এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • সিঙ্গুর -- একটি পাঠপ্রতিক্রিয়া

    Somnath Roy লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ১৭৫৩ বার পঠিত
  • সিঙ্গুরের ঘটনাপুঞ্জ তার বৃত্ত সম্পূর্ণ করলো এই সপ্তাহে। এইখানে বৃত্ত লিখতে তবুও একটু বাঁধছে, কারণ, গত দশ বছর আগে কোনও ভাবেই ভাবতে পারিনি যে শেষটা এইখানে হবে। প্রথমে তো বেশ ভালোই লাগছিল, অফিসে কম্পিউটার আর প্রাথমিকে ইংরেজি বর্জনকারী সিপিএম অবশেষে রাজ্যে ইন্ডাস্ট্রি আনা নিয়ে সিরিয়াসলি কিছুটা এগোচ্ছে দেখে। চাকরি বাকরি বাড়বে, ক্যাশ ফ্লো বাড়বে, অর্গানাইজড লেবার ক্লাস তৈরি হবে--- ইত্যাদি মিলিয়ে সে বেশ ভালো ব্যাপার মনে হচ্ছিল। তারপর সেই ফোর্থ ইয়ার থেকে জেনেছি কোর জব করতে হলে বাড়ি ছাড়তে হবে, এই শিল্পায়নের প্রক্রিয়াটা আমার শ্রেণীস্বার্থও দেখছে তো। এর মধ্যে আনন্দবাজারে পড়লাম, দিদি নাকি বিরোধিতা করেছেন। একটা মজার রিপোর্টিং ছিল, সুব্রত মুখার্জি সিঙ্গুরে গিয়ে প্রতিবাদে প্রতীকী চাষ করতে ওই মাঠে লাঙল ধরেছিলেন, এবং লাঙলটা নাকি উল্টো ধরেছিলেন। আমরা তখন বিদেশে, সপ্তাহান্তিক মালপার্টিতে এই নিয়ে হেভি হাসাহাসি হলো। আমিও বললাম, ক্লাস-এর থেকে বিচ্ছিন্ন নেতারা এইসব মিমিক্রি উপহার দিয়ে থাকেন। মোদ্দা কথা, বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলো বিরোধিতা করবেই, কিন্তু ব্যাপারটা তো মনে হচ্ছে খুবই ভালো হচ্ছে।
    সিপিএমকে তো আমরা তখনও ঠিক বামপন্থী মনে করতাম না , তো এই সময়ে নাগাদ কলকাতার আশেপাশের বামপন্থী ছোটদলগুলোর বন্ধুদের থেকে জানলাম, সিঙ্গুরের ব্যাপারটা অত গোল গোল ভালো ভালো মোটেও হচ্ছে না। শুনলাম সেখানে লোকজন নাকি বিরাট অসন্তুষ্ট। এম কে পি বা লিবারেশনের একটা মিছিল হয়েছিল, জোর করে অধিগ্রহণের বিরুদ্ধে, স্থানীয় লোক নাকি সেই মিছিলে লাল পতাকা দেখে খুব রেগে গেছেন। তাঁদের কাছে এখন লাল পতাকা মানে সিপিএম, মানে জোর করে জমি নেওয়া। এইবার একটা জিনিস বুঝলাম, এই শিল্পায়নের ব্যাপারটায় স্থানীয় লোকের সমর্থন নেই। কারণ জমি নেওয়া হয়েছে জোর করে, তাদের সঙ্গে আলোচনা না করে। হ্যাঁ, একটা জিনিস সত্যিই গুরুত্বপূর্ণ। হিচ হাইকার্স গাইডের মতন দুম করে কারুর বাড়ির ওপর দিয়ে রাস্তা বানানো যায় না, অন্তত আজকের পৃথিবীতে সেটা একদমই অভিপ্রেত নয়। আলাপ আলোচনা করে, বুঝিয়ে, সম্মতিনির্মাণ করে কাজটা করা উচিৎ। এবং অবশ্যই ঠিক মতন ক্ষতিপূরণ দেওয়া উচিৎ। একে সিপিএম, তার ওপর বুদ্ধ ভটচাজ্ দম্ভের ভিতের ওপরে দম্ভের মিনার। আলোচনার রাস্তা না নিয়ে যা বুঝেছি ভালো বুঝেছি করে এগিয়ে গেছে। এখানে সত্যিই বিভিন্ন বিরোধীদের এগিয়ে আসা উচিৎ। অন্ততঃপক্ষে একটা সমঝোতা, একটা গ্রহণযোগ্য ক্ষতিপূরণ, বর্গাদার-ভাগচাষীদের জন্যও কিছু ব্যবস্থা ইত্যাদি করা উচিৎ। হ্যাঁ, সেইসব না হলে ওই প্রোজেক্ট মায়ের ভোগে যাক। একটা ন্যুনতম গণতান্ত্রিকতা তো থাকতেই হবে।
    তো এইটা ছিল মোটের ওপর ২০০৬ এর নভেম্বরে আমার চিন্তাভাবনা। এরপর বুদ্ধ ভটচাজের সেই বিখ্যাত ২৩৫-৩৫ এর হারিকিরি, পুলিশ নামিয়ে লাঠি কাঁদানে গ্যাস দিয়ে জমি দখল, নন্দীগ্রামে রাস্তাকাটা, জগৎসিংহপুর-কলিঙ্গনগরে উচ্ছেদের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ এই ঘটনাপ্রবাহ শুরু হয়ে গ্যালো। কিন্তু, খুব সৎভাবে স্বীকার করলে এটা কখনো চাইনি, এমন কী এটা ভাবিও নি যে সিংগুরে শেষ অবধি কারখানাটা হবে না। তবে গণতান্ত্রিক পদ্ধতি, আলাপ-আলোচনা এইটা খুবই দরকারি মনে হয়েছে। এমন কী যেদিন জমিটা পুলিশ দখল নিচ্ছে, সেদিনও ভাবতে পারিনি এই জমি আবার চাষীদের হাতে ফিরে যাবে। জমি নেওয়ার পদ্ধতিটা খুবই অনভিপ্রেত ছিল, খুব অমানবিক লেগেছিল। এতটা রাষ্ট্রীয় নির্যাতন আর তার উল্টোদিকে এরকম মরিয়া মাটি কামড়ে থাকা গ্রামবাসী-- এই ছবিটা খুব শক্তিশালী লেগেছিল। তো এইসময় থেকে ওখানকার লোকেদের কথা জানতে শুরু করি। এক নতুন পাঠের শুরু হয়।
    দাস ব্যবস্থা থেকে সামন্ততন্ত্র থেকে ধনতন্ত্র এক অনিবার্য উত্তরণ জেনে এসেছি।এক্সট্রাপোলেট করলে একদিন সাম্যবাদ আসবে, তবে সে হয়ত বহু শতাব্দীর পরের কথা। তো, ওই উত্তরণের কিছু সমান্তরাল মনে টানা হয়ে গেছিল- শিকার-পশুপালন-কৃষি-শিল্প কিম্বা জঙ্গল-চারণভূমি-গ্রাম-শহর। সমাজের এগোনোর নিয়ম এটাই। জঙ্গল ছেড়ে মানুষ একদিন লোকালয় বানিয়েছিল। তেমনি গ্রাম ছেড়ে শহরে যাবে। মনে আছে, একসময় সত্যিই ভাবতাম, লোকে বর্ধমান, মানকড়, বাঁকুড়া, ঘাটশিলা থেকে কলকাতায় চাকরি রোজ করতে আসে আবার রোজ ফিরে যায় কেন? যার সামর্থ্য আছে সে কলকাতাতে এমনিই আসতে চাইবে ওইসব মফস্বল ছেড়ে। দুচারজন সেন্টিমেন্ট ইত্যাদিতে আটকে যাবে, কিন্তু লার্জলি এই টানটা থাকবে তো? গ্রাম ছেড়ে মফস্বল মফস্বল ছেড়ে জেলাশহর, জেলা ছেড়ে কলকাতা এইভাবে এগিয়ে যাওয়াই স্বাভাবিক। অনিবার্য্যতায় আসবে কলকাতা ছেড়ে দিল্লি, শিকাগো... বস্তুগতভাবে এই চাহিদাটাই তো স্বাভাবিক। যাইহোক, কিছুটা ফেনিয়ে ফেললাম, কিন্তু মনে হচ্ছিল সিংগুর-নন্দীগ্রাম-কলিঙ্গনগরের এই যে অবস্থানটাঃ গ্রাম ছেড়ে শহর হতে না চাওয়াটা, এইটা খুব অবাস্তব। এই মনোভাবের পিছনের কারণটাই বা কী? স্টেটাস-কুয়োর প্রতি মানুষের অদম্য আস্থা, কুয়োর থেকে ব্যাঙের বেরোতে না চাওয়া?
    তো সৌভাগ্যবশতঃ বিভিন্ন মত ও পথের কিছু গুণী মানুষ এইসময়ে এই জায়গাগুলোর ওপর বিভিন্ন ধরণের ডকুমেন্টারি, লেখা, সাক্ষাৎকার ইত্যাদি করোতে শুরু করেন। আজকাল একটা ট্রেন্ড হয়েছে, একই ঘটনার বিভিন্ন বর্ণনা সংগ্রহ করা, সেগুলোও পেতে থাকি। তখন ইন্টারনেট মোটামুটি সাবালক হয়ে এসেছে, আর আমারও পিএইচডির মাঝপথ- ফলে সময় ও সুযোগ সাযুজ্যও রেখে ফেলে। সেইসব ছবি দেখে, লেখা পড়ে অবাক হয়ে যেতে থাকি। একটা নতুন পৃথিবীই যেন! সিঙ্গুরের ওই হাজার একর জমি! তাতে এত কিছু হত! আন্দাজ পেলাম কয়েক হাজার লোক টিকে আছেন ওই মাঠটার ওপর। কয়েকধরণের ফসল ঘুরিয়ে ফিরিয়ে চাষ, সেই সবজি বাজারে নেওয়া, তার মধ্যে আবার ভালো আধ-পচা পড়ে যাওয়া সবজি, তার বিভিন্ন স্তরে বিভিন্ন ব্যবহার। এরপর নাকি ওই মাঠে হাঁস মুর্গি ছাগল ও পালন হত। আরও কতকিছু! মানে কারখানা হলে যত লোক কাজকর্ম পেত, তার থেকে বেশ কিছু বেশি সংখ্যক লোককে টিকিয়ে রাখছে ঐ জমি! খানিকটা অবিশ্বাস্য আবার খানিকটা আলো আঁধারি। আমার খেত দেখা বলতে তো কলেজে পড়তে পিকনিকে আলের ধার থেকে মটরশুঁটি তুলে খাওয়া। এই জিনিসগুলো আরও জানার ইচ্ছে হয়ে গেল।
    এরপর যেটা হল, আসলে সেটা নিয়ে লিখতেই এত গৌরচন্দ্রিকা। মানুষের ইতিহাসটাকে অন্যভাবে পড়তে শুরুর করলাম। বাংলা দিয়েই যদি ধরি, শিল্প বা শহর এগুলো তো গণ-আন্দোলন, গণ উচ্ছ্বাসে আসে নি (শিল্প বলতে ভারি শিল্প, বহুল লাভ-প্রদায়ী শিল্প বলছি)। চাপিয়ে দেওয়া হয়েছিল বাংলার ওপর। কিন্তু কীভাবে সেটা হল? জাহাংগিরের সময় থেকে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বেশ কিছু সুবিধা ভোগ করতে শুরু করে এই অঞ্চলে। এবং সেই সুবিধেগুলো আসে মূলতঃ কেন্দ্রীয় ও স্থানীয় শাসককে উৎকোচ দিয়ে। লক্ষ্যণীয় যে কলকাতা বা তার আশেপাশে একটা স্পেশাল ইকনমিক জোন কোম্পানি চার্ণকের আমলেই বানিয়ে নেয়। এই অঞ্চলের জমিদারি কোম্পানির হাতে আসে, কিন্তু অন্য জমিদাররা সেভাবে প্রজার বিচার করতে পারত না, তা করতেন নবাব, কিন্তু কোম্পানি নবাবি শাসনের মধ্যেও নিজের জমিদারিতে আলাদা বিচারব্যবস্থা, আলাদা আইন গড়ে তোলে। সেইসব সুবিধে জমিয়ে যথাক্রমে পলাশীতে সে জেতে এবং মনে হয় পলাশীর থেকেও বেশি গুরুত্বপূর্ণ হয় বক্সারের যুদ্ধ। বক্সারের যুদ্ধের পর তো গোটা বাংলাই প্রায় কোম্পানির এস ই জেড হয়ে যায়। যার পাঁচ বছরের মধ্যে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর। তবে শুধু এইটুকুই নয়, ঐ বক্সার যুদ্ধ পরবর্তী ব্যবসাই কোম্পানির হাত ধরে কলকাতা শহরকে জাঁকিয়ে তোলে। অর্থাৎ কলকাতার উত্থান, বাংলা বা ভারতের আধুনিকতা ইত্যাদির পেছনে থাকে ছিয়াত্তরের মন্বন্তর। বাংলার গ্রাম সমাজের মৃতদেহের ভিত্তিতে তৈরি হয় শিল্পসমাজের ভবিষ্যৎ। অফ কোর্স কলকাতা বানানোর জন্যে কোম্পানি বিলেত থেকে টাকা এনে লাগায় নি, সেই টাকাটা এসেছে কৃষকের ঘর লুন্ঠন করেই। এবং এবার খুব সুন্দর বোঝা যায় বাংলার নবজাগরণের পুরোধারা সিপাহি বিদ্রোহে কোম্পানির জয় মানত করে কালিঘাটে পুজোই বা দিয়েছিলেন কেন!
    থাক, বাংলা একটা বিচ্ছিন্ন কেস স্টাডি। ইউরোপে দেখি, যেখানে শিল্পবিপ্লব এলো, সেখানে তো সামন্ততন্ত্র থেকে মানুষ নিজেকে মুক্ত করে বুর্জোয়া বিপ্লব করে। কিন্তু সেখানেও তো দেখি গ্রাম থেকে শহরে শ্রমিক আনার পর্যায়, গিল্ডের কুটির শিল্প ভেঙে বৃহৎ শিল্পে উত্তরণের পর্যায় বেশ রক্তাক্ত- রাজার পেয়াদা দিয়েই কাজটা বেশি হচ্ছে। এমন কী, শিল্প বিপ্লব ব্যাপারটা যখন হচ্ছে, জেমস ওয়াট ও তাঁর পূর্বসুরীররা কয়েক শ ইঞ্জিন বানিয়ে হিট পাওয়ারের এক্সপেরিমেন্ট করছেন, সেই লগ্নিটা আবার আসছে লাতিন আমেরিকা থেকে দখল করে আনা সম্পদ থেকে। আমেরিকার আদি বাসিন্দাদের গণহত্যা গণদাস বানানো হচ্ছে আর তাদের উপার্জন এসে করছে শিল্পবিপ্লবের ফান্ডিং। যে শিল্প দিয়ে ইউরোপ এরপর বেরোচ্ছে পূর্বগোলার্ধে কলোনি, বাজার বানাতে।
    অর্থাৎ শিল্পের গল্পটাই এই। হত্যা, লুণ্ঠন এবং অস্ত্রশক্তি এই তিনটের ওপর ভিত্তি করে পৃথিবীতে শিল্প সমাজ গড়ে উঠছে। এর উল্টোদিকে খুঁজে পাচ্ছি স্থানিক কৃষিসমাজকে, যে হাজার হাজার বছর ধরে পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে মানুষ নামের জাতির আত্মপরিচয় হয়ে দাঁড়িয়েছে। যাযাবর, অরণ্যবাসী, গুহাবাসী গৃহস্থ হয়েছে, গৃহে স্থিত হয়েছে যখন গৃহের অনতিদূরে তার কৃষিক্ষেত্র। তার সমস্ত আচরণ, তার পরিবার, তার সম্পর্ক, তার সংস্কৃতি এমন কী তার ধর্মবোধের ও সবকটা গিঁট ছাড়ালে আসলে শুধুই হলাকর্ষণ, বীজবুপন ইত্যাদি শস্যের উপাসনা। আর সেই জমি জোর করে কেড়ে না নিয়ে শিল্পের উপায় নেই। পুরো ইতিহাসজুড়ে প্রায় সমস্ত বড়ো শিল্প হয় কৃষিজমিতে হয়েছে নতুবা কৃষকসমাজকে ভাঙিয়ে হয়েছে অথবা দুটো একসঙ্গে করেই হয়েছে। আর তার পরও শহরবাসী, শিল্পায়িত মানুষ তার সমস্ত আচরণে জড়িয়ে রেখেছে কৃষিসমাজের অভ্যেসগুলি। ইন্টারেস্টিংলি স্বাধীন ভারতে সবচেয়ে বেশী উচ্ছেদ হয়েছে শিল্প এবং উন্নয়নের জন্যে। দাঙ্গা হাঙ্গামায় অত লোক মারাও যায় নি মনে হয়, যত গিয়েছে শিল্পের খাঁই মেটাতে। মজার ব্যাপার হচ্ছে শুধু মানুষ নয়, আমরা দেখছি শিল্পের দাবির কাছে ক্রমে বিপন্ন হয়ে উঠছে গোটা পৃথিবীর পরিবেশ, সমগ্র জীবজগতের অস্তিত্বই।
    যাই হোক, এই পঠন সিঙ্গুরের শ্রুতি। ধান্যাধিষ্ঠাত্রী দেবী লক্ষ্মীর কৃপাধন্য সিঙ্গুরের ওই মাঠ। সে আবার ফিরে এসেছে কৃষকের হাতে। তবে এখন আমরা জানিনা, ওই মাঠে দেবী সংস্থিতা হবেন কী না। রাজারহাটে ঘুরে দেখেছি কৃষিজমির রূপান্তরের পিছনে সবচেয়ে বেশি ভূমিকা থাকে পেশিশক্তির, তারপর থাকে বাজারের সামনে মানুষের অসহায়তার এবং কিছুটা ভূমিকা অবশ্যই থাকে আরামপ্রদ, নিশ্চিন্ততর জীবনের প্রতি তার আকর্ষণও। অসহায়তা এবং অ্যাস্পিরেশন সেখানকার বিজয়ী কৃষকদের কোন দিকে নিয়ে যাবে জানি না। হয়ত ওই জমিতে ছোট ছোট কারখানা হবে, হয়ত বা আবাসন হবে। তাতেও এই লড়াইয়ের মর্যাদা বিন্দুমাত্র ক্ষুণ্ণ হবে না। তবে আমার ভাবতে ভালো লাগছে ঐ জমিতে আবার কোথাও, কোনও কৃষক, কোনও বিজ্ঞানী কঙ্ক্রিট আর ফ্লাই অ্যাশের আস্তর সরিয়ে বীজ থেকে শস্য বানাবেন, শীতের সবজি গাছে ফলিয়ে তাক লাগিয়ে দেবেন। কৃষি থেকে শিল্পে উত্তরণের অনৈতিক রাস্তাকে মোড় ঘুরিয়ে দেবে সিঙ্গুর। জন্ম দেবে আরেক নতুন পাঠ্যের।
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ১৬ সেপ্টেম্বর ২০১৬ | ১৭৫৩ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কল্লোল | 233.227.8.118 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪১51447
  • আমি বারবার করে মাত্রার কথা বলছি।
    খারাপ চিরকালই ছিলো কিন্তু একটা মাত্রায়। শিল্পবিপ্লব সেটাকে মাত্রাছাড়া করে দিয়েছে।

    মূর্তি গড়ার প্রয়োজনে রট আয়রণ না রট আয়রনের জন্য মূর্তি গড়া, এভাবে কি বলা যায়?

    যদি প্রযুক্তির কারনে চিন্তা ভাবনার উন্নতি হতো, তাহলে সক্রেটিস, ইউক্লিড, বরাহমিহির হতো আধুনিক কালে তার আগে নয়।
  • somnath | 192.66.56.196 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:০৩51448
  • রেনেসাঁ তো শিল্পবিপ্লবের শদেড়েক বছর আগে
  • dc | 181.49.165.240 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২৪51449
  • এখানে একটা ব্যাপার বুঝতে পারছিনা, "শিল্প মানব সভ্যতার, এই পৃথিবীর যা ক্ষতি করেছে, করে চলেছে, তা অপূরণীয়" এটার কনটেক্সটে।

    মানে হঠাত করে শিল্প বিপ্লবের সময় থেকে একটা লাইন টেনে দিচ্ছেন কেন। এই যেমন রেনেসাঁর কথা উঠল, বা "সক্রেটিস, ইউক্লিড" ইত্যাদিদের কথা এলো। মানুষের সভ্যতা তো হাজার হাজার বছর ধরেই আস্তে আস্তে বিবর্তন হচ্ছে (কেউ হয়তো বলবেন এগোচ্ছে), তাহলে শিল্প বিপ্লবকে আলাদা করে চিহ্নিত করা হচ্ছে কেন? মানুষ যখন ধারাবাহিকভাবে চাষবাস করতে শিখলো, সমাজ বানিয়ে একটা জায়গায় থাকতে শুরু করলো, তখনো কি পরিবেশকে নিজের মতো করে পাল্টে নেয় নি, বা পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলেনি? হরপ্পা সভ্যতাতেও তো বাঁধ দেওয়ার ব্যাপার ছিল, তাই না? (ঠিক জানিনা, জানতে চাইছি) মানে লাস্ট চার-পাঁচ হাজার বছরের ধারাবাহিক বিবর্তন (অগ্রগতি?) এর মধ্যে, যে বিবর্তন প্রায় পুরোপুরি প্রযুক্তি নির্ভর, শিল্প বিপ্লব বা তার পরের সময়কে আলাদা করা হচ্ছে কেন?

    আরেকটা কথা, "খারাপ চিরকালই ছিলো কিন্তু একটা মাত্রায়। শিল্পবিপ্লব সেটাকে মাত্রাছাড়া করে দিয়েছে" এরকম কোন ট্রেন্ডলাইন আছে কি? (জানতে চাইছি) আর "খারাপ চিরকালই ছিলো" কথাটার মানে কি মানুষের সভ্যতার যে বিবর্তন হয়েছে তা প্রথম থেকেই খারাপ? গুহা থেকে বেরিয়ে নোমাডিক লাইফ শুরু করা, তার পরে সমাজগঠন, চাকা আবিষ্কার, আগুন ব্যবহার করতে শেখা, চাষবাষ করতে শেখা, এগুলো সবই কি খারাপ কিন্তু অল্প অল্প খারাপ?
  • dc | 181.49.165.240 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৩২51450
  • "যদি প্রযুক্তির কারনে চিন্তা ভাবনার উন্নতি হতো, তাহলে সক্রেটিস, ইউক্লিড, বরাহমিহির হতো আধুনিক কালে তার আগে নয়।"

    এটাও একটু বুঝতে অসুবিধে হচ্ছে। চিন্তাভাবনার বিবর্তন (এগনো?) আর প্রযুক্তি তো একে অপরের হাত ধরেই এগিয়েছে। ইউক্লিডের জ্যামিতি, আর্কিমিডিসের থিওরি, এগুলো কি নতুন প্রযুক্তির জন্ম দেয়নি? আবার সেই নতুন প্রযুক্তির সাহায্যেই তো পরবর্তীকালে আরো নতুন চিন্তার উদ্ভব হয়েছে! চিন্তাভাবনার উন্নতি না হলে যেমন নতুন প্রযুক্তি আসতো না, তেমনি নতুন প্রযুক্তি না এলেও তো চিন্তাভাবনা এগতো না! সক্রেটিস আর বরাহমিহির আধুনিক কালের না তো কি হয়েছে, তাঁরা তাঁদের সময়ের চিন্তাভাবনার বৈপ্লবিক পরিবর্তন ঘটিয়েছিলেন, যার হাত ধরে এসেছিল নতুন প্রযুক্তি। প্রযুক্তি আর চিন্তাভাবনা তো কখনোই পরষ্পরবিরোধী ছিলনা!
  • b | 24.139.196.6 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০০51451
  • হার্ম্যান ড্যালি বলে একজন বিখ্যাত ইকলজিক্যাল ইকনমিস্টের বক্তিমে শুনেছিলাম। আমার বন্ধুরা বলেছিলো এনাদের এই গ্রুপটা নাকি বাজারপন্থীদের চেয়েও গোঁড়া, পরিবেশের উপরে মানব্সভ্যতার এফেক্ট এর ব্যাপারে। তা উনি একটা কথা বলেছিলেনঃ ইফ ইউ ওয়ান্ট টু স্টপ পলিউশন, ইউ উইল গেট অ্যান এপিডেমিক অফ কনস্টিপেশন।
  • কল্লোল | 233.227.162.216 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:০৬51437
  • অসাধারণ। সোমনাথকে সাহস করে এটা লেখার জন্য ধন্যবাদ। আধুনিক "উন্নয়ন"এর চিন্তা যার সাথে মিলে যাওয়া মার্ক্সের সমাজবিকাশের তত্ত্ব কে প্রশ্নের মুখোমুখি হতে হচ্ছে অনেকদিনই। শিল্প মানে এগিয়ে যাওয়া, কৃষি মানে পিছিয়ে যাওয়া এসব হাস্যকর যুক্তি, বা বলা ভালো ধারনা, নিয়ে নতুন করে ভাবার সময় এসে গেছে। শিল্প মানব সভ্যতার, এই পৃথিবীর যা ক্ষতি করেছে, করে চলেছে, তা অপূরণীয়।
    আজ আমরা শিল্প/প্রযুক্তি অধ্যুষিত সময়ে দাঁড়িয়ে ভাবতেই পারি না শিল্প/প্রযুক্তি ছাড়া বাঁচা সম্ভব কি না। অথচ, একটা সামান্য বিষয় - আজও আমাদের খাবার খেতে হয়, সেটা নিছক বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য, নিশ্বাস নিতে হয়, যা বেঁচে থাকার জন্য অপরিহার্য। এতোটা অপরিহার্য আর কোন কিছুই নয়। সেই মাটি, বাতাস, জল দূষিত করার জন্য দায়ী এক ও একমাত্র - শিল্প।
    ভাবুন, ভাবা অনুশীলন করুন।
  • কল্লোল | 233.227.6.71 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৩:১৪51452
  • শিল্পবিল্পব কেন আলাদা।
    খারাপ দিয়েই শুরু করা যাক। যুদ্ধ।
    যুদ্ধ কোনকালে ছিলো না? যুদ্ধে মানুষ মরতো, অত্যাচার হতো। সে প্রাগৈতিহাসিক যুগে দুই গোষ্ঠীর মানুষেও হতো, আজও হয়। তফাৎ কিছু চোখে পড়ে কি? মধ্যযুগে কামান/বন্দুকের ব্যবহা শুরু হয়েছে। তার সাথেও আজকের যুদ্ধের তফাৎ কিছু চোখে পড়ে কি?

    একটু নেটে খোঁজ করুন। শিল্পবিপ্লবের আগে দূষণের মাত্রা আর শিল্পবিপ্লবের পরে। তফাৎটা চমকে দেওয়ার মতো।

    চিন্তার ক্ষেত্রেও আমার তাইই বক্তব্য। চিন্তার উন্নতির প্রাকশর্ত কখনো-ই প্রযুক্তির উন্নতি নয়। বরং বেশীরভাগ ক্ষেত্রে উল্টোটা।
    আপনার 17 September 2016 14:37:18 IST পোস্ট।
    "তবে ইন জেনারাল শিল্পবিপ্লবের ফলে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছিল, সমাজ সচেনতনতা, শিক্ষা, হিউম্যান রাইটস ইত্যাদি"
    এটা ঠিক নয় বলে আমার মনে হয়।
  • dc | 181.49.165.240 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৩৮51453
  • হ্যাঁ কল্লোলবাবুর কথাগুলোও গুরুত্বপূর্ণ।
  • cm | 127.247.98.173 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৪৪51454
  • "চিন্তার উন্নতির প্রাকশর্ত কখনো-ই প্রযুক্তির উন্নতি নয়" ভাল লাগল। (ঊজ্জ্বল উদাহরণ নাম্বার থিওরি) তবে প্রযুক্তির উন্নতিও অনেক চিন্তার মুখ্য অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করেছে।
  • dc | 181.49.165.240 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৫৫51455
  • যেমন পুলি নামক প্রযুক্তিটি।
  • cm | 127.247.98.173 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৪:৫৯51456
  • প্রাথমিক পর্যায়ে অবশ্য নাম্বার থিওরির পেছনেও (পিথাগোরিয়ান ট্রিপল ইত্যাদি) প্রযুক্তিগত সমস্যা ছিল।
  • amit | 213.220.126.71 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:১০51438
  • সমস্যা হলো "শিল্প মানব সভ্যতার, এই পৃথিবীর যা ক্ষতি করেছে, করে চলেছে, তা অপূরণীয়।"
    "মাটি, বাতাস, জল দূষিত করার জন্য দায়ী এক ও একমাত্র - শিল্প" এরকম ব্লাঙ্কেট মন্তব্য দিয়ে তো সমস্যা মিটবে না। শিল্পের হাজার দোষ থাকলেও সেগুলোর কিছু চাহিদা আছে বলেই সেগুলো চলছে মনে হয়। চাহিদা না থাকলে সেগুলো কে চালাতে যাবে ? এবার অবশ্যই চাহিদা থাকা মানে লোক খুন করে মুনাফা বানানো নয়, যারা শিল্পের সমর্থিক তারাও কেও সেটা চাননা।

    একটা গঠনমূলক আলোচনা হোক না। কোন কোন শিল্প বেশি ক্ষতি করছে আমাদের, কোন কোন শিল্প এই মুহূর্তে বন্ধ করা উচিত, এবার বন্ধ হলে তার বিকল্প কি হবে, সেসব কিছু নিয়েই বিশদে আলোচনা হোক। আর পুরো দুনিয়াকে নিয়ে টানাটানি না করে শুধু পব বা ইন্ডিয়া নিয়ে আলোচনা শুরু হোক, যাতে সব ঘেটে না যায়।

    আমরা সবাই কিছু শেখার চেষ্টা করি সেই আলোচনা থেকে, কোনো আপত্তি নেই। শেখার তো শেষ নেই, এখন যা হচ্ছে তার থেকে ভালো বিকল্প থাকলে কেন নেবো না, হোক না একটু কম মুনাফা? তা না করে শুধু "চলছেনা চলবে না", স্টেটমেন্ট দিলে তো সব আলোচনাই এরোপ্লেন আর পাখী হয়ে যাবে।
  • কল্লোল | 233.227.164.232 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৩৪51439
  • এটা এমন একটা সমস্যা, যার সমাধান বোধহয় নেই। আজ আমরা শিল্পনির্ভর হতে হতে এমন একটা জয়গায় এসে পোঁছেছি, যেখানে চাকা উল্টোবাগে ঘোরানো সম্ভবই নয়।
    কোন শিল্প ক্ষতি করছে? কোনটা নয়? সব শিল্পই কোন না কোন ভাবে একে অন্যের সাথে জড়িত।
    ধরা যাক ব্যাঙ্ক। ব্যাঙ্কের যা কাজ তাতে পরিবেশ দূষণ কোনভাবেই করা যায় না। কিন্তু হয়। ব্যাঙ্কের জন্য অফিস লাগে। সেই অফিস বানাতে লোহা, সিমেন্ট, ইঁট লাগে। আসবাব লাগে। তাতে গাছ কাটতে হয়।
    এবার প্রশ্ন উঠবে লোহা কি আগে বানানো হতো না? বাড়ি কি আগে বানানো হতো না? গাছ কি আগে কাটা হতো না?
    অবশ্যই হতো। তফাৎটা পরিমানে।
    শিল্পবিপ্লবের পরে উৎপাদনের পরিমান এক লাফে যতটা বাড়লো, সেটাই তফাৎ করে দিলো।
    একটা বা এক কোটি কামারশালা যতটা দুষণ ছড়াতে পারে তার সাথে একটা বড় স্টিলপ্ল্যান্টের দূষণ ছড়ানোর কোন তুলনাই হয় না।
    সমাধান বোধহয় নেই। অনেক কিছু বলা হচ্ছে, গ্রীন এনার্জি-টেনার্জি, তাতে খুব চিঁড়ে ভিজছ বলে মনে হয় না।
    এমন নয় যে শিল্প বিপ্লবের আগে পৃথিবী স্বর্গ ছিলো। না। যুদ্ধ ছিলো, অবিচার ছিলো, অন্যায় ছিলো। কিন্তু ঐ যে বল্লাম - মাত্রা। সব কিছুরই একটা মাত্রা ছিলো। শিল্প বিপ্লব মাত্রাছাড়া করে দিয়েছে সব কিছু।
    হয়তো একটা মহাপ্রলয়ের জন্য বসে আছি আমরা।
  • dc | 233.235.24.17 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:৫৯51440
  • শিশুমৃত্যুর হার ক্রমশ কমেছে, লাইফ এক্সপেকট্যান্সি বেড়েছে, ফুড সিকিউরিটি বেড়েছে, এসবের ফলে পপুলেশান গ্রোথ রেটও বেড়েছে (যদিও এই রেট ষাটের দশকের থেকে এখন কিছু কম)। পপুলেশান বাড়ছে বলে রিসোর্সের ওপরও বেশী চাপ পড়ছে। আর আর্বানাইজেশান বাড়ার ফলে কাজের ডিম্যান্ডও বাড়ছে।
  • Somnath Roy | 127.194.202.142 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৮:১০51441
  • শিশুমৃত্যু।লাইফ এক্সপেন্টেন্সি প্রভৃতি যা যা বেড়েছে, তা কি শিল্পবিপ্লব না হলে বাড়ত না? ধরা যাক, পাবলিক হেলথ, কলেরায় নুনজল দিয়ে সুস্থ করা কিম্বা ভ্যাক্সিনেশন- এইগুলো অনেকই শিল্পবিপ্লব নিরপেক্ষ বাদ দিয়েও হতে পারত। অনেক ক্ষেত্রে কমিউনিটি মেডিসিনে এগুলো ছিলই।
    তবে, শিল্পবিপ্লবের অব্যবহিত পরবর্তীকালে দুম করে গ্রাম ছেড়ে শহরে আসার পরিস্থিতি তোইরি হওয়ায় জনস্বাস্থ্যের ভীষণ অবনতি হয়েছিল মনে হয়।
    শিল্পসভ্যতার মজাই এই সে সাপ হয়ে কামড়ায় আর ওঝা হয়ে ঝাড়ে। আর এই পদ্ধতিতে নিজের মুনাফা আরও বাড়িয়ে ন্যায়।
  • dc | 132.174.144.235 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৯:০৭51442
  • শিল্পবিপ্লব না হলে বাড়ত কি না এভাবে বলা মুশকিল।

    শিল্পবিপ্লবের আগের একশো বছর আর পরের ধরুন চল্লিশ বা পঞ্চাশ বছরের কোন ডেটা আছে কি? কিংবা শিল্পবিপ্লবের আগে দুটো দেশ মোটামুটি একই অবস্থায় ছিল, একটায় হলো আরেকটায় হলোনা, তো শিল্পবিব্প্লবের পঞ্চাশ বছর পরে এই দুটো দেশ কিরকম অবস্থায় এল? এরকম কিছু কম্পেয়ার করতে পারলে হয়তো আবছা কোন ধারনা পাওয়া যেতে পারে। ঐতিহাসিকেরা আরো ভালো বলতে পারবেন।

    তবে ইন জেনারাল শিল্পবিপ্লবের ফলে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছিল, সমাজ সচেনতনতা, শিক্ষা, হিউম্যান রাইটস ইত্যাদি (ঠিক বল্লাম তো?)। তারও পরে কমিউনিকেশানে উন্নতি হয়েছে, জেনারাল গভর্নেন্সে উন্নতি হয়েছে। এই সমস্ত মিলিয়ে বোধায় আস্তে আস্তে জেনারাল হেল্থ, মর্টালিটি, প্রিন্যাটাল কেয়ার ইত্যাদি নানান প্যারামিটারগুলোর উন্নতি হয়েছে। মানে আমি এরকমই জানি।
  • কল্লোল | 233.227.231.36 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১১:৪০51443
  • এই যে "উন্নতি"গুলোর কথা বলা হলো, সেগুলোর জন্য দাম কি দিতে হয়েছে? সেটার হিসাব হোক।
    শেষ ২৫০ বছরে পৃথিবী যে পরিমান দূষিত হয়েছে, এবং তার ফলে মানুষ ও প্রকৃতির যে পরিমান ক্ষতি হয়েছে, তার হিসাব হোক।
    "তবে ইন জেনারাল শিল্পবিপ্লবের ফলে অনেক কিছুতেই পরিবর্তন এসেছিল, সমাজ সচেনতনতা, শিক্ষা, হিউম্যান রাইটস ইত্যাদি" - এটাই সাধারণ ভাবনা। কিন্তু ইউরোপিয় রেনেসাঁ শিল্প বিপ্লবের জন্য আটকে থাকে নি, সেটা মাথায় রাখতে হবে।
  • Ekak | 53.224.129.57 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:০৩51445
  • পিগ আয়রন
  • Ekak | 53.224.129.57 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:০৩51444
  • কল্লোলদা এটা কী লিখলো ? ইউরোপিয়ান রেনেসাঁ কী আমাদের দেশের মতো মনের খেয়ালে মুতিনু দেয়ালে নাকি :( ওটা তো ইন্ডাস্ট্রিয়াল টেকনোলজি আর ইঞ্জিনিয়ারিং এর আঁতুড়ঘর ! পেইন্টিং এ লিনিয়ার পার্সপেক্টিভ কি এমনি এমনি আকাশ থেকে চলে এলো ? মূর্তি তৈরির কাঠামো করতে পূজা আয়রন থেকে রট আয়রন এলো । ক্র্যাংক এন্ড হুইল সিস্টেমে ব্যাপক উন্নতি এলো মাটি তোলার কাজে । প্রচুর প্রচুর ছোটছোট যন্ত্রপাতি থেকে শুরু করে মাল্টি মডিউল ইঞ্জিনিয়ারিং ড্রইং , মানে লিওনার্দো ভিঞ্চির কোডেক্স সিরিজের ডাইরি গুলো একবার দেখতে অনুরোধ করছি , কী দেমাক শালা লিখে রেখে দিয়েছে এসব অনেক আর যন্ত্রপাতি যারা বোঝোনা তারা এসব পরে দেখার চেষ্টাও করবেননা :( এই বিশাল কর্মোদ্যোগ থেকেই ভবিষ্যতে সেগুলো ছাপানো -কপি করার প্রয়োজনীয়তা তৈরী হলো , পরবর্তীকালে এলো ছাপাই মেশিন ।

    তো তাহলে এইভাবে বেঁড়ে শালা কে খুঁজতে খুঁজতে তো আঁকাজোকা -গান গাওয়া সবই বন্ধ করে দিতে হতো । কারণ মানুষ এমিবা হলে এগুলোর প্রয়োজন থাকতো না । হঠাৎ করে ছবি আঁকার পার্চমেন্ট বা ছাপার কালি ও লাগতোনা । আরসেই কালী থেকে সীসের দূষণ হয়ে প্রকৃতির ক্ষতিও হতোনা :|
  • Ekak | 53.224.129.57 (*) | ১৭ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:০৪51446
  • অঙ্ক , পড়ে দেখার
  • কল্লোল | 233.227.165.71 (*) | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৪০51458
  • তখন মাপা হতো না। এখন মাপা হয়।
  • কল্লোল | 233.227.165.71 (*) | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:৪৯51459
  • এখন বোধহয় আর ফিরে যাবার রাস্তা নেই। পৃথিবী বহুবার ধ্বংসের মুখোমুখি হয়েছে, নানা কারনে। ডায়নোদের যুগ শেষ হওয়ার পিছনে অনেকেই মনে করেন গ্রহাণুর আছড়ে পড়া, যার ফলে হিমযুগ। আবার নতুন করে পৃথিবী সেজে ওঠে। তেমনই কিছু হবে হয়তো। বা হয়তো নোয়ার মহাপ্লাবন আরোঅ একবার।
    মানুষের লোভ এমন জায়গায় পোঁছেছে যে লোভকে লোভ বলে ভাবতেই ভুলে যচ্ছে মানুষ। বরং উল্টোটা প্রাতিষ্ঠা পাচ্ছে - লোভ না থাকলে "উন্নতি" হয় না।
  • Somnath Roy | 127.194.197.244 (*) | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৪৭51460
  • কল্লোলদা, এই পেছনে ফেরা যায় না- এরকম প্রতিপাদ্য নিয়ে আমার একটু ইসে আছে। আমাদের দেশের ইতিহাসেই তো দেখেছি নাগরিক সিন্ধুসভ্যতা ভেঙে গ্রামীন সমাজ গড়ে উঠল!
  • Somnath Roy | 127.194.197.244 (*) | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৫:৫২51461
  • ইউক্লিড-বরাহমিহির থেকে সেই আ কী কী প্রযুক্তি এল? একটু যদি বিশদ করেন।
  • একক | 53.224.129.52 (*) | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০৬:১৩51462
  • সেত এই সভ্যতা এমনিতেই ধ্বংস হবে । ইন্ডাস ধ্বংস হয়েছিল ইরেগুলার মনসুনের কারনে । আর বর্তমান সভ্যতা ধ্বংস হবে সব জলে ডুবে । তারপর আইস এজ এসে । তারপর ছোট ছোট নোটন নোটন গ্রাম গড়ে উঠবে আবার ।

    তাহলে এসব নিয়ে এত নিত্যনতুন হাহুতাশের কী আছে ??
  • PP | 174.67.157.241 (*) | ১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ১২:৫৮51457
  • শিল্পবিপ্লবের আগে দূষণের মাত্রা মাপা হতো কি কোরে?
  • Somnath Roy | 127.194.192.225 (*) | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:১২51463
  • এই সভ্যতা ধ্বংসের পর পৃথিবী আর মানুষের বাসযোগ্য থাকবে কি?
  • Ekak | 53.224.129.52 (*) | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:২৫51464
  • তা নিয়েই বা মাথাব্যথা কেন ?

    আমরা কি এখনো বুঝতে পারছিনা যে সভ্যতার সবচে বড় সংকট হচ্ছে , ভবিষ্যৎকে সুনিশ্চিত করার ইচ্ছে । সেখান থেকেই সব বিপদের সূচনা । শস্য জমাতে গোলা । ইঁদুর থেকে গোলা বাঁচাতে বেড়াল এভাবেই তো আজ এই অবস্থা হয়েছে , ক্যাপিটালিজম তো একদিনে আকাশ থেকে পড়েনি । মানুষ গ্রামের পর গ্রাম , শহরের পর শহর উজাড় হয়ে গিয়ে বুঝেছে যে প্রকৃতির যা "স্বাভাবিক " তার বিরুদহে দাঁড়িয়ে ভবিষ্যৎকে সুনিশ্চিত করতে গেলে "অতিরিক্তের " দরকার । দরকার বাঁধ -পাঁচিল -দুর্গ - সঞ্চিত শস্য কখনো শস্য হবেনা ভেবে -তাই শোষণ -সারপ্লাস এইভাবেই এক বিশাল লোভের চক্রে জড়িয়ে গেছে ।

    এর বাইরে বেরোনোর একটাই পথ , তা হলো ভবিষ্যৎ নিয়ে সমস্ত প্যানপ্যানানি বন্ধ করা । এই মহাজগতের একটি নক্ষত্রপুঞ্জের অধীন একটি ছোট্ট গ্রহে প্রাণ না থাকলে কী যায় আসে ? এই তো বালের সভ্যতা । কী যায় আসে তার সব চিহ্ন মুছে গেলে ? আমার তো এইটাই সবচে হাস্যকর লাগে যে , যে ভবিষ্যৎ নিশ্চয়তা ও সুরক্ষার নিরন্তর চক্রে পরে এই দশা সেটা বোধ হবার পরেও এতো ময় কীসের :) ভোগে যাক সভ্যতা । কার কী ?
  • dc | 132.164.214.132 (*) | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০১:৪৮51465
  • এই তো অবস্থাঃ

    Far out in the uncharted backwaters of the unfashionable end of the western spiral arm of the Galaxy lies a small unregarded yellow sun. Orbiting this at a distance of roughly ninety-two million miles is an utterly insignificant little blue green planet whose ape-descended life forms are so amazingly primitive that they still think digital watches are a
    pretty neat idea.
  • কল্লোল | 233.227.231.101 (*) | ১৯ সেপ্টেম্বর ২০১৬ ০২:২২51466
  • সোমনাথ। ঠিক জানি না। একটা মহাপ্রলয়ের পর প্রকৃতি কি ভাবে ঘুরে দাঁড়াবে।
    কিন্তু আমি ফিরে যাবার কথা বলছিলাম আজাকের প্রেক্ষিত থেকে। চাহিদা কমিয়ে, লোভ কমিয়ে ফিরে আসা। সে বোধহয় হবার নয়।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ক্যাবাত বা দুচ্ছাই মতামত দিন