোধী | আগে ছন্দোবদ্ধ লেখা , তারপর স্বেচ্ছাগদ্য" | ]

    -- খুব নিয়ম বেঁধে লেখাপড়া, পদ্য লেখা ছিল কি ?

    -- না না | যখন খুশি , তখন | আসলে খুব মনে মনে একাচোরা ছিল | একটা মজার ঘটনা বলি | মায়ের কাছে শোনা | ১৯৮৫ | বাবা কবিতা উত্সবের উদ্যোক্তা | সেবার অনেক জায়গায় অনুষ্ঠান হয়েছিল | ন্যাশনাল লাইব্রেরি , শিশির মঞ্চ … বাবা গেছে শম্ভু মিত্রর  বাড়ি | বলেছে , ' শম্ভুদা , কবিতা উত্সব | আপনি

    আসবেন তো ?' শম্ভু মিত্র বলেছিলেন, ' যেতে পারি ; কিন্তু একটা শর্ত আছে|' বাবা জানতে চেয়েছিল , 'কী শর্ত ?' শম্ভু মিত্র বলেছিলেন , ' তোমার একটি কবিতা আমি পড়ব | তোমাকে সেই কবিতার  অর্থ আমাকে বুঝিয়ে দিতে হবে | ' বাবা নাকি বলেছিল , ' তাহলে বোধহয় আপনার আর আসা হল না ! '

     নিজের ভেতরে কী ঘটছে, কাউকে বলত না বাবা | নিজের লেখাপত্তর নিয়েও তেমন আলাপ আলোচনা করত না | হয়ত একটা কোনো ঘটনা ঘটল, সে অভিঘাত বাবাকে বিপর্যস্ত করল, বাবা তা মনের মধ্যে লালন করল মাস , বছর ধরে | তারপর হয়ত কোন পদ্য বা গদ্য| মানে…..ওইটা রয়েই গিয়েছিল….বাবার মধ্যে ; কিন্তু ঘুমোয়নি | জেগেই ছিল |

    -- কখনো এমন হয়নি , যে পদ্য লেখা আসছে না ….খুব ছটফটানি …

    -- ওষুধ ছিল | তখন বাবা অনুবাদের কাজ করত | সেইভাবেই মায়াকভস্কি , হাইনে, রিলকে, গালিব , খৈয়াম….

    -- আর যে ভাষাগুলো জানা নেই ?

    -- হয়ত খুব প্রামাণ্য ইংরিজি অনুবাদ | তবে মূল ভাষার বিশেষজ্ঞ তো থাকতেনই কেউ কেউ | যেমন মায়াকভস্কির সময় মুকুল গুহ , হাইনের জন্য বিক্রমণ নায়ার , গালিব বা খৈয়ামে আয়ান রশিদ খান | জানো , বাবা শুরু করেছিল গীতার অনুবাদ | সে তো অসম্পূর্ণই রয়ে গেল | মা যখন তাগাদা দিত কাজটা শেষ  তাড়াতাড়ি করার জন্য , বাবা বলত …খুব শক্ত কাজ | খুব মন:সংযোগ দরকার | বাবাকে গীতা খুব আকর্ষণ করত |

    -- সামগ্রিকভাবে সাহিত্যচর্চা….এই যে যাদের রুজি-রুটি…….

    -- বাবা বলত সাহিত্য করতে কেউ জন্মায় না | করতে হয়, করে নিতে হয় | যার ভাল্লাগে , সে করে | যার ভাল্লাগে না , সে করে না !

    -- আচ্ছা, এই ধর রবীন্দ্রনাথ বা জীবনানন্দ….

    --  বাবা বলত , রবীন্দ্রনাথ তো আমাদের কাছে জল হাওয়া আকাশের মতোই অনিবার্য | আমাদের নি:শ্বাসে আমাদের রক্তে এক হয়ে মিশে আছেন | তবে বাবা কিন্তু রবীন্দ্রনাথের  কবিতার অত ভক্ত ছিল না | কিন্তু গান ? গান শুনতে আমরা বাধ্য | সুখে দু:খে আমাদের পরম আশ্রয় | আর জীবনানন্দর প্রভাব যে পদ্যে এসেছে, তা তো বাবা স্বীকার করেই গেছে | কারণ জীবনানন্দের পদ্যের যে মারাত্মক মায়া ! আবার বেরিয়েও এসেছে সেই প্রভাব থেকে |

    -- আর রবীন্দ্রনাথ ?

    -- বাবা  'ধর্মে আছ জিরাফেও আছ ' তে রবীন্দ্রনাথের মতো ভাষায় লেখবার চেষ্টা করেছিল | এর একটি কারণ  ছিল | তখন অনেকেই বলত , আধুনিক কবিতা সকলের জন্য নয় | শুধুই এক বিশেষ গোষ্ঠীর পাঠকের জন্য | তাই বিষয়ের দিক থেকে নয়, রবীন্দ্রনাথের ধরনের ছন্দ বা ভাষার একটু সরলীকরণের কথা চিন্তা করেই লিখেছিল | আর  জীবনানন্দ ? এবার বরং বাবাই বলবে | বাবার ভাষায় :

    [ " টোটাল, টোটাল কবি বলে মনে হয় আমার ওঁকে | একটু এলোমেলো, হয়ত ক্রিয়াপদের জন্যই লাগে, অনেকসময় | অনেকসময় প্রকাশভঙ্গির জন্যই উনি এলোমেলো, এটাই ওঁর স্বভাব লেখার | সেটা  হয়ত অনেক জায়গায় আমারও এলোমেলো ভাব এসেছে | সরাসরি ওঁর অনুকৃতি বলতে পার | তবে আমার নিজস্ব কিছু জিনিসপত্রও আছে !"]

    -- আর গান ছাড়া রবীন্দ্রনাথ সম্পর্কে অন্য কিছু  ?

    -- বলেছে তো !  রবীন্দ্রনাথ এত বড় এক মানুষ, যে শুধু পুজো ক’রে তার ভিতরের মানুষটিকে চিনে নেওয়া যায় না | অগস্ত্য মুনির কাছে যেমন বিন্ধ্য পর্বতকে নত হতে হয়েছিল , রবীন্দ্রনাথের কাছেও তেমন ভারত নামের পর্বতটিকে নত হতে হয়েছে | তবে বাবার কিছু অভিযোগও ছিল | বলত , রবীন্দ্রনাথ মহর্ষিকে নিয়ে বিস্তর লিখেছেন, কিন্তু মায়ের কথা তেমন নেই তো ! রবীন্দ্রনাথের লেখাতেও দেখো, মাতৃচরিত্র আছে , কিন্তু তা রক্তমাংসের চরিত্রের মতো জীবন্ত নয় | বা , এই যেমন বলত রবীন্দ্রনাথের লেখায় কলকাতা বা চিত্পুরের মতো জায়গা….কেমন অনুপস্থিত | অথচ ওঁর তো দেখার চোখ ছিল !

    -- আর তোমার বাবার গদ্য লেখা ?

    - ও : , সে এক কাণ্ড ! বাবা মোটেই  ভালবাসত না গদ্য লিখতে | দেশ পত্রিকার শারদ সংখ্যা| আশির দশক | বরাত এল উপন্যাস লেখার | বাবা লেখার জন্য ছুটি নিয়ে চলে গিয়েছিল কোথায় একটা | পরে সমীর সেনগুপ্ত বলেছিলেন , সে কী ভীষণ যুদ্ধ বাবার …সরস্বতীর সঙ্গে | গুচ্ছের বীয়ারের বোতল, কিন্তু লেখাও হচ্ছে না , খোলাও হচ্ছে না ! গদ্য লেখা বাবার ধাতে ছিল না | আর জানো , লিখেছে তো | কিন্তু   আত্মজৈবনিক উপন্যাসগুলোতে  যে সব মানুষের আসা যাওয়া , যে সব মুখের  ; তারাই ঘুরেফিরে এসেছে পদ্যে, গদ্যে …বারেবারে | ঘুরেফিরে এসেছে কৈশোর , প্রথম ভালবাসা, নস্ট্যালজিয়া | ফলে আমরা বলতাম , কেমন মনে হয় কোথায় যেন পুনরাবৃত্তি !  বরং বাবার ভাষাতেই বলি,

    [ " কবিতা একটা কন্টিনিউয়াস প্রসেস, গদ্য খুব কম্পার্টমেন্টাল  ব্যাপার | এটা সুখের প্রশ্ন | গদ্য লেখায়  ব্যক্তিগতভাবে আমি সেই সুখ পাই না | গদ্য ও পদ্য-র মধ্যে আকাশ পাতাল তফাত | গদ্যকার হল মজুর , কবি হল শিল্পী| তবে মজুরও কখনো শিল্পী হয়ে ওঠে | যেমন রাজমিস্ত্রী আর্কিটেক্ট হয় | তবে গদ্যশিল্পী হয়ে ওঠাটা একটা বড় পরিশ্রমসাপেক্ষ | কায়িক শ্রমটাই আসল | পদ্য লিখতে কি শ্রম নেই ? আধুনিক কবিকে যথেষ্ট শ্রম করতে হয় -- মানসিক শ্রম | একটি সার্থক পদ্য লিখতে গিয়ে তাকে তছনছ হয়ে যেতে হয় | এটা সবচেয়ে বড় কথা, তার সেই মানসিক ওলটপালট অবস্থাকে মাত্র কিছু কিছু শব্দের মধ্যে দিয়ে পদ্যে গড়ে তুলতে হয়”|]

    -- আর তোমার মা ? মা আসেননি বাবার লেখায় , কবিতায় ?

    -- মা তো ছিলই সবটা জুড়ে  | বাবা একবার বলেছিল , মাকে দেখার আগে বাবা অন্য মেয়েদের প্রতি আকর্ষণ বোধ করেছে হয়ত ; কিন্তু   সেই স্নেহ, প্রীতি, মমতার সঙ্গে মিলিয়ে নিতে পারেনি| সেখানে মা-ই প্রথম, মা-ই শেষ | একবার, মায়ের মুখেই শুনেছি….মা ছিল , আর সমীর কাকু , সমীর সেনগুপ্ত |  মা বলেছিল, ' তুমি আমাকে নিয়ে তো কিছু লেখ না !'  বাবা সমীর কাকুকে  বলেছিল , 'কী যে বলে ! ' অর্থাৎ পুরোটা জুড়েই কিন্তু মা  |

    -- আর তুমি ?

    -- আমি ? বাবা যে বলেছিল……

    [ " বাবুইকে যে ভালোবাসি, সে কি আমার মেয়ে বলে ? কী জানি , ও মেয়ে না ছেলে তা মনেও পড়ে না আমার | ও যেন আমার কাছে সম্পূর্ণ অন্য একটা কিছু  ,একেবারে আলাদা | কিন্তু ও তো আমার ; ও তো আমারই মেয়ে | আসলে ও আমারই একটা অংশ | একেবারে আমার | আবার মাঝে মাঝে মনে হয় যদি জড়িয়ে ফেলে আমাকে ? তখন একটা প্রতিরোধ আসে , আমি প্রবল যন্ত্রণা পাই | কিন্তু আমি আবার ফিরে আসি ওর কাছে, আমার নিজেরই কাছে |'']

    -- আর এই যে কবিতায় বাস , নিরলস কবিতাতেই ….কবির, কবিতাপ্রেমীর……

    -- আমি …এই প্রশ্নটি মনে আসে আর বাবার  গলা কানে ভেসে আসে….

    [ " কা কবিতা ? তা, আমিও জানি না | কিংবা কোনো সময় থেকে জানতে জানতে আমি পদ্য লেখা শুরু করিনি | এবং বোধ করি কেউই তা করে না | অর্থাৎ এ নিয়ে কোনরূপ নিদান হানার পক্ষপাতী আমি নই | পদ্যভাব পড়ে আছে মাঠেঘাটে , ফলফুলুরিতে , আছে গাইবাছুরে , পুঁইমাচায়  ...এমনকি বাঁশবাগানের মাথায় ঘুড়ির মতো লটকে থাকা চাঁদের টুকরোয় | ভাঙা দেয়ালের পাশে , চাঁদের রুজুরুজু উন্মাদ দৌড়ঝাঁপ এবং হৃদয় , হৃদয়ের চতুর্দিকে ঘিরে ফেলার নেশা আমাদের পেয়ে বসে  এবং আমরা শব্দে শব্দে ঘা মেরে বাজিয়ে , বিস্ফোরণ ঘটিয়ে সেইসব আলেখ্যর কাছে এনে সবাইকে দাঁড় করাতে চাই | সকলে দাঁড়ায় না | সবার দাঁড়ানোর   কথাও না | কেউ কেউ দাঁড়ায় | তারা ঠুকরে ঠুকরে কবিতার ছবির রং রস হৃদস্পন্দন খায় | গোগ্রাসে যারা গেলে তারা কবিতার শত্রু | যারা ঠুকরে খায় , তারা এদিকওদিক ঠিকরে পড়ে | তাদের জ্বালার আর অন্ত নেই | কবিতা আমার প্রাণের আরাম , আমার  আত্মার শান্তি , আমার হৃদয়ের দু:খ-সুখের সমুদ্র | কবিতা আমার দুপুর রোদের ছায়া - যা বাইরে পড়ে না, পড়ে ভিতরে , আমার সঙ্গে পৃথক সে কখনোই নয় | এইসব আহ্লাদে কথাবার্তা | তাছাড়া , বেশি কিছু নয় , বড় কিছু নয় | হয়ত |"]

    -- বাবা কি খুব ঈশ্বর বিশ্বাসী ছিলেন ? মন্ত্রপাঠ, পুজো আচ্চা …

    -- বাবার কাছে ঈশ্বর মানে বড়  | যে বাবার কথা শোনে , বাবাকেও কিছু শোনায়| সেই ঈশ্বর ….বাবা যখন মধ্যরাতে অন্ধকার চৌরঙ্গী পার হত বা ট্রামলাইন ধরে সেই উন্মত্ত দৌড়…..সঙ্গে থাকতেন | বাবার সঙ্গেই | আমৃত্যু |

    -- এই যে সারা জীবন ধরে এত অজস্র কবিতা লিখেছেন…….

    -- কই না তো ! বাবা বিশ্বাস করত সারা জীবন ধরে কোনো কবি একটিই কবিতা লিখে যান | শুধুই টুকরো টুকরো করা থাকে | খণ্ড কবিতা | জুড়ে দিলে একটিই | নাম দিতে হয় শুধু ওই খণ্ডগুলিকে চিনে নেবার জন্য | না দিলেও চলে | সংখ্যাই যথেষ্ট | অত বিশাল পদ্য কে ছাপবে ? তাই টুকরো করে বিলিয়ে দেওয়া | নিজেকে| একটি একটি খণ্ড পদ্য কবির আলাদা আলাদা মুড | পাঠক কবিকে স্পর্শ করে সেই মুডের মাধ্যমে | আবার হয়ত একই পদ্যের মুড আলাদা আলাদা পাঠকের কাছে আলাদা আলাদা | কারণ প্রত্যেকেরই নিজস্ব পছন্দ অপছন্দের মধ্য দিয়ে যে বোধ রয়ে যায় , সে অনুযায়ী তার কাছে সেই পদ্যটির আবেদন ধরা পড়ে | পদ্য ছবির মতোই একটি আর্টফর্ম , তাই পদ্য এক একজনকে এক এক মুডে নাড়া দেয় |

    -- আচ্ছা , কখনো নিজের লেখা আবার ঘষামাজা করতেন ?

    -- কক্ষনো নয় | আগের দিন রাতে লেখা যা, পরের দিন সকালেই আর পড়ে দেখত  না  | কারণ……

    [ " আমি সবসময় চাই এগিয়ে যেতে | ওই জন্যই আমার পরবর্তী মুহূর্তটি চাই, অন্যরকম অভিজ্ঞতা চাই | এমনকি অনেকদিন বাদে যদি দেখি কোথাও কোনো ত্রুটি থেকে গেছে , সংশোধন করি না | কারণ যে সময়ে পদ্যটি লিখেছিলাম, সেই সময়ের অনুভূতিতে তা সত্য ছিল | পদ্য লেখার ক্ষেত্রে ওই মাঝেমধ্যে বাগান পরিষ্কারে আমার বিশ্বাস নেই |"]

    -- " কখনো তোমার করে , তোমাকে ভাবিনি……"

    -- আমার মা | এই লেখায় বাবা ছুঁয়ে থেকেছে মাকে | বলতে চেয়েছে , খুশিমতো এই যে জীবন….মা তেমন আলাদা করে জায়গা পায়নি হয়ত | এই ব্যস্ততা …. কিন্তু আমরা তো এই বৃত্তে আছি | একই সমাজে | ….

    [ " যদিও উচ্ছৃঙ্খলতার মধ্য থেকে অনেক পদ্য লেখা হয়েছে , তবুও দু'বার মৃত্যুর কাছাকাছি এসে মনে হয়েছিল , ' এবারে একটু ঘুরে দাঁড়ানো ভালো | জীবনের থেকে বড় তো আর কিছু নয় |”]

    -- " এখন গঙ্গার তীরে ঘুমন্ত দাঁড়ালে চিতাকাঠ ডাকে আয় আয় …"

    -- বাগবাজারের গঙ্গা | বাবার মামারবাড়ি | দিদিমার মৃত্যু | শ্মশান |

    বাবার দিদিমা যে ঘরে মারা যান , সে ঘরের দেয়ালে একটা নাকি পেরেক পোঁতা ছিল | বাবা প্রায়ই ওই পেরেকটায়  গিয়ে হাত বোলাত | ওই পেরেকে যেন বাবার দিদিমার স্পর্শ !

    -- " যেতে পারি , যে কোনো দিকেই আমি চলে যেতে পারি, কিন্তু কেন যাবো ?"

    --  জীবন তো অসুখী নয় | তাই মৃত্যুর মুখোমুখি এসে যে একবার বড় সাধ হয়….

    ''কিন্তু কেন যাবো ?''

    " সন্তানের মুখ ধরে একটি চুমো খাবো"…. সন্তান যে বড় আপন , বড় মায়ার | তার মধ্যেই তো নিজের অনেক কিছু রয়ে যায় | ……

    [ " তবু রক্তে চৈত্রের বাতাস , তাই সন্তানকে জড়িয়ে ধরে রয়ে গেলাম …এমন নয়| শুধু একটি চুমো খেতে যতটুকু সময় ! এর মধ্যে একটা আলগা ভাব রয়েছে, উদাসীনতা কাজ করেছে | যতই সামাজিক হবার চেষ্টা করি , আসলে মূলে রয়ে গেছে একটা ছন্নছাড়া প্রভাব | আবারও যেন সামাজিক হয়ে উঠতে চাওয়া…..' তোমাদেরও সঙ্গে নিয়ে যাবো….'কারণ…যদি যেতেই হয়… ঠিক এর অনুরূপ একটি জীবন আমার অন্যত্রও চাই | তাই 'তোমাদের' কথাও ভাবতে হয় বৈকি !'

    … এবং অবাধ্য শব্দ ক্রমাগত সাজিয়ে মহান আবার বানাতে হবে নিজহাতে নিজেরই সমাধি….

    যাকে বলে ফেরা , বলে পিছুটান , পিতৃদু:খ বলে |”]

    এখন অনেক রাত | আমরা কথা বলছি | অনেক অনেক | কথা গড়িয়ে যাচ্ছে কবিতায়, গদ্যে, নির্জন আলাপচারিতায়| আমি এক গভীর বিষণ্নতার নকশিকাঁথা শরীরে মনে জড়িয়ে ছুঁয়ে ছিলাম আমার প্রিয় কবিকে | আকাশ কোনো কথা বলছিল না , বাতাস ছিল চুপটি করে | ফুলের মতো সহজ হয়ে আসছিল কবিতার কাছে বলার মতো কিছু ভাষা

    ….যাতে দেয়াল নেই, দরজা নেই..কবিতা হাত রেখেছিল আমার দুই হাতে ….আমার

    কানে কানে অস্ফুটে বলছিল , " তোমার কথা আমিও কিছু জানি……"

    কবি : শক্তি চট্টোপাধ্যায়

    কবিকন্যা : তিতি


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ | ৯৮৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • | 24.96.190.58 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৪:০৯75524
  • বাঃ
  • pharida | 192.64.1.161 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৪:১৩75525
  • সুন্দর পরিবেশন। অভিনন্দন।
  • san | 113.21.185.62 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৪:৪১75526
  • খুব খুব ভাল লাগল।
  • রোবু | 213.147.88.10 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৫:২৫75527
  • বেশ। সুন্দর।
  • aranya | 154.160.226.53 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৫:৩৪75528
  • অপূর্ব
  • i | 147.157.8.253 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ১০:০৮75529
  • খুব ভালো লাগল।
  • a x | 86.31.217.192 (*) | ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ১১:৫৭75530
  • বাহ! ভালো লাগল। আর কী সমাপতন, যখন আজকেই কবির ওপর ডকুটা দেখছিলাম, তখনও এই লেখা খুলে দেখিনি!
  • Tim | 12.133.34.72 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০১:০৫75537
  • ভারি সুন্দর লেখা। খুব ভালো লাগলো।
  • শঙ্খ | 151.0.8.140 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০১:০৭75532
  • বাঃ খুব ভালো।
  • রোবু | 177.124.70.1 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০১:১৮75538
  • হে চিরপ্রণম্য অগ্নি :-
  • Nina | 78.37.164.19 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০১:৪৩75533
  • অপূর্ব্ব!
  • kk | 81.236.62.176 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০১:৫১75534
  • ভালো লাগলো খুব।
  • Sekhar Basu | 127.194.36.86 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৬:৩৬75535
  • খুব সুন্দর লেখা।
  • de | 190.149.51.67 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ১২:৪১75536
  • ভারী ভালো লাগলো!
  • arindam | 69.93.245.91 (*) | ২৫ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ১২:৫৭75531
  • খুব ভলো লাগল।
  • piyali banerjee | 127.194.224.20 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৩:০৭75539
  • খুব অন্তোরিক সখ্হত্কর।।।।।।।।গতনুগোতিক নোয়,তই ভলো লগ্লো জেমোন রোদ জ্বোল দুপুর এ ঘরের থন্দয় সুয়ে গোরিয়ে ভলোবেসে বৈ পোর
  • .. | 111.210.69.199 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৩:৪৭75541
  • আহ!
  • শিবাংশু | 127.201.146.2 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৫:৪৫75540
  • বাহ, প্রিয় কবিকে নিয়ে একটি অতি উত্তম চর্চা ।

    আরো ভালো লাগলো এই কারণে যে কবির সঙ্গে অতীতে এই সব কথা ব্যক্তিগত স্তরেও হয়েছে কখনও ।

    প্রমত্ত, অপ্রমত্ত নিখাদ শক্তি ....
  • শুদ্ধ | 126.193.139.146 (*) | ২৬ সেপ্টেম্বর ২০১৩ ০৬:০০75542
  • কি যেন কষ্ট দিল খুব! বড় বেদনার! অথচ এ তো...

    জানি না!
  • rani | 230.225.11.173 (*) | ০৮ অক্টোবর ২০১৩ ০৫:৪৪75543
  • অন্য রকম দেখা , মায়া আর বিশ্বাসের চোখে। খুব ভালো লাগলো।
  • পাই | 24.139.221.129 (*) | ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:১২75544
  • তুললাম।
  • Arpita | 57.11.5.197 (*) | ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৪:২৮75545
  • Mon bhore gelo
  • পৃথা | 132.161.12.197 (*) | ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৫:৫৭75546
  • চমৎকার
  • এলেব্লে | 212.142.71.38 (*) | ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:০৮75547
  • ... কিন্তু শক্তি যে কবিতার প্রমাণ কী?
    'এই যে' বলে আমি নোট বই খুলে দেখাই।
    'প্রথম পাতায় যা এডগার এলান পো-র কবিতাটা। তারপর যা দেখছেন সব ওর লেখা। হ্যাঁ-হ্যাঁ, ওর নিজের।
    'নোওপ্‌। ইট কুড বী সামবডি এলসেস্‌। হী মাইট হ্যাভ কপিইড ইট ইন হিজ ওন হ্যান্ডরাইটিং।'
    ওম্‌মা! এ-ঘটকে আমি এখন কোথায় বসাই? অথচ, আমরা জেলে থাকব না বাইরে, সবই ওর ওপর নির্ভর করছে।
    আমি বললাম, 'শক্তি, একটা লিখে দে।'
    উনি আদেশ করলেন, 'রাইট এ সনেট প্লীজ। ফোর্টিন লাইনস। এ-বি-বি-এ।'
    লেমসা হ্যারিকেন বসিয়ে দিয়ে গেল। চারিদিকে ঘোর অন্ধকার। সাহেবের জীপ থেকে এল গোটা তিনেক মহুয়ার বোতল। রিয়েল স্টাফ্‌ গট ফ্রম রোগোদ।
    তিনটে গ্লাসে মহুয়া ঢালা হল। লেমসা বসে রইল হাত পা মুড়ে, কুকুরের মত।
    'নাউ স্টার্ট।' উনি এক চুমুকে ফাঁক করে দিয়ে ঠক করে গ্লাস টেবিলে নামিয়ে রাখলেন। শক্তি ও আমি ওঁকে অনুসরণ করি।
    শক্তি পাতার ওপর লিখল :
    'প্রভেদ জটিল'
    বলে আমার দিকে তাকিয়ে দাড়ির জঙ্গলের ভেতর থেকে হায়েনার হাসি হাসল।
    তারপর লিখে গেল :
    'প্রভেদ জটিল; অবগুণ্ঠিত সড়কে চাঁদের আলো/ তাকে দিও ঐ ফুলটি কারনেশান/ কতদিন তার মুখও দেখিনি/ চেনা পদপাত পিছল অলক কালো/ ও ফুলের কথা বলো না কাউকে, বুড়ো মালঞ্চ...'
    উনি পাতাটা কেড়ে নিয়ে আমাকে দিলেন। বললেন, 'ক্যা মতলব? ক্যায়সা সায়ের, বাতাও!'
    বুঝলাম, এ পদ্য-পাগলাকে এখন বাতাতেই হবে।
    এইভাব শক্তি ২/৪ লাইন লেখে। আর আমি বাতাতে থাকি। কখনও ইংলিশ, কখনও হিন্দিতে। মোট তিনটি কবিতা উপাধ্যায়ের সভাকবি সেদিন রচনা করেছিল।
    তারপর চলল হোলনাইট মদ্যপান। সঙ্গে মুর্গির রোস্ট।
    কোথায় আমাদের ধার-দেনা। কোথায় কী।
    ভোরে উপাধ্যায়ের জীপে আমরা দিব্যি গড়গড়িয়ে চক্রধরপুর এলাম। ...

    'বন থেকে বেরুল টিয়ে', জঙ্গলের দিনরাত্রি, সেইসব দিন রাত্রি, সন্দীপন চট্টোপাধ্যায়
  • এলেবেলে | 212.142.71.38 (*) | ২৫ নভেম্বর ২০১৭ ০৬:১০75548
  • *শক্তি যে কবি তার
  • কুশান | 238912.66.125612.252 (*) | ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:০২75549
  • অনবদ্য স্মৃতিচারণ।
    একসময় শক্তি আমার দিনরাত জুড়ে ছিলেন। এমনকি ১৯৯৫ এ তাঁকে স্বপ্নেও দেখেছি। খালি গায়ে, লুঙ্গি পরে বসে রয়েছেন বাংলা কবিতার শ্রেষ্ঠ দার্শনিক।
    মনে পড়ছে 'দাঁড়াবার জায়গা' উপন্যাসের সেই লাইন:
    'প্রতিটি অভিজ্ঞতাই কাজে লাগে, যদি লাগাতে জানে কেউ'

    গুরুকে অনুরোধ এই ধরণের কাজ আরো হোক।
  • Kakali Sinha Roy. | 342323.225.0178.0 (*) | ২৫ নভেম্বর ২০১৮ ১০:১৫75550
  • খুব ভালো লাগল, মনছোঁয়া।
  • Tim | 89900.253.8956.205 (*) | ২৬ নভেম্বর ২০১৮ ০৫:৫৫75551
  • এতদিন পরে পড়লাম। ভারি ভালো লাগলো
  • de | 90056.185.673423.56 (*) | ২৭ নভেম্বর ২০১৮ ০৬:১০75552
  • খুব সুন্দর - আগে পড়িনি তো!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। যা খুশি মতামত দিন