এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • হরিদাস পাল  ভ্রমণ  ঘুমক্কড়

  • বাঙালের কলিকাতা দর্শন!  শেষ হইয়াও হইল না শেষ (ষষ্ঠ ভাগ)  

    Muhammad Sadequzzaman Sharif লেখকের গ্রাহক হোন
    ভ্রমণ | ঘুমক্কড় | ০৭ জুলাই ২০২২ | ৮২৭ বার পঠিত
  • বাঙালের কলিকাতা দর্শন
    ( শেষ হইয়াও হইল না শেষ!)

    রনি, কলিকাতা থেকে ফেরার গল্পটা বলা হয় নাই। আর কিছু টুকিটাকি বাদ পরে গেছে। মনে হল তোমাকে জানালে মন্দ হয় না। ফেরার গল্প পরে করি, টুকিটাকি গল্প গুলা বলি আগে, শোনো-

    রনি, জয়ন্তকে মনে আছে? কলেজ মোড়ে বাড়ি? জয়ন্ত একবার আমাদের কাছে ভারত তথা কলিকাতা কত আধুনিক, কত স্মার্ট, কত দূরে এগিয়ে গেছে তা বুঝানোর জন্য বলেছিল, জানস ওরা বাবা ছেলে এক সাথে বসে মদ খায়? না, জানতাম না আমরা! এবং এটাও জানতাম না এইটা কীভাবে আধুনিকতার সংজ্ঞা হতে পারে বা কীভাবে গর্ব করে বলার মত কিছু হতে পারে। যদিও এই উপলব্ধি তখন হয়নি। তখন ও আমাদের চমকে দিতে পেরেছিল। ঘরে বসে বাবা ছেলে এক সাথে মদ খাচ্ছে, এ তো আধুনিক, স্মার্ট কিছু না হয়ে যায়ই না! তো আমি কলিকাতায় পা রাখার পর থেকেই বুঝতে পারলাম জয়ন্তের স্বপ্নের শহরে এসে গেছি। বনগাঁ থেকে ট্রেনে যখন যাই তখন মাঝে মধ্যেই দেওয়াল লিখন দেখতে পাচ্ছিলাম, মদের নেশা নিবারণ কেন্দ্র! মদের নানা কুফল সম্পর্কে সরকারি প্রচারণা। বুঝলাম মদ এখানে বেশ জাঁকিয়ে বসা জিনিস। দুশ্চিন্তাও কম নাই একে নিয়ে। মফস্বলের ছেলে আমি, বাংলা মদের একটা দোকান আছে শহরের ঢুকতেই, এই দেখা আমার মদের দোকান। এরপরে ঢাকা শহরে তামসা দেখার জন্য মদের দোকানে মানে যাকে বার বলে ভদ্র করে, সেখানে গেছি। স্প্রাইট উইথ রক্স খেয়ে আর বাদাম মাখানো খেয়ে অভিজ্ঞ আমি কলিকাতা শহরে যত ঘুরেছি তত দেখেছি, বুঝেছি এই জিনিস এখানে উম্মুক্ত, সহজ এক জিনিস।

    আমি কেন এই বিষয় নিয়ে লিখছি তা অবশ্য আমার ওই পাড়ের বন্ধুগণ সবাই বুঝবে না। কারণ বাংলাদেশ সম্পর্কে ধারণা না থাকলে, এখানকার সামাজিক পরিবেশ সম্পর্কে জানাশোনা না থাকলে বুঝা মুশকিল। মদ হচ্ছে এখানে অতি উম্মুক্ত গোপন জিনিস! ঢাকায় যে কয়টা বার আছে তাতে নানা বাঁধাধরা নিয়ম। উচ্চবিত্তের কোন আইন কানুনের বাধা নাই। আর বাদ বাকিরা অনেকটাই মস্ত পাপ করছে বলেই খায়। আর ঢাকার বাহিরে একেবারেই নাই। পর্যটন কেন্দ্রগুলোতে পাওয়া যায়, তবুও সেই লুকিয়ে ঢুকিয়েই। তাই যে আমার দৌড় ছিল ঢাকা পর্যন্ত, তার চোখে কলিকাতায় এই জিনিসের আধিক্য চোখে পড়েছে, অবাক করেছে বাঙাল এই চোখকে।
    আরেকটা জিনিস চোখে লেগে আছে আমার। জিনিসটা কী আমি জানি না। কিন্তু হরেদরে, এখানে ওখানে, গাছের নিচে, পার্কের বেঞ্চে, ট্যাক্সির বনেটে বসে সবাই দেখি হাতের তালুতে আরেক হাতের বৃদ্ধা আঙুল দিয়ে কী জানি ডলছে! প্রবল ডলাডলি চলে, এরপরে কী করে জানি না। বোধ করি এইটাও নেশার কোন উপকরণ হবে। সিনেমায়ও দেখছি ডলে মুখে ফেলে দেয়। এই জিনিস আমাদের এদিকে নাই। আমার চোখে পরে নাই তা নিশ্চিত।আমরা অবশ্য এর উপরের ধাপে কিংবা হয়ত আরও নিচের ধাপে চলে গেছি। বাবা মানে ইয়াবা এখন সর্বনাশ করে চলছে। বাংলাদেশের এ মাথা থেকে ও মাথা সকল জায়গায় সকল শ্রেণীর কাছে এই জিনিস পৌঁছে গেছে। সফলতার সাথে ফেন্সিডিল মানে যাকে ডাইল বলে আমাদের এখানে তাকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গেছে এই ‘বাবা’।

    প্রসঙ্গ থেকে সরে গেছি। এই পর্ব বেশ কয়েকদিন পরে লিখছি বলেই হয়ত অন্য নানা গল্প এসে যাচ্ছে। আচ্ছা, শোন আরেকটা দারুণ জিনিস বলি। আমি ঢাকায় নামার পরে যখন ঢাকায় চলছি তখন এই জিনিস আমার মাথায় এসেছে। কলিকাতার রাস্তায় আমাদের মত ডিভাইডার নাই। আমরা ডিভাইডার ছাড়া রাস্তা কল্পনাও করতে পারি না। বিশাল বড় রাস্তা, মাঝে কোন বিভক্তি নাই! বনানী থেকে গুলশান যেতে যে রাস্তা তা বেশ বড়, তখনই মনে হল আরে এত বড় রাস্তা কিন্তু ছোট লাগছে কেন? কারণ মাঝে দেড় দুই হাত জায়গা নিয়ে সড়ক দ্বীপ মাথা উঁচু করে আছে। প্রতিটা রাস্তায়ই একই এখানে। আর আমি সড়ক দ্বীপ সহ কোন রাস্তা কলিকাতায় দেখেছি বলে মনে হচ্ছে না। রাস্তার আইন কানুন মানার ব্যাপারে কলিকাতাবাসিকে ধন্যবাদ দিতেই হয় একটা, অসাধারণ।

    ফেরার গল্প শোনো। ভোরে উঠে ট্যাক্সি করে চিৎপুর স্টেশনে চলে গেলাম আমরা। এখান থেকে মৈত্রী এক্সপ্রেস ঢাকার উদেশ্যে ছেড়ে যায়। ট্রেনে যাত্রা বেশ আরামদায়ক। সবচেয়ে বড় আরাম হচ্ছে সীমান্তে আমাদের কোন দৌড়াদৌড়ি করতে হয় না। এই স্টেশনে আমাদের সমস্ত ইমিগ্রেশন, কাস্টমসের কাজ শেষ করে ট্রেনে তুলে দিবে ভারতীয় কর্তৃপক্ষ, আবার ঢাকা ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনে( ক্যান্টনমেন্ট স্টেশন! তুমি এখান থেকে রাজশাহীর ট্রেনে উঠতা!) নামার পরে ঢাকার কাস্টমস অফিসাররা বাংলাদেশের অংশের কাজ কাম শেষ করে মুক্তি দিবে আমাদের। সহজ না?
    আমরা লাইনে দাঁড়াতেই বুঝলাম সামনে কয়েক তরফের বাধা পার হতে হবে আমাদের। ধীরে ধীরে এগিয়ে যেতে থাকলাম। প্রথম ধাপ এসে গেল। আমাদের চারজনের ব্যাগ ছিল এক সাথে। আমাদের তলব করা হল। কয়জন মানুষ? চারজন। নিয়ম এসে গেল। চারজন দুইটি করে আটটি ব্যাগ নিতে পারবে। আমাদের ব্যাগ নয়টি! ধরা! এবার? এবার তিনিই মুক্তিদাতা। বললেন, সবচেয়ে হালকা যে ব্যাগ আছে সেটাই দিন, দিয়ে ওজন করে দেখা হবে। দেখা হল, নয় কেজি! কি জানি হিসাব করে বললেন, নয়শ টাকা দাও! আরে, দেশ ছাড়ছি এখন নয়শ রুপি কারো সাথে থাকে? এই প্রশ্ন মহামান্য নিজেও জানে। তিনিই দেবতা তখন। বললেন বাংলা টাকা হলেও চলবে! এমন ভাতৃত্ব কে কোথায় দেখেছে? ভারতীয় পুলিস বাংলাদেশের টাকা হলেও চলবে বলছে? মুলামুলি করে ছয়শ টাকা দেওয়া হল, তিনি মেনে গিয়ে নিলেনও। বুঝলাম নিয়ম থাকলে এমন হত না। কার ভোগে গেল আল্লা মালুম। পরের ধাপে সহজে মুক্তি মিলল, শুধু আমাদের টিকেট আর সিট নাম্বার দেখে দিল একজন। আমরা এগিয়ে গেলাম ভিড় ঠেলে। সবাই একেক কাউন্টারে চলে গেলাম পাসপোর্ট সিল ছাপ্পর লাগানোর জন্য। আমার ভাগে যিনি দায়িত্ব নিলেন, তিনি কোন রাজ কাজ করছিলেন ডেস্কে বসে আমি জানি না। তিনি উনার কাজে ব্যস্ত, আমি দণ্ডায়মান। আমার সঙ্গীদের সবার কাজ শেষ। ওরা তবুও এলাকা ছাড়ছে না কারণ আমার এখানে কি হচ্ছে তা ওরা বুঝতে পারছে না। আমি কোন বিপদে পড়লাম আবার ভেবে ওরা আশেপাশেই দাঁড়িয়ে আছি। আমিও দাঁড়িয়ে আছি। বেশ লম্বা সময় পরে তিনি আমার হাত থেকে পাসপোর্ট নিলেন। যেহেতু অনেকক্ষণ আমাকে দাঁড় করিয়ে রেখেছিলেন তাই হয়ত একটু খোস গল্প করলেন। কই ঘুরলাম,  বাজার সদাই করেছি কি না ইত্যাদি ইত্যাদি। বলে তিনি আমাকে ভারত থেকে বের হওয়ার দুইটা সিল মেরে দিলেন! তিনি যে ভীষণ বেখেয়ালের একজন মানুষ তা প্রমাণ করলেন এই দুই সিল মেরে। পরের ধাপেই আটকে গেলাম, দুই সিল কেন? বলে যিনি এই সিল ছাপ্পর দেখছিলেন তিনি একটা কেটে দিলেন, দিয়ে ক্যান্সেল লিখি দিলেন, আমি বললাম তাহলে একটা সাক্ষরও দিয়ে দিন, তিনি না করেও আবার কি মনে করে সাক্ষর করে দিলেন। আমার উনার কাজ ভাল লাগল। মনে হল একজনের অন্তত অটোগ্রাফ নিয়ে গেলাম ভারত থেকে।

    এরপরে আর গর্ব করার কিছু নাই। কেউ এই সব দেখে না, না কি দেখেও চোখ বন্ধ করে থেকে জানি না। কিন্তু যা হল তা জঘন্য। একজন আবার আমাদের সিট, টিকেট পরীক্ষা করে দেখলেন। এরপরে একজন দাঁড়িয়ে আছেন। তিনি ঠিক কী করছেন তা সম্ভবত কেউ জানে না। তিনি একেকজনকে ডেকে ডেকে একেক টেবিলে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। সেখানে সাধারণ প্রশ্ন করছে। ব্যাগে কী? কত টাকার বাজার করেছি? প্রচুর মানুষ ঢুকছে, দণ্ডায়মান ব্যাক্তি কাওকে ধরতেও পারছে না। যাকে পাচ্ছে তাকেই বা যার ব্যাগ বড়সড় তাকে ধরে আনছে। আমাকে জিজ্ঞাস করল, ব্যাগে কী আছে? আমি বললাম কাপড়চোপড়  আছে। কত টাকার বাজার করছেন? বললাম, তিনি সন্তুষ্ট হলেন না। বললেন মোবাইল আছে? বললাম, আছে। এই তো তিনি পেয়ে বসলেন। মোবাইল নেওয়া যাবে না! আমি বললাম কেন? একটা মোবাইল আমি নিতে পারব না? তিনি তখন বলেন, সামনে স্ক্যানে ধরা পড়বে, তখন আমার কাছে এসে আবার কথা বলবেন না! আমি বললাম, ধরুক স্ক্যানে, আমি একটা মোবাইল অবশ্যই নিতে পারব, ধরলে আমি তখন কথা বলব যে ধরবে তার সাথেও। আমি জোরে করেই ব্যাগ নিয়ে চলে আসলাম। স্ক্যানে আমি ব্যাগ দিচ্ছি তখন ওই লোক দৌড় দিয়ে এসে আমার ব্যাগ দেখিয়ে দিছিল যারা স্ক্যান করছি ব্যাগ তাদের। বলছিল, মোবাইল আছে মোবাইল! কিন্তু আমার ব্যাগ স্ক্যান হয়ে চলে আসল, আমাকে কেউ কিছুই বলল না। আমিও ব্যাগ নিয়ে চলে আসলাম সামনে। পরে বুঝতে পারছি ঘটনা কী হয়েছে। আমার পিছনে ছিল আমার আরেক সঙ্গী, ওরা তাকে ধরেছে মোবাইল আছে তাই! দেবতার জন্য প্রসাদ জোগাড় হল, এবার বাংলাদেশের টাকায় একশ টাকা! আমাদের পিছনে কাওসার আবার সেলামি দিল, বাংলা টাকায় দুইশ টাকা! দারুণ সাম্য অবস্থা। বাংলাদেশের টাকা কলিকাতার স্টেশনে চলছে দেধারছে! ভারতীয় পুলিস কেন আমাকে জিজ্ঞাস করবে আমি কত টাকার বাজার করেছি? আমি অবৈধ কিছু নিয়ে গেলে তা পরীক্ষা করে দেখবে, প্রয়োজনে ব্যাগ খুলে দেখবে, কুকুর দিয়ে তো দেখলই ট্রেনে। কিন্তু আমি বাজার করছি কী, কত টাকার করছি তা দিয়ে তার দরকার কী? যা করছি তা তো তাদের দেশেই করছি, লাভ যা হওয়ার তা তো তদেরই হল। কোন যুক্তিতে আটকায়? এই কাজ আমাদের এখানে করলে মানাত। আমাদের কাস্টমস অফিসার বলতে পারত এগুলা কেন আনছেন? ট্যাক্স দেন, মাসুল দিয়ে পরে ঢুকবে এই সব। তারা কেন বলবে? জানি না।

    যাই হোক, ট্রেনটা ছিল দারুণ। ভারতীয় ট্রেন। যথা সময়ে ছেড়ে গেল। আমরা অল্প সময়েই ভারত অতিক্রম করে গেলাম। সীমান্ত পার হতেই ট্রেন থেমে গেল। সমস্ত কর্মচারি পরিবর্তন হয়ে গেল। এসে গেল বাংলাদেশী সবাই। বাংলাদেশী খাবার, পানি আর ব্যবহার! সীমান্ত পার হতেই সবাই একযোগে ঝাঁপিয়ে পরে বাংলাদেশী মোবাইল সিম মোবাইলে ঢুকিয়ে নিলাম, কাওসার সময় পরিবর্তন করে ফেলল। আমার ফোনে স্বয়ংক্রিয় ভাবেই পরিবর্তন হয়ে গেল ইন্টারনেট সংযোগ পেতেই। ইন্টারনেট সংযোগ পেতেই দেশে যেন অফিসিয়ালি ঢুকলাম আমরা! এরপরে আর গল্প বলার নাই ট্রেনের।

    ট্রেন থেকে নামার পরে গল্প আছে একটু। এখানে কী হবে ভেবে কূলকিনারা পাচ্ছিলাম না আমরা। কিন্তু অবাক হয়ে মাত্র পনেরো মিনিটে আমি সমস্ত অফিসাল কাজ কাম শেষ করে ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের বাহিরে চলে আসলাম। আমার প্রাণের ঢাকা শহরের বাতাস আমাকে জড়িয়ে ধরল আদরে। আমাদের কাস্টমস খুব ভাল? না,  আমাদের চারজনের মধ্যে একজনকে ভণিতা না করে সরাসরিই বলে দিলেন, একশ টাকা দিন চা খাব! বুঝ এবার, খুল্লামখুল্লা!

    রনি শেষ করি। শেষ করার আগে শেষ কথাটা বলি। আমি বাড্ডা যাব। উবার ডাকলাম। উবার চালক আমাকে ফোন করলেন, আমি ফোনটা ধরতেই ও প্রান্ত থেকে যখন চালক আমাকে বাংলায় জিজ্ঞাস করলেন আমি কোথায় দাঁড়িয়ে আছি তখন অদ্ভুত স্বস্তি পেলাম। কলিকাতায় উবার চালকরা ফোন করলেই আমি শুধুই হিন্দি শুনতে পেতাম। তা যে আমার জন্য চরম অস্বস্তিদায়ক ছিল, এবং কতটা অস্বস্তিদায়ক ছিল তা আমার ঢাকার উবার চালকের প্রথম শব্দ কানে যেতেই যে শান্তির পরশ অনুভব করেছি তা থেকে বুঝেছি।
    রনি, আমি এই সামান্যই নিতে পারি নাই, অন্য দেশে যেখানে ইংরেজি বা অন্য ভাষার রাজত্ব সেখানে গেলে বাংলার জন্য প্রাণ কেঁদেই হয়ত মরে যাব!
  • ভ্রমণ | ০৭ জুলাই ২০২২ | ৮২৭ বার পঠিত
  • আরও পড়ুন
    বানী - Ashiq Rahman
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Ranjan Roy | ০৭ জুলাই ২০২২ ১০:৩৫509682
  • আপনার লেখায় একটা অন্যরকম স্বাদ আছে --আমার খুব ভাল লাগে।
  • Santosh Banerjee | 223.191.56.221 | ০৭ জুলাই ২০২২ ১০:৪৫509683
  • একই আকাশ একই বাতাস এক হৃদয়ের একই যে শ্বাস,,,,,, একই তো ছিলাম । তাইনা? শিকড় টা তো ওই মাটিতে পোঁতা আছে ভাই ! আমরা তো ছিলাম ভাইয়ে ভাইয়ে গলাগলি করে , হিন্দু মুসলমান সবাই বাহুডোরে বেঁধে , এই শ্যামল বাংলা মায়ের আঁচলে শুয়ে?? তবে কে আমাদের শান্তি স্বাধীনতায় বাদ সাধলো ? যখন আপনি আমাদের ভারত ভূমির কথা বলেন , আর আমি বা আমরা ওপারের স্বপ্নময়। দেশটার কথা ভাবি , চোখ ছল ছল করে !! নমস্কার !! 
  • dc | 2a02:26f7:d6c1:680d:0:ec6b:25f3:71cb | ০৭ জুলাই ২০২২ ১২:২২509685
  • কিন্তু ঢাকা শহরে মদ খাওয়া নিয়ে এতো কড়াকড়ি কেন? পড়ে খারাপ লাগলো। চেন্নাই বা ব্যাঙ্গালোরে তো যত্রতত্র পাব আর মদের দোকান! 
  • dc | 2a02:26f7:d6c1:680d:0:d5f8:6401:b6a | ০৭ জুলাই ২০২২ ১২:২৯509686
  • আমি চেন্নাই তে থাকি বলে বল্লাম। বম্বে বা পুনাতেও সহজে আর আরামে মদ যোগাড়ের ব্যবস্থা করতে পারবেন। আর দিল্লি সরকার তো মদের হোম ডেলিভারিরও ব্যাবস্থা করে দিয়েছে! চেন্নাইতে কবে অনলাইন ডেলিভারির ব্যবস্থা করবে কে জানে। 
  • b | 117.194.75.165 | ০৭ জুলাই ২০২২ ১৩:০৬509687
  • "বোধ করি এইটাও নেশার কোন উপকরণ হবে"। খৈনি, বেসিক্যালি তামাক পাতা চিবনো  । 
    "কাঁদো নদী কাঁদো" তে রেফারেন্স আছে।  
  • শঙ্খ | 203.132.214.71 | ০৭ জুলাই ২০২২ ১৮:৫৭509691
  • স্প্রাইট উইথ রক্স টা আবার কী জিনিস রে বাবা! 
    কলকাতায় স্পেন্সার, বিগবাস্কেট মদের হোম ডেলিভারি দেয় তো। স্পেন্সার আবার ইলেকট্রিসিটির টাকা চুরি করে খুশি থাকলে পাঁচ সাত পার্সেন্ট ছাড়ও দেয়। লাস্ট কবে দোকানে লাইন দিয়ে কিনেছি ভুলেই গেছি।
    মদের রমরমার জন্যেই হয়তো ঐসব ইয়াবা বা ফেন্সিডিল ততটা চালু না, মানে সার্কেলের লোকজনের কাছে শুনিনি। অনেকে শুকনো মানে গাঁজা প্রেফার করে, ডেন্ড্রাইট মেসে হস্টেলে চলতো শুনেছি।
     
    খইনি ছাড়াও এখানে গুটখা বেশ পপুলার। কাউকে দেখেননি, ছোট একটা স্যাসে ছিঁড়ে মুখে ঢেলে নিচ্ছে? পান দোকান গুলোয় তো লতাপাতার মত ঝুলে থাকে। 
     
    বাংলাদেশে মদ নিয়ে এতো কড়াকড়ি জানা ছিলো না। হিমুতে বাদলের বাবা খালুসাহেব তো ব্ল্যাক ডগ নিয়ে বসে থাকতেন পড়েছিলাম মনে হচ্ছে, সেটা তাহলে বড়লোকি এক্সেপশান, যেরকম লিখেছেন। 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:2102:6116:ec94:de7a | ০৭ জুলাই ২০২২ ২০:০৪509692
  • হুস্কি উইথ রকস (বরফের টুকরো ) -র মত স্প্রাইট উইথ রকস :-)
    বাংলাদেশে ধর্মীয় কারণে মদ বিক্রি নিয়ে এত কড়াকড়ি 
  • aranya | 2601:84:4600:5410:2102:6116:ec94:de7a | ০৭ জুলাই ২০২২ ২০:১১509693
  • এই সিরিজ -টা খুবই আনন্দ করে পড়লাম। সাদেক -এর লেখায় কিছু একটা আছে, টেনে রাখে, শেষ না করে ছাড়া যায় না 
     
    সায়ন যে উইক ডে-তেও আড্ডার ব্যবস্থা করেছে, সাদেক- এর সাথে গুরুর জনগণের  একটা জমায়েত হয়েছে , তাতে খুবই খুশী হয়েছি
     
    সুমন ৯০-এর দশকে একটা গানের প্রোগ্রামে বলেছিলেন - ভাল লোকেরা সঙ্ঘবদ্ধ হোন।  
     
    'বন্ধু আমার এই হাত ধর, হাত ধর, গাইতে গাইতে যাব, আনন্দের গান, গাইব আনন্দের গান ..'
  • যোষিতা | ০৭ জুলাই ২০২২ ২২:০৮509694
  • কোলকাতার ইমিগ্রেশন কাস্টমস সংক্রান্ত এ ধরণের অসাধুতার অভিযোগ আজ নতুন নয়। ৮০র দশক থেকেই শুনেছি এয়ারপোর্টেও বাংলাদেশীদের এভাবে হেনস্থা করা হতো। ঘুষ না দিলে ঝামেলা করত। এসব ঘটনার কথা আমার বাংলাদেশী বন্ধুদের মুখে শুনতে শুনতে ভাবতাম কই আমাদের সঙ্গে তো কখনও এমন করে না কোলকাতার কাস্টমস! পরে একবার স্বচষে দেখলাম। খুব অল্প সময়ের ব্যবধানে দুটো ফ্লাইট ছাড়বে কোলকাতার পুরোনো টার্মিনাল থেকে। একটা যাচ্ছে চট্টগ্রাম, অন্যটা মস্কো।
    পাশাপাশি দুটো গেট। কিন্তু হ্যান্ডলাগেজ স্ক্রিনিং সবারই হচ্ছে পাশাপাশি দুটো মেশিনে। তখন দেখলাম চট্টগ্রামগামী বিমানের বাংলাদেশী যাত্রীদের ব্যাগ খোলানো হচ্ছে। ব্যাগে অসংখ্য জেমস চকোলেটের প্যাকেট, আনুমানিক হাজারখানেক। ব্যস্, ওমনি সেই যাত্রীকে আলাদা করে পাশে সরিয়ে নিয়ে গেল।
  • Muhammad Sadequzzaman Sharif | ০৮ জুলাই ২০২২ ০১:০৩509697
  • @Ranjan Royধন্যবাদ দাদা। অশেষ ধন্যবাদ। 
    @Santosh Banerjee, দাদা, এই সব এতদিন মনে মনে ভাবতাম, কল্পনা করে নিতাম, সাহায্য করত বইপত্র, সিনেমা, গান ইত্যাদি। কিন্তু এবার যখন যাওয়া হল, সীমান্ত পার হওয়ার পরে একই আবহাওয়া, ধান ক্ষেত, মানুষের বাড়িঘর, পুকুর, মায়ের কোলে শিশু, এই সব দেখে বেশ ভাল করেই বুঝতে পেরেছি আলাদা করে দিলাম বললেই একটা জাতি আলাদা হয়ে যায় না। সমাজ সংস্কৃতি এত মিল, এইটা আর কোথাও এমন করে প্রকট হয় নাই। ধর্মকে যদি পাশে সরিয়ে রাখতে পারে কেউ তাহলে আমার কথার যথার্থতা সহজেই বুঝতে পারবে। @dc, এই জন্যই লিখেছি যে ঢাকা বা বাংলাদেশ সম্পর্কে জানা না থাকলে আমি কেন এই প্রসঙ্গ নিয়ে লিখছি তা বুঝা মুশকিল হবে আপনাদের জন্য। গুরুত্বেই আমার আগের একটা লেখা আছে ঢাকার রাতের বার নিয়ে আমার এক অদ্ভুত অভিজ্ঞতার গল্প। খুঁজলে পাওয়া যাবে। এই দেশে মদ নিষিদ্ধ, লাইসেন্স নিয়ে বার আছে কিছু, কিছু আছে ক্লাব, হোটেল। আর আছে যা লিখেছি উচ্চ শ্রেণীর ঈশ্বরেরা। বাকিরা ফেন্সি, বাবা খেয়ে অজ্ঞান! 
    @b  ধন্যবাদ দাদা। 
    @শঙ্খ  দাদা, হিমুর খালু কোন শ্রেণীর মানুষ ছিলেন মনে আছে? ওই শ্রেণিতে তো সবই জায়েজ। হুমায়ুন আহমেদ ভুল কিছু লিখেনি। ওই শ্রেণীর এখন সংখ্যা বেড়েছে, ঢাকা শহরে অভিজাত এলাকায় এখন মদ সাধারণ জিনিস, সাধারণ মানুষের জন্য তা না, ওগুলা ওই ঈশ্বরদের জন্যই। স্প্রাইট উইথ রক্স মজা করেই লিখছি। আমি আমার বন্ধুদের সাথে বারে যাই আসলে বাদামের লোভে। কী কী জানি দিয়ে দারুণ করে বানিয়ে দেয় বাদাম। আমি সেভেন আপ অথবা স্প্রাইট খাই আর বাদাম খাই। আমার কোন ট্যাবু নাই মদ নিয়ে, জাস্ট খাই না, যেমন আমি আজ পর্যন্ত একটা সিঙ্গেল টান সিগারেটও খাই নাই। আমার ধারনা আমি এক টান দিলেই ধরা খেয়ে যাব, এরপরে ভোক ভোক করে সিগারেট খেতেই থাকব! মদের ক্ষেত্রেও আমি একই ভয় পাই। আমার ধারনা আমি অতি দ্রুত আসক্ত হয়ে যাব! ছাত্র অবস্থায় বিয়ার খেয়েছিলাম একবার, আর আরেকবার পাহাড়ে এক পাহাড়ি আমাকে ধমক দিয়ে পাহাড়ি মদ চু খাইয়েছিল। সেটা আরও তিন মাস পরে মদ হবে এখন মদ হয়নি, এই যুক্তিতে তিনি আমাকে ধমক দিয়ে খাইয়েছিলেন। এই হচ্ছে মদ সম্পর্কে আমার প্রত্যক্ষ জ্ঞান। আর বাকি সবই হচ্ছে ওই যে যা বললাম, বাদাম আর স্প্রাইট! 
     
    @aranya, দাদা, সেদিন আমি সায়নদার বাড়িতেও বলেছি যে আপনি মন হয় আমাকে একটু বেশিই দাম দিয়ে ফেলেন। ওভাররেটেড যাকে বলে! আমি কোনমতেই অতখানির যোগ্য না। আমি বলছি আমি তো জানি আমি কি জিনিস, অরণ্যদা কবে জানি হতাশ হয়ে যায়, বলবে যাহ! এ তো রদ্দি মাল! আপনার অতি প্রশংসা আমাকে আসলেই শঙ্কিত করে! অশেষ ধন্যবাদ দাদা, অসংখ্য ধন্যবাদ আপনাকে।
     
    @যোষিতাচিৎপুরে যা হয়েছে তার কোন ভাষা নাই। অবিশ্বাস্য একটা কাণ্ড। আমি সদ্য এই সব দেখা লোক, মানে এবারই প্রথম দেশের সীমা অতিক্রম করেছি। কাস্টমস, ইমিগ্রেশন ইত্যাদি সম্পর্কে আমার ধারণা ছিলই না। এখানে কোন যুক্তিতে কাওকে এমন করে তল্লাসি করবে আমার মাথায় ধরে না। ফিরতে সময়ে আমাকে আগাপশতলা পরীক্ষা নিরীক্ষা করতে পারে বাংলাদেশ কাস্টমস, আমি শুল্ক ফাঁকি দিয়ে কিছু আনছি কি না এইটা অবশ্যই তাদের দেখার অধিকার আছে। কিন্তু আমি যাই কিনি না কেন, তা তো ভ্যাট ট্যাক্স দিয়েই কিনিছি, তাই না? তাহলে সেই আপত্তির জায়াগাটা কোথায়?  কিচ্ছু না, ঘুষ খাওয়াই হচ্ছে কাজ, যার কারণে বাংলাদেশের টাকাও চলে কলকাতা পুলিশের কাছে!! ভাল থাকবেন, ধন্যবাদ আপনাকে। 
     
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। কল্পনাতীত মতামত দিন