ঘন্টাখানেক পরে বাঁধানো রাস্তা শেষ হয়ে পাহাড়ের গায়ে জঙ্গলের রাস্তা ধরে নামা শুরু হল, এই রাস্তাটা একেবারেই যাকে বলে ‘Road less travelled’, নিত্যমের মতে এটা শর্টকাট। উঁচুনীচু, ছোটো নালা, জল-কাদা সব মিলিয়ে বেশ চাপের রাস্তা, তবে আমাদের আজ উৎসাহের অভাব নেই, মেরে এনেছি প্রায়! এতক্ষণ শুধু শব্দ পাচ্ছিলাম, এবার শ্রীখোলা নদী-ও আমাদের পাশে এসে হাজির, কলকলিয়ে ছুটে চলেছে পাথরের উপর লাফ দিয়ে দিয়ে, এখানে বুনো লতার সঙ্গে কিছু লাউ, চালকুমড়োর গাছ-ও একেবারে পথের উপর এসে পড়েছে, টাটকা ফলন সমেত। কিছু আধখাওয়া, পাখি বা পান্ডায় খেয়েছে হয়ত। এরপর বেশ কিছুটা রাস্তা ‘W’ এর মত, ওঠা আবার নামা। এই করে করে হঠাৎ এক জায়গায় এসে দেখি রাস্তা নেই। মানে যাকে বলে ‘literally’ নেই। দু-ইঞ্চি মত মাটি লেগে আছে পাশের দিকে, আর বাকি রাস্তাটা নীচে খাদে নেমে গেছে সোজা। এই নাকি নিত্যমের ‘শর্টকাট’! আমরা ভাবছি আবার কতটা ফেরৎ গেলে অন্য পথ পাবো, ওদিকে নিত্যম আর বাইচুং দেখি ওখান দিয়েই আমাদের পার করার মতলব করছে! মোটামুটি পাঁচ থেকে ছ’ফুট মত আমাদের পার হতে হবে, এ তো পুরো স্কুলের স্পোর্টস-এর লং জাম্প! একদিকে খাদ, আর একদিকে নব্বই ডিগ্রী খাড়া পাহাড়। যাই হোক, নিত্যম-এর উপদেশ-মত দু’জন করে হাত ধরাধরি করে এগোলাম, পেছনে রইল বিক্রম, সামনে নিত্যম, তারপর ওই আধ ইঞ্চি মাটিতে কি করে পা রেখে এগোলাম, ওপারে গেলাম, কিভাবে শরীরের ব্যালান্স রাখলাম - সে আর মনে করতে চাই না! এরপরের রাস্তা আর খুব বেশী ছিল না, পরপর কিছু ধাপ পার হতেই অবশেষে শর্টকাট শেষ হয়ে পথ মিলে গেল গাড়ির রাস্তায়। আর নীচে পাকদন্ডী শেষে দেখা গেল শ্রীখোলা ব্রিজ আর দু-তিনটে বাড়ির মাথা। ... ...
সে যার যার সঙ্গেই মিল পান, মনে রাখবেন আতঙ্কবাদীদের চেষ্টা থাকে মূলতঃ নিরীহ সাধারণ মানুষ মেরে একটা ভয়ের পরিবেশ তৈরি করা, লোকে বাড়ি থেকে বেরোতে, অফিসে ব্যবসার কাজে যেতে, বাসে ট্রেনে চড়তে ভয় পায়। এর জন্য বিস্ফোরন ইত্যাদির ফলে সরাসরি সম্পত্তি নষ্ট হওয়া ছাড়াও দীর্ঘকালীন অর্থনৈতিক ক্ষতির সম্ভাবনা থাকে। সম্ভাব্য মারাত্মক ঘটনার জন্য লোক যে কত ভয় পেতে পারে তা দেখেছিলাম এক বার বাসে, তবে সে কথা পরে হবে। ভয় কাটিয়ে উঠতেই হয়, নইলে জীবন চলে না। এই যে জ্ঞান বিতরণ করছি, সেই আমিও কি ভীত হইনি ? হয়েছি, সুকুমার রায়ের ষষ্ঠীচরণ তো আর নই, নিরীহ বঙ্গপুঙ্গব, জোর ভয় পেয়ে গেছিলাম। তবে লাজপত নগরের বিস্ফোরনের জন্য নয়। দাদাঠাকুরের মত ‘পেট্রিয়ট’ কেস। ... ...
কবিতার গায়ে যদি পদ্মাপাড়ের ইয়ে থাকে ? ... ...
লিটল ম্যাগাজিন শব্দপ্রতিমার বই ... ...
মাচুপিচুতে রয়েছে ১০০টিরও বেশি সিঁড়ি যার মধ্যে কিছু কিছু একটি মাত্র গ্রানাইট পাথর কুঁদে তৈরি করা হয়েছে। মাচু পিচুর নকশা কয়েক ভাগে ভাগ করা। শহর এবং কৃষিক্ষেত্র, উপরের শহর এবং নিচের শহর। মন্দির গুলো অবস্থিত ছিল উপরের শহরে আর নিচের শহরে ছিল গুদাম। এই নকশার ভিত্তিতে পর্বতের উপরে পূর্ব-পশ্চিম কেন্দ্রীয় বর্গ ঘিরে প্রায় ২০০ টি স্থাপনা নির্মিত হয়। “কাঞ্চা” নামের লম্বা এবং সংকীর্ণ প্রাঙ্গণগুলো কাজে লাগানোর উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়। জমিতে জল দেয়ার জন্য ব্যবহার করা হত অত্যাধুনিক পদ্ধতি। দেয়ালের গায়ে তৈরি পাথরের সিঁড়ি ব্যবহৃত হত পুরো স্থানের বিভিন্ন স্তরে যাওয়ার জন্য। শহরের পূর্বাংশ সম্ভবত ছিল আবাসিক এলাকা। পশ্চিমাংশ ব্যবহৃত হত ধর্মীয় এবং আচার-অনুষ্ঠানাদির কাজে। ... ...
কলেজ স্ট্রিট নিয়ে সাড়ে চার দশকের অভিজ্ঞতা ... ...
আমার গায়ে হুগলি পাড়ের রক্ত মাংস পূঁজ সবই আছে স্যার ... ...
তিন-চারদিন পরের কথা। রাস্তার নারকীয় জ্যাম আমার অফিস টাইমের আয়ু আধা ঘন্টা কমিয়ে দিয়ে মেজাজকে সপ্তমে তুলে রেখেছিল। এই সময়টুকুতে কতটুকু এগিয়ে যেতে পারতাম দিনের কাজে, যতবারই ভাবছিলাম, আমার স্নায়ুদেশ ক্ষতবিক্ষত হচ্ছিল। কোন কাজে মন বসছিল না। নিতান্ত অনিচ্ছায় সেদিনের স্থিতিপত্র হাতে তুলে নিতেই চোখ চলে গেল ঋণের ফিগারে। বেড়েই চলেছে, প্রতিদিনই একটু একটু করে বাড়ে, মনে হয়, দুনিয়ার শেষদিন পর্যন্ত বেড়ে চলবে, কারণ যত না ঋণ শোধ হয়, তার থেকে অনেক অনেক বেশী ঋণ অশোধিত থাকে এই পৃথিবীতে। প্রায় মগ্ন হয়ে পড়েছিলাম, কিন্তু একটা ছায়া সংকেত আমায় চোখ তুলতে বাধ্য করল, দেখি দুলাল একটা ফাইল হাতে দাঁড়িয়ে, সেই আগের মত, কিছুটা বাঁকানো, ঝুঁকে পড়া দেহ, আর চোখ তেমনি আবডালে রাখা। ... ...
বহুদিন ধরে জনৈক "হরিদাস পাল" হয়ে - "ধর্মাধর্ম" রচনা করেছিলাম এই গুরুচণ্ডা৯-তে - এখন গুরুচণ্ডা৯ প্রকাশন প্রকাশ করেছে "ধর্মাধর্ম" গ্রন্থ - লেখার সময় আপনাদের যেমন সহযোগিতা পেয়েছিলাম, আশা করব এখন গ্রন্থ হিসেবেও এটি একই রকম সাড়া পাবে। ... ...
একজিট নিয়ে দাঁড়িয়ে গিয়েছিলাম শুনশান গলিতে। এফ এম বন্ধ করে দিলে এখন শুধু মেটাল বডি আর জলের ঠোকাঠুকি, ওয়াইপারের সুইশ সোয়াশ, সুইশ সোয়াশ আর রেনওয়াটার পাইপ থেকে গবগব করে জল বেরোনোর ননস্টপ আওয়াজ। লাল, হলুদ, নীল, সবুজ একতলা, দোতলা, তিনতলা বাড়ির দেওয়াল বেয়ে জল নামছিল নিঃশব্দে, গড়ানো ঢালের গলি বেয়ে বড় রাস্তায় পড়ছিল। ওদিকের দেওয়াল ঘেঁষে একটা শেড, তার পাশে আগাগোড়া প্লাস্টিক ঢাকা ঠ্যালাগাড়ি- ট্রেনে কাটা পড়া ডেডবডি যেন। শিউলিদের গলির কথা মনে হ'ল। ... ...
আলপনা দেওয়া কবিতার নিকোনো উঠোনের মাঝে একটি দামড়া বাইক আড়াআড়ি দাঁড় করিয়ে পাশের দোকানে বিড়ি ধরাতে চলে গেছেন তিনি। আর ক্যানভাস জুড়ে এঁকে রেখেছেন একটি অসহ্য স্থির ছবি যার দিকে তাকিয়ে বাকিরা ভেবেই চলেছে শালা এরা নড়ছে না ক্যানো! ... ...
এককের সাম্প্রতিকতম কবিতার বই - "বিনাহ বিতাস" ... ...