এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ

  • চকোলেটের গল্প ও আমষ্টারডাম

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | ১৩ জুন ২০২০ | ২৮৬২ বার পঠিত
  • চকোলেটের ইতিহাস ইত্যাদি নিয়ে তেমন নতুন করে কিছু বলার নেই। একটু গুগুল সার্চ করলেই এত গাদা গাদা তথ্য চলে আসবে যে পড়ে শেষ করতে পারবেন না! তাই এখানে হালকার উপর দিয়ে সহজ পাচ্য করে চকোলেটের ইতিকথা বলে নেব। আমার মূল লক্ষ্য থাকবে আমষ্টারডাম শহরের চকোলেট নিয়ে দু-চার কথা। কারন আপনারা চকোলেট সম্পর্কে অনেক কিছু জানলেও, হয়ত এটা জানেন না যে ডাচ্ (হল্যান্ড দেশের বাসিন্দা)-রা না থাকলে হয়ত আমরা আজকের এই সহজলভ্য চকোলেটের পৃথিবী জুড়ে প্রসার এবং আমাদের দৈনন্দিন জীবনের সাথে প্রায় জুড়ে যাওয়া হয়ত সম্ভব হত না। আর ডাচেরা জুড়ে আছে বলে স্বাভাবিক কারণেই আমষ্টারডামের অবদানও বিরাট চকোলেটের গল্পে।

    চকোলেট উৎপাদিত হয় কোকো গাছের ফলের বীজ থেকে। এই কোকো গাছগুলো প্রায় ২০ থেকে ৪০ ফুট মত লম্বা হয় এবং এদের পাতা গুলো প্রায় দু-ফুটের মত লম্বা। কিন্তু এই কোকো গাছ আবার যেখানে সেখানে বেড়ে ওঠে না – এদের পছন্দের বেড়ে ওঠার জায়গা হল গরম গরম আবহাওয়া, বৃষ্টি হবে মাঝে মাঝে এমন। তো সেই কারণে কোকো গাছের প্রধান জঙ্গল গুলো দেখা যায় বিষুবরেখার আশে পাশে। এই কোকো গাছের বিজ্ঞান সম্মত নাম “থিওব্রোমা কোকো” – ১৭৩৫ সাল নাগাদ যখন এই বিজ্ঞান সম্মত নাম দেওয়া হয় তা ধার করা হয়ে ছিল গ্রীক ভাষা থাকে, এবং যা অনুবাদ করলে দাঁড়ায় “ভগবানের খাবার”। যতদূর সম্ভব যিনি এই নাম দিয়েছিলেন (লিনেয়াস), তিনি স্প্যানিশ লেখা পত্রের সাথে পরিচিত ছিলেন। কারণ এই বিজ্ঞান সম্মত নাম দেবার বহু আগে থেকেই মায়া এবং অ্যাজটেক সভ্যতায় কোকো-কে “ভগবানের দান” বলে অভিহিত করা হত।

    কোকো গাছের ফুল গন্ধহীন বা ঈষৎ দূর্গন্ধযুক্ত হয় – সারা বছরই এই ফুল দেখা যেতে পারে টুক টাক – কিন্তু বছরে দুইবার এই ফুল আসে ঝেঁপে। গাছের কান্ডে এবং গুঁড়িতে এই ফুল ধরে এবং তাদের রঙ বেশ অপরূপ হয় – সাদা, গোলাপী, হলুদ, বা গাঢ় লাল, কি প্রজাতির গাছ তার উপর নির্ভর করে। চার বছর বয়েস থেকে কোকো গাছ ফল দিতে শুরু করে এবং এক ফলগুলি একটু লম্বাটে ধরণে হয়। একটা সুস্থ-সবল কোকো গাছ সিজন ভালো গেলে প্রায় ৭০ টা মত ফল দিতে পারে – এই ফলের রঙ উজ্জ্বল হ্লুদ থেকে গাঢ় পার্পেল। ফল পাকতে সময় লাগে প্রায় ছয় মাস – এবং একটা ফলের ভিতরে প্রায় ২০ থেকে ৬০ টা বীজ থেকে। আর এই বীজই হল মহামূল্যবান, কারণ চকোলেট তৈরী হয় এই বীজ জাত কোকো পাওডার থেকেই। কোকো পাছের প্রবলেম হচ্ছে কাপাস তুলোর মত ফটাস করে ফল ফাটিয়ে এরা বীজ ছড়াতে পারে না। অন্য কেউ (সে জন্তু জানোয়ার হোক বা মানুষ) এই ফল কেটে বীজ বার করলেই তবে তিনি প্রকট হবেন। এই বীজ গুলিকেই পরিচিত অর্থে ‘কোকো বীনস্‌’ বলে, কফি বীনসের মত ব্যাপার আর কি।

    ধাপে ধাপে এই কোকো গাছ থেকে ফল পেড়ে বীজ বের করে কোকো পাওডার প্রস্তুত করা হয়। এই মুহুর্তে আমার কাছে কোকো গাছের বা ফলের নিজের তোলা ছবি নেই। তাই কোকো গাছের বা পদ্ধতির এই ছবি গুলো ধার নিলাম “পুরাটোস গ্রুপ”-র কাছ থেকে যারা এক বেলজিয়াম ভিত্তিক কোম্পানী এবং কোকো উৎপাদন সংক্রান্ত অনেক ভালো কাজের সাথে জড়িত। সাথের ছবির কোলাজের ১-৬ নম্বরে কেমন ভাবে কোকো গাছের ফল থেকে কোকো পাওডার বানানো হয় তা দেখা যাবে। ১-৪ নম্বর ছবিতে দেখা যাবে কি ভাবে কৃষকরা গাছ থেকে কোকো ফল পাড়ছে এবং তার শাঁস টাঁস বের করে সেই বীজকে গ্যাঁজাচ্ছে (ফার্মেন্ট করা যাকে বলে)। ফল থেকে বীজ আর শাঁশ বের করে কাঠের বাক্সে বা কলাপাতায় রেখে তাকে ফার্মেন্ট করা হয়। এই পদ্ধতির সময়ের বীজের ভিতর গড়ে ওঠে চকোলেট ফ্লেভার। তার পর সেই গ্যাঁজানো বীনস্‌ গুলো রোদে শুকানো হয় এবং শুকানো হয়ে গেলে ব্যাগে ভরে চালান।



    সাথের ছবির কোলাজের ৫-৬ নম্বর ছবিতে দেখা যাচ্ছে কিভাবে কোকো বীনস্‌ শুকানো হচ্ছে। মোটামুটি দু-সপ্তাহের মত লাগে বীন্স্‌ গুলো শুকাতে যদি আবহাওয়া ভালো থাকে। শুকিয়ে শুকিয়ে এই পর্যায়ে বীনসের ওজন প্রায় অর্ধেক হয়ে যায়। এবং ঐ যে ফার্মেন্ট শুরু হয়েছিল না, বীনসের ভিতরে এনজাইম্‌ বেরিয়ে – সেই এনজাইমের কারুকার এই পর্যায়েও চলতে থাকে। এবং কোকো বীনস্‌ আরো ফ্লেভার প্রাপ্ত হয়।

    কফি বীনস্‌ এর মত কোকো বীনসকেও রোষ্টিং করা হয় ৭০-১১০ মিনিটের মত তার স্বাদ ও সুগন্ধ আরো বাড়াবার জন্য। বীনসের ভিতরে রাসায়নিক বিক্রিয়া-টিক্রিয়া ইত্যাদি হয়ে তিনি বাদামী রঙ ধারণ করেন এবং বেশ ফাটা ফাটা হয়ে যান। তবে কি বিক্রিয়া ইত্যাদি আমাদের জানার দরকার নেই – আদার ব্যাপারে জাহাজের খোঁজ না রাখাই ভালো। এর পর আসে শেষ স্টেপ – বীনসের বাইরের খোলাটা সরিয়ে ফেলা হয়। কোকা বীনসের মূল মাংস (বা শাঁস) ভেঙে বা কেটে খুব ছোট ছোট করা হয়। একের পর এক চালুনীর ভিতরে দিয়ে চালিত হতে থাকে এই বীনস-দের। একদম শেষে গিয়ে খোলা সম্পূর্ণ আলাদা হয়ে যায় বিনসের শাঁসের থেকে।



    চকোলেটের ইতিহাস অনেক পুরানো – সে প্রায় ২৫০০-৩০০০ বছর তো হবেই! অনেকে মনে করেন যে অ্যাজটেক সভ্যতা চকোলেট পান চালু করে, কিন্তু আসল ঘটনা হল, মনুষ্য জীবনে চকোলেট ‘মায়া’ সভ্যতার দান, যারা ছিল দক্ষিণ মেক্সিকো এবং আজকের মধ্য আমেরিকার আশেপাশে। খ্রীষ্ট-পূর্ব ৫০০ বছর থেকেই প্রমাণ পাওয়া যায় যে মায়া সভ্যতার লোকজন তাদের মাটির বানানো জিনিস পত্রে চকোলেট/কোকো-র উল্লেখ করতে লেগেছে। অনেকে আবার ভাবেন মায়া সভ্যতার আগে অলমেক সভ্যতা-তেও চকোলেটের চল ছিল। যাই হোক, ঠিক জায়গাটা পিন পয়েন্ট করা না গেলেও চকোলেট যে ইউরোপিয়ান সভ্যতার নবজাগরণের সময়ের থেকে অনেক পুরানো সেই বিষয়ে আজ আর কোন ভিন্নমত নেই।

    তাহলে এবার প্রশ্ন হল – ওই সূদর মেক্সিকো থেকে আটলেন্টিক মহাসাগর পেরিয়ে চকোলেট ইউরোপে এল কি করে? উত্তর হল স্প্যানিশ পাবলিকের হাত ধরে। ইংরেজরা যেমন ভারতের দিকে এসে ঘাঁটি গেড়েছিল উপনিবেশ গড়ে বা স্রেফ লুটেপুটে নিতে, ঠিক তেমনি স্প্যানিশরা ১৫০০ সালের দিকে বিজয়ে বেরিয়ে পৌঁছে গিয়েছিল মেক্সিকো-তে। ব্যাটারা গিয়েছিল সোনাদানার ধান্দায়, কিন্তু বেশ কয় জন ফিরেছিল চকোলেট নিয়ে। বলা হয় যে ক্রিষ্টোফার কলোম্বাস-ই প্রথম ইউরোপীয়ান যিনি প্রথম সংস্পর্শে এসেছিলেন চকোলেটের আমেরিকা অভিযানে বেরিয়ে। কলম্বাস নিজে জন্মসূত্র ইতালিয়ান হলেও, তাঁর সেই আমেরিকা অভিযান স্পনসর করেছিল স্পেনের এক সম্রাট। ১৫ই আগষ্ট ১৫০২ সালে কলম্বাস তাঁ চতুর্থ এবং শেষ অমেরিকা অভিযানের সময় আজকে যেটাকে আমরা হন্ডুরাস দেশ বলে চিনি, যেখানে প্রথমে কোকো-র সংস্পর্শে আসেন। একটা অন্য স্থানীয় নৌকা করে নাকি সেখানকার লোকেরা কোকো নিয়ে যাচ্ছিল – কলম্বাস-রা সেই নৌকা-কে খপ করে ধরে নেন। বাকি মালপত্র ছিনিয়ে নিয়ে সাথে পেয়ে যান কোকো বিনস্‌-ও। কিন্তু কলম্বাস এবং তাঁর সাথী নাবিকরা কোকো ঠিক কি জিনিস তখনো জানতেন না – তাই সেই জিনিসের মূল্য তাঁরা ঠিক জাজ্‌ করতে পারেন নি। এমনকি তাঁরা এটাও জানতেন না যে, আমেরিকায় স্থানীয় ভাবে তখন কোকো বিনস্‌-র ব্যবহার হত ‘অর্থ’ হিসাবেও।

    তো যাই হোক, কলম্বাস তো কোকো নিয়ে ফিরলেন স্পেনে। কিন্তু সঙ্গে সঙ্গে কিছু হইচই পড়ে যায় নি। বলা হয় এর প্রায় কুড়ি বছর পরে হারনান্দো কর্টেজ নামে আর এক ঔপনিবেশিক তিন বাক্স ভর্তি কোকো বিনস্‌ নিয়ে ফেরেন আমেরিকা থেকে স্পেনে। কিন্তু এবার কর্টেজ দেখে এসেছিলেন কেমন ভাবে কোকো পানীয় ব্যবহার করছেন তখনকাত অ্যাজটেকের রাজা। কোকোর জলে বা ওয়াইনে মিশিয়ে, সাথে একটু ভ্যানিলা বা চিলি-পিপার দিয়ে অ্যাজটেক রাজা খুব খাচ্ছিল। হার্টেজ শুনেছিলেন সেই পানীয় খেলে নাকি শরীরে বল আসে, ক্লান্তি দূর করে, ঔষুধের কাজ করে – এমন নানা বিধ কথা। তিনি নিজেও ট্রাই করেছিলেন, কিন্তু বড্ড তেতো বলে পছন্দ হয় নি। এইভাবেই স্পেনে এবং সে থেকে ইউরোপে ঢুকে পড়ল চকোলেট। প্রথম অফিশিয়াল বাণিজ্য চকোলেটের হয় ১৫৮৫ সালে ভেরাক্রুজ থেকে স্পেনের সিভিয়া-তে।

    এবার এটা কিন্তু মনে রাখতে হবে এখন পর্যন্ত এই সব গল্পই হচ্ছে কিন্তু মূলত চকোলেট পানীয় নিয়ে, তাও আবার মেক্সিকোর দিকে তেতো চকোলেট পানীয় যে তারা খেত চিনি মেশানো ছাড়া। চকোলেটের আজকের যে রুপ, মানে শক্ত চকোলেট বা বার – এতো প্রায় আজকার গল্প, দেড়শো-দুশো বছর মেরেকেটে।

    স্প্যানিশরা কিন্ত অতো তেতো চকোলেট পানীয় খেতে পারল না – তার সাথে মিশিয়ে খেত আখের রস এবং দারুচিনি। যাই হোক, চকোলেট তখনো পর্যন্ত কেবল মাত্র বড়লোকেদের খাবার স্পেনে। স্পেনের বড়লোকেরা এই ভাবে শুধু নিজেরা সাঁটিয়ে গেল আরো প্রায় একশো বছর – আশে পাশের দেশের বড়লোক ইউরোপীয়দের পর্যন্ত চকোলেটের সিক্রেট না জানিয়ে! ১৬১৫ নাগাদ এক স্প্যানিশ রাজ কুমারীর সাথে ফরাসী দেশের রাজা ত্রয়োদশ লুই-র বিয়ে হলে, সেই রাজকুমারী ফ্রান্সে নিয়ে গেল সাথে করে চকোলেট খাবার অভ্যাস এবং টেকনিক। চকোলেট এবার আস্তে আস্তে ফ্রান্স জয় করে ফেলল। ফ্রান্সের বড়লোকেরা ডেলিকেসি বলে চকোলেট গিলতে লাগল দেদার - চতুর্দশ লুই এতো বেশী চকোলেট ভালোবেসে ফেললেন যে কোর্ট অব ভার্সেই-তে চালু হয়ে গেল পুরোদমে চকোলেটের ব্যবহার।

    এই মুহুর্তে পৃথিবীতে নামে, স্বাদে, কাটতিতে বেলজিমায় চকোলেট সবার থেকে এগিয়ে – এবং বেলজিয়াম-কে খুব ক্লোজ কম্পিটিশন দিয়ে ঘাড়ের কাছে সুইজারল্যান্ড। এবার টুক করে দেখে নেওয়া যাক এই দুই দেশ কি ভাবে চকোলেট পেল। সপ্তদশ শতাব্দীতে বেলজিয়ামে রাজত্ব করত স্পেনের সম্রাট। তো সেই সূত্রে অমেরিকা থেকে স্প্যানিশ নাবিকদের আনা কোকো ঢুকে পরে বেলজিয়ান সমাজে। বেলজিয়ামেও তখনো এই কোকো ব্যবহার করা হত মূলত ‘হট্‌ চকোলেট’ পানীয় হিসাবে। বড় লোকের বাড়িতে কোন অতিথি এলে, তাকে এই পানীয় খাইয়ে ইমপ্রেস করার চেষ্টা চালানো হত। তো ১৬৯৭ সালে জুরিখ শহরের মেয়র হেনরি এসার বেলজিয়ান আসেন কি এক কাজে ব্রাসেলস্‌ রাজপ্রাসাদে। সেখানে তিনি চকোলেট পানীয় খেয়ে ব্যাপক খুশী হন। এবং এতো খুশী হন যে যাবার সময় সাথে করে নিয়ে যান চকোলেট পানীয় বানাবার রেসিপি। এই ভাবেই সুইজারল্যান্ডে ঢুকে পরলো চকোলেট এবং আজকের সময়ের বাণিজ্যের ভিত্তিতে দেখতে গেলে, বেলজিয়াম নিজের পিছনে নিজেই বাঁশ দিয়েছিল সেদিন হেনরী-কে চকোলেটের রেসিপি হস্তান্তরের করে।

    পরিশেষে আসা যাক আমষ্টারডামের গল্পে – চকোলেট তো বেশ খাচ্ছিল ইউরোপের বড়লোকেরা সেই সময়। তাহলে ডাচ্‌ পাবলিকের অবদান ঠিক কি চকোলেট জগতে? আসলে হয়েছে কি, স্প্যানিশরা ইউরোপীয়দের সাথে চকোলেটের পরিচয় ঘটালেও, মালটা যে অত জনপ্রিয় হয়ে যাবে সেটা বুঝতে পারে নি। আর তার থেকেও বড় কথা, কোকো বিনস্‌ আমেরিকা থেকে আমদানী করার যে একটা বিশাল লাভজনক ব্যবসা ফেঁদে ফেলা যায় সেটাও স্প্যানিশরা ঠিক বুঝে উঠতে পারে নি। ফলত হল কি, অষ্টাদশ শতাব্দীতে ধীরে ধীরে পুরো কোকো বিনস্‌-র ব্যবসার কনট্রোল নিয়ে নিল ডাচ্‌ ব্যবসায়ীরা। আমষ্টারডাম হয়ে উঠল পৃথিবীর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ কোকো বিনস নিয়ে কারবারী বন্দর। আর তার ফলে আমষ্টারডামের আশেপাশে গড়ে উঠল কোকো ও চকোলেট সংক্রান্ত দোকান ও ব্যবসা। ব্যবসার প্রসারের ফলে আস্তে আস্তে কোকো বিনসের দাম কমতে লাগল – সাধারণ মানুষের নাগালের মধ্যে এসে গেল। মানুষ এবার কোকো নিয়ে এটা সেটা ট্রাই করা চেষ্টা করতে লাগল – চকোলেট এইভাবে স্থান পেতে লাগলো কেক, পেষ্ট্রি এবং সরবে-তে।

    কিন্তু চকোলেটের ‘আধুনিক’ যুগের সূচনা বলতে গেলে ১৮২৮ সালের পর। যখন কর্মাশিয়াল ভাবে চকোলেটের আরো বেশী করে উৎপাদন শুরু হল। এর এইখানেই ডাচ্‌-দের অবদান। কোয়েনার্ড ভ্যান হুটেন নামে এক ডাচ্‌ কেমিষ্ট উদভাবন করে ফেলল কোকো জগতে যুগান্ত কারী এক জিনিস। তিনি উদভাবন করলেন এক হাইড্রোলিক প্রেস যার মাধ্যমে প্রসেস করা কোকো বিনস্‌ থেকে কোকো বাটার-কে আলাদা করে ফেলা গেল খুব সহজে, আর পরে রইল চকোলেটের/কোকো-র গুঁড়ো। ব্যাস আর পায় কে! কিন্তু ভ্যান হুটেন এতেই থামলেন না, তিনি আরো গবেষণা করে সেই চকোলেটের পাওডারের সাথে ক্ষারক জাতীয় লবণ (অ্যালকালাইন সল্ট) মিশিয়ে এই পাওডার-কে এমন করে তুললেন যে সেই পাওডার এবার খুব সহজেই কোন তরলে মিশে যায়। এই প্রসেসটা তিনি পেটেন্ট করেছিলেন এবং তা কালক্রেমে পরিচিত হয় ‘ডাচিং’ পদ্ধতি নামে। বলতে গেলে এই ডাচিং প্রসেস ছাড়া হয়ত আজকের এই চকোলেট বিপ্লব সম্ভব হত না।

    এই পদ্ধতির আবিষ্কারের পর চকোলেট পানীয় প্রস্তুত খুব সহজ হয়ে গেল, আর তা ছাড়া সহজ হয়ে এল চকোলেটের সাথে চিনি মেশানো এবং তার সাথে আবার কোকো পাওডার মেশানো। এইভাবেই উদ্ভাবিত হল প্রথম শক্ত চকোলেট। ১৮৪৯ সালে ইংল্যান্ডের যোসেফ ফ্রাই এই শক্ত চকোলেট থেকেই প্রথম বানিয়ে ফেললেন খাদ্যযোগ্য চকোলেট – তিনিই বানালেন ব্রিটেনের প্রথম চকোলেট বার – কোকো পাওডারের সাথে চিনি এবং কোকো ফ্যাট মিশিয়ে পেষ্ট এবং তার থেকে চকোলেট বার।

    এই চকোলেট বার মার্কেটে সুইজারল্যাণ্ডের অবদান প্রচুর, ইনফ্যাক্ট আজ আমরা যা চকোলেট বলে সাধারণত চালাই, তা সুইস দেরই অবদান। উনবিংশ শতাব্দীর শেষের দিকে ১৮৭৯ সালে ড্যানিয়েল পিটার বানিয়ে ফেললেন প্রথম মিল্ক চকোলেট – হেনরী নেষ্টলে দ্বারা উদ্ভাবিত (১৮৬৭) গুঁড়ো দুধের ব্যবহার করে। কিন্তু চকোলেট বিবর্তিত হতেই থাকছিল – কারণ এখনো পর্যন্ত যে চকোলেট বার তৈরী হচ্ছিল তা চেবানোর জন্য খুব আদর্শ ছিল না। আবার ১৮৯৭ সালেই রুডলফ্‌ লিন্ডট উদ্ভাবন করে ফেললেন সেই শাঁখের মতন মেশিন যেখানে চকোলেট মেশানো ভালো করে মেশানো হবে বাতাসের উপস্থিতিতে যার ফলে খুব চকোলেট অন্য উপাদানের সাথে খুব ভালো করে মিশবে এবং খেতে গেলে মুখে মিলিয়ে যাবে বেশী না চিবেয়েই। আজকের এই যে ঘরে ঘরে চকোলেটের এতো প্রসার এবং সহজলভ্য তার পিছনে যে চারটি কোম্পানীর অব্দান সবচেয়ে বেশী তারা হল – ক্যাডবেরী, মার্স, নেষ্টলে এবং হার্চিস।

    পরিশেষে আজকের দিনের আমষ্টারডামের চকোলেটের গল্প। আপনি যদি আমষ্টারডামের রাস্তায় হাঁটেন, এমনিতেই সুন্দর সুন্দর চকোলেট দোকানের দেখা পেয়ে যাবেন। এরা প্রত্যেকেই ভালো। আপনি যদি গুগুলে সার্চ করেন, তাহলে আমষ্টারডামের বিখ্যাত চকোলেটের দোকান গুলির হদিশ পেয়ে যাবেন। তবে প্রথম সার্চের দোকানগুলি কিন্তু মূলত টুরিষ্টদের জন্যই বানানো। আপনি যদি অথেন্টিক, পারিবারিক ব্যবসার চকোলেট খেতে চান, তাহলে আপনাকে আমষ্টারডাম সেন্ট্রাল রেল স্টেশন থেকে বেরিয়েই ডান দিকে হাঁটতে হবে মিনিট পনেরো। দিয়ে আপনি পৌঁছে যাবেন এক বিখ্যাত চকোলেটের দোকানে যার নাম, ‘জর্ডিনো’। এই দোকানের নামটি মনে হয় দেওয়া আছে ভালো ট্রাভল/টুরিষ্ট গাইড বই গুলোতে। কারণ আমি এর সামনে দিয়েই আসা যাওয়া করতাম এবং চকোলেট খেতেও ঢুকতাম – তখন অনেক লোকাল লোকের সাথে গাইড বুক হাতে টুরিষ্টও দেখেছি অনেক। সেই চকোলেট যে খেতে কেমন অপার্থিব তা না ট্রাই করলে বোঝা যাবে না।







    অন্তিমে আমার নিজের মতামত – ভালো চকোলেট হবে দামী। সস্তায় ভালো চকোলেট বলে কিছু হয় না – পরের বার কেনার সময় ব্যাপারটা মনে রাখবেন। আর আমরা যে ক্যাডবেরী জাতীয় জিনিস গুলো ভারতের বাজারে কিনি, প্রকৃত চকোলেটের স্বাদের সাথে তার আকাশ পাতাল তফাত। এন ফ্যাক্ট আপনি আসল জিনিস খেলে ক্যাডবেরীকে হয়ত চকোলেট বলতেই ইতস্তত করবেন। আর তা ছাড়া ভারতের ক্যাডবেরীর কম্পোজিশন ইংল্যান্ডের ক্যাডবেরীর থেকে আলাদা – ভারত গরমের দেশ বলে চকোলেটে এটা সেটা মেশাতে হয় যাতে গরমে খুব সহজে গলে না যায়। এর ফলে বেশ কিছু স্বাদের তফাত হয়।













    খাদ্য জগতে ভারত পৃথিবীকে মশালার ব্যবহার হাতে ধরে শিখিয়েছে এবং জনপ্রিয় করেছে। কিন্তু ভারত কিছু কিছু জিনিস বানানোর আর্ট এখনো ভালো করে শিখতে পারে নি, যেমন চকোলেট, চীজ, ব্রেড, ওয়াইন, হুইস্কি ইত্যাদি। আজকাল দক্ষিণ ভারতে চকোলেট নিয়ে অনেক কিছু এটা সেটা করার চেষ্টা করা হচ্ছে – উটি এই সব জায়গায় যাঁরা বেড়াতে গেছেন তাঁরা সবাই আশা করি সেখান কার চকোলেট খেয়েছন। কিন্তু দুঃখের সাথে বলতে বাধ্য হচ্ছি সেগুলো কোনটাই ইউরোপীয় ভালো চকোলেটের ধারে কাছে আসবে না। এর প্রধান কারণ – বানানোর টেকনিক, রেসিপি এবং কোকো-র পার্থক্য। ভারতীয় কোকো নাকি ঠিক সমমানের নয় অন্য ট্রপিক্যাল কোকোর। যাই হোক, আমাদের যা আছে তাই দিয়ে তো চালাতে হবে। আশা করব এই ভাবেই আমরা ক্রমে ক্রমে ভালো চকোলেট বানানো শিখে যাব – ইউরোপ ঘুরতে গিয়ে আলাদা করে কেউ আমরা আর চকোলেট কিনতে সময় দেব না। সেই দিন না আসা পর্যন্ত এই সাথের আমষ্টারডামে চকোলেট গুলোই থাক প্রিয় হয়ে।

    তথ্যসূত্রঃ The Allure of Chocolate, V.1, 2020, A Vercity Media Group Publication
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ১৩ জুন ২০২০ | ২৮৬২ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সমমানের | 165.225.34.84 | ১৩ জুন ২০২০ ২১:০৭94273
  • এই ব্যাপার্টা নিয়ে কেউ যদি দু-চার পহসা দ্যান! সমমানের কোকো নয় মানে কি? আর ভারতীয় চকলেটের বর্ন স্বাদ ইউরোপের মান দিয়ে বিচার করতে হবে ক্যানো?

    আসলে ঐ দার্জিলিং আর আসাম চাএর একটা য়্যামন তুল্য আলোচনা জানার ও দীর্ঘদিনের ইচ্ছে - অন্য টপিক যদিচ।
  • dc | 103.195.203.69 | ১৩ জুন ২০২০ ২১:৪৯94275
  • লেখকের সাথে একমত, ভারতে তৈরি চকোলেটে আসল চকোলেটের স্বাদ পাওয়া যায়না। চট করে দুটো নাম মনে আসছে, যাদের চকোলেট খেতে আমার ভারি ভাল্লাগে - গোডিভা আর গিরারডেলি। বিশেষ করে গোডিভার চকোলেট বাক্স এক অতুলনীয় বস্তু।
  • | ১৩ জুন ২০২০ ২২:১৬94276
  • বেশ উল্লুস টাইপের লেখা। তবে আমুল যে ডার্ক চকোলেট নামে একটা কিম্ভুত বস্তু বিক্রি করে সেটার জন্য অন্তত এক প্যারাগ্রাফ নিন্দেমন্দ নেই বলে লেখাটা এট্টু নীরেস হয়েছে। ওই সমালোচনাটা থাকলেই পার্ফেক্ট হইত।

    প্রথম অনসাইট ট্রিপে ফেরার সময় ৫ কেজি চকোলেট এনেছিলাম।(পুরো হাভাইত্যার মত কিনেছিলাম)।

    ব্রাসেলসে যে স্টপেজে অফিসের জন্য বাস বা মেট্রো থেকে নামত তার পরের স্টপেজটাতেই গোডিভার কোম্পানি। তারা আবার সপ্তাহে একদিন ঠিকভাবে প্যাক না হওয়া বা অন্য কোন ছোটখাট ত্রুটিওলা চকোলেট শস্তায় বিক্রি করত।

    ব্রাসেলসে একটা চকোলেট মিউজিয়ামও আছে।
  • সম্বিৎ | ১৩ জুন ২০২০ ২৩:২৯94278
  • অ্যামেরিকাও চকোলেট আর বিয়ার বানাতে পারেনা। আইপিএ পপুলার হবার পরে বিয়ারের মান অনেকটাই বেড়েছে। চকোলেট এখনও তথৈবচ। গডাইভা অ্যামেরিকার সেরা চকোলেট। গিরাডেলিও ভালর দিকেই। কিন্তু ইওরোপের তুলনায় দ্বিতীয় বা তৃতীয় শ্রেণীর। লিন্ড ইউরোপের কোন  স্তরের চকোলেট জানিনা, তবে যা পড়েছি ওপরের দিকেই হবে।  লিন্ডের চকোলেটের সঙ্গে তুলনা করলে গডাইভা বলে বলে গোল খাবে।

  • Amit | 203.194.21.162 | ১৩ জুন ২০২০ ২৩:৫০94279
  • গোডিভা তো বেলজিয়ান চকোলেট.
  • সম্বিৎ | ১৪ জুন ২০২০ ০০:০০94281
  • নামে বেলজিয়ান।

    Godiva Chocolatier is an American chocolate maker which is jointly owned by Turkish conglomerate Yıldız Holding and MBK Partners. Founded in 1926, and purchased by the Turkish Yıldız Holding in November 2007. Later MBK Partners bought a stake in 2019.

  • / | 193.23.124.56 | ১৪ জুন ২০২০ ০০:১৬94282
  • ওটা গোডাইভা নয়?
  • lcm | 2600:1700:4540:5210:2946:7564:d9e3:788f | ১৪ জুন ২০২০ ০০:৩৬94283
  • চকোলেটিয়ারিং - আমেরিকা ভার্সেস ইউরোপ ('রিডার্স ডাইজেস্ট' নামক ম্যাগাজিনটির কাগুজে ছাপা ভার্সান এখনও আছে, তাতে দেখেছিলাম)

    (১) কোকো কনটেন্ট - চকোলেটে ঠিক কতটা কোকো থাকবে। আমেরিকায় ১০%, ইউরোপে ২০% - রাফলি। প্যাকেটের পিছেন লেখা থাকে % ।

    (২) সুগার কনটেন্ট - আমেরিকায় কোকো কম, সুগার বেশি। ইউরোপে কোকো বেশি, সুগার কম।

    (৩) ফ্যাট কনটেন্ট - কোকো পাউডারে যখন বাটারক্রিম মেশানো হচ্ছে ফাইনাল বার বানানোর আগে, ইওরোপে বেশ ঘন সুস্বাদু ক্রিম, আমেরিকায় লো ফ্যাট কনটেন্ট ক্রিম মেশানো হচ্ছে।

    (৪) কোন মহাদেশের বিন এবং রোস্টিং এর পরিমান - আমেরিকায় চকোলেটে প্রধানত দক্ষিণ আমেরিকার কোকো বিন, ইউরোপে বেশি ব্যবহার হচ্ছে আফ্রিকার বিন । সুকান্ত যে কথা লিখেছে যে কোকো বিন কিন্তু হয় একটু আর্দ্র গরমের জায়গায়। আর রোস্টিং এর পরিমান কতটা এবং কিভাবে, এটা কিছুটা কফির কতন। ভ্যারি করে।

    (৫) টেস্ট বাড / প্রেফারেন্স -- আমেরিকান চকোলেটিয়ারিং এর স্টাইল একটি লাইট আর স্যুইট। ইউরোপিয়ানদের একটি রিচ আর ডার্ক এর দিকে প্রবণতা।

    আমি তেমন তফাৎ বুঝতে পারি না অনেক সময়। তবে হ্যাঁ, ইন জেনারেল, ইউরোপের ক্রিম, দুধ, চকোলেট, দুগ্ধজাত খাবারে যেন টেস্ট বেশি পেয়েছি। অস্ট্রেলিয়াতেও।
  • কুশান | 2401:4900:314b:f5c3:d2da:265d:dbf:d568 | ১৪ জুন ২০২০ ০২:৪২94285
  • দিব্য লেখা।

    সবচে ভালো লাগলো ইতিহাসের অংশটা।

    ভারতে ব্রিটিশ আসার পূর্বে কোকো জাতীয় পানীয় আসার কোনো ইতিহাস আছে কি? জানার আগ্রহ রইলো।
  • কুশান | 2401:4900:314b:f5c3:d2da:265d:dbf:d568 | ১৪ জুন ২০২০ ০২:৪২94286
  • দিব্য লেখা।

    সবচে ভালো লাগলো ইতিহাসের অংশটা।

    ভারতে ব্রিটিশ আসার পূর্বে কোকো জাতীয় পানীয় আসার কোনো ইতিহাস আছে কি? জানার আগ্রহ রইলো।
  • dc | 103.195.203.92 | ১৪ জুন ২০২০ ০৯:১৩94293
  • সম্বিতবাবু ঠিকই বলেছেন, গোডিভা আগে বেলজিয়ান হলেও এখন আমেরিকান মালিকানায়। আর এটার উচ্চারন দুরকমই শুনেছি, আমেরিকানরা বলে গোডাইভা আর ফ্রেঞ্চরা বলে গোডিভা। এটা বহুকাল ধরে আমার প্রিয় চকোলেটগুলোর মধ্যে পড়ে, প্রথমবার যখন আমেরিকা গেছিলাম সেবারই খেয়ে অসাধারন মনে হয়েছিল। আর গিরারডেলিকেও কিন্তু লিন্ড কিনে নিয়েছে, এখন ওটা লিন্ডের একটা ব্র্যান্ড।

    এই নামগুলো চট করে মনে পড়লো, কিন্তু আরও কতো যে চকোলেট আছে আর তাদের যে কতোরকম অসাধারন স্বাদ! ডার্ক চকোলেটের মধ্যে বলা যায় K + M। এছাড়াও আছে আর্টিজানাল চকোলেট বা ক্রাফ্ট চকোলেট - সে আবার আরেক আবিষ্কারের পালা! কয়েক বছর আগে থাইল্যান্ড ঘুরতে গেছিলাম, সেখানে একটা ন্যাশনাল ফরেস্টে একটা ফার্মে অসাধারন আর্টিসানাল চকোলেট খেয়েছিলাম, অনেকদিন সেই স্বাদ মনে রেখেছিলাম।
  • সুকি | 49.207.201.243 | ১৪ জুন ২০২০ ০৯:১৪94294
  • ধন্যবাদ সবাইকে।

    এই লেখায় আমি ইচ্ছে করেই আমেরিকা-র চকোলেট নিয়ে কিছু লিখি নি। পরে কোনদিন হবে না হয় আমেরিকার চকোলেট নিয়ে দুচার কথা - কিস্‌, চকো চিপস কুকিস, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময়ে সৈন্যদের জন্য বিশেষ ভাবে প্রস্তুত চকোলেট বার এই সব নিয়ে।

    আর সেই কারণে ইউরোপ আর আমেরিকার চকোলেট নিয়ে তুলনা করেও কিছু লিখি নি। লগাগু-দা লিখেছে সুন্দর করে - আরো বেশ কিছু লেখা পত্র আছে এই নিয়ে। 

    দ-দি,

         ঠিকই, বেলজিয়ামের চকোলেট মিউজিয়াম গুলো খুব সুন্দর। তবে অনেক গুলোতে ঢুকে কোন লাভ নেই তেমন, সবই প্রায় একরকম। ওদের প্রায় সব বড় বড় শহরেই আছে একটা করে চকোলেট মিউজিয়াম। আমি তো ব্রুজ (ব্রুগ) তেও গিয়েছিলেম ওদের মিউজিয়ামে। আর চকোলেট কেনা প্রসঙ্গে, দারুন কাজ করেছো বেশী করে কিনে। ৫ কেনো, ১০ কেজি হলেও চকোলেটে কোন দোষ নেই :) 

  • সুকি | 49.207.201.243 | ১৪ জুন ২০২০ ০৯:১৮94295
  • dc, ন্যাড়াদা - ধন্যবাদ। সত্যি বলতে কি আমি জানতামই না যে গোডিভা-র মালিকানা বদল হয়েছে। আমি তো বেলজিয়ান বলেই মনের মধ্যে পুষে রেখেছি স্মৃতি। 

    কুশান-বাবু, আমার ঠিক এই মুহুর্তে প্রাক ইউরোপীয় কালে ভারতে কোকো-র ব্যবহার নিয়ে কোন রেফারেন্স মনে পড়ছে না। খুঁজে দেখতে হবে। 

  • dc | 103.195.203.92 | ১৪ জুন ২০২০ ০৯:২২94296
  • সুকি, গোডিভার নামকরনের ইতিহাসও ভারি ইন্টারেস্টিং। উইকিটা পড়ে নিন ঃ-)
  • সুকি | 49.207.201.243 | ১৪ জুন ২০২০ ০৯:২৮94297
  • dc, ধন্যবাদ। পড়ব অবশ্যই - এই পর্বে আসলে জাষ্ট ইউরোপে চকোলেটের প্রবেশ এবং শুরুটা ধরতে চেয়েছিলাম। বিখ্যাত কোম্পানীগুলি এবং তাদের বিবর্তনের ইতিহাস তো খুব ইন্টারেষ্টিং, যেমন আপনি বললেন। এই নিয়ে সামনে একদিন লেখার ইচ্ছে আছে। 

  • b | 14.139.196.11 | ১৪ জুন ২০২০ ১০:১৪94302
  • সুকি, সবই বুঝ্লাম, কিন্তু ঐ স্তম্ভটা নিয়ে লেখাটা ইনকমপ্লিট রয়ে গেলো।
  • সুকি | 49.207.201.243 | ১৪ জুন ২০২০ ১০:৩৬94310
  • b, আপনি এখনো স্তম্ভ নিয়ে ব্যাপারটা মনে রেখেছেন জেনে ভালো লাগলো :) কিন্তু ব্যাপার হল শেষ পর্বে থাকার কথা শুধু করোশন এবং মেটালার্জি। সহজ করে করোশন থিওরী কিভাবে বাংলায় নামাবো, সেই নিয়ে একটু ভাবছি আর কি। একটু ল্যাদ খেয়ে গেছি, নিজের টপিকে ঢুকে গেছি বলে :) 

  • শঙ্খ | 116.206.220.68 | ১৪ জুন ২০২০ ১৪:৩৯94321
  • ডার্ক চকোলেটের মতোই সুস্বাদু।
    নিউইয়র্কে লিওনিডাসের চকলেট পাওয়া যায়, তারা নাকি বেলজিয়াম, ব্র্যান্ডেড। একবার ফেরার সময় বাড়ির জন্য কিনে এনেছিলুম। বেজায় দাম নিয়েছিল। সেই সঙ্গে গতে বাঁধা সস্তার এম অ্যান্ড এম আর হার্চিস বা ঐ টাইপ কিছুর বস্তা। তা লোকজন দেখলুম আলাদা করে কিছু বুঝতে পারল না।
    তবে আস্তে আস্তে দেখছি লোকের ঐ ঢপের ক্যাডবেরি ছেড়ে ডার্ক চকোলেটের দিকে প্রবণতা বাড়ছে। ভালো কথা।
    ডার্ক মানে কতটা ডার্ক? আমার নিজের ভালো লাগে ৭০-৮০ ভাগ এর গুলো, নব্বই, নিরানব্বই চেখে দেখেছি, ততটা ভালো লাগেনি। সেদিন তো দেখলাম লিন্ড ১০০% ডার্কও এনেছে, নয়্যার ইনিফিনি, খাইনি এখনো। বাদবাকি ৫০ বা ৪০ ভাগ গুলো ওকে ওকে টাইপ। তবে সবচেয়ে অসহ্য লাগে মিন্ট দেওয়া চকোলেট গুলো।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন