এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো

  • ফরিশতে

    প্রতিভা সরকার লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ২৪ আগস্ট ২০১৮ | ১০১১ বার পঠিত
  • জামা মসজিদের ভীড়ে ভর্তি চাতাল দেখলে বিশ্বাসই হয় না যে পেছনে গা এলিয়ে পড়ে রয়েছে এতবড় একটা কব্‌রিস্তান।
    তারই গেটের সামনে এক শীতের ভোরে মেহবুব লাওয়ারিশ বাচ্চাটাকে আবিষ্কার করেছিল। শীতের হাওয়ায় কাঁপতে থাকা বাচ্চাটার পিঠে দুটো হাড় উঁচু হয়ে ছিল। কারণ উবু হয়ে বসে দুই হাঁটুর মাঝখানে কান্না আর শিকনিতে মাখামাখি মুখখানাকে বাচ্চাটা লুকিয়ে রেখেছিল। বেশী কথা খরচ করেনি ভিশতিওলা মেহবুব। নিঃসন্তান জীবনে আল্লাহতালার দান হিসেবেই বাচ্চাটাকে প্রতিপালন করতে শুরু করেছিল। নাম দিয়েছিল মতিউর রহমান।

    মতিও তাকে আব্বু বলে ডাকত। এই কব্‌রিস্তানের শান্ত ছায়াঢাকা মূল রাস্তাটা যখন আরও অন্ধকার হয়ে আসত, মেহবুব তখন বড় মেহগনি গাছের তলে লাল পাংশু লম্বা পাতা জড়ো করে আগুন ধরাত। বউ আর কুড়িয়ে-পাওয়া ছেলেকে নিয়ে হাত সেঁকত। বাচ্চাটার ছাই ছাই চোখ দেখে তাকে চাঙ্গা করার জন্য গল্প বলত,
    - শুন লে বেটা , এই যে ভিশতি দেখছিস, এই ভিশতিতে করে জল ছেটানো আমার কাজ। পেড়-পৌধা, পাখি, খরগোশ, চুহা ছাড়াও এই যে তিনশও সে জ্যায়াদা কবর আছে এখানে, তাদের সবাইকে জল দেওয়ার মত নেকির কাজ আর নেই। কবরের ভেতর শুয়ে আছেন কত আমির, পীর, বীর সিপাহীরা। নিম কা পেড় তাদের মাথার ওপর মিঠে হাওয়া দেয়। কাঠবেড়ালি ফুলকা লেজে কবরের ওপর থেকে শুকনো পাতা ঝেড়ে দেয়।
    আর আমি কী করি? ফজরের নামাজ পড়া হলে আমার ভিশতিতে জল ভরে এ তল্লাটের কোণে কোণে আর সকলের কবরের ওপর রোজ জল ছেটাই। ওপরের লাল ধূলো, কুচো পাথর ভেদ করে সেই ঠান্ডা জলের রেশ যায় কবরের শেষতক। বুজুর্গদের পিয়াস বোজে। তাঁদের ঘুম ভাল হয়।

    - কত জল ধরে আব্বু তোমার ভিশতিতে?

    মতি আগুন আর ধোঁয়া থেকে চোখ তুলে জিজ্ঞাসা করে।

    - কম সে কম পঁয়ত্রিশ লিটার।

    - তোমার পিঠে দর্দ হয় না আব্বু?

    - হয় বেটা, বহুত দর্দ হয় কভি কভি। দিনে পনেরোবার ভিশতি ভর্তি করতে হয়।

    - এ কাম মুঝে আচ্ছা নেহি লগতা আব্বু।

    - অ্যায়সা মত বোল বেটা।
    মুন্নি বেগম শান্ত হাত রাখত ছেলের পিঠে। খসমকে বলত,

    - ইস কো হুমায়ুন বাদশাহ কা কাহানি সুনাইয়ে জনাব।

    সে বহুকাল আগের কথা। আফগানদের বিরুদ্ধে লড়াইতে যেতে গিয়ে হিন্দুস্তানের বাদশাহ হুমায়ুন গঙ্গা নদীতে প্রায় ভেসে যাচ্ছিলেন। নিজাম নামে এক ভিশতিওলা ভাগ্যিস সেটা দেখতে পেয়েছিল। নিজের ছাগলের চামড়ার ভিশতিটিতে হাওয়া ভরে সে সেটাকে ছুঁড়ে ফেলে নদীর জলে। সোনারবরণ বাদশাহ সেইটাকে আঁকড়ে ধরে তীরে ওঠেন। কৃতজ্ঞ হুমায়ুন নিজামকে একদিনের জন্য আগ্রার রাজসিংহাসনে বসিয়ে দেন। এক রোজ কা বাদশাহ নিজাম তার এই সিংহাসন আরোহণ স্মরণীয় করে রাখতে নিজের চামড়ার ভিশতিটিকে ছোট ছোট টুকরো করে কাটে। তার ওপর খোদাই করায় নিজের নাম ও সেই দিনের তারিখ। তারপর টুকরোগুলোকে মুদ্রা হিসেবে ব্যবহার করবার ফরমান জারি করে সেগুলোকে বিলিয়ে দেয় গরীব প্রজাদের মধ্যে।

    এইভাবে আল্লাহতালার মর্জি হলে ভিশতিওলাও শাহেনশাহ হয়।
    এটা জেনে নিয়ে মতিও এই একই কাজে লেগে যায় আব্বুর এন্তেকালের পর।
    সেদিন এই একই গল্প সে শোনাচ্ছিল ছোঁড়াটাকে, যার বাড়ি কোন মহল্লায় মতি এখনো জানে না। শুকনো মুখে কেন সে কব্‌রিস্তানের আশেপাশে ঘোরাঘুরি করে তাও অজানা।
    চাঁদিফাটা রোদ ছিল সেদিন। মূল গেটের কাছের কবরগুলোতে জল ছেটাচ্ছিল মতি। ভিশতির মুখ থেকে সাদা জলের অজস্র ভেঙ্গে যাওয়া ধারা লাল ধূলো ভিজিয়ে দিচ্ছিল। মধ্যে মধ্যে ছোটছোট গর্ত তৈরী করছিল, যেমন দেখা যায় পূর্ণিমার চাঁদে। মতি একটু দূরে যেতেই তাতে নেমে আসছিল চড়ুইপাখীর দল। সাবধানী পায়ে শালিকগুলোও এগোচ্ছিল জলাশয়ের দখল নিতে। হঠাৎ মেহগনি গাছের মোটা বেড়ের পেছনের ঝোপে রঙীন কাপড়ের টুকরোর মত কী একটা নজরে পড়ে গেল মতির। সারা কব্‌রিস্তান জলে ভেজানো ছাড়াও সারাদিন ধরে গোটা তল্লাট সাফসুতরো করে মতি। তার নজর এড়িয়ে হাওয়ায় উড়ে আসা একটা টুকরো কাগজও পড়ে থাকে না, তাহলে কাপড় আসবে কোত্থেকে!
    ভিশতির ফুটোতে বাঁশি বাজানোর মত পাঁচ আঙুল নড়ে মতির। অব্যর্থ লক্ষ্যে জলের ধারা ফোয়ারার মত গিয়ে পড়ে রঙিন কাপড়টুকুর ওপরে। এক পল কা ওয়াস্তা, তারপরেই মতিকে বেজায় চমকে দিয়ে ঝোপঝাড় ভেঙ্গে উঠে বসে এক শিখ তরুণ। গালে কালো দাড়ি, মাথায় রঙীন পাগড়ি। সদ্য ঘুম ভাঙ্গা চোখের কোণে যেন আটকে আছে পড়ন্ত সূর্যের লাল আভা। প্রাচীন রাজপুত্রদের মত রূপবান আঠার-উনিশের ছেলেটির টি-শার্ট ভিজে গেছে ভিশতির জলে। ইয়া আল্লাহ, বলে লাফ দিয়ে পেছনে সরে মতি, দ্রুতহাতে ভিশতির মুখ চেপে ধরে।

    - ইয়ে ক্যায় সোনে কা জগাহ হ্যায় বেটা?

    মতির বিস্ময়ে ছেলেটি লজ্জা পায়। পকেট থেকে রুমাল বের করে মুখ-গলা মুছতে মুছতে ক্ষমা চায়,

    -মাফ কিজিয়ে আঙ্কল। বহুত টায়ার্ড থা। পরেশান ভি।

    -অন্দর ঘুসা ক্যায়সে?

    -দিওয়ার টপক কে। মাফ কর দেনা আঙ্কল।

    আবার কাচুমাচু হয়ে ছেলেটি বলে।

    পরেশানি এই দুনিয়ার কার নেই! জ্যায়দা সে জ্যায়দা ধনী, নেক ইনসান, মায় সিনেমার স্টারগুলোকে একটাই ভূতে খায়। তা হল পরেশানি। মতি বিয়েশাদি করেনি, ল্যান্ডাবাচ্চা নেই। কিন্তু চিন্তাভাবনা কী তার একটুও কম! ফের বকরি ইদের সময় নতুন ভিশতির জন্য ছাগলের চামড়া তাকে কিনতেই হবে। এটা পুরনো হয়ে গেছে। সে বরাবরের খরিদ্দার বলে মীনাবাজারের আকবর তো কোনও রেয়াৎ করবে না। গুনেগুনে আড়াই হাজার টাকাই নেবে। কিছু বলাও যাবে না, দরদাম করাও যাবে না। কারণ পুরনো ভিশতির ছ্যাঁদা সেলাই থেকে নতুন ভিশতির খরিদ্দারি - একমাত্র নির্ভরযোগ্য লোক ওই আকবর।
    এত জল বয়ে কোনও ভিশতিই চারমাস টেঁকে না। তাহলে বছরে সাকুল্যে মতির লাগে ১০টি হাজার তনখা। অনেক ঘোরাঘুরি, পাকা বিল জমা, বিস্তর হাত কচলানোর পর ওয়াকাফ বোর্ড ফেরত দেয় বটে, কিন্তু পকেট থেকে আগে টাকাটা তো দিতে হবে সেই মতিকেই।

    ইদানিং আরেক পরেশানি হয়েছে মতির এই দলজিৎ সিংকে নিয়ে। ছেলেটার নাম তাই। খুব ভাব এখন মতির সঙ্গে। প্রায়ই আসে এ পাড়ায়। পেছনের গেট দিয়ে সোজা ঢুকে পড়ে মতির আস্তানায়। আঙ্কল আঙ্কল করে পাগল। অবাক হয়ে যায় শক্ত মোটা ভিশতি দেখে। খুঁটিয়ে জানতে চায় কী করে তৈরী হয়। অগত্যা অমলতাসের হলুদ পাঁপড়ির ওপর থেবড়ে বসে মতি খবর দেয় কী করে বকরি ইদের পরে সেরা ছাগচর্ম বেছে নিয়ে তাকে ফোটানো হয় বিরাট লোহার কড়াইতে। তার সঙ্গে মেশানো হয় কিকার গাছের বাকল। এই বাকলের সাপ্লাই আসে অনেক দূরের দেশ আফ্রিকার উত্তরি ভাগ থেকে। বারবার ফোটানোর পর কম-সে-কম কুড়িদিন ভিজিয়ে রাখা হয় ওই কড়াইতে। কিকার-জল থেকে চামড়া যখন তোলা হয় তখন সে আর চামড়া নেই। হয়ে গেছে ইষৎ হলদে মাখনের মত নরম। এইবার আচ্ছা করে মোষের চর্বি ঘষা হয় বাইরে দিকটাকে জলনিরোধক করার জন্য। কিকার-জলের এত গুণ যে সব দূর্গন্ধ, সব খতরনাক জীবানু ধ্বংস করে চামড়াকে একেবারে ঝাঁ চকচকে করে দেয়। শেষে দক্ষ হাতে ভিশতিতে সেলাই পড়ে। সেলাইয়ের সূতো মোটা আর সাদা, মোম মাখিয়ে মসৃণ আর স্পষ্ট।

    দলজিতের চোখ চকচক করে। জলভরা ভিশতি তুলে নিয়ে এগোতে যায় মতির স্টাইলে। খানিক জল ফেলে দ্রুত প্যান্ট ভিজিয়ে ফেলে কাঁধ থেকে স্ট্রাপটা তুলে ফেলে বলে,

    - মুঝসে নেহি হো পায়েগা।

    সে তো জানাই ছিল। বড় বাইকের সওয়ার কী আর ভিশতির ব্যবহার শিখতে পারে!

    যখন প্রায়ই আসতে থাকল দলজিৎ, একদিন মতি শুধোল,

    -এই এলাকায় এত আসো কেন বেটা? দু’একদিন পরপরই? কাম ক্যায়া করতে হো?

    -কুছ নেহি, ইঁউ হি ব্যাস। স্কুল কা পড়াই খতম হো চুকা হ্যায়। বাপ-মা এবার রোপার পাঠিয়ে দিচ্ছে। ওখান থেকেই বাদবাকি পড়া।

    -জ্যায়াদা দূর তো নেহি হ্যায় না? আনাজানা চলতা রহেগা। ভুলে যেও না আঙ্কলকে।

    নিজের বানানো ধোঁওয়া ওঠা চায়ের গ্লাস দলজিতের হাতে তুলে দিয়ে মতি হাসে।

    -কক্ষণো না। আঙ্কল, এই কব্‌রিস্তানের ঠান্ডা বাতাস, শুনশান গাছের ছায়া, তোমার জলের ভিশতি, আর এই একলা মানুষ তুমি, এককোণে তোমার এই ঘর, খাটিয়া - আমাকে খুব টানে। তোমাকে ভুলব না, কভি নেহি।

    গালে চকচকে মসৃণ দাড়ি, ততোধিক কালো চোখের পাতা। খাড়া নাকের দু’পাশে ঝকঝকে চোখ। মতির হঠাৎ দুঃখ হয়, এই দূর দেশে মৃতদের সঙ্গে একলা বসবাস তাকে কী ই বা দিলো! এমন একটা অল্পবয়েসি ছেলে তো তারও থাকতে পারত।

    কিন্তু এই ছেলেটা একদিন পাঁচিল টপকে ঢুকে ক্লান্তিতে ঝোপের মধ্যে ঘুমিয়ে পড়েছিল। সে আসা তো তার জন্য ছিল না। এখন যাবার সময় হয়ে এল, তবুও কী জানা যাবে না কেন সে ঢুকে পড়েছিল সেইদিন!

    বেশীদিন অপেক্ষা করতে হল না মতিকে। যেমন আসে দলজিৎ, বিকেল চারটে নাগাদ তেমনই এল। আধঘন্টা পঁয়তাল্লিশ মিনিট ধরে বড় গেটের সামনে পায়চারি করে যখন খাটিয়ায় এসে বসল মুখ একেবারে লাল টকটকে। চড়া রোদের মধ্য দিয়ে আসা, মতি ভাবল। উঁকি মেরে দেখে নিল বাইকটা যেমন লুকিয়ে রাখে কুয়োর আড়ালে তেমনই রেখেছে। গ্লাসে জল গড়িয়ে দলজিতের হাতে দিতে গিয়ে মতি দেখে ছেলেটার হাতে একটা ছোট চৌকো কাঠের বাক্স।

    -ইয়ে ক্যায়া?

    -বলছি আঙ্কল। কাল আমি রোপার চলে যাচ্ছি। কবে ফিরব কোনও ঠিক নেই। এই বাক্সটা তুমি আয়েশাকে দিয়ে দেবে?

    -আয়েশা? ও কৌন?

    -বলছি, বলছি। এই কব্‌রিস্তানের পূব কোণে যে মহল্লা, তার দ্বিতীয় গলির পাঁচনম্বর বাড়িটা আয়েশাদের। ও কর্পোরেশনের স্কুলে ক্লাস নাইনে পড়ে। আমার সঙ্গে আলাপ হয়েছিল যোগ দিবসে পারফর্ম করতে গিয়ে।
    না না আঙ্কল, ওভাবে তাকিও না। কোনও রিলেশানশিপ হয়নি এখনো। শুধু দেখতে ভাল লাগত বলে তোমার কব্‌রিস্তানের গেটের ফাঁকফোকর দিয়ে আয়েশাকে দেখতাম। ও এই রাস্তা দিয়েই স্কুল থেকে ফেরে কী না।
    পরীক্ষার পর এ ক’মাস সকালে কম্পিউটার ক্লাস ছাড়া আর কোনও কাজও ছিল না হাতে।

    নিষ্পাপ হাসে দলজিৎ।

    -ওহ লড়কি সবকুছ জানতি হ্যায় ক্যায়া?

    -শায়েদ জানতি হ্যায়। একদিন দেখেও ছিল দেওয়াল টপকাতে। তারপর থেকেই রোজ ও এই যায়গাটায় বন্ধুদের থেকে পিছিয়ে পড়ে আর ফিরে ফিরে তাকায় মেইন গেটের দিকে। রব্বা জানে ক্যায়সে উসকো পতাঁ চল গয়া!

    -কিন্তু ও তো মুসলমানের মেয়ে আর তুমি শিখ!

    -কুছ ফরক পড়তা হ্যায় ক্যায়া আঙ্কল? তাছাড়া আমি তো ওকে বিরক্ত করিনি। ভাল লাগে বলে প্রায় দিন এতদূর এসেছি। পড়াই খতম করে আবার আসব। তুমি কি আমাকে লফঙ্গা ভাবছ আঙ্কল?

    -আরে না না, তেমন কিছু তো বলিনি বাপ। কিন্তু ওর বাড়ির লোক জানতে পেলে দাঙ্গা বেঁধে যাবে তো। মুসলমানি আওর শিখ! হায় আল্লা!

    বিষন্ন হাসি খেলা করে দলজিতের চোখেমুখে। সেজন্যই তো সাহস করে কোনওদিন সে আয়েশার সামনে গিয়ে দাঁড়াতে পারল না। অনুনয় করে বলতে পারল না, ওয়েট করনা প্লিজ।
    আর এখন ছটফটে দু’বিনুনি করা রোগা সাদা হাতের মেয়েটাকে মনের মধ্যে নিয়ে সে চলল রোপার।

    -আঙ্কল, এই বাক্সটা তুমি আয়েশাকে দিও প্লিজ।

    -ম্যায়? অয় বাপ ! এক ভিশতিওয়ালাকো ইতনা হিম্মত! ওটার মধ্যে আছে কী?

    -ফুলকারির কাজ তোলা এক রুমাল। আমার মরে যাওয়া দাদির হাতে তৈরী। আর একটা গোলাপ। লাল আর সুখা।
    তা হোক। আয়েশা ঠিকই বুঝবে কোনও এককালে তাজা গন্ধভরা ছিল ফুলটা। আমিই শুধু সাহস করে দিতে পারিনি। দে দে না আঙ্কল প্লিজ।

    - মগর কিঁউ?

    অসহায় হাত নাড়ে মতি।

    দলজিৎ বলে,

    ম্যায় খুদ হি নেহি জানতা। কোই গলতি হুয়া তো মাফ কর দে না।

    এইসময় একটা হাওয়া বয়। চারপাশের বড়বড় গাছ মাথা ঝাঁকিয়ে ফিসফিস করে যেন বলতে থাকে, প্লিজ। আঙ্কল প্লিজ। হঠাৎ মতির মনে হয় এই দু’টো অবুঝ প্রাণের পাগলামিতে সে যদি অংশ না নেয়, প্রত্যেক কবর থেকে তার প্রতি ধিক্কার উঠে আসবে - মতিউর নে যো কিয়া ওহ আচ্ছা নেহি কিয়া।

    সেই ফিসফিসানি যেন চারদিক থেকে ঘিরে ফেলে তাকে। ভাল ফ্যাসাদে পড়েছে সে। চেনেনা, শোনেনা, একটা বাচ্চা মেয়েকে গিয়ে বলবে বাক্সটা নাও। দলজিৎ দিয়ে গেছে।
    মেয়েটা যদি উল্টো জিজ্ঞেস করে, কে দলজিৎ? তুমিই বা কে?

    দলজিৎ কী করে যেন মতির মনের কথা বুঝে ফেলে। ভিশতি সারাই করা খসখসে হাত দুটো ধরে ফেলে কাকুতিমিনতি করে,

    -অচ্ছা, তুমি গেটের ভেতরেই দাঁড়িও বাক্সটা হাতে করে। দেখবে ও স্কুল ছুটির সময় রাস্তার ধূলো ইচ্ছে করে সাদা কেডসে ওড়াতে ওড়াতে আসে। ঠিক যেন একটা পাখী। বারবার তাকাবে তোমার কব্‌রিস্তানের গেটের দিকে, যেন ও জানে এখানেই আড়াল থেকে দলজিৎ ওকে দেখে। তুমি তখন বাইরে রাস্তার ওপর লোহার শিকের ফাঁকে বাক্সটা বার করে দিও। দেখো ও এসে ঠিক তুলে নিয়ে যাবে।

    -আর যদি কেউ দেখে ফেলে? উস্‌কি ক্লাসফ্রেন্ড? যো সাথ সাথ রহতে হ্যায়?

    দলজিৎ পাগড়ির ওপর দিয়েই মাথা চুলকায়। এই সম্ভাবনাটা ওর মাথায় আসেনি। তারপর হঠাত দাওয়া থেকে বাঁধানো চাতালে লাফ দিয়ে পড়ে চিৎকার করে বলে,

    -পড়ে থাকবে। হয় ও দঙ্গল থেকে পিছু হটবে, তুলে নেবে। নাহলে বাক্সটা পড়েই থাকবে।

    -পগলা কহিঁ কা। ও নাম জানে তোমার?

    -জরুর। নাম কেন, টেলিফোন নাম্বারও আছে ওর কাছে। যোগ দিবসেই লেনাদেনা হয়েছিল। ওকে তো ফোন করেই বলেছি এই কব্‌রিস্তানে আমার চাচাজী থাকেন। যাবার সময় দাদীর বাক্সটা ওর কাছেই রেখে যাব।

    চাচা জী! গর্বে গরীব ভিশতিওলার বুক ফুলে ওঠে। তার মনে পড়ে যায় আব্বুর বলা আরেক গল্প।

    দেড়হাজার বছর আগে কারবালা যুদ্ধের গল্প। হুসেইন ছিলেন নবীজীর নাতি। তার বাহিনীর তৃষ্ণা মেটাবার দায়িত্বে ছিল অনেক ভিশতিওলা। বুদ্ধিমান শত্রুর বিষমাখানো তীর এসে প্রথমেই এফোঁড়-ওফোঁড় করে দেয় তাদের আর তাদের ভিশতির শরীরগুলোকে। তেষ্টার পানি নেই, গাছের ছায়া নেই, আছে শুধু রক্ত, রৌদ্র আর বড় বড় স্তম্ভের মত বীর যোদ্ধাদের পতন। আজও মহরমের দিন হায় হাসান হায় হোসেইন রবে সেই বীরগাথা কান্না আর রক্ত হয়ে ঝরে পড়ে প্রাচীন নগরীর রাস্তায় রাস্তায়। কর্পোরেশন পানি কা ট্যাংকির ব্যবহার শুরু না করা অবধি দিল্লির ভিশতিওলাদের কাজ ছিল ফি মহরমে সেই রক্তের দাগ জল দিয়ে ধুয়ে ফেলা।

    প্রাচীনকালে নিহত বিশ্বস্ত ভিশতিওলার মতোই পবিত্র কোনও দায়িত্বভার যেন মতির কাঁধে এসে পড়ে। তাকে পাহাড়ের মতো উঁচু আর গম্ভীর করে দেয়।
    সত্যি এখন যেন রাস্তায় বড় বেশি রক্তের দাগ। মতি ভাবে। দেখব না বলে চোখ বন্ধ করে হাঁটলেও যেন চ্যাটালো সেই তরল পায়ের তলায় লেগে যায়। তারপর সারা শরীরে। গভীর মমতায় সে এই দাঙ্গাবাজ সময়ে বাচ্চাদুটোর ফেরেশতা হবে বলে ঠিক করে নেয়। তার হাত থেকে একহাত উঁচু প্রায়-কিশোর কাঁধদুটোতে স্নেহভরে চাপ দেয় মতি,

    -যা ব্যাটা। বেফিকর হোকে যানা। তোমার বাক্স বিটিয়ার কাছে পৌঁছে দেবার দায়িত্ব আমার।

    কবরগুলোর ওপর চিরল চিরল পাতার ফাঁকে চুইয়ে আসা জোৎস্নার অবয়ব নড়েচড়ে বেড়াচ্ছিল। হাওয়া দিচ্ছে খুব আর শুকনো পাতার ওপর গোসাপের চলার সরসর আওয়াজ। দক্ষিণকোণে দেওয়ালের ফাটলে ঘুমভাঙ্গা ময়ূরটা একবার ডেকে উঠেই চুপ করে যায়। দু’টো কবরের মাঝখানের পরিষ্কার জায়গায় মাদুর পাতে মতি। জোৎস্নায় তার ঘোর লেগে গেছে। হাঁটু মুড়ে বসে প্রার্থনা করে, হে সর্বশক্তিমান অনুগ্রহ করে সরল পথ দেখাও।
    ঠিক তখনই প্রার্থনার উত্তরের মতো টুপটাপ দুটো দেওদারপাতা খসে পড়ে মতির দু’কাঁধে।

    আব্বু বলত নামাজীর দু’কাঁধে নামাজকালে নেমে আসে দুই ফেরেশতা। ডান কাঁধের জন লিপিবদ্ধ করেন যাবতীয় ভাল কাজের খতিয়ান, বাঁ দিকের জন খারাপ কাজের। মানুষ যা করবে তা লিখে রাখার জন্য প্রহরী তার কাছেই রয়েছে, তবু মনে রাখতে হবে ভালর ক্ষমতা খারাপের থেকে সর্বদা বেশি। কোনও খারাপ কথা লেখার আগে বাঁ কাধের জন ডান কাঁধের অনুমতি চান। বান্দা যখন কোনও ভাল কাজের নিয়ত করেন, ডান কাঁধের ফেরেশতা সঙ্গে সঙ্গে সেই পুরো সওয়াব লিখে ফেলেন। কিন্তু মন্দ কাজ করা মাত্রই বাঁ দিকের ফেরেশতা গোনাহ্‌ লিখতে পারেন না। তখনও তাকে ডান কাঁধের অনুমতির অপেক্ষায় থাকতে হয়। ডান দিক থেকে আওয়াজ ওঠে, এখনই লিখো না বাপু, হয়ত বান্দা অনুতপ্ত হয়ে আল্লাহ্‌র কাছে ক্ষমা চাইবে আর পরম করুণাময় তক্ষুণি তাকে ক্ষমা করে দেবেন।

    দিল্লির নির্মেঘ আকাশ থেকে ঝরে পড়া মিঠে অক্লান্ত চাঁদনি এমন স্বচ্ছ, এমন পুণ্যতোয়া যেন কারবালা প্রান্তর থেকেও রক্তের গন্ধ মুছে গেছে।
    মতি ডান কাঁধে হালকা নড়াচড়া টের পায়, কারণ দেওদার পাতাটি হাওয়ার তোড়ে পড়িপড়ি করে।

    চোখ ভরা জল নিয়ে মতি ভাবে ফেরেশতা তার ভাল কাজের খতিয়ান আজ রাতেই প্রায় সম্পূর্ণ করে ফেললেন।


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • গপ্পো | ২৪ আগস্ট ২০১৮ | ১০১১ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • prativa | 340123.163.564523.157 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ০৩:০৮84800
  • কুমুকে জানাই আমিই মতিউর । শুধু দেখিনি , এইরকম মানুষকে আমি মর্মে ধারণ করি ।
    সবাইকে ধন্যবাদ লেখাটি পড়েছেন বলে ।
    বিশেষ করে মিশুকে। ভাই ,তুমি সারা পৃথিবী ঘুরে বেড়ানোর অবসরেও যে এই গল্প পরে উঠেছ সেটাই বেশি ।
  • aranya | 3478.160.342312.238 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ০৩:৫৩84794
  • বাঃ
  • dd | 670112.51.0123.131 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ০৪:১২84795
  • বাঃ বাঃ।

    যেটা আরো ভালো লাগছে এদানী দেখচি অনেক গল্প আসছে গুচতে,যেখানে চরিত্র,প্রেক্ষাপট ঐ শহুরে মধ্যবিত্ত, পরকীয়াএই বাঁধা ছকের একেবারে বাইরে। সেটাও এক্ষট্রা প্রাপ্তি।
  • Pritha | 785612.38.233423.168 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ০৪:৫৮84801
  • চমৎকার লেখা
  • স্বাতী রায় | 781212.194.5678.226 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ০৭:৪৩84802
  • অপূর্ব। এমন অনায়াস গড়িয়ে চলা গল্পের সঙ্গে নাজুক ভাষা - বাঃ বাঃ - যদি এমন কোনদিন লিখতে পারতাম!
  • Du | 237812.58.450112.184 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ০৯:০৪84803
  • ওহ শুক্রবারের বিকেলে এই পাওনা অপেক্ষা করছিলো!!! অপুর্ব অপুর্ব!
  • | 3490012.113.7856.165 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ১১:২৭84796
  • বাঃ বাঃ বাঃ

    ক্কি ভাল গল্প।
  • মিশু | 342312.108.674523.60 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ১১:৫২84797
  • অসাধারণ ।
    দিদি তোমার চোখে সবাই যদি পৃথিবী দেখতে পেতো
    তাহলে ধর্মের নামে কখনো হিংসা ছড়াতো না।
  • kumu | 90056.178.6756.92 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ১২:০১84798
  • অসাধারণ!!!

    আপনি দেখেছেন মতিকে?
  • সৌরভ শাব্দিক | 781212.203.568912.197 (*) | ২৪ আগস্ট ২০১৮ ১২:২৪84799
  • খুব ভাল গল্প। মন কেমন করে দেওয়া। অনেক-অনেক ধন্যবাদ।
  • Rimi Mutsuddi | 670112.211.7823.112 (*) | ২৫ আগস্ট ২০১৮ ০৭:৩৮84804
  • খুব ভাল লাগল
  • শিবাংশু | 5645.249.2378.106 (*) | ২৫ আগস্ট ২০১৮ ০৯:২৫84805
  • বাহ, অনেক কথা যাও যে বলে, কোনও কথা....
  • সুতপা | 7845.11.124523.187 (*) | ২৫ আগস্ট ২০১৮ ১২:৩৪84806
  • সব দলজিত-আয়েশার যদি একজন মতিউর জুটে যেতো! রাজপথের রক্ত ধোয়ার জন্যে অন্তত ভিশতিওয়ালার প্রয়োজন হত না। :(
  • মণিশংকর | 340123.87.90012.224 (*) | ২৬ আগস্ট ২০১৮ ০৩:৪৪84807
  • সত্যিই রূপকথা। পুরো গল্পটার ওপরই "চিরল চিরল পাতার ফাঁকে চুইয়ে আসা জোৎস্নার অবয়ব" ঘুরে বেড়াচ্ছে।
  • patamita | 7845.15.670123.199 (*) | ২৬ আগস্ট ২০১৮ ০৫:০৩84808
  • তোমার মত কেন সবাই ভাবেনা ?
  • gourangs | 238912.70.340112.213 (*) | ২৮ আগস্ট ২০১৮ ০৫:১২84809
  • এেল্লেন্ত লেখ,একেবরে সময় উপোজোগি। R কি অসধরোম দেতইলিঙ্গ। Kহুব সুন্দর।
  • Du | 237812.58.560112.117 (*) | ২৮ আগস্ট ২০১৮ ০৭:০১84810
  • ডিটেলিং আদতেই আলাদা করে বলার মতো। কেমন যেন ঘুরে বেড়াতে পারছিলাম।
  • সিকি | 894512.168.0145.123 (*) | ২৯ আগস্ট ২০১৮ ০৪:১৯84811
  • চরম, চরম। অন্য রকম গল্প। খুশবন্ত সিং সম্পাদিত ডেলহিঃ দ্য সিটি ইমপ্রব্যাবলের একটা দুটো গল্প মনে পড়ে গেল।
  • দীপক ঘোষ | 342323.223.454512.24 (*) | ২৯ আগস্ট ২০১৮ ০৭:০৭84812
  • কী ভাল লিখেছেন প্রতিভাদি ! ভাষা তো কোনো কোনো জায়গায় কবিতাকে ছুঁয়ে গেছে । এ এক আধুনিক রূপকথা যেন । এই কিসসা বার বার পড়ার যোগ্য ।
  • দীপক ঘোষ | 342323.223.454512.24 (*) | ২৯ আগস্ট ২০১৮ ০৭:০৭84813
  • কী ভাল লিখেছেন প্রতিভাদি ! ভাষা তো কোনো কোনো জায়গায় কবিতাকে ছুঁয়ে গেছে । এ এক আধুনিক রূপকথা যেন । এই কিসসা বার বার পড়ার যোগ্য ।
  • Tim | 89900.228.0167.253 (*) | ২৯ আগস্ট ২০১৮ ০৯:৫৪84814
  • অপূর্ব লাগলো। অসাধারণ কথাটা এখন বড়ো অল্পেই ব্যবহৃত হয়। নাহলে এই হতো এ গল্পের বিশেষণ।

    উপমাহাদেশের আনাচে কানাচে এরকম বহু মতিউর ফেরেন। নইলে কবেই সব শেষ হয়ে যেত।
  • hu | 3478.58.89.187 (*) | ৩০ আগস্ট ২০১৮ ০৬:১৮84815
  • অনবদ্য
  • I | 7845.15.343412.199 (*) | ৩০ আগস্ট ২০১৮ ১০:৫৭84816
  • ডিটেলিং।অনবদ্য।
  • কৌশিক সাহা | 340112.87.6756.135 (*) | ২৪ জানুয়ারি ২০১৯ ০৫:৫৩84817
  • সংলাপ হিন্দীতে লেখা বা যত্র তত্র হিন্দী উর্দু শব্দ ব্যবহার করা কি নিতান্তই আবশ্যক ছিল? এতে কি কোন ভাবে লেখার সাহিত্যমূল্যের বৃদ্ধি হয়েছে? বিশেষতঃ লিখিত হিন্দী সংলাপ যেখানে বানান ও ব্যাকরণের ভুলে ভরা।
  • জারিফা | 236712.158.782323.43 (*) | ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৪:৩১84818
  • কী অসাধারণ একখানা কাহিনী!!! প্রতিটা বর্ণনা এত পুঙ্খানুপুঙ্খ! অসম্ভব ভাল লেখা প্রতিভাদি
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। আলোচনা করতে প্রতিক্রিয়া দিন