এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • চলো এগিয়ে চলি

    Sumon Ganguly Bhattacharyya লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ২৪৫৩ বার পঠিত
  • #চলো এগিয়ে চলি
    #সুমন গাঙ্গুলী ভট্টাচার্য

    দ্রোণাচার্য অর্জুনকে বললেন, "ওই গাছের ডালে কী দেখতে পাচ্ছ বলো,,"
    অর্জুন বলল, "আমি শুধু পাখির চোখ দেখতে পাচ্ছি"।,,
    এর আগে তাঁর কোনও শিষ্যের উত্তর আচার্য দ্রোণের মনঃপূত হয় নি।
    অর্জুন শর সংযোজন করে শর নিক্ষেপ করলেন।পলকে চক্ষুবিদ্ধ সেই পাখি মাটিতে।
    মহাভারতের এই অংশ টি আমাদের মায়েদের
    খুব প্রিয় বলুন।একটাই লক্ষ্য আমাদের বাচ্চা কে মানুষ করা, বড় করা। পাখির চোখ ।
    কিন্তু একজন বিশেষ শিশুর মা -বাবা যাঁরা, ওই গল্প আমাদের ও জানা আমরাও চেষ্টা করি কিন্তু আমাদের অর্জুন লক্ষ্য ভেদ করতে
    পারে না।শিক্ষক রূপি বাবা -মা এর কোন ভুল নেই, ছাত্রের শর-ধনুক সব ভালো আপ টু ডেট
    কিন্তু পাখি লক্ষ্যভ্রষ্ট হয়।কারণ আমাদের অর্জুনদের অনেকওর সেই একাগ্রতা নেই।
    আমরা তো ঠিক এই জায়গা থেকে শুরু করি।
    তাই আমার মনে হয় আমরা প্রত্যেকে চাঁদমারি
    টা নিজের মত সাজাই চলুন।
    আমাদের বাচ্চাদের প্রথম সবার সাথে আলাদা
    হওয়া শুরু হয় যে গুলি দিয়ে যেমন সেনসুরি ইস্যু,কথা বলার জড়তা,এবং সর্বোপরি বোঝার এবং বোঝানোর।আমরা যা কিছু করি,দেখি সব কিছুই তো সিগন্যাল যাওয়া আসা,মাথা র মধ্যে প্রসেসিং।আমাদের বাচ্চাদের সিগন্যাল আসা যাওয়ার পথ তো জিকজ্যাক তাই কোন কিছুই অনেকক্ষেত্রে তারা সঠিক ভাবে নিতে পারে না Anxiety /উত্তেজনা বাড়তে থাকে ,সমানুপাতিক হারে বাচ্চা অস্থিরতা করতে থাকে।আপনার বাচ্চা তার গান,কথা বলা আপনি বুঝতে পারছেন অন্য ব্যক্তি ধৈর্য্য ধরে শুনবেও না।পৃথিবী নির্মম এটা স্পেশাল বাচ্চার মা হয়ে হারে হারে বুঝেছি।মোটামুটিThumbrule যে বাচ্চা রা কথা বলতে
    পারেনা বা কম বলে তাদের অস্থিরতা বেশি।
    অনেক মানুষ পৃথিবীতে আছেন যারা কথা বলতে পারেন না কিন্তু তারা অস্থির থাকেন না এতো টা।অটিজম এমন একটা সর্বগ্রাসী অসুবিধে যার হয় তাকে আষ্টেপৃষ্ঠে বেঁধে ফেলে অনেক সময়।অনেকের চোয়াল নাড়ানো,হাত এবং পায়ের সঞ্চালন জিভের জড়তা থাকে ।হয়তো এরা কিছু বলতে চেষ্টা করে বোঝাতে চেষ্টা করে পারে না। ফলে যোগাযোগ এর রাস্তা দুর্গম হয়ে যায়।
    জ্ঞান দিচ্ছি না।শুধু একটা কথা আমরা যদি ভাবতে পারি,সাধারণত বাচ্চা তো সবার খুব আশার জিনিস।অটিস্টিক বাচ্চার বাবা-মা বাচ্চার ভালো হবে
    একদিন মোটামুটি কাজ চালিয়ে নিতে পারবে এই পৃথিবীতে, এই টা ভেবেই তো এত যুদ্ধ,এত
    সেমিনার, এতো ছোটাছুটি করি,প্রথমেই আমরা যদি নেগেটিভ শুনি না তবে আর এগোতে পারবো না।প্রত্যেক টি বাচ্চা প্রত্যেকের থেকে আলাদা যেমন তেমনই সারা
    পৃথিবী জুড়ে autism সম্পর্কে মতামত।কোন
    একটা মাত্র নিয়ম যদি ঠিক হয় তা হলো এই অবস্থা আজীবন,লেভেল অনুযায়ী ম্যানেজ করে যায়। এই বার আমরা যদি ভাবি যতই চেষ্টা করি আমার বাচ্চা ওনার মত হবে না বা আমার বাচ্চা অনেক এগিয়ে আমি বাবা ওদের সাথে নেই ,কোন টাই হয় তো ঠিক নয়।
    অটিজম ম্যানেজ হতে পারে একমাত্র কালেক্টিভ কিছু জ্ঞান দিয়ে।আপনি কিছু জানলেন বললেন,উনি কিছু,উনি কিছু কারোর
    কথা ফেলনা নয় আবার এক ও নয়।
    সমস্ত দিক থেকে সত্যি কথা, প্রফেশনাল হেল্প
    আমাদের অনেক বাচ্চাদের লাগতেই পারে কিন্তু তা বলে এই নয় পারস্পরিক আদানপ্রদান ছাড়া উন্নতি সম্ভব। আপনার বাচ্চাকে কোটি কোটি টাকা খরচা করে স্পেশাল স্কুল,স্পেশাল শিক্ষা, হাতে কলমে থেরাপি শেখাতেই পারি।কিন্তু আমরা যদি
    অন্য স্পেশাল বাবা -মা দের সাথে যোগাযোগ না রাখি,বাচ্চাকে অল্প হলেও ইনডিপেনডেন্ট
    না বানাতে পারি, পাড়া প্রতিবেশীর সাথে বাচ্চা টাকে না চেনাতে পারি খুব লাভ হবে কি।
    আমাদের কোন বাচ্চা চুপি চুপি বাড়ি থেকে বেড়িয়ে গেলে ফিরে আসতে পারবেনা নিজের
    আস্তানায়।পৃথিবীর যেকোন প্রান্তে ব্যস্ত মানুষের ছড়াছড়ি আপনার বাচ্চা ফোন নম্বর বললেও কেউ একটা ফোন করতে দেবে না।সাহায্য অনেক দূরের কথা।
    ব্যতিক্রম মানুষ হাতে গোনা যারা এগিয়ে আসবেন।
    তাই যে বাচ্চা কথা বলতে পারছে না তার পরনের প্রতিটি জামার ভাঁজে যদি নম্বর টি সেলাই করে দেওয়া যায়। গলায় একটা পরিচয় পত্র,অথবা অটিজম ব্রোচ(শুধু চিহ্ন নয়।Autism কথাটা লেখা),হারিয়ে গেলেও বাচ্চা কে যাতে পাওয়া যায়।
    ফোন নম্বর মুখস্ত করানো বোধকরি আমাদের
    প্রথম কাজ।সাথে বাড়ির অভিভাবক এর নাম
    আর ঠিকানা। আমাদের বাচ্চাদের ইনফরমেশন শুধু দিয়ে রাখলেই হবে না।তাদের ব্যবহার শেখাতে হবে। এরা ভীষণ টেকনোলোজি বোঝে তো ,মোবাইল ঘাঁটতে পছন্দ করে প্রত্যেক কে ফোন করা যদি শেখাতে পারি।নিজের বাড়ি/পরিবার কে ফোন করা।দিনে একবার করে ফোন করিয়ে অভ্যেস তৈরি করে রাখতে পারি আমরা।
    বাচ্চা কে রেলগাড়ি বা বাস চিনিয়ে কখনো একা যাবে না যদি বার বার আমরা বলে দিতে
    পারি।আমি ব্যক্তিগত ভাবে রুকু কে ট্রেন ,নৌকা,জাহাজ,বাস প্লেন এ একা যাবে না বলে দিয়েছি।সাইকেল নিয়ে ঘুরবে কিন্তু একটা বৃত্ত বুঝিয়ে দিয়েছি তার বাইরে যাবে না।GT রোড একা যাবেনা ইত্যাদি।এবং সে নিজে একটা ম্যাপ এঁকে বুঝে নিয়েছে তার মত লোকালয়,চারপাশ।বাচ্চাকে সৌরজগৎ শেখাবার আগে চার পাশে কি আছে চিনিয়েছি।ফোন নম্বর,বাড়ির নম্বর।ল্যান্ডমার্ক ইত্যাদি।
    ।আমরা যদি চার পাশে একটা অটিজম বান্ধব পরিবেশ একটু গঠন করতে পারি।এর জন্য প্রচার এবং সংগঠনের সাহায্য প্রয়োজন।
    পারিপার্শ্বিক মানুষ কে যদি ক্রমাগত অটিজম নিয়ে বোঝাতে পারি, আখেরে আমাদের বাচ্চারাই নিরাপদ।
    সব বাচ্চারা হয় তো সব কিছু পারবে না কিন্তু
    যদি কিছু পারে এই নিয়েই একটা সুস্থ চিন্তা ।
    কি ভাবে রাখবেন টাকা কিভাবে আপনার বাচ্চা ব্যবহার করবে সব, কিভাবে লোকালয় চিনবে এই ভাবনা আমাদের পাখির চোখ বোধহয় ।বাচ্চার সঠিক বেঁচে থাকা-আমাদের সাহায্য ছাড়া/যখন আমরা থাকবোনা।
    হীরক রাজার দেশের মত যন্তর মন্তরে যেন মগজ ধোলাই না হয় আমাদের। স্পষ্ট ধারণা প্রয়োজন।কোথায় কি শেখাবো এটা সম্মন্ধে বার বার খোঁজ নেওয়া খুব প্রয়োজন বোধহয় আমাদের।
    সবার আগে দরকার আমাদের বাচ্চারা সুস্থ হয়ে বাঁচুক।আমাদের কাছে থাকুক।
    এক নীল সমুদ্র ভালোবাসা।
    সুমন।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ | ২৪৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লাজুক না হয়ে মতামত দিন