বসন্ত এসে গেছে...আজকাল কবে বসন্ত আসে, কবে চলে যায় কিছুই বুঝতে পারি না। ফেব্রুয়ারি মাস থেকেই কাঠফাটা রোদ্দুর আর প্যাচপেচে ঘাম, মাথা ঝিমঝিম করে। তারই মাঝে মাইক চালিয়ে সরস্বতী পুজো নয় শিবরাত্রির কানে তালা লাগিয়ে দেওয়া উৎসব পালন। দক্ষিণ ভারতেও মাইক সংস্কৃতির হিড়িক লেগেছে, আজ গনেশ কাল ছত্রপতি শিবাজি পরশু ব্রাহ্মণ ভোজন চলছেই। দোলযাত্রা বা হোলির উৎসব তো এক যুগ আগেই উন্মাদ নৃত্যে পরিণত হয়েছে, হিন্দি বেল্টে ছোটবেলা কাটানোর ফলে আমার অভিজ্ঞতা অন্তত খুব একটা সুখকর নয়। কিন্তু আজকাল সবচেয়ে বেশি মাথা ধরে ফেসবুকে একটানা দশ পনেরো মিনিট কাটালে। এক একজনের রাজনৈতিক পোস্টকে যদি ন্যূনতম ডেসিবেলে বদলে দিই, সমস্ত পৃথিবী ... ...
এক শহরের গপ্পো
রাত পৌনে নটা বাজে । কলতান সোলাঙ্কি প্রণবেশের ফ্ল্যাটের দরজার সামনে গিয়ে দাঁড়াল। প্রণবেশ দরজা খুলে কলতানকে দেখে অবাক হয়ে তাকিয়ে রইল। কলতান হেসে বলল , ' সময় কাটছে না একা একা ..... তাই একটু এলাম । ওই মার্ডার কেসটার ব্যাপারে আমি মাঝে মাঝে এখানে আসি । আজকে রাতটা এখানেই থাকব ।'----- ' ও আচ্ছা আচ্ছা ..... আসুন আসুন । আপনি তো কলতান গুপ্ত, না ? আপনার নাম শুনেছি ... ...
ষোলোশো আঠাশের দোসরা ফেবুয়ারি, শহর লাহোরের থেকে কিছু দূরে কেল্লায় এক ঘুপচিতে বেতখত হয়ে যাওয়া বাদশাহ দাওয়ার বক্স দাবা খেলছিলেন ভাই গার্শপের সঙ্গে। সময়? এই তো মুশকিল, সময় নিয়ে কে ভেবেছে সে দিন! গার্শপ কথাটার মানে দানবহন্তা কিন্তু হিন্দুস্থানী প্রথায় দাবাতে রাক্ষস খোক্কস মারার গল্প নেই। দাওয়ার বক্স বাবা শাহাজাদা খুসরুকে প্রায়ান্ধ দেখেছেন বরাব্বর, গার্শপও। তারপর বাবা পেটের ব্যথায় ছটফট করতে করতে মারা যান বুরহানপুরের কেল্লায় ... ...
ভূমিকা:ক্যালকাটা ফায়ার ব্রিগেড, যা এখন কলকাতা ফায়ার ব্রিগেড নামে পরিচিত, একটি খ্যাতিমান এবং ঐতিহাসিক প্রতিষ্ঠান যেটি প্রায় দুশো বছরের সুদীর্ঘ সময় ধরে, অবিচল সাহস এবং নির্ভরতার সাথে কলকাতা শহরের সেবা করে চলেছে।১৮৬৫-সালে প্রতিষ্ঠিত,এটি ভারতের প্রাচীনতম ফায়ার ডিপার্টমেন্টগুলির মধ্যে একটি হওয়ার গৌরব লাভ করেছে। আজকে,অগ্নি নির্বাপক কলকাতার সব অফিসগুলির মূখ্য কার্য্যালয় হল পার্ক স্ট্রীটে।তার দীর্ঘ এবং ঘটনাবহুল সময়ের যাত্রা জুড়ে, ব্রিগেডটি বীরত্ব, স্থিতিস্থাপকতা ... ...
মানব সভ্যতার সাথে মাইগ্রেশন শব্দটি ওতপ্রোতভাবে জড়িত। বাণিজ্যের কারণে সে এক দেশ থেকে অন্য দেশে গিয়েছে। প্রাকৃতিক কারণে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গায় যেতে বাধ্য হয়েছে। আরও বিভিন্ন কারণে সে এক জায়গা থেকে অন্য কোথাও পালিয়ে গেছে। নিজের চেনা জায়গা, চেনা পরিবেশ ছেড়ে অন্য জায়গায় গিয়ে সে মৃতপ্রায় হয়েছে। মাইগ্রেশন-এর আভিধানিক অর্থ অভিপ্রয়াণ, আবার "অভি" কথার অর্থ "সাদৃশ্য" হয় এবং "সমীপ" হয়। অর্থাৎ মৃত্যু-সদৃশ বা মৃত্যু-সমীপ। সে নিজে মৃতপ্রায় হলেও নতুন জায়গায় সে বয়ে নিয়ে গেছে তার নিজস্ব ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি। নতুন জায়গার ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতির সাথে আগত নতুন ভাষা, কৃষ্টি, সংস্কৃতি মিলেমিশে একাকার হয়েছে এবং উদ্ভব হয়েছে মিশ্র ভাষা ... ...
ঘুম থেকে উঠে চোখ কচলাতে কচলাতে বউ বা মায়ের কাছে 'বেড টি’ চাওয়া কিংবা নিজের পরা জামা-কাপড় কাচবার জন্যে মায়ের অপেক্ষায় বাথরুমের এক কোণে ডাঁই করে রেখে দেওয়া- শিশুর দল এখন মোল্লা দেশের নারী মুক্তি নিয়ে মত্ত। এমনকি আমাদের ঘরের বাপ-কাকা'রা যারা নিজেদের মেয়েদের রুটিন মাফিক জীবন ও শরীর ঢাকা পোশাক পরার বিধান দেন, তা না হলেই নিজের “স্ত্রী” মানে মেয়ের মায়ের গায়ে হাত তুলতেও পিছু হটেন না, তারাও আজ ইরানের মোল্লা সরকার কে- নারী স্বাধীনতা হরণকারী বলে সেলফোনের ভেতরে কেটে কুচিয়ে দিতে ব্যস্ত। বেশ মজার বিষয় না! এতটা দ্বিচারী চেতনা সম্পন্ন কেন এরা? এতেও কি কেবল তাদের দোষ? না! ... ...
বই ছাপাতে লাগে বিপুল পরিমাণ কাগজ।এই কাগজ আসে গাছের থেকে। ২০০ পৃষ্ঠারএক বই ছাপাতে আনুমানিক ১০০ গাছের দরকার। এইবার ভাবুন বইমেলা মানে কতগাছের মরণ। যারা গুরুর লেখক তারা বলবেন আমার বইবের করবার ক্ষমতা নেই তাই এই জ্বলন।আজকাল সেই রকম বই কি আর প্রকাশিত হয় যা পড়ে চিন্তার জগতে আলোড়ন হয়? বই পড়ব কেন? কারন বই হচ্ছে বিশ্ব দর্শনেরএক জানলা। বিভূতিভূষণের আরণ্যক পড়েআমি চলে গিয়েছিলাম লবটুলিয়ার জঙ্গলে।কপাল কুন্ডলা পড়ে ভেবে ছিলাম অনেক কিছু। নারায়ণ সান্যালের এক এক বই এক এক স্বাদের। অনেকে বলবেন আমি প্রথাবিরোধী সাহিত্যের মর্ম বুঝি না। সাহিত্য মনে ষড় রসের ভিয়েন বসায়, যে ভিয়েনেরগন্ধ সিজার বাগচীর লেখায় পাই না, আধুনিকসাহিত্য ... ...
চরিত্রহীন শুকদেব চট্টোপাধ্যায় ওই নব ডাক্তার যেন আর আমাকে দেখতে না আসে। অন্য কোন ডাক্তার পাওয়া যায় ভাল, না হলে আমার আর চিকিস্যের দরকার নেই। -- বেশ জোরের সঙ্গে ছেলেপিলেদের সামনে নিভাননি নিজের সিদ্ধান্ত জানিয়ে দিলেন।কি এমন হল যে ডাক্তারবাবুর ওপর হঠাৎ মা এত চটে গেল। ছেলে বৌদের কাছে ব্যাপারটা ঠিক বোধগম্য হচ্ছে না।বড়ছেলে বিনয় জিজ্ঞেস করে—কেন মা কি হল? নবারুন সান্যাল তো ভাল ডাক্তার, এলাকায় ... ...
মনে হয় না বাংলাদেশ সেকুলার হবে। ভারতও পশ্চিমা অর্থে সেকুলার নয়। সর্ব ধর্ম সমভাব মানে পশ্চিমা সেকুলারিজম নয়। সেকুলারিজমে রাষ্ট্রের ধর্ম বর্জনের যে ধারণা আছে তার বাস্তবতা দক্ষিণ এশিয়ায় নেই। তাছাড়া ও বাংলায় শরিয়তি প্রভাব ব্যাপক। তার সামাজিক ভিত্তিও গভীর। বাংলাদেশের এই ব্যাপক শরিয়তি প্রভাব অন্য ধর্মাবলম্বী যারা সংখ্যা লঘু তারা সইতে পারছে কিনা, মুসলিমরা তার জো রাখছে কিনা এখন ... ...
(১) হীরা দিয়ে কাটা হবে বৃক্ষ কয়েক লাখ'বাক্সওহা'র গর্ভেতে তিন কোটি ক্যারাট;বুন্দলখন্ড খরাতে মরছেই কিষাণফের বৃক্ষ কর্তনে অস্ত পরিত্রাণ।(২) 'কেন্-বেতোয়া'প্রকল্প,বন্ধ নাহয় যদি'পান্না ব্যাঘ্র অরণ্যের' ভয়ঙ্কর ক্ষতি! টেলিস্কোপে হীরকরাজ! সাবধান বিজ্ঞতেইশ লক্ষ বৃক্ষের নিধন যজ্ঞ!!
গুরুচণ্ডা৯ প্রকাশনা থেকে ২০২৩ বইমেলায় প্রকাশিত 'আট পাঠে এক কবি' বইয়ের 'সম্পাদকের প্রসঙ্গকথা'য় সাহিত্যিক অভীক মজুমদার লিখেছেন, 'মাইকেল-বঙ্কিম-রবীন্দ্রনাথ তো বটেই, তিন বাঁড়ুজ্যে এবং কবিতার ''আধুনিকবাদী'' পঞ্চরথীর কল্যানে বাংলার সাহিত্যচর্চা নিজেদের দিকে তাকিয়েছিল একটু বেশি।' আমার প্রশ্ন: কবিতার এই 'আধুনিকবাদী পঞ্চরথী' কারা ও কেন?
বসন্তে পাখিদের কলরবে, / ভেঙ্গে যায় নির্জনতা। / শিমুলের কড়ি ভরিয়া উঠে, / সিমু' র কোঁড়চা।
হ্যাঁ অনেক অপেক্ষা করার পর বুঝলাম এবং এই সিদ্ধান্তে এলাম যে এখনো উচ্চশিক্ষিত মহলে, যারা অনেক ক্ষেত্রে মানুষ গড়ার কারিগর সেখানেও অর্থ, সামাজিক অবস্থানই মানুষের সাথে মানুষের সম্পর্কের মাপকাঠি। এবং যদি কোথাও এর অন্যথা হয় তবে সমাজ সংস্কারকরা নিজ উদ্যোগে তা সুন্দর শুধরে দেন। তাকে যেমন আমরা পুতুল সাজাই। কোনটার পাশে কোনটাকে মানাবে। কোনটা কে দিয়েছিল। তাঁর এসে দেখলে কেমন লাগবে। তাঁর দেওয়া পুতুল কেমন আছে। দামী পুতুল ভঙ্গুর ... ...
আহেলী ঠিক আমার কাছে যতটা প্রিয়, তার থেকেও অধিক তুই ।হয়ত! কয়েকটা বাক্যে ,তা বোঝাবার ক্ষমতা নেই ।আমার চাওয়া-পাওয়ার অধীনে ।হয়ত,শরীর দিয়ে না ,হয়ত মন দিয়ে ও না ,তোর জায়গা করেছিস , তোর অশ্রু দিয়ে । যদিও এ সমাজে শরীর শেষ কথা বলে , আমি শারিরীক ভাবে নয় !বরং , শরীরকে কাছে রেখেই কথা বলতে চাই ।।কারন , শরীর তো কাছে থেকেই কথা কয় ।দিন, সত্যি বদলায় ।।চোখে চোখ রেখে, মনের সাথে তাল মিলিয়ে। আজ তুই আমার থেকে বহু দূরে ।তোকে লেখার জন্য কাগজ কলম থাকলেও !আজ বার্তাবাহকের অভাব ।।তাই , শব্দহীন চিঠিগুলো!অগোচরেই মারা যাক ।। ... ...
গঙ্গার পশ্চিমপাড়ে জগদ্ধাত্রী পুজোকে ঘিরে বেশ একটা সাজো সাজো ব্যাপার স্যাপার বাংলা বছরের শুরু থেকেই থাকে। চন্দননগর মা জগদ্ধাত্রীর মনোপলি একটা সময় পর্যন্ত নিয়ে ধরে রেখেছিল। গঙ্গার পশ্চিমপাড়ে ঠাকুরণ প্রায় আসতেনই না। শ্রীরামকৃষ্ণ ভাবান্দোলনের প্রভাবে বাঁকুড়ার জয়রামবাটী তে প্রায় একশো বছর ধরে জগদ্ধাত্রীর বেশ জনপ্রিয়তা। তবে এই জনপ্রিয়তার সঙ্গে ধর্মের মাত্রাতিরিক্ত প্রলেপ মিশে, যে সামাজিক সঙ্কট মোকাবিলা করতে সারদামণির গর্ভজননী শ্যামাসুন্দরী দেবী, জগদ্ধাত্রী পুজোর আয়োজন করেছিলেন, সেই প্রেক্ষিতটি কিন্তু ঢাকা পড়ে গেছে। ... ...
এক একটা ঘটনা ধূপের গন্ধের মতো। ধূপের গন্ধ যেমন ঠাকুর ঘর মনে করায় তেমন বর্তমানে ঘটে চলা কোনো ঘটনা হাত ধরে নিয়ে চলে পুরোনো কোনো স্মৃতির অলিন্দে।জগতের আনন্দজজ্ঞে সবে মাত্র সমাপ্ত হওয়া অলিম্পিক্স সেই ধূপের গন্ধ। অলিম্পিকের মানে বুঝতে আশির দশকের শিশুর ক্লাস সেভেনে উঠতে হয়েছিল। আর যেমনি বোঝা অমনি শুরু হল আয়োজন। এত গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার অধরা থেকে যাবে তা তো হয় না। মনে আছে আমাদের পাড়ার যে খেলার গ্ৰুপ ছিল সেখানে সদস্য হতে গেলে বয়সের কোনো সীমারেখা রাখা হত না। তা না হলে সদস্য বে-দল হতে পারে। প্রত্যেক সদস্যই নিজ নিজ যোগ্যতায় স্বমহিমায় থাকতেন।সেই গ্ৰুপে একবার অলিম্পিক্সের আয়োজন করতে ... ...