এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • সিঁড়ির নিচে মিটারঘরে মা কালী

    অভিষেক ভট্টাচার্য্য লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ২৩ নভেম্বর ২০১৬ | ১০৬৬ বার পঠিত
  • ২০১২ সালের ২১শে ডিসেম্বরের ঠিক আগে আগে যখন আর কয়েকদিনের মধ্যেই পৃথিবী ধ্বংস হয়ে যাবে বলে চারদিকে তোলপাড় উঠেছিল, তখনও ঠিক এরকম করেই রোদের দিকে পিঠ করে শাল জড়িয়ে রাস্তার ধারে কাঠের বেঞ্চির ওপরে একটা ঠ্যাং মুড়ে বসে চুমুকে চুমুকে লাল চা খেত বাবুসোনা।
    বাবুসোনার হেলদোল নেই। কানাঘুষোয় কথাটা তার কানে এসেছিল যদিও। কী সব সাল-তারিখের ব্যাপারস্যাপার - পৃথিবী নাকি গুঁড়ো গুঁড়ো হয়ে ধুলোয় মিশে যাবে ওই দিন - বাবুসোনা গা করেনি - আজকাল প্রায় কোনও ব্যাপারেই করে না আর - চা'টা শেষ করে সেদিনও হাতুড়িটা কাঁধে তুলে নিয়ে হাঁটা লাগিয়েছিল কাউন্সিলর অসীম দত্তদের বাথরুম ভাঙবে বলে। ওখানটায় বারান্দা করবে অসীম দত্তরা। ফুলের টবওয়ালা বারান্দা।
    বাবুসোনা ভাঙাড়ে। জোগান যারা দেয় তারা জোগাড়ে হলে যারা ভাঙে তারা ভাঙাড়ে হবে না কেন? অবশ্য অন্যান্য কাজও যে বাবুসোনা করে সেটা সবাই জানে। তবে ভাঙার কাজটা একা তারই। বিরাট গ্রহাণু আছড়িয়ে ফেলে পৃথিবীকে গুঁড়ো করতে না পারলেও অসীম দত্তদের বাথরুম সেদিন বেবাক নেই করে দিয়েছিল সে। তারপরে সেই নিঃসীম শূন্যতার ওপরে বারান্দা ওঠে। ওদিকে বড়রাস্তার মোড়ে কর্পোরেশনের পিচ হচ্ছিল আর এদিকে খুট-খাট-খটাং করে তৈরী হচ্ছিল কাউন্সিলরের দোতলার বারান্দা। এই দু'য়ের মধ্যে কোনও নিবিড় আর্থিক যোগাযোগ থাকার কথা যারা বলে তারা আসলে সবাই মাওবাদী।
    বাবুসোনা বেয়াল্লিশ। তার বৌ পঁয়তিরিশ। আর পৃথিবী চার দশমিক ছয় বিলিয়ন বছর। প্রোক্যারিওট, উল্কাপিণ্ড, অ্যাবিওজেনেসিস, ডাইনোসর সব পেরিয়ে এসে সে এখন স্মার্ট জীবদের দ্বারা পূর্ণ। স্মার্ট, ওভারস্মার্ট। বুদ্ধিমান থেকে বুদ্ধিমানতর। এইসব বুদ্ধিমানেদের মাঝখানে বাবুসোনা যেন একটা লিভিং ফসিল। বা প্রস্তরযুগের কোনও এক আদিম গুহাবাসী। পাথরের হাতিয়ার কাঁধে করে চলেছে ম্যামথ মারবে বলে।
    সিঁড়ির নিচের মিটারঘরে সন্ধ্যেবেলার ঝুপসি অন্ধকারে বাবুসোনা প্রথম মা কালী দেখেছিল বছরপাঁচেক আগে। সেই লকলকে জিভ, সেই চকচকে খাঁড়া। মিটারে কিছু একটা গণ্ডগোল হয়ে চিরিক-চিরিক করে ফ্ল্যাশ মারছিল তখন। সেই আলোয় স্পষ্ট দেখেছিল। যদিও পরে গোকুলের চুলকাটার দোকানে কথাটা কেউই বিশ্বাস করে না।
    'দূর, যাও তো বাল! কাজ নেই, কম্ম নেই, ভাট বকচে!'
    'সত্যি বলচি রে! ঠাকুর-দেবতা নিয়ে মিথ্যেকতা কেউ বলে, বল?'
    'যাবে বাঁড়া তুমি?'
    এরপরই বাবুসোনা চুপ মেরে যায়। সাতে-পাঁচে থাকে না। সন্ধ্যেবেলা মোড়ের দোকানে হাফ কাপ চা কি একটু আলুর চপ খায়। আর সকালে কোনও কোনও দিন জুটে গেলে এক-আধটা মাছের তেলের বড়া। মাটির ভাঁড়ে চুমুক দিতে দিতে রাস্তার ধারে বোর্ডে সাঁটা সকালের গণশক্তি পড়ে। কে কোথায় পলিটব্যুরো বৈঠক সেরে ফেলল, মন্ত্রীসভায় কারা কারা গোপন আঁতাত করছে এইসব খবর টকাটক জেনে নেয়। এবং তারপরে ভুলে যায়। প্যান্টের চেন খুলে সবার সামনেই দেওয়ালের গায়ে ছ্যাড়ছ্যাড় করে পেচ্ছাপ করে। শেষ হবার মুখে চাপ দিয়ে শেষ ধারাটুকু দূরে ছিটকে ছিটকে দেয়। কল্পনা করে ওই দিয়ে চারদিক তছনছ করে দিচ্ছে সে। মর, খানকির ছেলেরা মর!
    আজকাল বৌকেও আর ততটা ভালো লাগে না বাবুসোনার। সুখ দিতে পারে না আর মাগী। আগে ওপরে শুয়ে করার পর ফেলার মুহূর্তে বৌয়ের গলায়, বুকে চুমু খেতে খেতে গুঙিয়ে গুঙিয়ে উঠত বাবুসোনা। তেউড়ে তেউড়ে যেত শরীরটা। আজকাল সবই হেজেমজে গেছে।
    বদলে সেদিন ভোরবেলা বেঞ্চে বসে চায়ে চুমুক দিতে দিতে আর দোকানের এফএমে 'বাংলাদেশের মেয়ে রে তুই হেইল্যা-দুইল্যা যাস' শুনতে শুনতে সামনে টাটা সুমোটা এসে দাঁড়াতে আঁটোসাঁটো পোশাক পরা যে মাখন-মাখন মেয়েটা সিটবেল্ট খুলে ভাইয়ের হাত ধরে Lays কিনতে নামল, তাকে দেখে অনেক বেশী পুলক জেগেছিল বাবুসোনার। জিন্সে ঢাকা ইয়াব্বড় পাছা। ডবকা ডবকা দু'খানা মাই। চামড়া তো নয়, যেন ভেলভেট! পঞ্চাশ টাকা দিয়ে পাঁচখানা Lays কিনল মেয়েটা। দূরে কোথাও যাবে বোধহয়। মিনারেল ওয়াটার খুঁজল। পেল না। বাচ্চাটা 'ক্যাডবেরি-ক্যাডবেরি' করে চীৎকার করায় মা-টা শাসন করতে গাড়ি থেকে নামল। মা-টাকেও একটু দেখল বাবুসোনা। তেমন কিছু দেখার নেই। টাটা সুমো আবার স্টার্ট দিল। সানগ্লাস পরে মেয়েটা চলে গেল চুল ওড়াতে ওড়াতে।
    শরীরটা ভেঙে যাচ্ছে। আজকাল প্রায়ই টনটন করে এখানেওখানে। কাশিও হয় খুব। গলায় জ্বালা ধরানো কাশি। এই সেদিন তলার ঠোঁটের ভেতরের দিকে সাদামতো কী যেন একটা হয়েছিল। খেতে গেলেই বিকট জ্বালা। পাঁচদিন ধরে কমছে না দেখে ছ'দিনের দিন বিকেলে ভয় পেয়ে ডাক্তারের কাছে গেছিল বাবুসোনা। গর্ত হয়ে গেছে তখন জায়গাটা। তিনঘন্টা আগে নাম লিখিয়ে চেম্বারের বাইরে ঠায় বসে থাকল। ডাক্তার সাড়ে চারশো টাকা ফী নিয়ে টর্চ মেরে দু'সেকেন্ড একটু দেখল আর ধমকে দিল।
    'রাস্তার গুটকা আর পানমশলা কিনে কিনে খেলে এসবই হবে। ভালো চাও তো ওগুলো বন্ধ করো এবার। নইলে ক্যান্সার হয়ে মরবে। এই ওষুধগুলো খাবে। যাও!'
    সাতদিনের ওষুধের দাম প্রায় সাড়ে সাতশো টাকা। মানে পার ডে একশো টাকারও বেশী। তবু একশোই ধরা যাক। একশো প্লাস খাবারদাবার, এটা-ওটা মিলিয়ে আরও পঁচাত্তর। দিনে একশো পঁচাত্তর টাকা দিয়ে বেঁচে থাকার কোনও মানে হয়? দিনের মজুরি যেখানে দু'শোর অল্প বেশী? তার চেয়ে আরও ক'টা পানমশলা গিলে নুনু বার করে দেওয়ালের ধারে দাঁড়িয়ে -
    এভাবেই টিকে থাকা। রান্নায় দু'চামচ নুন বেশী পড়ে গেলে মাসের শেষে ভাবতে হয়। বৌটার বাচ্চাকাচ্চা হয়নি ভাগ্যিস। কী দিনকাল ছিল আর কী এল! ছোটবেলায় দু-তিনজনে মিলে সন্ধ্যেবেলা বিশু মুখুজ্যেদের বাড়ির জানালায় উঠে টিভিতে মাধুরী দিক্সিতের কোমর হিলানো 'এক-দো-তিন' নাচ দেখা আর পরে বাথরুমে ঢুকে সেই মুখ আর সেই শরীরী মোচড় মনে করে ডান হাত দিয়ে নিজের পুংদণ্ড আঁকড়ে ধরে আগুপিছু। সুচিত্রা সেনই বা কম সেক্সি ছিল নাকি? চড়া আলোয় হাস্যময়ী সেই মুখ মনে করেও তো লুকিয়ে অনেকবার ফেলেছে বাবুসোনা। ভালো ভালো জিনিসরা এক এক করে সবই শেষ হয়ে যাচ্ছে আসলে।
    এখন ভরসা এক মা কালী। সিঁড়ির নিচের ঝুপসি অন্ধকারে আবারও কি কোনও একদিন দর্শন দেবেন তিনি? আবারও কি চমকাবে খাঁড়া? আশায় আশায় প্রায়ই জায়গাটায় এসে বসে থাকে বাবুসোনা। জয় মা!
    লোকে যে কেন কথাটা বিশ্বাস করতে চায় না সেটা আদপেই মাথায় ঢোকে না বাবুসোনার। অথচ দক্ষিণেশ্বরে তো সবাই যায়। ওরে পাগল, মা কি তোর একার?
    যাক গে! না করল তো না-ই করল। বাল ছেঁড়া গেছে। মা সেদিন দু-তিন সেকেন্ডের মধ্যেই মিলিয়ে গেছিলেন। এবার এলে একটু বেশীক্ষণ থাকতে বলবে। কত কী যে বলার আছে মাকে!
    এই যেমন, গেল মাসে বিমান সরকারের মেয়ের বিয়ে গেল। উদয়াস্ত খেটেছিল বাবুসোনা। জল তোলা, কলাপাতা কাটা, জেনারেটর নিয়ে আসা। পয়সা বাঁচাবে বলে বাড়িভাড়া করেনি বিমান সরকার। ছাদে প্যান্ডেল খাটিয়েছিল। তা খাটিয়েছিল তো খাটিয়েছিল। কিন্তু শেষ ব্যাচে খেতে দিল কী? না, পোড়া ক'খানা রাধাবল্লভী আর একটু ছোলার ডাল। বলল, মাংস-ফাংস সব ফুরিয়ে গেছে। বৌয়ের জন্যেও কিস্যু দিল না। উদগাণ্ডু! খানকির ছেলে!
    নয়নতারা আগে তিন-চারটে বাড়িতে বাসন মাজত। এখন ছেড়ে দিয়েছে। শরীরে নাকি দেয় না। বাড়িতেই থাকে। টুকটাক সেলাইয়ের কাজ করে। মাঝেমধ্যে বিকেলে রচনা ব্যানার্জির দিদি নাম্বার ওয়ান দেখে আর রাতে বাবুসোনা জোরাজুরি করলে কিছুক্ষণ বিছানায় চিত হয়ে শুয়ে ঝাঁকুনি খেতে খেতে ছাদের টালি দেখে নিয়ে তারপর ঘুমিয়ে পড়ে।
    আসলে ওসব শরীরে না দেওয়া-ফেওয়া কিস্যু না, নয়নতারার স্ট্যাটাস এখন হাই হয়ে গেছে। বাড়ি বাড়ি ঘুরে বাসন মাজতে আজকাল তার ইজ্জতে লাগে। গত মাসে নিজের জমানো টাকা থেকে ১৭০০ টাকা দিয়ে মোবাইল ফোন কিনেছে একটা। এসেমেস করতেও শিখে গেছে। কুটুর-কুটুর করে প্রায়ই কার কার সঙ্গে যেন ফোনে কথা বলে সে।
    জয় মা! মা গো! একবার দেখা দে মা!
    রাত আটটা নাগাদ হাতুড়ি কাঁধে হাঁটতে হাঁটতে পুকুরধার দিয়ে বাড়ি ফিরছিল বাবুসোনা। হাতুড়িটা নিয়ে বেরোলে সেদিন আর সাইকেল নেওয়া যায় না। হাতুড়িটা বিশাল বড়। আর খুব ভারী। সাইকেল টলে যায়। কেরিয়ারের স্প্রিং-এর এত জোর নেই যে ওই বিশ-পঁচিশ কিলোর হাতুড়ি একবার কোনও একদিকে কাত হয়ে গেলে ধরে রাখবে।
    দু'টো মেয়ে গল্প করতে করতে উল্টোদিক থেকে আসছে। কাঁধে ব্যাগ। টিউশনি পড়তে যাচ্ছে বোধহয়। বা ফিরছে। কাছাকাছি আসতে টুক করে একবার ওদের বুকের ওপরে চোখ বুলিয়ে নিল বাবুসোনা। দু'টোই রোগা রোগা মাল। কিস্যু নেই। কোমরের অবস্থাও তথৈবচ।
    রাস্তার লাইটপোস্টে টিমটিম করে উন্নয়নের হলদে আলো জ্বলছে। শীতকাল বলে হাল্কা কুয়াশা চারপাশে। রাস্তার ধারের ঝোপড়াগুলো থেকে ঝিঁঝি ডেকে চলেছে অবিরাম। দূরে কোথাও মাইকে গরমগরম বক্তৃতা হচ্ছে। স্টেশনের দিকটা থেকে এঞ্জিনের গম্ভীর গঁঅঅঅঅঅ ভেসে এল হঠাৎ।
    পুকুর পার হয়েই রাস্তার বাঁ ধারে স্টোনচিপ আর বালির বিশাল পাহাড়। প্রোমোটার বাদল দাশগুপ্ত ওরফে নাড়ু ফ্ল্যাট তুলছে। ওপাশে সাইনবোর্ড। দলে দলে লোককে নিজের মোবাইল নাম্বার দিয়ে আহ্বান জানাচ্ছে স্বপ্নের নতুন ঠিকানা খুঁজে নেওয়ার জন্য।
    ফ্ল্যাট পেরিয়ে নিতাইয়ের গুমটি দোকানে একটু থামল বাবুসোনা। বিড়ি ফুরিয়ে গেছে। ফেরার সময়ে চাল আনার কথাও বলে দিয়েছিল নয়নতারা।
    ঠান্ডাটা মনে হচ্ছে বাড়ছে। হাতুড়িটা মাটিতে নামিয়ে শালটা আরেকটু ভালো করে গায়ে জড়িয়ে নেওয়া দরকার। নিতাই বলল, 'খেলা দেখছ না বাবুসোনাদা?'
    'আর খেলা! আমারই পেচনে বাঁড়া হুড়কো ঢুকিয়ে দিয়ে রোজ খেলচে সবাই!'
    ডান হাতে চালের ব্যাগ দুলছে। বাঁ হাত দিয়ে ধরা বাঁ কাঁধের ওপর ফেলা হাতুড়ি। ওফ, কী ঠান্ডা শালা!
    বাড়ির দরজায় এসে পৌঁছল বাবুসোনা। ইঁট বের করা দেওয়াল। টিনের পাতের দরজা। তলার দিকে মর্চে।
    'খোলো।'
    নয়নতারা দরজা খুলে টিভি অফ করল। তার মানে এতক্ষণ টিভি দেখছিল। তারপরে চালের ব্যাগ নিল।
    'মাছ আনোনি?'
    'না। মাছের দাম জানো? কাটা কাতলা তিনশো। রুই আড়াইশো। বাথরুমের আলোটা জ্বালো।'
    নয়নতারা বাল্ব জ্বেলে দিয়ে গজরগজর শুরু করে।
    'খাবটা কী তা'লে? সাদা ভাত গিলেই তা'লে এবার থেকে রোজ বেরিও।'
    'আলু আছে তো। আলুসেদ্ধ-ভাত দিয়ে ক'দিন চলে যাবে। দরটা একটু নামুক।'
    'দূর দূর! পয়সা নেই, মুরোদ নেই! রোজ রোজ - '
    বাবুসোনার আচমকা চড়াৎ করে মাথায় রক্ত উঠে যায়। নিত্যদিনের এই খ্যাচাখেচি আর ভাল্লাগে না!
    'চুপ খানকি!'
    'খিস্তি দিও না। ভয় পাই না তোমাকে। আমার দাদারা এখনও বেঁচে আছে।'
    'তা'লে যা না মাগী, দাদাদের কাচে গিয়েই থাক! কে কত আদর করে বুকে টেনে নেয় দেকব!'
    'তোমার মতো অন্ততঃ তারা নয়। যে রোজগার করতে পারে না সে আবার কীসের পুরুষ?'
    'চুপ করবি মাগী?'
    'কেন চুপ করব? খাওয়াতে পারো না তো বিয়ে করেছিলে কেন? হিজড়ে কোথাকার!'
    'দূর বাল!'
    বাবুসোনা নিজেকে আর সামলাতে পারে না। বাথরুমের দরজার বাইরেই পড়ে ছিল হাতুড়িটা। তুলে নিয়ে আচমকা সজোরে বসিয়ে দেয় নয়নতারার মাথায়। অস্ফূট একটা আওয়াজ করে মুহূর্তে লুটিয়ে পড়ে নয়নতারা। রক্ত গড়িয়ে গড়িয়ে ধারা তৈরী করে খরখরে সিমেন্টের মেঝেতে। ঝগড়াঝাঁটি, চীৎকার - মুহূর্তে থেমে যায় সব। শীতের থমথমে রাতে চারিদিক চুপচাপ ফের।
    বাবুসোনা ঘরের আলো নিভিয়ে দেয়। খাটে এসে বসে। এবং বসেই থাকে। নিস্তব্ধতা ভেঙে দূরে স্টেশন থেকে আবারও একবার এঞ্জিনের আওয়াজ শোনা যায়।
    রাত বাড়তে থাকে। চারদিকে ঝুপসি অন্ধকার। চালের প্যাকেটটা পড়ে থাকে একইভাবে। মাথার কাছের খোলা জানালাটা দিয়ে হাল্কা হাল্কা ঠান্ডা হাওয়া আসে।
    বাবুসোনা বসে বসে ভাবতে থাকে এই অন্ধকারে আজ সিঁড়ির নিচে মিটারঘরে মা কালী আসবেন কি না। কত কী যে বলার আছে মাকে!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ২৩ নভেম্বর ২০১৬ | ১০৬৬ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • pradip | 18.37.233.218 (*) | ২৪ নভেম্বর ২০১৬ ০১:৪৩54785
  • দারুন একটা ভালো গল্প পেলাম।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। বুদ্ধি করে প্রতিক্রিয়া দিন