এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • ২০শে জুন পশ্চিমবঙ্গের জন্ম ঃ বাঙালির মৃত্যু

    Debabrata Chakrabarty লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২২ জুন ২০১৬ | ১৫৮৬২ বার পঠিত
  • ২০ সে জুন ১৯৪৭ বাঙলার লেজিসলেটিভ অ্যাসেম্বলিতে বাঙলা ভাগের পরিকল্পনা গৃহীত হয় । ১৯০৫ সালে বঙ্গভঙ্গ রোধে বাঙলার যে শিক্ষিত হিন্দু জাতীয়তাবাদী অংশ নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাত্র ৪ দশকের ব্যবধানে বাঙলার সেই শিক্ষিত হিন্দু জাতীয়তাবাদী অংশ দেশভাগের পূর্বে ধর্মের ভিত্তিতে প্রদেশকে ভাগ করার পক্ষে সংবদ্ধ আন্দোলন চালায় এবং প্রায় সর্বসম্মতিক্রমে বাঙলা ভাগ মেনে নেয় । সেই অর্থে আজকে ২০শে জুন পশ্চিমবঙ্গের জন্মদিবসের সূত্রপাত বটে কিন্তু একই সাথে নেহেরু ,প্যাটেল ,জমিদার শ্রেণী , মারোয়াড়ী লবি’র ক্ষুদ্র স্বার্থ এবং শ্যামাপ্রসাদবাবুর উগ্র জাতীয়তাবাদের কাছে সমগ্র সাধারণ বাঙালির পরাজয়ের দিন । তার অর্থ এই নয় যে একই অর্থনৈতিক শ্রেণীভুক্ত ঢাকার নবাব এবং উচ্চ বংশীয় মুসলিম লীগের নেতারা,হাসান ইস্পাহানী গ্রুপ ইত্যাদি স্বার্থান্বেষীরা চুপচাপ বসে ছিলেন বরংসমপরিমাণ তৎপরতায় তারাও হিন্দুদের সাথে ক্ষমতা ভাগাভাগি না করে নিজেদের নিরঙ্কুশ ক্ষমতার স্বার্থে দেশভাগের পক্ষে সায় দেন ।

    শেষ চেষ্টা একটা হয়েছিল বটে । ১৯৪৭ সালে বাঙালি জাতীয়তাবাদী যেরকম শরৎ চন্দ্র বসু , সুরাবর্দি , কিরণ শঙ্কর রায় , আবুল হাসিম , সত্য রঞ্জন বক্সী এবং মোহাম্মদ আলি চৌধুরী বাঙলা ভাগের বিরোধী "সংযুক্ত স্বতন্ত্র বাঙলার “ স্বপক্ষে দাবী পেশ করতে থাকেন । সুরাবর্দি এবং শরৎ চন্দ্র বসু বাংলার কংগ্রেস এবং মুসলিম লীগের এক কোয়ালিশন সরকার গঠন করে বাংলার জনতাকে সাম্প্রদায়িক লাইনে বঙ্গ ভঙ্গের বিরোধিতা করার জন্য উৎসাহিত করতে থাকেন, সাক্ষরিত হয় বেঙ্গল প্যাক্ট । ২৭ সে এপ্রিল ১৯৪৭ সালে সুরাবর্দি দিল্লীতে এক প্রেস কনফারেন্স এই স্বতন্ত্র অবিভক্ত বাংলার পরিকল্পনা পেশ করেন । ২৯ সে এপ্রিল আবুল হাসিম কোলকাতায় সমরূপ ইচ্ছা প্রকাশ্য করে এক বিবৃতি প্রকাশ করেন । একই সময়ে ১৯৪৭ সালের ২১ এপ্রিল খ্যাতিমান বাঙালী নিন্মবর্ণ নেতা এবং তৎকালীন ভারতের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের মন্ত্রী যোগেন্দ্রনাথ মন্ডল প্রকাশ্যে বিবৃতি দিয়ে জানান, বাঙলার নিন্মবর্ণ হিন্দুরা বাঙলা ভাগের প্রস্তাবের বিরোধী। কিন্তু অন্যদিকে প্যাটেল সার্বভৌম বাঙলার দাবীকে বর্ণনা করেন ‘ একটা ফাঁদ হিসাবে যেখানে কিরণ শঙ্কর রায় শরৎ বসুর সঙ্গে আটকা পড়বেন ‘ । পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস ততদিনে বিধান রায়ের নেতৃত্বে দিল্লী লবির অনুগত দাসে পরিনত । ইতিমধ্যে কুখ্যাত কোলকাতা রায়ট দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজন রেখা গভীর এবং প্রায় অলঙ্ঘনীয় করে তুলেছে । এই সময়ে বর্ধমান মহারাজের সভাপতিত্বে হিন্দু প্রধান জেলাগুলির আইনপ্রনেতারা এক বৈঠকে ৫৮ জন বিভাজনের পক্ষে ভোট দেন কিন্তু সেই সভাতেই মুসলিম লীগের ২১ জনা বিভাজনের বিপক্ষে ভোট দেন। ৫৮ জনের সংখ্যাগরিষ্ঠ পক্ষ আরো সিদ্ধান্ত নেয় যে, হিন্দু সংখ্যাগরিষ্ঠ এলাকাগুলো ভারতে যোগদান করবে। অন্যদিকে, মুসলিমপ্রধান জেলাগুলোর আইনপ্রণেতাদের মধ্যে ১০৬ জন যার মধ্যে ১০০ জন ছিলেন মুসলিম লীগের, ৫ জন ছিলেন নিন্মবর্নের হিন্দুদের প্রতিনিধি এবং এক জন ছিলেন খ্রিস্টানদের প্রতিনিধি বাঙলা ভাগের বিপক্ষে ভোট দেন। বাকি ৩৫ জন পক্ষে ভোট দেন। পরবর্তীতে বর্ধমান মহারাজের সভাপতিত্বে হিন্দুপ্রধান এলাকাগুলোর আইনপ্রণেতাদের সিদ্ধান্তের কথা জানতে পেরে ১০৭-৩৪ ভোটে মুসলিমপ্রধান এলাকার আইনপ্রণেতারা প্রস্তাবিত পাকিস্তানে যোগ দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। উল্লেখ্য, বেঙল ন্যাশনাল কংগ্রেসের সাথে তাল মিলিয়ে কমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার বেঙল শাখার সাথে সংশ্লিষ্ট আইনপ্রণেতারা বাঙলা ভাগের পক্ষেই ভোট দিয়েছিলেন ।

    মুসলিম লীগের এক বিপুল অংশ এবং বাঙলার নিন্মবর্ণ মূলত নমঃশূদ্র হিন্দুরা বাঙলা ভাগের প্রস্তাবের বিরোধী হলেও ,কংগ্রেস, হিন্দু মহাসভা এবংকমিউনিস্ট পার্টি অব ইন্ডিয়ার বেঙল শাখার আগ্রহে ,নেহেরু প্যাটেল লবির কাছে শরৎ চন্দ্র বসু , সুরাবর্দি , কিরণ শঙ্কর রায় , আবুল হাসিম , সত্য রঞ্জন বক্সী এবং মোহাম্মদ আলি চৌধুরী বাঙ্লাভাগের বিরোধী সংযুক্ত স্বতন্ত্র বাঙলার স্বপ্ন পরাজিত হয়। ১৯০৫ সালে ব্রিটিশ চক্রান্তের বিরুদ্ধে ,বাঙলা ভাগের বিরুদ্ধে যে বাঙালী তীব্র আন্দোলন গড়ে তুলল সেই একই বাঙালী ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে দেশভাগ মেনে নিলো কেন ? এর উত্তর লুকিয়ে আছে অর্থনৈতিক আধিপত্য ,দীর্ঘকাল যাবত সমস্ত সামাজিক বিষয়ে ক্ষমতার আধিপত্য , সাংস্কৃতিক আধিপত্য, শিক্ষার আধিপত্য এবং সর্বোপরি রাজনৈতিক আধিপত্য হারানোর উদ্বেগের ধারাবাহিক সত্যের মধ্যে ।

    এখন ব্যবসা বা শিল্প বাঙালী ভদ্রলোকদের সমৃদ্ধির ভিত্তি ছিলোনা -তাদের সমৃদ্ধির ভিত্তি ছিল ভূমি । চিরস্থায়ী বন্দোবস্তের মাধ্যমে সম্পত্তির সাথে যে সম্পর্কের সৃষ্টি হয় তার অপরিহার্য উপজাত ফল হোল এই উচ্চবর্ণ বাঙালী ভদ্রলোক শ্রেণী । খাজনা আদায় কারি ,জমির পত্তনি স্বত্ব দেওয়ার অধিকারী ঠাকুর পরিবারের মত বড় জমিদার থেকে তালুকদার পর্যন্ত সবাই ছিল এই শ্রেণীর অন্তর্ভুক্ত । তারা জমিতে কাজ করত না , জমি থেকে প্রাপ্ত খাজনা দিয়েই তাদের জীবনযাত্রা নির্বাহ হত -" ভদ্রলোক হোল দেশের অনুভূতিহীন মাটির সন্তানদের ঠিক বিপরীত ",কায়িক পরিশ্রম থেকে বিরত থাকাকে এই বাবু শ্রেণীর লোকেরা নিজেদের ও সমাজের নিন্ম শ্রেণীর লোকেদের মধ্যে অপরিহার্য উপাদান বলে বিবেচনা কোরত । কিন্তু উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিক থেকে এই আয় কমে যাওয়ার লক্ষণ দেখা যায় । কৃষি পণ্যের উৎপাদনের হার ক্রমেই কমে আসতে থাকে ,চাষের আওতায় অনাবাদী জমি আনার প্রয়াস ক্রমশ হ্রাস পেতে থাকে । ১৮৮৫ সালে জমিদারের ক্ষমতা সীমিত করবার আইন প্রণয়ন হয় ,জমির খাজনা থেকে আয়ের পরিমাণ হ্রাস পাওয়ার দীর্ঘ প্রক্রিয়া শুরু হয় । ভদ্রলোক শ্রেণী পাশ্চাত্য শিক্ষা কে আয়ের বিকল্প সূত্র হিসাবে আঁকড়ে ধরা শুরু করে ।ভদ্রলোক হিন্দুরা মনে করতে শুরু করে পাশ্চাত্য শিক্ষা তাদের জন্যই সংরক্ষিত , সে কারনে তারা ঐ মাথাভারি শিক্ষা ব্যবস্থার ভিতটিকে বিস্তীর্ণ করবার প্রয়াস কে তীব্রভাবে বাধা দিতে শুরু করে -কারন নিন্ম পর্যায়ের লোকেদের জন্য শিক্ষার দ্বার উন্মুক্ত হোলে তাদের একচেটিয়া অধিকার হ্রাস পেতে পারে । বিংশ শতাব্দীতে ভদ্রলোকেদের পরিচিতি সম্পদের আভিজাত্যর সাথে সাথে সাংস্কৃতিক আভিজাত্যে পরিবর্তিত হতে থাকে -তারা সংস্কৃতিবান ,আলোকিত ,বেঙ্গল রেনেসাঁর উত্তরাধিকারী অগ্রগতি এবং আধুনিকতার পতাকাবহন কারি সুতরাং বাঙলার রাজনীতি ,সমাজনীতি ,অর্থনীতি ,শিক্ষানীতি সমস্ত বিষয়ে তাঁদের মাতব্বরি স্বতঃসিদ্ধ বলে ধরে নেওয়া শুরু করে ।

    কিন্তু বিংশ শতাব্দীর দুইএর দশক থেকে বাঙলায় এই চিত্র দ্রুত পাল্টাতে থাকে সব থেকে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনটি ঘটে চিরাচরিত কৃষি ভিত্তিক পেশার পরিবর্তে মধ্যবিত্ত শিক্ষিত মুসলমান বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায়ের উদ্ভব । শিক্ষা ,চাকরী ,সংস্কৃতি এবং রাজনীতিতে এই মুসলমান সম্প্রদায়ের উপস্থিতি ক্রমশ লক্ষিত হতে থাকে । ১৮৭০/৭১ সালে বাঙলার উচ্চশিক্ষা প্রতিষ্ঠানে মাত্র ৪% ছাত্র ছিল মুসলমান অথচ ১৯২০/১৯২১ সালে সেই সংখ্যা বেড়ে দাড়ায় প্রায় ১৪-১৫ % । বাংলার কোন কোন অঞ্চলে যেমন ঢাকা ,হুগলী এমনকি প্রেসিডেন্সি কলেজে মুসলমান ছাত্রদের সংখ্যা হিন্দু ছাত্রদের সংখ্যার সমপরিমাণ এমনকি কোথাও কোথাও বেশি হয়ে দাঁড়ায় । আর এই নব্য শিক্ষিত মুসলমান মধ্যবিত্ত শ্রেণী পরবর্তীতে বাঙলার রাজনীতিতে প্রভাব বিস্তার করতে শুরু করে । মুসলমানদের এই অভাবনীয় অগ্রগতি তাদের হিন্দু কাউন্টার পার্টের সাথে প্রতিযোগিতা একই সাথে মুসলমান জনসংখ্যার বৃদ্ধি ক্রমে বাঙলায় হিন্দু জনসংখ্যা কে পেছনে ফেলতে শুরু করে । ১৯৩১ সালে বাঙলায় মুসলমান জনসংখ্যা বেড়ে দাড়ায় ৫৪.২৯% । পরিষ্কার সংখ্যাগরিষ্ঠতা । বাঙলার অধিকাংশ জেলায় তাদের সংখ্যা গরিষ্ঠতা ,নব্য শিক্ষিত মধ্যবিত্ত যুবক সম্প্রদায় মুসলমান সমাজের মধ্যে এক প্রত্যয়ের জন্ম দেওয়া শুরু করে । অপ্রত্যক্ষ ভাবে এই সংখ্যাগরিষ্ঠতার বলে বলীয়ান , হিন্দুদের সাথে বিভিন্ন সুবিধা নিয়ে দর কষাকষি , রিজার্ভ সিট ,মুসলিম কোটার অধিকারের মাধ্যমে বিংশ শতাব্দীর শুরুর দিক থেকে হিন্দু আধিপত্যের সাথে মুসলমানদের সূক্ষ্ম সংঘাতের সূত্রপাত হতে শুরু হয় ।

    ১৯৩২ সালে ম্যাকডোনাল্ডের সম্প্রদায়ভিত্তিক রোয়েদাদের ফলে প্রদেশে নাটকীয় ভাবে ক্ষমতার ভারসাম্য পরিবর্তিত হয়ে যায় । প্রায় একই সাথে ঘোষিত হয় পুনা প্যাক্ট ,প্রাদেশিক আইনসভায় হিন্দুরা সংখ্যালঘু হয়ে পরে , ‘ মুসলমানদের কাছে তাদের চিরস্থায়ীভাবে অধীনতা সম্ভাব্য ভবিষ্যতের ছবি হয়ে পরে । একই সাথে কৃষিজাত পণ্যের মূল্য ও গ্রামীণ ঋণ আকস্মিক ও নাটকীয় ভাবে কমে যাওয়ায় খাজনা ও পাওনা আদায়ের পদ্ধতির ওপরে মারাত্মক চাপ পড়ে -অথচ এইগুলিই ছিল এতকালের আয়ের উৎস । খাজনা আদায়ে খাজনা আদায়কারিরদের ক্ষমতা দ্রুত হ্রাস পাওয়ার ফলে উদ্ভূত পরিস্থিতি রায়তদের অনুকূলে চলে যেতে থাকে আর এই রায়তদের অধিকাংশই ছিল মুসলমান । এই বিশৃঙ্খল পরিস্থিতিতে রায়তরা ক্রমবর্ধমান হারে জমিদারদের কর্ত্‌ত্ব অবজ্ঞা করে গ্রামীণ বাঙলায় নিজেদের অবস্থান সুদৃঢ় করতে থাকে ১৯৩৫ সালে ভারত শাসন আইন উচ্চ শ্রেণীর কৃষকদের ভোটের অধিকার দেয় -এই প্রথম মুসলমান চাষি আইনসভার পরিমণ্ডলে নিজেদের কথা বলার অধিকার পায় ।মুসলমান রায়ত এবং মুসলমান বুদ্ধিজীবি এই প্রথম বাঙলার রাজনীতিতে এতকালের মধ্যসত্বভোগি, খাজনা আদায়কারী সুদ ব্যবসায়ী ভদ্রলোকদের চ্যালেঞ্জের মুখে ফেলে ।

    অন্যদিকে রাজনৈতিক কর্মসূচিতে জাতীয়তাবাদী ইস্যুর ওপর ভদ্রলোক শ্রেণীর স্বার্থ প্রাধান্য বিস্তারের প্রাসঙ্গিকতার কারনে এবং এই আশু বিপদ থেকে রক্ষা পাওয়ার স্বার্থে ক্রমে কংগ্রেস ,মূলত বেঙ্গল কংগ্রেস হিন্দু স্বার্থ রক্ষায় ডানপন্থীদের দখলে চলে যায় ,এই সময়ে বাঙালী ভদ্রলোক সম্প্রদায় ব্রিটিশ শাসনকে অত্যন্ত অনুকূল দৃষ্টিভঙ্গিতে দেখতে শুরু করে । মুসলিম শাসন কে হিন্দু সমাজের পক্ষে মারাত্মক ও তাৎক্ষনিক হুমকি হিসাবে দেখার সূত্রপাত শুরু হয় ।সাংস্কৃতিক দিক দিয়ে উচ্চ ভদ্রলোক শ্রেণী মুসলমান শাসন মেনে নেয় কি উপায়ে ? সৃষ্টি হতে শুরু করে হিন্দু জাতীয়তাবাদের পরিবর্তে হিন্দু সাম্প্রদায়িকতা বাদ । নিজেদের শক্তি বাড়ানোর উদ্দ্যেশ্যে এতকালের অবহেলিত দলিতদের শুদ্ধি অনুষ্ঠানের মাধ্যমে হিন্দু সমাজের মধ্যে স্থান দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয় , ঐক্যবদ্ধ হিন্দু সমাজ গঠনের প্রয়াস। অধস্তন মুসলমানদের শাসনকে মেনে নিতে অস্বীকৃতি ,বিভাগের দাবী ও পৃথক আবাসভূমির স্বার্থে ভদ্রলোকেরা বেঙ্গল কংগ্রেস এবং হিন্দু মহাসভা কে প্রকৃত অর্থে নিয়োজিত করে । বাঙালি রাজনৈতিক নেতৃত্ব যা এককালে জাতীয় রাজনীতির নির্ণায়ক এবং গুরুত্বপূর্ণ অংশ ছিল ক্রমে নিজেদের শ্রেণীস্বার্থ রক্ষায় ,আঞ্চলিক ,সংকীর্ণ, গোষ্ঠী বিভক্ত এবং দিল্লী কংগ্রেসের আজ্ঞাবাহক হয়ে পড়ে । এমন একটা সময় ছিল যখন কংগ্রেস নেতৃত্ব অখণ্ড ভারতের কোন একটা অংশের বিচ্ছিনতা অভিশাপ হিসাবে বিবেচনা করতেন কিন্তু সেই কংগ্রেস ১৯৪৬ এর কেন্দ্রীয় আইনসভার নির্বাচনে মাত্র 1.3% মুসলমান ভোট পায় । বাঙলায় ২৫০ টি আসনের মধ্যে মুসলিমলীগ ১১৩ টি আসন দখল করে ক্ষমতা দখল করে । এই নির্বাচনের পরিপ্রেক্ষিতে কংগ্রেস দেশের এমন সব অংশ ছেড়ে দিতে চায় যেখানে তাঁদের নিয়ন্ত্রণ প্রতিষ্ঠার আশা নেই এবং কেন্দ্রে তাঁদের ক্ষমতার প্রতি হুমকি হিসাবে প্রতীয়মান কিন্তু তারা সাবেক মুসলমান সংখ্যাগরিষ্ঠ প্রদেশগুলির হিন্দু সংখ্যা গরিষ্ঠ জেলাগুলো ভারতের সাথে রাখতে হবে এই দাবী তোলে এবং দাবীর অর্থ বাঙলা এবং পাঞ্জাব অবশ্যই ভাগ হতে হবে ।

    ১৯৪৬ সালে কংগ্রেস বাঙলায় বর্ণ হিন্দুদের সর্ব সম্মত পছন্দের দল হিসাবে গণ্য হয় - হিন্দু মহাসভা মাত্র 2.73% ভোট পায় এবং শ্যমাপ্রসাদ ইউনিভার্সিটি বিশেষ আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জয়লাভ করেন । কিন্তু মহাসভার বিরুদ্ধে কংগ্রেসের বিপুল বিজয় হিন্দু সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদের বিজয় ছিলোনা বরং কংগ্রেসের ওপরে বাঙালি হিন্দুদের বিশ্বাস দৃঢ় ছিল যে কংগ্রেস হিন্দু মহাসভার তুলনায় তাদের স্বার্থ কার্যকরভাবে বাস্তবায়ন করবে । কিন্তু ১৯৪৬ সালে মুসলিম লীগ সুরাবর্দি’র নেতৃত্বে পুনরায় ক্ষমতায় আসে -হিন্দু বাঙ্গালিদের প্রত্যাশা হতাশায় পরিনত হয় -অন্যদিকে সুরাবর্দি মন্ত্রিসভায় হিন্দু মুসলমান সমতা’র পূরানো ফর্মুলা বাতিল করে মন্ত্রীসভা ১৩ জন থেকে মাত্র ১১ জনে নামিয়ে আনেন এবং হিন্দু মন্ত্রীদের সংখ্যা ৩ এ নামিয়ে আনেন ,তার ওপর কাটা ঘায়ে নুনের ছিটা দিতে এই তিনজন হিন্দু মন্ত্রীর মধ্যে দুই জন কে তপশীল সম্প্রদায় থেকে গ্রহণ করেন ।

    হিন্দু ভদ্রলোকেরা একেতে পরাজিত ,তার ওপর ১৯৪৩ এর দুর্ভিক্ষের সময়ের খাদ্যমন্ত্রি সুরাবর্দি বর্তমানে প্রধান মন্ত্রী , তার মন্ত্রীসভায় মাত্র একজন মন্ত্রী হিন্দু উচ্চবর্ণের প্রতিনিধি , তাদের পক্ষে এই অপমান অসহ্য হয়ে ওঠে । বাঙলা ভাগের ক্ষেত্রে হিন্দু মহাসভা এবং কংগ্রেসের যৌথ আন্দোলনে কংগ্রেস অগ্রণী ভূমিকায় ছিল । সারা বাঙলায় বাঙলা ভাগের জন্য ৭৬টি জনসভা সংগঠিত হয় তার মধ্যে কংগ্রেস একাই ৫৯ টি জনসভা সংঘটিত করে ,বারোটি মহাসভার উদ্যোগে আর মাত্র ৫টি সভা মহাসভার সাথে যৌথ ভাবে সংগঠিত হয় । ভদ্রলোকেরা ছিল এই আন্দোলনের মুল শক্তি , এতে বিস্ময়ের কিছু নেই । বস্তুত প্রাদেশিক রাজনীতিতে ক্ষমতা হারিয়ে ,জমিদারি পদ্ধতির দ্রুত অবক্ষয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়ে হতাশ ভদ্রলোক গ্রুপ তাদের এতকালের সুযোগ সুবিধা ক্ষমতা বজায় রাখতে স্বীয়শক্তি নিয়োগে তৎপর হয়ে ওঠে ।

    অন্যদিকে বাঙলার মারোয়াড়ী এবং বাঙ্গালী কোটিপতি ব্যবসায়ীরা মুসলমান বনিকদের ক্ষমতা প্রতিহত করতে সর্বশক্তি দিয়ে উঠে পড়ে লাগেন । বিড়লা ,ঈশ্বর দাস জালান , গোয়েঙ্কা ,নলিনী রঞ্জন সরকার -বাঙলার এইসমস্ত কোটিপতি প্রতিটি উচ্চ পর্যায়ের কমিটিতে উপস্থিত থেকে দেশভাগের সমর্থনে আন্দোলন পরিচালনার কৌশল নির্ধারণ করতেন । বাঙলার সমস্ত এলাকা থেকে মারোয়াড়ী ব্যবসাদারেরা সর্ব ভারতীয় কংগ্রেসের কাছে দরখাস্ত প্রেরণ করেন , তারা বলেন যে ' মুসলিম লীগের সরকারের অধীন বাঙলায় ব্যবসা সম্পূর্ণরূপে ধ্বংস হয়ে গিয়েছে এবং তারা বাঙলা বিভাগের প্রচেষ্টায় আন্তরিকভাবে সমর্থন করে' । কলকাতার মারোয়াড়ীদের কাছে বাঙলা বিভাগ তাঁদের স্বার্থের পক্ষে অতি উত্তম - অধিকাংশ মারোয়াড়ী পাটের ফাটকা বাজারে প্রভূত অর্থ উপার্জন করলেও পাটশিল্প কে ততদিনে তারা মেরে ফেলতে শুরু করেছে । তাদের মধ্যে আনন্দিলাল পোদ্দার ,কারনানি ,ঝুনঝুনওয়ালা , শেঠরা কয়লাখনি তে বিপুল বিনিয়োগ শুরু করেছে । বিড়লারা চিনি ,বস্ত্র ,ব্যাংকিং ,বিমা ,ক্যেমিকাল শিল্পে ভারতজুড়ে বিনিয়োগ করছে কলকাতার পাট শিল্পের মৃত্যুর বিনিময়ে । অন্যদিকে সুরাবর্দি হাসান ইস্পাহানী গ্রুপের আর্থিক ক্ষমতার ওপরে নির্ভরশীল । অবিভক্ত বাঙলা মারোয়াড়ীদের ব্যবসা বিস্তৃতির পক্ষে ক্ষতিকর হতে পারে । মুসলিম লীগের অধীনে থাকলে তাদের উন্নতির সম্ভাবনা সীমিত অন্যদিকে বাঙলায় কংগ্রেস সরকার স্থাপিত হোলে সরকার তাদের পকেটে থাকবে এই নিখুঁত ব্যবসায়িক স্বার্থে বিড়লা এবং সমস্ত মারোয়াড়ী সম্প্রদায় বাংলাভাগের সমর্থনে তাঁদের সমস্ত ক্ষমতা (আর্থিক ক্ষমতা সমেত ) নিয়োজিত করে ।

    মূলত জমিদার ,পেশাজীবী ,বাঙলার অসংখ্য সন্মানীয় চাকুরীজীবী ,মধসত্ব ভোগী উচ্চ বর্ণের হিন্দু ভদ্রলোক ,মারোয়াড়ী ব্যবসাদার এবং দিল্লীর কংগ্রেস লবির ক্ষুদ্র স্বার্থের কাছে বাঙ্গালি পরজিত হয় আজকের দিনে । তৎপরবর্তী দুই দশকের ইতিহাস ,বঞ্চনা স্বজন হারানোর বেদনা এবং ভারতীয় রাজনীতিতে বাঙালির বৈশিষ্ট্যগত দুর্বলতা, বাম ডানের মধ্যে শক্ত মেরুকরণ এবং এখনো অনেক হিন্দু ভদ্রলোক কর্ত্‌ক উৎকট স্বাদেশিক সংস্কৃতির অব্যহত চর্চা সেই হিন্দু বাঙালি সাম্প্রদায়িকতার ধারবাহিকতা । জাতীয়তাবাদ বিদেশী শক্তির বিরুদ্ধে পরিচালিত হয়েছে দেশে দেশে আর বাঙালি ভদ্রলোকের সাম্প্রদায়িকতা পরিচালিত হয়েছে নিজেদেরই জাতির বিরুদ্ধে তার সাথে সুচতুর পরিকল্পনা অনুযায়ী সঙ্গত করেছে মারোয়াড়ী সম্প্রদায় । এখনো আমাদের মধ্যে অনেকেই মুসলমানদের বাঙালি বলে স্বীকার করতে দ্বিধাগ্রস্ত এবং কতিপয় স্বার্থান্ধ মতবাদ প্রচারকারী প্রদেশ ভাগের থেকেও মারাত্মক বাঙালি জাতির ভবিষ্যতকেই হুমকি দিচ্ছে অবিরত ।

    আজ কোন আনন্দের দিন নয় -হিন্দুর বিজয়ের দিন নয় বরং অতি সংখ্যালঘিষ্ঠ ভদ্রলোক হিন্দু এবং মুসলমান বাঙালির হাতে আপামর বাঙালির পরাজয়ের দিন । স্বজন এবং স্বদেশ হারানোর দিন ।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২২ জুন ২০১৬ | ১৫৮৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • sm | 785612.35.012312.19 (*) | ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:২৭55335
  • এটা কি রকম হলো?পব থেকে গোর্খা ল্যান্ডের দাবি উঠছে কেন?শান্তিপূর্ন সহাবস্থান বজায় থাকছে না কেন?
    কামতাপুর এর দাবী উঠছে কেন?তেলেঙ্গানার দাবি উঠছে কেন?ভারতে তো প্রায় 500 ভাষা গোষ্ঠী রয়েছে। কত ভাগে বিভক্ত হবে তাহলে?
    একই বাংলায় কথা বলা ও একই সংস্কৃতি হওয়া সত্ত্বেও বাংলাদেশের থেকে এতোএতো মাইগ্রেশন হচ্ছে কেন?
    আজ যদি বিহারী বা রাজস্থানি ভাষা গোষ্ঠীর লোক বলে, হিন্দির দাপট মানি না, কি হবে?
    উত্তর পূর্বের রাজ্য গুলো যদি বলে তাদের ভাষা গোষ্ঠী বিপন্ন হচ্ছে, কি করা যাবে?
    ত্রিপুরা থেকে বাঙালি বিতরন হবে, না আসাম থেকে?
    স্বাধীন ভারতে কোন প্রদেশে থাকতে গেলে,সেই প্রদেশ এর স্থানিক ভাষা গোষ্ঠী কেন বিপন্ন বোধ করবে?
    যদি বিপন্নই বোধ করে তাহলে এর সল্যুশন কি?
  • বাসুদেব হালদার | 342323.233.1256.171 (*) | ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩৮55330
  • ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদে রাস্ট্রের ঐক্যের সূত্রে ,ভাষার সঙ্গে থাকে জনগোষ্ঠীর সাধারন ভূগোল, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। ধর্ম এখানে গৌণ।তাই এসব দেশে আধুনিক রাষ্ট্রের যাবতীয় লক্ষণ যথা ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার চর্চা ভালোভাবে হয়। ব্লাসফেমি আইন নেই। খোলা চোখে দুনিয়ার দিকে তাকালেই বোঝা যাবে।এটা কোনো সাদা কালো হিংস্র বিড়াল নয় যে আঁচড়াবে কামড়াবে। জার্মানিকে দেখুন, প্রায় ত্রিশ লক্ষ তুর্কী সেখানে সকল নাগরিক অধিকার সহ বসবাস করছে। এবার পৃথিবীর বহুজাতিক বা ধর্মভিত্তিক রাস্ট্রগুলির দিকে তাকান , দেখুন রাস্ট্রীয় ঐক্যের নামে জোড়াতালি দেওয়া তত্ব, স্বাধীকারকামী জাতিগুলি লাঞ্ছিত আর ধর্মবাদী রাস্ট্রে তো মানবাধিকারটাই লাঞ্ছিত। মনিপুরী ও তামিলদের মধ্যে মিল কোথায়? এখানে ঐক্যের জন্য ধর্মের আশ্রয় নিতে হয়। পাঞ্জাবি শিখ ও মিজো খ্রিস্টানদের মধ্যে মিল কোথায়? এখানে ঐক্যের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতার আশ্রয় নিতে হয়।তিব্বতী, উইঘুর,চেচেনদের সঙ্গে কি হচ্ছে? চীনে, রাশিয়ায় ঐক্যের সূত্র বিশেষ মতবাদ বা বলপ্রয়োগ।গোর্খারা জাতিগত ভাবে নেপালি তাদের নেপালের বাইরে ভূমিগত ঐতিহ্য নেই।বোড়োরা ,সাঁওতালদের মত বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অভ্যন্তরে বসবাস করে। তাদের জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বিকশিত হবার সম্ভাবনা কম।আর সম্ভব হলে ক্ষতি কি? যাঁরা বলকানাইজেশনের আতঙ্কে ভোগেন, তাঁদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যুগোস্লাভিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে যেসব ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র গুলির উদ্ভব হয়েছে তারা কিন্তু শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে আছে। ইওরোপের জাতিরাষ্ট্র গুলো একটি ইউনিয়ন গঠন করতে পারলে এই উপমহাদেশেও সম্ভব হতো। তাছাড়া এখানে তো নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ বাদে সেই অর্থে জাতিরাষ্ট্র গঠিত হয়নি। তাহলে আগেই অসম্ভবের কথা আসে কিভাবে?আজ নাহলে কাল বৃহত্তর স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ভারত উপমহাদেশের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সেই সম্ভাবনার দিকে এগোবে। আমি আশাবাদী।সকল প্রশ্নের জবাব দেওয়া গেল। ধন্যবাদ।
  • বাসুদেব হালদার | 342323.233.1256.171 (*) | ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩৮55329
  • ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদে রাস্ট্রের ঐক্যের সূত্রে ,ভাষার সঙ্গে থাকে জনগোষ্ঠীর সাধারন ভূগোল, ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্য। ধর্ম এখানে গৌণ।তাই এসব দেশে আধুনিক রাষ্ট্রের যাবতীয় লক্ষণ যথা ধর্মনিরপেক্ষতা, গণতন্ত্র ও বাকস্বাধীনতার চর্চা ভালোভাবে হয়। ব্লাসফেমি আইন নেই। খোলা চোখে দুনিয়ার দিকে তাকালেই বোঝা যাবে।এটা কোনো সাদা কালো হিংস্র বিড়াল নয় যে আঁচড়াবে কামড়াবে। জার্মানিকে দেখুন, প্রায় ত্রিশ লক্ষ তুর্কী সেখানে সকল নাগরিক অধিকার সহ বসবাস করছে। এবার পৃথিবীর বহুজাতিক বা ধর্মভিত্তিক রাস্ট্রগুলির দিকে তাকান , দেখুন রাস্ট্রীয় ঐক্যের নামে জোড়াতালি দেওয়া তত্ব, স্বাধীকারকামী জাতিগুলি লাঞ্ছিত আর ধর্মবাদী রাস্ট্রে তো মানবাধিকারটাই লাঞ্ছিত। মনিপুরী ও তামিলদের মধ্যে মিল কোথায়? এখানে ঐক্যের জন্য ধর্মের আশ্রয় নিতে হয়। পাঞ্জাবি শিখ ও মিজো খ্রিস্টানদের মধ্যে মিল কোথায়? এখানে ঐক্যের জন্য ধর্মনিরপেক্ষতার আশ্রয় নিতে হয়।তিব্বতী, উইঘুর,চেচেনদের সঙ্গে কি হচ্ছে? চীনে, রাশিয়ায় ঐক্যের সূত্র বিশেষ মতবাদ বা বলপ্রয়োগ।গোর্খারা জাতিগত ভাবে নেপালি তাদের নেপালের বাইরে ভূমিগত ঐতিহ্য নেই।বোড়োরা ,সাঁওতালদের মত বৃহৎ জনগোষ্ঠীর অভ্যন্তরে বসবাস করে। তাদের জাতিরাষ্ট্র হিসেবে বিকশিত হবার সম্ভাবনা কম।আর সম্ভব হলে ক্ষতি কি? যাঁরা বলকানাইজেশনের আতঙ্কে ভোগেন, তাঁদের জ্ঞাতার্থে জানাচ্ছি যুগোস্লাভিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে যেসব ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র গুলির উদ্ভব হয়েছে তারা কিন্তু শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে আছে। ইওরোপের জাতিরাষ্ট্র গুলো একটি ইউনিয়ন গঠন করতে পারলে এই উপমহাদেশেও সম্ভব হতো। তাছাড়া এখানে তো নেপাল, ভুটান, মালদ্বীপ বাদে সেই অর্থে জাতিরাষ্ট্র গঠিত হয়নি। তাহলে আগেই অসম্ভবের কথা আসে কিভাবে?আজ নাহলে কাল বৃহত্তর স্বার্থের কথা মাথায় রেখে ভারত উপমহাদেশের সকল শুভবুদ্ধি সম্পন্ন মানুষ সেই সম্ভাবনার দিকে এগোবে। আমি আশাবাদী।সকল প্রশ্নের জবাব দেওয়া গেল। ধন্যবাদ।
  • amit | 340123.0.34.2 (*) | ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:১৫55331
  • "যুগোস্লাভিয়া, চেকোস্লোভাকিয়া ভেঙে যেসব ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র গুলির উদ্ভব হয়েছে তারা কিন্তু শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানে আছে।"

    হেহেহে। শান্তিপূর্ণ সহাবস্থানই বটে। যুদ্ধ করে করে ক্লান্ত হয়ে গেলে ওরকম মনে হয় :)
  • বাসুদেব হালদার | 342323.233.1256.171 (*) | ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:১৭55332
  • যুদ্ধ করে হোক আর আলোচনার মাধ্যমেই হোক জাতিগুলোর জাতীয় চাহিদা (ভাষা, সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যের স্বাধীকার)পরিপূরণের মাধ্যমে শান্তি এসেছে।
  • sm | 785612.35.012312.19 (*) | ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৭:৪৯55333
  • এগুলো মন গড়া কথা হচ্ছে। আপনি ই বললেন গোরখারা নেপালি ভাষা গোষ্ঠী।তাহলে নতুন করে গোর্খা ল্যান্ডের দাবী কেন?নেপাল নিয়ে সন্তুষ্ট থাকলেই তো হতো।
    আবার সিকিমের ষাট শতাংশ নেপালি । স্থানীয় অধিবাসীরা কোনঠাসা । কেন?
    আপনার অঙ্কের মত শান্তি পূর্ন সহাবস্থান বললেই লোকে মেনে নেবে?
    ইংলিশ ভাষার দাপটে ওয়েলশ বা স্কট ,গেলিক ভাষা আক্রান্ত।
    তো তারা কি আলাদা হয়ে যাবে?
    ভাষা গোষ্ঠী হিসাবে থাকতে হলে ভারতে তো বেশ কয়েকটা অঞ্চল তৈরি হয়ে যাবার যোগাড় হয়ে যাবে। সেটা কি ভালো হবে?
    বাংলা ভাষা নিয়ে আন্দোলন করে তো পূর্ব পাকিস্তান বাংলাদেশ এ পরিণত হয়েছে। সেখান থেকে কি ওই সেম বাংলা ভাষায় কথা বলা হিন্দুরা বিতাড়িত হন নি বা দেশ ছেড়ে চলে আসেন নি?
    তখন কি ভাষা ধর্মের উর্ধে উঠতে পেরেছিল?
    হিংসা মানুষের মনে।ভাষা, ধর্ম এগুলো ঢাল মাত্র।
  • sm | 7845.15.670123.129 (*) | ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০২:৩২55337
  • আপনি বলছেন, ভাষা ভিত্তিক রাষ্ট্র বহুভাষাভিত্তিক রাষ্ট্রের চাইতে ঢের ভালো।
    তাহলে একটাই প্রশ্নের উত্তর দিন, ভারত কটা ভাষা ভিত্তিক রাষ্ট্রতে ভাগ হলে, আপনার মতে ঠিক হয়?
    একদম স্পেসিফিক উত্তর দিলে ভালো হয়।
  • বাসুদেব হালদার | 342323.178.126712.176 (*) | ২৬ অক্টোবর ২০১৮ ০৮:৫১55336
  • আবারও বলছি, ভাষাভিত্তিক রাস্ট্র ধর্মবাদী বা বহুভাষিক রাস্ট্রের চেয়ে ঢের বেশি গণতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ ও বাকস্বাধীনতায় বিশ্বাসী।একে নস্ট করে দিতে পারে ধর্মীয় বিভেদ। পশ্চিমবঙ্গে নেপালি ভাষী গোর্খাদের চেয়ে অনেক বেশি সাঁওতালি ভাষার লোক বসবাস করে।গোর্খারা নেপাল ও সিকিমের ভৌগলিক অঞ্চলে সীমাবদ্ধ, সাঁওতালিরা বাঙালিদের সঙ্গে ছড়িয়ে ছিটিয়ে বসবাস করে। সেজন্য তারা সত্তা পূরণের আশা দেখে। অন্ধ্রপ্রদেশে গঠিত হওয়ার সময় তেলেগু ভাষার জাতিসত্তা কাজ করেছিল। গণতন্ত্রের অন্যতম ভাবনা সমানাধিকার ও সমোন্নয়নে ব্যাঘাত ঘটলে বিচ্ছিন্নতাবোধ তৈরি হয়। এরজন্য দায়ী জাতীয়তাবাদ বিরোধী কায়েমী স্বার্থবাদী গোষ্ঠী। এরজন্য তারা ধর্ম ও অন্যান্য ছলচাতুরিকে ব্যবহার করে।আর ক্ষতিপূরণ দিতে হয় জাতিকে। যেটা ঘটেছিল ১৯০৫-র প্রথম বঙ্গভঙ্গে । তফশীলি ও মুসলিমরা একাত্মতা দেখায়নি।অন্ধ্রেও একই কারণে তেলেঙ্গানা সৃষ্টি হয়েছে। বাংলাদেশেও ধর্মের ব্যবহার জাতীয়তাবাদী চেতনাকে নস্ট করে দিয়ে সংখ্যালঘু উৎপীড়নের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে, কায়েমী শক্তি।
    সত্যিই তো ভোজপুরি, মৈথিলী,রাজস্থানী,ছত্তিশগড়ী,গাড়োয়ালী ইত্যাদি ভাষা হিন্দির উপভাষা নয়।হিন্দি সাম্রাজ্যবাদ জোর করে এগুলিকে গিলে ফেলতে চাইছে। একসময় ওড়িয়া ও অসমিয়াকে জোর করে বাংলার উপভাষা হিসেবে চালানোর চেষ্টা হয়েছিল।কামতাপুরী বা কামরুপী বাংলার উপভাষা,চাটগেঁয়ের মত রোহিঙ্গাও তাই । কিন্তু রেনেসাঁর যুগ থেকে অভিজাত শ্রেণীর সংকীর্ণ ও অস্পৃশ্যতার মনোভাব এদেরকে ক্রমে দুরে ঠেলে দিয়েছে।এদেরই জন্য একদিন হয়তো মাহাতোরাও বলবে, তারা বাঙালি নয়।অথচ এরাই পুরুলিয়াকে বাংলায় নিয়ে আসার প্রধান কারিগর। বাংলার মধ্যে এত বিভেদের কারণ হলো, বাঙালির গনতান্ত্রিক, ধর্মনিরপেক্ষ জাতীয়তাবাদ চর্চার অভাব। একটা জাতির মাণ্য ভাষা গড়ে ওঠে উপভাষা গুলোর অবদানের ভিত্তিতে। ইংরাজী, ফরাসি সব ভাষার ক্ষেত্রে কথাটি সত্যি।আগে ভাষা ও উপভাষা বিষয়টি বুঝতে হব তারপর ৫০০টি ভাষা গোষ্ঠীর উদাহরন দিতে হবে। পৃথিবীর সকল ভাষাভিত্তিক রাস্ট্রে উপজাতি গোষ্ঠীগুলো তাদের ভাষা ও সংস্কৃতি ভালোভাবে চর্চা করতে পারছে। সেটা পারছে না বরং অন্যত্র।
    ভারতের উত্তর পূর্বাঞ্চলে বাঙালির অতীতকাল থেকেই আছে। এমনকি আসামের অনেকগুলো জেলা অবিভক্ত বাংলার অংশ। তারপরও অনেক বাঙালি ঐসব অঞ্চলে অভিবাসন নিয়েছে।নেপলিরাও তো দার্জিলিং-এ অভিবাসী। পৃথিবীর অন্যত্রও এরকম ঘটনা অনেক ঘটেছে। ত্রিপুরা থেকে বাঙালিদের তাড়াতে হলে দার্জিলিং থেকে গোর্খাদের তাড়াতে হয়; আমেরিকা তো একেবারে জনশুন্য হয়ে যাবে। এটা কোনো কাজের কথা নয়। পরিবর্তিত পরিস্থিতিকে স্বীকার করতে হবে। সেই অনুযায়ী আলোচনার মাধ্যমে সমাধান করতে হবে।অসমীয়ারা যদি নিজেদের সংকটাপন্ন মনে করে সমানাধিকারে আগ্রহী নাহয, একসঙ্গে থাকতে না চায়, তাহলে বাঙালিদের ন্যায্য ভূমি বুঝিয়ে দিলে সমস্যা থাকে না। ইওরোপের সুইজারল্যান্ডে ফরাসি, জার্মান ও ইতালি ভাষার মানুষ জন সম্পূর্ণ সমানাধিকারের ভিত্তিতে একসঙ্গে আছে। না পারলে আলাদা হতেই হতো। আবার বলছি, ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র গঠনই সর্বাধুনিক ব্যবস্থা।একে ব্যর্থ করার জন্য ধর্ম বা বিশেষ মতবাদের ব্যবহার হয়। গত দুই দশকে যত রাস্ট্র গঠিত হয়েছে তা এর ওপর ভিত্তি করে।
  • বাসুদেব হালদার | 670112.203.126712.128 (*) | ২৭ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:০৫55338
  • ভারত ভেঙে কটি ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র গঠন‌‌‌ হবে সেই সংখ্যার ওপর, আমার বক্তব্যের সারবত্তা নির্ভর করে না।আর শুধু ভারতের কথা হচ্ছে কেন, পাকিস্তানও তো এই আলোচনার অংশ।ভারত ও পাকিস্তান দুটি রাস্ট্রই এই উপমহাদেশে সাম্প্রদায়িক বিষবৃক্ষের ফল। এমন নয় যে ভারত ভেঙে পাকিস্তান তৈরি হয়েছে। বরং দুটি পরস্পর বিরোধী শক্তির (একটি প্রবল সাম্প্রদায়িক অপরটি বর্ণবাদী ছদ্মধর্মনিরপেক্ষ) ব্রিটিশ সাম্রাজ্যেবাদের উত্তরাধিকারের ফল।এমন নয় যে, জাতীয়তাবাদী সেকুলার কংগ্রেসী নেতাদের মৃতদেহের স্তূপ রচনা করে পাকিস্তান আদয়করা হয়েছে। তাদের ক্ষমতা লাভ পারস্পরিক আপোষ মিমাংশার ফল।আর ধর্মের নামে অসংখ্য মানুষের রক্তস্নান।এরা দেশীয় রাজ্যগুলোর ব্যপারে কোনো সিদ্ধান্ত না নিয়েই তাড়াতাড়ি গদিতে বসে গেছে।পরে সেগুলোর দখল নেওয়ার জন্য নিজেদের মত করে যুক্তির অবতারণা করেছে, যখন যেটা কাজে লেগেছে। এদের প্রতিদ্বন্দ্বতার ফলে বাংলা ও পাঞ্জাবের মতো কাশ্মীরও বিভক্ত হয়েছে।কাশ্মিরিয়ৎ ধ্বংস, ধর্মের কারণে কাশ্মিরী পন্ডিতরা উৎপীড়িত ও বিতাড়িত। আপনার কি মনে হয়, রাস্ট্রদুটি তাসের ঘরের মতো ভেঙে যেতে পারে।এরা সাম,দাম,দন্ড ,ভেদ নীতি কাজে লাগিয়ে টিকে আছে। একটা মতাদর্শ ভেঙে ফেলতে আরেকটি উন্নত মতাদর্শ দরকার। যেটা বাংলাদেশ সৃষ্টির সময় কাজে লেগেছিল। ভারত, বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ পৃষ্ঠপোষকতায় এগিয়ে যায় নি। পাকিস্তান ভেঙে দেওয়ার সুযোগটাকে কাজে লাগিয়েছিল মাত্র। তখন কাশ্মীর সমস্যা সমাধানের তৎপরতা দেখায় নি।৭১-র যুদ্ধে সম্পূর্ন পাকিস্তান ভেঙে পড়ার বাস্তবতায় দাঁড়িয়েছিল। ভারত সে পথেও এগোয়নি। কারণ খুব সহজ একটির অস্তিত্ব অপরটির ওপরে নির্ভরশীল। কাশ্মীর সমস্যার সমাধান হয়ে গেলে ভারত ও পাকিস্তান কিভাবে লড়বে হিন্দু ও মুসলিম জাতীয়তার নামে। ভারত নিজেকে ধরে রাখার জন্য নানা পন্থা অবলম্বন করে।ভাষাকে ব্যবহার করে আবার ধর্মকেও ব্যবহার করে। আবার অভ্যন্তরীণ উত্তেজনা প্রশমনে ভাষাভিত্তিক রাজ্য গঠনের জন্য কমিশন তৈরি করে,ত্রিভাষা সূত্রর কথা বলে। যদিও বাস্তবে তা কার্যকরী হয় না। পাকিস্তান এব্যপারে মোটাদাগের ধর্মীয় আবেগকে ব্যবহার করে। নাহলে যে দেশের ৮শতাংশ মাত্র উর্দু ভাষায় কথা বলে সেই ভাষাটা রাস্ট্রভাষা! পাকিস্তান যেমন চায়না, তেমনি ভারতও চায় না যে উপমহাদেশে আর কোনো ভাষাভিত্তিক জাতিরাষ্ট্র গঠিত হোক। চাইলে শ্রীলঙ্কায় তামিল ইলম হতো।আর বাংলাদেশ তো দ্বিতীয় পাকিস্তান হয়ে গেছে,তবে আর সমস্যা কোথায়।এই টইটাকে জাগিয়ে প্রথম আলোচনা যেখানে শেষ করেছিলাম, সেখানেই ফিরে আসতে হয়-উপমহাদেশে ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদের বিকাশ দরকার। আপনাদের কাছে রাস্ট্রদ্রোহী হয়ে গেলাম না তো?
  • amit | 340123.0.34.2 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০১:২৫55339
  • অনেক কঠিন কঠিন তত্ত্বের আলোচনা হলো। কিন্তু এতো আলোচনার ইনফারেন্স বা বটম লাইনটা কি ? এখন আদৌ কি করতে চাওয়া বা করার কথা বলা হচ্ছে সেটা সোজা বাংলা ভাষায় ২-৩ লাইনে বলা যাবে ?
  • বাসুদেব হালদার | 342323.233.5612.106 (*) | ২৮ অক্টোবর ২০১৮ ০৫:১৫55340
  • মোদ্দাকথা হলো, ধর্মের নামে খন্ডিত স্বাধীনতা অর্জন উপমহাদেশবাসীর কাছে সুখের হয়নি। ধর্মীয় উগ্রতা ও বর্ণবাদী শোষণকে প্রতিহত করতে পারত, ভাষাভিত্তিক জাতীয়তাবাদী চেতনা। তারই বিকাশ দরকার।এটা কোনো উগ্রতা নয়, যে কোথাও ধর্ম,বর্ণ ও ভাষার নামে মানবাধিকার লংঘন হলে গর্জে উঠবো না।সবার উপরে মানুষ সত্য। এরপর আমরা বাঙালি, পাঞ্জাবি, তামিল,সিন্ধি, কাশ্মিরী বা গুজরাটি। পাকিস্তানত্ব,ভারতীয়ত্ব, বাংলাদেশীত্ব এইগুলি সবার পরে।অথচ এগুলির বিনিময়ে ভাষা সংস্কৃতি ও ঐতিহ্যকে মুছে দেওয়ার চেষ্টা চলছে। দুঃখিত কয়েক লাইন বেশি হয়ে গেল।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। হাত মক্সো করতে মতামত দিন