এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  সমাজ

  • সমষ্টি থেকে ব্যষ্টি - ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি!

    যদুবাবু
    আলোচনা | সমাজ | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৩৯০ বার পঠিত | রেটিং ৫ (৪ জন)


  • ১) ঊনবিংশ শতকের একদম শেষের দিকে, ১৮৯৭ সালে, এমিল ডার্কহেইম আত্মহত্যার বিভিন্ন সামাজিক প্রেক্ষাপট বিশ্লেষণ করে প্রামাণ্য একটি বই লেখেন – ‘সুইসাইড’, যার অনেক পর্যবেক্ষণের মধ্যে অন্যতম একটি এই—যে, সেই সময়ের ইয়োরোপে, প্রোটেস্টান্ট দেশগুলির আত্মহত্যার হার ক্যাথোলিক দেশগুলির থেকে বেশি। ডার্কহেইম ও তার পরবর্তী গবেষকরা এর থেকে সিদ্ধান্তে পৌঁছন, যে, একজন ব্যক্তি মানুষের জন্যও, অতএব, প্রোটেস্টান্ট অথবা ক্যাথোলিক – এই ধর্মাচরণের প্রকৃতি ছাপ ফেলে তার আত্মহননের সম্ভাবনায়। ডার্কহেইমের সময়ে আমাদের প্রচলিত ‘মেথডোলজি’র অর্থাৎ রাশিবিজ্ঞানের আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রের প্রায় কিছুই ছিল না, যেমন কোরিলেশন কোয়েফিশিয়েন্ট—যা দিয়ে আমরা দুটি জিনিসের মধ্যে সম্পর্ক মাপি—সেও সদ্য-আবিষ্কৃত, অন্যান্য শাখায় প্রচলিত হতে কিছু দেরি আছে। তবু, যে কথা দেশের জন্য সত্যি, সে কথা সেই দেশের যে কোনো একজনের জন্য কতটুকু সত্যি?

    ২) এক লাফে চলে যাই ১৯৭৫ সালে। এক-ই রকম বিপত্তি! প্রোফেসর ক্যারোলের গবেষণাপত্র “Experimental evidence of dietary factors and hormone-dependent cancers”-এ দাবি—যে সব দেশে খাদ্যের প্রধান উপকরণ চর্বি বা স্নেহজাত পদার্থ (ফ্যাট), সেই সব দেশে ব্রেস্ট ক্যান্সারে মৃত্যুহার-ও বেশি, অতএব, ইনডিভিজুয়াল লেভেলে দেখলে ডায়েটারি ফ্যাট ব্রেস্ট ক্যান্সারের অন্যতম কারণ। বলা যায়?

    ৩) আরো অর্ধ-শতক ডিঙোই—এই সময়কার আমেরিকা, উত্তর-পূর্ব আর পশ্চিম উপকূলের বেশ কিছু ‘রিচ স্টেটের’ বেশির ভাগ-ই যেন পাকাপাকি লিবেরাল, ডেমোক্র্যাটদের দিকে ঝুঁকে, সেখানে রিপাব্লিকানদের দিল্লি দূর অস্ত, আর দক্ষিণের দিকে আর দুই উপকূলের মাঝের অপেক্ষাকৃত গরীব স্টেট ভোট করে রিপাব্লিকানদের। বিখ্যাত কমেন্টেটর ডেভিড ব্রুকস যেমন বলেছিলেন, “Like upscale areas everywhere, from Silicon Valley to Chicago’s North Shore to suburban Connecticut, Montgomery County supported the Democratic ticket in last year’s presidential election, by a margin of 63 percent to 34 percent.” অথচ কী আশ্চর্য, এও প্রায় সাধারণ জ্ঞানের ব্যাপার, যে — বেশির ভাগ বিত্তবান মানুষ সমর্থন করেন গ্র্যাণ্ড ওল্ড পার্টি (জিওপি) অর্থাৎ রিপাবলিকান পার্টিকে কারণ তারা ব্যবসা-বান্ধব দল হিসেবে পরিচিত – যেমন পিউ রিসার্চ সেন্টারের ২০১২ সালের একটি রিপোর্ট অনুযায়ী বিত্তশালী মানুষের প্রতি ডেমোক্র্যাট আর রিপাবলিকান সমর্থকদের মনোভাব পুরো বিপরীত – ডেমোক্র্যাটদের ৬৫% মনে করেন ধনী মাত্রেই লোভী, আর রিপাবলিকানদের ক্ষেত্রে সেই শতাংশ মাত্র ৪২%। আবার উল্টোদিকে, ৫৫% রিপাবলিকান সমর্থক মনে করেন ধনী মানে খুব-ই পরিশ্রমী, “হার্ড-ওয়ার্কিং”, এক-ই কথা বলেন ডেমোক্র্যাটদের মাত্র ৩৩%। অর্থাৎ, সাম্প্রতিক ইতিহাসে তুলনামূলকভাবে সাধারণ মানুষ—অ্যাভারেজ আমেরিকান— সমর্থন করেন ডেমোক্রাটদের। তাহলে?

    এই ধরণের ঘটনা, যেখানে সমষ্টির উপর ধারণা থেকে ব্যক্তিবিশেষে কেমন, কী হবে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় – তাকে বলে ‘ইকোলজিক্যাল ইনফারেন্স’। কিন্তু ধর্মাচরণ আর আত্মহত্যার প্রবণতার যে সম্পর্ক অথবা ডায়েটারি ফ্যাট ও ব্রেস্ট ক্যান্সারের যে সরলরৈখিক সম্পর্ক দেশ-বিশেষে সত্যি – সে কি ব্যক্তির জন্যে খাটে? এক যদি না জানা যায়, যে, ঐ দেশগুলির সমাজ একেবারেই সমসত্ত্ব গোছের—মানে প্রোটেস্টান্ট দেশে সবাই প্রোটেস্টান্ট—বা এক এক দেশের সব মানুষ একেবারেই এক-ই ডায়েট ফলো করেন? তবুও কখনো কখনো ব্যক্তির আচরণ আর সমষ্টির ব্যবহার এক-ই হয়, কখনো হয় এক্কেবারে উলটো। সেই গণ্ডগোলের নাম “ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি”। কিন্তু কখন উল্টোয়? উল্টোয় তো আদৌ?

    আজ থেকে প্রায় বাহাত্তর বছর আগে, ১৯৫০ সালে, প্রোফেসর উইলিয়ম এস রবিনসন একটি যুগান্তকারী পেপারে (“Ecological Correlations and the Behavior of Individuals”) প্রমাণ করে দেখান, যে, দুটি রাশির মধ্যে সম্পর্ক (অর্থাৎ কোরিলেশন) সম্পূর্ণ আলাদা-আলাদা দুরকম হতেই পারে, যদি একটি মাপা হয় সমষ্টির জন্য (অর্থাৎ এগ্রিগেট লেভেল) আর একটি ব্যক্তির পর্যায়ে (অর্থাৎ ইন্ডিভিজুয়াল লেভেলে)। রবিনসনের পেপারে ১৯৩০ সালের আমেরিকান জনগণনার—অর্থাৎ সেন্সাসের—ডেটা অ্যানালাইজ করে দেখানো হয়, যে ঐ সময়ের ৪৮টি স্টেটে যদি বিদেশে-জন্মানো (ফরেন-বর্ন) শতাংশ এবং সাক্ষর জনতার (আমেরিকান ইংলিশে সাক্ষর) শতাংশের মধ্যে কোরিলেশন পজিটিভ: ০.৫৩। এর থেকে ধারণা হতে পারে—যে রাজ্যে যত বিদেশ থেকে আসা লোক, সে রাজ্যে তত কম নিরক্ষর মানুষের শতাংশ, অথবা, তত বেশি সাক্ষরতার হার। আর একটু এগিয়ে ব্যক্তি-স্তরে নিয়ে গেলে, এমন মনে হতে পারে—যে, বিদেশে-জন্মানো মানুষের (আমেরিকান ইংলিশে) সাক্ষর হওয়ার সম্ভাবনা দেশে-জন্মানোদের থেকে বেশি। কিন্তু, এই সম্পর্ক-ই যদি ব্যক্তির স্তরে দেখেন, ঐ দুই রাশি—বিদেশে জন্ম আর সাক্ষরতা—এবার কিন্তু কোরিলেশন নেগেটিভ: —০.১১, অর্থাৎ সমষ্টি থেকে ব্যষ্টি-স্তরে আসতেই সম্পর্ক উল্টে গেলো। প্রশ্ন উঠতে পারে, ব্যক্তির জন্য যদি বিদেশে জন্মানো আর আমেরিকান-ইংলিশ-জ্ঞান উল্টোপানে ছোটে, তাদের কোরিলেশন রাজ্যভিত্তিক ডেটায় পজিটিভ কেন? বার্কলি বিশ্ববিদ্যালয়ের বিখ্যাত রাশিবিজ্ঞানী ডেভিড ফ্রিডম্যানের মতে, এর কারণ ফরেন-বর্ন বা অভিবাসী মানুষ নিশ্চয়ই এমন রাজ্যে বেশি সংখ্যায় থাকেন যে রাজ্যের নেটিভ-বর্নরা অপেক্ষাকৃত বেশি সাক্ষর। এখন অবশ্য আমরা জানি যে, রবিনসনের গণনায় সামান্য কিছু বিচ্যুতি ছিল, যেমন: ঐ প্রথম কোরিলেশন-টা আসলে ০.৪৬ হবে; তবে এই অপেক্ষাকৃত সাধারণ একটা পর্যবেক্ষণ যেন একটা পর্দা তুলে দিল চোখের সামনে থেকে। রবিনসনের এই পাথ-ব্রেকিং পেপারটির আগেও সমষ্টি থেকে ব্যষ্টির ধারণা নিত্ত-নৈমিত্তিক ছিল সমাজবিজ্ঞানের চর্চায়। বিংশ শতাব্দীর দ্বিতীয়ার্ধে তাতে যে সামান্য রাশ টানা গেল—তা ওঁর অবদান বললে ভুল বলা হয় না। রবিনসন অবশ্য সেই পেপারে এও বলেন, যে, সমাজ-বিজ্ঞানের গবেষণায়, অতএব, ব্যক্তি-পর্যায়ের উপাত্ত ছাড়া বাকি সব বেকার—সেটা আজকাল পুরোপুরি অভ্রান্ত বলে মনে করা হয় না। “ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি” শব্দবন্ধ অবিশ্যি রবিনসনের দেওয়া নাম নয়, সেটির আবির্ভাব কিছুদিন পর সেলভিনের ১৯৫৮ সালের পেপারে – ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসির সংজ্ঞা পেলাম আমরাঃ ‘the invalid transfer of aggregate results to individuals’!

    তবু, ইকোলজিক্যাল কোরিলেশন বা ফ্যালাসি যাই বলুন, সে কোত্থাও যাচ্ছে না, কারণ “রেজোলিউশন” যত বেশি – ডেটা বা তথ্য-উপাত্ত সংগ্রহ করা তত কঠিন। মানে, গ্রুপ-লেভেল বা এগ্রিগেট-লেভেলে ডেটা যত সহজে পাওয়া যায়, একেবারে ব্যক্তি-পর্যায়ে মোট্টে অত সোজা নয়। কোটিকে গুটিক বাই টু। তবে, দুয়ের-ই দাম আছে। ঐ তিন নম্বর উদাহরণের প্যাটার্নের সুন্দর আলোচনা আছে গেলম্যান এট অলের “Rich State, Poor State, Red State, Blue State” পেপারে বা বইতে—যার নির্যাস সহজ করে বলতে গেলে এই—যে, এক এক স্তরে ভোটিং প্যাটার্ন এক একটি ছবি দেখায়—গোটা দেশের জন্য এক রকম, আবার রাজ্যভিত্তিক এক রকম, রাজ্যের মধ্যে আবার কাউন্টি-ভিত্তিক ছবি আরেক রকম আর ব্যক্তি-পর্যায়ে আরো এক। রাশিবিজ্ঞানের ভাষায় এর নাম মাল্টি-লেভেল মডেলিং। এই যেমন, অপেক্ষাকৃত ধনী রাজ্যের ভোটার-রা হয়তো বেশি বাঁদিক ঘেঁষে থাকেন, অথচ, যে কোনো রাজ্য দেখলে তার মধ্যে যত ইনডিভিজুয়াল ইনকাম বাড়ছে রিপাব্লিকানদের জন্য অর্থাৎ ডানদিকে ভোট করার প্রবণতাও বাড়ছে। আবার, গড় আয় দেখলে এও অসম্ভব নয় যে হয়তো রাজ্যের বেশিরভাগ গরীব, কয়েকজন অসম্ভব বড়লোক? আবার এও অসম্ভব নয়, যে স্বচ্ছলতা মাপার আসল উপায় হয়তো ইনকাম নয়, সেটা হয়তো সেলফ-পারসিভড, নিজের যেমন মনে হয় তাই-ই। আপনার প্রতিবেশীর থেকে আপনার পকেটে দু-টাকা বেশি হলে (মানে আপনি-ই সেই বড়োলোকের বিটি লো হলে) হয়তো ভোট করবেন কিঞ্চিৎ ডাইনে-ঘেঁষে, আর প্রতিবেশীদের বেশি হলে হয়তো ডেমোক্রেট? গেলম্যানদের পেপারের অনেক সম্ভাবনার মধ্যে একটি এও যে, “state average income” হয়তো আসলে “a proxy for secularism or some kind of cosmopolitanism.” কে জানে?

    এত কথা লিখে ফেললাম অবশ্য জ্ঞান দেওয়ার জন্য শুধু নয়। এই আজকেই, তেসরা ডিসেম্বর, আমেরিকা থেকে অর্ধেক পৃথিবী দূরে ভারতে, কয়েকটি রাজ্যে – রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড় – বিজেপি হইহই করে জিতল। হিন্দি-বলয়ের (নাকি গো-বলয়ের) বেশিরভাগ রাজ্যে যেখানে সাধারণত শিক্ষার—অর্থাৎ সাক্ষরতার—হার কম, আবার দারিদ্র্যও বেশি, নারী-সুরক্ষা কম, হিন্দি-ভাষার আগ্রাসন ব্যাপক, সংখ্যালঘুদের নিপীড়ন-ও বেশিই, সেখানে ভোটের সিংহভাগ নিয়ে যায় বিজেপিই। মাঝে মাঝে এদিক-ওদিক যে হয় না তা নয়, কিন্তু রাজ্যভিত্তিক ফল দেখলে মোটের উপর কোরিলেশন নেগেটিভ: —০.১৯। নিচে একটা ম্যাপ আর একটা প্লট দিলাম দেখুন। ২০১৯ সালের বিজেপির ভোটশেয়ার আর ২০১১ সালের সেন্সাসের ভিত্তিতে সাক্ষরতার হার। ম্যাপের জন্য ভোট-শেয়ার আর সাক্ষরতা - দুয়ের-ই তিনটে তিনটে করে কোয়ান্টাইল বের করে সেই অনুযায়ী এক-এক রাজ্যের রঙ দেওয়া - শুধু লাল মানে - ভোট শেয়ারে উপরের তৃতীয়াংশ আর সাক্ষরতায় নীচের, আর শুধু নীল মানে সাক্ষরতায় টপ থার্ড কোয়ান্টাইল-ভোট শেয়ারে বটম।







    এইবার কথা হচ্ছে, এই দেখে কি ইচ্ছে হচ্ছে হা-হুতাশ করে (বা আনন্দের আতিশয্যে) দাবি করতে—ঐ তো, সব নিরক্ষর লোকেই বিজেপিকে বেশি ভোট দেয়? শিক্ষার অভাব-ই দক্ষিণপন্থার দিকে কার্নিক দিচ্ছে ক্রমাগত? দিচ্ছে তো বটেই, সকাল থেকে দিকে-দিকে সেই সব পোস্ট চোখে পড়ছে, ঐ জনগণ যেমন তার সরকার তেমন, ইত্যাদি। সেই কথাটা অল্প মেনে নিয়েও বলি, ধীরে রাজনী(তিক), ধীরে…

    একজন মানুষের প্রথাগত শিক্ষাদীক্ষা বা ডিগ্রি যত বাড়ে, তার দক্ষিণপন্থী হওয়ার সম্ভাবনা তত কমে—এই মর্মে কনজেকচার ছুঁড়ে দেওয়ার আগে, ২০১৯ সালের ইণ্ডিয়া-টুডে আর অ্যাক্সিস মাই ইন্ডিয়া-র একটি পোস্ট-পোল সার্ভের ডেটা থেকে তৈরি একটি টেবিল দেখুন নীচে (যদিও এ একেবারে ধ্রুবসত্য—এমন ভাববেন না)।
    কিন্তু এই টেবিল বা ফিগার যদি সত্যি হয়, তবে, পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট—অর্থাৎ যারা সবথেকে বেশি পড়াশুনো করে ফেলেছেন—তাঁদের মধ্যে বিজেপির ভোট-শেয়ার সবচাইতে বেশি: ৫০%। তার পরে পরেই গ্র্যাজুয়েট: ৪৮%। আর নিরক্ষর অংশে? ৩৯%। কাজেই ব্যক্তি-হিসেবে একজন পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট ডিগ্রিধারীর কি বিজেপিকে ভোট দেওয়ার সম্ভাবনা কম? একজন তথাকথিত অশিক্ষিত মানুষের চাইতে? মনে তো লয় না [1]




    হয়তো এখানে বলে দেওয়া উচিত, যে সব মিলিয়ে দেখলে এই সার্ভের পপুলেশনে বিজেপির ভোট শেয়ার ৪৫%, আর আশ্চর্য কিনা জানি না, প্রফেশনাল ডিগ্রি—অর্থাৎ বি-ই, বি-টেক, এম-বি-বি-এস—ইত্যাদিতে সবথেকে কম: ৩০%।

    স্বীকার করতে বাধা নেই, এই লেখাটার জন্য তথ্য খুঁজতে বসে এই টেবল দেখে একটু চমকে উঠেছি আমিও। আজ থেকে যদ্দিন না আবার এইরকম পোস্ট-পোল সার্ভের ডেটা পাচ্ছি, ইঞ্জিনিয়ারদের আর গাল দেবো না প্রমিস, বরং দেখলে সেধে লাস্ট কাউন্টার অফার করতে পারি, বলা যায় না। তবে কি না সেও ঐ এক-ই ফ্যালাসি।



    তথ্য-উপাত্ত-সূত্র:


    1. Freedman, David A. "Ecological inference and the ecological fallacy." International Encyclopedia of the social & Behavioral sciences 6, no. 4027-4030 (1999): 1-7. ( লিংক )
    2. Subramanian, Subu V., Kelvyn Jones, Afamia Kaddour, and Nancy Krieger. "Revisiting Robinson: the perils of individualistic and ecologic fallacy." International journal of epidemiology 38, no. 2 (2009): 342-360. ( লিংক )
    3. Gelman, Andrew, Boris Shor, Joseph Bafumi, and David Park. "Rich state, poor state, red state, blue state: What's the matter with Connecticut?." Poor State, Red State, Blue State: What's the Matter with Connecticut (2005). ( লিংক )
    4. Selvin, Hanan C. "Durkheim's suicide and problems of empirical research." American journal of sociology 63, no. 6 (1958): 607-619.
    5. Robinson, William S. "Ecological correlations and the behavior of individuals." International journal of epidemiology 38, no. 2 (2009): 337-341.
    6. Parker, Kim. "Yes, the rich are different." Pew Research Center 27 (2012).
      লিংক )
    7. https://www.indiatoday.in/diu/story/how-india-voted-2019-lok-sabha-election-india-today-axis-my-india-poll-1539617-2019-05-31
    8. https://en.wikipedia.org/wiki/List_of_Indian_states_and_union_territories_by_literacy_rate
    9. https://en.wikipedia.org/wiki/2019_Indian_general_election





    [1] এখানে এটাও অবশ্য মনে করানো দরকার যে কণ্ডিশনাল প্রোবাবিলিটির ব্যাপার চলে আসে অল্প - অর্থাৎ এই সার্ভে থেকে পাওয়া যায়ঃ P(বিজেপিকে ভোট | পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট) = ০.৫ আর P(বিজেপিকে ভোট | নিরক্ষর) = ০.৩৯ ইত্যাদি। উল্টোদিক অর্থাৎ, P(পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট | বিজেপিকে ভোট) আর P(নিরক্ষর | বিজেপিকে ভোট) গণনা করতে হলে সার্ভে পপুলেশনে কত শতাংশ পোস্ট-গ্র্যাজুয়েট আর কত নিরক্ষর সেই হিসেব লাগবে। এবং সেই দুয়ের মধ্যে কে বেশি কে কম, না জেনে বলা মুশকিল। আর এই দুয়ের মধ্যে গুলিয়ে ফেলার নাম? প্রসিকিউটর'স ফ্যালাসি।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ০৪ ডিসেম্বর ২০২৩ | ১৩৯০ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • dc | 122.164.86.49 | ০৯ ডিসেম্বর ২০২৩ ২০:৪৪526814
  • আমি যদুবাবুর প্রস্তাব সেকেন্ড করলাম :-) অরিন্দমবাবু প্লিজ লিখুন। 
  • মোহাম্মদ কাজী মামুন | ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০০:২৫526817
  • দারুণ একটা পর্যালোচনা। স্ট্যাটিকস সব সময়ই আমার আগ্রহের বিষয় ছিল। এর মধ্যে কিছু ম্যাজিকাল ব্যাপার আছে মনে হয়!
    "প্রশ্ন উঠতে পারে, ব্যক্তির জন্য যদি বিদেশে জন্মানো আর আমেরিকান-ইংলিশ-জ্ঞান উল্টোপানে ছোটে, তাদের কোরিলেশন রাজ্যভিত্তিক ডেটায় পজিটিভ কেন?" 
    স্ট্যাটিসটিকস লাইস ......... 
     
    "ঐ তো, সব নিরক্ষর লোকেই বিজেপিকে বেশি ভোট দেয়?"
    না না আমার অবজার্ভেশান তা বলে না। শিক্ষিত মানুষ এক সময় পরিবর্তন চেয়েছিল। আর এখন তারা মোদির কোন বিকল্প পাচ্ছে না। অ্যাট লিস্ট তারা তাকে বিশ্বাস করে। তাকে তাদের আন্তরিক মনে হয়। 
     
     
     
  • যদুবাবু | ১০ ডিসেম্বর ২০২৩ ০১:১৪526819
  • মামুন, থ্যাঙ্ক ইউ। না না, কিছু ম্যাজিকাল নেই। তবে কি না অনেক স্ট্যাটিস্টিক্স বা প্রোবাবিলিটি-র ধারণা কাউন্টার-ইনটুইটিভ। আবার এও ঘুরিয়ে বলাই যায়, মানুষের ইনটিউশন হয়তো এমন কিছু ভালো না। সহজেই ঠকানো যায়। 
     
    আর এই রে, আমি কিন্তু একবার-ও বলিনি নিরক্ষর বা অশিক্ষিত লোকে বিজেপি-কে ভোট দেয়। আশা করি ঐ দুর্মতি হবে না। বরং বলেছি যে ম্যাপ বা স্টেট-ওয়াইজ় কোরিলেশন দেখে ঐ সিদ্ধান্তে পৌঁছনো ঠিক হবে না, সেটাই ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি-র মূল কথা। 
     
    মোদীকে কে কেন ভোট দেয় সে আমি জানি না, আমার এই ব্যাপারে প্রত্যক্ষ জ্ঞান খুব-ই সীমিত। আমার হাইপোথিসিস এই যে যারা দেয় তারা সবাই ভেতরে ভেতরে বিদ্বেষ পোষণ করে রাখে - সে ছাড়া খুব শক্ত কাজ। James Baldwin বলেছিলেন, "I imagine one of the reasons people cling to their hates so stubbornly is because they sense, once hate is gone, they will be forced to deal with pain."
     
    তবে ইকোলজিক্যাল ফ্যালাসি অন্যান্য বিষয়ে যেওন এপিডেমিওলজি-তে খুব-ই কমন। কোভিড-১৯ প্রাইম এগজাম্পল। কিন্তু কোভিডুনিশ নিয়ে লিখলেই কারা যেন এসে খুব ট্রোল করে তাই ঐটা ইচ্ছে করে বাদ দিয়েছি মূল লেখায়। এই টুইট-থ্রেডে এই নিয়ে কিছু সুন্দর আরগুমেন্ট আছেঃ https://twitter.com/jsm2334/status/1488708622330777604 
     

     
  • Arindam Basu | ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৭:৪৭526834
  • @যদুবাবু, "আমার হাইপোথিসিস এই যে যারা দেয় তারা সবাই ভেতরে ভেতরে বিদ্বেষ পোষণ করে রাখে - সে ছাড়া খুব শক্ত কাজ। James Baldwin বলেছিলেন, "I imagine one of the reasons people cling to their hates so stubbornly is because they sense, once hate is gone, they will be forced to deal with pain." "
     
    অসাধারণ তীক্ষ্ন পর্যবেক্ষণ। এই ঘৃণাবোধ যতদিন থাকবে, ততদিন এই অবস্থার পরিবর্তন হবে না। সবথেকে দুঃখের বিষয় যে শিক্ষিত মানুষের মধ্যে এই ঘৃণার বোধ সবচেয়ে বেশী। 
     
    @যদুবাবু এবং @dc, "যদুবাবুর প্রস্তাব সেকেন্ড করলাম :-) অরিন্দমবাবু প্লিজ লিখুন"
    ভুতের বেগার নাম দিয়ে একটা সিরিজ শুরু করেছি। দেখা যাক কোথায় যায়। 
  • Ahsan ullah | ১১ ডিসেম্বর ২০২৩ ১১:০১526839
  • এখানে আপনি আবেগের কথা বিবেচনা করতে পারেন, এশিয়াতে শিক্ষার সাথে সাথেই আবেগের পিছনে যুক্তি দাঁড় করানো হয়। মুসলিম দের কোনঠাসা করার যে মানসিকতা নিয়ে দেশ ভাগ করা হয়েছিল সেখানেই স্বাভাবিক ভাবেই হিন্দুত্ব বাদী গোষ্ঠী ক্ষমতাতে আসবে ।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভেবেচিন্তে প্রতিক্রিয়া দিন