এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  ঘুমক্কড়

  • কেদারনাথের সৌজন‍্যে

    সমরেশ মুখার্জী লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | ঘুমক্কড় | ১৯ অক্টোবর ২০২৩ | ৫১৫ বার পঠিত | রেটিং ৫ (২ জন)
  • আমার খুব কমখরচে একাকী ভ্রমণের কাহিনী শুনে বন্ধুরা বলে মধ‍্যপ্রদেশ খুব সস্তা‌র জায়গা, তুই যাস‌ও অফবীট জায়গায় হোবো স্টাইলে ঘুরতে, তাই দিনপ্রতি পাঁচ ছশো টাকায় সম্ভব। পাহাড়ি জায়গায় এতো কমে অসম্ভব। ২০১৯এর মে, জুনে চারধাম যাত্রার পীক সীজনে‌ উত্তরাখন্ডে ৩৫ দিন (বাড়ি থেকে বাড়ি) একাকী ভ্রমণ করে এলাম দিনপ্রতি ২৯৫ টাকায়। অবশ‍্য মনিপাল থেকে হরিদ্বার অবধি যাওয়া আসার থ্রি এসিতে ট্রেনভাড়া বাদে। গরমে স্লিপার ক্লাসে বিয়াল্লিশ ঘন্টা আড়াই হাজার কিমি যাত্রা করার সহ‍্যশক্তি নেই‌। শীতকাল হলে স্লিপারেই যাই। জানলা দিয়ে বাইরে আশপাশ দেখতে দেখতে, সহযাত্রীদের সাথে গল্পগাছা করতে করতে যেতে ভালো‌ই লাগে। তিনশো টাকায় কি‌ই বা হয়। তবু তাতেই থাকা, খাওয়া, যাতায়াত - তাও হিমালয়ে পাহাড়ি জায়গায়। এবার বন্ধু‌রা বলে - কীভাবে করিস বল তো!
     
    ভালো হোটেলে থেকে, রিজার্ভ গাড়িতে বেড়ানো‌র সাচ্ছন্দ‍্য ও নিশ্চিন্ত‌তা অনস্বীকার্য। দলে শিশু, মহিলা, বয়স্ক থাকলে তা প্রয়োজনীয়‌ও বটে। তবে আমার কাছাখোলা একাকী ভ্রমণে সেসব দায় নেই। জনপরিবহণে গমন, হট্টমন্দিরে শয়ন, পরিমিত ভোজন ও যথাসাধ‍্য হন্টন আমার এমন ভ্রমণের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। অনেক‌বার ঘনিয়ে ওঠা কিছু অনিশ্চয়তা আশ্চর্য আপতনে কেটে যাওয়ার আনন্দ‌ তুলনাহীন। এতো কম খরচে একাকী ভ্রমণ অনেকে‌র কাছে অযথা কৃচ্ছসাধন মনে হতে পারে তবে আমি মজে গেছি এ মজায়।

    সেবার কর্ণপ্রয়াগে লোয়ার বাজারে পাতি হোটেল‌ও বলেছিল হাজার। আপার বাজারে কেদার-বদ্রী মন্দির কমিটির ধর্মশালা চারশয‍্যার ঘর দিয়েছিল দুশো টাকায়। মানে যদি চারজনের দলে যেতাম খরচ পড়তো মাথাপিছু পঞ্চাশ টাকা। বাহুল‍্য‌হীন পুরোনো ঘর, সিমেন্টের মেঝে। তবে ঘর, বিছানা, বাথরুম পরিস্কার। বছর চল্লিশে‌র কেয়ারটেকার‌টি অমায়িক। 
     
    গোপেশ্বরে গিয়ে‌ তাই প্রথমেই খোঁজ ক‍রলাম মন্দির কমিটির ধর্মশালার। কিন্তু সেখানে তখন অন‍্য গল্প। এক স্থানীয় হোটেল ব‍্যবসায়ী কমিটির থেকে যাত্রীনিবাসটি দীর্ঘমেয়াদী লিজে নিয়ে, আমূল সংস্কার করে বানিয়েছেন ম‍্যারেজ হল। আছে কয়েকটি মাত্র দ্বিশয‍্যা ঘর। বেবাক খালি তবু ভাড়া চাইলেন আটশো। মান অনুযায়ী বেশি নয়। তবে আমার বাজেটে আসে না। কী ভেবে একাকী যাত্রী‌র জন‍্য নামলেন পাঁচশোয়। তার অফার ব‍্যাক‌আপে রেখে, ফোন নম্বর নিয়ে এক্সপ্লোর করতে গেলাম প্ল‍্যান বি।
     
    প্রাচীন গোপীনাথ মন্দির ASI এর তত্বাবধানে। এটি পঞ্চকেদারের এক কেদার রুদ্রনাথের শীতকালীন আবাস। তখন কিছু সংস্কার চলছে। তৈরী হচ্ছে নতুন শৌচালয়, RO Plant, Cloak Room। পাঁচিল ঘেরা পরিসরে দুদিকে প্রাচীন দোতলা বাড়িতে অনেক ঘর। একটি‌তে পূজারী থাকেন। বাকি সব তালা বন্ধ। পিছনে বর্তমান শৌচালয়। পরিস্কার,  গীজার লাগানো, ২৪ ঘন্টা জল। মন্দিরের ঠিক পিছনে একটি বড় একতলা ঘর। পাথরের দেওয়া‌ল, পাথরের ঢালু ছাদ, সিমেন্টের মেঝে। ধূনীর ধোঁয়ায় ছাদ কালো, LED ল‍্যাম্পের আলো হলদেটে।

    দীর্ঘদেহী, রাশভারী ASI গার্ড রামপ্রসাদ‌ জানান যাত্রা সীজনে পথচলতি সাধুরা ওখানে দু এক রাত কাটায়। জানতে চাই, আমি‌‌ কি ওখানে দু রাত থাকতে পারি? এক পরিচিত পাহাড়ি দাদা নিজের সম্পর্কে মজা করে বলতেন, আমায় তো দেখতেই চোরের মতো, পুলিশে ধরলে একরাত থানা লক আপে কম্পালসারি হাজতবাস, তারপর কথাবার্তা। আমার ক্ষেত্রে হলো উল্টো। 'আপনি' থাকবেন ওখানে! 'আপনি'-তে জোর দিয়ে জন্মসূত্রে লব্ধ বদনে থমকে দাঁড়ায় রামপ্রসাদের বিহ্বল দৃষ্টি‌। 

    পায়ে দামি Woodland জুতো, পিঠে Quechua স‍্যাক। তার সাথে সন্ত আবাসের খরখরে সিমেন্টের মেঝের কম্বিনেশন হয়তো ঠিক জমে না ওর মনশ্চক্ষে। তাই জিজ্ঞাসা‌য় বিস্ময়ের ছোঁয়া। তবে মেট্রো ফুটপাতের মরা সাহেবের ঢলঢলে পাতলুন, ইস্ত্রি হীন জামা, দু দিনের না কামানো দাড়ি, অবিন‍্যস্ত না-কলপ কেশ - কিছুটা ব‍্যালান্স করে। হয়তো ভাবে কোনো বিচিত্র নমুনা। তাই একটু মেপে নিয়ে বলটা নিজের কোর্টে‌ না রেখে রামপ্রসাদ বলেন, এখানে রাতে থাকার অনুমতি দেওয়ার এক্তিয়ার আমার নেই। বিকেলে ডিউটি অফিসার কেদার‌নাথজী এলে আপনার কথা জানাবো। ওনার সিদ্ধান্ত‌ই ফাইনাল। তবে চাইলে ততক্ষণ ওখানে বিশ্রাম নিতে পারেন। 
     
    ফার্স্ট রাউন্ডে গুঁফো পালোয়ান‌কে পটিয়ে মনে আশা জাগে। ভাবি সেকেন্ড রাউন্ডে কেদারনাথজীকে‌ও ঠিক ভজাবো। ওজন কম রাখতে একাকী ভ্রমণে রাখি মাত্র এক প্রস্থ অতিরিক্ত পাজামা, শার্ট। পরিস্কার টয়লেটে চান করে, দাড়ি কামিয়ে, জামাকাপড় কেচে নি‌ই। বাসস্ট্যান্ডে‌র কাছে হোটেলে লাঞ্চ করে এসে মেঝেতে প্ল‍্যাস্টিক, ম‍্যাট পেতে বডি ফেলি। দুটো স‍্যাক নিয়ে আশ্রয়ের খোঁজে ওপর নীচ করে বেশ ক্লান্ত লাগছিল। ঘন্টা দেড়েক দিবানিদ্রা দিয়ে ফ্রেশ হতেই দরজা দিয়ে মুখ বাড়ালেন ডিউটি অফিসার কেদার‌নাথজী।
     
    গৌরবর্ণ, স্বাস্থ‍্যবান, ব‍্যাক্তিত্বময় চেহারা। বলেন, রামপ্রসাদ বললো, সাধু নয়, এক বাঙালি ট‍্যূরিস্ট এখানে রাতে থাকতে চায়। আপনি‌ই কী সেই? মন্দির প্রাঙ্গণে বেরিয়ে এসে বলি, আজ্ঞে হ‍্যাঁ, তবে তা নির্ভর করছে আপনার অনুমতির ওপর। যদি থাকতে দেন খুব খুশি হবো। উনি বলেন, থাকার জন‍্য তো অনেক হোটেল আছে, এখানে থাকতে চাইছেন কেন? বলি, আমার খুব বেড়ানো‌র শখ, বছরে বেশ কয়েকবার বেশ কিছুদিনের জন‍্য বেরো‌ই। রিটায়ার্ড মানুষ, পেনশন নেই, একটা স্ক‍্যামে সঞ্চয়ের অনেকটা পয়সা গচ্চা গেছে, অথচ না বেড়িয়েও থাকতে পারি না, তাই খরচ কমাতে বাসে ঘুরি, এন্তার হাঁটি, মন্দির, আশ্রম, গুরুদ্বারায় থাকি। আমার বাজেট কম।
     
    মনে হোলো আমার এ্যাপিয়ারেন্সের সাথে কথাগুলো ঠিক মেলাতে পারছেন না। ঢপ মারছি, ভাবছেন না তো? একটু চুপ করে কী যেন ভাবলেন। তারপর বলেন, সাথে আধার কার্ড আছে? আধার, ড্রাইভিং লাইসেন্স, ভোটার আইডি একসাথে দেখালাম। মনে হলো কাজ হোলো। কোত্থেকে আসছি, কতদিন ধরে ঘুরছি, এরপর কোথায় যাবো, অবসরের আগে কী করতাম, এ জাতীয় একটু আলাপচারিতার পর বলেন, দেখুন, এটা অত‍্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ একটি পূরাতাত্বিক স্থান। রাত নটায় গেট বন্ধ হলে মন্দিরচত্বরে বাইরের কাউকে থাকতে দেওয়া হয় না। সাধুদের ব‍্যাপার আলাদা কিন্তু আজ অবধি কোনো ট‍্যূরিস্ট এখানে থাকে নি। তাই একটু 'ছানবিন' করলাম। কিছু মনে করলেন না তো? কদিন থাকবেন? 
     
    বুঝি ডাল সেদ্ধ হয়ে এসেছে। ভাতঘুম দেওয়া দাড়ি কামানো তরতাজা বদনে অমায়িক হেসে বলি, তাতে কী হয়েছে, খোঁজখবর নে‌ওয়া তো আপনার ডিউটি। এখানে আজ রাত থাকবো। যদি অনুমতি দেন, কাল রামপ্রসাদের জিম্মায় সিকিউরিটি কেবিনে বড় স‍্যাকটা রেখে অনসূয়া দেবী ঘুরে আসবো, কাল রাতটা ওখানেই কোথাও থাকবো। ফিরে এসে আর এক রাত এখানে থেকে পরদিন যোশিমঠ চলে যাবো।
     
    তিনি একটু চিন্তিত মুখে বলেন, অনসূয়া দেবী‌ও কি একলাই যাবেন? বলি, একাই তো বেরিয়ে‌ছি, আর কাকে পাবো বলুন। কিন্তু একথা কেন জিজ্ঞাসা করছেন? উনি বলেন, সিরোলি গাঁ‌ওয়ের পর শেষ  দু কিমি একদম বিরান জঙ্গল। মাঝে মধ‍্যে ওখানে বিকেলে‌র দিকে লেপার্ড দেখা গেছে বলে খবর শুনেছি। দলে গেলে বা মেলার সময় গেলে ঠিক আছে, কিন্তু একদম একা যাবেন? শুনে একটু দমে গেলাম। অনেক আশা করে এসেছি‌লাম, অনসূয়া দেবী মন্দির ও অত্রি মুনীর গুহা দেখবো। 
     
    আমার নিভে যাওয়া মুখভাব দেখে বলেন, শেষ বিকেলে ও পথে গেলে একটু চিন্তা‌র বিষয়। তবে আপনি তে এখান থেকে সকাল সকাল বেরিয়ে বারোটা একটা নাগাদ ওখানে মন্দিরে পৌঁছে যাবেন। সিরোলি‌তে না হয় একটু অপেক্ষা করবেন, আর কেউ গেলে একসাথে যাবেন। নয়তো গাঁয়ের কাউকে শখানেক টাকা বখশিশ দিলে আপনাকে মন্দিরে ছেড়ে দিয়ে আসবে। অতো ভয়ে‌র কিছু নেই। মনে ভেবে যখন এসেছেন, মাতাজী‌র নাম নিয়ে চলে যান। রাতে তো ওখানেই থাকবেন। পরদিন সকালে একটু রোদ উঠলে নামবেন। আচ্ছা এখানে যে থাকবেন, সাধুরা কিন্তু গাঁজা টাঁজা খায়, আপনার অসুবিধা হবে না? বলি, দুটো জানলা আছে, সুন্দর হাওয়া চলছে, আমার কোনো অসুবিধা হবে না। উনি বলেন, তাহলে থাকুন বেফিকর। হাত জোড় করে নমস্কার করে ধন‍্যবাদ জানাই। মনে মনে বলি, আপনি আমার জন‍্য কতো ভাবলে‌ন। ঈশ্বর আপনার মঙ্গল করুন‌। মানুষটি সত‍্যি সহৃদয়। বহুবার একাকী যাত্রা পথে এমন সব সুন্দর মানুষের সহৃদয়‌তায় মুগ্ধ হয়েছি। স্মৃতি‌তে স্থান করে নিয়েছেন তাঁরা।



    গোপীনাথ মন্দিরের পিছনে সন্ত আবাস (সবুজ তীর)

    সন্ধ্যায় কেদারনাথ‌জী মন্দির চত্বরে স্থানীয় কয়েকজনের সাথে বসে গজালি করছেন। কানে এলো কাউকে বলছেন, দেখকেই লগতা হ‍্যায় শরীফ ইনসান। পতা নেহি সন্ত আবাস মে  ফারস পে শোকে কিঁউ রহনা চাহাতা হ‍্যায়। লগতা তো নেহী হ‍্যায় সচমুচ কো‌ই মজবুরী হোগি, শায়দ শখ সে। অর্থাৎ আমার ভণিতা‌টি ওনার পুরো হজম হয়নি। তা নাই হোক, কেদারনাথ‌জীর সৌজন্যে গোপেশ্বরে দুটো দিন দিব‍্যি কাটলো নিখরচায়। প্রথমে গুঁফো পালোয়ান রামপ্রসাদ একটু রাশভারী হাবভাব দেখালেও তার বস কেদারনাথ‌জী আমার সাথে ভালো ব‍্যবহার করতে পরে তার আন্তরিক ব‍্যবহারও মুগ্ধ করেছে। 
     
    কপালে কালো টিপ পরা তার পোষ‍্য সাদা কুকুর‌টিও ভারি মিষ্টি। সচরাচর ভক্তজন মন্দিরের প্রসাদ প্রাণী‌দের  খাওয়া‌ন না, বড়জোর গোমাতাকে দেওয়া যেতে পারে। কুকুরকে দিতে আজ অবধি দেখিনি। হয়তো মাংশাষী সারমেয় অন্ত‍্যজ শ্রেণীর প্রাণী হিসেবে গণ‍্য। কিন্তু ওখানে দেখলাম রামপ্রসাদ তাকে মন্দিরের প্রসাদী লিট্ঠি দিল এবং সে মন্দিরের সামনে বসেই কুপকুপ করে খেলো। পরে জানলাম রামপ্রসাদের কাছে সে নিছক পোষ‍্য কুকুর নয়, পুত্রসম। খুব আদর করেছি তাকে। মধ‍্যপ্রদেশে একটি মন্দিরে দেখেছি কুকুরের অন‍্য মান‍্যতা - গর্ভগৃহে মশমশিয়ে ঘুরছে কুকুর, মন্দির চত্বরে ভক্ত‌জন তাদের প্রসাদ খেতে দিচ্ছেন। তার পিছনে অবশ‍্য একটি কাহিনী আছে। আসতে পারে সে প্রসঙ্গ পরে কোনো লেখায়।
     
    পাঁচ হাজার ফুট উচ্চতায় গোপেশ্বর চামোলী জেলার সদর। পরদিন গোপীনাথ মন্দির থেকে শিবজীর  ডোলি যাবে রূদ্রনাথে, তাঁর গ্ৰীষ্মকালীন আবাসে। গ্ৰামবাসীরা সাথে যাবে অদুরে সগ্গর গ্ৰাম অবধি ভগবানকে বিদায় জানাতে। তারপর ডোলিবাহক, পূজারী ও কিছু ভক্ত অরণ‍্যময় পথে কঠিন চড়াই ভেঙে দুদিনে পৌঁছবে ২২কিমি দুরে ১১৮০০ ফুট উঁচু রুদ্রনাথ মন্দিরে। বাকি‌রা সগ্গর থেকে ফিরে আসবে গোপেশ্বর।
     
    মন্দির চত্বরে‌ একটি চালাঘরে কিছু দেবদেবীর ফটো সাজিয়ে, প্রদীপ, ধূপ জ্বালিয়ে গুছিয়ে বসেছেন নন্দনবাবা। আদি নিবাস রাজস্থান। একদা ঘর ছেড়ে সন্ন্যাসী হয়ে পথে নেমেছিলেন। ঘুরেছেন নানা তীর্থে। এখন বয়স হয়েছে। আর পারে‌ন না। তাই এখন আর উনি রমতা যোগী নন। থিতু হয়েছেন গোপেশ্বরে। তিনদিকে পাকা দেওয়া‌ল। সামনে খোলা। এটা‌ই বাবার থান। রাতে ঠান্ডা আটকাতে একটা বড় প্লাস্টিক টাঙিয়ে দেন। থানে মাটি নিকানো মেঝেতে জ্বলছে কাঠের ধিকিধিকি আগুন। গুটিগুটি গিয়ে বসি সেখানে। টুকটাক আলাপচারিতা‌র মাঝে বাবা চা খাওয়ান। মন্দির দর্শনান্তে কিছু শ্রদ্ধালু বাবার থানে আসছেন। বাবা তাদের সিঁদুরের টিপ পরিয়ে বিড়বিড় করে আশীর্বাদ করছেন। থালায় পড়ছে টুপটাপ প্রণামী। 



    নন্দনবাবার ঠেক। ডাইনে কলকে সাজায় রত যুবক নাগা সন্ন্যাসী। এই রাতে রেঁধে‌ছিল এঁচোড়ের তরকারি। রুটি দিয়ে সে প্রসাদ বেশ লেগেছিল
     
    বলি, বাবা, আমদানি তো খারাপ হচ্ছে না! রসিক বাবা মুচকি হেসে বলেন, এ হ‍্যায় বাবাকা ATM। আর ইয়ে আগ হ‍্যায় বাবাকা ধাবা। কভি ভী চায়ে পিনে কা দিল করে, তো শরমাইয়ে মৎ, সিরফ্ ফরমাইয়ে। এক যুবক নাগা সন্ন্যাসী ছিল আমার সাথে ডেরায়। সে তখন বাবার ঠেকে বসে কলকে সাজছে। কয়েক ছিলিম টেনে একটু পরে একটা এঁচোড় কাটতে বসলো। তারপর আটা মাখবে। রাতে গাছপাঁঠার সবজি ও রুটি হবে। বাবা বলেন, রাত মে ইধর‌ই প্রসাদ লে লিজিয়ে গা, বারিশমে বাহার কিঁ‌উ যানে কা? প্রবাদটা জানা আছে। তাই সন্ত-প্রসাদ উপেক্ষা করে পরে সাধা জামাইয়ের এঁচোড় নিয়ে টানাটানি কেসে নেই আমি। সানন্দে রাজি হ‌ই।



    বাবার ধাবায় চাইলেই চা

    বাবার বেশ চায়ের নেশা। খানিক পরে বলেন, ঔর এক দফে হো যায়ে? ঝিমঝিম করে বিকেল নামছে পাহাড়ে। বাড়ছে ঠান্ডা হাওয়ার দাপট। কিন্তু বাবার ঝোপড়ায় মুচমুচে উষ্ণতা। তা শুধু ধুনি‌র আগুনের‌ই নয়। এমন পরিবেশে চায়ে না বলে নিতান্ত বেরসিক। তাই সায় দিয়ে বনে যাই বাবার সাময়িক চ‍্যালা। হাত পা গুটিয়ে সেবা নেওয়া পোষায় না। যুবা নাগা সন্ন্যাসী রান্নার যোগাড় করছে। আমি চায়ের গেলাসগুলো ধুয়ে, এক বালতি জল এনে রাখি। পাশের দোকান থেকে নিয়ে আসি দুধ। বাবা প্রণামীর থালা থেকে খুচরো পয়সা গুণে দুধের দাম দিতে যাচ্ছি‌লেন। ভঙ্গিটা দেখে বড় মায়া লাগে। প্রয়োজন বড় বালাই। সাধুকে‌ও গুনতে হয় কড়ি। আমি বারণ করি। বাবা বড় বড় চোখে ক্ষণিক তাকান। দৃষ্টিতে চিকচিক করে কৃতজ্ঞতা। কম্বলের আসনে বসে চায়ের গ্লাসে জমিয়ে চুমুক দি‌ই। চা টা বাবা ভালো‌ই বানান।
     


    বাবা‌র ঠেকে জমি‌য়ে চলছে চা। নিম্নাঙ্গে সেই ধূবেলা‌র পাতলুন - বহু ভ্রমণের সাথী

    দুটি শিশু আসে। জানলাম তারা বাবার থানে নিয়মিত দর্শনার্থী। ঠাকুরের ফটোতে নমস্কার করে হাত জোড় করে দাঁড়ায়। বাবা দুজনের কপালে সিঁদুরের টিপ পরিয়ে বিড়বিড় করে আশীর্বাদ করে দুজনের হাতে নকুলদানা দেন। ওরা খেতে খেতে চলে যায়। সংসার‌ত‍্যাগী বৃদ্ধ নন্দনবাবা ওদের গমনপথের দিকে তাকিয়ে থাকেন। মুখে কিছু মাখামাখি। ওদের‌ও হয়তো ঐ নকুলদানা‌র জন‍্যে‌ই রোজ থানে এসে প্রণামের  টক্। 



    শিশু দুটি চলে যেতে এলেন এক স্থানীয় মানুষ। তিনি‌ও বাবার ঠেকের নিয়মিত সদস‍্য। একথা সেকথা‌য় প্রকাশ পায় তার বাজারে একটি ছোট থাকার হোটেল আছে। বৌয়ের সাথে খিটমিট লেগে‌ই থাকে। বাড়িতে মন টেকে না। তাই মাঝে মাঝে এখানে এসে বসেন দুদণ্ড শান্তি পেতে। আমি কলকাতার বাঙালি শুনে নানা গল্প করেন। ঐ সাধু আবাসে রয়েছি শুনে বলেন, ওখানে কেন আছেন, শুধু একটা বেবাক খালি ঘর, চলে আসুন আমার হোটেলে। একটা ছোট এ্যাটাচড্ বাথ রুম আছে, সিজনে ভাড়া চারশো, আপনি না হয় দুশো‌ই দেবেন। বলি, আমার এখানে‌ও কোনো অসুবিধা হচ্ছে না। একটু পরে উনি চলে যান‌। নাগা সন্ন্যাসী আটা মেখে এঁচোড়ের তরকারি‌ খানিক্ষণ আগুনে কষে কড়াই‌য়ে ঢাকনা চাপা দিয়ে ধুনি‌র গুমো আঁচে বসিয়ে সাধু আবাসে গেছে সান্ধ‍্য উপাসনা করতে। পরে এসে রুটি বানাবে। আমরা দুজনে শুধু তখন ঠেকে। বাইরে অন্ধকার। ভিতরে একটা লো পাওয়ারে মৃদু আলো জ্বলছে। সেটাই ভালো‌ই লাগছে। ঐ পরিবেশে উজ্জ্বল আলো বেমানান।
     
    একটু পরে এলেন কুয়েত প্রবাসী এক প্রৌঢ় বঙ্গ-দম্পতি। নাথ সম্প্রদায়, কেদার মাহাত্ম্য ইত‍্যকার বিষয়ে মহিলা‌টি বাবাকে নানা বিক্ষিপ্ত প্রশ্ন করেন। বাবা‌  হেঁয়ালি‌মার্কা উত্তর দেন। পত্নীর প্রশ্নোত্তর পর্বে পতির কোনো তাপ-উত্তাপ নেই। VIPদের ছায়াসঙ্গী কমান্ডোর মতো তিনি ভাবলেশহীন মুখে ঝিরিঝিরি বৃষ্টিতে স্ত্রীর মাথায় ছাতা ধরে দাঁড়িয়ে। অন্তিমে মহিলাটি পেশ করেন তাঁর ধর্মসংকট - বাবা, আমি কৃষ্ণজী ও শিবজী - দুজনার‌ই ভক্ত। এবার ভারতে এসে মথুরা, বৃন্দাবন হয়ে উত্তরাখণ্ডে এসেছি পঞ্চ কেদারের কয়েকটি‌ দর্শনে। বুঝে পাইনা কাকে আমি ইষ্টদেব মানবো। বোঝা গেল ওনার সংশয় গভীর। তবে তাতে আমার কোনো উৎসাহ নেই। আমার কৌতূহল বাবা কী বলেন শোনার।
     
    বিড়বিড় করে অস্পষ্টভাষী নন্দনবাবা নন্দী মাহাত্ম্য দিয়ে শুরু করে সমুদ্র মন্থনে পাক মেরে বিশ্বরূপ দর্শন ছুঁয়ে কী যে ঘন্ট পাকালেন মাথায় কিছু‌ই ঢুকলো না। মহিলাটি শোনার চেয়ে বাবার বক্তব্য মোবাইলে রেকর্ড করতে ব‍্যাগ্ৰ। ব‍্যাটারি ডাউন হয়ে তাও বন্ধ হয়ে গেল। আমি মুখ নীচু করে হাসি চাপি।  এক দশক কুয়েতবাসীনী মহিলা বাবাকে অতক্ষণ বকিয়ে, বাবামৃত আংশিক রেকর্ড ক‍রে বাবার ATMএ রাখলেন মাত্র দশটি টাকা! বাবা চকিতে দৃষ্টি‌পাত করেন আমার দিকে।  তারা চলে যেতে আমার দিকে মর্মভেদী দৃষ্টিতে তাকিয়ে ঝোপড়ার সামনে খোলা আকাশে দু হাতে ফ্রেমের ভঙ্গি করে বলেন, LCD স্ক্রিন মে ইয়ে ড্রামা ক‍্যায়সা লাগা? বলি, য‍্যায়সা অনোখা স‌ওয়াল এ্যাসে‌হী লা-জবাব জবাব। অস্পষ্টভাষী বাবা‌ হাসেন প্রাণ খুলে।


     
    ঐ সন্ত আবাসে আমার পাশে মাটিতে মাদুর পেতে ছিলেন এক বয়স্ক মহিলা সন্ন্যাসিনী। আমি বাঙালি শুনে বললেন তিনি‌ও বাঙালি, একদা বাড়ি ছিল রাণাঘাট। অনেকদিন ধরে নাগা সন্ন্যাসিনী হয়ে পথে পথে ঘোরেন। একটু অবাক হয়ে বলি, আপনি নাগা সম্প্রদায়ের? বলেন, হ‍্যাঁ তো, এই দেখুন আমার পরিচয়পত্র। আমি উপর্যুপরি অবাক হ‌ই, বলেও ফেলি, সন্ন্যাসী‌দের‌ও পরিচয়পত্র লাগে নাকি? উনি বলেন, এমনি‌তে লাগে না, গেরুয়া‌ধারীদের কেউ বিশেষ ঘাঁটায় না, তবে আমি মেয়েমানুষ, একা একা পায়ে হেঁটে ঘুরি, সঙ্গে একটা পরিচয়পত্র থাকলে ভালো। 
     
    বলি, আপত্তি না থাকলে আমি কী দেখতে পারি ওটা? উনি বলেন, হ‍্যাঁ দেখুন না, তাতে কী। দেখি দশ টাকার স্ট‍্যাম্প পেপারে বারানসীর শ্রী পঞ্চ দশনাম জুনা আখাড়ার সভাপতি‌র দে‌ওয়া নোটারাইজড্ পরিচয় পত্র। ল‍্যামিনেট করে রেখেছেন। জল, বৃষ্টি‌তে খারাপ না হয়ে যায়। পাক্কা কাজ। বলি, এমন আমি আগে দেখিনি, এর একটা ছবি নিতে পারি? উনি বলেন, নিন না। ছবি নিয়ে বলি, আমি একটু আধটু লিখি, যদি কখনো গোপেশ্বর নিয়ে লিখি, আপনার সাথে আলাপের কথা, এই পরিচয় পত্রের ছবিটা তাতে রাখতে পারি? আপনার নামটা অবশ‍্য মুছে দেবো। উনি বলেন, কোনো অসুবিধা নেই, আমি কোনো কেউকেটা ন‌ই, কে‌ই বা আমায় চেনে। নাম থাকলেও কিছু এসে যায় না। কোথাও খুঁটি গেঁড়ে তো থাকি না, কেউ খুঁজে‌‌ও পাবে না আমায়। অবশ‍্য খোঁজ নেওয়ার মতো তিনকুলে কেউ নেই‌ও আমার। 
     
    বলি, এখন আপনি এখানে কেন? উনি বলেন, চারধাম যাত্রা‌য় বেরিয়ে‌ছি। হেঁটেই ঘুরছি। এই নিয়ে বার দশেক এলাম। এখন শরীর একটু জানা‌ন দেয়। তাই দিন দুয়েক এখানে বিশ্রাম নেবো। ২০১০ সালের নভেম্বরের সার্টিফিকেটে সাধ্বী মাধবী‌র (নাম পরিবর্তিত) বয়স লেখা ৫০, এখন ৫৯, মানে তিনি আমার সমবয়সী। দেখে অবশ‍্য আর একটু বয়স্ক লাগে। হতেই পারে, পথে পথে ঘোরেন, ঠিকমতো আহার, বিশ্রাম হয় না। শরীরে তার ছাপ তো পড়বেই। 
     
    সেদিন সন্ধ‍্যায় আশপাশে ঘুরে সাধু আবাসে আসতে টিপটিপ বৃষ্টি শুরু হলো। বাইরে দড়ি‌তে মেলা ওনার শুকিয়ে যাওয়া গেরুয়া বস্ত্রটি ভিজে যাবে বলে তুলে ভাঁজ করে ওনার মাদুরে রেখে দিয়েছিলাম। সাতটা নাগাদ উনি ফিরতে বলেছিলাম, বৃষ্টিতে ভিজে যাবে বলে আপনার কাপড়টি আমি তুলে রেখেছি। ভুল হয়ে থাকলে মার্জনা করবেন। সরল হেসে বলেন, অতো বাছবিচার থাকলে আর ঘর ছেড়ে পথে নেমেছি কেন। দেখুন না এখানে তো নানা পুরুষ সাধুর সাথে থাকি, ওরা ঘরের কোনে ধুনি‌র পাশে বসে গাঁজা‌ টানে, আমার এসবে কিছু যায় আসে না। আমায় অবশ‍্য এখানে অনেকে চেনে, অনেকবার এসেছি তো, ওরা মাতাজী বলে খুব মান‍্য‌ও করে। কাপড়টা তুলে রেখে আমার উপকার‌ই করেছেন আপনি। 


     
    গোপেশ্বর শহরের পশ্চিমে টিলার টঙে ছোট্ট একটা পার্ক। পন্ডিত দীনদয়াল উপাধ‍্যায় উদ‍্যান (সবুজ তীর)। পড়ন্ত বিকেলে অনেকক্ষণ বসে ছিলাম সেখানে। হুহু হাওয়া। দুরে পাহাড় শিরে মেঘের সাথে অস্তগামী সূর্যের লুকোচুরি। বহুদূর চলে যায় অবাধ দৃষ্টি! পার্কের পরেই পাহাড়ের ঢাল নেমে গেছে দুরে নীচের উপত‍্যকা‌য়। তার বুক চিরে এঁকেবেঁকে চলেছে বালখিল্য নদী। সেই অনসূয়া দেবী‌র ওখান থেকে আসছে। এমন বালকোচিত নদীর নাম আগে কখনো শুনি‌নি। 



    দীনদয়াল উদ‍্যান থেকে পশ্চিমাকাশে অস্তরাগ



    নীচে উপত‍্যকা‌য় বয়ে চলেছে বালখিল্য নদী



    দীনদয়াল উদ‍্যান থেকে পূবে গোপেশ্বর শহর

    বাসস্ট্যান্ড থেকে আপার রোড চলে গেছে চোপতা হয়ে উখিমঠে‌র দিকে। অলস পায়ে যাই সেদিকে। পঞ্চায়েত ভবন, হাসপাতাল পেরিয়ে রিজার্ভ পুলিশ লাইনের সামনে বেশ বড় খেলার মাঠ। পাহাড়ি জায়গায় এতবড় মাঠ সচরাচর দেখা যায় না। তিন দিগন্তে সুউচ্চ পাহাড়। অনেকক্ষণ বসে র‌ইলাম সেখানে একটা বেঞ্চে। ছেলেরা হৈহৈ করে খেলছে। তাদের আনন্দ কলরব ছুঁয়ে যাচ্ছে।




    পাহাড়ি স্থানের প্রেক্ষিতে বেশ বড় খেলার মাঠ

    গোপীনাথ মন্দিরের পিছন দিয়ে কিছুটা নেমে গেলে পড়ে বৈতরণী কুন্ড। তিনটি পাথরের হাতিমুখ দিয়ে অবিরল বেরোচ্ছে পরিশ্রুত পানীয় জল। স্থানীয়‌রা কলসি করে ভরে নিয়ে যাচ্ছে। তৈরি হয়েছে ছোট একটি কুন্ড। কিছু মাছ খেলে বেড়াচ্ছে তাতে। ছোট ছোট কয়েকটি ছেলে‌ও হুটোপুটি  করে মাছের মতো জলকেলি করছে।



    হস্তিমুখ দিয়ে অবিরল প্রবাহিত জলধারা

    কন্ডাক্টেড ট‍্যূরে দলের সাথে গিয়ে, লন্ড্রি লিস্টে টিক মেরে সাইট সিইং পয়েন্ট দেখে দেখে ঘুরে বেড়ানো আর পোষায় না। অবসর জীবনে ছুটি ছাটার সীমাবদ্ধতা নেই। আপনা মর্জিকা মালিক। তাই এখন আয়েশ করে, রয়ে সয়ে ঘুরতে ভালো লাগে। ইচ্ছে হলে একদিন হয়তো নিখাদ বিশ্রাম নিয়ে রুমে শুয়ে বসে ব‌ই পড়েই কাটিয়ে দিলাম। কাউকে জবাবদিহি‌র দায় নেই। এই স্বাধীনতা এতো আনন্দের যে তার জন‍্য কোনো কৃচ্ছসাধন‌ই গায়ে লাগে না। 

    শান্ত, পরিচ্ছন্ন পাহাড়ি শহর গোপেশ্বরে টুকটুক করে হেঁটে, মধ‍্যাহ্নভোজের পর একটু গড়িয়ে, বাবার ঠেকে গজালি করে আলস‍্যময় মেজাজে দুটো দিন‌ বেশ কাটলো সেবার। স্মৃতি‌র ভেলভেটে মোড়া থাকবে রামপ্রসাদজী ও কেদারনাথ‌জীর সহৃদয়‌তা, নন্দনবাবার মধুর সাহচর্য, আমার প্রদেশ থেকে দুর হিমালয়ে এক নিরভিমান বাঙালি সাধ্বীর সাথে সহজ আলাপচারিতা। বোনাস হিসেবে থাকবে কুয়েত প্রবাসিনীর সাথে বাবার মৃদু নাটক। রামপ্রসাদের পেয়ারের পোষ‍্যর চাকুমচুকুম করে প্রসাদী লিট্ঠি খাওয়ার দৃশ‍্যটা তো ভোলার নয়। তার একটা ছোট্ট ভিডিও নিয়েছি‌লাম, সেটাও থাকলো। গোপেশ্বরের গোপীনাথ মহাদেব মাহাত্ম্য সম্পর্কে কিছু লিখলাম না। ওসব তো নেটে টুসকিতে পাওয়া যায়।
     

    শুধু সামনে থেকে নে‌ওয়া মন্দিরের একটি ছবি রাখলাম।


    রামপ্রসাদের পেয়ারের পোষ‍্য
     
    https://youtube.com/shorts/Qn74eKMYkWc?si=AksQB7wk0ARadqJm

    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক। লেখক চাইলে অন্যত্র প্রকাশ করতে পারেন, সেক্ষেত্রে গুরুচণ্ডা৯র উল্লেখ প্রত্যাশিত।
  • ভ্রমণ | ১৯ অক্টোবর ২০২৩ | ৫১৫ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ২০ অক্টোবর ২০২৩ ২১:৪৫524886
  • আপনার মতন এমন রমতা যোগী আজকাল দুর্লভ।
     
    "আপনাকে তো কাল্টিভেট করতে হচ্ছে মশাই"!
  • নীল | 117.227.45.76 | ২১ অক্টোবর ২০২৩ ১২:৪৩524918
  • অনসূয়া দেবী যাত্রার কথা লিখবেন না?
  • Aranya | 2600:1001:b050:c339:c58d:c81c:dbdd:1e76 | ২২ অক্টোবর ২০২৩ ০৫:০৬524973
  • বাঃ 
  • reeta bandyopadhyay | ২২ অক্টোবর ২০২৩ ১৩:৫০524998
  • অপূর্ব ।
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। মন শক্ত করে প্রতিক্রিয়া দিন