এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ব্লগ

  • তোমাকেই ভালোবেসে ফেলি

    সুকান্ত ঘোষ লেখকের গ্রাহক হোন
    ব্লগ | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ | ৯৬২ বার পঠিত | রেটিং ৫ (১ জন)
  • তোমার সাথে আলাপের অনেক আগেই আমি তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখে ফেলেছিলাম। তোমাকে নিয়ে কবিতা লিখেছি, কবিতা সকল লিখেছি – তুমি আসার পরে তারা প্রেমের কবিতা হয়ে গেছে অনেকে। আবার অনেকে থেকে গেছে কেবলই কবিতা হয়ে তোমার আসা দেখতে দেখতে – নিজেদেরকে নতুন করে চিনে নেবার অপেক্ষায় । তুমি হয়ত জানতে এগিয়ে আসছ কাছে, দেখার দূরত্বে, আরো একটু পরে শোনার দূরত্বে – কবিতারা অবাক হয়ে দেখছে সেই এসে যাওয়া। কবিতারা ভালোবেসে ফেলছে তোমাকে, তাদের গা বেয়ে চুঁইয়ে পড়ছে মুগ্ধতা, আড়চোখে দেখে নিচ্ছে তোমার গ্রীবা।

    কবিতারা আর গ্রীবা নিয়ে ভাবে না – কবিরা নাকি গ্রীবা নিয়ে ইতিমধ্যেই লিখে ফেলেছে অনেক কিছু! কবিতা দেখছে মসৃণতা – একবার ছুঁয়ে ফেলতে চাইছে প্রথম বারের মতন।

    “ক্রমশঃ ভালোবেসে ফেলি
    তোমাকে ডিনার টেবিলে
    কেমন মসৃণ ছোঁয়া যায় বলো
    নিভৃতির হাত
    আর ক্ষয়ে যাওয়া নির্জনতায়
    সাদা ফুলেরই জল

    জল নীল হতে ভালোবাসে, সবুজও
    তাইতো স্পর্শেই গলে পরে
    সব নির্জনতা
    আমি ক্রমশঃই, ক্রমশঃ ভালোবেসে ফেলি
    রক্তাক্ত ঠোঁট বেয়ে
    ঠোঁটের নিভৃতি

    ফুলেরা কারুকাজ ভালোবাসে
    তোমার পিঠের সমস্ত ফুলের গোলাপী সুবাস
    নগ্নতা ঢেকে আনে
    নগ্নতা ডেকে আনে
    আমি ভালোবেসে ফেলি
    ফুল – কারুকাজ – জটিলতা

    কেমন মসৃণ ছোঁয়া যায়
    মসৃণতা
    গভীরতা
    শুধু তোমাকে ক্রমশঃই - -”

    এই আমি কবিতা লিখেছিলাম পৃথিবীর অপর প্রান্তে থেকে। তুমি ডেষ্টিনি বিশ্বাস করতে, আর আমি কি আজকে তা বিশ্বাস করতে শুরু করেছি? তোমার চেনার অনেক আগেই আমি তোমাকে চিনে গেছি – জেনে গেছি তোমার প্রিয় সকল – সী গ্রীণ রঙে তোমার দূর্বলতা, ফুলের স্পর্শে নিয়তি নতুন করে তোমার জেগে ওঠা, ডিনার টেবিলে সাজানো টিউলিপ – আর সেই খোলা পিঠের রোমাঞ্চে যেন নিজেরই কেঁপে ওঠা।

    তোমাকে স্কুলের শাড়িতেও আমি দেখিনি – নাকি এ এক অর্ধেক সত্য? এ কবিতাও তো তোমাকে নিয়েই লেখা!

    “এর চেয়ে সুখ ভালো
    আরো ভালো প্রচলিত জানালায় চেনা হাতছানি
    আমাদের স্টেশনে দশটার হরিনি সেও ভালো অজান্তেই
    আমি জানি এর চেয়ে শ্লেষ ভালো তোমার ব্যাগের রুমালে
    হরিণিরা সিঁড়ি বায়, দূর রঙা কমলা শাড়ি
    রুমাল যদি বা পরে অজান্তে আমাদের খেলার আড়ি
    আমাদের তোলার ছলে, ক্লাব বাগানের ফুল
    ঘাসেই দুপুর বিকেল, দশটার ভুল
    আমি জানি স্মৃতি ভালো এর চেয়ে দশ বছরের ফাঁক
    ক্লাব বিকেলে ওরা আছে, এখনও হরিণি বাঁক”।

    তোমার কমলা শাড়ি পরা শেষ হবার দশ বছর পরেই তো প্রথম দেখা, তাই না? ডেষ্টিনি?

    স্কুলের গল্প করেছি আমরা – আমার থেকেও তুমিই বেশি, বরাবরের মতই। তোমার মত আমার তো এত মুগ্ধতার গল্প ছিল না – আমার গল্পে ছিল ক্রিকেট, ফুটবল, নাটক, কুইজ যার একটাও তোমাকে স্পর্শ করত না তেমন নিবিড়ে। তোমার জন্য বসে থাকত কত বিকেল ক্লাবের ঘাসে। আমার স্কুলের গল্পে বড় জুড়ে ছিল ট্রেন – তোমার কত কাছাকাছি ছিল ডাউনের ট্রেন, ফেরত পাওয়া রুমাল?

    ডেষ্টিনি-তে বড়ই বিশ্বাস করতে ইচ্ছে করে – আমার বিজ্ঞানমনস্কতা মুচকি হাসে, আমার রাজনৈতিক ভাবনা মনে করিয়ে দেয় নিজের জীবন থেকেই বিশ্বাস উঠে আসা ভালো। পরের ধার করা অভিজ্ঞতা নিয়ে নাড়াচাড়া এক সময়ে ক্লান্তি আনে – আমি ডেষ্টিনি নিয়ে ভাবনা চিন্তা করি – এক বিকল্প ইউনিভার্সের লেখাগুলি মনে পড়ে – ভাবনা জোরদার করার জন্য আমি আরো কবিতা তুলে আনি নিজের ডায়েরী থেকে – তোমার সাথে দেখা হবার আগেই আমি আমাদের নাগরিক জীবন যাপন, আমাদের রাগারাগি, আমাদের খুনসুটিও লিখে ফেলেছিলামঃ

    “আমি যদি বলি হিমবাহের মতন শীতল
    তুমি বলিবে আরোপিত
    অথচ আমরা উভয়েই জানিতাম
    উহা হিমবাহের মতই শীতল
    ----------
    আমি যদি বলিতাম বিকেলের মত গোলাপী
    তুমি তো বলিতেই আরোপিত
    আমাদের আঙুলে কিন্তু সেই গোলাপী বিকেল
    আমি কারো প্রভাবিত নয় বোঝাতে গিয়ে
    টেবিল ছেড়ে উঠে পড়ি,
    লম্বা করিডোরে হাঁটতে হাঁটতে কাম ভাবি, মদ ভাবি
    বিছানায় ক্রোধ ভাবি, মোহে – যদি ওই চম্পাকলির মোহে
    তোমাদের মতে আরোপিত আঙুলেও
    আমি সচেতন ইশারা ভাবি
    আমি যদি বলি এ বড় সুখের –
    তুমি চুপ থাক
    অথচ আমরা উভয়েই জানিতাম এরপরে
    সময় ---”

    তুমি রেগে গেলে শীতল হতে, কষ্ট পেলে হিমবাহ – নাকি আইসবার্গ? আইসবার্গের বাঙলা কি? ভাসমান শৈলচূড়া? হয়তবা – আমি টের পেতাম না গভীরতা। ভেসে থাকাটুকু নিয়ে আমি পরিকল্পনা বানাতাম – বানাতাম কথামালা – রাগ ভাঙানোর গল্প। আমষ্টারডামের শহরের অবহাওয়ার মতনই ক্ষণে পাল্টে যেত উচ্ছলতা – আবার সেই গোমড়া আকাশের মতন মুখভার বাইরের বারান্দায় হয়ত বেশী কিছু ক্ষণ – আমার অনুমানের সাথে লুকোচুরি খেলে – কিন্তু তখনও তো তুমি আমার হাত ধরেই রাস্তা পার হতে, প্রত্যেকবার! আর আমাদের আঙুলে লেগে থাকত গোলাপী বিকেলগুলি, রাত জাগার গল্প – ভেনিসের সেই হোটেলে যার নিচের ক্যানালে সারারাত একটা একাকী গোন্ডোলা দোল খেয়ে গিয়েছিল – অঙ্কের মেয়ে তুমি বলেছিলে সিম্পল হার্মোনিক মোশন। আমিও সেটা জানতাম – অঙ্কের ভাবনা সেই প্রথমবারের মতন তোমার সাথে মিলে গিয়েছিল আমার!

    তোমাকে নিয়ে অসংখ্য নতুন শহরে গেছি – থেকেছি তিনটি শহরে – বাসা বাঁধে, ঘর বেঁধে – তুমি গড়ে তুলেছ গৃহস্থলী। প্রায় শহরই পরিপূর্ণ ছিল – তুমি প্রসারিত করে দিয়েছ হৃদয়, শুষে নিয়েছ নতুনত্ব – মানিয়ে নিয়েছ বাইরের বারান্দা। উচ্ছল খুশী দেখেছি তোমার মুখে, তোমার চোখের তারায় – আমার ডায়েরীতে তা ধরা আছে –

    “দূর শহর কখন আপন হয়ে ওঠে
    কখন তুমি হাততালি দিতে শুরু কর – একসাথে,
    ওদের সাথে যারা বারান্দায় ঝুলিয়ে রাখে গাছ আর মাটি
    আর ফুল - চেনা রঙের, কিন্তু তুমি নাম জানো না
    নতুন ওরা তোমায় শিখিয়ে নেবে ফুলের নাম
    তুমি আপন হয়ে উঠবে, হাততালি দেবে
    সময় দেওয়া বাগানে এককোণে দুলতে দুলতে
    আমি তোমাকে হাততালি দেওয়া শেখাতে থাকি
    প্রতীক্ষা - প্রতীক্ষা আর পর্যবেক্ষণ
    হাততালি এক ব্যবহার
    হাততালির ব্যবহার”।

    আমাকে তুমি বারবার বলতে তুমি আমার থেকে শিখতে চাও – জানি তুমি প্রকৃত অর্থেই বলতে – কিন্তু আমি কি পেরেছিলাম? বরং চেয়েছিলাম তো বন্ধুত্ব – মিলেমিশে শেখা। তবে আমি ভাগ করে নিতাম আমার অভিজ্ঞতা, জীবনের, নানা দেশের, নানা দেশের লোকের – নানা সংস্কৃতির। তুমি অবাক হয়ে শুনতে বেশীরভাগ সময়ে – আমি তো চেয়েছিলাম মানুষের খারাপ দিকের সাথেও তোমার পরিচয় করিয়ে দিতে, অন্তত যাতে তুমি বেশী অবাক না হও সময়কালে।

    “গাঙচিলের কথা বৃথা লেখো আজ
    পেনবিদ্ধ সে অনেকদিন
    ও বলল এভাবেই মৃত চোখে চেয়ে থাকা যায়
    মৃত চোখের দিকে কেউ তাকায় না
    যদি না সেটা মহাভারতের কোন একটা রোমান্টিক পর্ব হয়

    পাখির চোখ থেকে প্রচলিত উপকথা খুলে নিলে
    কাহিনী বদলে যায়
    তবু তুমি গাঙচিল খোঁজ কেন
    যখন দেখতে পাও অচেনা ফল ঠুকরে দিচ্ছে
    জানালা দিয়ে
    সেই অচেনা ফল নিয়ে লেখো
    ফলের গা দিয়ে কেমন সুগন্ধ বেরোয়
    সেই সুবাস লেখো আজ
    একটা অচেনা পাখি অচেনা ফল খুঁটছে
    ভিতরের লাল, ভিতরের সবুজ
    তুমি জানালা দিয়ে দেখতে চাইছ না তার প্রকৃত রঙ
    ফোকাস কর, আরো মনোসংযোগ
    দেখ ঠোঁটের লাল রঙ লেগে যাচ্ছে নিটোল ফলে
    চিলের কথা ভুলে যাও আপাতত
    ফেলে যাওয়া পালকের কথা ভাবো
    একটা একটা পালক থেকে গড়িয়ে পড়ছে
    তোমার সম্ভাবনা
    মৃত চোখ থেকে একাধিক অতীত

    চিল দেখছে না তার দিকে তীরটা এগিয়ে আসছে
    মৃত চোখ জানছে না সে একটা রোমান্টিক গল্পের সাথে জুড়ে যাচ্ছে
    কাহিনী ফেঁদো না আজ
    সরে এসে পাখির ঠোঁট, মাছের চোখের কথা ভাবো
    হয়ত দেখতে পাবে
    নিজের অভিযোজনের সাথে চোখ ও ঠোঁটের
    কোথাও একটা প্রগাঢ় মিল আছে”।

    মনে আছে তোমার সাথে আমার অপার আলোচনা রোমান্টিকতা নিয়ে – এক অভিজ্ঞতার সংঘর্ষ, টানাপোড়েন। তুমি লিখতে আগে থেকেই – আরো বেশী করে লেখা লিখি শুরু করেছিলে। আমি ভাগ করে নিচ্ছিলাম আমার দর্শন জীবনের, লেখালিখির –

    তুমি গভীর রাতে জেগে আছ, হয়ত হাতে ওয়াইনের গ্লাস নিয়ে, তোমার সেই ‘কুইন’ চেয়ারে – বাইরে ক্যানালের ধারে তখনো হেঁটে যাচ্ছে সদা জাগ্রত আমষ্টারডামের টুরিষ্ট। শীত চলে আসে – সেই বারান্দা দিয়েই তুমি ফটোগ্রাফির চেষ্টা করতে ঝরতে থাকা পাতার – শূন্য হয়ে আসা গাছের ডালের – প্রথম বরফে ঢেকে যাওয়া সাইকেলের সীটের – একটা বাচ্চা তার ছোট্ট হাত দিয়ে কখন যেন আঁচড়ে দিয়েছে সেই শুভ্রতা। কালো আর সাদার মিশ্রণ তোমাকে অবাক করে তুলত – আমি তোমার রাত জাগা, তারা-খসা নিয়ে তোমার প্রায় সেই অবশেশন নিয়েও কবিতা লিখে রেখেছিলাম আমার ডায়েরীতে – তুমি কি পড়েছিলে?

    “ভিতর থেকে সরে আসে
    চেনা কেউ, শেষ হয় অপেক্ষা
    তবু ছুঁতে পারো না
    আরো গহীন, আরো নিবিড় চেয়ে থাকো।
    চলে যাওয়া যায়, ফিরে আসা যায়
    তোমার রাতের গায়ে যদি লেগে থাকে গহীন দাগ
    সেই মূর্চ্ছনার কোন শব্দ নেই
    তুমি আর পরে থাকা রেশ
    আমি বাছতে থাকি, আমি কুড়াতে থাকি
    স্টারডাষ্ট – যার বাংলা প্রতিশব্দ আমার অজানা
    কেউ শুধাবার নেই ওইখানে
    না জেনেও কত ভালো থাকা যায়
    গহীনে ঢোকার সময় তুমি কি দেখেছিলে
    অপেক্ষা ভালোবেসে কেউ কেউ জানতেই চায় না
    কিভাবে ফিরে যাওয়া যায়
    বা স্টারডাষ্ট”।

    আবারও অজান্তেই লিখে ফেলেছিলাম ফিরতে পারার গল্প – ফিরতে পারার সম্ভাবনার গল্প। ডেষ্টিনি?

    তুমি নির্জনতা পছন্দ করতে কি খুব একটা? আমষ্টারডাম শহরের কিছুটা সময় ছাড়া তোমার জীবনে নির্জনতা তো ছিল না তেমন! বরং অনেক অনেক আকর্ষণের কেন্দ্রে ছিলে তুমি, অনেক মুগ্ধতার। মুগ্ধতা অনেক সময় মায়াজাল বিস্তার করে – ঢেকে দেয় কিছু কঠিন বাস্তবতা। আমি তোমাকে বাস্তবতা বোঝাতে শেখাচ্ছি – বলছি যে, “মানুষের উপরে বিশ্বাস হারানো পাপ” – এ এক কেবলই প্রবাদ বাক্য, বা উপকথা। কিন্তু তুমি জীবনের খুব কম সময়েই মানুষের উপর বিশ্বাস হারিয়েছো – আরো অনেক বিষয় ছাড়াও এই নিয়েও আমি তোমাকে ঈর্ষা করতাম মনে মনে। ঈর্ষা কি সঠিক শব্দ হল? তা যদি না হয়, তহলে বলতে হয়, এই নিয়েও আমি তোমাকে সম্ভ্রম করতাম।

    “যদি নির্জনতার গল্প শোনাতে চাও
    তাহলেও বুঝবে
    আঁধার রাস্তা দিয়ে ফেরানো বাঁক
    আলোর ছটা অনুসরণ করতে গিয়ে দেখেছে
    সরলরেখায় চলবার নিয়মটা এখনো বদলায় নি
    চোখের কোণে প্রতিফলন
    উজ্জ্বল -
    আমি দেখি কতকগুলি নিষ্প্রাণ প্রতিফলক
    তখনো দেখা যাচ্ছে না তোমার মুখ
    শুনতে পাচ্ছি জোছনা দেখতে পাবার গল্প
    ঠিক কতটা উপরে গেলে চাঁদ ছড়িয়ে পড়বে
    একরাশ সবুজে!
    অচেনা থাকলেও জানোইতো
    উপত্যকার রঙ কখনও হয় না নীল
    হয়নি তখনও নিষেধের রঙ”।

    নীল আমার প্রিয় রঙ – তুমি জানতে। তোমার প্রিয় ছিল ময়ূরকন্ঠী রঙ আর সী-গ্রীন। তাতেও তো মিশে ছিলাম আমি! তুমি আমাকে রঙের শেড্‌ বোঝাতে – কি মিশিয়ে কি রঙ হয় বোঝাতে। কতবার হয়েছে – কতবার – কত জন আমাদের বাড়ি এসে বলে গ্যাছে কি সুন্দর সাজানো আর তার থেকেও বেশি করে রঙের ব্যবহার নিয়ে। দেয়ালে ঝোলানো আছে আমাদের তিনজনের হাতের ছাপ, আমারটা নীল, তোমার লাল আর আমাদের দুজনারটা সোনালী। সেই ফ্রেম আজ সৌন্দর্য্য বাহুল্য থেকে ইতিহাস হয়ে গ্যাছে – তোমার হাতের মাপ আর পাল্টাবে না, পাল্টাতে পারবনা আর সেই লাল রঙও।

    ডায়েরী খুলে দেখি আমি তোমার নানা ভালোবাসার জিনিস নিয়ে টুকরো কথা লিখে রেখেছি – আমরা দুজনেই বারে বারে আমার ডায়েরীতে উঠে এসেছি। তুমি প্রবল বিশ্বাস করতে এক অস্তিত্ত্বকে – ভগবান বলেও ডাকা যেতে পারে যাকে। আমার নাস্তিকতা আর তোমার সেই বিশ্বাস মিলিয়েই আমরা চলছিলাম – অথচ আমরা দুজনেই রবীন্দ্র সংগীত ভালোবাসতাম মনে, আর তুমি প্রাণেতেও।

    “তুমি ভগবানে বিশ্বাস করে রবীন্দ্রসংগীত গাও
    আমি বিশ্বাস করি না
    তবুও সংগীত আমাকে ছুঁয়ে যায়
    তাহলে আমার অভাব কিসের?”

    অভাব তখন ছিল না, যখন লিখেছিলাম। অভাবের তালিকা এখন অসম্পূর্ণ – রোজই যোগ হচ্ছে একটা করে নতুন বিষয়, একটা করে উপলব্ধি। অনেক কিছুর মতন আমি এখন খুনসুটিরও প্রবল অভাব বোধ করি –

    “আড়ি দেবার চল এখন উঠে গেছে
    তবুও তো একবার ছোঁয়া যেত!”

    তুমি দেশে ফিরে যেতে মাঝে মাঝে, আমি তখন একা – একাকীত্ব তখন এতটা গ্রাস করত না। কারণ প্রতিটা দিনের শেষ তোমার ফিরে আসাকে আরো কাছে করে দিত। আমি ডায়েরীর পাতায় তখন লিখে রেখেছিঃ
    “তুমি না থাকলে আমি প্রায়শঃই খাবার কিনে খাই
    অথচ তুমি কেবল রাঁধার জন্য ছিলে না
    তুমি থাকলে দুজন একসাথে বেরোই
    খেয়ে ফিরি
    তুমি না থাকলেই কেবল
    কেনা খাবার প্রয়োজনীয় হয়ে ওঠে”।

    আমার দিনলিপিতে তুমিই ছিলে – যদিও তুমি মুচকি হেসে বলেছিলে, “এতো খাবার গল্প”!

    নতুন দেশে প্রিয় ছিল কাঠের বাড়ি, অঝোর বৃষ্টি, বাড়ির চালে বৃষ্টির শব্দ, সামনের সমুদ্রের ঢেউ, বড় যত্নে গড়ে তোলা তোমার বাগান, বাইরের সেই বারান্দা, শহুরে কোলাহল থেকে বহু দূরের মিশকালো অপাপবিদ্ধ রাত, ঝুপ করে গাছের ফাঁক দিয়ে সন্ধ্যে নেমে আসা –

    “শরীর বড় লেপ্টে আছে
    পোষাকের আড়ালে গভীর রাত
    অথচ তুমি বলছ সন্ধ্যার গল্প
    রাতের শেষেই সন্ধ্যা নামুক না হয়”!

    মাঝে মাঝে গুনগুন করে গাইতে গাইতে তুমি ঘুরতে নীচের বাগানে – আমি তোমার অজান্তেই খুলে দিতাম প্রায় বন্ধ সর্বদা এয়ার কন্ডিশন চলা সেই ঘরের জানালা। তুমি কত না পাতা কুড়িয়ে এনেছিলে, কতনা ঝড়ে পরা ফুল – সেই ফুল – পাতারা আজ শুকিয়ে বইয়ের ফাঁক থেকে মাঝে মাঝেই উঁকি মারে। কখনও টুপ করে মেঝেতে পড়ে গিয়ে আমাকে ফিরে দেয় মুহুর্ত, তোমার সাথের – সেই মুহুর্ত গুলিতে আমি জানালা খুলে দাঁড়িয়ে আছি, আর তুমি বাগানে ঘুরে বেড়াচ্ছো – বাগানের সুন্দরী মালকিন –

    “যারা হেঁট হয়ে পাতা কুড়ায়
    তারা সুন্দরীই হয়
    পাতার সৌন্দর্য্যে থাকে প্রকারভেদ
    প্রতিটা পাতার গল্প আছে
    প্রতিটা ঝরে পড়ার
    কেবল সুন্দরীরাই সেই গল্প জানে”!

    বাগান জুড়ে জীবন, জীবনের অনেকটা অংশ জুড়ে আবার সেই বাগান। আমরা পাশের দেশ থেকে ফুলের টব কিনতে গেছি নতুন গাছ লাগাবো বলে। একটা কারুকাজ করা টব খালি পরে থাকে বেশ কয়েক দিন – ওতে নাকি মাধবীলতা গাছ বসবে! সেই দেশে আমি কোথায় পাব মাধবীলতা গাছ! তার ইংরাজী নামই বা কি? ইচ্ছা থাকলেই উপায় হয় কথাটি আমাকে আবার একবার শুনতে হল – একদিন আমাদের বাঙলাদেশী বাগানের মালি কোথা থেকে যেন এনে দিল মাধবীলতার গাছ! মাধবীলতা বেড়ে ওঠে – ওরা দেখলাম মানুষেরই মত, ভালোবাসা পেয়ে তাড়াতাড়ি বেড়ে ওঠে বড়। টব ছেড়ে তার আশ্রয় হল মাটিতে, ঘরের কোনে – একদিন স্তম্ভ বেয়ে সেই মাধবীলতা উঠে উঁকি মারল আমাদের বন্ধ দরজায় – বাগানে গিয়ে গাছেটিকে আদর বেড়ে গেল –

    “জানি তার পরেও বলবে তুমি
    বোঝ নাই
    এ হেন হেঁটে যাওয়া, চেয়ে থাকা
    বাগানের ভিতর ঢুকে বাগান
    খুঁজতে খুঁজতে কখনো বলবে ক্লান্ত
    গাছ শুনতে পাবে না তোমার কথা
    বলবে না গায়ে পড়ে
    সবুজ ভালোবাসো
    তুমি যাতনা শব্দটি ব্যবহার করবে
    আমি অবাক হয়ে ভেবে দেখব
    কিছু জিনিস অজানা থাকলে
    এখনো বিষ্মিত হওয়া যায়
    গাছেরও প্রাণ আছে
    না জানলেও আমি
    বাগানের ভিতরে ঢুকে
    বাগান ---

    বাগানের অনেক কথা আমার ডায়েরীতে – এই বাগানেই একদিন পড়ন্ত রোদে দেখলাম ওর একমাথা চুল ছোট হয়ে গ্যাছে, এ কি এক নতুন স্টাইল? নাকি প্রয়োজনীয়তা? ওকে দেশে ছেড়ে রেখে আসতে হল প্রয়োজনে – আমি একা – এ একাকীত্বের শেষে ফিরে আসা আছে কি আমি জানতাম না তখনো – অফিস থেকে ফিরে বাগানে ঘুরে বেড়াই – মাধবীলতা গাছে জল দিই – আদর করতে গিয়েও করি না, কেউ যেন মুচকি হেসে ‘আরোপিত’ বলে উঠবে ভেবে – গাছের ফাঁক দিয়ে, তোমার চুলের খোঁপার দিয়ে আর সূর্যন্ত হবে না জানতাম না সেই বাগানে

    “ তুমি তো কতই বদলে রয়েছ
    তোমার মাথার বেণী
    সূর্যাস্তের হলুদ মাখে না
    অনেকদিন
    চলো না একবার দাঁড়াই
    লোহার গেটটায় ঠেস দিয়ে -
    ঢেউয়ের রেশ এসে
    থমকে দাঁড়াবে ওপাশে
    গল্প করব
    আমাদের শব্দ সকল
    মিলিয়ে যাবে গোধূলিতে”।

    আমার ডায়েরীতে তোমার অসুখের খবর নেই – অন্তত এমনটাই ভাবতাম আমি। তুমি এটা জানতেই না, কারণ তার পরে আর আমার ডায়েরী পড়ার সুযোগ পাও নি তুমি। বিকেলের বাগানে যেমন মনে করিয়ে দিয়েছে – তেমনি ছুটির সকালে কম্পিউটারে তোমার প্রিয় প্লে-লিষ্টও – আমার না মনে পড়া কবিতার পঙতি মালা ভেসে ওঠে ডায়েরীর পাতায়

    “চেনা গান কাউকে অসুখ মনে করায়
    কাউকে রুমালে লেখা নাম
    নিজেকে ছেড়ে দিই আমি বিমোহিত
    কিই বা এসে যায় গাইতে না জানলে?
    সেই তো তুমি গুন গুন
    বারান্দা
    পছন্দের টবে চেনা গাছ
    ঠিক তোমারই মত
    অচেনা
    লুটিয়ে আসে রোদ একই সময়ে রোজ
    আমি সুর জানি না
    তবুও বারান্দার প্ররোচিত ফিসফাস –
    কি এসে যায় রুমাল হারিয়ে গেলে
    তোমারই তো নাম লেখা ছিল জানি
    চেনা গান তোমাকে মনে করায়
    ঠিক তোমারই মত করে
    তখন
    আরেকটু কাছে এলে
    অসুখ সেরে যায়”।

    ডায়েরী পাতা বলছে আশ্বাসের গল্প – অসুখ সেরে যাবার কথা। কিন্তু বাস্তবতা অন্যরকম – যে বাস্তবতার গল্প আমি ওকে বারে বারে অন্য প্রসঙ্গে বলতে চেয়েছি, সেই বাস্তবতা আমাদের দুজনকে একই ভাবে গ্রাস করে ফেলে একসময় ।

    তুমি যেমন তোমার শেষ কবিতা না জেনেই অনেক আগে লিখে ফেলেছিলে – আমিও কি ঠিক তেমনই তোমার না থাকা সময়ের কথা লিখে ফেলেছিলাম অনেক আগেই! ডেষ্টিনি? তুমি যা চাইতে – সেই হৃদয়ের আকুলতা, যা তোমার নিজের লেখাতেও বারে বারে উঠে এসেছে, সেই হৃদয়ের আকুলতা নিয়েই নতুন করে ফিরে আসার কবিতা পড়ছি ডায়েরী থেকে? ফিরে আসার সম্ভাবনার কথা? তুমি নাকি বলতে আমি তোমার মত ইমোশোনাল নই? তুমি আমার ডায়েরীর পাতা উল্টালে দেখতে – আমি অসংখ্যবার লিখে গেছি আমাদের একসাথে চলার গল্প – এক পিচ্ছিল রাস্তার উপর দিয়ে। আমি তো তোমার গড়া নিয়মেই খেলতে চেয়েছিলাম – আমার আপাত রুক্ষ হৃদয়ের প্রকাশের সাথে তোমার কোমলতার মেলবন্ধন নিয়ে –

    আমি বিকল্প ইউনিভার্সের কথা ভাবি প্রায়ই আজকাল – ভাবি ফিরে আসা নিয়ে। একটু গভীরভাবে ঠিক যেমনটা ভাবতাম তুমি আসার আগে বা তুমি থাকাকালীন –

    “আমাকে জিজ্ঞাসা করা হলে ফিরে যাব কি
    জানতে চাইনি কোথায়
    গন্তব্য নির্দিষ্ট থাকলে ফেরার সম্ভাবনা ক্ষীণ হয়
    তুমি তা জানতে
    আমার কাছে এখন তাই অনন্ত বিকল্প
    এক সম্ভাবনায় সকালে ছুটতে বেরোই
    আবার সবুজ হয়ে ওঠা সামনের রাস্তায়
    তুমি তখন ব্যপ্তি ছোট করে এক বিশেষ সমাধান খোঁজ
    যেখানে রাস্তা নেই, সবুজ নেই
    কৃত্রিম নীল জলের পাশ দিয়ে ড্রাইভার গাড়ী নিয়ে
    দরজায় বেল বাজাবে
    কাদের যেন টেনিস খেলার সময় তখন

    তুমি জানো তো নিশ্চিত
    আমি ঠিক আমাদেরই মত?
    কিছু ভুল অনুসিদ্ধান্ত হাজার বছর ঘুরে ফেরে
    যতদিন না কেউ আবার তলিয়ে দেখে
    অনুমানগুলি আদপেই ঠিক ছিল কিনা

    আমি অনুমান করছি তুমি জানো না কি চাও
    তুমি অনুমান করেছ আমি তা জানি
    ভাবো একবার, আমাদের কাছে থাকবে অসংখ্য বিকল্প
    যতদিন না আমরা নিশ্চিত হতে পারছি

    উভয় পৃথিবীতেই টেনিস খেলা যায়
    আমরা একসাথে খেলতেই পারি
    তোমার গড়া নিয়মে

    এক সম্ভাবনায় আমি ফিরে আসছি সবুজ রাস্তা ধরে
    তুমি বলছ ওটা সাদা রাস্তা ছিল
    তখন আমাদের উভয়ের পৃথিবীই এক
    এক সম্ভাবনায় তুমি বরফে হাঁটছ
    সঠিক পিচ্ছিলতা অনুমান করে”।

    এক সম্ভাবনায় আমি ফিরে আসছি আর এক সম্ভাবনায় তুমি বরফে হাঁটছ - তখন আমাদের উভয়ের পৃথিবীই এক। কেবল আমাদের দুজনের কেউই সঠিক পিচ্ছিলতাটা অনুমান করে উঠতে পারি নি!
    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ব্লগ | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ | ৯৬২ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বকবকস  - Falguni Ghosh
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • সুকি | 348912.82.2323.227 (*) | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:৪৮50181
  • আগের পর্বটা ওর নিজের লেখা কবিতা নিয়ে ছিল - এই পর্বটা আমি আমার লেখা কিছু কবিতা দিয়ে লিখলাম।
  • ন্যাড়া | 1278.202.5634.85 (*) | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ০৮:৩৯50182
  • লিখে যাও।
  • শঙ্খ | 340112.242.90090012.63 (*) | ০৫ জানুয়ারি ২০১৯ ১২:২৫50183
  • অপূর্ব!!
  • শিবাংশু | 5645.249.2378.162 (*) | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৩:৩৮50190
  • পড়তে পড়তে মনে হয় ফোনে বাজছে
    চৌকাঠপারের অক্ষরবাতাস

    পড়তে পড়তে ভেবে নিই
    তুমি অষ্টমীর কৃষ্ণপক্ষ
    এভাবেই

    পড়তে পড়তে দেখি
    বৃষ্টিজলের ধারাপাত
    অমাবস্যার সিঁড়ি বেয়ে নেমে গেলো

    মধুমাসে বিজন বিজন
    একান্নঘরের স্বরগুলি
    ভোরবেলা মন্দ্র ষড়জে স্থির

    শুনো
  • সুকি | 348912.82.2323.227 (*) | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:৩৯50184
  • ধন্যবাদ ন্যাড়াদা এবং শঙ্খ।

    এই লেখায় উদ্ধৃত তৃতীয় কবিতাটি ("আমি যদি বলি হিমবাহের মতন শীতল") অমৃতা একবার আবৃত্তি করেছিল, খুঁজতে গিয়ে পেলাম। এই খানে শেয়ার করে রাখি লিঙ্কটাঃ

  • | 2345.110.783412.74 (*) | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫৭50185
  • একদম লিখে যাও ভাই।
  • Tim | 89900.253.8956.205 (*) | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:২৭50186
  • পড়লাম। লিখে যাও সুকি। সঙ্গে আছি।
  • সুকি | 348912.82.2323.227 (*) | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:৩৫50187
  • আর এটাও থাকঃ

  • সুকি | 348912.82.2323.227 (*) | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:৩৬50188
  • ধুর এল না নাকি ঠিক!

  • ফরিদা | 781212.97.896712.83 (*) | ০৬ জানুয়ারি ২০১৯ ০৭:৩৩50189
  • চুপ করিয়ে দেওয়া লেখা। অপূর্ব।
    ইউটিবের লিঙ্কগুলো লেখার মধ্যে রেখে দেবেন প্লিজ?

    মনে হল ওরা ওখানে বেশি মানাত।
  • বিপ্লব রহমান | 340112.231.126712.75 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:১৫50191
  • কবিতার অপূর্ব প্রহর। অমৃতার আবৃত্তিও খুব ভালো।

    ব্রেভো!
  • সুকি | 566712.225.450112.90 (*) | ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ ০৬:২৮50192
  • হনুদা, টিম, ফরিদা, শিবাংশুদা, বিপ্লব - সকলকে ধন্যবাদ।

    ফরিদা,
    আসলে আবৃত্তির ফাইলগুলো খুঁজে পেলাম লেখাটা পোষ্ট করার পর। লেখা আপডেট করার সময় আমি ব্যাপারটা মাথায় রাখব।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ভালবেসে মতামত দিন