এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  আলোচনা  বিবিধ

  • আমেরিকার ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারি - কে কোথায় দাঁড়িয়ে?

    সাগর দাস লেখকের গ্রাহক হোন
    আলোচনা | বিবিধ | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৫৬৭১ বার পঠিত
  • নেভাডা ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে প্রত্যাশামত জিতলেন বার্ণী স্যান্ডার্স। ৫০% ভোট গণণা শেষ হওয়ার পর দেখা যাচ্ছে বার্ণী পেয়েছেন ৪৬.৬% ভোট। তার পরে আছেন প্রাক্তন উপরাষ্ট্রপতি যো বাইডেন (১৯.২%)। সাউথ বেন্ড শহরের মেয়র পীট বুডাজিজ পেয়েছেন ১৫.৪% ভোট। সেনেটার এলিজাবেথ ওয়ারেণ পেয়েছেন ১০.৩% ভোট।

    আমেরিকার ইলেকশানে আইওয়া আর নিউ হ্যাম্পশায়ারের গুরুত্ব আশ্চর্যজনক ভাবে অত্যন্ত বেশি। কারণ দুই দলেরই প্রাইমারি ইলেকশান শুরু হয় এই রাজ্য দুটো থেকে। যদিও আমরা পুরো প্রসেসটাকেই প্রাইমারি বলছি, কিন্তু আসলে দুই ধরনের উপায়ে মূল নির্বাচনের জন্য প্রার্থী নির্বাচিত করে দুই পার্টি। যেহেতু এই লেখার মূল বিষয় ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রাইমারি, তাই বাকি লেখাতেও শুধু সেইটুকু আলোচনা করা হবে।


    সেই আলোচনায় ঢোকার আগে বলে নেওয়া ভালো যে রিপাব্লিকান দলের প্রার্থী হচ্ছেন বর্তমান রাষ্ট্রপতি ডোনাল্ড ট্রাম্প। ইম্পিচমেন্টে সেনেটে নির্দোষ প্রমাণিত হয়ে যাঁর আত্মবিশ্বাস এখন তুঙ্গে। সেনেটে রিপাব্লিকানদের সংখ্যাগরিষ্ঠতার সাহায্যে সেরকম কোনও আলোচনা-বিচার-সাক্ষী ছাড়াই মুক্তি পেয়ে গেছেন। রিপাব্লিকানদের মধ্যে একমাত্র মিট রমনি অন্যদিকে ভোট দিয়েছিলেন। দাবী করেছিলেন যে আরো সাক্ষীদের কথা শোনার প্রয়োজন আছে এবং তার পরে সঠিকভাবে বিচার করা সম্ভব। কিন্তু বাকী কোনও রিপাব্লিকান সেনেটার ট্রাম্পের বিরুদ্ধে যেতে সাহস দেখাননি। কারণ সামনেই তাঁদের মধ্যে অনেককে মিড টার্ম ইলেকশনে যেতে হবে। আর এইমুহুর্তে রিপাব্লিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা তুঙ্গে। সাম্প্রতিক গ্যালাপ পোলে দেখা যাচ্ছে ৯৩% রিপাব্লিকান ট্রাম্পের কাজে খুশি। আমার ধারণা ইলেকশান যত কাছে আসবে, রিপাব্লিকানদের মধ্যে ট্রাম্পের জনপ্রিয়তা আরো বাড়বে।


    এইবারে আসা যাক সেই দুই প্রক্রিয়ার কথায়। প্রথমটি প্রাইমারি। প্রাইমারিও অনেকরকম হয়। তবু মূলত এটিতে লোকজন এসে ভোট দেয় এবং সেই ভোটের শতাংশের প্রেক্ষিতে ঠিক হয় কে কটি ডেলিগেট (প্রতিনিধি) পাবেন। এগুলি সাধারণত সরকারের দ্বারা পরিচালিত হয়। এর মধ্যে আছে ওপেন প্রাইমারি যেগুলিতে যে কেউ এসে দুই পার্টির প্রার্থীর পক্ষেই ভোট দিতে পারেন। ক্লোজড প্রাইমারিতে শুধুমাত্র যে পার্টির প্রার্থী নির্বাচিত হচ্ছে, সেই পার্টির রেজিস্টার্ড ভোটাররাই ভোট দিতে পারবেন। এছাড়াও রয়েছে পার্টি-রান প্রাইমারি, যেগুলি সরকার নয়, পার্টি নিজেই ভোট পরিচালনা করে। দ্বিতীয়টি হল ককাস। ককাস অনেকটা প্রাইভেট ইভেন্ট, যেগুলি পার্টি বিভিন্ন স্থানে আয়োজন করে। সেখানে পার্টির রেজিস্টার্ড ভোটাররা এসে নিজের পছন্দের প্রার্থীর পক্ষে সমর্থন দেখায়। এই সমর্থন কোথাও হাত তুলে, কোথাও ভোট দিয়ে দেখানো হয়।


    মোট ৫৭টি নির্বাচনক্ষেত্রে এই প্রাইমারি হয়ে থাকে। ৫০টি রাজ্য, দেশের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসি, ৫টি টেরিটরি (যেগুলি রাজ্য নয়), এবং দেশের বাইরে থাকা আমেরিকানদের একটি আলাদা নির্বাচনক্ষেত্র হিসাবে গণ্য করা হয়। মজার ব্যাপার হল, এর মধ্যে টেরিটরিতে থাকা নাগরিকদের ভোট মূল রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে গণ্য হয়না। এর মধ্যে তিনটি রাজ্য এবং চারটি টেরিটরিতে ২০২০তে ককাস হচ্ছে।


    তার মধ্যে প্রথমটি হয় আইওয়াতে। এইখান থেকেই আমেরিকার সবথেকে বড় ইলেকশানের সূত্রপাত হয়। এইবারে সেখান ডেমোক্র্যাটিক ককাসে গন্ডগোল হয়। দূরে থাকা ডেমোক্র্যাটরাও যাতে ভোট দিতে পারেন সেজন্য একটি অ্যাপের ব্যবহার করা হয়, যেটি সময়মত ঠিকভাবে কাজ করেনি। অনেক কনফিউশান এবং সময় নিয়ে হিসাবের পর দেখা যায় মেয়র পীট বুডাজিজ সবথেকে বেশি সংখ্যক ডেলিগেট পাবেন (১৩ বা ১৪), বার্ণী স্যান্ডার্স পাবেন ১২ বা ১৩জন ডেলিগেট। দুজনের সমতুল্য ডেলিগেট শতাংশের মধ্যে ফারাক মাত্র ০.০০৪%। এইখানে যেন পাঠক মনে না করেন এটি তাঁদের পাওয়া ভোটের মধ্যে পার্থক্য। ভোটে (যেটিকে আমেরিকাতে পপুলার ভোট বলে) কিন্তু বার্ণী স্যান্ডার্স অনেকটাই এগিয়ে রয়েছেন। মানে আমেরিকাতে একজন ইলেকশানে বেশি ভোট পেয়েও হারতে পারেন। উদাহরণ: ২০০০ এবং ২০১৬র রাষ্ট্রপতি নির্বাচন। এই কারণেই আমেরিকাকে ডেমোক্র‌্যাসি না বলে রিপাব্লিক বলা হয়।


    এর পর নিউ হ্যাম্পশায়ারে প্রাইমারির আয়োজন করা হয় যেখানে ২৫.৭% পপুলার ভোট পেয়ে বার্ণী জেতেন এবং ৯ জন ডেলিগেট পাবেন। দ্বিতীয় স্থানে থাকা পীট বুডাজিজও ৯ জন ডেলিগেট পাবেন। 


    ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারি ইলেকশানে যে শুধুমাত্র ডেলিগেটের সংখ্যা নিয়েই সমস্যা আছে তা নয়, সেখানে সুপার ডেলিগেট নামক একটি ব্যাপার রয়েছে। ৭৭১ জন ডেলিগেট রয়েছেন যাঁরা সরাসরি নিজেদের ভোট যেকোনও প্রার্থীকে দিতে পারেন। এই ৫৭টি নির্বাচন ক্ষেত্র থেকে মোট ৩৯৭৯ জন ডেলিগেট নিয়ম অনুযায়ী ভোট বা সাপোর্ট দেবেন (প্লেজ্ড ডেলিগেটস)। এইবছর ১৩-১৬ জুলাই উইসকনসিন রাজ্যের মিলোয়াকিতে যখন ডেমোক্র্যাটিক ন্যাশনাল কনভেনশান হবে, যেখানে ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী নির্বাচিত করা হবে রাষ্ট্রপতির জন্য, সেখানে প্রথমে দেখা হবে এই ৩৯৭৯ প্লেজ্ড ডেলিগেট্সদের মধ্যে কে বেশি সাপোর্ট পাচ্ছেন। এর পর দেখা হবে ঐ ৭৭১জন সুপার ডেলিগেটদের জোড়ার পর কে বেশি সাপোর্ট পাচ্ছেন।


    আপাতত তিনটে রাজ্যেই দারুন ফল করে এগিয়ে আছেন সেনেটার বার্ণী স্যান্ডার্স। ২০১৬তেও তিনি প্রাইমারি লড়েছিলেন এবং শেষে হিলারি ক্লিন্টন প্রার্থী হন। পরে এই ডেলিগেট সংখ্যা, সুপার ডেলিগেটদের ভূমিকা, বার্ণীর ক্যাম্পেইনকে সাবোটাজ করা ইত্যাদি অনেক বিতর্ক উঠে আসে। এবং অনেকেই দাবী করেন যে অপ্রত্যাশিতভাবে ট্রাম্পের ইলেকশান জেতার পিছনে এই কারণগুলো ছিল অন্যতম। চিত্র পরিচালক মাইকেল মূরের মতে বহু বার্ণী সমর্থক শেষে ভোট দিতে যাননি বা পার্টি লাইন অতিক্রম করে ট্রাম্পকে ভোট দিয়ে এসেছিলেন। মনে রাখবেন ট্রাম্প কিন্তু বেশ কিছু রাজ্যে খুব সামান্য ভোট বেশি পেয়ে জিতেছিলেন। যেমন মিশিগানে পার্থক্য ছিল ১১ হাজারেরও কম ভোট, যেখানে প্রায় ৪৮ লক্ষ লোক ভোট দিয়েছিলেন। শোনা যায় গত ইলেকশনে প্রায় ১০ কোটি ভোটার নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেননি।


    চলুন একটু পরিচয় করে ফেলা যাক এইবারের ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে অংশগ্রহণ করছেন যেসব প্রার্থীরা, তাঁদের সঙ্গে।


    সেনেটার বার্ণী স্যান্ডার্স সক্রিয়ভাবে নির্বাচনমূলক রাজনীতিতে রয়েছেন বিগত প্রায় ৫০ বছর ধরে। প্রথমদিকে লিবার্টি ইউনিয়ন দলের হয়ে লড়লেও শীঘ্রই তিনি নিজেকে সফল ভাবে ডেমোক্র্যাটিক-ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিসাবে প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে অংশগ্রহণ করলেও, সেখানে ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিসাবে মূল লড়াইতে জিতে সেনেটে যান। বিগত রাষ্ট্রপতি ইলেকশানে হিলারী ক্লিন্টনের মতন হেভিওয়েট ক্যান্ডিডেটকে ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারিতে বড় চ্যালেন্জের মুখে দাঁড় করিয়ে চলে আসেন মূল আলোচনার মধ্যে। নিজেকে ডেমোক্র্যাটিক সোশালিস্ট বলে ঘোষণা করেন তিনি। বিতর্কের বদলে জনপ্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তাঁর ফ্রি কলেজ, মেডিকেয়ার ফর অল, মিনিমাম ওয়েজ নিয়ে বক্তব্য প্রতিধ্বনিত হয় বহু সাধারণ লোকেদের মুখে মুখে। তাঁর অকৃত্রিম  বক্তৃতা, মূল বিষয়েই টিকে থাকা সকলের নজর কাড়ে। এইবারেও তিনি অত্যন্ত জনপ্রিয়, যার ফল দেখতে পাওয়া যাচ্ছে একের পর এক প্রাইমারিতে। ভদ্রলোকের বয়স ৭৮ হলেও, তাঁর সবথেকে বড় সমর্থনের ভিত্তি হল কলেজ পড়ুয়ারা।


    এর পরেই যাঁর কথা বলবো তিনি হলেন সেনেটার এলিজাবেথ ওয়ারেণ। আইনের এই প্রফেসার বহুদিন হল আমেরিকার মূল রাজনীতির সঙ্গে জড়িত। বড় কোম্পানি এবং ব্যান্কগুলোর সিইওদের যথাযথ প্রশ্ন করা এবং মুশকিলে ফেলায় তাঁর জুড়ি মেলা ভার। তবে তাঁর চিন্তাভাবনা এবং বার্ণীর বক্তব্যের মধ্যে মিল বহুলাংশে। অনেকেরই মতে ব্যালট বাক্সে ওয়ারেণের উপস্থিতি বার্ণীর প্রার্থী হওয়ার সম্ভাবনার ক্ষতি করছে। তৃতীয় স্থান নিয়ে আইওয়াতে কিছুটা ভালো ফল করলেও, বাকী দুই রাজ্যে চতুর্থ স্থান পেয়েছেন এলিজাবেথ ওয়ারেণ। এমনকি আশ্চর্য্যজনক ভাবে ডিবেটে তিনি আক্রমণও করেছেন বার্ণীকে বেশ কিছু বিষয়ে। এঁদের দুজনের মধ্যে বহু মিল থাকলেও, দুজনে পরিবর্তন আনতে চান দুটো ভিন্ন উপায়ে। বার্নী মনে করেন যে পরিবর্তন আসবে মানুষের মধ্য থেকেই যাঁকে তিনি পিপলস' মুভমেন্ট বলেছেন। ওয়ারেণ মনে করেন বর্তমান পদ্ধতির মধ্যে থেকেও পরিবর্তন সম্ভব।


    মিশিগান লেকের ধারে ইন্ডিয়ানা রাজ্যের একটি ছোট শহর সাউথ বেন্ড। সেখানকার মেয়র পীট বুডাজিজ। তিনিই প্রথম সমকামী মানুষ যিনি রাষ্ট্রপতির প্রাইমারিতে লড়ছেন। সাউথ বেন্ডে থাকে এক বন্ধুর সঙ্গে কথা হচ্ছিল কয়েক মাস আগে। তার মতে পীট লড়ছেন নিজেকে জাতীয় রাজনীতিতে নিজেকে নিয়ে আসার জন্য, রাষ্ট্রপতি হওয়ার জন্য নয়। কিন্তু সবাইকে অবাক করে দিয়ে আইওয়াতে ককাস জেতেন তিনি এবং নিউ হ্যাম্পশায়ার প্রাইমারিতে দ্বিতীয় স্থানে থাকেন তিনি। নেভাডায় তৃতীয় হয়ে এই মুহুর্তে নিজেকে অন্যতম প্রার্থী হিসাবে প্রতিষ্টিত করতে পেরেছেন তিনি। ডিবেটগুলোতে খুব ভালো পারফর্ম করেন তিনি, যার ফল তিনি পাচ্ছেন প্রাইমারিতে।


    এর পরে যাঁর নাম করতেই হয় তিনি হলেন যো বাইডেন। ওবামার উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন তিনি। আশা করা হয়েছিল যে তিনি অন্যতম এবং অবিসংবাদী নেতা হিসাবে নিজেকে প্রতিষ্ঠিত করতে পারবেন। কিন্তু এখনও অবধি সেরকম কোনো লক্ষণ দেখতে পাইনি আমরা। আইওয়াতে চতুর্থ এবং নিউ হ্যাম্পশায়ারে পঞ্চম স্থান পেয়ে তিনি অনেকটাই পিছিয়ে ছিলেন। নেভাডাতে কিছুটা প্রাণ ফিরে পেয়েছে তাঁর ক্যাম্পেইন। ডেমোক্র্যাটিক পার্টির এলিট গ্রুপ যাঁরা পার্টির বেশিরভাগ সিদ্ধান্ত নেন, যাঁদেরকে পার্টির এস্টাব্লিশমেন্ট বলা হয়, তাঁদের প্রিয় প্রার্থী যো বাইডেন। মূল ধারার মিডিয়াও কিছুটা হলেও তাঁকে বেশি সমর্থন দেখাচ্ছে। ফলতঃ তিনি যে সুপার ডেলিগেট্সদের একটা বড় অংশের সমর্থন পাবেন, এটা বলাই বাহুল্য।


    পরের প্রাইমারি সাউথ ক্যারোলাইনাতে। সেখানে মাইনরিটি ভোটারদের সমর্থন পেয়ে জেতার আশায় রয়েছেন বাইডেন। নিজেকে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে সবথেকে বেশি নির্বাচনযোগ্য হিসাবে প্রচার করছেন তিনি। ডিবেটগুলোতেও তিনি এই দুটো কথাই বার বার মনে করিয়ে দিয়েছেন যে তিনি সবথেকে বেশি নির্বাচনযোগ্য এবং ওবামার উপরাষ্ট্রপতি ছিলেন। ফলে সাউথ ক্যারোলাইনা বাইডেন ক্যাম্পেইনের কাছে অ্যাসিড টেস্ট। এখানে ভালো করতে না পারলে বাইডেনের দুটো দাবী নিয়েই প্রশ্ন উঠবে। অন্যদিকে যেহেতু এই রাজ্যটিতে বাইডেনের ভালো করার সম্ভাবনা বেশি, তাই এখানে ওয়ারেণ বার্ণীর বেশি ভোট কাটলে সমস্যায় পড়বে তাঁদের অ্যাজেন্ডা।


    সাউথ ক্যারোলাইনা খুব গুরুত্বপূর্ণ পীট বুডাজিজের জন্যও। কারণ সাউথ ক্যারোলাইনাতে খুব একটা ভালো না করলেও তার পর ৩রা মার্চ হবে সুপার টিউজডে। একটা বিশাল সংখ্যক রাজ্যতে একই দিনে প্রাইমারি হবে। সুপার টিউজডেতে মোট ডেলিগেটসের সংখ্যা ১৩৪৪। সাধারণত এর পরেই আন্দাজ পাওয়া যায় যে কে হবেন প্রার্থী। এই সুপার টিউজডেতে কিছু উদারপন্থী এবং বড় রাজ্য যেমন ক্যালিফোর্নিয়া এবং কলোরাডোতে বুডাজিজের ভালো করার সম্ভাবনা রয়েছে। তাই তাঁকে যেন তেন প্রকারে সাউথ ক্যারোলাইনাতে প্রথম তিন চারজনের মধ্যে থাকতে হবে যাতে সুপার টিউজডেতে সমস্ত উৎসাহ এবং উদ্দেপণার সঙ্গে যেতে পারেন ভোট চাইতে।


    মজার ব্যাপার হল রক্ষনশীল সাউথ ক্যারোলাইনা এত গুরুত্বপূর্ণ হওয়া সত্ত্বেও মূল নির্বাচনে ডেমোক্র‌্যাটরা কিছুতেই জিতবে না এই রাজ্যে।


    এছাড়াও রয়েছেন এমি ক্লোবাচার। এমি মিনেসোটা রাজ্য থেকে নির্বাচিত সেনেটার এবং মিনেসোটার ডেমোক্র্যাটিক পার্টির কৃষক-মজুর অংশের সদস্য। প্রথম থেকেই নিজেকে মডারেট এবং সেন্ট্রিস্ট দাবী করে এসেছেন, বার্ণী-ওয়ারেণের থেকে আলাদা জায়্গা করেছেন। নিউ হ্যাম্পশায়ার প্রাইমারিতে কিছুটা ভালো করলেও, বাকী দুটি রাজ্যে পঞ্চম স্থান পেয়েছেন। এখন দেখার আর কতদিন লড়াইতে থাকেন তিনি এবং শেষে কোন মধ্যপন্থী প্রার্থীকে সমর্থন (এন্ডর্স) করেন।


    আরো একজনের নাম না করলেই নয়। নিউ ইয়র্কের নিজের নামের বিখ্যাত কোম্পানির মালিক মাইকেল ব্লুমবার্গ। একসময় রিপাব্লিকান ছিলেন, পরে ইন্ডিপেন্ডেন্ট হয়ে নিউ ইয়র্কের মেয়র হন তিনি। এখন ডেমোক্র্যাটিক প্রার্থী হওয়ার চেষ্টা করছেন। প্রথমেই ৩০ মিলিয়ন ডলার দিয়ে প্রচার শুরু করেন। ইন্টারনেটে বার্ণীর সমর্থকদের খারাপ ব্যবহারের বিরুদ্ধে প্রচার চালান তিনি। কিন্তু শেষ (এবং ব্লুমবার্গের এখনও অবধি একমাত্র) ডিবেটে এলিজাবেথ ওয়ারেণ একাই ব্লুমবার্গকে মুশকিলে ফেলে দেন বিভিন্ন বিষয়ে। বাকীরাও সুযোগ হাতছাড়া করেন না। নিউ ইয়র্কের প্রাক্তন মেয়ররের কিছু উত্তর ছিল বলে মনে হয়্না। পয়সার জোর ছাড়া রাজনীতিতে সফল হওয়ার জন্য তাঁর যে আর কিছুই নেই, সেটা এখন স্পষ্ট। মাঝখানে এও শোনা যাচ্ছিল যে হিলারী ক্লিন্টনকে উপরাষ্ট্রপতি নিয়ে লড়তে চান তিনি। ফলে এখন দেখার যে ব্লুমবার্গের বিজ্ঞাপন বার্ণীর কতটা ক্ষতি করে আগামী দুই সপ্তাহে, সুপার টিউজডের আগে।


    ডেমোক্র্যাটিক পার্টির প্রার্থীদের মধ্যে সবথেকে বামপন্থী বার্ণী এবং সবথেকে দক্ষীনপন্থী ব্লুমবার্গ। দুজনেই নিজেদেরকে সাধারণতঃ ইন্ডিপেন্ডেন্ট হিসাবে পরিচয় দেন। যদিও দুজনেই বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই ডেমোক্র্যাটিক পার্টিকে সমর্থন করে এসেছেন। তবে দুজনের মধ্যে একটা বিশাল ফারাক আছে। বার্ণী নিজেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলেন কারণ তিনি মনে করেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি যথেষ্ট বামপন্থী নয়। আর ব্লুমবার্গ নিজেকে ইন্ডিপেন্ডেন্ট বলেন কারণ তিনি মনে করেন ডেমোক্র্যাটিক পার্টি বড্ড বামপন্থী।


    এই মুহুর্তে ডেমোক্র্যাটিক পার্টি দুই ভাগে বিভক্ত। এক, বামপন্থী ডেমোক্র‌্যাট (লেফট-লিবারল)। দুই, মধ্যপন্থী ডেমোক্র‌্যাট (মডারেট, সেন্ট্রিস্ট)। দ্বিতীয় দল প্রথম দলকে সোশালিস্ট বলে এবং ভয় পায় যে আমেরিকায় সোসালিজম নিয়ে যে ভয় রয়েছে, তার ফলে রিপাব্লিকানরা লাভবান হবে। অন্যদিকে প্রথম দল দ্বিতীয় দলকে কর্পোরেট ডেমোক্র‌্যাট নামে ডাকে, কারণ এই দলের প্রার্থীরা কর্পোরেটদের পয়সায় ক্যাম্পেইন চালায় এবং কিছু কর্পোরেট এদের হয়ে প্রচার করে। এবং প্রথম দল মনে করে যে এই কর্পোরেট সেন্ট্রিস্ট ডেমোক্র‌্যাটদের জন্যই রিপাব্লিকানদের বাড়বাড়ন্ত। যদিও রিপাব্লিকান পার্টিতেও এইরকম দুই ভাগ ছিল এই কয়েক বছর আগে অবধিও: মডারেট দক্ষীনপন্থী এবং চরম দক্ষীনপন্থী । কিন্তু হাউসের এক প্রাক্তন রিপাব্লিকান স্পীকারের মতে এইমুহুর্তে ওটি ট্রাম্পের পার্টি।


    তাহলে প্রশ্ন আসে যে আমেরিকার মতন ধনতান্ত্রিক দেশে বার্নী স্যান্ডার্সের মতন একজন ঘোষিত ডেমোক্র্যাটিক সোসালিস্ট এত সফল হচ্ছেন কী করে? শুধুমাত্র জানুয়ারি মাসেই বার্ণীর ক্যাম্পেইন ২৫ মিলিয়ন ডলার জোগাড় করেছে। অথচ গড় অবদান ১৮.৭২ ডলার। অর্থাৎ, বিশাল সংখ্যক সাধারণ লোকেদের পয়সায় চলছে তাঁর ক্যাম্পেইন।


    আগের ইলেকশানে সবাই জানত যে হিলারী জিতবেই। বিশেষ করে উল্টোদিকে যখন ট্রাম্পের মতন ক্যান্ডিডেট। এইবারে একটু অন্যরকম আবহাওয়া। প্রথ্মতঃ সেন্ট্রিস্টদের মধ্যে থেকে, আজকাল যাদের কর্পো-ডেম বলা হচ্ছে, তেমন কোনও ভালো প্রার্থী নেই। বাইডেনের তেমন কিছু বলার নেই। এমি ক্লোবাচার নিজেকে সেন্ট্রিস্ট বলে প্রচার করে করে বাইডেনের একটু ক্ষতিই করেছেন মনে হচ্ছে। মাঝখানে ব্লুমবার্গ এসে যাওয়াতে লেফ্ট লিবারলরা খুব সতর্কিত। এছাড়াও এইবারে ট্রাম্পের জেতার সম্ভাবনা প্রবল। সেক্ষেত্রে লেফ্ট-লিবারলরা চাইছে যে তাদের পেট প্রজেক্টগুলোর কথাও লোকে জানুক। ফ্রী কলেজ, মেডিকেয়ার ফর অল, মিনিমাম ওয়েজ, কর্পোরেটদের ট্যাক্স কেন দেওয়া উচিত এগুলো লোকে শুনুক। বার্ণী প্রার্থী হলে প্রচুর রিপাব্লিকানরাও এগুলোর সম্বন্ধে জানবেন। কিন্তু এইমুহুর্তে তাঁদের মুখ্য সংবাদদাতারা তাদেরকে ইমিগ্রেশান, মেরি ক্রিসমাস, সেকেন্ড অ্যামেন্ডমেন্ডের চক্করে ভুলিয়ে রাখছে আর সোশালিজম নিয়ে ভয় দেখাচ্ছে । 


    অন্যদিকে লেফ্ট লিবারল ডেমোক্র্যাটিক সোশালিস্টদের দীর্ঘ মেয়াদি পরিকল্পনা হচ্ছে গ্রীন নিউ ডিলকে বাস্তবায়ন করা। গ্রেট ডিপ্রেশানের পর আমেরিকাকে অর্থনৈতিক মন্দার থেকে তুলে আনতে ততকালীন রাষ্ট্রপতি ফ্রাংকলিন রুজভেল্ট বেশ কিছু পরিবর্তন আনেন। যার একটি হল সোশাল সিকিউরিটি, যার ফলে আজকেও একটি বয়সের পর সব আমেরিকান সরকারের কাছ থেকে পেনশান পান। গ্রীন নিউ ডিল ক্যাপিটাল-সরকার-সমাজের মধ্যে একটা নতুন চুক্তি। এর ফলে, বামপন্থীদের মতে, কর্পোরেশান এবং বড়্লোকরা ন্যায্য পরিমাণ কর দেবে যেটা দিয়ে শিক্ষা-স্বাস্থ্যের মতন মৌলিক প্রয়োজনগুলো মেটানো হবে। ন্যূনতম আয় বাড়ানো হবে, যার ফলে সাধারণ মানুষ তাঁর কাজের সঠিক মুল্য পাবেন। তাঁদের মতে আমেরিকার মতন বড়লোক সফল গণতান্ত্রিক দেশে সমস্ত নাগরিকদের ভালো থাকার অধিকার রয়েছে এবং সম্পদের সঠিক বন্টনের মাধ্যমে সমাজের সমস্ত স্তরের লোককে ভালো রাখা সম্ভব। এবং সেই দায়িত্ব সরকারের। তার সাথে সাথে তারা এটাও মনে করে যে আমেরিকার পরবর্তী অর্থনৈতিক উন্নয়নের মূলে থাকবে ক্লিন এনার্জি টেকনলজি। পৃথিবীর পরিবেশকে পরিচ্ছন্ন করতে অগ্রগামী ভূমিকে নেওয়ার দায়িত্ব আমেরিকার। এই প্রস্তাবনার খ্সড়া যাঁরা বানিয়েছেন এবং প্রচার করছেন, তাঁদের মধ্যে অন্যতম হলেন নিউ ইয়র্কের ১৪তম কঙ্গ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে জিতে আমেরিকার হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভের নবীনতম সদস্যা আলেকজান্দ্রা ওকাসিও কোর্টেজ (এওসি)। বার্ণী এবং ওয়ারেণ দুজনেই তাঁকে সমর্থন জানান। এওসি ভোটে দাঁড়ানোর আগে অবধিও একটি রেস্তোরায় ওয়েট্রেসের কাজ করতেন। তিনি জানিয়েছেন যে নিজের স্টুডেন্ট লোন শোধ করেছেন কঙ্গ্রেসের থেকে পাওয়া মাইনে থেকে। স্পষ্টবক্তা এবং সুবক্তা এওসি ইতিমধ্যেই আমেরিকার রাজনীতির মূল ধারায় নিজের স্থান করে নিয়েছেন এবং ডেমোক্র্যাটিক পার্টির অন্যতম জনপ্রিয় প্রতিনিধি হয়ে উঠেছেন।


    যদিও এই মুহুর্তে গ্রীন নিউ ডীল বা ঐধরনের যেকোনও প্রস্তাবনা আইন হওয়ার কোনই সম্ভবনা নেই, তবুও এর কিছু প্রভাব পড়েছে আমেরিকার মূল ধারার রাজনীতিতে। ২০১৮ সালের মিড টার্ম ইলেকশানে বহু রিপাব্লিকান প্রার্থী হেরে যান ওবামাকেয়ারের বিরুদ্ধে গিয়ে। বর্তমান ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারির মুখ্য প্রার্থীরাও সকলের জন্য স্বাস্থ্য বা ঐধরণের বিভিন্ন প্রস্তাবে সায় দিয়েছেন। এখন প্রায় সকলেই বিশ্বব্যাপী উষ্ণায়ন, যাকে এখন ক্লাইমেট চেন্জ নামে ডাকা হয়, স্বীকার করে নিয়েছেন। স্টুডেন্ট লোন আমেরিকার অর্থনীতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ সমস্যায় পরিণত হচ্ছে। সেই নিয়ে জোর আলোচনা চলছে। ফলে ডেমোক্র্যাটিক পার্টির মধ্যে হাওয়া এবারে বামপন্থীদের দিকে. তিনটে রাজ্যের প্রাইমারিতেও তার প্রতিফলন দেখা যাচ্ছে।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • আলোচনা | ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২০ | ৫৬৭১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • পাতা :
  • anandaB | 50.35.122.121 | ১৭ জুন ২০২০ ০৮:৪৩94382
  • আমি @S এর ওপরের 3 নম্বর পয়েন্ট এর সঙ্গে একমত নই.. কেউ কিচ্ছু ভুলবে না, কারণ মনে রাখার দরকার ই নেই... ওই হোয়াট কান্ট্রি ই হলো এক এবং একমাত্র বাইন্ডিং এজেন্ট ... বাকি জাস্ট ম্যাটার করে না
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::893:eaee | ১৭ জুন ২০২০ ১২:৪৮94397
  • @anandaBঃ হক কথা।
    @অমিত, এবারে আরো অনেক কিছুই হওয়ার সম্ভাবনা আছে। চোখ কান খোলা রাখুন।
  • S | 77.247.181.165 | ২৩ জুন ২০২০ ০৬:২৯94536
  • কালকে ওকলাহোমার টুলসাতে প্রথম কোরোনা-পরবর্তি ইলেকশান র‌্যালি করলো ট্রাম্প। ট্রাম্পের টিম বলেছিল যে প্রায় ১ মিলিয়ন লোক টিকিটের খোঁজ করেছে। কিন্তু বাস্তবে দেখা গেল সাত হাজারেরও কম লোক হয়েছে। টুলসা ফায়ার ডিপার্টমেন্টের হিসাব অনুযায়ী ছয় হাজার দুশো মতন লোক হয়েছিলো। শোনা যাচ্ছে বহু টিনেজ মিলেনিয়ালরা মজা করার জন্য টিকিটের জন্য বায়না করে আর যায়নি। এ ও সি এই নিয়ে একটি টুইটও করেছে। অনেকে ভাইরাস সংক্রান্ত মিডিয়া কভারেজকে দায়ী করেছে। এত কিছুর পরেও প্রথম র‌্যালিতে এত কম লোক বেশ চিন্তার ব্যাপার ট্রাম্প ক্যাম্পেইনের জন্য। ২০১৬তে এই রাজ্যে ৬৫% ভোট পেয়েছিল ট্রাম্প। শুধুমাত্র টুলসা কাউন্টিতেই প্রায় দেড় লক্ষ (কিছু কম) ভোট পেয়েছিল। এবং নিঃসন্দেহে এবারেও প্রচুর মার্জিনে জিতবে। তারপরেও এত কম লোক র‌্যালিতে এসেছে, সেটা ট্রাম্পের জন্য সুখবর নয়। জিওপির বেশ কিছু লোকজন আশা করছিল যে প্রোটেস্টারদের সঙ্গে হাতাহাতি হলে ব্যাপারটা তাদের পক্ষে যাবে, কিন্তু প্রোটেস্টাররা শান্তি যাতে ভঙ্গ না হয় সেটা নিশ্চিত করেছে।

    দিনের শেষে যখন ট্রাম্প হোয়াইট হাউসে ফেরে, তখন তাকে দেখেই বোঝা যায় যে বেশ হতাশ। টাই খোলা, হাতে কোঁচকানো লাল মাগা টুপি। কিন্তু ট্রাম্পের মতন টিভি পার্সোনালিটির জন্য এইধরনের অভিনয় কোনও ব্যাপারই না। এই ছবি দেখে বহু ট্রাম্পভক্তরা সিম্প্যাথি থেকে পরের র‌্যালিগুলোতে যাবে, এবং তার ফলে নভেম্বরে ইলেকশান জেতার সম্ভাবনা বাড়বে।

    তবে এইসবকিছুর দুটো প্রভাব পড়েছে।

    প্রথমতঃ আজ ট্রাম্প ভিসা আর গ্রীন কার্ডের উপর টেম্পোরারি ব্যান ঘোষণা করেছে। এটা ট্রাম্পের মাস্টার স্ট্রোক। হি ইজ জাস্ট গোয়িং ব্যাক টু দ্য বেসিকস। ইমিগ্রেশান হল ট্রাম্পের সবথেকে বড় এবং সফল ইস্যু। এই ইস্যুতে বহুলোক ট্রাম্পের সঙ্গ দেয়, ইনক্লুডিং কিছু মাইনরিটিরা যারা মনে করে যে ইমিগ্রান্টদের জন্য তাদের অবস্থা খারাপ হচ্ছে। এমনকি কিছু ইমিগ্রান্টরাও এই ইস্যু সমর্থন করে, বহু ভারতীয়ই চায় না যে আর ভারতীয় আমেরিকায় যাক।

    দ্বিতীয়্তঃ বিগত কয়েকদিনের নাটকের পর নিউ ইয়র্কের সাউথ ডিস্ট্রিক্টের অ্যাটর্নি জেনারালকে কাল রিজাইন করিয়ে ছাড়লো ট্রাম্প অ্যাডমিনিস্ট্রেশান। এই ভদ্রলোক ট্রাম্প এবং তার কিছু সঙ্গী সাথীদের ফ্রডের উপর ইনভেস্টিগেশান করছিল। ট্রাম্পের ভয় যে ইলেকশান হারার পর যখন ইমিউনিটি আর থাকবেনা, তখন ঝামেলায় পড়তে পারে। তাই এই লোককে সড়িয়ে নিজের লোক বসাতে চলেছে ট্রাম্প।
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::2aa:7c61 | ২৫ জুন ২০২০ ০৩:১৫94603
  • ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে স্পষ্টতই দুটো ক্যাম্প তৈরী হয়েছে। মডারেট ডেমোক্র্যাটদের বর্তমান নেতৃত্ব দিচ্ছেন ন্যানসি পেলোসি এবং চাক শুমার। হিলারি ক্লিন্টন এবং ব্যারাক ওবামারও সমর্থন এই ক্যাম্পের দিকেই রয়েছে। অন্য ক্যাম্পটি নতুন প্রোগ্রেসিভদের। যাদের নেতৃত্বে রয়েছেন বার্ণী স্যান্ডার্স, এলিজাবেথ ওয়ারেন এবং অবশ্যই অ্যাজেকজান্দ্রা ওকাসিও কোর্টেজ (এওসি)।

    জো বাইডেণ সম্পূর্ণভাবেই মডারেট ডেমোক্র্যাট। এমনকি দুইতিন দশক আগে তার কঙ্গ্রেশনাল ভোটিং এর ইতিহাস দেখলে মাঝে মধ্যে মডারেট রিপাব্লিকানও মনে হতে পারে। এবারে তিনি লড়বেন ডেমোক্র্যাটদের হয়ে। প্রশ্ন হল কে হবে তার রানিং মেট মানে ভাইস প্রেসিডেন্ট। জো বাইডেণ ইলেকশান জিতলে সেই অ্যাডমিনিস্ট্রেশানে ভাইস প্রেসিডেন্টের যে প্রচুর প্রভাব থাকবে সেকথা বলাই বাহুল্য। যেমণ জর্জ বুশের প্রথম চার বছরে ডিক চেনি প্রচুর গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

    শেষ ডিবেটে জো বাইডেণ এবং বার্ণী স্যান্ডার্স দুজনেই বলেছিলেন যে তাদের ভাইস প্রেসিডেন্ট একজন মহিলা হবেই, এবং সম্ভবত মাইনরিটি মহিলা হবেন। সাম্প্রতিক খবর অনুযায়ী সেই রেসে রয়েছেন চারজন - সেনেটার কমালা হ্যারিস, প্রাক্তন এনেসে সুজান রাইস, রিপ্রেজেন্টেটিভ ভ্যাল ডেমিংস, এবং আটলান্টার মেয়র কেইশা বটমস। তবে এসবই উড়ো খবর, কতটা সত্যি, কতটা কাল্পনিক জানার উপায় নেই।

    বাইডেণ অ্যাডমিনিস্ট্রেশানের মূখ্য উদ্দেশ্য হবে দুটো সমস্যার সমাধান। সেদুটো হল কোরোনাভাইরাস এবং রেস রিলেশানস। ফলে আমরা ওবামাকেয়ারের এক্সপ্যানশান দেখবো। এবং অবশ্যই জাস্টিস সিস্টেমের কিছু রিফর্ম হবে। এই দুটই অবশ্যই প্রোগ্রেসিভদের প্রিয় বিষয়। তবে বাইডেণ অ্যাডমিনিস্ট্রেশান বোধয় প্রোগ্রেসিভদের খুশি করতে পারবে না, মানে যথেষ্ট রিফর্ম করবে না। যেমন ইউনিভার্সাল হেলথকেয়ার বোধয় এখনও বহু বছর দূরে। স্টুডেন্ট ডেটের কিছু সুরাহা হবে কিনা বলা সন্দেহের। তবে এই তান্ডব বোধয় কমবে, দেশ আসতে আসতে শান্ত হবে।

    এসবই হবে যদি ট্রাম্প নভেম্বরে হারে এবং নিজে থেকে ঝামেলা ছাড়াই সড়ে যায়।
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::3da:3017 | ২৫ জুন ২০২০ ০৩:৩১94604
  • ডেমোক্র্যাটিক প্রাইমারির সাম্প্রতিকতম খবর হল গতকাল নিউ ইয়র্কের ১৪তম কঙ্গ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে এওসি প্রাইমারি জিতেছেন প্রায় ৭৪% ভোট পেয়ে। কাছের প্রতিদ্বন্দ্বী পেয়েছেন ১৮% ভোট। এই প্রতিদ্বন্দ্বীটি কয়েক বছর আগেও রিপাব্লিকান ছিলেন। তাকে খুব চটজলদি নিউ ইয়র্কে নিয়ে আসা হয় এবং রেসিডেন্সির প্রয়োজন মিটতেই প্রচুর ফান্ডিং সমেত প্রাইমারিতে এওসির বিরুদ্ধে দাঁড় করিয়ে দেওয়া হয়। ফান্ডিং করেছিল ওয়াল স্ট্রীটের সব বড় ব্যান্কের সিইওরা। লাভ হয়নি। ইনভেস্টমেন্ট জলে গেছে।

    গতকাল এওসি, ওয়ারেণ, এবং বার্ণীর দ্বারা এন্ডর্সড আরেক প্রোগ্রেসিভ জাস্টিস ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জমাল বোম্যান প্রাইমারি জিতেছেন নিউ ইয়র্কের ১৬তম কঙ্গ্রেশনাল ডিস্ট্রিক্ট থেকে। এই কালো মিডল স্কুল প্রেসিডেন্ট হারিয়েছেন ১৬ বারের জেতা কনগ্রেসম্যান এলিয়ট এঙ্গেলকে, যিনি প্রায় সমস্ত বড় বড় ডেম নেতা-নেতৃর সমর্থন পেয়েছিলেন। এই সীটটি বিশেষ করে ডেমোক্র্যাটদের দুই ক্যাম্পের কাছেই খুব কম্পিটিটিভ ছিল।
  • Amit | 203.0.3.2 | ২৫ জুন ২০২০ ০৪:০২94605
  • এবারে হয়তো হবেনা , তবে 5-10 বছর পরে হয়তো এওসি প্রেসিডেন্ট কন্টেস্টেন্ট হতে পারে. তবে মডারেট রা কাঠি করবে. এস্টাব্লিশমেন্ট এর এগেইনস্ট এ লড়া সবখানেই চাপ. তবে ওবামা তো বিডেনকে সাপোর্ট করছেন ?

    S-র "এমনকি কিছু ইমিগ্রান্টরাও এই ইস্যু সমর্থন করে, বহু ভারতীয়ই চায় না যে আর ভারতীয় আমেরিকায় যাক।"এর সাথে এক্কেবারে একমত. আমি যেদেশে থাকি, সেখানেও প্রচুর দেখেছি একটু বয়স্ক ইমিগ্র্যান্ট যারা 80-90 র সময়ে আইটি বুমের আগে এসেছেন, তারা গত 10-12 বছরে যারা আইটি বা অন্য সেক্টরে ওয়ার্ক ভিসা নিয়ে এসেছেন, তাদেরকে আড়ালে রীতিমতো গালাগাল করেন. ঈর্ষা হোক, বা অন্য কিছু.
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::9:2266 | ২৫ জুন ২০২০ ০৫:২৯94606
  • এইরকম নিজের দেশের লোকেদেরই ঘৃণার মনোভাব কিন্তু চীনা প্রবাসীদের মধ্যে তেমন দেখিনি। অবশ্যি বাইরে থেকে সবই অন্যরকম লাগে।

    এবারের প্রাইমারিতে কিন্তু মডারেট ডেমরা খুব ভালো ফল করেছে। বাইডেণ তো অপ্রত্যাশিতভাবে ক্যান্ডিডেসি পেলই। অন্য জায়্গাতেও বেশিরভাগ মডারেটরা প্রোগ্রেসিভদের হারিয়েছে। নভেম্বরে ডেমরা জিতলে বলবে যে ডেমোক্র্যাটিক পার্টিতে প্রোগ্রেসিভদের ভীড় বেশি হওয়ার কারণেই আগের ইলেকশানে ট্রাম্প জিতেছিল আর হিলারি হেরেছিল। আর উল্টো যুক্তিটা তো আমরা আগের ইলেকশানেই শুনেছি। ২০১৮র মিডটার্মটা প্রোগ্রেসিভদের জয় ছিল। কিন্তু এখন হাওয়া বেশ ঠান্ডা।
  • s | 100.36.157.137 | ২৫ জুন ২০২০ ০৭:৪১94608
  • ২০১৮ এর মিড্টার্ম প্রোগ্রেসিভদের জয় ছিল? স্কোয়াড এর চারজন ছাড়া আর সেরকম প্রোগ্রেসিভ কোথায়? ২০১৮ মিডটার্ম হল মহিলাদের, স্পেসিফিকালি সাবার্বান মহিলাদের ইলেক্শান। এই সাবার্বান মহিলা ডেমোগ্রাফিকের মেজরিটি ছিল রিপাব্লিকান। ট্রাম্পের উপর তিতিবিরক্ত হয়ে এখন এই এডুকেটেড সাবর্বান হোয়াইট উইমেনরা রিলায়েবলি ডেমোক্রাট। খানিকটা এদের জন্যেই প্রাইমারিতে বাইডেনের জয়।
    আমার রাজ্যে তিনটে এইরকম সাবার্বান সিট R থেকে D হয়েছে। জেনিফার ওয়েস্টন, অ্যাবিগেল স্প্যামবার্গার, এলেন লুরিয়া। নিউ জার্সিতে মাইকি শেরিল। মিশিগানে এলিসা স্লটকিন। ক্যালিফোর্নিয়াতে কেটি পোর্টার। ফ্লোরিডাতে ভ্যাল ডেমিংস। প্রত্যেকটা সিটে একটা কমন থ্রেড হল এর সবাই প্রোফেশনাল সাবার্বান উইমেন। কেউ প্রেফেসর, কেউ ফাইটার জেট পাইলট, কেউ প্রাক্তন সিআইএ। আর কেউই ফায়ারব্রান্ড প্রোগ্রেসিভ নয়। বরং এইবার প্রাইমারিতে বিশেষ করে প্রটেস্টের পর প্রোগ্রেসিভরা ভাল ফল করছে। এলিয়ট এঙ্গেলের হার তো একেবারে এওসি লেভেলের জয়। কেন্টাকি তেও সেনেট প্রাইমারিতে চার্লস বুকার জিততে পারে।
  • S | 2001:41d0:601:1100::27ea | ২৫ জুন ২০২০ ০৯:৪৮94610
  • চারজন কেন? জাস্টিস ডেমোক্র্যাটদের মধ্যে রাউল, রো খন্না, প্রমিলা জয়পালও তো জিতেছিল। দুটো গভর্ণর রেসে প্রাইমারিতে প্রোগ্রেসিভ ক্যান্ডিডেট জিতেছিল। এবারে জমাল বোম্যানের জেতাটা বড় খবর নিঃসন্দেহে। দেখা যাক।
  • S | 2001:41d0:601:1100::27ea | ২৫ জুন ২০২০ ১০:০৩94611
  • কাল অ্যারিজোনাতে স্টুডেন্টস ফর ট্রাম্পদের সভায় ওকলাহোমার বক্তব্যটাই প্রায় কপি পেস্ট করে দিয়েছে। আবার সেই একই কথা। এই ভাইরাসকে অনেক নামে ডাকা যায়। কোভিড১৯, উহান ভাইরাস ইত্যাদি। ততক্ষনে অডিয়েন্স থেকেই বুঝিয়ে দেওয়া হয়েছে যে তারা কি শুনতে চায়। যেই ট্রাম্প কুং ফ্লু বলেছে অমনি সবাই হই হই করে উঠেছে। এদিকে ট্রাম্পভক্তদের নাকি রেসিস্ট বলা যাবেনা।
  • ar | 71.174.88.163 | ২৬ জুন ২০২০ ০৯:০৫94632
  • দেশের জনসংখ্যার ৩৮-৪০%, লালটুপি মাগা বেস।

    Jordan Klepper vs. Trump Supporters | The Daily Show

  • S | 69.146.151.28 | ২৬ জুন ২০২০ ০৯:৪৮94634
  • এই ভিডিওটা আগে দেখেছিলাম। খুবই ইন্টারেস্টিং এবং চিন্তার ব্যাপার। অনেক কিছু স্পষ্ট হয়ে যায় এদের কথাবার্তা শুনে।

    গতকাল অ্যাটলান্টিকে একটা আর্টিকল বেড়িয়েছে। নীচে লিন্ক দিলাম। ট্রাম্প এবং জিওপির পক্ষে বাইডেণের বিরুদ্ধে লড়তে অসুবিধা হচ্ছে - অনেকদিন অভ্যাস নেই সাদা লোকের বিরুদ্ধে লড়াই করার। প্রতিপক্ষ একজন মাইনরিটি বা মহিলা হলে সুবিধা হত। ওবামা বা হিলারির বিরুদ্ধে নোংরামো করা যায়, মিথ্যা প্রচার চালানো যায়। কিন্তু সেটা একজন ওল্ড হোয়াইট মডারেট ম্যানের বিরুদ্ধে রেসিস্ট জিওপি, ট্রাম্প, বা ফক্স নিউজের পক্ষে করা যায় না।

    এমনকি টুলসা র‌্যালিতেও ট্রাম্প স্পষ্টতই বাইডেণকে বলেছে যে উনি বেশ ভালো লোক। কিন্তু ওর পিছনে যারা রয়েছে, তারা খুব বাজে লোক। ইত্যাদি। র‌্যালির বাইরে যেসব মার্চেন্ডাইজ বিক্রি হয়েছে, সেগুলোতে শুধু ওবামা আর হিলারির বিরুদ্ধে বক্তব্য।

    ফলে ভিপি হিসাবে একজন মাইনরিটি মহিলার নাম এলেই এরা মাঠে নেমে পড়বে আবার নোংরামো করতে। মোস্ট লাইকলি তাকেই প্রধান প্রতিপক্ষ বানিয়ে ভোট চাওয়া হবে।

    https://www.theatlantic.com/ideas/archive/2020/06/trump-cant-figure-out-how-attack-biden/613402/
  • ar | 71.174.88.163 | ২৬ জুন ২০২০ ১০:২৬94635
  • দুটো নতুন স্টাডি বেরিয়েছে, যে সো-কলড "রেসিয়াল অ্যাংজায়িটি অফ হোয়াইট" হল মাগা বেসের সমর্থনের প্রধান প্রেরণা (ড্রাইভার)। এই বুঝি মাইনরিটি হয়ে গেলাম!! অর্থনীতির চাপ খুব সম্ভবত দ্বিতীয়।

    https://www.washingtonpost.com/news/wonk/wp/2016/06/06/racial-anxiety-is-a-huge-driver-of-support-for-donald-
    trump-two-new-studies-find/
  • S | 69.146.151.28 | ২৬ জুন ২০২০ ১০:৩৭94637
  • সেদিন তো রুডি জুলিয়ানি স্পষ্টই ফক্স নিউজে বললো যে প্রোটেস্টারদের হাতে পাওয়ার গেলে তারা নাকি সবার প্রপার্টি নিয়ে অন্যদের দিয়ে দেবে। ফক্স নিউজ ভিউয়ারদের যখন বলেছে, আসল টার্গেট অডিয়েন্স কারা বোঝাই যাচ্ছে। এই ফিয়ার মঙ্গারিং শুরু হয়ে গেছে।
  • ar | 71.174.88.163 | ২৬ জুন ২০২০ ১২:০৫94638
  • হ্যাঁ, জন বোল্টন তো আজ এমএসএনবিসি তে এসে বাকী সব কথার মাঝে বলেই গেল যে ও বামপন্থী বাইডেণ আর ডেমদের ভোট দেবে না। প্রেসিডেন্ট বাজে কিন্তু বামপন্থীরা আরো বাজে। দেশের স্বার্থে জিওপিদের সেনেট ধরে রাখতে হবে!!! কতকটা এই রকম!!!
  • s | 150.148.14.154 | ২৭ জুন ২০২০ ০০:৩৭94646
  • ভিন্টেজ জন স্টুয়ার্ট -
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::448:7d68 | ২৯ জুলাই ২০২০ ১২:০৩95651
  • একটু আপডেট দেওয়ার প্রয়োজন আছে।

    চারিদিকে অনেক পোল চলছে। সবেতেই বাইডেণ এবং ডেমরা এগিয়ে আছে অনেকটা। তাহলে কি এইবারে একেবারে ব্লু ওয়েভ আসবে? আছড়ে পড়বে প্রশান্ত মহাসাগর থেকে অতলান্তিকে? শোনা যাচ্ছে যে হোয়াইট হাউস এবং কঙ্গ্রেসের দুই কক্ষই নাকি এবারে থাকবে ডেমদের হাতে। ট্রাম্পের প্রেসিডেন্সির নাকি আর কয়েকদিন। ইত্যাদি। ব্যাপারটা যেদিকে যাচ্ছে তাতে রিপাব্লিকানরাও ব্যতিব্যস্ত এবং কিছুটা ডেসপারেট। ফক্স নিউজ বলছে এই ভেরি প্রো-ডেম ইলেকশানের কথা। একজন হাউসের সদস্য আবার ডেমোক্র্যাটিক পার্টিটাকেই ব্যান করার জন্য বিল এনেছেন। ট্রাম্প নিজেই বলছে যে আমায় কেউ পছন্দ করেনা, আমায় কেউ ভালোবাসেনা, যাও তোমরা ঐ বাইডেণকেই ভোট দেও গিয়ে। ফলে প্রায় সবাই ধরেই নিয়েছে যে বাইডেণ প্রেসিডেন্ট হবে। প্রশ্ন উঠছে যে হারলেও ট্রাম্প আদৌ যাবে তো? এর মধ্যে আবার একটু অন্যরকম স্বাদ দেওয়ার জন্য প্রবন্ধ নামানো হয়েছে যে কি কি হলে ট্রাম্প আবারও জিততে পারে।

    এইসব শুনে অনেকেরই মনে হবে যে আগেরবারও তো এইরকমই হয়েছিল। শেষদিন অবধি সবাই জেনেছিল যে হিলারি জিতবে। কিন্তু আগেরবার সঙ্গে একটা পার্থক্য আছে। ২০১৬তে এই সময় হিলারি এগিয়ে ছিলেন মাত্র এক-্দেড় পার্সেন্ট পয়েন্টে, এখন বাইডেণের লীড প্রায় ৮-৯ শতাংশ। আগেরবার শেষে হিলারি সত্যিই ২%+ ভোট বেশি পেয়েছিলেন। ইলেকটোরাল কলেজের নিয়মটা সবাই জানেন ধরেই নিচ্ছি। আরেকটা ব্যাপার হল আগেরবার কোরোনা ছিলনা। ইত্যাদি।

    কিন্তু আসল প্রশ্ন হল এইসব পোল কতটা বিশ্বাস্যোগ্য? তার থেকেও বড় কথা হল এর কতটা আসলে ঘটবে? ডেমরা কি আবারও প্রচুর গর্জেই থেমে যাবে। যেখানে এখনও ৩ মাস বাকী আছে।

    প্রথমেই বুঝতে হবে যে এগুলো ওপিনিয়ন পোল। মানে ভোটারকে ফোনে প্রশ্ন করা হচ্ছে। ইলেকশান আলাদা। সেখানে ভোটারকে নিজে কাজ বন্ধ করে সময় নিয়ে বুথ খুঁজে লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিতে হয়। ফলে ওপিনিয়ন পোল আর ইলেক্শান রেজাল্টের মধ্যে কিছু বা প্রচুর পার্থক্য থাকবেই। এছাড়াও আছে ভোটার সাপ্রেশান এবং ফ্রড। এটাতে কিছু কিছু রাজ্যে রিপাব্লিকানরা অনেকটা সুবিধা করে নেয়।

    এরপর আছে স্যাম্পলিং আর রেসপন্স বায়াস। আমার ব্যক্তিগত ভাবে মনে হয় যে ট্রাম্প ভোটারদের একাংশ প্রায় সব পোলেই আন্ডার রিপ্রেজেন্টেড। এছাড়া বহু ট্রাম্প ভোটাররা ইচ্ছা করে (বা শেমিংএর ভয়ে) ভুল রেসপন্স দেয়। এবং শেষে আছে যারা এখন বলছেন যে ভোট দেবনা বা কাকে দেব ঠিক করিনি। আমি প্রায় নিস্চিত যে এদের মধ্যে মেজরিটি শেষে ট্রাম্পকেই ভোট দেবে।

    এই সবকিছু যোগ করলে দুই ক্যান্ডিডেটের মধ্যে যে পার্থক্য দেখছেন সেটা অনেকটাই কম হবে। তারপরেও বাইডেণের এগিয়ে থাকার কথা। কিন্তু ইলেকটোরাল কলেজের নিয়মে সেটা কতটা সুবিধা দেবে সে জানা নেই।
  • S | 2405:8100:8000:5ca1::39b:cb17 | ২৯ জুলাই ২০২০ ১২:২৬95653
  • এবং এখানেই আসে সেকেন্ড লেভেল অ্যানালিসিস। যে ইলেকটোরাল কলেজে কি হবে?

    তার আগে দুটো কথা বলে দিই। হাউসের মেজরিটি ডেমরা ধরে রাখবেই বলেই মনে হচ্ছে। সেনেটে জিওপির সীট কমবে বটে, কিন্তু ডেমরা মেজরিটি পাবে একথা বিশ্বাস করতে ভরসা হয়্না। এখন ৪৭-৫৩ আছে। সেটা খুব বেশি হলে ৪৯-৫১ হবে বলেই আমার ধারণা। এর থেকে বেটার ফল করলে আমি খুবই অবাক হব।

    আমি ধরে নিচ্ছি যে সকলে পপুলার ভোট আর ইলেকটোরাল কলেজের পার্থক্যটা জানে। সেক্ষেত্রে এইটাও বুঝবেন যে এই উইনার টেকস অল সিস্টেমে যে রাজ্যে বাইডেণ জিতবে সেখানে ভোট শতাংশ বাড়িয়ে কোনও লাভ নেই। আবার যে রাজ্যে ভোট বাড়ার পরও হারবে, সেখানেও ভোট শতাংশ বাড়িয়েও লাভ নেই। আমার হিসাব বলছে যে এইবারে যে বাইডেণের লীড অনেক বেশি রয়েছে (আগেরবারের তুলনায়), তার অনেকটাই এই রাজ্যগুলোতে।

    যেসব রাজ্যে মার্জিন (দুই প্রার্থীর মধ্যে ভোটের পার্থক্য) কম, সেরকম রাজ্যগুলোতে কেমন অবস্থা সেটা দেখতে হবে। যদিও পোলস্টাররা এই মার্জিন যদি মার্জিন অব এরর থেকে কম দেখে, তাহলেই সেই রাজ্যকে টেকনিকালি সুইঙ্গ স্টেট আখ্যা দিয়ে দিচ্ছে, কিন্তু আমরা জানি যে শেষমেষ সেই ৫-৭ টা রাজেই ঠিক হবে যে কে হবে পরের মার্কিন প্রেসিডেন্ট। রাজ্যগুলো হল উইসকনসিন (১০), মিশিগান (১৬), পেনসিলভানিয়া (২০), ফ্লোরিডা (২৯), আর অ্যারিজোনা (১১)। এর পরে আপনি চাইলে নেভাডা (৬), নিউ হ্যাম্পশায়ার (৪), এবং ওহায়োকেও (১৮) ধরতে পারেন।
  • S | 2a0b:f4c2::1 | ০৬ আগস্ট ২০২০ ০৯:০৬95949
  • আজকে হিল/হ্যারিসএক্স একটা ওপিনিয়ন পোল পাবলিশ করেছে। স্যাম্পল সাইজ ২৮৫০। বাইডেন এগিয়ে আছে মাত্র ৩ পার্সেন্ট পয়েন্টে (মার্জিন অব এরর ১.৮%)। দুসপ্তাহ আগে এই একই পোলে বাইডেন এগিয়ে ছিল ৭ পয়েন্টে। আমার মনে হয় এইটাই আসল মানচিত্র এইমুহুর্তে। বাইডেণ পপুলার ভোট জিতবে নিঃসন্দেহে, আগেরবার হিলারীর মতন। কিন্তু ট্রাম্পকে হারানো এত সহজ হবেনা। নর্থ ক্যারোলাইনা বা জর্জিয়া জেতার চান্স বাইডেণের প্রায় নেই। ট্রাম্প সহজেই অ্যারিজোনা আর ওহায়ো ধরে রাখবে, হয়ত মার্জিন অনেকটা কমবে। ফ্লোরিডাতে প্রচুর কারচুপির পর ট্রাম্পকেই জয়ী ঘোষণা করে দেওয়া হবে। এবং এরপর মিডওয়েস্টের একটা স্টেট ধরে রাখতে পারলেই ট্রাম্পের রি-ইলেকশান নিশ্চিত হবে।
  • পাতা :
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। না ঘাবড়ে মতামত দিন