প্রতারকদের আঘাতে নিজেকে আরো উজ্জ্বল করতে শিখিয়েছে চন্দ্রাবতী সেই ষোড়শ শতকে এই বাংলায় বসে। ... ...
রবীন্দ্রনাথের রক্তকরবী নাটকের একটি জায়গায় আছে, 'নরকেও সুন্দর আছে, কিন্তু সুন্দরকে কেউ সেখানে বুঝতেই পারে না, নরকবাসীর সবচেয়ে বড় সাজা তাই।’ ‘জ্যোস্নায় সূর্যজ্বালা’ উপন্যাসে যে অসাধারণ মানবিক চরিত্র এঁকেছেন লেখিকা রসিদা আর দবিরের মধ্য দিয়ে, মাঝে মাঝে সংশয় জাগে, এমন কি বাস্তবে পাওয়া যায়? কিন্তু লেখিকা তো শুধু এমন এক ছবি নির্মাণ করবেন না, যা শুধুই যা ঘটে চলেছে তার প্রতিচ্ছবি, লেখিকা তো তার স্বপ্নের সৌন্দর্যের জগতকেও আহবান করবেন। রসিদা ও দবিরকে বিবেক চরিত্রে রূপদান করাতে যাওয়া নিশ্চিত চ্যালেঞ্জের, বিশ্বাসযোগ্যতা বিনষ্টের শংকা প্রতি পদে পদে। কিন্তু লেখিকা এক নিপুন দক্ষতায় চিত্রনাট্য সাজিয়েছেন, যে একটুও অস্বাভাবিক ঠেকেনি কোথাও। খুব সচেতন ছিলেন তা বোঝা যায় চরিত্রদুটোর হঠাৎ হঠাৎ বাঁক বদলে, তাদের অনুভূতির সূক্ষ্ম আলোড়নে, যা উচ্চকিত নয়, কিন্তু যার সুতীব্র ঢেউয়ে ভিজেছে পাঠক প্রথম থেকে শেষ অবধি। ... ...
জীবন যেরকমই হোক ... ...
কী লিখছিল পোস্টে? আমি দেখলাম এক জায়গায় লিখেছে নারী চাকরি করলে সমাজ নষ্ট হয়, নারী চাকরি করলে পরিবার নষ্ট হয়, সন্তানের হক আদায় হয় না! আরেকটা দেখলাম লিখেছে ভার্সিটিতে পড়াশোনা মেয়েরা নির্লজ্জ হয়, তাদের বিয়ে করে লজ্জাশীল স্ত্রী পাওয়া যাবে না এমন একটা কথা! কোন জানি বক্তা মূর্তি ভাঙার ব্যাপারে কী লেখছে সে ওইটাই শেয়ার করছে! দারুণ না? এই ছেলের বয়স কত? হয়ত বিশ একুশ, এই বয়সে এর মনের মধ্যে এই যে এই ধরনের কথাবার্তা বাসা বাঁধছে তার প্রতিকার না করলে কোন লাভ হবে না। কোন ওষুধেই কাজ হবে না যদি না এদেরকে এখনই না ফেরানো যায়। অন্ধ জনগোষ্ঠী যারা অন্ধ ভাবে সমর্থন দিয়ে যাচ্ছে তাদের বক্তব্য হচ্ছে হাসিম আমলা, মইন আলীরা ক্রিকেট খেলছে তাদেরকে তো কেউ বাধা দিচ্ছে না। তাহলে তানজিব হাসনের বেলায় কেন মানুষ এমন করছে! আসলে সমস্যা যে ধর্ম পালনে না তা তারা বুঝতে রাজি না। কেউ সারাদিন ধর্ম পালন করুক না, কে ফেরাচ্ছে? কিন্তু এখানে হচ্ছে ধর্মীয় উগ্রতার প্রকাশ, যার সাথে ধর্ম পালনের কোন সম্পর্ক নাই। হাসিম আমলা নারীর চাকরি নিয়ে চিন্তিত এমন কোন নজির পাওয়া যায় নাই। ... ...
নেহরুর নীতির রূপরেখা ঠিক কেমন ছিল, আজ এতদিন পরে আন্দাজ করা অসম্ভব। তবে অনেক পরে আশির দশকে রাষ্ট্রীয় দূরদর্শনের সম্প্রচারের ঘরানা দেখে, ব্যাপারটার খানিকটা আন্দাজ পাওয়া যায়। সরকারি দূরদর্শনে, সেই সময়েও জনপ্রিয় সিনেমার জন্য বরাদ্দ ছিল সপ্তাহের সামান্য কিছু অংশ। বাকি সঙ্গীত এবং সিরিয়াল, সবাইকেই একটা নির্দিষ্ট মাপকাঠি টপকে আসতে হত। ভাষার প্রশ্নে হিন্দির ভাগ অবশ্য অনেক বেশি ছিল, বস্তুত সার্বজনীন বাধ্যতামূলক হিন্দিশিক্ষার চলই দূরদর্শন থেকে, নেহরু জমানায় হিন্দির এত প্রাধান্যের কথা আদৌ ভাবা হয়নি, সেটা বেতারের কার্যক্রম দেখলেই বোঝা যায়। এবং কেশকরের সময় সিনেমা আর ক্রিকেট মূলত বন্ধ করে দেবার অভিমুখেই এগোনো হচ্ছিল। অর্থাৎ সব মিলিয়ে ব্যাপারটা ছিল এই, যে, যদিও হিন্দিকে সরকারি ভাষা হিসেবে মেনে নেওয়া হয়েছিল, পুঁজিপতিদের দেওয়া হয়েছিল খোলা মাঠ, ভাষাভিত্তিক রাজ্য তৈরিরও কোনো নীতি ছিলনা, আধিপত্যের সূচনাও তখনই হয়েছিল, কিন্তু তার পরেও সেই আধিপত্যের রূপরেখা আজকের মতো করে নেহরু কল্পনা করেননি। বরং তথাকথিত 'আঞ্চলিক' ভাষার সম্প্রচারে জোর দেওয়া হত। 'ভারতীয়' এক বিকল্প সংস্কৃতি গড়ে তোলার পরিকল্পনা ছিল সংস্কৃতি এবং সঙ্গীতে। সিনেমাকে করে তোলার ইচ্ছে ছিল জনমুখী। সমস্ত ত্রুটি-বিচ্যুতি সহই, হিন্দির আধিপত্য সত্ত্বেও, হিন্দি-বলিউড-ক্রিকেট কেন্দ্রিক আজকের যে দানবীয় ব্যবস্থা, তা ভারতের সূচনাবিন্দুতে অকল্পনীয় ছিল। ... ...
সেদিন ফেরার পথে মাঝ আকাশে এয়ারহোষ্টেসকে জিজ্ঞেস করলাম – তোমার বাড়ি কোথায়? মৃদু হেসে মেয়েটি বলে তুমি আগে শোনাও বাড়ি কাকে বলে! প্লেনের জানালার ওপাশে আকাশ দেখি - ওখানে কার বাড়ি? ... ...
ছেলেটার মোবাইল বেজে উঠেছে। "হ্যাঁ স্যার বসিয়েছি… ঠিক আছে।" ফোন রেখে ছেলেটা বলল, "ওনারা ভিআইপি রোডে জ্যামে আটকে গেছেন। আপনাদের কোল্ড ড্রিংকস দিতে বললেন।" তৃষা বলল, "একটু খাবার জলও দেবেন।” ছেলেটা পাশের ঘরটায় ফিরে যেতেই স্বর্ণালীর প্রশ্ন, "ওনারা মানে কারা?" খোঁচা বলল, "আর একটু অপেক্ষা কর।" "না। ওনারা কারা? ডু উই নো দেম?" "জানি তোর অনেক প্রশ্ন আছে, বাট প্লিজ আর একটু ওয়েট কর,” বলল তৃষা। ... ...
একজন পশ্চিমা নাগরিক যখন অফিসের পথে হাঁটতে থাকেন, কখনো কি তার মাথায় প্রশ্ন উদ্রেক করে, কী অঢেল পানিসম্পদ ব্যয়িত হয় তার ট্রাউজারটি ধৌত ও রঙ করার কাজে? ইন্টারন্যাশনাল ফাইনান্স কর্পোরেশান এর একটি সমীক্ষা বলছে, প্রতি বছর গার্মেন্টস শিল্পের সুতো ও কাপড় রঙ এবং ধৌত করার কাজে ১৫০০ বিলিয়ন লিটার পানি ব্যবহৃত হয় বাংলাদেশে – এটি সেই পরিমাণ তরল যা দিয়ে ৬,০০,০০০ অলিম্পিক সুইমিংপুলকে ভরে দেয়া যায়, বা, ৮,০০,০০০ মানুষের সারা বছরের পানির কাজ নির্বিঘ্নে চলে যায়! আমরা যে জিন্স প্রতিদিন পাদুটোর উপর চেপে রাখি, তার ওজন প্রায় ১ কেজি, আর এইটুকু পোশাককে ধৌতকরনে খোয়াতে হয় প্রায় ২৫০ লিটার পানি। আর এ হচ্ছে মিষ্টি পানি, ভূগর্ভস্থ চ্যানেল থেকে যা পাম্প করে বের করা হয়। পানির টেবিল কিন্তু অসীম নয়; প্রতিবছর ২.৫% নেমে যাচ্ছে। আমাদের ভূগর্ভস্থ পানির চ্যানেলগুলো এভাবে ক্রমেই রিক্ত হচ্ছে পোশাক দৈত্যের খাবার যোগন দিতে গিয়ে, আর পরবর্তী প্রজন্মের জন্য দেবে যাওয়ার ঝুঁকিসম্পন্ন একটি ভূত্বক অবশিষ্ট রেখে যাচ্ছে! ... ...
ডেল্টা অফ ভেনাসের গল্পগুলো অনুবাদ করছি ... ...
প্রকাশকের সন্ধানে শুরু করছি আমার উপন্যাস ... ...
৫১ সালের নির্বাচনের অন্যতম বিষয় ছিল ভাষাভিত্তিক রাজ্যগঠন। নেহরু এবং প্যাটেল সেই সময় সেটা প্রয়োজন মনে করেননি। সমস্যার শুরু সেখান থেকেই, যেটা প্রথম দেখা গেল দক্ষিণ ভারতে। তেলুগুদের জন্য পৃথক অন্ধ্র রাজ্যের দাবী ছিল আগেই। কিন্তু কেন্দ্র তাতে রাজি হয়নি। গান্ধিবাদী শ্রীরামালু এই দাবীতে অনশন করেছিলেন, কিন্তু নেহরু-প্যাটেল-সীতারামাইয়ার তৈরি কমিটি, নতুন রাজ্য নির্মাণে অস্বীকৃত হয়। ফলে শ্রীরামালু আবার অনশন শুরু করেন ৫২ সালের অক্টোবর মাসে। এবং স্বাধীন ভারতের প্রথম ব্যক্তি হিসেবে অনশন করে মৃত্যুবরণ করেন ডিসেম্বর মাসে। এর আগে এইভাবে মারা গিয়েছিলেন যতীন দাশ। ... ...
এগারোই সেপ্টেম্বর, দুহাজার এক সাল। যাঁরা এখনো মনে রেখেছেন, তাঁদের জন্যে। আমরা কখনো ভুলতে পারিনি, কারণ বড্ড বেশি রিয়েল, র আর রাফ ছিল সেই দিনটা। এখানে এই নিউ ইয়র্কে। ... ...
তার পরেরদিন সকালে আবার মা উঠিয়ে দেয় ঘুম থেকে, তাড়াতাড়ি তৈরী হয়ে নিতে বলে, ভর্তি হতে যেতে হবে। আমি অবাক হয়ে ভাবি হিন্দু গার্লস কি এত সকালে ভর্তি নেবে? ওদের তো দুপুরে স্কুল, কিছু জিগ্যেস করার আগেই দাদু আমাকে নিয়ে বেরিয়ে পড়ে, সেই ভাগাড়পাড়ার স্কুলের দিকেই যাই আমরা। দাদু আমাকে নিয়ে ‘বালিকা শিক্ষা সদন জুনিয়র হাই' স্কুলে ভর্তি করিয়ে দেয়, বিলবইতে লেখা ছিল নামটা, ইরাদিদিমণি হেডমিস্ট্রেস। কিন্তু এখানে কেন সেটা যদি কেউ একটু বুঝিয়ে দিত! জানুয়ারী মাসে তো তেমন ক্লাস হয় না, রোজই প্রায় দশটায় ছুটি। আমি বাড়ী ফিরে দেখি শুভ্রা, রিঙ্কু, শর্বরী, মিঠু, সাতুরা এ ওর বাড়ী গিয়ে ডাকাডাকি করে একজায়গায় হয়, তারপর একসাথে খুব মজা করতে করতে যায়, ইলু, শীলুও হীরালাল পালে ভর্তি হয়েছে এই বছর, ওরাও যায়। ওদের স্কুলে রোজ ড্রেস পরতে হয় না, বেশীরভাগ দিন ওরা পরিস্কার এমনি জামা পরে স্কুলে যায়, মাঝে মধ্যে সবুজ-সাদা স্কুলড্রেস পরে। আমার তো আর ওদের সাথে হইহই করে যাওয়া হয় না, আমি থেকে যাই ভাগাড়পাড়া স্কুলে ফেলের মধ্যে ফার্স্ট হয়ে। ... ...
"হোয়াট কাইন্ড অফ ড্রামা ইস দিস?" "আরে বাবা বেশিক্ষণ না,” খোঁচা বলল, “এ ড্রামা চলবে খুব বেশি হলে এক থেকে দেড় ঘন্টা।" "কী করতে চাইছিস?” “মেয়ে পাচারের বিজনেস শুরু করেছি। তোকেই ফার্স্ট পাচার করব।” হাত বাড়িয়ে খোঁচার মাথায় চটাস করে মারল স্বর্ণালী। “মারছিস কেন? ভাল লোকের কাছেই বেচব তোকে। ভেরি রিচ, তোকে সোনায় মুড়ে রাখবে।” এবার স্বর্ণালী খোঁচার চুল ধরে জোর টান দিল একটা। “এমন করলে কিন্তু কোনও গরীব লোকের কাছে বেচে দেব, তাতে যা লস হয় হবে,” বলল খোঁচা। অভিষেক হেসে উঠল। "খোঁচা থাম... ভয় পাস না সোনা," বলল তৃষা। ... ...
"অপর" হয়ে ওঠার শাস্তি ... ...
তার চোখে-মুখে এক অদেখা, অজানা, অভূতপূর্ব উল্লাস...কোন সেরা চিত্রকরও কি পারে সে উল্লাসকে আঁকতে পুরো সার্থকতার সাথে? অথবা, কোন ফটোগ্রাফার ফুটিয়ে তুলতে পারে সেই বিজয়ের সত্যিকার অভিব্যক্তি? ... ...
বাঙালি লেখিকার অপেক্ষায় ... ...
ফেসবুকে গুরুচণ্ডা৯ গ্রুপে রিজেক্ট হয়ে গেলে এখানে পোস্ট করি ... ...