এই সাইটটি বার পঠিত
ভাটিয়ালি | টইপত্তর | বুলবুলভাজা | হরিদাস পাল | খেরোর খাতা | বই
  • বুলবুলভাজা  গপ্পো

  • নিভন্ত এই চুল্লিতে মা

    বিপুল দাস লেখকের গ্রাহক হোন
    গপ্পো | ০৬ মে ২০১৬ | ১০৯৮ বার পঠিত
  • সাগরবালার চোখের জলে ‘নিজে শেখো’ বই-এর মলাট ভিজে গেলেও কাগজ নরম হচ্ছিল না। আজকাল এসব বই-এর মলাট বেশ পুরু হয়, ল্যামিনেটেড এবং পৃষ্ঠাগুলোও শক্ত হয়। ছোটদের বই তো, সহজেই ছিঁড়ে যাওয়ার একটা প্রবণতা থাকে। মলাট এবং পাতাগুলো যাতে টেকসই হয়, সেদিকে লক্ষ রেখেই আজকাল এ রকম বই বিক্রি হয়। শুধু অ আ ক খ নয়, জীবজন্তুর ছবিওয়ালা বইগুলোও এমন শক্তপোক্ত হয় যে, টেনে ছেঁড়া বেশ কঠিন। অজগর, ঐরাবত, ঢাকি ইত্যাদি বিবিধ আক্রমণ থেকে রক্ষা পায়। এ কথা আজকাল সবাই জেনে গেছে যে, বই-এর ভেতরে ছাপা বিভিন্ন চিত্র ও অক্ষরের ওপর বহুবিধ প্রকাশ্য ও গোপন পদ্ধতিতে আক্রমণ হয়ে থাকে। ছবি পালটে দিয়ে কোমলমতি ভারতীয়দের ইতিহাস সম্পর্কে নতুন জ্ঞান ও অক্ষর পালটে দিয়ে ভারতবর্ষের নয়া-ইতিহাস রচনার গোপন কৌশল আমাদের খুফিয়া কিছু বুদ্ধিজীবী ধরে ফেলেছেন। এ ছাড়াও আপনারা জানেন যে, প্রাচীন কাল থেকেই ‘গ্রন্থাগার পোড়াও’ নামক এক উৎসব সভ্যতার অঙ্গ হিসেবে কিছু রাজা-মহারাজা পালন করতেন। এ ভাবে আলেজান্দ্রিয়ায়, চীনে, ভারতবর্ষে, সাম্প্রতিক ইরাকে এই উৎসব পালিত হয়েছে। আসলে বই খুবই উচ্চ ক্ষমতাসম্পন্ন দাহ্য পদার্থ হওয়ায় দহনশীলতায় বিশ্বাসী কিছু মানুষ এ কাজটি করে থাকে। কিন্তু হতভাগারা জানে না যে, একটা বই পোড়ালে সেই ভস্ম থেকে অন্তত দশটি বই ছাপা হয়। বিশেষত এখন মুদ্রণ-ব্যবস্থার অভূতপূর্ব উন্নতি হওয়ায় এবং পূর্ব বৈরাগিটোলা থেকে ফ্র্যাঙ্কফুর্ট পর্যন্ত বইমেলা যজ্ঞ অনুষ্ঠিত হওয়ার ফলে পাওভাজির দোকান থেকে বই-এর দোকানে আগুন লাগলেও মুহূর্তে ফিনিক্স পাখি আবার বেঁচে ওঠে। সেই পাখি বইমেলার উঠোনজুড়ে সপ্তবর্ণ বাহারে উড্ডীন হয়। এবং শিস দেয়। মনোযোগী অনুভবী পাঠক শোনে – বই কথা কও। 

    সাগরবালা বর্মনের স্বামীর নাম ফরেন বর্মন। যে বছর তার জন্ম, সে বছর তার জন্মের মাস দুয়েক আগে তাদের গ্রামে পঞ্চায়েত প্রধান মোজাম্মেল হকের হাতে সবাই একটা অদ্ভুত জিনিস দেখতে পায়। একটা ঝকঝকে রুপোর সরু দন্ড। শোনা গেল সেটার আগত দিয়া লিখে, বাত্তিও জ্বলে। সেই টর্চযুক্ত পেন বা পেনযুক্ত টর্চ দিয়ে প্রধান রাতে দিস ইজ টু ছাট্টিফাই লেখা শুরু করলে বেশ জমায়েত হয়। তখনই সবাই জানতে পারে যে, এই দু’মুখো যন্ত্রটি আদতে ফরেনের মাল। সাগরবালার শ্বশুর অর্থাৎ অজাত ফরেনের বাবা ফরেন শব্দটির ধ্বনিমাধুর্যে বিমোহিত হয়ে পড়ে। খেতে নিড়ানি দিতে দিতে, পিঠের দাদ চুলকোতে গিয়ে, এমন কী রাতে বিছানায় তার বউ মালতীকে সোহাগ করার সময় ফলুই বর্মন ‘ফরেন’ শব্দের মায়ায় আচ্ছন্ন হয়। শব্দটি নিয়ে সে মুখের ভেতরে এধার ওধার করে। তখন ধানের গোছ, দাদনিসৃত রস ও মালতীর শরীরের উষ্ণতা পার হয়ে সে নতুন এক রকম সুখ টের পাচ্ছিল। মালতী সন্তানসম্ভবা সে ঠিক করে ব্যাটাছুয়া যদি জন্মায়, তবে তার নাম হবে ফরেন বর্মন। বিশেষত তার নিজের নাম ফলুই হওয়ায় ‘ফ’-এর বংশানুক্রমিক ধারাবাহিকতা বজায় থাকে। এ-ও ঠাকুরের এক লীলা।

    এক সুন্দর সকালে মেখলিগঞ্জের সীমান্তঘেঁষা এক গ্রামে ফলুই ও মালতীর পুত্রসন্তান জন্মায়। পূর্ব-নির্ধারিত সূচী অনুযায়ী তার নাম হয় ফরেন বর্মন। বয়সকালে ভোটপট্টির সাগরবালার সঙ্গে তার শুভ বিবাহ সম্পন্ন হয়। কিছুকাল তারা সুখে বাস করে বটে, কিন্তু বাপের বাড়ি থেকে লুকিয়ে-আনা ‘নিজে শেখো’ বইটি সহসা একদিন টিনের বাক্সের অন্ধকার থেকে উদ্‌ঘাটিত হলে ফরেন স্তম্ভিত হয়ে পড়ল। তার এক রকম আতঙ্ক হয়। সে নিরাপত্তার অভাব বোধ করতে থাকে। মাগি হয়তো নিজের নামও সই করতে পারে – এই আশঙ্কায় তার বায়ু কুপিত, পিত্ত ঊর্ধমুখী ও কফ সবজেটে হয়ে পড়ে। স্মরণ থাকে যে, ফরেন টিপসই পার্টি।  

    সাগরবালা নিজের নাম লিখতে পারে। যুক্তাক্ষরবর্জিত বাক্য সহজেই এবং যুক্তাক্ষরসহ বাক্য কুঁথে কুঁথে পড়তে পারে। এ বাড়িতে কাগজের কোনও কারবার না থাকায় এবং প্লাস্টিকের ব্যবহার বহুল-প্রচলিত হওয়ায় কালেভদ্রে ঠোঙা পেলে সে জানতে পারে যে, সৌরভ জাতীয় নির্বাচক, মাসে হিরো হোন্ডার বিক্রি পাঁচ লক্ষাধিক, ওড়িশায় মৎস্যজীবীদের পরিচয়পত্র দেওয়া হবে, নির্বাচন কমিশন এবার কড়া হবে এবং উড়ালপুল ভেঙে পড়ার দায় বামফ্রন্টের। সে পরবর্তীকালে আরও জানতে পারে যে, কাটোয়ায় ধর্ষক শ্বশুর গ্রেপ্তার ও শকুনদের রক্ষায় শপথ গ্রহণ করা হয়েছে। 

    এসব বাক্য তার বোধে কোনও অর্থ তৈরি করে না। চিন্তনপ্রক্রিয়া কাজ করে না। কিন্তু যখন সে উনুনের সামনে বসে চুলায় লাকড়ি দিতে ভুলে যায়, তখন তার হাতে ঠোঙা দেখা যায়। তখন তাকে কেমন যেন অন্য রকম দেখায়। তখন সে দৈনন্দিন ফরেন বর্মণের বউ সাগরবালা নয়। তখন ফম-এ* থাকে না গোয়ালঘরে সাঁজাল দেওয়া হয়নি। 

    ফরেন তার টিনের বাক্স খুলে ছিল। কালীপুজোর রাতে আসরে বসার জন্য তার কিছু টাকাকড়ি কম পড়েছিল। শেষ পর্যন্ত সে ভাবল – এইঠে কিছু হোবা পারে। সে তার বউ-এর তোয়াক্কা না করে তার টিনের বাক্স ছানবিন করে। উপরন্তু মস্তিতে থাকায় সে সাগরকে বিন্দুবৎ দেখছিল। তার চলাফেরায় এক্সট্রা মাইলেজ ছিল। 

    বইটা বেরোলো দু’টো শাড়ির মাঝের ভাঁজ থেকে। অ আ-গুলো ছিল হলুদ, ক খ নীল। প্রথমে ফরেন অতটা পাত্তা দেয়নি। সে টাকা খুঁজছিল। শেষ পর্যন্ত টাকাপয়সা না পেয়ে তার বউকে বলে নিকড়িয়ায় বেটি, পরে খেপে গিয়ে শ্বশুর, শাশুড়ি – দু’জনের সঙ্গেই শারীরিক সম্পর্ক স্থাপনের ইচ্ছা প্রকাশ করে। হঠাৎ সেই বইটির দিকে নজর পড়লে প্রথমে সেটিকে ঠাহরই করে উঠতে পারেনি। মাথায় নেশায় ঘোর, বুকে টাকার জন্য দুঃখ ছিল। চোখে রাগ ছিল। তা ছাড়া, অল্প আলোয় মেঝেয় ছড়িয়ে থাকা শাড়িব্লাউজ, কাঁথাচাদরের মাঝে ‘নিজে শেখো’ প্রকৃতই এক অলীক দৃশ্য মনে হয়। 

    নিচু হয়ে বইটা কুড়িয়ে নিল ফরেন। শক্ত পিচবোর্ডের মত মলাট। পৃষ্ঠা খুলে মৃদু আলোয় ফরেন শুধু ছবি বুঝতে পারে। রেখার যে ঋজু বা বঙ্কিম ইশারায় মানুষের জিভ নড়েচড়ে, অজগর ও ঋষিমশাই ধ্বনিত হয়, সেই ইশারাময় রেখাচিত্র ফরেনের কাছে রহস্যময় কিছু দাগমাত্র। তবু সে রেখার দাপট জানে। জমি বেহাত হয়ে যায়, সুদের ওপর সুদ – ঋণ কোনও দিন শোধ হয় না। বিন্দুবৎ ওই নারীর কাছে পরাজয়ের লজ্জা থেকে ক্রমে ক্রোধ জন্মায়। 

    কিন্তু কাগজটা ঠিক কাগজ ছিল না। বেশ মোটা, বেশ শক্ত। মনে হয় ওয়াশেবল। তাছাড়া, ফরেন টাল খাচ্ছিল। সে বই-এর কিছুই ছিঁড়তে পারেনি। 

    প্লাস্টিকের কোটিং থাকায় সাগরবালার চোখের জল মলাটের ওপর দিয়ে পিছলে যাচ্ছিল। পরে সে চুলা থেকে আধপোড়া সিনজাকাঠি( পাটকাঠি) বের করে আগুনের লাল আভায় মাটির ওপরে লিখতে চেয়েছিল – মা, নববর্ষের প্রণাম নিও, কিন্তু লিখেছিল – মাও রে, আমি ভালো আছি। যুক্তাক্ষর না থাকায় তার অসুবিধা হয় না।


    * রাজবংশী ভাষায় অর্থ, মনে থাকে না


    পুনঃপ্রকাশ সম্পর্কিত নীতিঃ এই লেখাটি ছাপা, ডিজিটাল, দৃশ্য, শ্রাব্য, বা অন্য যেকোনো মাধ্যমে আংশিক বা সম্পূর্ণ ভাবে প্রতিলিপিকরণ বা অন্যত্র প্রকাশের জন্য গুরুচণ্ডা৯র অনুমতি বাধ্যতামূলক।
  • গপ্পো | ০৬ মে ২০১৬ | ১০৯৮ বার পঠিত
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • Tim | 108.228.61.183 (*) | ০৬ মে ২০১৬ ০২:৩৯80690
  • ভারি ভালো লাগলো গল্পটা। দমুদিকে ক, ও মলাট যেন আরো শক্ত হয়।
  • d | 144.159.168.72 (*) | ০৬ মে ২০১৬ ১১:৩৯80689
  • সাগরবালাদের বইগুলো আরো শক্তপোক্ত হোক।
  • de | 24.97.17.229 (*) | ০৭ মে ২০১৬ ০৬:৩০80691
  • খুবই ভালো!
  • সে | 198.155.168.109 (*) | ০৭ মে ২০১৬ ০৭:০১80692
  • খুব সুন্দর একটা গল্প পড়লাম অনেকদিন পরে।
  • san | 113.245.14.101 (*) | ০৭ মে ২০১৬ ০৭:০৫80693
  • শেষ প্যারাটা অপূর্ব।
  • Robu | 11.39.38.98 (*) | ০৮ মে ২০১৬ ০৬:৫৫80697
  • বাহ।
  • প্রতিভা সরকার | 11.39.37.53 (*) | ০৮ মে ২০১৬ ০৭:৩৯80694
  • রেখার শক্তি সম্বন্ধে আরো নিশ্চিন্ত করলো এই অল্প কয়েকটি রেখার আঁকিবুঁকি। মহৎ সৃষ্টি সবসময় সহজ আর সুন্দর।
  • cm | 127.247.100.116 (*) | ০৮ মে ২০১৬ ০৮:৩৮80695
  • খুব সুন্দর।
  • Kaushik Ghosh | 126.202.254.26 (*) | ০৮ মে ২০১৬ ১০:৪৮80696
  • শেষ লাইনটা বেস্ট লাইন।
  • Paallin | 87.96.97.197 (*) | ০৯ মে ২০১৬ ০২:২৬80699
  • অসম্ভব একখান ভাল লেখা। ঝরঝরে স্মার্ট আর ইমপ্যাক্টফুল। শেষটা সত্যি ই অসামান্য।
  • sinfaut | 74.233.173.185 (*) | ০৯ মে ২০১৬ ০৩:২১80698
  • দুরন্ত হয়েছে।
  • i | 147.157.8.253 (*) | ০৯ মে ২০১৬ ১১:৪১80700
  • বিপুল দাসের গদ্য যে কি শক্তিশালী এবং একই সঙ্গে কি অসম্ভব মায়াময়-সমস্ত লেখাপত্র না পড়লে তা অধরাই থাকে। দুর্ভাগ্য আমাদের, সেভাবে এই লেখক কে চেনা হল না।
  • Ekak | 53.224.129.63 (*) | ১০ মে ২০১৬ ০২:২৫80701
  • লেখার শিরোনাম দেখে বিকর্ষিত হয়েছিলুম । ভুল হয়েছে দেকচি । প্রতিটা শব্দ মাপা অথচ গোটা লেখা এত ফ্রি ফ্লোইং , অনেকদিন এরকম বাংলা গদ্য পড়িনি ।
  • aka | 34.96.82.109 (*) | ১০ মে ২০১৬ ০২:৫৩80702
  • খুব কিসু বুঝি নাই এইটা বলতে কেমন কুন্ঠা হইতেসে। তাও বলিলাম।
  • Sahana | 11.23.148.152 (*) | ১০ মে ২০১৬ ০৫:১৬80703
  • খুব ভালো লাগল। ওনেক জ্টিল বিষয় এতো সহজ আর অন্তর স্পর্শী ভবে লেখা । খুব ভালো লাগল।
  • দ্রিঘাংচু | 160.107.213.61 (*) | ১৩ মে ২০১৬ ০৭:৪৯80704
  • খুব ভাল লাগলো
  • Swati | 194.64.102.24 (*) | ৩০ মে ২০১৬ ০৩:৪৫80705
  • সুপারলাইক দেবার বোতাম চেয়ে গেলাম....
  • বাবু বনিক | 76.30.50.176 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৩:২১80706
  • সুদুর আমেরিকার একজন সাহিত্য অনুরাগী লেখাটির সমালোচনা করার জন্য অনুরোধ করেছেন। কিন্তু এমন তরো লেখার সমালোচনা করা দুঃসাধ্য l লেখাটি আদৌ গল্প বলে আমার মনে হলো নাI কি প্রতিপাদ্য তা বোঝা গেল না গল্পে পার্সপেক্টিভ (অনুসঙ্গ) উড়ে এসে জুড়ে বসেছে। কি প্রয়োজনে পঞ্চায়েত প্রধান টর্চ-কাম-পেন নিয়ে আবির্ভূত হলেন? টর্চ-কাম-পেন কি এমন অধ্বুত জিনিস-- যা দেখে লোকে ভিড় করবে? এ বড় কষ্ট কল্পনা। কলকাতার ফুটপাতে, মফস্বলের হাটে-বাজারে এসব জিনিস ঢেলে বিক্রি হয়ে আসছে বিগত তিরিশ বছর থেকে। লেখার বিষয় বস্তু যা-ই হোক না কেন অনুসঙ্গ আর অলঙ্করণের গুনে অএক সময় লেখা পাতে দেবার মতো হয়। বিপুল বাবুর অনুসঙ্গ কাকতালীয়, অলঙ্করণের বালাই নেই। কলকাতার উড়ালপুল ভেঙ্গে পরার ঘটনা উল্লেখ থাকায় বোঝা যাচ্ছে লেখাটি সাম্প্রতিক কালের। কিন্তু লেখাটির প্রেক্ষিত অন্তত পঞ্চাশ বছর আগের। এখন ভারতে প্রত্যন্ত গ্রামের ছেলেমেয়ে রাও পড়াশোনা করে। এমন কি ছেলেদের তুলনায় মেয়েরা অগ্রণী। বিপুল্ বাবু কেন যে পুরনো, বস্তা-পচা নস্টালজিক প্লট নিয়ে লেখার অপচেষ্টা করতে গেলেন তা উনি-ই জানেন। বই পড়ানোর প্রসঙ্গ কেনা টানলেন উনি? মুল গল্পের সাথে এর সাযুজ্য কোথায়?
    তার বাক্য গঠন, ভাষা ও শব্দ প্রয়োগ নিতান্ত অকিঞ্চিত্কর। 'ব্যাটা-ছুয়া' বলে কোনো শব্দ আঞ্চলিক বাংলা ভাষা তেও খুঁজে পাইনি। ' আগত দিয়ে লেখা' -- 'আগত' শব্দটি সম্ভবত অর্থহীন। আগা বা ডগা বললেও চলত। 'হোবা' শব্দের অর্থ কি আমার জানা নেই। বাংলায় হিন্দি শব্দ লকরীর প্রচলন আছে। লাকড়ি শব্দ টি ইনি কথা থেকে পেলেন?
    কাল্পনিক ফিনিক্স পাখির পুনর্জন্মের মত একটা বই পোড়ালে চারটে বই এর জন্ম হয়, এ তত্ব কোথায় পেলেন আর তা দিয়ে কি বোঝাতে চাইলেন উনি? গল্পের সঙ্গে এই তত্বের সম্পর্ক কি?
    গল্পে 'ফরেন' তার শশুর-শাশুড়ির প্রতি অত্যন্ত অরুচিকর ভাবনা ভেবেছে। কোন প্রয়োজনে এমন সংযোজন? নিজের নামের আদ্যক্ষর দিয়ে নাম রাখল বাবা। এতে ঠাকুরের লীলা কোথায়?
    বিপুল বাবু কে লেখার ব্যাপারে কটা টিপস দিতে চাই :
    ১. সমাজ সংস্কার আর মূল্যবোধ সময়ের সাথে পাল্টায়। তার সাথে লেখকের দৃষ্টিকোণ প্রতিনিয়ত পাল্টায়। নুতন পরিমন্ডলে প্রতিপাদ্য খোঁজেন লেখকেরা। সামাজিক চাওয়া-পাওয়া , আনন্দ-বেদনা নুতন মূল্যবোধের নিরিখে বিবেচিত হয়। নুতন বিষয়-বস্তু, নুতন আঙ্গিক ও পরিবর্তিত যুক্তি-গ্রাজ্য পাঠকের চেতনা কে স্পর্শ করে।
    2. নূতনতর অলঙ্করণ নিয়ে চিন্তা করতে হয়। খুঁজে দেখতে হয় বর্তমান সমাজে কোথায় কোন অবক্ষয় লুকিয়ে আছে এবং তা নিয়ে লিখতে হয়. ইঙ্গিত দিতে হয় সমাধান সূত্রের। তবেই হয় সার্থক সাহিত্য-কর্ম।
    ৩. বর্তমান বাংলা সাহিত্য সুউচ্চ আসনে প্রতিষ্ঠিত। সেসব লেখা পরে নিজেকে সমৃদ্ধ করুন। তারপর লেখা আরম্ভ করুন। অযথা আবর্জনা সৃষ্টি করবেন না। মনে রাখবেন আপনার লেখা, আপনার জ্ঞান ও অন্তরদৃষ্টির পরিচায়ক।
  • | 24.97.230.28 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৩:৪৬80707
  • ^ এটা কী মাইরি?
  • Ela | 174.143.240.34 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৩:৪৯80708
  • আবর্জনা সৃষ্টি করা মৌলিক অধিকারের মধ্যে পড়ে।
  • | 24.97.230.28 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৩:৫০80709
  • এসে গেছে নতুন খোরাক তাকে করে দিতে হবে স্থান ----
    -_-
  • pi | 192.66.33.109 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৩:৫৮80710
  • মনে হয় কেউ খিল্লি করার সিরিয়াস অপচেষ্টা করেছেন। সিরিয়াসলি কেউ বইয়ের পুনর্জন্ম তত্ত্ব কোথায় পেলেন জিগাতে পারেন বলে তো মনে হয়না। ঃ)
  • শ্রী সদা | 113.19.212.1 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৪:৩১80711
  • দুরন্ত লেখা। গুরুতেই বিপুলবাবুর লেখা "পুনরুত্থান" গল্পটা পড়ে জাস্ট কেঁপে গেছিলাম, এটাও খুব ভালো লাগলো।
  • বনেদি বনিক | 202.43.65.245 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৫:০৩80712
  • খি
  • Paramita | 226.240.19.84 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৬:৪১80713
  • অসাধারণ।
  • ranjan roy | 132.180.220.170 (*) | ২২ জুন ২০১৬ ০৬:৫৯80714
  • বিপুল দাসের লেখা আগে পড়িনি। আরও পড়তে চাই। "পুনরুত্থান" গল্পটি অ্যাডমিন কাইন্ডলি তুলে দিন, মনে হচ্ছে পড়া হয় নি।

    বাবু বণিক ওঁর মডেল লেখার একটি নমুনা পেশ করলে ভালো হয়!
  • pi | 24.139.209.3 (*) | ২৩ জুন ২০১৬ ০৫:০৬80715
  • গুরুচণ্ডা৯ থেকে বিপুল দাসের বই বর্ণসন্কর প্রকাশিত হয়েছিল। সেখানে অনেক গল্প পেয়ে যাবেন।
  • Ranjan Roy | 132.180.220.170 (*) | ২৩ জুন ২০১৬ ০৫:৫৩80716
  • থ্যান্কু পাই!
  • মতামত দিন
  • বিষয়বস্তু*:
  • কি, কেন, ইত্যাদি
  • বাজার অর্থনীতির ধরাবাঁধা খাদ্য-খাদক সম্পর্কের বাইরে বেরিয়ে এসে এমন এক আস্তানা বানাব আমরা, যেখানে ক্রমশ: মুছে যাবে লেখক ও পাঠকের বিস্তীর্ণ ব্যবধান। পাঠকই লেখক হবে, মিডিয়ার জগতে থাকবেনা কোন ব্যকরণশিক্ষক, ক্লাসরুমে থাকবেনা মিডিয়ার মাস্টারমশাইয়ের জন্য কোন বিশেষ প্ল্যাটফর্ম। এসব আদৌ হবে কিনা, গুরুচণ্ডালি টিকবে কিনা, সে পরের কথা, কিন্তু দু পা ফেলে দেখতে দোষ কী? ... আরও ...
  • আমাদের কথা
  • আপনি কি কম্পিউটার স্যাভি? সারাদিন মেশিনের সামনে বসে থেকে আপনার ঘাড়ে পিঠে কি স্পন্ডেলাইটিস আর চোখে পুরু অ্যান্টিগ্লেয়ার হাইপাওয়ার চশমা? এন্টার মেরে মেরে ডান হাতের কড়ি আঙুলে কি কড়া পড়ে গেছে? আপনি কি অন্তর্জালের গোলকধাঁধায় পথ হারাইয়াছেন? সাইট থেকে সাইটান্তরে বাঁদরলাফ দিয়ে দিয়ে আপনি কি ক্লান্ত? বিরাট অঙ্কের টেলিফোন বিল কি জীবন থেকে সব সুখ কেড়ে নিচ্ছে? আপনার দুশ্‌চিন্তার দিন শেষ হল। ... আরও ...
  • বুলবুলভাজা
  • এ হল ক্ষমতাহীনের মিডিয়া। গাঁয়ে মানেনা আপনি মোড়ল যখন নিজের ঢাক নিজে পেটায়, তখন তাকেই বলে হরিদাস পালের বুলবুলভাজা। পড়তে থাকুন রোজরোজ। দু-পয়সা দিতে পারেন আপনিও, কারণ ক্ষমতাহীন মানেই অক্ষম নয়। বুলবুলভাজায় বাছাই করা সম্পাদিত লেখা প্রকাশিত হয়। এখানে লেখা দিতে হলে লেখাটি ইমেইল করুন, বা, গুরুচন্ডা৯ ব্লগ (হরিদাস পাল) বা অন্য কোথাও লেখা থাকলে সেই ওয়েব ঠিকানা পাঠান (ইমেইল ঠিকানা পাতার নীচে আছে), অনুমোদিত এবং সম্পাদিত হলে লেখা এখানে প্রকাশিত হবে। ... আরও ...
  • হরিদাস পালেরা
  • এটি একটি খোলা পাতা, যাকে আমরা ব্লগ বলে থাকি। গুরুচন্ডালির সম্পাদকমন্ডলীর হস্তক্ষেপ ছাড়াই, স্বীকৃত ব্যবহারকারীরা এখানে নিজের লেখা লিখতে পারেন। সেটি গুরুচন্ডালি সাইটে দেখা যাবে। খুলে ফেলুন আপনার নিজের বাংলা ব্লগ, হয়ে উঠুন একমেবাদ্বিতীয়ম হরিদাস পাল, এ সুযোগ পাবেন না আর, দেখে যান নিজের চোখে...... আরও ...
  • টইপত্তর
  • নতুন কোনো বই পড়ছেন? সদ্য দেখা কোনো সিনেমা নিয়ে আলোচনার জায়গা খুঁজছেন? নতুন কোনো অ্যালবাম কানে লেগে আছে এখনও? সবাইকে জানান। এখনই। ভালো লাগলে হাত খুলে প্রশংসা করুন। খারাপ লাগলে চুটিয়ে গাল দিন। জ্ঞানের কথা বলার হলে গুরুগম্ভীর প্রবন্ধ ফাঁদুন। হাসুন কাঁদুন তক্কো করুন। স্রেফ এই কারণেই এই সাইটে আছে আমাদের বিভাগ টইপত্তর। ... আরও ...
  • ভাটিয়া৯
  • যে যা খুশি লিখবেন৷ লিখবেন এবং পোস্ট করবেন৷ তৎক্ষণাৎ তা উঠে যাবে এই পাতায়৷ এখানে এডিটিং এর রক্তচক্ষু নেই, সেন্সরশিপের ঝামেলা নেই৷ এখানে কোনো ভান নেই, সাজিয়ে গুছিয়ে লেখা তৈরি করার কোনো ঝকমারি নেই৷ সাজানো বাগান নয়, আসুন তৈরি করি ফুল ফল ও বুনো আগাছায় ভরে থাকা এক নিজস্ব চারণভূমি৷ আসুন, গড়ে তুলি এক আড়ালহীন কমিউনিটি ... আরও ...
গুরুচণ্ডা৯-র সম্পাদিত বিভাগের যে কোনো লেখা অথবা লেখার অংশবিশেষ অন্যত্র প্রকাশ করার আগে গুরুচণ্ডা৯-র লিখিত অনুমতি নেওয়া আবশ্যক। অসম্পাদিত বিভাগের লেখা প্রকাশের সময় গুরুতে প্রকাশের উল্লেখ আমরা পারস্পরিক সৌজন্যের প্রকাশ হিসেবে অনুরোধ করি। যোগাযোগ করুন, লেখা পাঠান এই ঠিকানায় : [email protected]


মে ১৩, ২০১৪ থেকে সাইটটি বার পঠিত
পড়েই ক্ষান্ত দেবেন না। ঝপাঝপ মতামত দিন