এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  আলোচনা  বিবিধ

  • মেয়েদের চোরাগোপ্তা স্ল্যাং

    Tripti Santra লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ০৬ আগস্ট ২০১৭ | ২৬৮৪ বার পঠিত
  • আমাদের এক্কাদোক্কা বেলায় সে অর্থে কোনো স্ল্যাং নেই। জাতীয় পতাকা উড়লে যেমন কোন সমস্যা নেই, দারিদ্র নেই। ডগডগে সিঁদুরের ক্যামোফ্লেজে যেমন সম্পর্কের শীতলতা নেই। বিজ্ঞাপনের ঢেউয়ে যেমন ভেসে নেই নিয়োগের লাশ।

    পাঁচমিশেলি কলোনির খোলা কন্ঠ থাকে। ভাষা থাকে। আর বাবু কলোনির তক্তপোশের খাবলা-খাবলা তোষক ঢাকা রঙিন তাঁতের চাদরে, আর ওপরে ফুলতোলা জয়পুরী বেডশীট। কালেক্ট্রেট-ট্রেজারি-সাড়েদশ পাঁচ, ঝোলভাত-খড়কে কাঠি বিড়ি হুঁকো, ধুতি-পাঞ্জাবী, পাটপাট সফেদ পিতৃতান্ত্রিকতায় আদর্শ মানুষের পাঠক্রম। সেখানে যৌনতা দূরবস্থান- যৌবন শব্দটাও বাড়াবাড়ি। নিমা পরা ল্যাপ্টানো বুকের মেয়েদের সতীত্ব আর বুকটুক বেশ ডাঁশা হলে বয়স্থা মহিলাদের ঈর্ষাজনিত উদ্বেগ।

    ইংরাজি শিক্ষায় শিক্ষিত বাবুগোষ্ঠীর বাইরে বিহার সন্নিহিত পাঁচমিশেলি জনগোষ্ঠী – বক্ষটুলি, পাঁজরা পট্টি, ফুলবাড়ি, পেঁয়াজি মোড়ের আখাস্তা তেলেভাজা ভাষা। এসব ছোটোলোকদের গালাগাল শুনতে নেই তবু ছেলেদের মুখ চুইয়ে কিছু শব্দ- গানের ধুয়োর মত ‘বাল’-‘বোকাচোদা’, - শিক্ষিত নিয়ন্ত্রণে রেখে ঢেকে বলে। কারো সে বালাই নেই। যৌনতার মত স্ল্যাংও সামাজিক ভাবে অপাংক্তেয়। এটাই মফস্বল শহরের কলোনির একাধারে চিত্র তথা চরিত্র। পুরোনো যুগে যৌনতা নিয়ে মানুষের আড়ষ্ঠতা ছিল না। ‘কামসূত্র’ রচনা করেছিলেন ভারতীয় মনন। ভিক্টোরীয় নীতিবাগীশ ক্ষুদ্রতা স্বছ যৌনতাকে করেছিল বৃত্তবন্দী।উপনিবেশের ভাষা সাহিত্যে আধুনিকতার নামে ইউরোপীয় সাঁজোয়া বাহিনীর আক্রমণ এমনি তীব্র যে আমাদের সোমত্ত সংস্কৃতিকে পূর্বপুরুষহীন মনে হয়। ভাষায় চলে আসে শিক্ষিত সামাজিক নিয়ন্ত্রণ। শুধু যৌনতা-বিষয়ক স্ল্যাংই নয়, সাধারণ স্ল্যাংয়েও লাগাম লাগাতে চায় এই ভন্ড সমাজ। লেখাভাষায় প্রয়োগ করতে কুন্ঠা বোধ করায় ‘ছেলেভুলানো ছড়া’য় দু-একটি শব্দ বদল করে রবীন্দ্রনাথ ছড়াটিকে ভদ্রসমাজে চলনযোগ্য চেহারা দেন-

    ‘বোন কাঁদেন , বোন কাঁদেন খাটের খুরা ধরে
    সেই যে বোন গাল দিয়েছেন স্বামীখাকি বলে।’

    ‘ভাতারখাকি’র পরিবর্তে ‘স্বামীখাকি’। শব্দান্তরটা কি রবিবাবু নিজে করেছিলেন, নাকি তাঁর ভক্তকুল?

    ‘যজ্ঞকুণ্ড উপরেতে হনুমান মোতে’ এই কথাটা পেচ্ছাপ করে বলে দীর্ঘ ভদ্রভাষায় প্রকাশ করি। এরকম দৃষ্টান্ত প্রচুর। ইংরেজি ভাবধারায় শিক্ষিত বাঙালী সমাজের পাঠবই শোভনচর্চিত রূপটিকে আদর্শ মধ্যবিত্ত বাঙালি সমাজের ছবি বলে ভাবার শ্লাঘা বোধ করি। যদিও তথাকথিত মুষ্টিমেয়ের ভদ্রসমাজের বাইরে বৃহত্তর লোকসমাজ সত্যিসত্যি এমন শোভন চর্চিত নয়।

    ইউরোপীয় রেনেসাঁস- চোয়ানো সৌন্দর্যবোধ বঙ্গীয় রেনেসাঁসের খাত বেয়ে আমাদের সাহিত্য-শিল্প আর জীবনদর্শনকে শাসন করার সময় থেকেই সমস্যার সূত্রপাত। সৌন্দর্যের বোধ কোন অখণ্ড বা শ্রেণী-উত্তীর্ণ ধারণা নয়। শ্রেণীতে শ্রেণীতে, গোষ্ঠীতে গোষ্ঠীতে, সমাজে সমাজে- এমনকী, হয়ত , ব্যক্তিতে ব্যক্তিতে সৌন্দর্যবোধ পৃথক।সাহিত্য-সৌন্দর্যের দখলদারি যেহেতু রাষ্ট্রের হাতে, সেখানে রাজশক্তির প্রভাব অনস্বীকার্য। উপনিবেশিক ভারতবর্ষে ইউরোপীয় উচ্চশ্রেণীর সৌন্দর্যতত্ত্ব আমাদের মাথায় ছড়ি ঘুরিয়েছে, এবং আজও ঘোরাচ্ছে। যদিও এ-দেশের বেশিসংখ্যক নিরক্ষর,গরিব, কিষাণ- মজুরের সৌন্দর্যতত্ত্ব এখনো অনেকখানি নিখাদ রয়ে গেছে, মুষ্টিমেয়ের সৌন্দর্যতত্ত্বের সেখানে কোন দাম নেই। কিন্তু, তবু মুষ্টিমেয়ের তত্ত্বকেই এ সমাজে ‘সবার’ বলে চালানো হয়।রুচি, প্রথা ও সংস্কারের ক্ষেত্রেও এই জোর-জবরদস্তি। বৈচিত্রময় পেগান সংস্কৃতি ভেঙে, নানান পৌত্তলিক আচরণকে ধিক্কার জানিয়ে যেমন খ্রিষ্টধর্মের প্রচার হয়েছে; তেমনি এক্ষেত্রে শিক্ষিত বর্ণহিন্দুদের দাপট। পরিবর্তিত সমাজ ব্যবস্থায়, শিল্পবিপ্লবে, বিশ্বায়নে,কৃষিজীবী মানুষের স্থানাঙ্ক পালটে যায়- ডায়াস্পোরিক বা শেকড়-হারানো মানুষের সংস্কৃতি, গান ,যাপন সবকিছুতেই টান পড়ে। নাগরিক নন্দনতত্ত্বের বাইরে যে বিরাট লোকসমাজের অস্তিত্ব, তা primitive বা unenlightenmentএর সৃষ্টি বলে একটা অনুকম্পা মিশ্রিত ধারণা নন্দনতত্ত্বের লোকেরা পোষণ করেন। নন্দনতত্ত্বের খাঁচাকলে ‘ভাতারখাকি’র ‘স্বামীখাকি’তে রূপান্তর। এবং রেখেঢেকে প্রমাণ করা যে ‘হারামজাদা’ বা ‘মাগভাতার’ গোছের দু-একটা মুখ ফসকানো অভব্য শব্দ বাদে উচ্চবিত্ত, মধ্যবিত্তর শিক্ষিত অন্দরমহলে কোন স্ল্যাং বা খিস্তি নেই।

    নিম্নবর্গের ধুলোপড়া পোকাকাটা মেয়েদের মুখে অনর্গল খিস্তি মানালেও, মধ্যবিত্ত শিক্ষিত নারীর ঠোঁটে খিস্তি একেবারেই বেমানান।অথচ ব্যবহারিক জীবনে পুরুষদের মতই কোন কোন মহিলার মুখে ‘বাল’ বা ‘বোকাচোদা’ খুবই অনায়াসে নির্গত হতে শুনতে পাওয়া দুর্লভ নয়। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিবাদ, গৃহঅশান্তি, যৌনমিলনে ব্যর্থতা ইত্যাদি যাবতীয় অপূর্ণতার শূণ্যস্থান পূরণ ঘটে অনর্গল খিস্তিতে।ছেলেদের মুখে যেমন ‘তোর মাকে চুদি’, মহিলারাও বিরাগভাজন ব্যক্তির শিশ্ন কাটার অভীপ্সা জাহির করে ‘বাল ছিঁড়ে হাত ধরিয়ে’ দেবার ইচ্ছা প্রকাশ করে। এগুলো সাধারণত সবই আসলে বিরক্তি বা হতাশার দ্যোতক। যৌনতা কেন্দ্রিক বা যৌনাঙ্গ বিষয়ক শব্দ অনেক ক্ষেত্রেই নিছক মুদ্রাদোষে পর্যবসিত। যেভাবেই হোক, এ ধরণের বাক্যবন্ধ সমাজে প্রচলিত। চুলের স্বল্পতা বোঝাতে ‘ভাদিবুড়ির বালের মতো চুল’ বয়স্কা মহিলাদের মুখে শুনেছি। ছেলের জন্য মেয়ে পছন্দের সময় মা-কাকিমা-মাসিমা যেমন ‘গতরভারি কন্যা’ খোঁজেন , দেখে এসে মন্তব্যঃ ‘আমাগো খোকার লগে ঠিকই হইব, টিইপ্যা-টুইপ্যা আরাম হইব’। বিয়ের পরপরই সোনার চাঁদ সেই ছেলের কামাখ্যার ভেড়া হয়ে যাওয়া দেখে মন্তব্যঃ ‘বউ হল গলার মালা, মা হল মাগী’। অত্যধিক বউপ্রীতির জন্য বউএর বাপের বাড়ির মা-বোনের রেহাই নেই। ছেলে ‘বউ-ভেড়ুয়া’ মানে বউ ছলাকলায় পটু এবং তাঁর মা-ও কামক্রীড়ায় পটু- অর্থাৎ ‘ছেনাল’ সবার কাছেই তারা ‘নাংমারানি’। যে নদীর এ-কুল ভাঙা ও-কুল ভাঙা- ‘গাঙ মারানি’, ‘নাংমারানি’ অর্থাৎ মায়ের সঙ্গেও শুয়েছে, মেয়ের সঙ্গেও শুয়েছে।

    বাংলা স্ল্যাং-এ মেয়েদের নিয়ে নানারকম শব্দের যে প্রাচুর্য, তাতে মেয়েদের ‘মাল’ বা উপভোগের জিনিস হিসেবে দেখার প্রবণতাই বেশি। সমাজে পুরুষের যেহেতু অগ্রাধিকার, যৌনক্ষেত্রেও তা-ই। স্ল্যাং তৈরি ও ব্যবহারেও সেই আধিপত্য স্পষ্ট। পুরুষের স্ল্যাংএর যে ব্যাপ্তি, তা মেয়েদের স্ল্যাংএ নেই। ক্বচিৎ স্ল্যাং-এর মাধমে কারো অকল্যাণ কামনা করা কিম্বা অন্যের অসতীত্বের ইঙ্গিত করা- মেয়েদের স্ল্যাংএর ব্যাপ্তি এর বেশি কিছু নয়। ‘ভাতারখাকি’ ইত্যাদির মধ্যে আছে অমঙ্গলের কামনা, ‘পেটফোলানি’ , ‘খানকি’ ইত্যাদিতে রয়েছে অসতীত্বের আরোপ।

    আমার মতে, স্ল্যাংএ সাধারণত দুটি বিষয় প্রাধান্য পেয়ে থাকে –
    ১) যৌনতা
    ২) অবৈধ সম্পর্ক

    দুটির মধ্যে একটা মিলের ব্যাপার আছে, দুটিতেই ‘যৌনতা’ রয়েছে। যৌনতামূলক গালাগালি অপেক্ষাকৃত ভালো অভিপ্রায়বাচক, কেননা সেখানে অপমান করা ছাড়া কিছু থাকে না। অনেক সময় ‘অবৈধ’ ইংগিত ছাড়াই সেসব গালি ব্যবহৃত হয়। ‘বে’ শব্দটি বাংলায় প্রভূত ব্যবহৃত হয়। এটি ‘বেজন্মা’র অপভ্রংশ হলেও বাক্যে প্রয়োগের সময় কোন গূঢ় অর্থ থাকে না। বাংলা প্রবাদে যৌনতার প্রসঙ্গ নানাভাবে এসেছে।‘আহার- মৈথুন – ভয়, যত বাড়াবে তত হয়’- একটি বহুল প্রচলিত প্রবাদ। ‘আদেকলার হল ব্যাটা,নাড়ি কাটতে চ্যাট কাটা’ দৃষ্টান্ত প্রচুর। মোদ্দা কথা আমাদের জীবনের শিক্ষিত শোভন সংস্করণে স্ল্যাংএর কোন পাঠ না থাকলেও আমরা জানি এর চোরাগোপ্তা স্রোত আছে। কোন কোন দাম্পত্যের নিরীহ শোভন সংস্করণে স্ল্যাং তো একটি নিত্য-ব্যবহার্য আসবাব। আমাদের জীবনে যুগপৎ যৌনতা আছে এবং একটা ধরি-মাছ-না-ছুঁই-পানি গোছের ন্যাকান্যাকা ভাবও আছে।

    জীবন যাদের গোলগাল নয়, পাউরুটি-মাখন নয় – তাদের সামনে গোলগাল মানুষের চরম আদিখ্যেতা ধরা পড়লে প্রতিবাদে ও তাচ্ছিল্যে স্বতঃস্ফূর্ত আখাম্বা খিস্তি ছাড়া আর কিছু আসে না। কনকনে শীতের সকালে ঠান্ডা জলে যে মেয়েটি বাসন মাজছে, তাকে যদি কেউ হটওয়াটার ব্যাগে পশ্চাৎদেশে গরম করতে করতে উপদেশ দেয় ‘পায়ে মোজা, হাতে গ্লাভস পরে কাজ করো না কেন’ , তখন তার নাভি থেকে খিস্তির ব্রহ্মনাদ উঠে আসা স্বাভাবিক। শুকনো রুটি ছেড়ে কেক খাওয়ার মতো, এরকম গাঁড় জ্বলুনি কথাবার্তা বললে ‘পুটকি-মারা’ কথা বলিস না বা ঐ ধাঁচের অন্য যে-কোন খিস্তি ফিট করে যায়।
    এই প্রসঙ্গে একটা গল্প মনে এলো। ইস্কুল থেকে বাড়ি ফেরার সময় পশ্চিমের পুরো রোদ্দুরটা মুখের ওপর এসে পড়ে। সাতখানা পিরিয়ড, প্র্যাক্টিকাল ইত্যাদি সেরে এক কাঁড়ি বইপত্র বুকদাবা করে (তখন ব্যাগের চল হয়নি)ঘরে ফিরছে আমার সুস্তনী ছোড়দি। শুধু মেয়েদের বুকের দিকে তাকিয়ে কথা বলে এরকম এক দাদার খেজুরে আলাপ- ‘কী ইস্কুল থেকে ফিরছিস?’ এই প্রশ্নের উত্তরে দেড় মেইল হেঁটে আসা ক্লান্ত শ্রান্ত ক্ষুধার্ত ছোড়দি জবাব দিয়েছিল- ‘থামেন তো, আপনার মুখ না তো, ‘পোদ’; - প্রচন্ড অপমানিত সেই দাদা ‘মেয়ের কী মুখের ছিরি’, ‘এ কী পরিণতি’ এসব বলে মুখ কালো করে পালায়।
    ভদ্র সমাজের নান্দনিক ভাষার বাইরে সাধারণের ভাষা এবং যাপন অনেক উদার। বৃহৎ লোকসমাজের কথা,গান,ছবি নিয়ে যে লোকসাহিত্য তা কিন্তু উচ্চশ্রেণীর ভাষা বা তত্ত্ব নিয়ে আক্রান্ত নয়। চাপিয়ে দেওয়া অনুশাসন অথবা মূল্যবোধের ভারে ন্যুব্জ নয়। বৈষম্যমূলক সমাজব্যবস্থায়, বিষম অর্থনীতিতে, বিষম সম্পর্কের সংঘাতে যে ক্ষোভ, চাওয়া-পাওয়ার হিসেব তা নিয়ে অযথা ঢাকঢাক গুড়গুড় নেই। উদাহরণ প্রচুর। লালমণির হাট (মৈমনসিংহ) অঞ্চলের মুসলমান মেয়েদের বিয়ের গান, নবযৌবনা তরুণীর স্তনকে ‘মুসরি কলাই আগা ডলমল’ বলে বর্ণনা করে তার সম্ভাব্য ব্যবহার বিষয়ে সোল্লাসে গাওয়া হচ্ছে, অন্তঃপুরিকার মেয়েরাই গাইছে এই জীবনোল্লাসের গান -

    ‘একে তো মুষরী কলাই আগা ডলমল করে রে
    হায়রে মজার ডলন কে ডলিতে পারে রে।
    কইয়ার মাক বান্দিয়া থুনু আড়িয়া গরুর মাঝে রে
    চুপড়াইতে আড়িয়া শালায় হিকরিশ মারিয়া থাকে রে।
    কইয়ার বইনোক বান্দিয়া থিউচোবে ঘোড়াশালার মাঝে রে
    চুপরাইতে ঘোড়াশালা চেহে চেহে করে রে।’
    কইয়ার মালিক বান্দিয়া থুইচোবে পাঠা ঘরের মাঝে রে
    চুপরাইতে পাকশালা ম্যালম্যালায়ে আছে রে।
    বরপক্ষের মহিলারা কইয়া(কন্যা) পক্ষের মহিলাদের উদ্দেশ্যে এই গান গায়।
    নাগরিক মধ্যবিত্ত রুচির পথে অতি অস্বস্তিকর আরেকটা গানের উদাহরণ দিই।কন্যার মায়ের দীর্ঘ ও কুঞ্চিত(থোব্রা-থুবরি) গোপনাঙ্গের কেশ দিয়ে বড়ো ঘরের চাল ছাওয়া হবে, সেই উল্লসিত অভিলাষ প্রকাশ করা হয়েছে এই গানে-
    ‘বিন্দালাল কি নাল রে
    কইনারে মায়ের থোবরা থুবরি বাল
    কি বিন্দা নাল কি বিন্দা নাল রে
    তাকে দিয়া ছান দিমো বড়ো ঘরে চাল রে।’

    এসব পর্ণোগ্রাফি নয়, খণ্ড জীবনচারণের উল্লাস।এখানে কোন ব্যক্তিগত গোপন যৌনকল্পনা ও তার তৃপ্তি বিধানের আয়োজন নেই। এর চেয়ে অনেক বেশি অশ্লীল লেগেছিল অনুচ্চারিত একটি যৌন-ইংগিত। বিএড পাঠরতা অবস্থায় সদ্য বিয়ে করে ফিরছে এক বান্ধবী। ছোট একটি কাগজ ভাঁজ করে কর্ণারে ফুটো করতে বলে জনৈক প্রতুল। সরল মনে কোণের কাগজ কাটে সেই বান্ধবী- কাগজ খুললে স্বাভাবিক ভাবেই সেই ফুটো অনেক বড় দেখায় – বিবাহের আগে ও পরে নারীর যৌনাঙ্গের পরিবর্তনের ইঙ্গিতময় হাসি হাসে প্রতুলদের দল। বান্ধবী হতবাক, পালিয়ে বাঁচে। তেমনি অশ্লীল লাগে ‘কাটামাছের স্বাদ বেশি’ জানিয়ে মহিলাদের হেসে গড়িয়ে পড়ায়- হিন্দু বাঙালির সংকীর্ণ সাম্প্রদায়িক ইংগিত।

    সাধারণের সহজ যাপনের পাশে আমাদের খিস্তি খাওয়ার মতো অজ্ঞানতার একটা দৃষ্টান্ত দিই- বারো বছরের কাঙাল ষাঁড়ের মূত্ররন্ধ্রে ন্যাকড়া লাগিয়ে নালুই বানাচ্ছে।‘নালুই’ কী? কাঙাল কী বলেছে,তার মুখেই শোনা যাকঃ

    ‘আমাদের গাই বাছুরটা ডাকছে বটে। এখন উয়ার পাল খাবার টেইম।গঞ্জের গরুর হাসপাতালে নে গেলে কলের পিচকিরি দে পাল খাওয়ালে বড় জাতের গরু হবে। কিন্তুক আমার গাইটা বড় ছেঁচড়া।কলের পিচকিরির ইনজিকশনের সময় খুব নাপানাপি করে।এই নালুইটা গাইয়ের বুকির সামনে ধইরলে আর নাপাবেনি,চুমমেরে যাইক্‌বে।’

    এর পাশে আমাদের প্রায়ক্ষেত্রে দেখা অন্য একটি সীনের কথা ভাবা যাক। ২৮ বছরের শিক্ষিতা চাকুরিরতা মহিলার লেবার পেইন উঠেছে – দু-বছরের বিবাহিত জীবন, অথচ উনি নাকি সত্যি জানেন না কোথা দিয়ে বাচ্চা বের হয়। কুমারী মেরীর মা হবার মত পবিত্র-পবিত্র ব্যাপারে উনি বিশ্বাসী এবং সতীপনা। এর জন্যে সঠিক খিস্তি কী হতে পারে পাঠক ভাবতে পারে, আমার জানা নেই।

    স্ল্যাং সর্বদা ভাষা-নির্ভর নয়, সংস্কৃতি-নির্ভর।‘এক জায়গায় গালি, অন্য জায়গায় বুলি’ কথাটা তো সবারই জানা। ‘বাস্টার্ড’ কোথাও গালি, কোথাও বা ‘সখা’ সম্বোধনের সমতুল। ‘ব্লাডি’ কথাটা ইংরেজীভাষী ব্রিটিশদের কাছে যতই তীব্র অর্থ বহন করুক, ইংরেজীভাষী আমেরিকানদের কাছে তা মূল্যহীন। বার্নার্ড শ’র ‘পিগম্যালিয়ন’ যেদিন লন্ডনে প্রথম মঞ্চস্থ হয়, সেদিন ঐ নাটকে শ্রীমতি প্যাট্রিক ক্যাম্বেলের মুখে ‘ব্লাডি’ কথাটা শোনার জন্য প্রচুর ভিড় হয়েছিল।কথাটা শুনে কেউ কেউ মুর্চ্ছাও যায়।কোন শব্দ কার কাছে কী অর্থ বহন করে বোঝা মুশকিল। তেঁতুলতলার হরিজন পরিবার ভাদুলাল আর তার বউ। বউ বেশ যুবতী,গরম ও জাঁদরেল। নেশা-ভাং করে ভাদুলাল ঘরে ফিরলে বউ প্রচণ্ড গালিগালাজ করে, যেজন্য ‘খিস্তিবাজ মাগী’ বলে পড়শিমহলে তার ঢিঢি আছে।আশ্চর্যের কথা, সব গালাগাল ভাদু চুপচাপই হজম করে। কিন্তু বউ যদি বলে ‘তোর মুছ পর মুতি’ – তবে আর রক্ষে নেই। পিটিয়ে তক্তা বানায় সে বউকে।

    শুধু যে কিছু শব্দই সংবেদনশীল, তা নয়। অনুচ্চারিত কিছু ক্রিয়াভিত্তিক আচরণও অন্যকে তাতিয়ে দেবার পক্ষে যথেষ্ট। হায়দারপুর এলাকার জমজমাট কলতলা। একটি কল দিয়ে সুতোর মতো জল এবং অগণিত কলসির ভিড়। কাজিয়া চালু রয়েছে। সবেরা বিবির চিল-চিৎকারে কান পাতা দায়। যার উদ্দেশ্যে গালি; সেই কবীরা বিবি নির্বিকার, কিছুই বলছে না।শুধু সরু গলার কলসির মধ্যে হাত ঢোকাচ্ছে আর বের করছে। আর এই আপাতদৃষ্টিতে নিতান্ত নিরীহ এই কাজটি দেখেই রাগে ফেটে পড়ে সবেরা। আসলে, দেখতে নিরীহ হলেও কাজটি গভীর ইংগিতবাহী। অপরপক্ষের (এখানে কবীরার) বিধবা বা বেওয়া হওয়ার অভিসম্পাত আছে এতে।হাতে চুড়ি না থাকলে তবেই কলসির মধ্যে স্বচ্ছন্দে হাত ঢোকানো যেতে পারে। চুড়ি,বালা এসব এয়ো স্ত্রীর অলংকার। হাতে চুড়ি থাকবে না, হাত সহজেই কলসিতে ঢুকবে- অর্থাৎ ‘ভাতারখাকি’ হবে সে।

    শাক দিয়ে মাছ ঢাকার ফালতু চেষ্টা আছে বটে, কিন্তু এটা সত্যি যে সাধারণের জীবনে জল হাওয়ার মত, যৌনতা-স্ল্যাং নিয়ে খেলা করতে দেয়না শিক্ষিত সমাজ। কত যে ট্যাবু এই নিবন্ধ রচনা করতে গিয়ে, তার একটি বিবরণ দিয়ে আমার লেখা শেষ করব।‘শহর’-এর আগের কিছু বিশেষ সংখ্যা দেখে অনুমান করা যায়,স্ল্যাং নিয়েও বিদগ্ধ জনেরা অনেক ভালো লেখা লিখবেন।আমার বলার কথা এই যে, ভদ্রসমাজে ছেলেদের যেমন স্ল্যাংএর চোরাগোপ্তা দুর্দান্ত স্রোত আছে, মেয়েদের মধ্যেও তা প্রবল ভাবে আছে। কারো কারো মুখ দারুণ ‘পাশ করা’।

    রাজার তিন রাণী, এই রাজাকে নিয়ে একটি চুটকি বলি। রাজামশাই দ্বিপ্রহরে আহারে বসে খাবার পাতায় কুঞ্চিত কেশ পেলেন- বুঝলেন সেটি যৌনকেশ। কিন্তু, কার? বড় ধন্দে পড়লেন তিনি -

    বড় রাণীর বৃদ্ধকাল
    তার হল পক্ক বাল
    অতএব এ বাল সে বাল নয়।
    তবে এ বাল কার বাল?
    মেজরাণীর ছেলে কোলে
    তার বালে চামর দোলে
    তবে এ বাল আসিল কেমনে?

    একে তো গ্রীষ্মকাল
    তার ওপর রন্ধনশাল
    চুলকাইতে চুলকাইতে আসিল নখাগ্রে
    লবন সম্বারিত পড়িল ব্যঞ্জনে

    চুটকিতে ইঙ্গিত আছে যে সেটা ছোট রাণীর। এটি যার কাছে শোনা, তাঁর বিশাল স্টক, তিনি স্বচ্ছন্দে সেগুলি পরিবেশন করেন। লিখেই দিয়েছেন তিনি। শুধু বাল শব্দটি উহ্য রেখে গেছেন। সত্যি তো, লম্পট কাদা এড়িয়ে আমরা সবাই সফেদ শাদা। আমাদের সবার একটাই পুরুষ, একজন নারী। অবিবাহিতদের রাত মাগুর মাছের মতো খলবল করে না আঁশবটিতে টুকরো টুকরো হওয়ার জন্যে। আমাদের কারো মাস্টারবেশন নেই- গামলা ভরা বীর্য নিয়ে গাম্ভীর্যময় ব্রহ্মচর্য জীবন। তাই না? লেখার বাইরে অনেক কালো কথা থাক। শাদা-কালোর এই জীবনে আমাদের সব লেখা শাদা।

    বিঃদ্রঃ - এই নিবন্ধ প্রথম বার হয় ২০০৪-এ শহর পত্রিকার বিখ্যাত স্ল্যাং সংখ্যায়। বহু সমাদৃত এই নিবন্ধ তার পরেও বহু পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে চলেছে।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • আলোচনা | ০৬ আগস্ট ২০১৭ | ২৬৮৪ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • রৌহিন | 113.214.139.253 (*) | ১৩ আগস্ট ২০১৭ ১১:২০60623
  • এটা আগে চোখে পড়েনি - খুবই ভালো লাগল। ভাষার "শুদ্ধতা" নিয়ে আমাদের ছোঁকছোঁকানি দেখার মতই বটে।
  • Rabaahuta | 233.186.161.84 (*) | ১৪ আগস্ট ২০১৭ ০৬:০৫60624
  • ভাষার শুদ্ধতা নিয়ে 'ছোঁকছোঁকানি' বা যত্ন কি নিন্দনীয় বিষয়?
  • রৌহিন | 113.214.139.253 (*) | ১৫ আগস্ট ২০১৭ ০৫:৪০60625
  • "ছোঁকছোঁকানি" আর "যত্ন" এক জিনিষ নয়। প্রথমটা আমার কাছে খারাপ (নিন্দনীয় আবার কি - খারাপ লাগলে খিস্তাবো সিম্পলি) আর দ্বিতীয়টা প্রয়োজন, তবে বেশী যত্ন করতে গিয়ে আতুপুতু করতে রাজী নই
  • Rabaahuta | 233.186.49.156 (*) | ১৫ আগস্ট ২০১৭ ০৭:১০60626
  • আমার যেমন ভাষার শুদ্ধতার প্রতি খুবই আকর্ষণ, 'স্ল্যাঙ্গ' (বা যে নামেই ডাকা হোক) ইত্যাদি, গবেষণার বিষয়, সময়, জনগোষ্ঠীকে রিপ্রেজেন্ট করে, এতে কোন দ্বিধা নেই, কিন্তু নিজের ভাব প্রকাশে কখনৈ ব্যবহার করবো না। অন্য কারো খিস্তি শুনলেও বক্তব্যের প্রতি আগ্রহ হারাই।
    এটা ছোঁকছোঁকানি কিনা বোঝার চেষ্টা করছি। যদি হয় তাহলে যত্ন কোনটা, আর যদি না হয় তবে ছোঁকছোঁকানি কোনটা?
  • পিনাকী | 95.229.73.124 (*) | ১৫ আগস্ট ২০১৭ ০৭:২৬60627
  • এখানে আমার কিছু প্রশ্ন আছে। কালকে লিখব। আজ ইঁট পেতে গেলাম। লেখাটা বেশ ভালো লেগেছে।
  • Ekak | 53.224.129.46 (*) | ১৬ আগস্ট ২০১৭ ০৯:১৯60629
  • স্ল্যাং আর এবিউসিভ এ গুলোচ্ছে মনে হচ্ছে :/ দুটো আদৌ এক না । এই যেমন বিক্কলেজের বা যাদবপুরের ভাষা যেগুলো আপনারা সগর্বে ব্যবহার করেন ওগুলো ও স্ল্যাং । যে কোনো জনগোষ্ঠী বা ছোট গ্রূপের মধ্যে গড়ে ওঠা ভাষা যা মূলত মৌখিক , তাই স্ল্যাং । "মায়া হওয়া " স্ল্যাং । "পাতলি গলি " স্ল্যাং । আবার টেকিদের নিজস্ব স্ল্যাং আছে । জেলেদের ।

    স্ল্যাং এ খিস্তি থেকে যৌনতা কেন্দ্রিক ভাষাও মিশে থাকে , কিন্তু সাহ্মাও এখানে শুধু তার মধ্যেই ঘুরছে ।
  • S | 57.15.10.134 (*) | ১৬ আগস্ট ২০১৭ ১২:২২60628
  • অনেক সাধারণ কথা কালের বিবর্তনে স্ল্যাঙ্গ হয়ে যায়। কেন?
  • '' | 115.114.47.197 | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:১৭97307
  • টইপত্তরে একটা এই নামের লেখা উঠেছে যেটা ব্ল্যাঙ্ক দেখাচ্ছে। তাতে একটা কমেন্ট আছে যেটা এখানে দেখাচ্ছে না। অর্থাৎ একই নামে দুটো আলাদা এন্ট্রি ক্রিয়েট হয়েছে। এই কমেন্টে এই লেখা ওর পাশে আলাদা করে ভেসে ওঠে নাকি, তার টেস্ট করছি।

  • π | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০২০ ২২:২২97309
  • প্রথমে টই খোলা হয়েছিল,  কেবল নাম দিয়ে খোলাই, পোস্ট আসেনি। তারপরে  লেখিকা ব্লগে দিতে পারেন। এই তো ব্যাপার।  এতে এত কিছু রহস্য  নাই। 

  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। লড়াকু মতামত দিন