এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ইপির ফকির ঃ অরিজিনাল ইন্সারজেন্ট না ফ্রিডম ফাইটার ?

    Debabrata Chakrabarty লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৯ অক্টোবর ২০১৫ | ২১৫৩ বার পঠিত
  • বস্তুত আমার অনেক বন্ধু বান্ধব গনের মতোই ' ইপির ফকিরের’ বিষয়ে আমি আদপে বিন্দুবিসর্গ কিছুই জানতাম না , আর এখনো যে বিশেষ কিছু যে জানি তা আদপেই নয় । আর জানবোই বা কি করে - তার নাম না আছে ইতিহাসের পাতায় , না ভারত বা পাকিস্তানের কোথাও পালিত হয় তার জন্মদিন সাড়ম্বরে , না প্রকাশিত হয়েছে কোন ডাকটিকিট , না তার সম্বন্ধে নেতাদের ভাষণ কানে আসে ,এমনকি এই যে আমাদের ইন্টারনেটের দুনিয়া তাতেও আধাখেঁচড়া কিছু ইনফরমেশান -আর কেই বা কবে বাউল ফকিরদের কথা মনে রেখেছে দু এক জন লালন ফকিরের ব্যাতিক্রম সহিত ,তাই ‘ইপির ফকিরের’ বিষয়ে আমার অজ্ঞতা বা বন্ধু বান্ধবদের তা ঠিক কোন অপরাধের পর্যায়ে পড়ে বলে আমার মনে হয়না , আসলে আমাদের ইতিহাস বলে যা পড়ানো হয় আমরা সেই ইতিহাসেই খুশি । সেই ইতিহাসই আমাদের দুনিয়া ।

    অথচ এই ফকির পরিচালিত করেছিলেন সম্ভবত ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার সবথেকে দীর্ঘ এবং সফল ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র আন্দোলন । ১৯৩৫ সাল থেকে স্বাধীনতার দিন পর্যন্ত দীর্ঘ ১২ বৎসর ব্রিটিশ অহমিকার নাকে 'ইপির ফকির’ প্রকৃত অর্থে ঝামা ঘষে রেখে দিয়েছিলেন। ৪০,০০০এর ওপর তৎকালীন ব্রিটিশ ভারতের সেনা ,ক্রমাগত বিমান হানা ,গুপ্তচর ,বিখ্যাত ব্রিটিশ ট্রেচারি ফকিরের টিকিও ছুঁতে পারেনি ,গ্রেপ্তার এবং ফাঁসী কাঠ তো অনেক দূরের কাহিনী - ব্রিটিশের দৃষ্টিতে যে কয়েকজন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের প্রধান শত্রুর কথা আমরা জানি মাস্টারদা থেকে সুভাষ চন্দ্র বসু এবং আরও অনেকে 'ইপির ফকির’ তাঁদের মধ্যে ইউনিক ।

    দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ,অনমনীয় ,অদম্য ,একগুঁয়ে ,শত্রুর প্রতি নির্মম ব্রিটিশ বিরোধী গেরিলা যুদ্ধের এই অসামান্য নেতা সামান্য এক ঘটনাক্রম এবং ব্রিটিশের মিথ্যাচার ,ছলনার কারনে হয়ে ওঠেন ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার অন্যতম প্রধান শত্রু । প্রাপ্ত আধাখেঁচড়া তথ্য অনুসার ' ইপির ফকিরের’ লস্করের বা সৈন্যের সংখ্যা কখনোই ৪০০০ -১০০০০ এর গণ্ডী অতিক্রম করেনি । কিছু ব্রিচ লোডিং রাইফেল , সামান্য দু একটি মেশিনগান আর লজঝরে কিছু পুরানো দিনের কামান এই ছিল তার অস্ত্রবল। দ্বিতীয় বিশ্ব যুদ্ধের সময় ইতালি থেকে পাওয়া দু একটি মিলিটারি ফিল্ড রেডিওর সহযোগিতা পূর্ববর্তী 'ইপির ফকির’ এর ইন্টেলিজেন্স, ব্রিটিশ বাহিনীর বিষয়ে খবরাখবর সংগ্রহ পুরোটাই গ্রামবাসী নির্ভর । গেরিলা যুদ্ধ্বের ক্লাসিক নিয়ম অনুযায়ী মেসেঞ্জার আর সমর্থকদের নেটওয়ার্ক 'ইপির ফকির’ কে যোগাত ব্রিটিশ বাহিনীর সমস্ত খবরাখবর । কখনো বন্দুক আছে তো গুলির অভাব , গুলি এলো তো লস্কর অসুস্থ তাই 'ইপির ফকির ‘ লড়তেন নিজের ইচ্ছায় ,যুদ্ধ বিরতিও নিজের ইচ্ছায় , কখনো একনাগাড়ে আক্রমণ - আজকে জেলাশহর আক্রমণ করলে কাল ৩০কিমি দূরে ব্রিটিশ চৌকি জ্বালিয়ে দেওয়া আবার লস্করের সদস্যদের মধ্যে আহত বা নিহতের সংখ্যা বেড়ে গেলে অগম্য প্রান্তরে আত্মগোপন । সুযোগের অপেক্ষাতে থাকা , গোলা বারুদ, লস্করের সদস্য সংগ্রহ এবং পুনরায় অগ্রগামী ব্রিটিশ সেনাবাহিনী কে আক্রমণ ।ওয়াজিরিস্থানে নিযুক্ত ব্রিটিশ সেনাবাহিনী ফকিরের জ্বালায় ১২ বছর ধরে সর্বদাই মোবাইল থাকতে বাধ্য ছিল। একটা সময়ে ১৯৩৭-১৯৩৯ সাল নাগাদ ওয়াজিরিস্থানের ময়দানে ৪০,০০০ এর অধিক ব্রিটিশ সেনা ,আধুনিক কামান ,ট্যাঙ্ক এবং বিমান বাহিনী নিয়ে মোতায়েন ছিল এই দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ,অনমনীয় ,অদম্য ‘ ফকিরের ‘ মোকাবিলায় । প্রত্যেক বারের মতোই ব্রিটিশ সেনাবাহিনী পৌঁছানর পূর্বেই হয় ইপির ফকির সেই স্থান হতে নিরাপদ গুহাতে পৌঁছে যেতেন অথবা ইচ্ছাকৃত ভাবে মিথ্যা খবর দিয়ে ব্রিটিশ সেনাবাহিনীকে বিভ্রান্ত করতেন । এই অসামান্য ‘ফকির’ তার নিজের বাসস্থানে ১৯৬০ সালে শান্তিতে হাঁপানির প্রকোপে স্বাভাবিক মৃত্যুবরণের পরে আমাদের দেশে বা বর্তমানের পাকিস্তানের কোন বহুল প্রচলিত কাগজে এক লাইন শোকগাথা লেখা না হলেও TheTimes (20th April 1960 ) কিন্তু লিখেছিল ‘a doughty and honourable opponent … a man of principle and saintliness .. a redoubtable organizer of tribal warfare..’ সাথে এটাও লিখেছিল ‘ many retired Army officers and political agents.. will hear the news with the tribute of wishful regret ‘ .

    ইপির ফকিরের ব্রিটিশ বিরোধী সামরিক অভিযান সেই সময় প্রায় রূপকথার স্তরে পৌঁছায় , এমন সে রূপকথা 'ফকির নাকি গাছের ডাল কে মন্ত্রবলে রাইফেল এ পরিণত করতে পারতেন’ 'বোমারু বিমান বোমা ফেললে তা কাগজে পরিণত হত’ আসলে সাধারণ নাগরিক কে সতর্ক করতে ব্রিটিশ বোমারু বিমান লিফলেট ছড়াত মাঝে মাঝে - তার প্রতিটি অভিযানের বিবরণ এমনকি সেই সময়ের সুদূর সিঙ্গাপুরের প্রধান খবরের কাগজেও নিয়মিত প্রকাশিত হতে থাকে(তথ্য সূত্র ৭,৮,৯ ) কিন্তু আজকের দিনে ওয়াজিরিস্থান , আফগানিস্থানের কিছু অংশ এবং সেইসময়ে ওয়াজিরিস্থানে কর্মরত কিছু অবসরপ্রাপ্ত সৈনিক বা রাজকর্মচারীদের স্মৃতি বিনা ‘ ইপির ফকির’ কোথাও নেই । অস্তিত্বহীন, স্বীকৃতিহীন এক অজানা ইতিহাস । এমনকি ওয়াজিরিস্থান এবং সীমান্ত এলাকার বিষয়ে যাকে আমরা অথরিটি হিসাবে জানি সেই Sir Olaf Caroe তিনি তার সেইসময়ের অফিসিয়াল চিঠিপত্তরে ফকিরের নাম হাজারো বার উল্লেখ করলেও বিশ্ব যুদ্ধ্ব পরবর্তীকালে তার The Pathans, 550 BC,- AD 1957 নামক পুস্তকে ‘ইপির ফকিরের ‘নাম প্রায় উল্লেখই করেন নি । ব্রিটিশ তার উদ্ধ্বত নাসিকাতে ঝামা ঘষে দেওয়া এক সামান্য ফকির কে স্বীকৃতি দেয় কি উপায়ে ? কিন্তু আজও প্রত্যেক বছর তাঁর মৃত্যুদিনে মানুষ সমবেত হয় তার কবরস্থানে ,তাকে স্মরণ করে শ্রদ্ধ্বার সাথে , মেলা বসে ,শিশুরা ফড়িং এর পায়ে সুতো বেধে হেলিকপ্টার ওড়ায় , ফকির বেঁচে থাকেন পুস্ত /পাঠান এবং ওয়াজিরিস্থানের লোকগাথায় ।

    ইন্টারনেট এ বিভিন্ন বিষয়ে ঘাঁটাঘাঁটি করতে গিয়ে আচমকাই এক ছবির দিকে দৃষ্টি আকর্ষিত হয় । ছবিটা বোধহয় ফকিরের মধ্যবয়েসের হবে ,দীর্ঘকায় , পাঠান জোব্বা জুব্বা পরিহিত ফকির তার অনুগামীদের মধ্যে থেকে সিধা তাকিয়ে আছেন সামনের দিকে । ক্রমে জানলাম তার আসল নাম ছিল 'মীর্জা আলী খান’ জন্ম ১৮৯৭ সালে উত্তর ওয়াজিরিস্থানের খাজুরি নামক জায়গার কাছে । প্রথমে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার সীমানায় তার পর আফগানিস্থানের জালালাবাদের কাছে qadiriyya সূফী স্কুল এ পড়াশুনা। এই সূফী স্কুল কোন কেন্দ্রীভুত ইমাম বা পীরের অধীনে নয় ,প্রত্যেক কেন্দ্রের নেতা তার পরিবেশ অনুযায়ী ইসলাম কে এবং তার প্র্যাকটিস কে বিকেন্দ্রীভূত এবং স্থান অনুসার ইন্টারপ্রেট করতে পারে , তার এই স্কুলিং এবং গণতান্ত্রিক সূফী মতবাদ পরবর্তীতে কিভাবে মীর্জা আলি খানের জীবন পরিচালিত করতে থাকে তা আমরা ক্রমশ দেখব । ’'মীর্জা আলী খান’ ১৯২৩ সালে তার হজ সমাপ্ত করে ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার ওয়াজিরিস্থানের জেলাশহর 'বান্নু’ র নিকট 'ইপি’ গ্রামে সূফী সাধক হিসাবে বসবাস করতে শুরু করেন, ইপি গ্রামের বাসিন্দারা তাকে তার মসজিদ এবং থাকার জন্য বাসস্থানের ব্যবস্থা করে দেয়, মির্জা আলি খান ইপি গ্রামে একটি মাদ্রাসা স্থাপন করে সাধারন শিক্ষার সাথে তার সেই সূফী মতের ইসলাম দর্শন প্রচার করতে থাকেন । ধীরে ধীরে হাজিসাহেব Daurs গোষ্ঠীর পুস্ত/পাঠান সমাজের কাছে সূফী সাধক সন্ত হিসাবে পরিচিতি লাভ করতে শুরু করেন , ইপি গ্রামে বাস করার দরুন 'মীর্জা আলী খান’কে উল্লেখ করা হতে থাকে ‘ইপির ফকীর ‘ হিসাবে। 'মীর্জা আলী খান’ নামক দীর্ঘকায় সেই পাঠান ক্রমে ‘ইপির ফকীর ‘ এ পরিবর্তিত এক অন্য মানুষ -কিন্তু তখনও ফকির ব্রিটিশ বিরোধী প্রতিবাদের দূর দূর পর্যন্ত সম্ভাবনা মুক্ত এক অখ্যাত গ্রামের সূফী সাধক মাত্র , না ফকির ব্রিটিশ কে নিয়ে মাথা ঘামাচ্ছেন না ব্রিটিশ ফকীর কে নিয়ে ।

    ইপির ফকিরের বিষয়টি আমাদের ভারতের ইতিহাসের সেই অজানা পেছনের দরজার দিকটির দিকে দৃষ্টি আকর্ষণ করায়, যেখানে এক অজানা অজ্ঞাত প্রায় নিঃস্ব ফকির, একা , বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ শক্তিকে গেরিলা যুদ্ধের শক্তিতে নাস্তনাবুদ করতে থাকেন -সেই সময়ের ফ্যাসিবাদি জোট বা ফ্যাসিবাদী বিরোধী জোটের আইডিয়া ফকিরের কাছে ছিল মূল্যহীন । তার না ছিল শাসক হওয়ার বাসনা না সম্পদ সংগ্রহের আগ্রহ বরং পাঠানদের যুগ যুগান্তের স্বাধীনতা , যে কোন অথরিটিকে অগ্রাহ্য করার বিলাসিতা এবং সেক্ষেত্রে প্রধান বাধা ব্রিটিশ বিরোধিতা তার কাছে ছিল অনেক বেশী মূল্যবান । আমাদের শিখিয়ে দেওয়া ইতিহাসের জ্ঞানে হতে পারে এ এক ট্রাইবদের ক্ষুদ্র স্বার্থের লড়াই ,কিন্তু এ হল পাঠান ভূমি বিদেশী আগ্রাসন মুক্ত করার এক অদম্য স্বাধীনতার লড়াই -হিটলার না স্তালিন কে বাকি বিশ্ব অধিকার করে নেবে , ব্রিটিশ কি শর্তে 'ক্যুইট ইন্ডিয়া’ করবে ইপির ফকিরের কাছে তা অপ্রয়জনীয় এক বিষয়বস্তু । অসামান্য এই 'ইপির ফকির’ ক্ষুদ্র গোষ্ঠী বিভক্ত পাঠানদের, পুস্তদের বিভিন্ন জাতি এবং উপজাতিদের একজোট করে রেখেছিলেন ১৯৩৬ থেকে ১৯৪৭ সাল পর্যন্ত ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র লড়াইয়ের ময়দানে এবং তৎপরবর্তী ১৯৪৭ সাল থেকে ১৯৫৫ সাল পর্যন্ত পাকিস্থানের ওয়াজিরিস্থানে দাদাগিরি বিরোধী লড়াই এ । এই সূফী সাধক পুস্ত/ পাঠানদের কাছে ছিলেন ব্রিটিশ বিরোধী সশস্ত্র লড়াইয়ের ঈশ্বরপ্রদত্ত ক্ষমতার অধিকারী সুপ্রিম লিডার , আমৃত্যু নেতা। তাই আমাদের ইতিহাসের বইয়ে ‘ইপির ফকিরের’ কথা উল্লেখ না থাকলেও ফকির বেঁচে থাকেন ওয়াজিরিস্থান, আফগানিস্থান এবং মধ্য এশিয়ার মানুষের হ্রদয়ে ।

    ঘটনাটা শুরু হয়েছিল ১৯৩৫ সালের এক আপাত নিরীহ বিষয় নিয়ে , বান্নু শহরের তখনো এক নাবালিকা হিন্দু মেয়ে 'রাম কৌর’ তার পড়শি স্কুল শিক্ষক 'আমির নুর আলির' সাথে গৃহত্যাগ করেন , স্বেছায় ইসলাম কবুল করার পর 'আমির নুর আলির' সাথে নিকাহ সম্পন্ন হয় ছেলেটির আত্মীয়র বাড়িতে, রাম কৌরের নূতন পরিচয় হয় ‘ইসলাম বিবি’ হিসাবে । মেয়েটির অভিভাবক ব্রিটিশ জেলা অধিকারীর কাছে নালিস জানান -সরকার তার নাবালিকা অপহরণের আইন বলে ছেলেটিকে এবং ইসলাম বিবির বিচার করে বান্নু শহরে প্রভূত উত্তেজনা এবং বিরোধিতার মধ্যে মিলিটারি পাহারাতে , দুজনেরই দু বছরের জেলের সাজা হয় । এই পর্যন্ত মুসলিম সমাজ ছোট খাট প্রতিবাদ সমেত মেনেই নিয়েছিল ঘটনাক্রম- কিন্তু আগুনে ঘ্রিতাহুতি হয় এর পরের বিশ্বাসঘাতকতায় - ইসলাম বিবি নাবালিকা হওয়ার কারনে এবং তার অভিভাবকগনের প্রভাবশালীতার দরুন ব্রিটিশ ইসলাম বিবি কে জেল এ না পাঠিয়ে বান্নু শহরের এক গণ্যমান্য মুসলমান অভিজাত ব্যাক্তির হেফাজতে থাকার অনুমতি দেয় -কথা ছিল দু বছরের সাজা খাটার অবশেষে ইসলাম বিবি সাবালিকা হোলে স্বামীর ঘর করতে পারে স্বেচ্ছায় -কিন্তু ইসলাম বিবির অভিভাবকগন অন্যায় প্রভাব ব্যবহার করে তৎকালীন পুলিস প্রধানের সহায়তায় ইসলাম বিবির নিরাপত্তার দোহাই দিয়ে মধ্যরাত্রে সেই গণ্যমান্য মুসলমান অভিজাত ব্যাক্তির হেফাজত থেকে ইসলাম বিবি কে মিথ্যার আশ্রয়ে প্রকৃত অর্থে অপহরণ করে তাদের পাঞ্জাবের জলন্ধর বা লুধিয়ানার আত্মীয় বাড়িতে পাচার করে । এই ঘটনায় খেপে ওঠে Darus সম্প্রদায় -ব্রিটিশের কাছে তারা অবিলম্বে ইসলাম বিবি কে ফেরত আনার দাবী পেশ করে । ইতিমধ্যেই ‘মীর্জা আলী খান’ 'বান্নু’ শহরের নিকট 'ইপি’ গ্রামে সূফী সাধক হিসাবে Daurs গোষ্ঠী এবং পুস্ত/পাঠান সমাজের কাছে যথেষ্ট পরিচিত এবং যথেষ্ট প্রভাবশালী , Daurs গোষ্ঠীর পুস্ত/পাঠানরা ফকিরের কাছে এই অন্যায় ঘটনার বিচারের পরামর্শ চান । ১৪ই এপ্রিল ১৯৩৬ সালে মীর আলির উদ্যোগে বিভিন্ন ট্রাইব দের এক সভা সংগঠিত হয় - ইপির ফকির সেই সভা হতে ব্রিটিশ বিরোধী জিহাদ ঘোষণা করেন । এখন জিহাদ ঘোষণা করলেই তো আর হলনা ব্রিটিশ কে উচ্ছেদ করতে চাই লোকবল, অর্থবল এবং সামরিক শক্তি । তাই ইপির ফকির বিভিন্ন ওয়াজিরি ট্রাইব দের সমর্থন আদায়ের লক্ষ্যে যাত্রা করলেন দক্ষিণ ওয়াজিরিস্থানে, এলো 'মেহসুদ’ ট্রাইবদের নিঃশর্ত সমর্থন । ইপির ফকিরের দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ,অনমনীয় ,অদম্য ,একগুঁয়ে জেদ এবং সাধুসুলভ জীবনযাপন ওই সময়ের শতধা ট্রাইব বিভক্ত ওয়াজিরিস্থানের অদ্ভুত স্বাধীনতা প্রিয়, প্রায় 'অ্যানারকিস্ট ‘ জনজাতিগণ কে নিয়ে আসে এক ছাতার তলায় , অল্পসময়ের মধ্যে গড়ে ওঠে প্রায় ১০,০০০জন যোদ্ধ্বার শক্তি সম্বলিত ফকিরের লস্কর ।

    ওয়াজিরিস্থান পৃথিবীর এক অদ্ভুত নৈরাজ্যের এরিয়া, খানিকটা কুরদ প্রভাবিত এলাকার সাথে তুলনীয় , হাজারো বছর ধরে এই অঞ্চলের জনজাতি নিজেদের স্বাধীনতা বজায় রেখেছে যে কোন মূল্যের বিনিময়ে । ১৮৯৩ সাল থেকে ডুরান্ড লাইন হিসাবে পরিচিত এই উত্তর পশ্চিম সীমান্ত এলাকার বাসিন্দাগন কোন তথাকথিত সভ্য সরকারের অস্তিত্বই কোনদিন স্বীকার করেনি, না ব্রিটিশ না বর্তমানের পাকিস্তান , বরং উপভোগ করে এসেছে এক অদ্ভুত অ্যানারকিক স্বাধীনতা । আমরা ব্রিটিশ প্রভাবিত ইতিহাস সূত্রে জেনে এসেছি নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স মানেই 'অসভ্য বর্বর জনজাতি' এবং এক 'আনকন্ট্রলেবেল' এরিয়া । এমনকি লর্ড কার্জনের এই অসভ্য বর্বর জনজাতিকে নিয়ন্ত্রণের ইচ্ছা অনুসার ব্রিটিশ সৈন্যবাহিনী যখন এই উত্তর পশ্চিম সীমান্ত এলাকার প্রায় প্রতিটি উপত্যকাতে নিজেদের উপস্থিতি প্রতিষ্ঠিত করে , গড়ে তোলে রাস্তা, যোগাযোগের ব্যবস্থা, গড়ে তোলে দুর্গ , নিয়ে আসে রেল লাইন তখনও শত চেষ্টাতেও ব্রিটিশ এই উপজাতিকে অস্ত্র রাখার স্বাধীনতা হতে বঞ্চিত করতে পারেনি । বাকি ব্রিটিশ শাসিত ভারতে বিনা লাইসেন্সে অস্ত্র রাখা যখন স্বপ্নের অতীত ,কালাপানি নিশ্চিত তখন এই অঞ্চলে বুকে রাইফেল এবং কোমরে তরোয়াল গুঁজে ব্রিটিশ শাসিত জেলা শহরে পাঠান যুবকদের বাজার করতে যাওয়া নিতান্ত মামুলি বিষয় ,আমাদের প্যান্টের পেছনের পকেটে মানিব্যাগ রাখার মতোই স্বাভাবিক । লর্ড কার্জন তার এই অসভ্য বর্বর জনজাতিকে শাসনের অদম্য ইচ্ছা স্বত্বেও পাঠানদের এই অ্যানারকিক স্বাধীনতা মেনে নিতে বাধ্য হয়েছিলেন অনেক ঠেকায় পরে ।

    অস্ত্র যোগাড় করতে যখন মাস্টারদা চট্টগ্রাম অস্ত্রাগার লুণ্ঠন করছেন ,জার্মানির মাউসার পিস্তলের চালান নিতে বাঘাযতীন বুড়ি বালামের তীরে অসম যুদ্ধ লড়ছেন তখন ব্রিটিশ তথ্য অনুসার (১৯৪০) কেবল মাত্র নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্সের পাঠান অধ্যুষিত এলাকাতে ৪১৪,০০০জন সক্ষম যোদ্ধা এবং ২৩৩,৫৬২ টি ব্রিচ লোডিং রাইফেল বা কারবাইন বর্তমান ,অথচ একই সময়ে বালুচিস্তানে রাইফেলের সংখ্যাটি মাত্র ১৮০০০। অর্থাৎ কাগজে কলমে সেই সময়ে ভারতের সমস্ত মিলিটারি শক্তির তুলনাতে বেশী সক্ষম লোকবল এবং আধুনিক অস্ত্রবল এই ‘ অ্যানারকিস্ট ‘ ট্রাইবাল এরিয়াতে বর্তমান ছিল । আমাদের তাই বুঝতে অসুবিধা হয়না 'ইপির ফকির’ কিসের বলে দীর্ঘ ১২ বছর নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্সে ব্রিটিশ কে নাকানি চোবানি খাইয়েছেন । গেরিলাযুদ্ধ চালানোর মত অস্ত্রবল এবং লোকবল কোনটারও খুব একটা অভাব ছিলনা এই অঞ্চলে ,যার অভাব ছিল তা হোল নেতৃত্ব এবং ইস্যুর অভাব। ইসলাম বিবির এক আপাত নিরীহ ঘটনা ট্রাইবদের মধ্যে পুঞ্জিভূত ক্ষোভের বিস্ফোরণ ঘটায় এবং ইপির ফকিরের জেদ ,একনিষ্ঠতা , লক্ষ্যচ্যুত না হওয়ার ক্ষমতা, নির্লোভ এবং সাধু সন্ত ফকিরের সূফী পন্থি ইসলাম নির্ভরতা ইপির ফকির কে গড়ে তোলে ব্রিটিশ বিরোধী জেহাদের অবিসম্বাদি নেতা হিসাবে । এই নেতৃত্ব বজায় ছিল তার মৃত্যুর দিন পর্যন্ত । এই ভয়ঙ্কর চ্যালেঞ্জের মোকাবিলা করতে এমনকি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়েও ব্রিটিশ, নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্সে স্থায়ী ভাবে পুরো গ্যারিসন বসিয়ে রাখতে বাধ্য হয় -এই বিশাল লোকবল ,মিলিটারি সম্পদ এবং অর্থব্যয় দীর্ঘ ১২ বছর একা এক অজ্ঞাত ফকির আটকে রেখেছিলেন নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ারের দুর্গম প্রান্তে, প্রকৃত অর্থে নাকে দম করে রেখেছিলেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ।

    অবশেষে ১৯৩৬ সালের নভেম্বর মাসে অর্থাৎ জিহাদ ঘোষণার ৬ মাসের মাথায় ফকির এর হাজার দশেক যোদ্ধা ব্রিটিশ বাহিনী কে সম্মুখ আক্রমণ করে , ১১ বছরের ওয়াজিরিস্থানের আপাত শান্তির অবসান ঘটে স্থায়ী রূপে । ফকিরের বাহিনীর সম্মুখ আক্রমণের পর এবং উভয়পক্ষের প্রভূত ক্ষয়ক্ষতির অবশেষে ব্রিটিশ পাল্টা আক্রমণের উদ্দেশ্যে ,ট্যাঙ্ক কামান এবং আধুনিক অস্ত্র সজ্জিত দুই ব্রিগেড পরিমাণ মিলিটারি পাঠায় ওয়াজিরিস্থানের Khasura অঞ্চলে ১৯৩৬ সালের নভেম্বর মাসে , ব্রিটিশের সাম্রাজ্যের আত্মবিশ্বাস ইপির ফকিরের বাহিনী ভেঙ্গে চুরমার করে Khasura র যুদ্ধে । মাত্র চার দিনের এই লড়াই এ লাশের পাহাড় , অর্থবল এবং প্রভূত সম্পদের ক্ষয়ক্ষতি বাধ্য করে ব্রিটিশ বাহিনীকে পশ্চাদপসরণ করার আপাত কৌশল অবলম্বন করতে । ব্রিটিশ বাহিনীর এই লজ্জাজনক পশ্চাদপসরণ ‘ইপির ফকির’ যে অজেয় এবং ঈশ্বরদত্ত ক্ষমতার অধিকারী এই রূপকথা মুখে মুখে ছড়াতে সাহায্য করে -ব্রিটিশ অসহায় দর্শকের মত দেখতে থাকে টোড়ী খেল ওয়াজির , মাহসুদ, ভিট্টানিস এই সমস্ত উপজাতি যারা স্বাভাবিক সময়ে একে অপরের চরম শত্রু, একে একে ইপির ফকিরের ছাতার তলায় ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা যুদ্ধে জমায়েত হচ্ছে । ইসলাম বিবির এক সামান্য ঘটনা যা ততদিনে ওয়াজিরি দের স্মৃতি হতে বিস্মৃত হতে বসেছে ইপির ফকিরের অসাধারণ নেতৃত্বে পরিণত হয় এক অসামান্য ব্রিটিশ বিরোধী স্বাধীনতা আন্দোলনে। যে স্বাধীনতা আন্দোলনের ইতিহাস না ভারত না পাকিস্তান কেউই উল্লেখ করেনা ।

    ইপির ফকিরের এই ব্রিটিশ বিরোধিতা এবং দীর্ঘকালীন সফলতা ওয়াজিরিস্থানের কোন বিচ্ছিন্ন ইতিহাস নয় এ এক ধারাবাহিক লড়াইয়ের সবথেকে সফলতম, দৃঢ়প্রতিজ্ঞ ,অনমনীয় ,অদম্য নেতৃত্বর ইতিহাস , এ এক তথাকথিত অসভ্য বর্বর জনজাতির এক অদ্ভুত অ্যানারকিক স্বাধীনতা রক্ষার ইতিহাস । ইসলাম বিবির ইতিহাস ফিকে হয়ে গেছে ততদিন ‘ ফকির ‘ গ্রামে গ্রামে ঘুরতে শুরু করেন তার লস্করের ছোট ছোট গ্রুপ সমেত ,প্রচার করতে শুরু করলেন ব্রিটিশের বঞ্চনার ইতিহাস ,ইসলাম বিপন্ন তার যুক্তি , স্বাধীনতা বিঘ্নিত - সুতরাং একজোট হওয়া যাক ,অস্ত্র হাতে নিন, ব্রিটিশ উচ্ছেদ করুন ওয়াজিরিস্থানের সীমানা থেকে এই ছিল তার প্রচারের মূল সূত্র । ফকিরের এই ব্রিটিশ বিরোধিতার জমি কিছুটা হলেও প্রস্তুত করে রেখেছিলেন 'আব্দুল গফফর খান’ যাকে আমরা সীমান্তের গান্ধী হিসাবে জানব কিছু সময়ের ব্যবধানে , ১৯৩০ এর সময়ে 'আব্দুল গফফর খান’ খুদায়ে খিদমৎগার আন্দোলন গড়ে তোলেন সারা নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স জুড়ে তা আমরা জানি - রেড সার্ট নামে পরিচিত 'আব্দুল গফফর খান’ এর পার্টি -মহাত্মা গান্ধীর বা কংগ্রেস পার্টির ব্রিটিশ বিরোধিতা যে ওয়াজিরিস্থানেরও স্বাধীনতার কাজে আসতে পারে এই মতামত বিভিন্ন জনজাতির মধ্যে প্রচার করতে শুরু করেন,তিনি কংগ্রেস পার্টিকে সমর্থনের আবেদন করেন বিভিন্ন জনজাতির মাঝে । কংগ্রেসের ভারতব্যাপী ব্রিটিশ বিরোধিতা সমর্থন আখেরে আমাদের ব্রিটিশ শাসন হতে মুক্ত করতে সাহায্য করবে এই মত গফফর খান স্বাধীনতার কিছুদিন পূর্বেও বিশ্বাস করতেন । ১৯৩০ - ১৯৩১ সালে 'আব্দুল গফফর খান’ এর রেড সার্ট পার্টির ওপর ব্রিটিশের আক্রমণ এবং ধরপাকড় পেশোয়ার গ্যারিসনে আভ্যন্তরীণ বিদ্রোহের উৎপত্তি সৃষ্টি করে এবং সেই সময়েই আফ্রিদিদের পেশোয়ার আক্রমণ ওয়াজিরিস্থানের জনজাতিগণের কাছে ব্রিটিশ যে ক্রমশ দুর্বল হচ্ছে তার বার্তা বহন করে আনে । ১৯৩৫ সাল নাগাদ সংবিধান সংশোধনের মাধ্যমে ব্রিটিশ, ভারতের তৎকালীন ১১টি প্রভিন্স কে কিছুটা সায়ত্বশাসনের অধিকার দেয় -আশ্চর্যের বিষয় হোল ১৯৩৭ সালে বাংলা ,আসাম ,সিন্ধ এবং পাঞ্জাব এ কংগ্রেস পরাজিত হলেও নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্সে যা মূলত মুসলমান প্রধান সেখানে কংগ্রেস সরকার গড়তে সক্ষম হয়, আব্দুল গফফর খানের ভাই নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্সের প্রথম মুখ্যমন্ত্রী হন -হয়ত 'আব্দুল গফফর খান’এর দীর্ঘ লড়াইয়ের এ ছিল ওয়াজিরিস্থানের অসভ্য বর্বর জনজাতির স্বীকৃতি । ওয়াজিরিস্থানের অসভ্য বর্বর জনজাতি জিন্নার মুসলিমলিগের প্ররোচনাতে পা মেলায়নি কখনো, না মিলিয়েছেন ইপির ফকির তার গণতান্ত্রিক সূফীবাদী শিক্ষার সূত্রে ,বরং 'আব্দুল গফফর খান’ এর ওপর আস্থাতে হিন্দু প্রধান কংগ্রেস তার কাছে ছিল ব্রিটিশ বিরোধী শক্তির বিশ্বাস্য বিকল্প ।তখনো তালিবান আসেনি ,ওয়াজিরিস্থান ইসলাম প্রধান হলেও তখনো সূফী মতের অনুসারী।

    ১৯৩৭ সালের এপ্রিল মাসে ফকিরের লস্কর বিংশ শতাব্দীর ব্রিটিশ ইন্ডিয়ার অন্যতম বৃহৎ ব্রিটিশ বিরোধী প্রথাগত মিলিটারি অভিযানটি চালায় দক্ষিণ ওয়াজিরিস্থানের 'সাউর টাঙ্গি ‘ এলাকায় । এই যুদ্ধে সাতজন অফিসার সমেত ৫৩ জন ব্রিটিশ সেনা প্রান হারান , আহত হন কয়েকশ সেনা । ব্রিটিশ অ্যাডমিন্সট্রেসান রয়্যাল এয়ারফর্স নিযুক্ত করে ,জ্যারিকেন পেট্রল বোমা ফেলা হতে থাকে ফকিরের এলাকায় , শস্যক্ষেত্র এবং জমানো শস্য জ্বালিয়ে দেওয়া চলতে থাকে অবাধে , গবাদি পশু টার্গেট করে গানশিপ হতে গুলি চালানো তখন নিত্য ঘটনা , ফকিরের ইপির বাসস্থান ধ্বংস করে দেওয়া হয় ,ফকিরের লস্কর কে সমর্থন করার শাস্তি হিসাবে গ্রামবাসীদের আর্থিক জরিমানা করা হতে থাকে , ফকিরের সমর্থক বেড়ে চলে উল্কার গতিতে । পরবর্তী দু বছর ব্রিটিশ সাম্রাজ্য প্রায় ৪০০০০ সেনা এবং রয়্যাল এয়ারফর্স নিযুক্ত করে শুধু এই অজ্ঞাত ,প্রায় নিঃস্ব ,এক সূফী ফকিরের সন্ধানে -ফকির প্রথাগত মিলিটারি অভিযান পরিত্যাগ করেন ক্ষয় ক্ষতি এড়াতে, অবলম্বন করেন ক্লাসিক গেরিলা যুদ্ধের কৌশল -সারা ওয়াজিরিস্থান জুড়ে নাস্তানবুদ করতে থাকেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্যকে -ব্রিটিশের প্রতিটি অভিযান , ট্র্যাপ ব্যর্থ হতে থাকে - একদিকে ফকিরের ওয়াজিরিস্থানের দুর্গম কিন্তু পরিচিত অঞ্চলের সুবিধা এবং সর্বদা মোবাইল গেরিলা বাহিনী অন্যদিকে লোটা, লস্কর ,তাঁবু ,রেডিও, ট্যাঙ্ক ,কামান, এবং দীর্ঘ সাপ্লাই লাইনের প্রথাগত ব্রিটিশ মিলিটারির স্লথতা ।প্রতিটি অভিযানের ব্যর্থতা ,ফকিরের টিকির নাগাল না পাওয়ার হতাশা , প্রতিদিন কোথাও না কোথাও শক্তি ক্ষয় , প্রতিদিনের বিপুল অর্থব্যয় - অবশেষে নাস্তানবুদ ব্রিটিশ সরকার ১৯৩৮সালের শেষের দিকে ফকিরের কাছে সন্ধি প্রস্তাব পাঠায় ,ফকির কে ওয়াজিরিস্থানের বাইরে এক বৃহৎ জমির লোভ দেওয়া হয় ,আপনি ওখানে শান্তিতে ধর্মাচারন করুন জিহাদ পরিত্যাগ করুন । নির্লোভ ফকির বিনিময়ে ব্রিটিশ অধিকারীগণের কাছে তিনটি শর্ত রাখেন ঃ-

    ১। ইসলাম বিবি কে তার স্বামীর হাতে ফেরত দিতে হবে
    ২। ব্রিটিশ কে ওয়াজিরিস্থানের সীমানা ত্যাগ করতে হবে
    ৩। যে সমস্ত অনুগামী এবং সাধারণ জনতাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে তাদের নিঃশর্ত মুক্তি দিতে হবে

    সে সময়ের বিশ্বপরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে ব্রিটিশ এর পক্ষে ফকিরের দ্বিতীয় দাবীটি মানা সম্ভব ছিলোনা সুতরাং অল্প কিছুদিনের যুদ্ধবিরতি ভঙ্গ হয় ১৯৩৯ সালের প্রথম দিকে । ফকির আশ্রয় নেন Gorwekht নামক আরও দুর্গম এলাকাতে । ব্রিটিশ বিরোধী লড়াইয়ে ফকিরের সফলতা , ফকিরের নাগাল না পাওয়ার ব্রিটিশ ব্যর্থতা ক্রমে রূপকথা এবং ফকিরের অলৌকিক শক্তি হিসাবে প্রচার হতে শুরু করে -আসতে থাকে উপজাতিদের মধ্যে থেকে অনুগামী, অর্থ , অস্ত্র এবং খাদ্য, এই সাধারণ মানুষের সমর্থনে বলীয়ান দৃঢ়চেতা ফকির স্বাধীনতার পূর্ব মুহূর্ত পর্যন্ত ব্রিটিশ বাহিনীকে নাস্তানুবুদ করতে থাকেন ,একটাই পলিটিকাল লক্ষ্য অবলম্বনে -যথাসম্ভব ব্রিটিশ বাহিনীকে ব্যাতিবস্ত রাখা যাতে ব্রিটিশ ওয়াজিরিস্থানের সীমানা ত্যাগ করতে বাধ্য হয় ।

    ১৯৩৭-১৯৩৮-১৯৩৯ সাল জুড়ে ফকির বাহিনীর অ্যামবুশ চলতে থাকে ব্রিটিশ নিয়ন্ত্রিত এলাকায় ,হাজারো ব্রিটিশ সেনা কচুকাটা হতে থাকে ,সাথে ব্রিটিশ বোমাবর্ষণে সাধারণ মানুষ , অবশেষে ব্রিটিশ গোয়েন্দা বাহিনী ‘আরসাল কোট’ এলাকায় ফকিরের অবস্থান নিশ্চিত করে ,রয়্যাল এয়ারফর্স ‘আরসাল কোট’ এলাকা মাটির সাথে মিশিয়ে দেয় গুরতর বোমাবর্ষণে ,কিন্তু তার পূর্বেই 'ইপির ফকির ' নিকটবর্তী এক নিরাপদ গুহার আশ্রয়ে - এই সময়ে ফকির মেলামেশা, যোগাযোগ এবং চিঠি লেখা শুরু করেন আফ্রিদি ,মহামান্দস এবং কুররাম ওয়াজিরি সম্প্রদায়ের সাথে , সাথে আফগান পুস্ত সম্প্রদায়ের কাছে আবেদন জানান তার ব্রিটিশ বিরোধী অভিযানে সমর্থনের জন্য । ১৯৩৭ সালের সেপ্টেম্বার মাসে তৎকালীন ইন্ডিয়ান ন্যাশনাল কংগ্রেসের সভাপতি পণ্ডিত নেহেরুকে ‘the leader of the liberty-loving people and the distiguished Head of the Indian Nation’ সম্বোধনে চিঠি লেখেন তার আন্দোলন সমর্থনের উদ্দ্যেশে ( নেহেরু কি উত্তর দিয়েছিলেন এবংওয়াজিরিস্থানের জনতা তাকে কি ভাবে পরবর্তীতে স্বাগত জানিয়েছিলেন সে এক দারুণ ইতিহাস ) , কিন্তু ফকিরের অনবদ্য নেতৃত্বগুন, সর্বজনগ্রাহ্যতা স্বত্বেও বিশাল কোন বাহিনী বা ইউনিফায়েড কম্যান্ড গড়ে উঠেনি যদিও সমর্থন ,অর্থ এবং অস্ত্রের সাহায্যস্রোত স্তব্ধ হয়নি কখনো ।

    একই সময়ে ১৯৩৮ সাল নাগাদ হিটলার এবং মুসলিনি তাদের কাবুলস্থিত এজেন্ট এবং এমব্যাসির মাধ্যমে ইপির ফকিরের সাথে যোগাযোগ স্থাপনের চেষ্টা চালাতে থাকে -শত্রুর শত্রু আমার মিত্র এই ফর্মুলাতে । ডেইলি হেরাল্ড তাদের পত্রিকার প্রথম পাতায় এক খবর করে এই যে ফকির সারা নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স জুড়ে -ইচ্ছা মত নিয়মিত অ্যাম্বুশ চালাচ্ছেন তার অর্থ এবং অস্ত্র আদতে যোগাচ্ছে মুসলিনি নতুবা এক নিঃস্ব ফকির এই দীর্ঘ কাল ধরে ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলন চালাচ্ছে কি উপায়ে ? ১৯৩৯ সালের ২৬এ ফেব্রুয়ারিতে সানডে ক্রনিকেল আরেক খবর করে যে ইতিমধ্যে ইতালি এবং ফকিরের মধ্যে রেডিও যোগাযোগ সম্পূর্ণ - কিন্তু তৎকালীন কাবুলস্থিত ব্রিটিশ মন্ত্রী এই দুই দাবীকেই খারিজ করেন কিন্তু প্রকারন্তরে স্বীকার করেন যে কাবুলস্থিত ইতালির মন্ত্রী ‘ Sigonr Pietro Quaroni’ ইপির ফকিরের সাথে যোগাযোগ করার তলে তলে এক চেষ্টা চালাচ্ছেন । আমাদের মনে আছে নিশ্চয়ই এই সেই বিখ্যাত Pietro Quaroni’ যিনি পরবর্তীতে সুভাষ চন্দ্র বসুকে কাবুল দূতাবাস থেকে ইতালির পাসপোর্ট বানিয়ে দেন এবংসেই পাসপোর্ট নিয়েই নেতাজী সুভাষ চন্দ্র বসু কাবুল হতে রাশিয়ার রাস্তায় জার্মানি পৌঁছান।

    যদিও হিটলার এবং মুসলিনির উদেশ্য ছিল ইপির ফকির কে ব্যবহার করে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের প্রাক্কালে নর্থ ওয়েস্টার্ন ফ্রন্টিয়ার প্রভিন্স জুড়ে ব্রিটিশ বিরোধী অশান্তি বজায় রাখা যাতে ব্রিটিশ তার বিপুল সৈন্যবাহিনী ওয়াজিরিস্থান থেকে সরাতে না পারে কিন্তু ফকির হিটলার এবং মুসলিনির লড়াইতো আর লড়তে আসেননি, তিনি তার শর্তে তার সুবিধা অনুযায়ী ব্রিটিশ বিরোধী লড়াই লড়তে থাকেন ,সাথে নিতে থাকেন ইতালি এবং জার্মানির অর্থনৈতিক এবং অস্ত্র সাহায্য । Sigonr Pietro Quaroni ১৯৪৩ এ মুসলিনির পরাজয়ের পর আত্মসমর্পণ করেন এবং তার বিস্তৃত জবানবন্দিতে ব্যাখ্যা করেন যে শত ইচ্ছা থাকা স্বত্বেও ইতালি দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হওয়ার এক বছর পর মাত্র ইপির ফকিরের সাথে প্রত্যক্ষ সম্পর্ক গড়ে তুলতে সক্ষম হয়। Enrico Anzilotti ইতালিয়ান এমব্যাসির সেক্রেটারি ওইসময়ে পাঠানের ছদ্মবেশে ইপির ফকিরের সাথে যোগাযোগ গড়তে সক্ষম হন। ১৯৪১সালের জুন মাসে -ফকির তার অ্যামবুশ এবং ব্রিটিশ বিরোধী আক্রমণের গতি বাড়াতে অন্ প্রিন্সিপাল রাজী হন , কিন্তু তার দাবী ছিল ওয়ারলেস ট্রান্সমিটার তার সাথে অপারেটর , ২৫০০০ ব্রিটিশ পাউন্ড প্রত্যেক দু মাস অন্তর ক্যাশ এবং অস্ত্র গোলা বারুদের নিয়মিত জোগান - চারিদিকে তখন প্রচুর গুজব যে ফকিরের হয়ে জার্মান ইঞ্জিনিয়ার দিবারাত্র কাজ করছে , ইতালির অর্থ এবং অস্ত্রর জোগান আসছে নিয়মিত কিন্তু ১৯৪১সালের সেই অস্থির সময়ে ব্রিটিশ লক্ষ্য করে আশ্চর্যজনক ভাবে ইপির ফকির তুলনামূলক ভাবে পুরো বছর জুড়ে আপাত নিষ্ক্রিয়, অথচ ইতালি এবং জার্মানির সাহায্যপুষ্ট ফকিরের বাহিনীর বেশী সক্রিয় হওয়ার কথা।

    ব্রিটিশ গোয়েন্দা বাহিনী ১৯৪২-সাল নাগাদ নিশ্চিত হয় যে ফকির কে ইতালি কোন ওয়ারলেস ট্রান্সমিটার বা বিশেষ কোন অস্ত্র বা প্রতিশ্রুত অর্থ প্রদান করতে পারেনি , ফকিরের অঞ্চলে না কোন জার্মান ইঞ্জিনিয়ার কাজ করছে না তৈরি হচ্ছে কোন মিলিটারি এয়ারপোর্ট - ইতালি ফকির কে আদতে দিতে পেরেছে একটি সাধারণ মিলিটারি রেডিও সেট হয়তো বা কিছু অস্ত্র এবং অর্থ । একই সময়ে ফকিরের লেখা একটি চিঠি ব্রিটিশ গোয়েন্দাদের হাতে আসে , চিঠি টি ফকির লিখেছিলেন দক্ষিণ ওয়াজিরিস্থানের ধর্মগুরুগণের উদ্দেশ্যে - তাতে তিনি লেখেন যে আমাদের নিয়মিত ব্রিটিশ বিরোধী লড়াই জারী থাকলেও জার্মানি কে আমরা সাহায্য করতে রাজী নই কারন জার্মানিও ইসলাম বিরোধী । ব্রিটিশের এই আপাত শান্তির অবসান ঘটে খুব অল্প সময়ের মধ্যে। ফকির ব্রিটিশ মিলিটারি ইনফ্রাস্টাকচার তৈরি করার কাজে নিয়জিত কনট্রাক্টর এবং শ্রমিকদের জরিমানা করতে শুরু করেন , ১৯৪২ সালের মে মাসে ফকির দুর্গের মত গড়ে তোলা ব্রিটিশ আউটপস্ট 'দত্তা খেল' দখল করে নেন মাত্র ৫০০ লস্কর এবং কিছু মেশিনগান ও লঝজরে কামানের সাহায্যে । ব্রিটিশ হাল্কা ট্যাঙ্ক সজ্জিত এক রিলিফ কলাম পাঠায় সাথে বিমান বাহিনী দত্তা খেল পুনরুদ্ধারের আশায় । কিন্তু ফকির 'দত্তা খেল’ প্রবেশের সমস্ত রাস্তা আক্রমণের পূর্বেই কেটে অগম্য করে রেখেছিলেন , রিলিফ কলাম 'দত্তা খেল’ পৌঁছাতেই পারেনা তাদের ট্যাঙ্ক কামানের লটবহর নিয়ে , অবশেষে দুই ব্রিগেড ইনফ্যান্ট্রি পাঠিয়ে ব্রিটিশ 'দত্তা খেল' পুনরউদ্ধারে সক্ষম হয় সেই বছরের আগস্ট মাসে অর্থাৎ প্রায় চারমাস ফকির দখল করে রাখেন দত্তা খেলের মত এক গুরুত্বপূর্ণ আউটপস্ট । প্রায় একই সময়ে মুল ভারতভূমিতে শুরু হয় ১৯৪২এর কুইট ইন্ডিয়া আন্দোলন , আর সিন্ধ বালুচিস্তান অঞ্চলে পির পাগারের নেতৃত্বে চলতে থাকে ট্রেন লাইন স্যাবটেজ। ১৯৪২ এর জুন মাসে সমস্ত অঞ্চল জুড়ে জারী হয় মার্শাল ল । ১৯৪৩ সালের শেষের দিকে পীর পাগার ব্রিটিশ শক্তির হাতে ধরা পরেন এবং সেই বছরেই তার ফাঁসীর অবশেষে হুর দের এই ব্রিটিশ বিরোধী স্যাবটেজ আন্দোলনের সমাপ্তি ঘটে । ১৯৪৪ সালে নর্থ ওয়েস্ট ফ্রন্টিয়ার অস্বাভাবিক এবং আশ্চর্যজনক ভাবে শান্ত ওই দু একটা কাস্টমারি রেইড বা ব্রিটিশ বিমান হানার বদলার রুটিন এর কথা বাদ দিলে।

    দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবশেষে ব্রিটিশ যখন ভারত ছাড়ার প্রস্তুতিতে ব্যস্ত, চারিদিকে ক্ষমতা বণ্টনের তীব্র রাজনীতি , জিন্না ,নেহেরু ,মহাত্মা যখন ভাগ বাঁটোয়ারার হিসাব নিকাস করছেন , আব্দুল গফফর খান বান্নু শহরে স্বাধীন পাখতুনিস্থানের দাবীতে রেজোলিউশান পাস করছেন, দেশ জুড়ে সংগঠিত হচ্ছে হিন্দু মুসলমান দাঙ্গা সেই অস্থির সময়েও অদম্য ফকির কিন্তু তখনো ব্রিটিশ বিরোধী আক্রমণ বন্ধ রাখেন নি , ১৯৪৬ সালে ফকির পুনরায় মাহসুদ এবং ওয়াজিরি দের সঙ্ঘঠিত করে ব্রিটিশ বিরোধী লড়াই তীব্র করে তোলেন সাথে চলতে থাকে ব্রিটিশের বোমা বর্ষণের ধারাবাহিক বদলার অভিযান -একা অদম্য সেই ইপির ফকির তখন লড়ে চলেছেন বিস্তীর্ণ ওয়াজিরিস্থান জুড়ে । প্রত্যহ অ্যামবুশ ,প্রত্যহ বোমাবর্ষণ । স্যার টাইটলার তখন ফ্রন্টিয়ার ক্যাভালরির এক সাধারণ অফিসার - তার ভাষায় ‘and always there were the raids, the sudden alarm, the long dust-choked ride through the stiftling heat of a july night, clattering out on the stony glacis of the frontier hills, and away forty miles before dawn only to find as often as not that birds had flown, leaving a trail of death and destruction behind them.’

    অবশেষে স্বাধীনতা আসে ১৯৪৭সালের অগাস্ট মাসে । সীমান্ত গান্ধী এবং ইপির ফকির দেখেন এ তো সেই জিন্নার হাতে ব্রিটিশ উত্তরাধিকারের সমর্পণ, ওয়াজিরিস্থানের স্বাধীনতা কই ? ১৯৪৮ সালের ১২ই মে ইপির ফকির তার তৎকালীন হেডকোয়ার্টার গুর্বেক থেকে পোস্টার প্রকাশ করেন এই বলে যে ' Pakistan was a creation of the British and Mohammad Ali Jinnah was a British agent ‘ ১৯৪৮ সালে ইপির ফকির কে সাহায্য দেওয়ার অভিযোগে আব্দুল গফফর খান কে পাকিস্তান সরকার গ্রেপ্তার করে এবং ৩বছরের জেলের সাজা শোনায়।

    ১৯৪৮সালের জুন মাসে ইপির ফকির পুনরায় 'দত্তা খেল’ আক্রমণ করেন এবং পাকিস্তান সরকারের কব্জা থেকে দত্তা খেল দখল করে নেন ,পাকিস্তান তখন নানা আভ্যন্তরীণ সমস্যা এবং কাশ্মীর নিয়ে ব্যস্ত ফকিরের সাথে সম্মুখ যুদ্ধ তাঁদের পক্ষে তখন অসম্ভব্ ,পাকিস্তানের বহুল প্রচারিত পত্রিকা Dawn তাঁদের প্রথম পাতায় খবর প্রকাশ করে ভারত তার আফগানিস্থানের দূতাবাসের মাধ্যমে ঘুর পথে ফকির কে সাহায্য যোগাচ্ছে পাকিস্তানের অভ্যন্তরে অশান্তি সৃষ্টি করার জন্য । পাকিস্তান ফিরে যায় ব্রিটিশ প্রদর্শিত বিমান হানার রাস্তায় , ফকিরের বাহিনী কে ছত্রভঙ্গ করতে দত্তা খেল এ চলতে থাকে বিমান হানা, বৃত্ত সম্পূর্ণ হয় । ইপির ফকির কে পাকিস্তানের শত্রু, সন্ত্রাসবাদী ,বিদেশী শক্তির দালাল হিসাবে পাকিস্তান প্রচার করতে থাকে গণ মাধ্যমে ,ফকির সৃষ্টি করেন এক জাতীয় সমস্যার। হয়ত এই কারনেই পাকিস্তানের ইতিহাসের বইয়ে ইপির ফকিরের উল্লেখই নেই আর থাকলেও তা আছে কালো অক্ষরে ।

    ১৯৪৯সালের ৯ই ডিসেম্বার ইপির ফকির 'GHAZI’ নামক পত্রিকাতে পাকিস্তান সরকারের উদ্যেশে এক ঘোষণা পত্র প্রকাশ করেন তার ইংরাজি অনুবাদটি ‘ “From August 15, 1947, when the British appointed Mr. Jinnah as the Governor – General of Pakistan, the Pir of Manki, Pir of Zakori, Doctor Khan Sahib, Abdul Ghaffar Khan and other prominent figures amongst Pukhtoons raised their voice for the introduction of Shariat and freedom for Pukhtoonistan. But against these demands, intending to bring Pukhtoons under slavery with the help of gold and bayonets, the so-called Islamic Government began to promote the religion of Mirza Ghulam Ahmad Qadiyani, and continued the enforcement of the British supremacy…. Pukhtoons are like one body and cannot be divided into two. Generosity and sense of honour is the heritage of Pukhtoons.

    They also have the sharpest sword in their possession. Despite 14 years of continued bombardment by the Britishers the people of Waziristan did not accept slavery, being courageous, like the Faqir of Ipi who did not flee from the battlefield during the past 14 years. However two are the major defects (I) the introduction of man-made laws, and (II) encroachment upon the legal rights of Pukhtoons. We will either achieve freedom or will bring distruction for the whole of the country. Long live Pukhtoonistan,.”

    ১৯৫৪ সালের নভেম্বর মাসে ফকিরের অন্যতম বিশ্বস্ত অনুচর এবংপ্রধান সেনাপতি খালিফা খাট্টাক সত্তর জন অনুগামী সহিত সেই বান্নু শহরে পাকিস্তানের অধিকারীদের কাছে আত্মসমর্পণ করে । এই আত্মসমর্পণ ফকিরের লড়াই করার ক্ষমতা অনেকাংশে খর্ব করে, যুদ্ধ ক্লান্ত ফকির ততদিনে হাঁপানির প্রকোপে আক্রান্ত ,অবশেষে ১৯৬০ সালের এপ্রিল মাসে এই অসাধারণ স্বাধীনতা সংগ্রামীর জীবনের অবসান ঘটে ।

    ওয়াজিরিস্থান কেন এক অনন্য স্থান তা সামান্য কয়েকটি পংতিতে ব্যাখ্যা করেছিলেন ওই এলাকায় কর্মরত এক ব্রিটিশ সৈনিক:-

    ‘ we are content with discord ;we are content with alarms;we are content with blood; but we never will be content with a Master’

    ইতিহাস চির বিদ্রোহী ,কর্তৃত্ব অস্বীকার কারী জনজাতি এবং তার অদম্য নেতা কে মনে রাখেনা -সম্ভবত ইপির ফকির তাই ইতিহাসের পুস্তকের ফুট নোটেও স্থান পাওয়ার অযোগ্য!

    ( ফকিরের বিষয়ে আরও বিশদে পাঠক যদি কিছু জানাতে পারেন, আগ্রহী থাকবো)

    তথ্য সূত্র ঃ- 'ফকির অফ ইপি’ বিষয়ে তথ্য সীমিত, কিছু তথ্য বেশ একপেসে বলে মনে হয় , তবুও যে সমস্ত সূত্র এই ব্লগটি লিখতে সাহায্য করেছে তার প্রধান সূত্রগুলি ঃ-
    1. wikipedia ঃ- Fakir of Ipi
    2. Hauner ,Milan (Jan 1981 ) One Man against the Empire :- The Fakir of Ipi and the British in Central Asia on the Eve of and during second world War (available online)
    3. www.telegraph. co.uk :- How British empire failed to tame the terrorist Fakir of Ipi( 15Nov 2001) (available online)
    4. www. tribune.com.pk :- The Fakir of Ipi of North Waziristhan (15th Nov 2010) (available online)
    5. www. paklinks.com :- Fakir of Ipi
    6. www. content.time.com :- (Time April 19.2007 ) The original insurgent (available online)
    7. www. eresources.nlb.gov.sg :- The Strait Time,1st June 1937-Rebel Fakir or Ipi in Flight -23 British Casualties in latest clash (available online)
    8. www. eresources.nlb.gov.sg :- The Strait Time, 6th June 1937 -Fakir of Ipi -Fresh Move Expected ( available online)
    9. www. eresources.nlb.gov.sg :- The Strait Time,10th August 1941 - Fakir of Ipi Losing Hold on Followers.( available online )
    10. www. pasthunforums.com :- Fakir of Ipi
    11. Guardians of Nation :- Pakistan Blog sunday 30th March 2014 - Faqir of Ipi Hero of Waziristhan (available online )
    12 The London Gazette: Tuesday the 15th of August 1939 ( available online )
    13। www. khyber.org
    14. :- ( Time July 25 1938 ) India:- Elusive Ipi (available online)
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৯ অক্টোবর ২০১৫ | ২১৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Jhoompi | 111.221.136.141 (*) | ০২ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:২৩69709
  • খুব ইন্ফর্মাতিভ লেখা।
  • কল্লোল | 230.226.209.4 (*) | ০২ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৫৫69710
  • দারুন লেখা। এনার সম্পর্কে জানতামই না। ধন্যবাদ দেবব্রতবাবু।
  • ranjan roy | 24.97.246.239 (*) | ০৩ নভেম্বর ২০১৫ ০২:২৩69711
  • অনেক ধন্যবাদ, দেবব্রতবাবু।।
  • de | 24.139.119.174 (*) | ০৩ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:৪৬69712
  • খুবই ভালো লেখা - এমন আরো লিখুন!
  • সে | 198.155.168.109 (*) | ০৩ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:০৪69713
  • আরিব্বাস! বিন্দু বিসগর্ জানতাম এই ফকির সম্পর্কে। গোগ্রাসে গিললাম লেখাটা।
  • sinfaut | 11.39.63.3 (*) | ০৪ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:০২69714
  • নতুন বিষয়ে জানলাম। থ্যাঙ্কু।
  • sosen | 184.64.4.97 (*) | ০৪ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:২৪69715
  • বাঃ। কিছুই জানতাম না তো, কোনো ইতিহাস বইতেও পড়িনি। সূত্রগুলি দেবার জন্য ধন্যবাদ, আর খুব ভালো লাগল।
  • d | 144.159.168.72 (*) | ০৪ নভেম্বর ২০১৫ ০৬:০৬69716
  • কি আহ্চর্য্য কোনোদিন নামই শুনিনি এঁর।

    এইজন্যই আসলে ব্লগ পড়া, যা প্রচলিত ইতিহাসের বাইরের তথ্য, উপকথা ইত্যাদিকে তুলে আনে। অনেক ধন্যবাদ জানবেন এই লেখাটির জন্য।
  • nilimesh | 212.142.103.194 (*) | ০৪ নভেম্বর ২০১৫ ০৯:৪৯69717
  • তথ্যে ঠাসা বেশ বড় কিন্তু দুরন্ত অজানা ইতিহাস ,মনে হচ্ছিল আরেকটু লিখুন । লেখাটির জন্য রইল ধ্যনবাদ ।
  • alok | 212.142.125.239 (*) | ০৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:২৭69718
  • নুতন ইতিহাস মানে না জানা ইতিহাস জানলাম ,লেখাটি প্রকাশিত করার জন্য সাধুবাদ রইল।
  • সুব্রত সরকার | 132.180.48.110 (*) | ০৫ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:০৭69719
  • অসাধারণ লেখা দেবুদা !
  • Sakyajit Bhattacharya | 116.51.31.203 (*) | ০৬ নভেম্বর ২০১৫ ০১:০৭69721
  • ব্যাপক লেখা। এর উদাহরণটা দিয়েই বোঝাতে চাইছিলাম, কেমনভাবে ধর্ম একটা প্রতিরোধী শক্তি হয়ে ওঠে।

    দারুণ লিখেছেন, ধন্যবাদ একটা বিস্মৃত অধ্যায় আমাদের সামনে আনার জপ্ন্য
  • | 127.194.83.55 (*) | ০৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:৪৪69722
  • সাক্যজিত অন্যত্র যেমন লিখেছেন,
    "ধর্মের লোকায়ত ও মানবিক দিক রেজিস্টান্সের গুরূত্বপূর্ণ উপাদান হহতে পারে এটা ইতিহাস দেখিয়েছে। আল কায়েদার ইতিহাস দেখুন, ইসলামের বিভিন্ন প্রতিরোধী সেক্টগুলোর ভয়েসকে নিজের মধ্যে শুষে নিয়ে এবং তাদের আলটিমেটলি দমন করে নিজে উঠে এসেছে একটা চরমপন্থী শক্তি হিসেবে। আল কায়েদা রেজিস্টান্স দিচ্ছে এরকম বলিনি, কিন্তু তার বক্তব্যুগুলো শোনা জরুরী কারন তার মধ্যে গত এক শতাব্দীর পলিটিকাল ইসলামের রেজিস্টান্স লুকিয়ে আছে।"

    আমার মনে হয় ইপির ফকির আর আল কায়দা-- এদুটো পাশাপাশি একসাথে ভাবতে অনেকেই ঠিক রাজি হবেন না।
    দেবব্রত কী বলেন?
  • দেবব্রত | 213.147.88.114 (*) | ০৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:১০69723
  • জ , মোটামুটি ৫০বিসি থেকে প্রাপ্ত ইতিহাস অনুযায়ী এই এলাকার জনজাতি এক অনন্য অ্যানারকিক স্বাধীনতা উপভোগ করে এসেছে তারা না হয়েছে শাসিত না করেছে শাসন, তবে যেই রাজাই তাদের শাসন করতে চেয়েছে তাদের তখৎ এরা অনেকবারই পালটে দিয়েছে ,কিন্তু পরিবর্তে নিজেদের কোন শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তন করেনি । এই ক্ষুদ্র গোষ্ঠী বিভক্ত জনজাতি এক অলিখিত 'এথিকস' যাকে কেউ কেউ পাঠান এথিকস বলেন তার গাইডেন্সে পরিচালিত । তাই ফকির ব্রিটিশ উচ্ছেদ অবশেষে তার এক অলটারনেটিভ শাসন প্রতিষ্ঠা করতেই চাননি -খুব সহজ লক্ষ্য , আমাদের এলাকা হয় ভদ্রভাবে পরিত্যাগ কর অথবা প্রতিরোধের সম্মুখীন হও । আমাদের চিরাচরিত অ্যানারকিক স্বাধীনতা নিয়ে থাকতে দাও ।

    নর্থ ওয়েস্ট প্রভিন্সে এমনকি আফগানিস্তানের পুস্ত এলাকায় ব্রিটিশ পূর্ববর্তী সময় থেকেই অনেক শিখ সম্প্রদায় এবং হিন্দু পাঞ্জাবী বসবাস করে এসেছে ,পাকিস্তান পরবর্তী দেশত্যাগের সময় নর্থ ওয়েস্ট প্রভিন্সে এমনকি আফগানিস্তানে একটাও সংগঠিত হিন্দু/শিখ গণহত্যার ঘটনা ঘটেনি ,যা ঘটেছে তা হোল মুসলিম লীগ প্রভাবিত পাকিস্তানের পাঞ্জাব এবং সিন্ধ প্রদেশে । দেশভাগের অনতিপূর্বে লাহোরে এক মসজিদ এবং মন্দিরে গণহত্যার ঘটনা ঘটে ,গফফর খান দুই ক্ষেত্রেই তীব্র বিরোধিতা করেন এবং শান্তি বজায় রাখার সমর্থনে আন্দোলন করেছিলেন , ফকির দুই ক্ষেত্রেই এই অনাবশ্যক হিংসার নিন্দা করেছিলেন , কিন্তু একই সাথে মসজিদ আক্রমণে হিন্দু সম্প্রদায় কে দোষী সাব্যস্তও করেছিলেন , আসলে মুসলিম লীগের প্রচারিত মুসলমান ধর্ম ফকিরের কাছে ইন্ডিয়ার শিক্ষিত লোকের ধর্ম বলে মনে হত , জিন্না কে ব্রিটিশের দালাল বলে ঘোষণা করে পোস্টার ছেপেছিলেন এবং তথাকথিত ইসলামী রাষ্ট্র পাকিস্তানের আধিপত্য কখনোই মেনে নেননি । চীনের দুই মুসলিম প্রধান এলাকার উল্লেখ বিষয়টি স্পষ্ট করতে পারে চীন যখন উইঘুরস মুসলমানদের দমন করছে রাষ্ট্রীয় শক্তি প্রয়োগ করে তখন সেই চীন ই হুই মুসলমানদের ধর্মীয় স্বাধীনতায় হস্তক্ষেপই করছেনা কারণ এই হুই মুসলমান গন সেই ইপির ফকিরের একই সূফী স্কুলের অনুগামী তারা অনেক বেশী সেকুলার । এই অন্য জাতি ,ধর্মের প্রতি সহনশীলতার যে পাঠান এথিকস তার নাম ঃ- Melmastia

    এইবার আসি আনুগত্যের প্রশ্নে , এই অঞ্চলের পাঠান গন বৃহৎ কোন সমস্যার সম্মুখীন হোলে এক অদ্ভুত পার্লামেন্ট বসায় ,যাকে আমরা জিগরা বলে জানি ,রীতিমত তর্কবিতর্ক হয় এবং অবশেষে যা সিধান্তই হোকনা কেন সেই সিধান্ত শেষ রক্তবিন্দু পর্যন্ত পালিত হয় , এ এক কমিউনিটি আনুগত্য ,কোন ব্যক্তি বিশেষ বা পার্টির প্রতি আনুগত্য নয় , এমনই এক জিগরা সংঘটিত হয়েছিল ১৯৩৬ সালে যেখানে ফকির জিহাদ ঘোষণা করেন -এ এক সম্মিলিত সিধান্ত ,প্রতিটি বৃহৎ সিধান্তের পূর্বে এই পার্লামেন্ট সংগঠিত হয়েছে , স্বাধীনতার পরে আফগান পুস্ত এবং নর্থ ওয়েস্ট প্রভিন্সের পুস্তরা এক অতিবৃহৎ জিগরা সংগঠিত করে এবং ফকির পুখতুনিস্তান আন্দোলনের প্রধান হিসাবে নির্বাচিত হন এই সম্মিলিত শক্তি এবং সমর্থনি ছিল তার পাকিস্তান বিরোধী আন্দোলনের আনুগত্যের ভিত্তি । তবে সাথে ধর্ম এবং অর্থনৈতিক স্বাধীনতায় ব্রিটিশ হস্তক্ষেপও ফকিরের প্রতি আনুগত্যের কাড়ন ছিল । হাজারো বছর ধরে আফ্রিদি সম্প্রদায় খাইবার পাস কন্ট্রোল করে আসছে , প্রতিটি আয়াত এবং নিয়াতের ওপর তারা লেভি বসায় (এমনকি আজকেও বসায় ) বিনিময়ে তারা নিরাপত্তা দেয় ,ব্রিটিশ এই আধিপত্য খর্ব করে পেশোয়ারে গ্যারিসন বসিয়ে -এই লেভি আদায়ের স্বাধীনতায় ব্রিটিশ হস্তক্ষেপ হয়ত আফ্রিদিদের ১৯৪২ সালে পেশোয়ার আক্রমণে উদ্বুদ্ধ করে থাকতেও পারে । তবে এই যে এতবড় যে লড়াই টি সংগঠিত হোল তা কিন্তু কোন বিকল্প শাসন প্রতিষ্ঠা করার উদ্দেশ্যে নয় বরং পাঠান এথিকস চটকে দেওয়ার কারনে এবং হাজারো বছরের অ্যানারকিক স্বাধীনতা রক্ষার লড়াই No Master & No State ।
  • ranjan roy | 132.162.242.198 (*) | ০৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:২১69724
  • বাকুনিন ও প্রুধোঁ কথিত স্টেটলেস গণতন্ত্র (অ্যানার্কিজম)?
  • | 127.194.14.42 (*) | ০৬ নভেম্বর ২০১৫ ০৬:১৫69725
  • আমি এসম্পর্কে কিছুই জানি না। উইকি থেকে চারলাইন পড়ে চালাকি করার মানে হয় না। তাই এখুনি যা পড়লাম সেটা ঠিক কিনা জেনে নেবার চেষ্টা করছি, এখানেই।

    যেটা পড়লাম সেটা হল Melmastiaএর মানে অতিথিপরায়ণতা (সহনশীলতা নয়?) আর পাঠান এথিক্স কেবল Melmastiaতে সীমাবদ্ধ নয়। অন্তত nanawatai মানে শিবিরাজের পায়রাকে আশ্রয় টাইপ, ও badal বা প্রতিশোধ, এসবও আছে। এসব সিতু মিঞার গল্পের সঙ্গে বেশ মিললও বটে। তা থাকগে, কিন্তু পাঠান এথিক্সে ছেলেরাই একমাত্র উত্তরাধিকারী।

    জিগরা জাতীয় কথা আগেও পড়েছি, মনে হচ্ছে খবরের কাগজে। এখন দেখছি loya jirga-- জিরগা, জিগরা নয়। সেটা কিন্তু আফগানিস্তানে 'রাজা' আমান্নুলা খানও ডেকেছিলেন। আর সেটা সর্দারদের মিটিং। আমার মনে হয় ভারতে এর খানিক প্যারালাল পাচ্ছি জাঠদের খাপ পঞ্চায়েতের সঙ্গে। জিরগা-তেও অনার কিলিং হতো, তা বলছি না। বলছি জিরগা সর্বসাধারণের মতদানের জায়গা না হতেও পারে, ক্ষমতায় থাকা কয়েকজনের 'গণতন্ত্র' হতেও পারে।

    ranjan roy, "বাকুনিন ও প্রুধোঁ কথিত স্টেটলেস গণতন্ত্র (অ্যানার্কিজম)" জিনিসটা আমার ভালো জানা নেই। কিন্তু গণতন্ত্র আর সর্দার-শাসন (যদি জিরগা সেরকম 'পার্লামেন্ট' হয়) এক জিনিস, এমন কথা, দর্শনের যতোই দারিদ্র থাকুক না কেন, ঊনবিংশ শতকের উদ্ভাসিত সমাজতান্ত্রিকরা কেউ বলবেন ব'লে মনে হয় কি?

    দেবব্রত, জিরগা বা জিগরা নিয়ে আপনি যদি একটু আলোকিত করেন।
  • | 127.194.19.39 (*) | ০৬ নভেম্বর ২০১৫ ১১:৫৫69720
  • আনকনভেনশনাল লেখা। না-জানা বিষয়। দেবব্রত, ধন্যবাদ। কিছু প্রশ্ন করছি, যদি আরেকটু জানা যায়।

    সাম্রাজ্যবাদ বিরোধিতা করে ইপির ফকির কেমন শাসন চেয়েছিলেন বোঝা গেল না। অবশ্য সবকিছু একটা লেখাতেই বুঝিয়ে দিতে হবে এমন দিব্যি নেই কিছু।

    ইপির ফকির সেখানকার 'সংখ্যালঘু'দের জন্য কী ভেবেছিলেন? হিন্দু মেয়েকে বিয়ে করা নিয়ে যেখানে গল্প শুরু, সেখানে এই প্রশ্নটা জরুরি।

    তাঁর অনুগত যারা হয়েছিলেন তাদের অস্ত্র ছিল অনেক। কিন্তু আনুগত্যের প্রকৃতি কেমন ছিল? জনজাতির ট্র্যাডিশনাল পথের আনুগত্যের একটা ধারণা আমাদের আবছাভাবে আছে, সেটা পুরো ঠিক নয় নিশ্চয়ই, কিন্তু মোটের ওপর সেইরকম 'খুদাকসম' আনুগত্য কি? এটাতে আমি নিশ্চয়ই অতিসরলীকরণ করছি, একমাত্রিক আনুগত্য না হবারই কথা, কিন্তু কেমন ও কেন তাঁর নেতৃত্ব মেনে নেয় লোকে?

    আর, কেমন ছিল তাঁর ব্রিটিশ-পাক বিরোধী 'দেশ' বা অঞ্চলের স্বপ্ন, চেষ্টা?
  • Debabrata | 53.251.171.149 (*) | ০৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:০৬69726
  • রঞ্জন বাবু , বাকুনিনের anarchism এ No God এক প্রাথমিক শর্ত কিন্তু এই জনজাতির ক্ষেত্রে God বা ইসলাম ভীষণ গুরুত্বপূর্ণ তবে একধরনের অ্যানারকিক স্বাধীনতা তো বটেই।

    জ , মহিলাদের পাঠান সমাজে স্থান ? এক কথায় জটিল । বাকি আদিবাসী জনজাতিদের মধ্যে মহিলারা যেরকম স্বাধীনতা উপভোগ করেথাকেন তার অনেকটাই পাঠান মহিলারা উপভোগ করলেও ঐতিহাসিক কারনে সীমাবদ্ধতাও বর্তমান , পাঠান মহিলা বোরখা পড়তেন না কিছুদিন পূর্বেও এখনো কেবলমাত্র নিজেদের এলাকার বাইরে গেলে বোরখা পড়েন হয়ত তালিবানই প্রভাব । পাঠান মহিলারা অসম্ভব সন্মান অর্জনের সাথে সাথে নিয়ত্রনেরও শিকার। পাঠানরা শত্রু গোষ্ঠীর মহিলাদের ওপরও আক্রমণ করেনা এলফিন্সটন সাহেব পাঠান সমাজে মহিলাদের স্থান বিষয়ে বিস্তৃত লিখেছেন -অন্য কোন সময়ে লেখা যাবে

    জিরগা বা জিগরা বিষয়ের সাথে খাপ পঞ্চায়েত এর বিপুল পার্থক্য , পাঠান মোটামুটি ৬০টির মত স্বীকৃত উপজাতি বিভক্ত জনজাতি , এবং তাদের মধ্যেও আবার ভাগ আছে এই জটিল বিষয়ে লিখছি একটু পরে.
  • দেব | 111.221.129.2 (*) | ০৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৩:৩০69730
  • দেখেন পাঠানদের ব্যাপার আলাদা।

    আমরা দু'শ বছর মহানন্দে ব্রিটিশ শাসনে কাটিয়েছি। সব শালা কোলাবরেটর। অথচ ভাবখানা এমন যে সব্বার পূর্বপুরুষ ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে 'সশস্ত্র সংগ্রাম' করেছিলেন। মাধ্যমিকের ইতিহাস বই খুলে দেখুন লেখা আছে - 'অগ্নিযুগ' - রাইইইইট। হাতে গোণা কয়েকটা ছেলে প্রাণ দিয়ে গেছিল। বাকিগুলো দাঁত কেলিয়ে ক্রেডিট নিতে ব্যস্ত। এই তো গেল একদিক।

    আর অন্যদিকে ব্রিটিশ সাম্রাজ্য পুরো দাঁতনখ নিয়ে ঝাঁপিয়েও পাঠানদের নিয়ন্ত্রণে আনতে পারেনি। ১৮৪০ এ কাবুল জ্বালিয়ে ছারখার করেছে। কিন্তু টিকতে পারেনি। আজকে যখন ব্লেয়ার সাহেব পাঠানদের 'সভ্য' করে তোলার জন্য ব্যস্ত হয়ে ওঠেন তখন পাঠানদের হাসাটা স্বাভাবিক। এরা ইতিহাসটা ভুলে যায়নি। এরপর ১৮৮০ তে আবার। এবারে একটা টুকরো কেটে খেল ব্রিটেন যেটা এখন পাকিস্তানের অংশ। দেবব্রত এই জায়গাটার কথাই লিখছেন। ১৯১৯ এর যুদ্ধে হাত পুরোপুরি গোটাতে বাধ্য হয়েছে।

    একটু পার্স্পেক্টিভে ফেলে ভেবে দেখুন। ব্রিটিশ সাম্রাজ্যের ইতিহাসে মাত্র দু'টো দেশ লড়াই করে স্বাধীন হতে পেরেছে। তার মধ্যে একটা আফগানিস্তান। অন্যটা কোনটা? সেটা কুইজের প্রশ্ন।

    পার্স্পেক্টিভটা আরেকটু পরিস্কার হবে যখন মনে করবেন ১৯১৯ সালে গোটা ভারতের জনসংখ্যা ২০ কোটি। পাঠানরা? খুব বেশী হলে ৩০ লক্ষ। এবং কোথায় ১৯১৯ সালের ব্রিটিশ ইন্ডিয়ান আর্মি, আর কোথায় ১৭৫৭র ক্লাইভের র‌্যাগট্যাগ পল্টন।

    তো এই ক্যালিবারের জাতকে যদি আমি, প্যাংলা হোগলা বাঙালী, বিচার করতে বসি তো সেটা অনধিকার চর্চা। তার ওপর মগজের ঘিলু যেটুকু ছিল সেও পোকো পোমো মার্ক্স মাও ফ্রিডম্যান ক্রুগম্যান চিবিয়ে সাফ করে দিয়েছেন। নো কনটেক্স্ট, নো পার্স্পেক্টিভ, নো র‌্যাশনালিটি। কিছু 'টকিং পয়েন্ট' আছে। 'নারী স্বাধীনতা', 'সংখ্যালঘুদের অধিকার', 'মৌলবাদ', 'ছেকুলারবাদ', 'খাপ পঞ্চায়েত'।

    হাহাহাহাহাহা।

    ও হ্যাঁ ব্রিটেনের পরে আফগানিস্তানে রাশিয়ার আগ্রাসনটা আমরা সাপোর্টিয়েছিলাম বটে। 'সমাজবাদ' প্রতিষ্ঠা হবে বলে।
  • | 127.194.84.169 (*) | ০৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৪:০৬69731
  • @দেবব্রত,
    এখানে যা যা বলেছেন সেব্যাপারে আমি একেবারে একমত।

    @দেব,
    আম্রিগা ব্রিটেনকে কুপোকাত করেছে ব'লে আম্রিগা, তার বর্তমান সভ্যকরণের কর্মসূচি, এসব চটকাতে আমাদের আটকায় ন, আটকায় নি। চিন জাপান-মার্কিনদের লেজে খেলিয়েছিল ব'লে আমরা চিনা সংস্কৃতির বা বিপ্লব নিয়ে কথা বলছি না, এমনও নয়। আপনি আফগানিস্তান-ওয়াজিরিস্তান নিয়ে অনধিকার চর্চা না করতে চান তো দেখবেন ব্রিটিশ সাম্রাজ্য নিয়ে আপনার কথাগুলোও একই যুক্তিতে অনধিকার চর্চা ব'লে মনে হতে পারে কারোর। আর ঘিলু আমার এমনিতেই আপনার মতো প্রাজ্ঞের চাইতে কম, সুতরাং পোকো পোমো মার্ক্স মাও ফ্রিডম্যান ক্রুগম্যান-দের দাঁতে দেবার যুগ্যি নয়।

    @দেবব্রত, এরপরেও আপনি যদি আমার 'টকিং পয়েন্ট'-গুলোতে আলো ফেলার ইচ্ছে করেন, আমি উৎসুক।
  • | 127.194.8.184 (*) | ০৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৭:৩৬69727
  • দেবব্রত,
    আপনি The Kite Runner পড়েছেন? Khaled Hosseiniর লেখা। তালিবান-পূর্ব ও তালিবান-উত্তর আফগানিস্তানের চিত্র আছে। Khaled Hossein Afghan-American লেখক, আমেরিকাকে অখুশি রাখা তাঁর পছন্দ নয়, সুতরাং সেটা একটু সাবধানে হজম করতে হবে। কিন্তু আমি বলতে চাইছি, তালিবান-উত্তর আফগানিস্তান পাঠান পাখতুনিস্তান -- এসব দিয়ে ইপির ফকিরের স্থান-কাল-পাত্র-কার্য বোঝার চেষ্টা না করাই ভালো।

    মহিলাদের সম্মান+নিয়ন্ত্রণ বলে যে প্যাকেজটা আমরা সর্বত্র দেখি (সব আমাদের দৃশ্যজগতের আওতায় নয়, তা জনি) তা তো শষ্যক্ষেত্র রক্ষা-কর্ষণের ছক। কোথায় "মহিলাদের পাঠান সমাজে স্থান" আলাদা করে 'জটিল', জানবার ইচ্ছে রইল।

    আর "জিরগা বা জিগরা বিষয়ের সাথে খাপ পঞ্চায়েত এর বিপুল পার্থক্য"-- সেটা লেখার সময় যদি সম্ভব হয় ইন্টারনেট লিঙ্ক দেবেন। কে বলছেন, কখন বলছেন, সেটা দেখে নিতে হবে।
  • Debabrata | 212.142.124.43 (*) | ০৭ নভেম্বর ২০১৫ ০৮:৫৩69728
  • জ , না আমি The Kite Runner পড়িনি ,বস্তুত দু চারদিন পূর্বেও ইপির ফকির কে তাই জানতাম না ,আধুনা ওয়াজিরিস্তান নাম টা শুনলেই ,পশ্চিমি মিডিয়া প্রভাবিত যে চিত্রটি আমাদের চোখের সামনে ফুটে ওঠে তা হোল ধর্মান্ধ ইসলাম মৌলবাদী সন্ত্রাসবাদীদের আঁতুড়ঘর। তালিবান ,আল-কায়দা,আরও সব ভয়ঙ্কর সন্ত্রাসবাদীদের দঙ্গল সদা বন্দুক উঁচিয়ে বর্তমান পাকিস্তানের সীমানায় অবস্থিত এই অঞ্চলে বসে পৃথিবীর কোথাও না কোথাও ঝামেলা পাকানোর গভীর ষড়যন্ত্র রচনা করছে। মাঝে মাঝেই স্কুল দখল করে অসহায় শিশু হত্যা ,মসজিদে আত্মঘাতী হামলার বর্বরতার খবর আমাদের ওয়াজিরিস্তান বিষয়ক চিত্রকল্পটিকে ক্রম বিশ্বাস্য করে তোলে ,তাই ২০০৪ সাল থেকে চলে আসা এই অঞ্চলে আমেরিকান 'ড্রন’ অভিযানে ৩০০র অধিক নিরাপরাধ শিশু এবং ১২০০র অধিক সাধারণ নাগরিক ছিন্ন বিছিন্ন হওয়ার খবরটিও যখন আমাদের দৃষ্টিগোচর হয় তখন আমরা যারা ব্লগার হত্যার মত জঘন্য অপরাধে ক্ষোভে বিস্ফোরিত হতে থাকি সেই প্রগতিশীল জনতা অদ্ভুত নির্লিপ্ততায় এই নির্মমতা কে সন্ত্রাসবাদী নির্মূলীকরণের মহান কর্মকাণ্ডের এক আপাত তুচ্ছ সাইড এফেক্ট বলে মেনে নিতে থাকি। অতি উৎসাহীগণ কাউকে কাউকে এটাও বলতে শুনেছি ‘কেউটের বাচ্চাদের’ শিশুকালেই নিধন করা উচিৎ। এই লেখাটি ওয়াজিরিস্তান মানেই যে ইসলাম মৌলবাদী সন্ত্রাসবাদীদের আখড়া নয় বরং তার এক তুলনামূলক সেকুলার সূফী ইসলামের ঐতিহ্য বর্তমান ছিল ১৯৬০-৭০ দশকেও ,যে ঐতিহ্য জিন্নার মুসলিম লীগের দ্বিজাতিতত্ব শুধু অস্বীকারই করেনি বরং প্রতিরোধ করেছে অহিংস এবং সশস্ত্র উপায়ে ,সাথে ব্রিটিশ সাম্রাজ্যবাদী আধিপত্যকে সক্ষম ভাবে প্রতিহত করে এসেছে ১৮০৪ সালের সময় থেকে সেই পরিপ্রেক্ষিতে এক অসাধারণ সূফী ফকিরের দীর্ঘ ব্রিটিশ বিরোধী আন্দোলনের অজানা ইতিহাসের উল্লেখ মাত্র । এই পর্যন্তই এই লেখাটির সীমানা । আপনি মহিলা ,কর্ষণ ইত্যাদি যে সমস্ত প্রশ্ন গুলি তুলেছেন সেই বিষয়ে আমার কিছু মতামত বর্তমান সেই মতামত আশা করি অন্য কোন লেখাতে উল্লখিত হবে আগামীতে ।
  • kaskabed | 127.203.223.72 (*) | ০৭ নভেম্বর ২০১৫ ১২:৩৬69729
  • ধন্যবাদ। আলোচনা চলতে থাকুক।
  • দেব | 111.221.135.22 (*) | ০৮ নভেম্বর ২০১৫ ০৫:৫৬69732
  • @জ
    মাপ করবেন। আমার ওভাবে বলা উচিত হয় নি। দুঃখিত।
  • মেহেদী হাসান ফকির | 120.76.128.242 (*) | ০৬ জুন ২০১৭ ০৪:৫৮69733
  • ইসলাম বিবিকে পর্বতিতে হত্যা করা হয়, হত্যা করে তার স্বামি নিজে।তার আরেক ভাই কোরবান ফকির সে গোড়াপত্তন করে গোপালগঞ্জ জেলার কোটালিপাড়া থানার হিরন গ্রামে, কোরবান ফকিরের ৩ছেলে তারা বর্তমানে উক্তস্থানে বসবাস করতেছে, আর ইসলাম বিবির স্বামি মোংলায় গোড়াপত্তন করে এবং এদের পিতার নাম হচ্ছে মানু ফকির।
  • Du | 182.58.107.105 (*) | ০৭ জুন ২০১৭ ০৯:০৫69734
  • ভালো লাগলো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আদরবাসামূলক মতামত দিন